#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 12
-হ্যাঁ আমি। কেনো বেশি প্রবলেম করে ফেলছি নাকি? পারসোনাল মোমেন্টে এসে বুঝি বিরক্ত করে ফেললাম? চোখ মুখ লাল করে বললাম।
-ননাহ ভাইয়া।
-এরপর ইফাজ বলল, দেখ আয়াজ যা হওয়ার হয়েছে। এমনিতে আজ নাহয় কাল ঠিকি সবাই জানতে পারতো। আর আমিও দীর্ঘদিন যাবত আজিফাকে ভালোবাসি। সো প্লিজ মেনে নে?
-আয়াজ এখোনো চোখ মুখ শক্ত করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।
-আর এদিকে আজিফা কাঁদো কাঁদো হয়ে গিয়েছে। এই বুঝি কেঁদে দিবে।
-আয়াজ এবার ফিক করে হেঁসে দিলো। অনেকক্ষণ হাসিটা চেপে ধরে রেখেছিলো।
-আয়াজকে হেঁসে দিতে দেখে ইফাজ যেনো স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।
-আয়াজ বলল প্রেম করছিস। এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে করছিস কেন? তোরাতো আর ভুল করছিস না। ভালোইতোবেসেছিস! অন্যায়তো করিস নি। ভালোবাসাতো আর অপরাধ না। বাসায় গিয়ে বিয়ের বন্দবস্ত আমি করছি। ক্যারি অন।
-আজিফা তো খুশিতে কেঁদেই দিলো। ভাইয়া কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বলেই আয়াজকে জড়িয়ে ধরলো।
-হয়েছে। পাগলী এভাবে কাঁদতে হয় নাকি।
-আর এদিকে আঁখি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কান্ড দেখছে।
—-
দুপুরে সবাই রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। সবাই খাওয়ার মাঝে আঁখি কিছু একটা ফিল করে। ব্যাপারটা কি বুঝতেই আঁখির যেনো খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
-আয়াজ ব্যাপারটা খেয়াল করে। দেখলো না খেয়ে খাবার গুলো নাড়াচাড়া করছে। আর কিছুক্ষণ পর পর পেট চেপে ধরছে। হয়েছে টা কি মেয়েটার। খাচ্ছে না কেন? মনে মনে বলল। তাই আয়াজ জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে, খাচ্ছিস না কেন?
-এইতো খখখাচ্ছি।
সবাই খেয়ে উঠে চলে যেতে লাগলো। কিন্তু আঁখি উঠছে না বসে আছে।
-তখন আরিফা জিজ্ঞেস করলো, কিরে হয়েছে বসে আছিস কেন? উঠ! সবাইতো খেয়ে চলে যাচ্ছে।
-আমি চুপ করে আছি। আর ছলছল চোখে আরিফা আপুর দিকে তাকালাম।
-আয়াজ কিছু একটা বুঝতে পেরে আজিফা কে বলল তুই যাও আমি দেখছি। এরপর আরিফা যেতেই, আয়াজ আঁখিকে বলল এখানে বস আমি যাব আর আসবো। বলেই একটা ফার্মেসীতে চলে গেলো কিছুক্ষণ পর এসেই আঁখিকে বলল নে ধর এটা। একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো।
কিন্তু আঁখি উঠছেই না।
-তাই আয়াজ বলল লজ্জার কিছুই নেই। ইটস এ নরমাল। বলেই আঁখিকে দাঁড় করিয়ে গায়ের থেকে জ্যাকেটটা খুলে আঁখির কোমড়ে বেঁধে দিলো। আর আয়াজ আঁখিকে নিয়ে রিসোর্টে দিকে রওনা হলো।
-এরপর আঁখি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে রইলো। কারণ আঁখির অসম্ভব পেট ব্যাথা করছে। কাউকে বলতেও পারছে না। তাই চুপচাপ পেটে বালিশ চেপে শুয়ে আছে।
-আয়াজ আঁখির রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছে, দেখলো আঁখি হাত পা গুটিয়ে শুয়ে আছে। তাই আয়াজ আঁখির রুমে ঢুকলো, আর আঁখির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
-মাথার উপর কারো ছোঁয়া লেগে আঁখি চোখ মেলে তাকালো। আর দেখলো মাথার কাছে আয়াজ ভাইয়া বসে আছে।
-আয়াজ জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে? বেশি খারাপ লাগছে।
-আঁখি মাথা নেড়ে না বুঝালো।
-কিন্তু আয়াজ ঠিকি বুঝেছে আঁখি মিথ্যে বলছে। তাই জিজ্ঞেস করলো ব্যাগের ভেতর পেইন কিলার কিনে দিয়েছিলাম। খেয়েছিস?
-জ্বি!
-আমি গরম দুধ পাঠাচ্ছি ওটা খেয়ে নিবি।
-আআচ্ছা।
-এরপর আয়াজ মাথায় চুমু দিয়ে বাইরে চলে গেলো।
-আয়াজ দুধ পাঠাতেই সেটা আঁখি ঢকঢক করে খেয়ে নিলো।
পরের দিন সবাই সকালে বেরিয়েছে। পুরো এলাকাটি যেনো মেঘের চাদরে গিরে আছে। সবাই একসাথে ঘুরছি আর সুন্দর সুন্দর পিক ওঠাচ্ছি। আয়াজ দুর থেকে আঁখির বিভিন্ন এক্সপ্রেশনের ছবি তুলে নিয়েছে। সকাল ১১:০০ বাজে। সবাই তখন হাঁটাহাঁটি করে ক্লান্ত। তখনই ইফতি একটা আইসক্রিম স্টল দেখতে পেলো। আর ইফাজ কে বলল সে আইসক্রিম খাবে। আর ওর দেখাদেখি তে বাকিরা বলছে তারাও খাবে।
-ওকে ওকে। খাবে! দাঁড়াও আনছি।
-আর তখনই আঁখি বলল ইফাজ ভাইয়া আমার জন্য কিন্তু চকলেট ফ্লেভারের টা আনতে হবে।
কথাটা শুনেই আয়াজ সাথে সাথেই আঁখির দিকে চোখ গরম করে তাকালো। আর ইফাজকে বলল
-কোনো দরকার নেই ওর জন্য আইসক্রিম আনার। বাকি সবার জন্য আনলেও ওর জন্য আবার কোনো প্রয়োজন নেই।
-কিন্তু কেন?
-আমি মানা করেছি তাই।
-এটা কোনো কথা! সবাই খাবে মেয়েটা কি দোষ করছে। সবকিছু নিয়ে তোর বাড়াবাড়ি না করলে হয় না?
-না হয় না। তোকে আনতে মানা করেছি মানে আনবি না। এতো কথা কিসের? কথাটা একটু জোরেই বলল।
-ইফাজও আর কিছু না বলে চুপচাপ সেখান থেকে খেঁটে পরলো।
এদিকে আয়াজ সবার আড়ালে আঁখিকে হুঁশিয়ার করে দিলো, যেনো আঁখি একদিন কোনো ঠান্ডা জাতীয় কিছু না খাই।
-যদি খেয়েছিস তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। কথাটা যেনো মাথায় থাকে।
-হুম
এদিকে সবাই আইসক্রিম খাচ্ছে। আর আঁখি বসে বসে স্যান্ডউইচ খাচ্ছে। আয়াজ আঁখিকে কিনে দিয়েছে।
পরেরদিন যখন তারা ঘুরতে যায়, তখন আঁখি খেয়াল করে কিছু মেয়ে আয়াজের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। আঁখির যেনো মেজাজ গরম হয়ে গেলো।
-শাঁকচুন্নি মেয়ে কোনেকার। দেখো দেখো কিভাবে আয়াজ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। জীবনে ছেলে দেখেনি মনে হয়। আর উনাকে দেখো, এতো স্মার্ট করে বের হওয়ার কি আছে। সব মেয়েদের রুপ দেখানোর ধান্দা মনে মনে এভাবে বকতে থাকে।
এদিকে আয়াজ খেয়াল করলো, আঁখি কিছু মেয়ের দিকে চোখমুখ লাল করে তাকিয়ে আছে। তাকিয়ে দেখলো, মেয়েগুলো তার দিকে ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছে।
-আঁখির দিকে চোখাচোখি হতেই দেখলাম, আমার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
-আমি জাস্ট অবাক! যে মেয়ে আমার সাথে ঠিক মতো কথা বলতে পারেনা আর সে মেয়ে নাকি আমাকে চোখ গরম করে তাকালো। হাও?
-তাহলে কি পিচ্চি জেলাস হচ্ছে। পিচ্চির মনে কি তাহলে আমার জন্য ফিলিংস তৈরি হচ্ছে। ভাবতেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো। গেট রেডি! এবার শুধু তোকে আমার করার পালা।
এভাবে হাসি আনন্দ আয়াজের আঁখির প্রতি কেয়ার মিষ্টি মিষ্টি ভালোবাসা সব মিলিয়েই ছুটিটা কেটে গেলো। এখন শুধু বাড়ি ফেরার পালা। সবাই যার যার লাগেজ গোছাচ্ছে। কারণ সকালেই তারা রওনা দিবে।
পরেরদিন…
সবাই ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে গাড়িতে উঠে রওনা দিলো। আঁখি প্রকৃতি দেখছে ফিল করছে। এতো সৌন্দর্য যত দেখি ততই যেনো ভালো লাগে। হঠাৎ আঁখির মাঝরাস্তায় যেনো গা গুলিয়ে উঠলো। সাথে সাথেই মুখ চেপে ধরেই গাড়ির জানালা দিয়ে বমি করতে লাগলাম।
-আয়াজ আঁখিকে এভাবে বমি করতে দেখে তাড়াতাড়ি গাড়িটা রাস্তার এক পাশে সাইড করলো। আর হন্তদন্ত হয়ে আঁখির মাথায় দিলো, আর জিজ্ঞেস করলো
-কি হয়েছে? খারাপ লাগছে?
–কিন্তু আঁখি যেনো বমির চাপে কোনো কথায় বলতে পারছে না। গড়গড়িয়ে বমি করেই যাচ্ছে।
-আয়াজ আঁখির পিঠে মালিশ করতে থাকে। তারপর আস্তে আস্তে শান্ত হয়।
আসলে এ কইদিন একটু ফাস্টফুড খাওয়ায় পেটে সহ্য হয়নি। তাই হয়তো এমন বমি হচ্ছে।
-এরপর আয়াজ পানির বোতলটা নিয়ে পানি খাওয়ালো। তারপর সিটের সাথে হেলান দিয়ে রেস্ট নিতে বলল।
-আঁখিও সিটে হেলান দিয়ে রেস্ট নিচ্ছে। আর এক সময় ঘুমিয়ে পরলো। কিন্তু ঘুমিয়েছে বড় কথা নয়। বারবার ঢুলতে ঢুলতে মাথাটা এদিক ওদিক পরে যাচ্ছে।
-আর তাই আয়াজ মাথাটা নিয়ে তার কাঁধে রাখলো। এভাবে সারা রাস্তা ঘুমিয়ে এসেছে।
বাসায় এসে সবাই ফ্রেশ হয়ে নিলো।
এদিকে আরিফারও শ্বশুর বাড়ি ফেরার পালা। তাই সেও ব্যাগপাতি গোছাচ্ছে। কারণ পরেরদিন ই চলে যাবে।
রোজিনা চৌধুরী এসে আরিফাকে বলল, কিরে তুই নাকি কালকেই চলে যাবি?
-হ্যাঁ আম্মু। চলে যাবো।
-কেনোরে আর কটাদিন থাকনা। কতোদিন পর এলি।
-আম্মু থাকতে তো ইচ্ছে করে? কিন্তু কি করবো বল? তোমাদের জামাইয়ের তো অফিস। অলরেডি ওয়ান উইকেরও বেশি থেকে গেছি। আর ইলহানের ও স্কুল। প্রায় অনেকদিন গ্যাপ পরে গিয়েছে। এতোদিন তো আর স্কুল মিস দেওয়া সম্ভব না।
-হুম মন খারাপ করে বলল
-তাক আম্মু মন খারাপ করো না। ইলহানের এক্সাম শেষ হলেই আবার আসবো। এবার একটু হাসোতো? হাসো!
-রোজিনা চৌধুরী ও হেসে দিলেন।
চলবে
#তুই_যে_আমারই
#আঁখি আজমীর নুরা
part 13
আরিফা চলে যাওয়ার পর অনিলা আর আঁখির আম্মু আব্বুরও যাওয়ার দিন ও গড়িয়ে এলো। যেদিন অনিলা চলে যাবেন ঠিক তার আগেরদিন আয়াজ ইফাজ আর আজিফার বিয়ের কথাটা তুলে ধরে। ইফাজ যে দীর্ঘদিন যাবত আজিফাকে ভালোবাসে সেটাও বলে।
-অনিলা বলল এটাতো আরো খুশির খবর। আমার ভাতিজি আমার কাছে আসবে। ঘরের মেয়ে ঘরে থাকবে।
-তখনই রোজিনা চৌধুরী বললেন কিন্তু ইকবাল? তাকেতো জানানো হয়নি। সে কি মানবে।
-অনিলা বলল মানবে না কেন? আমার ভাতিজির কোথাও খুঁত আছে নাকি? রূপে গুণে সবই আছে। আর ভাবি তুমি কি ইকবালকে চিনোনা নাকি ও কেমন?
-আরে আপা তা না। তবুও ছেলেতো ওনার। জন্ম থেকে লালনপালন করেছে। বড়ো করেছে। তার ওতো ছেলের বিয়ে নিয়ে একটা স্বপ্ন নিজের পছন্দ অপছন্দ আছে।
-ভাবি ও তুমি ভেবো না। ইকবালের সাথে আমি দীর্ঘদিন ধরে সংসার করছি, ওকে আমি চিনি কেমন মাইন্ডের পুরুষ। চিন্তার কিছুই নেই। আমি বাসায় গিয়ে ওকে জানাবো। দেখে নিও ঠিকি মেনে নিবে।
-সবকিছু ভালো হলেই ভালো।
-তখনই আয়াজ বলল, আমি চাচ্ছি এখনই ওদের বিয়ে দিতে। এনগেজমেন্ট করে রেখে দিতে। পরে দুইতিনমাস পর ওদের বিয়েটা হবে। কারণ যেহেতু আজিফা আমাদের ছোটো মেশে ওদিকে ইফাজও সবার বড়ো সন্তান। সবার কম বেশি প্লেনিং ও আছে। ততদিনে ওরাও নিজেরাও নিজেদের চিনলো জানলো। কিরে ইফাজ তোর কোনো আপত্তি আছে?
-আরে নাহ আয়াজ। আমার কোনো আপত্তি নেই। বরং আমি নিজেও এটাই চাইছি। কথা গুলো তুই না বললেও আমি ঠিকই এখনি বলতাম।
-তাহলে আর ঝামেলা কিসের বললেন রোজিনা চৌধুরী। ইকবালকে জানিয়ে ওর কাছ থেকে মতামত নুশে ভালো একটা দিনক্ষণ দেখে ওদের এনগেজমেন্টের ডেটটস ফিক্সড করে নিবো। কি বলেন আপা?
-হ্যাঁ ঠিকি বলেছেন।
পুরো বাসাটা যেনো আবার জিমজিমে হয়ে গেলো। এতোদিন সবাই ছিলো আর তাই বাসাটাও জমজমাট ছিলো। এখন কেমন যেনো নিরব হয়ে গেলো।
এদিকে আয়াজ অফিস গেলো। আর ওই সময় আয়াজের পিএ নুহাশ হন্তদন্ত হয়ে আয়াজের কেবিনে ঢুকলো। আর বলল স্যার রিয়াদ সরকার নাকি, চোরা মালগুলো আজকেই বাজারজাত করছে।
-হুয়াট
জ্বি স্যার!
-ওকে আমি দেখছি।
আসলে রিয়াদ সরকার হচ্ছে আয়াজের বিজনেস পার্টনার। বাট বিজনেসে অতটা সাফল্য লাভ করতে পারেনি। আয়াজকে এভাবে সাফল্যের উপরে উঠতে দেখে সেটা রিয়াদের সহ্য হতো না। আর তাই একদিন আয়াজের ম্যানেজার আশরাফকে কিডন্যাপ করে ফেলে। আর আশরাফের কাছে আয়াজে বিজনেসের ইমপর্টেন্স ডকুমেন্টস গুলো খুঁজতে থাকে। কিন্তু আয়াজের ম্যানেজারটা অনেক ভালো এবং বিশ্বস্ত মনের মানুষ ছিলেন।
তিনি কিছুতেই বিজনেসের ডকুমেন্টস গুলো দিতে রাজি ছিলো না।
যার কারণে রিয়াদের লোকেরা আশরাফকে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েনি। তার একটাই কথা ছিলো সে মরে গেলেও কিছুই শিকার করবে না এক সময় রিয়াদ সরকার আর না পেরে আয়াজের ম্যানেজারকে গুলি করে হত্যা করে।
এই গঠনার পর থেকে আয়াজ আর কোনোরকম রিয়াদ সরকারের সাথে বিজনেস ডিল করে না। এবং বিভিন্নভাবে রিয়াদের বিজনেসের ক্ষতি করতে থাকে। আয়াজের এই ম্যানেজার হত্যার বিষয়টি সকল বিজনেস পার্টনারের কানে চলে যায়। যার ফলে সকল বিজনেস পার্টনাররা রিয়াদের কাছ থেকে শেয়ার হোল্ডার তুলে নেয়। এতে করে রিয়াদ সরকারের বিজনেস দিন দিন ডাউন থেকে ডাউন হতে থাকে। এরপর থেকে আয়াজ হয়ে ওঠে রিয়াদের শত্রু। আয়াজের ম্যানেজারকে খুন করে বিদেশ পালিয়েছিলো। তবে এখন দেশে ফিরেছে। তার কালো টাকার ব্যাবসা আর আয়াজের ক্ষতি করতে। কিন্তু আয়াজ যে গভীর জলের ফিস সেটা হয়তো রিয়াদ সরকারের জানা ছিলো না।
এদিকে আয়াজ সব ব্যাবস্থা করে ফেলেছে। যেখান থেকে রিয়াদ সরকার চোরা মাল বাজারজাত করবে। আয়াজ সেই গোডাউনটা পুলিশ দিয়ে চারদিক থেকে গিরে ফেলে। এখন শুধু একশন নেওয়ার পালা।
পুলিশ আর আয়াজ গোডাউন থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। রিয়াদ সরকার তার দলবল নিয়ে ভিতরে ঢুকতেই পুলিশ তাদের একশন শুরু করে দেয়।
এবং পুলিশ রিয়াদসহ বাকি সবাইকে ধরে ফেলে।
এরপরেই আয়াজ ভিতরে যায়। আর গিয়ে রিয়াদের গালে ঠাসস করে লাগিয়ে দিলো। আর বলল কি ভেবেছিস পালিয়ে সারাজীবন বাঁচতে পারবি। এই আরহাম চৌধুরী আয়াজ কি জিনিস সেটা এখনো তোর ধারণার বাইরে। আর এই জন্মে যেনো জেল থেকে বের হতে না পারিস তার ব্যাবস্থা আমি খুব সুক্ষ্ম ভাবে করবো বলেই ধাক্কা দিয়ে পুলিশের কাছে হাতে দিয়ে দেয়।
বাসায় আসার পর রোজিনা চৌধুরী দৌড়ে ছেলের কাছে আসে। আর অস্থির হয়ে আয়াজের এদিক ওদিক দেখতে থাকে। আর বলে তুই ঠিক আছিস বাবা। কোথাও লাগেনিতো।
-না আম্মু, আম ওকে! চিন্তা কেনো করছো। তুমি কি তোমার ছেলেকে এতো বোকা পেয়েছো? তোমার ছেলে খুব ভালো করে জানে কিভাবে নিজেকে প্রটেক্ট করতে হয়।
-কচু জানিস। বলেই জড়িয়ে হুঁ হুঁ করে কেঁদে দেয়।
ওদিকে আঁখি সোফার এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আয়াজ আঁখির দিকে একনজর তাকিয়ে রোজিনা চৌধুরী কে বলল
-এতো আর্লি আমার কিছু হলে আমার বউটার কি হবে। অন্তত বউয়ের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে হলেও বেঁচে থাকতে হবে।
-এদিকে আঁখি মনে মনে বলে, এহহ শখ কতো। বিয়ের আগেই বউয়ের প্রতি এতো দরদ। বিয়ে হলে কি করবে কে জানে। ঢং!
পরক্ষণেই ভাবলো আরে আমি কেনো এটা নিয়ে এতো মাথা ঘামাচ্ছি। মনে হয় বউ নিয়ে ভাবুক বাচ্চা নিয়ে ভাবুক তাতে আমার কি। মনে একরাশ রাগ নিয়ে বলে। তারপর হনহন করে উপরে উঠে চলে যায়
-আয়াজ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মনে মনে হাসে।
এরপর উপরে চলে যায় ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়েই যখন লাঞ্চ করতে আসে, তখন দেখে আঁখি টেবিলে নেয়।
-আম্মু আঁখি আসে নি যে?
-জানি নাতো। সবাই আসলো মেয়েটা কেন আসলো না। আজিফা যাতো দেখতো কি হয়েছে।
-ওকে আম্মু যাচ্ছি।
আজিফা উপরে গিয়ে দেখে আঁখি রুমে নেয়।
আঁখি! আঁখি!
নাহহ কোনো সাড়াশব্দই নেই দেখছি। ওয়াশরুম থেকে সাওয়ারের সাউন্ড শুনে সেদিকে ডাকতে গেলো। গিয়ে দরজা ধাক্কা দিতেই দেখে দরজাটা অপেন হয়ে যায় আর যা দেখে সাথে সাথেই আঁখিইইইইইইইইইইইইইইইইইই করে চিৎকার মেরে উঠে
চলবে