তুই আমার পর্ব-১৫

0
2003

#তুই__আমার
#লেখাঃ সাফিয়া_জান্নাত_মুন
#পর্ব ১৫

———-
সকাল ৭ টা বেজে ১৫ মিনিট কাব্য উঠে আগে ঘড়ির দিকে তাকালো।
উঠ বসতে সে মেঘার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো কত নিষ্পাপ মেয়েটা আর সে কি না বার বার তার সাথে কিসব করে চলেছে তার মন ও জানে না সে কি করছে??
কাব্য কিছুইক্ষন ধরে মেঘার দিকে তাকিয়ে আছে মেঘা নড়ে চরে উঠতে সে জলদি জলদি করে উঠে দারালো।
মেঘার ঘুম ভাঙ্গা চোখ কাব্যর দিকে পড়তে সে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো।
মেঘা উঠে বসলো আর ভাবতে লাগলো এটা কি হলো??
মেঘা পায়চারী করছে কাব্য প্রায় ২০ মিনিটের উপর হবে ওয়াশরুমে গেছে বের হবার নাম নিচ্ছে না। মেঘার বোধ হচ্ছে কাব্য সারাজীবন ওয়াশরুমে কাটাবে আজ।
মেঘার ভাবনা কে জলানজলি দিয়ে কাব্য কাধে টাওয়াল নিয়ে নিজের চুল ঠিক করতে করতে ডেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দারালো।
মেঘা ভ্রু কুচক্রে কাব্যর দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু কাব্যর কোনো ভ্রুক্ষেপ না দেখে মেঘা এক প্রকার রাগ করে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
!
!
!
!
মিশু ঘুম থেকে উঠে নিজেকে বিছানায় অবিষ্কার করলো।
এইজন্য এতো শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছে সে। তারমানে কবির তাকে রাতের বেলায় যখন সে ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো তখন তাকে কোলে তুলে এনে বিছানায় শুয়ে দিয়েছে।
ভাবতে মিশু খুশিতে লাফ দিয়ে উঠলো আশেপাশে কবির কে খুঁজার চেষ্টা করলো কিন্তু কবির ওয়াশরুমে ভাবতে মিশু ঝটপট উঠে কবিরের সব গুচ্ছিয়ে রাখলো।
আর হালকা হালকা প্রেমের হাওয়া ভাসতে লাগলো মিশু।
!
!
!
!
!
!
কাব্য বেলকানিতে বসে নিউজপেপারে চোখ দিয়ে আছে যদি ও তার ভাব সাবে মনে হচ্ছে অতি মনযোগ সহকারে সে নিউজ এর প্রতিটা হেড লাইন পর্যন্ত পড়ে যাচ্ছে কোনো কিছুই বাদ দিচ্ছে না।
আসলে তার মন শুধু ব্যস্ত হয়ে আছে কালকের ঘটনা টা নিয়ে সারাক্ষণ শুধু ভেবে চলেছে এখন মেঘা তার থেকে দূরে সরে যাবো।

মেঘা এসে কাব্যর সামনে দারালো। কাব্য দেখেও না দেখার ভান করে রইলো।
মেঘা কাব্যর দিকে গোল গোল চোখে তাকিয়ে আছে কাব্য কিছু বলছে না নিউজপেপারের দিকে মনযোগ দিলো যদি সে নিউজের ক ও পড়ছে না।

আপনি কি করছেন??

দেখছো না নিউজ পেপার পড়ছি।

অহ আচ্ছা।

আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি নিউজ টা পড়তে মেঘা।

কাব্যর হাত থেকে নিউজ পেপার টা মেঘা নিতে কাব্য উদ্বিগ্নতা নিয়ে বললো,,আরে পড়তে তো দেও।

নিউজপেপার টা সোজা করে পড়ুন সহজে তাড়াতাড়ি পড়তে পারবেন।

কাব্য একটা হাসি রেখা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে।
মেঘা এবার রেগে বললো,
কি হয়েছে আপনার?

ককই কিছুই না।

কাব্য মেঘাকে পাশ কাটিয়ে ভিতরে আসতে মেঘা আবার তার সামনে এসে দারালো। কাব্য আবার যেতে মেঘা পথ আগলে দারালো।
মেঘা এবার দ্বিগুন রেগে বললো।
থামুন!
কাব্য ভয়ে দারিয়ে আছে।
মেঘার কাব্যর ঠিক পাশে দারিয়ে বললো, আপনি একটু নিচু হোন তো।

কাব্য ভ্রু কুচক্রে তাকলো আর ভাবলো আমাকে থাপ্পড় মারতে তো হাতে পাবে না তাই কত সুন্দর ভদ্র ভাবে বলছে নিচু হোন না আপনায় থাপ্পড় মারবো, এটাতে যদি আমায় ক্ষমা করে দেও তাহলে আমি ১ টা হাজার টা থাপ্পড় খেতে রাজি।
কাব্য দুহাত পিছোনের দিকে মুষ্টিবদ্ধ করে ধরে মেঘার দিকে ঝুকে গেলো ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে সে।
কাব্য ঠিক মেঘার সামনে ঝুকে আছে মেঘা কাব্যর আর একটু কাছে গিয়ে তার গালে হালকা করে নিজের ঠোঁট ছুয়ালো কাব্য মেঘার দিকে তাকাতে মেঘা দৌড়ে নিচে চলে গেলো।

কাব্য অবাক হয়ে দারিয়ে আছে কিছুক্ষন আগে কি হলো তা চোখ বন্ধ করে আবার মনে করার চেষ্টা করলো। আর ভাবতে কাব্য খুশিতে নেচে উঠলো রীতিমতো লাফাতে লাগলো।
কাব্য দারিয়ে না থেকে নিচে যাওয়ার জন্য দৌড় লাগালো।
কাব্য নিচে এসে একটু গম্ভীর হয়ে গেলো এখানে সবাই আছে ড্রাইং টেবিলে বসে সবাই ব্রেক ফাস্ট করছে আরদিন তো কেউ করে না আর আজ
কাব্যকে দারিয়ে থাকতে দেখে তার মা বলে উঠলো কাব্য দারিয়ে কেনো বাবা আয় বস
কাব্য সবার সাথে বসে চুপচাপ ব্রেকফাস্ট করতে লাগলো।
ব্রেকফাস্ট শেষে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
মেঘা নিজের কাজ করছে। কাব্য লিভিং রুমে বসে আছে শুধুমাত্র মেঘার অপেক্ষায়।
মেঘা কাজ করছিলো কোথা থেকে প্রিয়তা এসে বললো,,

শোক্সপিয়ার কি বলছিলো জানো মেঘা??

মেঘা অবাক হয়ে প্রিয়তার দিকে তাকালো আর বুঝার চেষ্টা করলো কি বলতে চাচ্ছে সে।

প্রিয়তা হেসে বললো, একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কখনো নাকি বন্ধু হতে পারে না তাদের মধ্য কোনো অন্য রিলেশন থাকবে।

মানে??

মানে খুব সিম্পল মেঘা আমি আর কাব্য তো ফ্রেন্ড তোমার কি মনে হয় না যে আমাদের মধ্য অন্যকোনো রিলেশন?

মেঘা এবার প্রিয়তার কথায় হেসে ফেললো।
মেঘাকে হাসতে দেখে প্রিয়তা অনেকটা অপ্রসন্ন হলো।
মেঘা হাসতে হাসতে বললো বন্ধুত্ব এর মধ্য ভালোবাসা থাকে এটা জানেন না বুঝি?? সব সম্পর্কের মানে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন হয় যেমন আমি কাব্য চৌধুর স্ত্রী তিনি আমায় যেভাবে ভালাবাসেন আপনায় কিন্তু সেভাবে বাসেন না আপনায় তিনি বন্ধুর নজরে দেখেন কিন্তু আপনি যদি এখন তাকে ভিন্ন ভিন্ন নজরে দেখেন তার দায় তো আর তিনি নিবেন না।

প্রিয়তা কিছুই না বলে লিভিং রুমের দিকে হাটা দিলো।
মেঘা পিছুই পিছুই আসলো মেঘা আসতে কাব্য মেঘার হাত ধরে টান মেরে নিয়ে যাচ্ছে প্রিয়তা রীতিমতো অবাক সে যে এখানে এসেছে তা কাব্য খেয়াল তো দূর দেখে না দেখার ভান করে চলে গেলো।
!
!
!
!
!
কাব্য ড্রাইভ করছে মেঘা চুপচাপ বসে আছে মাঝেমধ্যে কাব্যর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছেও।
কাব্য রোডসাইডের ফাকা যায়গায় গাড়িটা পার্ক করলো।
ভুলবশত কাব্য গাড়ি থেকে নামতে তার মানিব্যাগ টা গাড়িতে পড়ে গেলো। অবশ্য কাব্য আর মেঘা কেউও লক্ষ্য করলো না।

কাব্য আর মেঘা হাতা না ধরে একটু ফাকা রেখে এক সাথে হেটে চলেছে তাদের পাশ দিয়ে শো শা করে গাড়ি ছুটে চলেছে।
কাব্য ও মেঘা সামনে একটা পিচ্চি ছেলে এসে দারালো তার হাতে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ।
ছেলেটা কাব্যকে বললো,,
ভাইজান ভাবি রে দিয়া মনের কথা কইয়া ফেলান।

কাব্য অবাক এতোটুকু বাচ্চার মুখে এমন কথা শুনে কাব্য মেঘা দুজনে গোলগোল চোখে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছে।
কাব্য আর কিছুই না ভেবে ফুলের তোড়া টা মেঘার হাতে দিয়ে দিলো
আর বলতে লাগলো তোকে এখন কত দিতে হবে??

ভাইজান বেশি না ২০০ টাহা দেন।

কাব্য টাকা বের করার জন্য পকেট হাত দিয়ে মানিব্যাগ টা পেলো না।
মেঘা আমি বোধয় মানিব্যাগ টা গাড়িতে ফেলে আসছি।
এই পিচ্চি তুই চল আমার সাথে তোকে টাকা দিচ্ছি আমি ।

মেঘা এখানে দাঁড়িয়ে রইলো।

কাব্য ফুলওয়ালা ছেলে টাকে নিয়ে গাড়ির কাছে গেলো। মানিব্যাগ টা বের করে ছেলেটা কে টাকা দিয়ে। হাসতে হাসতে মেঘার দিকে এগিয়ে আসছে।

মেঘা একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে দারিয়ে আছে।

কাব্য আসছে তার পাশ দিয়ে ব্ল্যাক কালারের গাড়ি জোরে জোরে এগিয়ে যাচ্ছে।।
কাব্য রাস্তার এতো গাড়ির মাঝে এই গাড়ি টাকে বিশেষ ভাবে দেখলো না।
কাব্য মেঘার দিকে এগিয়ে আসছে আর গাড়ি টা মেঘার দিকে।

চলবে_____________________