জলফড়িং পর্ব-০৫

0
295

#জলফড়িং
#রোজা_ইসলাম
#পার্ট ৫

ভোর সকাল। সূর্যের তীর্যক আলোয় পৃথিবী আলোকিত হতে ব্যস্ত। পাখির কিচিরমিচির শব্দ বারান্দা পেরিয়ে স্বল্প মানুষের হাটাচলা, কথা বলার মৃদুমন্দ শব্দ রুমে আসছে। দলা পাকানো একরাশ বিষণ্ণ অনুভূতির সাথে বেডে শুয়ে সিলিং এর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে অনেক কিছু ভাবছে রাদ!

ধৈর্য্য! ধৈর্য্য এমন একটি জিনিস। যার সীমানা অতিক্রম হলে সেটি এক সময় হয়তো ভেঙ্গে যায়৷ তখন ধৈর্য্য হারা মানুষের মনে তৈরী হয় রাগ, জেদ, ক্ষোভের মতো ভয়ঙ্কর সকল অনুভূতি! এত ধৈর্য্য বান হওয়ার পরেও যখন প্রাপ্তির খাতা শূন্যের কোঠায়ই ঠেকে থাকে। মানুষ তখন বাধ্যহয় রেগে যেতে। রাগের মাথায় তখন হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পরে৷ রাদের সাথেও হয়েছিলো তাই। গাড়িতে ইরার সাথে কথোপকথনে রাদের সকল ধৈর্য ভেঙ্গেচুরে দিয়েছিলো। সেই ধৈর্য হারা রাদ কাল রাগে, জেদে, ক্ষো’ভে হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে একজনের রাগ অন্যকারো উপর নিংড়ে দিয়েছে। তবে সেটা অনুধাবণ করতে খুব বেশি দেড়ি করেনি রাদ। সকাল হতেই ও রাগের মাথায় কতগুলো অন্যায় করেছে বুঝতে পারছে। তার কখনোই উচিৎ হয়নি কাশিশের গায়ে হাত তোলার৷ এবং ওর রাগের বসে ভুল পদক্ষেপে ওর মাও কষ্ট পেয়েছে। জেনে গিয়েছে অনাকাঙ্খিত ভাবে ইরার কথাটাও। যেটা রাদ মোটেও চায়নি ওর মা এমন বিশ্রী পরিস্থিতিতে ওর প্রণয়নের বিষয়টি জানুক! এবং ইরাকে এসবের জন্য দোষ দিক বা ভুল বুঝুক৷ কিন্তু না চাইতেও সেটাই হয়ে গিয়েছে। রাদ চেয়েছিলো ইরা যখন ওর ফ্যামিলিকে জানাবে তখনই রাদ ওর মাকে সবটা খুলে বলবে৷ কিন্তু কী হলো? রাগের মাথায় সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলো। কাশিশ ও নিশ্চয় কষ্ট পেয়েছে ওর বিহেভিয়ারে৷ কাশিশের কোনও দোষ ছিলো না। সে তো বন্ধুকে হেল্প কর‍তে চেয়েছিলো শুধু মাত্র.. মূল্য হিসেবে ভয়া’বহ কিছুই ফিরে পেলো!

এসব ভেবে ভেবে রাদ অনুশোচনার আগুনে দগ্ধ হতে থাকলো। এদিকে ফোন হাতে নিয়ে ইরার হাজার খানেক কল দেখে মনটা একদম ছোট হয়েগেল। কাল রাগের মাথায় কী উল্টাপাল্টা ভাবনা ভেবেছে। আসলেই রাগ প্রচণ্ড ধ্বং’সা’ত্ম’ক। রাদের মনে পরেনা এভাবে কখনওই ও আগে রেগেছে কী না৷ ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ। কাল হুট করে কী হয়েগিয়েছিলো ওর ও নিজেও জানে না। ইরাও নিশ্চয়ই ওর ব্যাবহারে কষ্ট পেয়েছে।

বেড ছেড়ে উঠে দু-হাতে মাথা চেপে ধরে বিড়বিড়িয়ে রুষ্ট গলায় বলল,

—” এত বোকামি তুই করতে পারিস না রাদ। আমাকে নাজুক ভাবে সব সামলাতে হতো আর আমি! শিট…..। ইরার সিদ্ধান্তে কষ্ট না পেয়ে আরেকটু চেষ্টা করলে হয়তো সব ঠিক হতে পারে। আই নো সব অনেক কমপ্লিকেটেট। বাট চেষ্টা করতে ক্ষতি কী। আই এম সো সরি ইরা। আমি জানি মা আমার জন্য তোমাকে ভুল বুঝেছে ভাবছে তোমার জন্যেই আমি কাশিশের গায়ে হাত তুলেছি এবং আজব ব্যবহার করেছি মায়ের সাথে। বাট আমি মাকে বুঝাবো। এখানে তুমি নির্দোষ ভুল আমার।”

এটুকু বলেই থামলো ও। উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে আয়নায় নিজের দিকে তাকালো। একদিনে চোখে মুখের অবস্থা বেগতিক! চোখের নিচে লাল হয়ে আছে কিছুদিন যাবত ঘুম ভালো না হওয়ার ফলস্বরূপ। ঝরঝরে চুল গুলো এলোমেলো, নিষ্প্রাণ। চেহারা জুড়ে বিষন্নতার ছঁটা! সিল্কি চুল গুলোতে হাত চালিয়ে কিছুটা ঠিক করে হতাশ কণ্ঠে আবারো বিড়বিড় করে উঠলো,

—” কবে বুঝবে ইরা তুমি আমাকে ঠিক কতটা কষ্ট তুমি দিচ্ছ! চলেই যদি যাও, এলেই কেন জীবনে! আমি জাস্ট এই অনিশ্চয়তা, হারিয়ে ফেলার ভ’য়ং’ক’র ভয় আর নিতে পারছিনা৷ হারিয়ে ফেলার ভয় কতটুকু কষ্টের বুঝো না তুমি! ”

বুক ফুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল রাদ। ফ্রেশ হয়ে সর্বপ্রথম কাশিশে রুমে গেলো৷ নাকে ব্যান্ডেজ নিয়ে ঘুমিয়ে ছেলেটা। স্নিগ্ধ, স্বচ্ছ মুখ জুড়ে ব্যাথা, ও ক্লান্তির ছাপ! আজ কাশিশের অফিস যাওয়া হবে না৷ এই নাক নিয়ে ভালোই ভুগতে হবে ছেলেটার। এখন এটা ভেবেও রাদের রাগ হচ্ছে ঘুষিটা নাকেই কেন গিয়ে পড়তে হলো? সময় খারাপ হলে সব কিছুই যেন খারাপ হয়! কাশিশকে এক নজর দেখে। বিড়াল পায়ে মায়ের রুমের দিকে গেলো রাদ! অন্যদিন এই সময় জুহা, কাশিশ ওর জন্য ডাইনিং এ বসে ব্রেকফাস্ট একসাথে করবে বলে অপেক্ষা করে। তবে আজ বাড়ির পরিবেশ একদম ভিন্ন। এসব ওর জন্যে হয়েছে, ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।

জুহা রেগে আজ রুম থেকেই বের হয়নি এখনো। রাদ মায়ের রুমে ঢুকে দেখলো। জুহা শুয়ে বেডের কোণা ঘেসে তবে দেখে বুঝার উপায় নেই জেগে না ঘুমিয়ে। রাদ ভেবে নিলো রোজ ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে যাওয়া মানুষটা হয়তো সজাগই কিন্তু চোখ বন্ধ করে আছে। ও একটা টুল নিয়ে বেডের পাশে মার কাছাকাছি গিয়ে বসলো নৈঃশব্দ্যে। টুল রাখার সামান্য একটু শব্দে জুহা চোখ মেলে ছেলেকে দেখে উঠে বসলো। কপট শুদ্ধ রাগে মুখ ফিরিয়ে জানালায় দিকে করে রাখলো। রাদ সেটা দেখে গলা পরিষ্কার করে বিগলিত গলায় বলল,

—” মা, আমি…! মানে আমি জানি তুমি আমার বৌ হিসেবে রাহাকে চাও। সেখানে ইরার কথা শুনে আর কালকে আমার ব্যাবহারে তুমি ভীষণ কষ্ট পেয়েছো। কিন্তু মা আমি অনেক চেষ্টা করেও রাহাকে বোন ছাড়া কখনও কিছুই ভাবতে পারিনি৷ শুধু মাত্র তোমার বোনের মেয়ে বলে মা তুমি আমাকে জোর করো না রাহাকে বিয়ে করতে, প্লিজ। রাহাকে বিয়ে করলে আমি কখনোই মনের দিক দিয়ে ভালো থাকবো না। মানসিক শান্তি পাবো না! কালকে ইরার কোনও দোষ ছিলো না। ভুল আমি করেছি রাগের মাথায়..৷ মা আমি ইরাকে ছাড়া কাউকে নিজের পাশে ভাবতেও পারিনা!”

ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রাদ ইরার সাফাই দিতে দেড়ি করলো না। এবং জুহা যেন কোনও প্রকার ইমোশনাল কথা বলে ওকে আবার বিয়ের জন্য জোর না করে তার আগে নিজেই জুহাকে ইমোশনাল করে দিলো রাদ। সম্পূর্ণবাক্য এটুকু এক নিঃশ্বাসে নির্দ্ধিধায় বলেই থামলো সে। অতঃপর মায়ের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করলো কিয়ৎক্ষন উনার ভাবমূর্তি কিন্তু বিশেষ কিছু বুঝা গেলো না। রাদ ভাবতে লাগলো আর কী নিয়ে ওর মা ভাবতে পারে৷ পরপর কিছু কথা মস্তিষ্কে এলো! মাকে তখনও নিস্তব্ধ দেখে রাদ পুনরায় তেজহীন, মোলায়েম কণ্ঠে বলতে শুরু করলো,

—” আমি জানি মা ইরার কথাটা আমার তোমাকে আগেই বলা উচিৎ ছিলো.. যখন তুমি বিয়ের জন্য আমাকে জোর করছিলে। কিন্তু কিছু সমস্যার জন্য আমি বলতে পারিনি। আমাকে ক্ষমা করে দাও মা! আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি.. আম্মা প্লিজ কিছু বলো? ”

রাদের মাথা ফেঁটে যাচ্ছে মার ভয়ে। মাও কী ইরাকে মেনে নিবে না? একবার মা যদি না বলে দেয় এই পরিস্থিতিতে হয়তো আর কিছু করার থাকবে না। পুরুষ হয়েও ওর হৃদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। সেদিন রাগের বসে বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলাও যে ঠিক হয়নি হারে হারে টের পাচ্ছে সে। ওর মা কী খালামণির কাছে বিয়ের কথা দিয়ে ফেলেছে? তবে সর্বনাশ। নতুন আরেক সমস্যার জন্য শুভকামনা নিজেকে। ভেবেই দাঁতে দাঁত পিষল এছাড়া আর কী বা করার আছে এই মুহূর্তে? যতটুকু প্রবলেম ইরা ক্রিকেট করেছে তার কয়েকগুণ নিজে ক্রিকেট করে বসে আছে ও!

আকস্মিক রাদকে বিস্ময়াবিষ্ট, এবং অবাকের চূড়ায় রেখে দিয়ে জুহা কিছুই না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। রাদ বসে বসে দেখল শুধু টু শব্দ বলার সাহস হলো না। কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। এই মায়ের জন্যেই ইরাকে বারবার চাপ দিয়েছে রাদ ওর কথা বাসায় জানানোর জন্য। কেননা ওর মায়ের এক কথা বসয় হয়েছে উনি রাদের সংসার, বৌ দেখে যেতে চান। মায়ের ইচ্ছের জন্যে, মাকে কষ্ট দিতে পারবেনা ভেবেই তো রাদ বাধ্য হতো ইরাকে বিয়ের জন্য বলতে। কিন্তু সেই ঘুরে-ফিরে ওর মাটাই কষ্ট পেলো। এবং ও জানেও না ইরার সাথে ওর বিয়ে না হলে ও কখনও বিয়ে করতে পারবে কী না। কেননা ইরা তো জানিয়েই দিয়েছে ও বাসায় বলতেই পারবেনা। রাদেরও ইরাকে ছাড়া অন্যকাউকে বিয়ে, সম্পর্ক, সংসার এসব সম্ভব না। আচ্ছা ভালো তো দুজনেই বেসেছিলো তবে আজ দু’জনের প্রতিশ্রুতি মিলছে না কেন? তবে কী ওদের ভালোবাসায় খুঁদ ছিলো? না চাইতেও ভেবে নিলো কিছু এলোমেলো ভাবনা! দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজের রুমে গিয়ে ফোন নিয়ে বারান্দায় গেলো। ইরাকে ফোন দেওয়া দরকার না হলে এই মেয়ের কান্নাকাটি হয়তো থামবেনা!

ইরাকে ফোন দিয়ে ফোন কানে ধরতে ধরতেই ইরা কল রিসিভ করে ফেলেছে। যেন ফোনের উপরেই বসে ছিলো ও একটি কলের অপেক্ষায়। তবে রাদ সাথে সাথেই কিছু বলতে পারলো না। অপাশের হেঁচকি তুলে কান্নার শব্দে কিছু বলা যাচ্ছে না। ইরা একাধারে কেঁদে যাচ্ছে। থামাথামির লক্ষ্মণ নেই। রাদ ওকে সময় দিলো কিয়ৎক্ষণ! ইরাও শুধু কাঁদছে কিছু বলছে না। অতঃপর সেভাবেই অতিবাহিত হয় কিছু সময়! বেশকিছুক্ষণ পর রাদ ম্লানমুখে বলল,

—” স্টপ ক্রাইং ইরা। আমি মারা যাইনি যে এভাবে কাঁদছ!”

ইরা সাথে সাথে কান্না থামানোর চেষ্টা করলো। তবুও যেন থামছে না। অতঃপর সেভাবেই ক্রন্দনরত, রুষ্ট কণ্ঠে বলল,

—” এভাবে আর কখনো বলবা না রাদ৷ আমার কষ্ট হয়.. আমি জানি আমি ভুল করছি! ভুল না অন্যায় করছি তোমার সাথে। কিন্তু আমি নিরুপায় রাদ৷ আমি চাইনা আমাকে ভাইয়ার মতো বাসা থেকে বিতাড়িত করা হোক। তাহলে যত রাগ করেই আমাকে বাসা থেকে বের করে দিক না সবাই। কষ্ট সব থেকে বেশি আমার মা বাবাই পাবে। ভাইয়ার পরে আমি চাইনা সেই কষ্টটা তাদের দ্বিতীয় বার দিতে। কেননা ওরা কতটা কষ্টে আছে আমি সেটা নিজ চোখে দেখেছি। সব যেনে বুঝে একি কষ্ট আমি ওদের কী করে দেই। তুমিই বল প্লিজ! ”

রাদ কিছু বলল না। ইরা এবার নিঃশব্দে কাঁদছে। বেশ সময় নিয়ে যেন গভীর কিছু ভেবে ফেলল। পরপর রাদ অত্যন্ত শীতল কণ্ঠে বলল,

—” তাহলে আমি যে কষ্ট পাচ্ছি তার কী করবে ইরা? ”

ইরা স্তব্ধ হয়ে রইলো এহেন প্রশ্নে! বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে ও। এহেন প্রশ্ন আশায় করেনি ও। তবে প্রশ্নটা যুক্তিযুক্ত বটে! যার প্রত্যুত্তর নেই ইরার কাছে। ইরাকে নিশ্চুপ দেখে রাদ ভীষণ কষ্ট পেল। তবু্ও শান্ত স্বরেই বলল,

—” ঠিক আছে সব বুঝলাম, তুমি কাল আমাকে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছো। তুমি তোমার বাসায় বলতে পারবেনা আমাদের সম্পর্কের কথা। ঠিক আছে মেনে নিয়েছি আমি! তাহলে আবার কেন হাজার হাজার কল ম্যাসেজ করছো আমাকে? কেন ইরা? ”

ইরার এবারো কিছু বলার নেই। শুধু কাঁন্নাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাদ এবার ক্রোধিত কণ্ঠে চিল্লিয়ে বলল,

—” কী হলো, উত্তর দাও?”

ইরা শব্দ করে ফুঁপিয়ে উঠলো। ভাঙ্গা গলায় বলল,

—” আ..আমি ভালোবাসি তোমাকে রাদ!”

রাদ নিজেকে সংবরণ করতে আজ পুরোপুরি ব্যার্থ! ক্রোধে গর্জন করে উঠলো সে,

—” ভালোবাসলে একটি বার অন্তত পক্ষে তুমি আমার কথা ভাবতে ইরা। তুমি, তোমার ফ্যামিলির মধ্যে আমি কই? আদৌও তুমি আমাকে ভালোবাসো ইরা? ভুলে যেও না তুমিই আমার জীবনে প্রথমে এসেছিলে আমি যাইনি তোমার কাছে। আর এখন বিনা দোষে আমাকে শাস্তি দিচ্ছো তুমি। তোমাকে ভ’য়া’ব’হ ভাবে ভালোবাসার শাস্তি! তাহলে কী তোমাকে ভালোবাসাই আমার অপরাধ ধরে নিব? আচ্ছা ঠিক আছে তাও ধরে নিলাম। এটাই আমার অপরাধ এবং তুমি আমার জন্য তোমার আম্মু, আব্বুকে কষ্ট দিতে পারবে না সেটাও মেনে নিলাম। কিন্তু এবার আমাকে একটু একা ছেড়ে দাও প্লিজ। নিজেকে সামলাতে দাও। মুভ অন করতে দাও। আর কখনোই তুকি আমাকে কল দিবে না। আর হ্যাঁ ভালো থাকো! ”

বাক্যসম্পূর্ণ করে রাদ ফোন কেঁটে দিলো। অতিরিক্ত কষ্টে ইরা যেন এবার কাঁদতেও ভুলে গেলো। মনে হচ্ছে ভেতরের সব জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। কী যেন হারিয়ে ফেলছে। উ’ন্মাদের ন্যায় লাগছে! পাগলের মতো ফোন করছে রাদকে! রাদের ফোন বন্ধ বলছে। ইরার নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে। আচ্ছা, এবার কী সত্যি রাদ বিয়ে করে ফেলবে? ভাবতেই ইরা ভেঙে গুড়িয়ে গেলো। কিভাবে দেখবে রাদের পাশে অন্যকাউকে ও! ইরা এবার গলা ছেড়ে কাঁদতে লাগলো। ওর কান্নায় সকাল সকাল সবাই ভয় পেয়ে গেলো। সকলে দৌড়ে এসে দরজা ধাক্কাতে লাগলো। তাতেও ইরার কোনও হেলদোল হলোনা ও ওর মতো চিৎকার করে কেঁদেই যাচ্ছে।

চলবে,