তুমি আসবে বলে পর্ব-৩+৪+৫

0
318

#তুমি আসবে বলে

#নুসাইবা ইভানা

পর্ব -৩

মেঘ বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ী নিয়ে যেদিকে দু’ চোখ যাচ্ছে সেদিকেই ড্রাইভা করছে। ঢাকা শহরের রাস্তা সকাল ছাড়া এমন ফাঁকা পাওয়া যায় না। ড্রাইভিং করতে করতে অনেকটা দূরে চলে এসেছে। নিজের প্রতি চরম বিরক্ত মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে গাড়ি সাইট করে রেখে নদীর তীরে যেয়ে বসল। স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অস্থির পানির দিকে, মনে মনে কিছু হিসাব মেলাতে ব্যস্ত অবশেষে দু’য়ে দুয়ে চার মিলয়ে ফেললো। দ্রুত নিজের সেল ফোন বের করে এয়ার এজেন্সিতে কল করে তিনটি ইমারজেন্সি টিকিট বুক করলো। এবার নিজেকে হালকা লাগছে। গাড়ি ঘুরিয়ে বাসায় উদ্দেশ্য রওনা হলো।

মিসেস মারিয়া কখন থেকে আরহার মাথা নিজের কোলে রেখে বসে আছে। আরহাও মিসেস মারিয়ার কোলে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে। নিষ্পাপ মেয়েটির মুখের পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন মিসেস মারিয়া। মনেমনে ভাবছেন একদম মায়ের কার্বন কপি। সেই চোখ সেই চেহারা সেই মায়াবী মুখ দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লেন বিষাদ ছেয়ে গেলো হৃদয়ে। কি হওয়ার কথা ছিলো আর কি হচ্ছে। জীবন আসলেই নাটকের মঞ্চ ঠিক কখন কোন মূহুর্তে ইইউ টার্ন নেয় দর্শক বুঝতেই পারে না।

ঘন্টা খানিক পর পিট পিট করো চোখ খুলছে আরহা নিজের মাথা কারো কোলে দেখে ভেবে নিলো সে তার মায়ের কোলে মাথা রেখেছে। তাই দু’ হাত দিয়ে মিসেস মারিয়ার কোমর শক্ত করে ধরে বলে আর কোথাও যেতে দেবো না তোমাকে!

আরহার কথা শুনে মিসেস মারিয়া বললেন, তোকে রেখে আর কোথাও যাচ্ছি না।

অপরিচিত কন্ঠ কর্ণগোচর হতেই সরে আসে আরহা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে সে এখন কোথায়! মিসেস মারিয়া আরহাকে বলে আমি তোর মারিয়া আন্টি। তোর মায়ের মুখে আমার নাম শুনেছিস নিশ্চয়ই!
– আরহা ছোট করে বলল,হুম
মিসেস মারিয়া আরহাকে নিয়ে উপরে আসলেন নিজের রুমের পাশের রুমেই আরহার থাকার ব্যবস্থা করেছেন। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কিছু রেডিমেড ড্রেস আনিয়েছেন সেখান থেকে একটা ড্রেস আরহার হাতে দিয়ে বললেন ফ্রেশ হয়ে আয় আমি তোর জন্য খাবার নিয়ে আসছি।

মিসেস মারিয়া চলে যেতেই আরহা অবাক দৃষ্টিতে রুমটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে লাগলো এমন সুন্দর সাজানো গোছানো রুম আরহা আর দেখেনি একটু এগিয়ে এসে জানালার পর্দা গুলো ছুঁয়ে দেখলো। ছোট মস্তিষ্কে সব কিছু কেমন স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
আর একটু সামনে এসে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়ালো এতো বড় আয়না দেখে হতবাক হয়ে গেলো তার বাসায় তো ছোট একটা আয়না ছিলো যেটা দিয়ে কোনমতে মুখটুকু দেখা যায়! আরহা নিজেকে দেখতে লাগলো পরনে তার লাল খয়েরী রঙের একাটা কাতান শাড়ী গলায় একটা মোটা চেন,কানে এক জোড়া ঝুমকো, হাতে চুড়ি যদিও চুড়ি গুলো এতো বড় যে খুলে পরে যাওয়ার মতো অবস্থা
আরহার মনে পড়লো তারতো কাল রাতে বিয়ে হয়েছে

মনে করার চেষ্টা করছে সে যদি বউ হয় তাহলে বর কোথায়? ছোট মস্তিষ্ক এখন বর খোঁজার চেষ্টা করছে

মিসেস মারিয়া খাবার নিয়ে এসে দেখেন, আরহা গভীর চিন্তায় মগ্ন। তিনি একটু কাশি দিয়ে বললেন, এতো কি ভাছিস! এখনো ফ্রেশ হোসনি যা যেয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় এইটুকু মাথায় আর পেশার দিতে হবে না।
আরহার খুব জানতে ইচ্ছে ছিলো তার বর কোথায়! কিন্তু কিছুই মুখ থেকে বের হলো না। ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে আসলো। ওয়াশরুমে ঢুকে পরলো আরেক বিপদে এখানে তো পানিই নেই এটা ওটা নাড়াচাড়া করেও পানি বের করতে পারছেনা মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কিছু সময় একি ভাবে দাঁড়িয়ে থেকে ওয়াশরুমের দরজা খুলে উঁকি দিলো
মিসেস মারিয়া বেডে বসেছিলেন আরাহাকে দেখে বললেন,কিছু লাগবে?
– মাথা নাড়িয়ে একবার হা তো আর একবার না বলছে
মিসেস মারিয়া উঠে এসে বললেন, তুই আমাকে নিজের মায়ের মতো ভাবতে পারিস! বিনা সংকোচে বলে ফেল দেখি কি লাগবে?
– কিছু সময় চুপ থেকে আস্তে করে বললো এখানে তো পানি নেই, আমি ফ্রেশ হবো কি করে?

– আরহার কথা শুনে বুঝতে বাকি নেই এসব আধুনিকতা আরহা এখনো দেখেনি তাই বুঝতে পারছে না। মিসেস মারিয়া বলেন দাঁড়া আমি আসছি

মিসেস মারিয়া এসে আরহাকে সব দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলেন।

আরহা শাওয়ার অন করে তার নিচে দাঁড়িয়ে পরলো শাড়ীটা খুলে পাশে রাখলো। শরীরের বেশীর ভাগ স্থান জ্বলে যাচ্ছে আরহার আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না সরে আসলো নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে শিউরে উঠলো। কতটা রাগ থাকলে কেউ এরকম নির্মম ভাবে মারতে পারে। কোন রকম ড্রেস চেঞ্জ করে বের হয়ে আসলো সারা শরীর জ্বলে যাচ্ছে চোখ দিয়ে অনবরত অশ্রু ঝড়ছে।

মিসেস মারিয়া আরহার এ অবস্থা দেখে ঘাবড়ে গেলেন আরহাকে ধরে বসিয়ে দিয়ে স্নেহ মাখা কন্ঠ শুধালেন, কোথায় কষ্ট হচ্ছে আমাকে বল! তার চোখেও অশ্রু টলমল করছে।

আরহা কথা বলবে সেই অবস্থায় নেই কেঁদেই চলেছে।
মিসেস মারিয়া মলম নিয়ে আরহার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দিচ্ছে। আরহা অস্ফুট স্বরে বললো আর দিও না ম*রে যাবো। কোনমতে মলম লাগিয়ে দিলেন। হাত ধুয়ে খাবার খাইয়ে দিয়ে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে বললেন, তুই একটু ঘুমিয়ে থাক তাহলে ব্যথা অনুভব হবে না। মিসেস মারিয়া উঠে আসলেন আর সহ্য করতে পারছেন না বাচ্চা মেয়েটার কষ্ট।

নিজের রুমে এসে তার হ্যাসবেন্ডকে আঁকড়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলেন যার রানী হয়ে থাকার কথা ছিলো?আর সে? কেনো এমন হলো মোর্শেদ, আমি সহ্য করতে পারছিনা এই একরত্তি মেয়ের জীবনে এতো কষ্ট! মোর্শেদ আফরোজ নিজের ওয়াইফকে শান্তনা দিয়ে বললেন তুমি চিন্তা করো না আরহার ভবিষ্যৎ আমরা সুন্দর করে তুলবো অতীতের সব কষ্ট ভুলে রাজকন্যাদের মতো বড় হবে আমাদের আরহা।

আরহার চোখে ঘুম নেই একে তো অসহ্য যন্ত্রণা অন্য দিকে নিজের মায়ের মৃত্যুর শোক সাথে আবার যোগ হয়েছে বরকে দেখার চিন্তা। ছোট মস্তিষ্কে জ্যম লেগে গেছে। মনে মনে হিসেব মেলাচ্ছে যাদের বাড়ি রাজপ্রাসাদের মতো সে দেখতেও তো রাজপুত্রের মতো! আরহার মনে পরে গেলো তার মায়ের কথা একদিন তার মা তাকে বলেছিল এক রাজপুত্র এসে তাকে আর তার মাকে মুক্ত করবে এই কষ্ট থেকে! আরহার রাগ হলো ভিষণ রাজপুত্র না হোক কেউ তো আসলো সেই বা রাজপুত্রের যেয়ে কম কি তবে এতো দেরি করলো কেনো আসতে! এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরেছে আরহা তার খবর নেই।

আরহার মামি সোনিয়া বেগম নিজের স্বামীকে বলছেন, কত বড় বড় কথা বলেছিলে তোমার ভাগ্নীর নামে এতো এতো সম্পদ আছে এই আছে সেই আছে এতো বছর ধরে আমাদের ঘাড়ের ওপর বসে বসে খেয়ে এখন নবাবজাদী পালিয়েছে। তোমার কথা বিশ্বাস করাই আমার উচিৎ হয়নি! তোমার বোন মরার সাথে সাথে বেঁচে দিলে ভালো হতো আপদটাকে। সব লস হলো আমার এতোদিন বসে বসে দুধ, কলা খাইয়ে কাল সাপ পুষলাম সময় মতো ছোবল দেবে বলে! তুমিও শুনে রাখো “হায়দার”তোমার ভাগ্নী কি করে সুখে থাকে তা আমি দেখে ছাড়বো।

হায়দার আর সয্য করতে পারলোনা উঠে এসে সোনিয়ার গলা চে*পে ধরে বলে, মেয়েটা গরুর মতো পিঠিয়ে তোর স্বাদ মেটেনি! একটা দিনও তুই আমার অসুস্থ বোন আর মেয়েটাকে শান্তি দিসনি এখনতো চলে গেছে এখন মুক্তি দে। তা না এখনো মেয়েটার ক্ষতি করার চেষ্টায় আছিস! সজোড়ে ধাক্কা দিয়ে সোনিয়াকে ফেলে রেখে ঘর ছেড়ে চলে গেলেন।

অনেক চুপ থেকেছেন নিজের চোখে বোন আর বোনের মেয়েটাকে অত্যাচারিত নিপিড়ীত হতে দেখেছেন প্রতিবাদ করতে পারেননি কারণ হায়দারের সেরকম কোন ইনকাম নেই। সোনিয়া দর্জি কাজ করে যা পায় তা দিয়ে কোনমতে সংসার চলতো। হায়দার টুকটাক দিনমজুরের কাজ করলেও অনেক সময় তাও পেতো না। যে ঝুপড়িতে থাকে সে জায়গাটুকুও সোনিয়ার বাবার দেয়া। তাই সব বুঝেও চুপ থাকতে হতো। আজ যেনো হায়দার মিয়া বাঁধন হারা। কোন পিছুটান নেই তাই হয়তো প্রতিবাদ করার সাহস পেয়েছেন!
বুকের মধ্যে হাহাকার করছে একমাত্র বোনকে তিলে তিলে ম*র*তে দেখলেন নিজের ভাগ্নীটাকে দিনের পর দিন কষ্ট পেতে দেখলেন সময়ের কাছে হেরে যেয়ে সব সহ্য করে নিয়েছেন। সময় মানুষকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায়।

কোথা থেকে ঝড়ের বেগে মেঘ বাসায় আসলো কারো সাথে কোন কথা না বলে দেয়ালে টাঙানো ফটো ফ্রেম গুলো ছুড়ে ফেলছে….

#চলবে

#তুমি আসবে বলে

# নুসাইবা ইভানা

পর্ব-৪

আরহার ঘুম ভাঙলো সন্ধ্যের দিকে। চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আরহার বুকটা ধক করে উঠলো

কোন রকম বিছানা ছেড়ে উঠে ভয়ে ভয়ে এগিয়ে আসলো দরজার দিকে দরজা খুলতেই আলো এসে পড়লো আরহার মুখের উপর। বাহিরে উঁকি দিয়ে কাউকে দেখতে পেলো না। পুরো বাড়িতে পিনপতন নীরবতা।দেয়াল ঘড়ির টিক টিক আওয়াজ কানে এসে বাড়ি খাচ্ছে। এক পা, এক পা করে এগিয়ে এসে আশে পাশে তাকাচ্ছে কিন্তু কোথাও কেউ নেই। দু’হাত দিয়ে পরনের জামাটা খামচে ধরেছে ভয় করছে ভিষণ।আরো একটু সামনে এগিয়ে আসলো না কাউকে দেখা যাচ্ছে না। সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসলো এদিক ওদিক তাকাচ্ছে কিন্তু কোথাও কেউ নেই। হঠাৎ নিচে তাকিয়ে চিৎকার করলো আরহা।

আরহার চিৎকার শুনে দুজন সার্ভেন্ট বেরিয়ে আসলো ভয়ে আরহার শরীর কাঁপচ্ছে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা সার্ভেন্ট আরহাকে ধরে সোফায় বসিয়ে দিলো। আরএকজন এক গ্লাস পানি এনে আরহাকে খাইয়ে দিলো।
এতোটুকু মেয়েটার জীবনে কত ট্রাজেডি একের পর এক বিষাদ।

লন্ডনের একটা ক্লাবে বসে আছে সামিরা আর তার বন্ধুরা। মূলত আজ সামিরার বার্থডে উপলক্ষে একটা পার্টি থ্রো করেছে। যদিও মনটা ভীষণ খারাপ সামিরার ভেবেছিলো অন্তত আজকের দিনে মেঘ তাকে কল করে বার্থডে উইশ করবে, বা একটা ছোট টেক্সট করবে! কিন্তু দূর্ভাগ্য তার এখন পর্যন্ত মেঘের কোন কল বা টেক্সট কিছুই আসেনি বারবার মোবাইলের নোটিফিকেশন চেক করছে সামিরা। মন বলছে মেঘ তাকে টেক্সট করবে। সামিরার ফ্রেন্ড এনা এসে বললো আর কত অপেক্ষা করবি! হয়তো মেঘ ব্যস্ত আছে!

– বলতো এতো কিসের ব্যস্ততা যে একটা ছোট টেক্সট করা যায় না। জানিস ওকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন থেকে একটু একটু করে ওর প্রতি দূর্বল হচ্ছি। সব সময় ওর আশেপাশে থাকি যাতে করে ও অন্য কারো না হতে পারে! যেদিন থেকে বাংলাদেশ চলে গেছে সেদিন থেকেই মনে শান্তি পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে আমি মেঘকে হারিয়ে ফেলবো।
– পাগল হয়েছিস তুই! ভালো করেই জানিস মেঘ পড়া লেখা নিয়ে কত সিরিয়াস সো যে পর্যন্ত পড়া লেখা শেষ না হচ্ছে নো টেনশন টু ফূর্তি।

আচ্ছা এ্যনি তুই কখন কাউকে একতরফা ভালো বেসেছিস?
– শোন এ্যনির ডিকশনারিতে কোন একতরফা দু’তরফা নেই। কারণ এ্যনি এক মাসের বেশি কারো সাথে স্থায়ী হতে পারে না। আমার কাছে মনে হয় এসব ভালোবাসা টালোবাসা বলতে কিছুই নেই। যাস্ট টাইম ওয়েস্ট। যে আছে ভালো নেই আরো ভালো।
– শোন যেদিন সত্যি কাউকে ভালোবাসবি সেদিন বুঝতে পারবি। কোন একজনের মুগ্ধতায় আটকে গেলে, কারো ব্যক্তিত্বের প্রেমে পরলে, কারো মায়ার জালে নিজেকে বেঁধে ফেললে সে কি সুখকর অনূভুতি। সে মেসেজ করবে না জেনেও বারবার তার মেসেজের অপেক্ষা করা। লুকিয়ে তার প্রোফাইলে যেয়ে তার ছবি দেখা। নিজের আইডির চেয়ে তার আইডিতেই বেশী পরে থাকা। সে আমার হবে নাকি সন্দেহ থাকার পরেও রোজ রাতে তাকে নিয়েই রঙিন স্বপ্ন দেখা। এগুলো হলো ভালোবাসা। বিপরীত পাশের মানুষটা এসব অনুভূতি থেকে অজানা তারপরেও তাকে নিয়ে ভাবতেই ভালো লাগে।
– তোর এতো বড় বড় কথা আমার মাথায় ঠুকবে না। তার চেয়ে চল কেক কাটবি সবাই অপেক্ষা করছে।

নিরব অশ্রু গুলো টিস্যু দিয়ে মুছে কৃত্রিম হাসির রেখা মুখে টেনে এগিয়ে গেলো কেক কাটতে। পৃথিবীটা বড়ই আশ্চর্য কারো হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা অব্যক্ত কষ্ট গুলো কারো দৃষ্টিতে পরে না। সবাই তার উপরের হাসিটাই দেখে।

হসপিটালের আইসিইউ রুমের সামনে পায়চারি করছে মেঘ। গ্রে রঙের শার্টটা রক্তে ভিজে আছে এই মূহুর্তে ইচ্ছে করছে মেয়েটা কে*টে টু*ক*রো টু*ক*রো করতে। না এই মেয়ে তাদের জীবনে আসতো আর না এই দিনটা দেখতে হতো। মেঘ নিজের বাবার পাশে বসে পরলো। বাবার হাত দু’টো নিজের হাতে মুষ্টি বদ্ধ করে অপরাধী কন্ঠে বললো, বাবা মমের কিছু হয়ে গেলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না। প্লিজ তুমি মমকে দ্রুত ঠিক করে দাও। এই দেশ আমাদের জন্য সুখকর না। আমরা কালকেই চলে যাবো বাবা।

মোর্শেদ আফরোজ নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, একবার ভুল করেছি সেই ভুল আর করবো না। তুমি চাইলে চলে যেতে পারো। আমি আর তোমার মম এখানেই থাকবো।
-হ্যঁ তোমাদের কাছে আমার চেয়ে ওই মেয়েটাই বড়। দু’দিনের পরিচয়ে এতো আপন হয়ে গেলো বাবা! যে নিজের ছেলের কষ্ট চোখে পরছে না।

– দেখো তোমার সাথে কথা বলার মতো মানসিকতা এই মূহুর্তে আমার নেই! তুমি একবারের জন্য মনে করেছো তোমার ভুলের কারনে তোমার মম মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে! এই দিন দেখার জন্য তোমাকে বড় করেছিলাম। দেখো এটাই ভালো হবে তোমার জন্য তুমি এখান থেকে চলে যাও।

বাবা আমি মানছি আমার ভুল হয়েছে। তবে তোমরাও তো ভুল করছো কোথাকার কোন মেয়ের জন্য নিজের ছেলেকে পর করে দিচ্ছো।
– দেখো তোমার সাথে আমি কথা বলতে চাইছি না। আর যা জানোনা তা নিয়ে কথা বলো না।
মেঘ আর কথা বাড়ালো না। এই মূহুর্তে তার মমের ঠিক হওয়াটা বেশী জরুরি।
এর মধ্যেই আইসিইউ রম থেকে ডাক্তার বের হয়ে আসলো। মেঘ ডাক্তার কে জিজ্ঞেস করলো, আমার মমের কি অবস্থা!

– দেখুন প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। যদিও এখন বিপদ থেকে মুক্ত তবুও ওনাকে কোন রকম পেসারে রাখা যাবে না। কোন বিষয় নিয়ে যেনো উত্তেজিত হয়ে না পরে সে বিষয় সর্তক থাকতে হবে!
– জ্ঞান ফিরবে কখন!
– দু’ঘন্টা পর। আর এখন রুগীর সাথে বেশি কথা বলবেন না।
– মেঘ নিস্তব্ধ কি করবে সে? তার বাবা মায়ের কথা মতো টিসি নিয়ে চলে আসবে বাংলাদেশ! নাকি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চলে যাবে লন্ডনে।

সিদ্ধান্ত হীনতায় ভুগছে। একদিকে বাবা,মা তো অন্য দিকে নিজের স্বপ্ন কোনটাকে বেছে নেয়া উচিৎ?

কখন থেকে মেঘের ফোনে কল করেই যাচ্ছে ইমতিহান, কিন্তু মেঘ রিসিভ করছে না।

কি মনে করে পকেট থেকে ফোনটা বের করতেই প্রথমে চোখে পরে সামিরার চারশোর মতো মিসড কল আর কত গুলো মেসেজ এসেছে তার হিসেব নেই।সমািরার মেসেজ সিন করবে, এমন সময় ফোনটা আবার বেজে উঠলো, রিসিভ করতেই ইমতিহান বললো,কি রে এতো বার কল করছি রিসিভ করছিস না কেনো?
– মেঘ সবটা বললো, ইমতিহানকে। শুধু আরহার সাথে বিয়ে হওয়ার কথাটা চেপে গেলো।

সব শুনে ইমতিহান বললো, তাহলে তুই এখন কি করবি? বাংলাদেশে থেকে যাবি!
– বুঝতে পারছি না। আচ্ছা পরে কথা হবে।কলটা কেটে ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে রাখলো। সামিরার কল,মেসেজ চেক করতে ভুলেই গেলো। দু’হাতে মাথা চেপে ধরে বসে পড়লো চেয়ারে। নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত মেঘ। তার সাথে আরহার প্রতি রাগ ক্ষোভ। মনে মনে ভাবছে তাদের সাজানো পরিবারটাকে নষ্ট করে দিচ্ছে আরহা।

বেশ খানিকটা সময় পর আরহা নিজেকে একটু সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,এখানে এতো রক্ত কিসের? আর উনারা সবাই কোথায়?

একজন সার্ভেন্ট বলে উঠলো,কোথায় আবার হসপিটালে বড় ম্যডামের অবস্থা বেশী ভালো না। কে যানে কি হয়!

মধ্যে বয়সী সার্ভেন্ট মহিলাটি বললো, থামতো নিলু তোকে এসব কথা কে বলতে বললো, শুনো মেয়ে তেমন কোন সমস্যা হয়নি ম্যডাম একটু অসুস্থ তাই হসপিটালে গিয়েছেন চলে আসবেন সময় মতো। আর শুনো তুমি ফ্রেশ হও আমি তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি। তোমার তো ঔষধ খেতে হবে!

– আমি একা উপরে যাবো না আমার ভয় হয়। আমি এখানেই থাকবো। এখানে রক্ত কিসের?

– তেমন কিছুনা কাজ করতে যেয়ে নিলুর পা কে*টে গেছে। তুমি বসো আমি এক্ষুনি পরিস্কার করে দিচ্ছি।

আরহার ছোট মাথা এটা বুঝতেই পারলো না তার অগোচরে তার কারণে ঠিক কতটা ঝড় বয়ে গেছে।

এদিক সেদিক তাকাতে হঠাৎ চোখ গেলে সোফায় পরে থাকা একটা ছবির দিকে। হাত বাড়িয়ে সেটা হাতে নিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছবিটির দিকে চোখ থেকে গড়িয়ে পরছে অশ্রু। ছোট মনে উঁকি দিচ্ছে নানা প্রশ্ন?

#চলবে

ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

হ্যাপি রিডিং 🥰

# তুমি আসবে বলে

# নুসাইবা ইভানা

পর্ব- ৫

আরহার মনের মধ্যে হাজারো প্রশ্ন যার কোনটার উত্তর এ মূহুর্তে জানা নেই আরহার। হাতে থাকা তার বাব,মা, মিসেস মারিয়া, মোর্শেদ আফরোজ, ও আট/নয় বছরের ছেলের ছবি। সেটিকে ওড়নার আড়ালে লুকিয়ে নিলো। আরহা নিজের বাবা, মায়ের ছবি দেখে কেঁদে দিলো। বুঝ হওয়ার পর থেকে তার বাবাকে কখনো দেখেনি। তার মা সব সময় বলতো একদিন তোর বাবা ঠিক ফিরে আসবে। এতোদিন শুধু বাবার শূন্যতা ছিলো এখন মায়ের শূন্যতা তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। মনে মনে আওড়ালো। তোমরা আমাকে কেনো একা রেখে গেলে। আমার যে বড্ড কষ্ট হয়।

নীলু এসে বলল,আপনি কাঁদছেন কেনো আপনার কি বাসার কথা মনে পরছে? বাব,মার সাথে কথা বলবেন?কি হইছে আমাকে বলতে পারেন।
আরহাকে চুপ থাকতে দেখে নীলু আবার বললো, আচ্ছা একটা কথা বলেন, আপনার বাব,মা,এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিলো কেনো!না মানে আপনাকে দেখো তো মনে হয় আমার ছোট হবেন!

চোখের পানি মুছে আরহা বললো, আপনার বয়স কত?
– তওবা তওবা আপনি আমারে তুই/ তুমি করে বলবেন। আমার বয়স পনেরো। ওই যে আরেকজন মধ্য বয়সি মহিলা দেখলেন “আমি তার মেয়ে” সাহেবরা বিদেশ যাওয়ার পর থেকে আমরাই এ বাসার দেখা শুনা করি।”আপনার নাম কি বউমনি।
– আদিয়াত নুজহাত আরহা। সবাই আরহা বলেই ডাকে। আমি বয়সে আপনার ছোট। আমার বয়স তেরো।

নীলু আরহার পাশে বসে বলে,তেরো বছর বয়সে তুমি এই এত্তো বড় বাড়ির বউ হয়ে গেলে।আচ্ছা তুমি পড়া লেখা করো না!
– পড়তাম তো ক্লাস সেভেনে।
– আমি নাইনে পড়ি। সই হবে আমার।
আরহার উত্তর দেয়ার আগেই নীলুর মা এসে বলে, শুরু করে দিয়েছিস তোর বকবক। যা রান্নাঘর থেকে বউমার খাবার নিয়ে আয়। আমি বউমাকে নিয়ে উপরে যাচ্ছি। তুই খাবার নিয়ে আয়।

সোনিয়া বেগম বারবার দরজায় উঁকি দিচ্ছেন, সেই যে হায়দার মিয়া বাসা ছেড়েছে আর ফেরার নাম নেই। প্রথমে চিন্তা না হলেও এখন ভিষণ চিন্তা হচ্ছে। মনে মনে ভাবছেন কই গেলো এতো রাইত ওইলো এহোনো ফিরা আইলোনা। সনিয়া বেগমের দুই ছেলে মেয়ে। ছেলটার বয়স সাত বছর নাম হারিছ।মেয়েটার বয়স পনেরো নাম সাবু। হারিস ঘুমিয়ে আছে। সাবু মায়ের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,ওমা, মা বাবায় এহনো আইলোনা কেন?
– তা দিয়া তোর কি? খাইছোস এইবার ঘুমা।

হায়দার মিয়া বোনের কবরের পাশে বসে আছে। কখন কখন বিড়বিড় করে কিছু বলছে।নিজের বোনকে অনেক ভালোবাসতেন হায়দার মিয়া। তিন কূলে বোন ছাড়া আর ছিলোই বা কে? আজ বোনটাও নাই। মনের মধ্যে হাহাকার।

হসপিটালের খোলা মাঠের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে মেঘ। দৃষ্টি তার আকাশের পানে।আজকের আকাশটা ঘনো কালো মেঘে ছেঁয়ে গেছে। চাঁদ তারাহীন এক বেরঙীন আকাশ। ঠিক মেঘের জীবনের মতো।
মেঘ মানতেই পারছে না হুট করে আরহা নামক ঝড় তাদের জীবনটাকে তছনছ করে দিলো সাজানো গোছানো জীবনটাকে নিমিষেই ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। ধপাস করে বসে পরলো সামনে থাকা বেঞ্জের উপর চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগলো কিছু ঘন্টা পূর্বের ঘটনা…..

বাসায় আসার পূর্বে মেঘ তার বাবাকে কল করে বলে,বাবা আমি ইমারজেন্সি টিকিট বুক করেছি তোমরা নিজেদের প্যাকিং করে ফেলো। আজ রাত দেড়টায় আমাদের ফ্লাইট।
– তুমি চাইলে যেতে পারো মেঘ। আমারা তোমাকে বাঁধা দেবো না। তবে তোমার মম আর আমি যাচ্ছি না কোথাও আমারা এখানোই স্থায়ী হবো।
– কোন কথার উত্তর না দিয়ে খট করে ফোনটা কেটে দিলো মেঘ।দ্রুত গতিতে ড্রাইভিং করে বাসায় এসে ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছে। রাগে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য প্রথমেই দেয়ালে টাঙানো ফটো ফ্রেম গুলো ছুড়ে মারলো, তারপর হাতের কাছে যা পাচ্ছে ছুড়ে মারছে।
মিসেস মারিয়া আর মোর্শেদ আফরোজ কথা বলছিলেন ভাংচুরের শব্দ শুনে দুজনেই নিচে আসেন।

মেঘে টেবিলের উপর থেকে কাঁচের জগ নিয়ে ছুড়ে মারে দূর্ভাগ্যবশত সেটি যেয়ে মিসেস মারিয়ার মাথায় আঘাত করে। সাথে সাথে মাথা ফে*টে রক্ত গড়িয়ে পরে মহূর্তে ফ্লোর ভিজে যায়। মিসেস মারিয়া চিৎকার শুনে মেঘ দ্রুত মিসেস মারিয়াকে ধরে। ততক্ষণে মিসেস মারিয়া জ্ঞান হারান। মেঘ মিসেস মারিয়াকে কোলে করে গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে কোন মতে হসপিটালে নিয়ে আসেন। এতোটুকু ভাবতেই মেঘের চোখ রক্ত বর্ণ ধারণ করলো।চোখ থেকে গড়িয়ে পরলো দু’ফোটা অশ্রু। হাতের আঙুলে চোখের জল টুকু নিয়ে টোকা দিয়ে ফেলে দিয়ে বলে, প্রতি ফোটা চোখের পানি, প্রতি ফোটা রক্তের হিসেব দিতে হবে মিস আরহা।
আমার হৃদয়ে নিজের জন্য যে ঘৃণা জন্ম দিয়েছো নিজের নামে। তা যদি তোমাকে ভষ্ম করে না দেয়! তবে আমার নামও মেহের আফরোজ মেঘ না।

নিজেকে সামলে নিয়ে হসপিটালে প্রবেশ করে মেঘ।

কিছু সময় পূর্বেই জ্ঞান ফিরেছে মিসেস মারিয়ার। মোর্শেদ আফরোজ তার পাশেই তার হাত ধরে বসে আছে, চোখ খুলে অস্ফুট স্বরে বললেন, আমার মেয়ে কেমন আছে মোর্শেদ?
– আমি খোঁজ নিয়েছে আর নীলুর মাকেও বলেছি আরহা মায়ের যত্ন নিতে। তুমি টেনশন করো না।

মেঘ কেবিনে ঢুকতেই তার বাবা মমের কথোপকথন শুনতে পেলো। মনে মনে ক্ষিপ্ত হলেও মুখে তা প্রকাশ না করে, নিজের মমমের পাশে বসে পরলো। দু’হাত জোড় করে ক্ষমা চাইলো। মিসেস মারিয়া শান্ত স্বরে বললেন দেখো তোমার প্রতি আমার কোন রাগ নেই মেঘ! যেটা হয়েছে এক্সিডেন্টলি হয়েছে সে খানে তোমার কোন হাত ছিলো না। আসলে আমারই তেমার প্রতি অন্যায় করেছি। তোমার মনের বিরুদ্ধে যেয়ে তোমাকে বিয়ে করিয়ে। তুমি চলে যেতে পারো তোমাকে বাঁধা দেবো না। আর কখন বলবো না আরহাকে মেনে নিতে।আরহার তোমার পরিচয়ের দরকার নেই। আরহা আমার মেয়ে এটাই আরহার বড় পরিচয়।
– মম আমাকে একটু সময় দাও নিজেকে গুছিয়ে নিতে। হুট করে জীবনে এতো কিছু হয়ে যাচ্ছে সেগুলোর সাথে মানিয়ে নিতে।

নার্স এসে মিসেস মারিয়াকে ইনজেকশন পুশ করলেন। মোর্শেদ আফরোজ নার্সকে জিজ্ঞেস করলেন, মারিয়াকে বাসায় কবে নিয়ে যেতে পারবো?
– কাল সকালেই নিয়ে যেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে রুগির।

মোর্শেদ আফরোজ বললেন,মেঘ তুমি বাসায় চলে যাও খেয়ে রেস্ট নাও। তোমার মমের সাথে তো আমি আছি।

মেঘ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত প্রায় বারোটা ছাড়িয়েছে। তাই বললো,ড্যাড এতো রাতে আর বাসায় ফিরবো না এখানেই থাকবো।
– এখান থেকে বাসায় যেতে সময় লাগবে পনেরো বিশ মিনিট। চলে যাও। এখানে থাকতে তোমার কষ্ট হবে।

নীলুর মা, আরহা খাবার খাইয়ে, ঔষধ খাইয়ে দিলেন। আরহাকে শুয়ে দিয়ে আরহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। আরহার কিছুতেই ঘুম আসছে না। তার মন পরে আছে সেই ছবিতে। তার বাবা মায়ের কথা মনে পরছে। নীলুর মা এখান থেকে গেলে আরহা চুপিচুপি ছবিগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকবে, কতদিন তার মায়ের মুখখানি দেখা হয় না। মায়ের কথা মনে পরতেই চোখের কার্নিশ বেয়ে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পরলো। নীলুর মা ভাবলেন আরহা হয়তো ঘুমিয়ে পরেছে তাই তিনি আরহার গায়ে চাদর টেনে দিয়ে চলে গেলেন।

মেঘ হসপিটাল থেকে বের হয়ে একটু সামনের দিকে হেঁটে আসলো রাতের ঢাকা রিক্সায় ঘুরতে নাকি অন্য রকম ভালোলাগে। ইমতিহানের কাছে অনেক শুনেছে। তাই গাড়ি না এনে রিক্সায় উঠলো। এই সময় রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা মাঝে মাঝে দূরপাল্লার বাস গুলো সা সা ছুটে চলছে। থেমে থেমে মেঘেরা গর্জন করছে শীতল বাতাস বইছে। মেঘের দারুণ লাগছে ওয়েদারটা। বৃষ্টি নামবে যে কোন সময়। রিক্সা চালক বললো, বাবা আর কত দূর মনে হয় বৃষ্টি অইবো।
– এই তো মামা সামনেন মোড় থেকে একটু সামনে।
ইতিমধ্যে বৃষ্টির ফোটা পরতে শুরু করেছে মেঘ চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে। হঠাৎ নিজের পাশে কারো অস্তিত্ব টের পেতেই চোখ মেলে তাকালো মেঘ।

#চলবে

ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

হ্যাপি রিডিং 🥰