ডাক্তার মিস পর্ব-২২+২৩

0
625

#ডাক্তার_মিস
পর্ব ২২

“আমি যে এখনো অতীতই মুখ থুবড়ে পড়ে আছি, বুশরা। টেনে তুলবেন আমায়?”

রায়হানের কন্ঠে কিছু একটা ছিল। এক নিমিষে মনের সব দ্বিধা সরিয়ে এক কঠিন প্রতিজ্ঞা করে ফেললো বুশরা। কি সেই প্রতিজ্ঞা সেটা পাঠক নিশ্চয় আন্দাজ করতে পারছেন।

আর রায়হান? খুব চেষ্টা করছে যাতে ওর অতীতের অনুভুতি, কিংবা বর্তমানের, যাই বলুন না কেন, সেটা যেন হবু স্ত্রীর বিয়ে সংক্রান্ত কোন অনুভুতিতে আঘাত না হানে।

সবার আগে ওরা গেল শাড়ির দোকানে। বুশরার আসলে কেনাকাটার অভ্যাস নাই। এ কয়দিন কেনাকাটায় মূলত শিউলি বেগম আর রুকাইয়াই সবকিছু পছন্দ করেছে, আর বুশরা বাধ্য বালিকার মত ঘাড় নেড়ে সায় জানিয়েছে। আর তাই আজকে ও পড়েছে মহা বিপদে। কোন শাড়িই পছন্দ করতে পারছে না।

এদিকে ঘড়ির কাঁটা তো আর থেমে নেই। অগত্যা রায়হানকে মাঠে নামতে হলো। বেশ কয়েকটা দোকান ঘুরে একটা লাল বেনারসি কিনলো, ঠিক যেন রক্তজবার মত রংটা। এরপর কিনলো একটা আসমানী রঙের কাতান শাড়ী। আর সবশেষে একটা জামদানী শাড়ি, হালকা সবুজ রঙের শাড়িটায় সবুজ কাজ করা।

এরপর রায়হান ওকে নিয়ে গেল জুয়েলারির শোরুমে। গহনাগাটি বানাতে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। একটু আগে শিউলি বেগম ফোন করে জানিয়েছেন যে ওগুলো তৈরি হয়ে গেছে। আসার পথে ওরা যেন সব নিয়ে আসে। সব রেডি করে রাখাই ছিল। ওরা যেতেই সবগুলো বুঝিয়ে দিলো এক এক করে।

হালকা কিন্তু খুব সুন্দর একটা হার দেখিয়ে দিয়ে বুশরা বলল,

“এটা অর্ডারে ছিল না। মনে হয় ভুল করে…”

কথা শেষ করতে না দিয়ে স্বর্ণকার বললেন, “ওটা পরে রায়হান সাহেব অর্ডার করছে ম্যাডাম।”

অবাক চোখে রায়হানের দিকে এক মুহুর্ত তাকালো বুশরা। তবে বাহিরের মানুষজনের সামনে কিছু জিজ্ঞাসা করলো না।

গাড়িতে ওঠার পরে বলল, “চাচীআম্মা এতগুলো গহনা জোর করে বানিয়ে দিলো। আবার ওটা কি দরকার ছিল?”

রায়হান বুশরার দিকে না তাকিয়ে স্টিয়ারিং ঘুরাতে ঘুরাতে বলল, “ওগুলো আপনার চাচীআম্মা দিয়েছে। আর ওইটা আমার পক্ষ থেকে। ওইটুকুনই আমার সামর্থ। বিয়ে করবো এমনটা ভাবিনি তো, তাই সেভাবে সঞ্চয় করিনি কখনো। আর আমার মত চেয়ারম্যানের ইনকাম কতই বা। পছন্দ না হলেও আপাতত রাখুন, পরে টাকাপয়সা জমিয়ে আপনার পছন্দমত কিছু বানিয়ে দিব।”

“পছন্দ হবে না কেন? অনেক সুন্দর আপনার পছন্দ।”

“থ্যাংকস।”

কথাবার্তা জমলো না আর। সারাদিনের ক্লান্তিতে বুশরার প্রচন্ড মাথাব্যাথা। চোখটা বন্ধ করলো তাই। ঘুমিয়ে পড়ল মুহুর্তেই। অনাকাঙ্খিত ঘুমটা ভাংলো যখন তখন ওদের গাড়ি শেখ বাড়ির সদর দরজায়।

অপরাধী মুখ করে বুশরা বললো, “সরি, ঘুমিয়ে গেছিলাম।”

“ইটস ওকে। লাস্ট কদিনে যা যাচ্ছে আপনার উপর দিয়ে!”

বুশরাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে রায়হান চলে গেল ছোট চাচার বাড়ি। তবে যাওয়ার আগে সব প্যাকেটগুলো শিউলি বেগমকে বুঝিয়ে দিল।

সকালবেলা হলুদের শাড়ি সবুজ দেখে রুকাইয়া একটু গাইগুই করলো। ফুলের যে গহনাগুলো অর্ডার দেওয়া হয়েছে তার সাথে হলুদ বা কমলা শাড়ি হলে বেশি মানাতো। ওভাবে প্ল্যান করে অর্ডার দেওয়া হয়েছিল।

“তুই তো জানতিস দোস্ত। তারপরেও সবুজ কেন নিলি?”

বুশরা লজ্জায় বলতে পারলো না যে, রায়হান পছন্দ করে কিনেছে৷ শুধু বললো, “শাড়িটা সুন্দর তো৷”

রুকু অধৈর্যভাবে বললো, “ঠিক আছে, এটা এমনইই নিতিস দোস্ত।”

বুশরাকে লজ্জা পেতে দেখে কিছুটা আঁচ করলেন শিউলি বেগম। মেয়েকে শাসন করে বললেন, “কি দোস্ত দোস্ত লাগায়ে রাখছিস। ভাবি বলবি কাল থেকে।”

“এহহহ, আইছে…”

এবার রুকুকে কানমলা দিলেন তিনি, “জি আইছে। কাল সকালে ফুল ওয়ালাকে ফোন করি বলবি, আগের ডিজাইন বাদ। হলুদের গহনা হবে হলুদ রঙের গাঁদা ফুলের, একটা গোলাপ থাকবে টিকলির ওখানে। আর.. ”

কথা শেষ করতে পারলেন না শিউলি বেগম। তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে রুকু বলল, “বুঝছি বুঝছি, তোমার গায়ে হলুদের ছবি পাঠায়ে দিবনি। বুশরা তোর কপাল খারাপ। আশি নব্বইয়ের দশকের বউ সাজা লাগবে তোর।”

“রুকু তোকে বললাম না ভাবি বলবি? আর পুরানো মানেই কি খারাপ নাকি?”

“থাকনা চাচীআম্মা, ভাবী বলা লাগবে না। আর তুমি যেমন বলবা তেমনই সাজবো।”

“আরেকজনের সাফাই গাওয়া বন্ধ করে নিজের চরকায় তেল দেন। আমি কারো চাচীআম্মা টাচীআম্মা না। মনে থাকে যেন।”

“মানে? তাহলে কি শাশুড়ীআম্মা ডাকা লাগবে?”, হতভম্ব হয়ে প্রশ্ন করলো বুশরা।

আর কথা না বাড়িয়ে রান্নাঘরের দিকে ছুটলেন শিউলি বেগম। অনেক বেলা হয়েছে, রান্নার জোগাড় করতে হবে, দূরের আত্মীয়স্বজনরা আসতে শুরু করবে আজকেই।

রুকাইয়া টিপ্পনী কেটে বললো, ” তুই একটা বলদ। শাশুড়ীআম্মা কোন ডাক হয়?”

বুশরা চিন্তিত কন্ঠে বান্ধবীকে বললো, “সেটাই তো প্রশ্ন আমার।”

“এজন্যই তো তোকে বলদ বললাম। আমার প্রাণপ্রিয় মা জননীর দুই সন্তানের মুখে আম্মা ডাক শুনে মন ভরছেনা আজকাল। তাকে আম্মা ডেকে ধন্য করেন ভাবী সাহেবা।”

নিজের কথা বলার ভংগিমার নিজেই লুটোপুটি করে হাসতে থাকলো রুকু। তবে বুশরার মুখে হাসি নেই। প্রশ্নবোধক দৃষ্টি কেটে গিয়ে সেখানে ভর করেছে হালকা মেঘ। যেকোন সময় বৃষ্টি নামতে পারে। বান্ধবীর এই চেহারার সাথে পরিচিত রুকু।

তাইতো দু’হাত ধরে প্রশ্ন করলো, “মন খারাপ?”

” না তো।”

“তাহলে?”

“এত্ত সুখ কি সইবে আমার দোস্ত?”

ছলছল চোখে বৃষ্টি নামার সাথে সাথেই ওকে জড়িয়ে ধরলো রুকাইয়া।

পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, “আলবত সইবে। আল্লাহ কাউকে একদিকে কম দিলে আরেক দিকে পুশিয়ে দেয়, ভরসা রাখ। অনেক সুখী হবি তুই, আর আমার পাগল ভাইটাও। দেখে নিস।”

শিউলি বেগম কি একটা নিতে এসে দুই সখীর কান্নাকাটি দেখে বললেন, “তোদের না আরো কি কি টুকিটাকি কেনাকাটা বাকি আছে। যাস না কেন? আত্মীয়স্বজন এসে যদি দেখে তোরা এখনো ধেই ধেই করে কেনাকাটা করতে গেছিস শুধু শুধু কথা শুনাবে কিন্তু, এই আমি বলে দিলাম।”

অসন্তুষ্ট কন্ঠে রুকু বলল, “এসব আত্মীয়স্বজন পাও কই আম্মা?”

এসব বাকবিতন্ডার কোন মানে হয়না। তাই ওরা দেরি না করে বেরিয়ে পড়লো গাড়ি নিয়ে। পথে যেতে যেতে রুকু বলল, “তুই আসলেই হলুদে সবুজ শাড়ি পরবি? আজকে নাহয় একটা হলুদ শাড়ি কিনে নে।”

“কেন? সুন্দর না শাড়ি টা?”

“সুন্দর মানে? অনেক সুন্দর। দিয়ে দে আমাকে। হলুদের দিন পরে ফেরত দিয়ে দিব।”

লজ্জাবনত মুখে বুশরা বলল, “উহু। ওটা দেওয়া যাবে না। ভালো লাগলে একই রকম আরেকটা কিনে নে। আরেক পিস আছে দোকানে। সেইম টু সেইম।”

এইবার আসল ঘটনা বুঝলো রুকু। হেসে বললো, “ও আচ্ছা। এই কাহিনী?”

চলবে???

#ডাক্তার_মিস
পর্ব ২৩
আজ সন্ধ্যায় বুশরার গায়ে হলুদ। বুশরার বলছি কারন রায়হানকে এসব ঝামেলার মধ্যে জড়ানো যায়নি। আর তাছাড়া বর কনে একসাথে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান গ্রামে বেশ দৃষ্টিকটু হবে, তাই শিউলি বেগমও চাননি ছেলেকে জোর করতে। সকাল থেকেই বাড়িতে মেহমান গিজগিজ করছে। শেখ পরিবারের সবচেয়ে বড় ছেলে রায়হান। অথছ ওর বিয়েটাই হচ্ছে সবার শেষে। রায়হানের ফুপু, খালা, মামা, সবাই সপরিবারে এসেছেন বিয়েতে, আর চাচারাও তো সব থাকেন একই পাড়ায়।

যাইহোক একেক জনের ছেলের বউয়ের দুধে আলতা গায়ের বরণ। দুয়েকজনের বাচ্চাও হয়ে গেছে, বাকিদের চেহারা থেকে এখনো নতুন বউয়ের আভা যায়নি। এধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে ফুপু, চাচী, মামী, খালাস্থানীয়দের মধ্যে একটা সুক্ষ্ম প্রতিযোগীতা চলে কার ছেলের বউ কত সুন্দরী, সেটা নিয়ে। তাই বউগুলোকে নিয়ে আসেন দামী শাড়ীতে, গহনাতে মুড়িয়ে।

তা যাই হোক, সুন্দর বলতে তারা যা বুঝায় যেই মাপকাঠিতে বুশরার অবস্থান এদের তুলনায় বেশ নিচে। তবে তার চেয়েও বড় কথা, ও কোন ধনী বাবার আদরের দুলালী না। এতিম একটা মেয়েকে ছেলের বউ করে যে শিউলি বেগম বেশ ঠকছেন, তাও আবার মেয়ে যদি সুন্দরী হতো, এধরনের ফিসফাস ভেসে চলছে শেখ বাড়ির বাতাসে।

সরাসরি কেউ না বললেও আকারে ইঙ্গিতে শিউলি বেগমকে কথাটা বলেই ফেললেন তার বড় বোন শেফালি বেগম। নরম মানুষ হলেও রায়হানের মা বিচক্ষণ রমনী। এখনই যদি এসব কথার প্রতিবাদ না করা হয় তাহলে যে এসব বুশরার কান পর্যন্ত পৌঁছাতে যে খুব একটা দেরি হবে না তা বেশ ভাই বুঝছেন তিনি। তাই চুপচাপ খোঁচা হজম না করে সবার সামনেই বলে ফেললেন,

“আপনাগো সবাইর ই হয়ত মনে হইতেছে এই মেয়ের মধ্যে কি এমন পাইলাম আমি যে তারে ছেলের বউ করতেছি। দেখেন বোন, আপনারা যেমন আপনাদের ছেলের জন্য সবচাইতে জব্বর মেয়েটারে বউ করে আনছেন, আমিও তাই। তয় আমার দাড়িপাল্লাটা হয়ত আলাদা। বিয়া খাইতে আইছেন, বিয়া খান, আনন্দ করেন, দোয়া করেন। দাড়িপাল্লা নিয়ে বইসা পড়নের দরকার নাই।”

শিউলি বেগমের কথা কমবেশি গায়ে লাগলো সবারই। উনার বড় ননদ কমলা বানু আফসোস করে বললেন,

“বড় ভাইয়ের ব্যাটার বিয়া খাইতে আইছি। এমনে কথা শুনায়া প্যাট ভরানোর জন্য দাওয়াত দিছিলা ভাবি?”

“আপা, আমি কিন্তু শুরু করিনাই কিছু, আপনারা আমার বাড়ির মেয়ে বউ নিয়ে কথা কইলে তো আমি চুপ থাকমু না।”

“দুইদিনের মাইয়া তোমারে কি বশ করছে ভাবি, আমাগো অপমান করতেছো? এই শিক্ষিত মাইয়া যখন রায়হানের মাথার উপর চইড়া তোমারে লাথি দিবে তখন আইসো না আমাগো কইতে।”

রুকাইয়া মাকে খুঁজতে খুঁজতে এঘরে এসেছিল। দরজায় দাঁড়িয়ে এতক্ষন উত্তপ্ত আলোচনা শুনছিল ও। এবার চুপ করে থাকতে না পেরে বললো,

“গত বছর জানি আপনার বাড়িত বিচার বসছিল। কি নিয়ে সেটা মনে করায়ে দিবো?”

রুকুর মামি বিড়বিড় করে বললেন, “কি বেয়াদব মেয়ে রে বাবা।”

শিউলি বেগম মেয়েকে থামিয়ে বললেন, “আম্মা বড়দের কথার মাঝে কথা কইতে হয় না, যাও এখান থেইকা। মেয়েটারে একা ফালায়ে ঘুরবা না আইজকা।”

রুকু চলে গেল। তবে তার আগেই অপমান হজম করতে না পেরে ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেল ওর ফুপু।

শিউলি বেগম নরম স্বরে বললেন, “ভালো হোক, খারাপ হোক আমার বৌমা তো আপনাগো সংসারে যাইবো না, আমার সংসারে থাকবো। ভালোমন্দ আমারেই বুঝতে দেন। আর আপনাগো কাছে হাতজোড় করতেছি, যা ফিসফিসানি করছেন, এবার থামেন। বাপ মা মরা মাইয়াটার কানে য্যান এসব কথা না যায়।”

তারপর ছোট জায়ের দিকে ফিরে বললেন, “নাজমা তুমি তো মেয়েটারে ছয় মাস মতন দেখছো, কথা কইছো, হাসপাতালেও গেছো মেলাবার, গেরামের মানুষের মুখেও নিশ্চয় শুনছো তাগো ডাক্তার আফার গুনোগান। তুমি কথা কও না ক্যান?”

নাজমা বানু ইতস্তত করে বললেন, “ছোট মুখে আমি কি কইতাম আপা। এই জন্য চুপ আছিলাম। তয় আমার ভুল হইয়া গেছে। মাইয়াটা অনেক ভালো। সবাইই কয়।”

প্রচন্ড ব্যাস্ততার কারনে আর কথা বাড়ালেন না শিউলি বেগম। লেগে পড়লেন তদারকির কাছে। আর মনে মনে প্রার্থনা করলেন যাতে এসব কথা দশ কান না হয়।

সন্ধ্যার পরপরই শুরু হলো গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। সবুজ জামদানীতে, গাঁদা ফুলের গহনায় আর হালকা সাজে বুশরাকে বড্ড স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে। মেয়েটা চুপচাপ স্টেজে বসে আছে। বুশরার স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি জীবনের কয়েকজন বান্ধবী এসেছে আজ সন্ধ্যায়। তাদের মধ্যে একজন একপাশে বসে মেহেদী দিয়ে দিচ্ছে বুশরাকে। আরেক পাশে বসেছে রুকাইয়া।

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটা মুলত মহিলাদের। আত্মীয় স্বজন বাদেও গ্রামের প্রচুর কিশোরী, বধু, বৃদ্ধা মহিলারা এসেছেন তাদের ডাক্তার আপায় গালে একটু হলুদ ছোঁয়াতে। একে একে সবাই এসে হলুদ লাগাচ্ছে, দোয়া করে দিচ্ছে আগামী ভবিষ্যতের।

ওদিকে বিয়ের আগের দিনটাতে অনুভূতির লড়াইয়ে রায়হান বেশ চুপচাপ। গত দুইদিন ধরে ও ছোট চাচার বাড়িতে থাকলেও আজ সন্ধ্যাবেলা সবাই যখন বুশরার গায়ে হলুদ নিয়ে ব্যাস্ত তখন নিজের ঘরে এসেছে রায়হান। ঘরের দরজা আটকে আলমারির দরজা খুললো ও। বিভিন্ন যায়গা হাতড়ে হাতড়ে বের করলো ছোট ছোট নানা স্মৃতিচিহ্ন। সবকিছু এক যায়গায় করে অসহায় ভঙ্গিতে বসে রইলো কিছুক্ষণ। টকটকে চোখজোড়া জ্বলছে অযথাই। অনুভূতির বিষবাষ্প বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে সব ভেঙেচুরে।

অবাধ্য অনুভূতিগুলোর লাগাম টেনে আলমারির একদম নিচের ড্রয়ারটা খুললো ও। তারপর একে একে সব গুছিয়ে রাখলো সযত্নে। এতগুলো বছরে কখনো এসব নষ্ট করার বা ফেলে দেওয়ার কথা মাথায় আসেনি রায়হানের। আজও না। আলমারি লক করে বেরিয়ে গেল নিঃশব্দে, ঠিক যেভাবে এসেছিল।

চলবে..