জোনাকি প্রদীপ পর্ব-৪+৫

0
288

#জোনাকি_প্রদীপ (পর্ব ৪)
নুসরাত জাহান লিজা

নীরা চায়ের কাপ হাতে বাবার ঘরে ঢুকল। আজ সবাই ভয়াবহ ব্যস্ত। সকালে বাবার চা দেয়া হয়নি। নীরার ঘুম থেকে দেরিতে উঠার অভ্যাস। তার উপর গতকাল রাতে ছাদে রাত তিনটা পর্যন্ত হৈ রৈ চলেছে। উঠেই শুনল বাবা চা চাইছেন। রান্নাঘরেও ব্যস্ততার রেশ। সকালে খাবার আয়োজন চলছে প্রায় ষাট জন লোকের। আরও অনেকেই আজ দুপুরের মধ্যে আসবে। নীরা ওর ঘরে ওয়াটার হিটারে চা বানিয়ে নিয়ে এসেছে বাবার জন্য আর নিজের জন্য।

“মা, আয়। ভাবলাম আজ আর চা পাব না।”

নীরা হেসে বলল, “বাবা, কয়েকদিন সবাই ভীষণ ব্যস্ত থাকবে। তুমি সকালে আমাকে জাগিয়ে দিও। আমি চা করে দেব।”

চায়ে চুমুক দিয়ে মঈদুল সাহেব বললেন, “তাহলে আমার চায়ের একটা হিল্লে হয়।”

“তোমার শরীরটা এখন কেমন? শ্বশুর হয়ে যাচ্ছ তো।”

“আমি একদম ফিট আছি। নো চিন্তা।”

নীরা মৃদু হেসে বলল, “এই তো চাই।”

চায়ে আরেকবার চুমুক দিয়ে মঈদুল বললেন, “আমি জানি এভাবে বলা ঠিক নয়। তবুও তোর প্রতি আমার পক্ষপাতিত্ব আছে। কেন জানি না, সবসময় নিলয়ের চাইতে আমার স্নেহের সিংহভাগ তুই পেয়েছিস।”

“যেমন মায়ের আছে ভাইয়ার জন্য।”

“তোর আক্ষেপ হয়েছে কখনো?”

“আক্ষেপের জায়গা তুমি পূরণ করে দিয়েছ বাবা। ভাইয়ার হয়তো আছে।”

“ওরটা তাহলে তোর মা পূরণ করে দিয়েছে।”

“আমার কাছে তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা।”

মঈদুল একগাল হেসে বললেন, “তুই দেখিস মা, তুই জীবনে খুব সুখী হবি। পৃথিবীর যত সুখ তোর পাওনা।”

সকালটা চমৎকারভাবে শুরু হলো নীরার। বাগানে এসে দাঁড়াল। আফনানকে গাছে পানি দিতে দেখে সরে এলো। সুন্দর সকালের রেশটা নষ্ট করতে ইচ্ছে হলো না।

***
আফনান নিলয়ের সাথে বেরিয়েছে।

“তুইও এবার বিয়েটা করে ফেল শালা। আর কতদিন ব্যাচেলর থাকবি?”

“আমার সুখের উপরে এত নজর দিস কেন শালা? নিজে করছিস, তাই নিয়ে হ্যাপি থাক না!”

“আফনান, তুই আমার সবচাইতে ভালো বন্ধু। আন্টির শরীরটাও তো দেখতে হবে নাকি!”

আফনান হাঁটতে হাঁটতেই বলল, “তোর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তুই সেইসময় সাহায্য না করলে মা হয়তো আজ..”

“আফনান, গাট্টা খাবি কিন্তু এবার। তুই কিন্তু সব টাকা শোধ করেছিস। আমি কিছুই করিনি।”

“তবুও, সেসময় আমি বেকার ছিলাম। তোর সেই ঋণ আমি কোনোদিন ভুলব না।”

“আফনান, এসব কেন বলছিস? তোর মা কি আমার মায়ের মতো নয়? আর কখনো এসব কথা বলবি না।”

আফনান আর কিছু বলল না। নীরার মুখটা ভেসে উঠল। নীরা ওর চোখের সামনেই হাঁটছে, কথা বলছে, হাসছে তবুও কত অধরা। অবশ্য আগেও মেয়েটা যখন ধরা দিতে এসেছিল, তখনও তো সে অধরাই ছিল। মনে মনে একটা কবিতার লাইন আওড়াল আফনান,

“বন্ধুরা সব বিত্তে বাড়ে, চিত্তে বাড়ে
বাড়ে শনৈঃ গৃহস্থালি,
আমার তবু বয়স হয় না, বুদ্ধি হয় না।”

আসলেই তো ওর জীবনে তেমন কিছুই হলো না!

“নীরাটা কেমন বড় হয়ে গেল। আমি বিয়ে করছি। এবার ওকে একটা ভালো ছেলে, ভালো পরিবার দেখে সমর্পণ করতে পারলে স্বস্তি। মেয়েটা অভিমানী। ওকে বুঝবে এমন একজন মানুষ না হলে সেটা হবে না।”

“হ্যাঁ। এই তো কয়দিন আগেই দৌড়ে বাড়ি মাতিয়ে রাখল।”

“তোর সন্ধানে ভালো ছেলে আছে?”

“কেমন ছেলে চাস?”

“নীরা যেখানে ভালো থাকবে। ওর ইচ্ছেগুলো পূরণ হবে। বিশ্বস্ত হাত, মেয়েটা হৈচৈ ভালোবাসে। একটা পরিপূর্ণ পরিবার থাকবে। সবার ভালোবাসা পাবে এমন।”

“আমি পেলে তোকে অবশ্যই জানাব।”

সন্তর্পণে দীর্ঘশ্বাস গিলে ফেলল আফনান। নীরার যোগ্য সে নয়৷ ওকে সে কখনো ভালো রাখতে পারবে না। ওর মতো একটা ভাঙা পরিবারে মেয়েটাকে সে রাখতে পারবে না। তার থেকে দূরে থাকাই ভালো। একবার অন্তত সামনাসামনি কথা বলার ইচ্ছেটাকে এই ভর দুপুরের সুনসান রাস্তায় মাটিচাপা দিয়ে ফেলল। ওই সুগভীর চোখ, ওই সুমিষ্ট হাসি ওর জন্য নয়। অন্য কারোর। যে নীরাকে পৃথিবীর সব সুখ দেবার যোগ্যতা রাখে!
…….
(ক্রমশ)

#জোনাকি_প্রদীপ (পর্ব ৫)
নুসরাত জাহান লিজা

আজ বাড়িটা জমজমাট। ঝলমলে আলোকসজ্জার পাশা চাঁদের হাঁট বসেছে। অনেকদিন পরে প্রায় সমস্ত আত্মীয়স্বজন একসাথে এসেছে। আগামীকাল বিয়ের ব্যস্ততার সাথে জায়গায় জায়গায় জটলা করে চলছে আড্ডা। দেখা গেল বহুদিন পরে মুখোমুখি হয়েছে অনেকে। স্মৃতির ঝাঁপি খুলে তারা ডুব দিচ্ছে ফেলে আসা সময়ে। সবমিলিয়ে নিলয়ের বিয়ে উপলক্ষে মিলনমেলার আয়োজন হয়েছে যেন।

নীরা, ইরা আজ একসাথে ঘুমাবে। সাথে ইরার ছোটবোন ইলা৷ মাত্র সেভেনে পড়ে। তবে কথাবার্তায় ভীষণ ইঁচড়েপাকা। যেমন ইরার পড়াশোনা এবং ঘরের কাজ কোনোটাতেই তেমন মনোযোগ নেই। ওর মা ওকে বলেন, “কই একটু ভালো মতো পড়ে ভর্তি পরীক্ষাটা দিবি, তা না, আছে টৈ টৈ নিয়ে। ঘরের কাজটা শিখলে তাও পারিস। শ্বশুরবাড়ি গেলে তখন বুঝবি কপালে কী আছে।”

ইরা কিছু বলতেই যাচ্ছিল, তার আগে ইলা বলে উঠল, “আগে থেকেই যদি জানেই শ্বশুর বাড়ি গেলে কপালে দুঃখ আছে, তাহলে আর খালি খালি বিয়ে করবে কেন? বোতল ভর্তি বিষ আছে জানলে কি কেউ সেই বিষ গলায় ঢালবে?”

ইরার মা শাসনের সুরে বললেন, “তুই এত কথা কউ থেকে শিখিস? কানের নিচে চড়িয়ে তোর পাকামো আমি বের করছি।”

ইলা বলল, “পাকামো হোক আর যাই হোক, কথায় লজিক আছে কিনা সেটা বলো।”

বই পড়া আর মুভি দেখার পোকা আছে ইলার, তবে পড়াশোনার চাপে সে সুযোগ ততটা হয়ে উঠে না। কখনো নীরার ল্যাপটপে, কখনো মায়ের মোবাইলে, কখনো টেলিভিশনে দেখা হয়। ডিভিডি প্লেয়ার বহুদিন নষ্ট, ইউটিউব, নেটফ্লিক্সের জামানায় সেটা আর ঠিক করা হয় না৷ তবে এই বাড়ির নিচতলায় একটা বড় লাইব্রেরি ঘর রয়েছে। সেখানে অনেক পুরনো বই যেমন আছে তেমনি নতুন বইও আছে৷ ইলা লুকিয়ে লুকিয়ে ‘তিন গোয়েন্দা’র অনেকগুলো ভলিউম শেষ করে ফেলেছে। এগুলো নীরার সংগ্রহ ছিল। এখন ওর মন জুড়ে কিশোর পাশা’র বিচরণ। আমেরিকার রকি বিচে গিয়ে রাশেদ পাশার বাড়ি খুঁজে বের করে এই তিন বান্দার সাথে কথা বলে গোয়েন্দা দলে যোগ দেয়া যায় কীভাবে সেটা নিয়ে ওর অনেকরকম পরিকল্পনা আছে। ‘তিন গোয়েন্দা’ ওর কাছে এতটাই বিশ্বাসযোগ্য। নিজের বুদ্ধিমত্তার উপরে শান দেয়া শুরু করেছে।

নীরা আপু আর নিলয় ভাইয়ার বন্ধু আফনানা ভাই সেদিন ছাদে কেমন দুখী দুঃখী মুখ করেছিল, এটা সে খেয়াল করেছে। সবদিকে সে তীক্ষ্ণ নজর রাখে। কিশোর পাশা যেহেতু কারো দুঃখী চেহারা নিয়ে ইনভেস্টিগেশন করে না, তাই সে আপাতত করছে না। তবে ইন্টারেস্টিং কিছু চোখে পড়লে সে অবশ্যই আদা জল খেয়া লাগবে। আফনান ইলার কাছে তেমন পরিচিত মুখ নয়, কারণ তার যখন এই বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল, তখন সে একেবারে ছোট। কিছু মনেও নেই। তবে নীরাকে সে ভীষণ পছন্দ করে। ওকে কত কী কিনে দেয়। সবচাইতে বড় কথা, নীরা আপু না থাকলে ওর তো ‘তিন গোয়েন্দা’র সাথেই পরিচয় হতো না।

এখন দেখছে নীরা এপাশের জানাল দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে গভীর দৃষ্টিতে। সে উঁকি দিয়ে দেখল জোনাকি পোকার ঝাঁক৷ তবে বাড়ির আলোকসজ্জার জন্য আজ তেমন আকর্ষণীয় মনে হলো না। চোখ ফিরিয়ে আনতে গিয়ে ইলার চোখ আরও বেশি করে আটকে গেল। জোনাকির ঝাঁকের ঠিক ডানদিকটায় একজন মানুষের অস্তিত্ব বোঝা যাচ্ছে। নীরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে গেলে হয়তো স্পষ্ট দেখা যেত। তবে ইলা অবয়বের আকৃতি হিসেবে হলফ করে বলতে পারে ওখানে আফনান ভাই দাঁড়িয়ে। লোকটার দৃষ্টিও জোনাকিগুলোর দিকেই৷ সে হয়তো জানেও না এই বাড়ির দোতলা থেকে একজন তাকে দেখছে।

***
সকাল থেকে রোকেয়ার মন কেমন অস্থির লাগছে। আজ তার ছেলের বিয়ে। তার মনে নানা চিন্তা উঁকি দিচ্ছে। নিলয়ের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে। আনিকা মেয়েটা একটু চুপচাপ ধরনের। তাছাড়া মেয়ের পরিবার প্রথমে বেঁকে বসেছিল, সেজন্য খুব একটা মন থেকে তিনি এই সম্পর্কটা চাইছিলেন না। তবে ছেলে যেহেতু পছন্দ করেছে, তিনি সেটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। বড় আদরের ছেলে তার।

চিন্তায় একবার আলমারির চাবি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অথচ মঈদুল সাহেবের টাকা বের করা প্রয়োজন, বাইরে লোক অপেক্ষা করছে। নীরা এসে চাবি খুঁজে বের করে দিল।

নিলয়কে দোয়া করে দিলেন বের হবার আগে, তিনি বাড়িতেই থাকবেন আজ। নীরা এসে বলল, “মা, তোমার শরীর খারাপ লাগছে? আমি থাকি তোমার সাথে?”

“না, তুই থাকবি কেন? ভাইয়ের বিয়েতে কত মজা করবি। আমি ঠিক আছে। তাছাড়া বকুল থাকছে, ওর বাতের ব্যথাটা নাকি বেড়েছে৷”

নীরা চলে গেলে তিনি আকুল হয়ে কাঁদলেন। তখন ঘরে বকুল এলো, তিনি মঈদুলের বোন।

“মানুষ কাঁদে মেয়ের বিয়েতে। মেয়ে আর কাছে থাকতে পারে না তাই। তুমি ছেলের বিয়েতে এভাবে কাঁদছ কেন ভাবি?”

রোকেয়া চোখ মুছলেন। একটু হাসার চেষ্টা করলেন।

“ভাবি নিলয়ের তো বিয়ে হয়েই গেল৷ নীরার বিয়ে নিয়ে কিছু ভাবছ?”

“ভালো পাত্র পেলে ভাবা তো যায়ই। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে।”

“ভাবি তুমি সায়মনকে চেনো না? আমার ভাসুরের ছেলে? বুয়েটে পড়ত যে!”

“হ্যাঁ। ওকে তো চিনি। তোমাদের বাড়িতে গিয়ে দেখেছিলাম। অনেক ভদ্র ছেলে।”

“হ্যাঁ ভাবি, যেমন ভদ্র তেমন মেধাবী। দেখতেও মাশাল্লাহ রাজপুত্র। ও পড়া শেষে খুব ভালো চাকরি করছে। বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছে। তো ওর মা, নীরার কথা বলল সেদিন। এত ভালো ছেলে হাতছাড়া করাটা ঠিক হবে না। তাছাড়া ওই বাড়ির সবাই কত ভালো তুমি তো জানোই।”

রোকেয়ার কৌতূহল দেখে বকুল বলল, “আমি ওকে বিয়েতে আসতে বলেছিলাম। আজ এসেছে। নীরার সাথে কথা বলুক। আলাপ-পরিচয় হোক নিজেদের মধ্যে। তাছাড়া নীরাকে অপছন্দ করার কোনো কারণ নেই।”

“সায়মন কই এখন?”

“বরযাত্রীর সাথে পাঠিয়েছি।”

“আচ্ছা। দেখি, নীরা আর তোমার ভাই কী বলে।”

***
বিয়েবাড়িতে এসে আফনানসহ বাকি বন্ধুরা নিলয়কে ঘিরে বসেছে। এই বাড়ির অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের সাথে ইয়ার্কি ফাজলামো, খুঁনসুটি চলছে তুমুল। ঠিক সেই মুহূর্তে ওদের একটু দূরে রাখা চেয়ারগুলোতে আফনানের চোখ আটকে গেল।

নীরা হেসে হেসে সকালে আসা ভীষণ সুদর্শন ছেলেটার সাথে কথা বলছে। এই ছেলের সাথে আজ সকালেই আফনারের দেখা হয়েছে। তখন আফনান বাড়ির সামনে গাড়িতে সব ঠিকঠাক তোলা হয়েছে কিনা সেটার তদারকি করছিল। ছেলেটা এসে ওকে বলল,

“এক্সকিউজ মি, আমি সায়মন। এটা মঈদুল আঙ্কেলদের বাড়ি তো, তাই না?”

“হ্যাঁ। আমি আফনান। মঈদুল আঙ্কেলের ছেলে নিলয়ের বন্ধু।”

সায়মন স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাতটা সামনে করমর্দনের উদ্দেশ্যে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “নিলয়ের ফুপু বকুল আমার চাচি।”

“ও আচ্ছা। ভেতরে যান।”

“আমি আসলে আগে এই বাড়িতে আসিনি। মানে ছোটবেলায় এসেছিলাম। ভুলে গেছি অনেককিছু।”

“এক মিনিট।” বলে আফনান শাফিনকে ডেকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে সায়মনকে বলল, “চলুন, তাহলে আপনাকে ভেতরে পৌঁছে দিয়ে আসি।”

ছেলেটা হেসে আফনানের পিছু নিয়েছিল৷ বেশ প্রাণবন্ত ছেলে। মিনিট পাঁচেকের আলাপেই অনেক চেনা মনে হচ্ছিল যেন।

তখন ভালো লাগলেও এখন নীরার সাথে হেসে কথা বলতে দেখে আফনানের বুকে অদ্ভুত এক বুক চাপা কষ্ট হতে লাগল। সে উপলব্ধি করল, ঈর্ষার একটা ভয়াবহ আগুন যেন আচমকা জ্বলে উঠল হৃদয়ে! এই জাঁকালো বিয়েবাড়ির সমস্ত আলো যেন সহসাই নিভে গেছে। এত আলোর রোশনাইয়ের মধ্যেও আফনানের মন জুড়ে ঘুঁটঘুঁটে এক অন্ধকার ওর সমস্ত পৃথিবীটাকে গ্রাস করল। কষ্ট, এক অবর্ণনীয় প্রগাঢ় ব্যথা বুক জুড়ে!
…….
(ক্রমশ)