তুই তারারে ভিনদেশী পর্ব-১৪

0
833

গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী❣️💫

লেখিকাঃ- konika islam (sanju)

পর্বঃ14

আফরিন বলে

—– আমি কোথাও যাবো না। আর ভুল করে এই এনাকন্ডার সাথে তো নাই। আদিত্য বলে

—- আমি এনাকন্ডা? আফরিন হাসি দিয়ে বলে

—- হ্যা আপনি একটা এনাকন্ডা। কালকে আমাকে ঘুরতে নেওয়ার নাম করে,, খুন করে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসেন। আহান বলে

—- হুয়াট,,,, কি বলছো। আদিত্য বলে

—- আরেকটা বাজে বুকবে তো কাঁচা চিবিয়ে খাবো। আফরিন বলে

—- এনাকন্ডারা কাঁচায়ই খায়,, ওরা রান্না করতে পারে না। আমরা সবাই সেটা জানি। কৌশাল হাসতে হাসতে চেয়ার টেনে বসে পরে আর বলে

—- চুপ যাও আমি আর পারছিনা। অন্য বলে

—- আফরিনরে কাল অব্দি না তুই আদিত্য ভাইয়াকে ভয় পেতি আর আজ?! অহনা বলে

—- কোথায় আছেনা,, পেয়ার কিয়া তো ডারনা কেয়া। আফরিন রেগে বলে

—- সব গুলি আমার সাথে মজা নিস? আদিত্য বলে

—- কালকে সকাল ১১টায় যেন সবাইকে ভার্সিটির বাইরে পাই আমি কাড় নিয়ে আসবো। আহান কৌশাল চল। বলেই কেন্টিন থেকে বেড়িয়ে আসে আদিত্য। আফরিন বুঝতে পারলো যে কালকে তাকে আদিত্য যে করেই হোক নিয়ে যাবে। আফরিনও কম যায় না সেও যাবে না ফাইনাল।

__________

রাতে অনলাইনে আফরিন অহনার আর অন্যর সাথে কথা বলছে গ্রুপে। তখনই আদিত্য ফোন দেয় কিন্তু আফরিনের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। প্রায় ৩ ঘটা পর আফরিন কথা বলা ওফ করে দেখে আদিত্যর নাম্বার থেকে ১০০+ কল আসছে। আফরিন ভয়ে ঢুক গিলে। মেসেজ দেখে আরো ভয় পেয়ে যায়। আফরিন বাচ্চাদের মতো হামাগুড়ি দিয়ে বেলকনির দরজাটার দিকে যায়। বেলকনিতে থেকে সে উুঁকি দিতে যাবে তখনই কারো পায়ের সাথে ধাক্কা লাগে। আফরিন তাকিয়ে দেখে আদিত্য। ভয়ে চিৎকার করার কথা কিন্তু আফরিনের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে ব্যাস্ত চাঁদের আলোয় আদিত্য কে দেখতে। পরণে একটা গ্রে কালের টি-শার্ট। সাথে কালো টাউজার। এক অন্য রকম সুন্দর লাগছে আদিত্য কে। আদিত্যর সেম মনে হচ্ছে একটা বাচ্চা তার সামনে হামাগুড়ি দিচ্ছে। আফরিন পড়া ছিল মিকি মাউসের গেন্ঞ্জি, আর থ্রি কোয়ার্টার পেন্ট । গোসল করাতে চুলগুলো ছিল খুলা। আর মাথায় ছিল বাচ্চাদের হেয়ার বেন্ড যেটা অনুর। আদিত্য আফরিনের দিকে তাকিয়ে আছে। আফরিনের হুশ আসতেই আফরিন বলে

—- আপনি আপনি এখানে কিভাবে? আদিত্য বলে

—- উড়ে উড়ে আসছি। ফোন ধরোনি কেন? আফরিন এবার ভাব দেখিয়ে বলে

—- আমার ইচ্ছা। আদিত্য আফরিনের বেলকনিতে রাখা গোলাপ _গাছ তোলে বলে

— এটা তোমার মাথায় ফাটিয়ে তোমার ইচ্ছা বের করছি। আদিত্যর হাতে গাছের কাটা লেগে ভালোই কেটে গিয়েছে তার সেই দিকে খেয়াল নেই। আফরিন তাড়াতাড়ি করে উঠে বলে

—- আমার ফুল গাছ।কিন্তু আদিত্যের হাতের কথা মাথায় আসতেই সে তারাতাড়ি টবটা নিয়ে সাইডে রাখে। হাতের মাঝে মাঝে পুটো হয়ে রক্ত বের হচ্ছে অনেক বেশি যে তা না সামান্য কিন্তু এটা দেখেই আফরিনর ভয় লাগছে কারণ তার ফেবিয়া আছে। তাড়াতাড়ি করে আদিত্য কে নিয়ে রুমে যায়। ফ্রর্স্ট-এড বক্স বের করে। হাতে খুব সাবধানে ড্রেসিং করছে। আদিত্যও বাঁধা দিচ্ছে না নিজে থেকে। এমন কেয়ার সে আফরিনের থেকে আগে পায় নি। দুজনেই চুপ চফরিন নিজের মতো কাজ করছে। আদিত্য নিরবতা ভেঙে বলে

—- যদি জানতাম এমন হাত কাটলে তুমি এতো কেয়ার করবে তালহে প্রতিদিন হাত কাটতাম। আফরিন রাগী চোখে তাকায় আদিত্যর দিকে। আদিত্য বলে

আদিত্যঃ এই আফরিন শুনো আমি মেঘ হয়েগেলে তুমি বৃষ্টি হয়ে যেও। বিশ্বাসে না পরো তবুও নিশ্বাসে থেকে যেও!! 🥺❤️

আফরিনঃ আপনার সবটা জুড়ে রবে আফরিনের বসবাস হোক সেটা নিশ্বাসে কিংবা বিশ্বাসে।

আদিত্যঃ তাহলে বলে দাও না সেই ম্যাজিকাল ৩টা শব্দ!!

আফরিনঃ বললেইতো বলা হয়ে যায়। তাই থাক না কিছু অজানা……। আফরিন সব আনমনেই বলছে আদিত্য একমনে তাকিয়ে আছে আবার সব নিরব। ঔষধ লাগানো হয়ে গেলে আফরিন উঠে দাড়ায়। আদিত্য শীতল কণ্ঠে বলে

—- আফরিন। আফরিনের কাছে এই ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা নেই। আফরিন পিছনে ফিরে বলে

—- কি হয়েছে? আদিত্য বলে

—ফোন!! আফরিন বলে

—- অহনাদের সাথে কথা বলছিলাম খেয়াল করিনি। আপনি এখানে কিভাবে। আদিত্য বলে

—- আহান আর কৌশাল কোথায় থেকে যেন একটা মই নিয়ে এসেছে। আর তুমি ফার্স্ট ফ্লোরে থাকো তাই বেশি কষ্ট করতে হয়নি। আফরিন বলে

—- হ্যা হয়েছে এখন বাসায় জান। আদিত্য আফরিনের বিছানায় ঠুস করে শুয়ে বলে

—- না এতো কষ্ট করে আসছি একটু না থেকেি কি চলে যাবে!!!! আচ্ছা আমার খুদা লাগছে। কি খাবো? আফরিন বলে

—- বক্সে নাপা, নাপা এক্সটা সব আছে। আর সেভলোনও আছে সেটা খেয়ে আপনার ব্রেনটা পরিষ্কার করেন। আদি যেন এখন এইসবে অবস্থ। আদি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে

— কালকে কি পরবা? আফিরন ভ্রু কুচকে বলে

— কেন? আদিত্য বলে

— কাপালরা যেমন সেম সেম করে আমার করলাম। আফরিন একটা হাসি দিয়ে বলে

—- আমি লাল লুঙ্গি আর লাল শার্ট পরবো। আর মাথায় একটা লাল গামছা বাঁধবো। আদিত্য আফরিনের এমন কথা শুনে হাসবে নাকি রাগ দেখাবে বুঝতে পারছে না।সেদিন আদিত্য আফরিনের সাথে ৩য় ছোট খাটো একটা বিশ্বযুদ্ধে শেষ করে বাসায় ফিরে যায়।

____________

পরের দিন সকালে সবাই সেখানে উপস্থিত থাকলে আফরিন ছিলো না । সে নাকি ক্লাসে চলে গিয়েছে। আদিত্য এতে বাঘের মতো ক্ষেপে যায়৷ আফরিন ঠিক সময় ভার্সিটিতে এসে ক্লাসে ঢুকে যায়। অহনা অন্য বারণ করলে আফরিন বলে

— তোরা যা আমি যাবো না। আদিত্য বলে

—- তোরা থাক আমি নিয়ে আসছি। আফু বেইবি তোমাকে ছাড় দিতে দিতে বেশি বেশি জরে ফেলছো।আফরিন কলম কামড়ে ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে স্যারের দিকে পড়া কিচ্ছু বুঝছে না সে। অহনা আর অন্যা কেও সেই মিস করছে। তখনই আদিত্য ক্লাস রুমে আসে। স্যারও কিছু বলে না। সরাসরি আফরিনের সামনে এসে। আফরিনের ব্যাগ গুছিয়ে ভর ক্লাসের মধ্যে কুলে তুলে নিল। আফরিন বলে

—- এই এই কি করছেন। নামান আমাকে সবাই দেখছে। আদিত্য বলে

—- সেটা ত্যারামি করার আগে ভাবা উচিত ছিল। স্যারও চুপ কারণ আদিত্যকে সবাই বাঘের মতো ভয় পায়। আদিত্য কালকেই বলে দিয়েছে আজকে তারা ৬জন ক্লাস করবে না। স্যার ও এইটার জন্য প্রস্তুত ছিল। আদিত্য আফরিনকে কোলে নিয়ে বলে

—- স্যার আসি প্রথম ডেটে যাচ্ছি সবাই দোয়া কর। ক্লাসের সবাই নিরব দর্শক। কেউ আদিত্যর জন্য কিচ্ছু বলতে পারে না। আদিত্যর বাবার ডুবাইতে বিজনেস সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটা নামি দামি শহরে দাপট করা একজন বিজনেস ম্যান। আর ভার্সিটির৷ প্রায় ৭০% টাকা ব্যায় করে সব ছাত্র ছাত্রীদের পড়ালেখার সুবিধার জন্য। তাই আদিত্যর দাপট টা একটু না প্রখর । আদিত্য আফরিনকে কোলে করে নিচে নামছে আর বলছে

—- তোমাকে ইচ্ছে করছে এখন মাথায় তুলে আছাড় মারতে। আফরিন ভয়ে ঢুক গিলে বলে

—- না না,, প্লিজ লক্ষ্মী ভাইয়া। ভাইয়া কথাটা শুনে আদিত্য থেমে যায় আফরিনের দিকে তাকিয়ে বলে

—– আমি তোমার ভাই না,,, দুইদিন বাদে বর আর চরদিনের দিন তোমার বাচ্চার বাবা। আফরিন ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলে

—- আপনাকে বিয়ে কে করবে!!?? আর বেবি হতে ৯/মাস লাগে। আদিত্য বলে

—-দরকার হলে এডপ্ট করব। আর তুমি না,,,,,,

চলবে।