জলফড়িং পর্ব-০১

0
346

#জলফড়িং
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
[সূচনা পর্ব ].
পাত্রের জায়গায় বেস্ট ফ্রেন্ডের প্রাক্তন কে দেখে চমকে উঠলো দিয়া। আশ্চর্যের ন্যায় পা চলা থামিয়ে সেখানেই দাঁড়িয়ে গেল। ঘর ভর্তি মানুষের সামনেও যেন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো সামনের সোফায় বসা মানুষটার পানে। সে কি ভুল দেখলো কি না, সেটায় ভাবতে লাগলো। সেই মানুষ’টাও নি’র্ল’জ্জে’র মতো তাকিয়ে আছে দিয়ার দিকে, ঠোঁটে ঝুলে আছে রহস্যময় হাসি। যে হাসির কারণ বোঝার ক্ষমতা দিয়ার নেই, তবুও যেন এক অজানা ভয় ঢুকে গেল মনে। মনে পড়ে গেল কয়েকমাস আগে এই মানুষ’টার পৈশাচিক সেই রুপ। মানুষটা যে ঠিক কতটা ভয়ংকর তা খুব কাছ থেকেই দেখেছে দিয়, প্রতিটা মুহুর্ত অনুভব করেছে। সেই মানুষটার সাথেই জীবনের বাকিটা, তাকে স্বামী রুপে কিভাবে মেনে নিবে?

“এই দিয়া, ঘর ভর্তি লোকের সামনে আর কতক্ষণ ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে দেখবি দুলাভাই’কে? আগে তো বিয়েটা হতে দে।”

কথাটা কর্ণপাত হতেই খানিকটা চমকে উঠলো দিয়া, চোখ ফিরিয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। তার চাচাতো ফুপাতো বোনরা কথা বলার সুযোগ না দিয়ে টেনে নিয়ে গেল সামনের দিকে। কাছে যেতেই এক মধ্য বয়ষ্ক মহিলা দিয়া’কে তার পাশে বসিয়ে দিলো, জিজ্ঞেস করতে লাগলো নানান কথা। দিয়া যতদূর বুঝতে পারলো, এটাই হয়তো তার হবু শ্বাশুড়ি। কিন্তু না। দিয়া’কে ভুল প্রমাণিত করে মহিলা’টি তার ফুপু শ্বাশুড়ি হলো। জিজ্ঞাসার পালা শেষ হতেই তিনি প্রসংশা করতে লাগলো তার। কিন্তু এর কিছুতেই দিয়া’র মনোযোগ নেই। তার মাথায় বারংবার দু’টো নাম’ই ঘুরতে ঘুরেফিরে আসতে লাগলো —ইফাজ দিশা।

.
“কথাবার্তা তো সব হয়েই আছে, আমরা বরং বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করি। ছেলেমেয়ে দু’টো একসাথে যখন হয়েছে, ওরা একটু আলাদা ভাবে কথা বলুক। আন্টি পড়ানো খাওয়া দাওয়ার পরেই না হয় হোক।”

কথাটা কনের দোরগোড়ায় পৌঁছাতেই তড়িৎগতিতে চোখ তুলে চাইলো দিয়া, এদিক ওদিক তাকালে চোখ পারলো তার সামনাসামনি বসা ইফাজের দিকে। দিয়া তাকাতেই ইফাজও তাকালো তার দিকে, চোখাচোখি হয়ে গেল দু’জনের, মুহুর্তেই চোখ নামিয়ে নিলো দিয়া। বুকের দ্রিমদ্রিম শব্দ’টা ক্রমশ্য বাড়তে লাগলো যেন। এর মাঝেই দিয়ার বাবা ও ভাই সায় জানালো তাদের আলাদা ভাবে কথা বলার জন্য, নিজের রুমে নিয়ে যেতে বললো ইফাজ কে, পিছন থেকে ফুপাতো চাচাতো বোন’টা খোঁচাতে লাগলো দিয়া’কে। কিন্তু নড়লো না দিয়া, শক্ত হয়ে বসে রইলো যেন। হালকা চোখ তুলে আবারও তাকালো ইফাজের দিকে। উঠে দাঁড়িয়েছে ইফাজ, তার জন্যই হয়তো অপেক্ষা করছে একান্ত কথা বলার জন্য। ভয়টা যেন জেঁকে ধরলো দিয়ার মনে, সেই ভয়ের ভীতি’টা বাড়িয়ে দিতে তার ভাবী হাত ধরে টেনে তুললো। বলে উঠলো,
“দিয়া! তোমার রুম তো ফাঁকায় আছে, ভাইয়াকে বরং তোমার রুমেই নিয়ে যাও।”

চুপ হয়ে গেল দিয়ার ভাবি মিথিলা। সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে তার কানের কাছে মুখ এগিয়ে এসে আবারও ফিসফিসিয়ে আবারও বলে উঠলো,
“বিয়ের আগে এগুলোই সুযোগ ননদিনী, কাজে লাগাও, তার সাথে একটু প্রেম জমাও।”

চুপ করেই শুনে গেল দিয়া, কিছু বলার ইয়ত্তা পেল না যেন। ইফাজের জায়গায় অন্য ছেলে থাকলে হয়তো বেশ লজ্জা পেত দিয়া, ইফাজ’কে না দেখলেও হয়তো লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেন, কিন্তু এখন? এখন যেন সে অনুভূতি শুন্য। বারংবার একটা প্রশ্নই দিয়ার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে —এরপর কি হবে?

আর সেখানে দাঁড়াতে পারলো না দিয়ে, বাধ্য হয়ে অগ্যতা যেতে হলো নিজের রুমে, ইফাজও পিছন পিছন আসলো। এতে দিয়ার বোন ভাবিরা মশকরা করতে ছাড়লো না।

.
“বাহ্! রুম’টা তো বেশ সাজানো গুছানো৷ তোমার বান্ধবীর রুম কিন্তু এমন থাকতো না, অগোছালো থাকতো।”

রুমে ঢুকেই এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে বলে উঠলো ইফাজ। দিয়া তাকালো তার দিকে, কিন্তু সেদিকে যেন ইফাজের কোন মনোযোগ নেই। সে রুমের জিনিস গুলো হাত ছুঁইয়ে দেখায় ব্যস্ত। দিয়া বলতে লাগলো, “আপনি কেন….”

কিন্তু শেষ করতে দিলো না দিয়া কে কথাটা। ইফাজ বলে উঠলো, “আমার রুম’টাও কিন্তু তোমার বান্ধবীর মতো অগোছালো থাকে, বিয়ের পর নিজের মতো গুছিয়ে নিও।”

“কি বলছেন আ….”

“আব্… হানিমুনে কোথায় যাবে বলো? বিয়ের তো বেশি দেরি নেই, সবকিছু তো আগেই প্ল্যান করতে হবে।”

“এই বিয়ে আপনি….”

“ওও হ্যাঁ! বিয়ে। বিয়েতে কিন্তু তোমার সব বন্ধুদের ইনভাইট করা চাই। বিশেষ করে তোমার বেস্টফ্রেন্ড। সে কিন্তু আমাদের স্পেশাল গেস্ট থাকবে।”

বলেই একটু থামলো ইফাজ। এতক্ষণে দিয়ার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও বলতে লাগলো,
“এক কাজ করো, তাকে এক সপ্তাহ আগেই নিয়ে আসবে, কেমন? তোমার বেস্টফ্রেন্ড আর আমার স্পেশালে শালিকা বলে কথা।”

কি বলবে দিয়া ঠিক বুঝতে পারলো না, হয়তো এতক্ষণে তার কথার বাঁধা পড়ায় কিছু বলার মানষিকতা হারিয়েছে। কিন্তু তাকে তো অনেক কিছুই বলতে হবে, ইফাজ কেন এমনটা করছে জানতে হবে।
কিছুটা সাহস সঞ্চয় করলো দিয়া। ইফাজের দিকে তাকিয়ে, “কিছুতেই আপনাকে বিয়ে করবো না আমি।”

বলতেই সামান্য হাসলো ইফাজ। দুরত্ব ঘুচিয়ে আরও এগিয়ে এলো দিয়ার কাছে। দু’হাতে দিয়ার বাহু চেপে ধরতেই তা ঝটকায় ছাড়িয়ে নিলো দিয়া। তাতে যেন ইফাজের ঠোঁটের হাসিটা প্রসস্থ হলো। বলে উঠলো,
“উফ্! বউ। রাগ করছো কেন এভাবে? তুমি বললে বিয়ের ডেট’টা আরও এগিয়ে আনি।”

“দেখুন, একদম বউ বউ বলবেন না আমাকে, বিয়ে হয় নি আমাদের। আর হবেও না এই বিয়ে।”

“হবে! খুব তারাতাড়ি’ই আমার বউ রুপে স্বীকৃতি পাবে।”

“কিছুতেই এই বিয়ে হবে না। আপনি এক্ষুনি সবাইকে মানা করে দিবেন বিয়ের জন্য।”

হাসলো ইফাজ। বেশ শব্দ করেই হাসলো যেন। দিয়া হয়তো বুঝেও গেল সেই হাসির কারণ। রাগী কণ্ঠস্বর পাল্টে ফেললো মুহুর্তেই, ধীর গলায় বলতে লাগলো, “প্লিজ! ইফাজ, বিয়ে’টা ভেঙে দিন। সবাইকে বলে দিন এই বিয়েটা আপনি করতে পারবেন না।”

“বিয়েটা ভাঙতে চাও? বেশ। সবাইকে গিয়ে তুমিই বলে দাও বিয়েটা করবে না।”

বলেই একটু থামলো ইফাজ। সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে ভারী কণ্ঠে আবারও বলে উঠলো, “দু’ সপ্তাহ সময় আছে তোমার হাতে, ততদিনে নিজ থেকে বিয়েটা আটকাতে পারলে আটকাও, সরে যাবো তোমার জীবন থেকে আমিও।”

“কেন এমনটা করছেন আমার সাথে? কি করেছি আমি? আমি তো কখনো কল্পনাও করি নি দিশা এমনটা…. ”

“হ্যাঁ! তুমি…. তুমিই করেছো সবটা। সেদিন একটাবার আমাকে ইনফর্ম করলে আজ…. ”

কথার মাঝেই থেমে গেল ইফাজ। আবারও হেঁসে উঠলো শব্দ করে। এই হাসিটা ছিলো যেন দিয়া কে বিদ্রুপ করে। ঠিকই বুঝলো দিয়া। ইফাজ আবারও বলতে লাগলো,
“সে যাইহোক, তুমিই তো আমাদের সবটা জুড়ে ছিলে, তাই না দিয়া? এবার না হয় একান্ত আমার সবটা জুড়ে রইলে।”

“কেনওও… কেন এমনটা করতে চাইছেন আমার সাথে? আমি সত্যি কিছু জানতাম না।”

“ভালোবাসা বোঝাতে। ভালোবাসার মানুষ হারিয়ে যাবার উপলব্ধি করাতে।”

“প্লিজ! এমনটা করবেন না ইফাজ। বিয়ের মতো একটা পবিত্র সম্পর্ক’কে এভাবে অসম্মান করবেন না। আমি জানি, আপনি সবটা ইচ্ছে করে করছেন। আমি আপনাকে কিছুতেই বিয়ে….”

“লাস্টবার বলেছিলাম না, সারপ্রাইজ আছে! এটা তার নমুনা মাত্র। গেট রেড়ি দিয়া।”

বলেই আর দাঁড়ালো না ইফাজ। মুচকি হেঁসে বেড়িয়ে গেল রুম ছেড়ে। ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো দিয়া, মাথায় চলতে লাগলো নানান ভাবনা। মাস খানিক আগে ইফাজ বলেছিলো তাকে, খুব তারাতাড়ি একটা সারপ্রাইজ দিবে। সেই সারপ্রাইজ যে এভাবে দিবে, সেটা সত্যিই অকল্পনীয় ছিলো দিয়ার জন্য। এবার যেন সত্যিই কোন কুল কিনারা পেল না। বারংবার একটা নামই মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো দিয়ার, তার বেস্টফ্রেন্ড দিশা।

.
দিশা! দিয়ার সবচেয়ে কাছের প্রিয় একজন বন্ধু। স্কুল, কলেজ সবটাই একসাথে পার করে এসেছে তারা, ভার্সিটি লাইফেও একসাথেই পড়াশোনা এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের বন্ধুত্বের জুটিতে অনেকের জায়গা হলেও বেস্টফ্রেন্ডের মাঝে তৃতীয় কারোর স্থান হয় নি কখনো, আর না ছিলো এত বছরেও তাদের মাঝে কোন মনোমালিন্য। দিয়া, দিশা নামের মতোই তাদের দুজনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিলো চোখে পড়ার মতো। অনেকে তাদের হিংসার চোখে দেখে বিচ্ছেদ ঘটাতে চাইলেও সফল হয় নি কখনো, মনোমালিন্য করাতে পারে নি তাদের মাঝে।

দিয়া, দিশা নাম ও সম্পর্কের মিল থাকলেও তাদের পছন্দ, স্বভাব, আচার-আচরণে ছিলো আকাশ পাতাল তফাৎ। দিয়া কথা কম বললেও দিশা ছিলো প্রচুর বাঁচাল স্বভাবের। হুট করেই সবার সাথে মিশে যেত, প্রথম দেখাতেই কাউকে কথার জালে জড়িয়ে নিতো, পটিয়ে ফেলার ক্ষমতা ছিলো এক মুহুর্তেই। পরিবারের ছোট মেয়ে হওয়ার ছিলো বড্ড অগোছালো ও বাউন্ডরে টাইপ। এজন্য ছেলেরা খুব সহজেই দিশার প্রেমে মজে যেত, আহর আহর প্রেমের প্রস্তাবও আসতো। আর দিশার পুরোপুরি আলাদা ছিলো দিয়া, শান্তশিষ্ট, চুপচাপ একটা মেয়ে। সবকিছুতেই গোছালো ও চুপচাপ। সে নিজেই যেন ছেলেদের থেকে দূরে দূরে থাকতো, দুই একটা প্রেমের প্রস্তাব পেলেও নাকচ করে যেত।

দিশা অনেকগুলো প্রেমের সম্পর্কে থাকলেও ইফাজের সাথে তার সম্পর্ক’টা ছিলো বেশ গভীর। যেখানে অন্যদের সাথে চার মাস পর্যন্ত টেনে টুনে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গেলেও ইফাজের সাথে সেই সম্পর্কটা টিয়ে যায় চার বছর। দিশা ও দিয়ার বন্ধুত্বের জুটির মতোই দুশা ও ইফাজের সম্পর্ক ছিলো চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সেই সম্পর্ক’টাই যে হঠাৎ এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে, সেই দিয়া কল্পনাও করতে পারে না। ইফাজ কিনা তাকেই দায়ী করে আসছে সেই সম্পর্কের বিচ্ছেদের কথা ভেবে।

সুপ্ত নিশ্বাস ছাড়লো দিয়া। দিশা ও ইফাজের এত সুন্দর একটা সম্পর্কের বিচ্ছেদের কথা ভাবতেই মন ভার হয়ে উঠে দিয়ার। হঠাৎ করেই যেন বিচ্ছেদ’টা হয়ে গেল দিশা ও ইফাজের, ঠিক যেমন হঠাৎ করেই তাদের সম্পর্কের শুরু হয়েছিলো।

.
এসএসসি পরীক্ষার পর তখন সবে কলেজে পা দিয়েছে দিয়া ও দিশা। মাস খানিক যাবার পর অনলাইন পড়াশোনা ও বিভিন্ন সফটওয়্যারের প্রয়োজনীয়তায় মোবাইল ফোনের প্রয়োজন হয়। দিয়া তার মা ও ভাইয়ের মোবাইল ব্যবহার করলেও বাসা থেকে নতুন মোবাইল পেয়ে যায় দিশা। সপ্তাহ খানিক পর বাকি বন্ধুদের সাথে তাল মিলিয়ে চলায় ফেসবুক নামক পারসোনাল আইডি খুলেই ফেলে দিশা। বেশকিছু যেতেই ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে যায় ফেসবুকের সাথে। দিয়াকেও একটা ফেসবুক আইডি খোলার জন্য বলতে থাকে, বরাবরের মতোই দিয়া নাকচ করে দেয়। কিন্তু শুনতে চায় না দিশা, নানান ভাবে বোঝাতে থাকে দিয়া’কে, মেসেঞ্জারে তাদের কথোপকথন হবে সেটাও বলে। অবশেষে বলেই ফেলে,
“আচ্ছা যা দুজনের ফোনেই লগইন থাকবে আইডি। তুই যেসব লেখালেখি ডায়েরি’তে করিস সেগুলো ফেসবুকে লিখে পোস্ট করবি, আর আমি শুধু মেসেজের রিপ্লাই করবো, ঠিক আছে?”

তখন আর না করতে গিয়েও পারে না দিয়া, রাজি হতে হয় তাকে। কিন্তু এ-ব্যাপারে তার বাসার কেউ যেন জানতে না পারে, সেদিকে ঘোর সতর্ক করে তাকে। দিশা আশস্ত করে দিয়াকে। সবকিছু ঠিক করে দিয়াকে বলে তাহলে নাম কি দিবে আইডির? দুই বান্ধবী চেষ্টা করেও ভালো কোন নাম খুঁজে পায় না। দিশা হতাশ হতেই দিয়া বলে উঠে, “পেয়েছি একটা নাম।”

“কিইইই? বল।”

“আব্… তোর পছন্দ হবে তো?”

“তোর কোন কাজই আমার পছন্দ না দিয়া, স্বাভাবিক এই নামটাও পছন্দ হবে না। তবুও বল দেখি।”

দিয়া জানতো দিশা এমনি কিছু বলবে। তাই সহসায় কিছু বলে না। সামান্য সময় নিয়ে বলে উঠে,

“জলফড়িং!”

.
.
চলবে….???