#তুমি_থেকে_যাও_আমি_রেখে_দিব
#পর্ব_৪৪
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
অধরা’কে দেখে সবাই একসাথে বলে উঠলো’।হ্যাপি বার্থডে অধরা’।এতগুলো বছর পরে,নিজের বাবা-মাকে “দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না অধরা’।দৌড়ে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো’।মিসেস তুলি বেগম মেয়ে’কে এতগুলো বছর পরে কাছে পেয়ে,তিনি-ও হাউমাউ করে কান্না করে দিলো’।মা-মেয়ে’র কান্না দেখে অধরা’র বাবা বলল’।
–আমি তো’ কারো কেউ না’।বাবা’র কোনো দায়িত্ব, আমি পালন করতে পারি নি’।সেজন্য কেউ আমাকে চিনে না’।বাবা’র কথা শুনে অধরা বাবা’র দিকে তাকায়’।অধরা’র বাবা দু-হাত বাড়িয়ে দিলে,অধরা বাবা কাছে যায়’।মিনার বেগম এক কোণে দাঁড়িয়ে চুপচাপ সবকিছু দেখছেন’।সত্যি কখনো চাপা থাকে না।অধরা একদিন ঠিক জানতে পারতো’।সে,অধরা’র আসল মা না’।সেজন্য মিনারা বেগম আহান’কে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন’।আহান মিনারা বেগমে’র কাছে গিয়ে বলল’।
–আপনি কান্না করছেন কেনো মা’।
–আমাকে আর মা’ ডেকো না বাবা’।এখন তোমার আসল শশুর-শাশুড়ি চলে এসেছে’।তারা শুনলে কি মনে করবে’।
–আমি এসব কথা কানে নিব না।একবার যখন মা ডেকেছি’।সারাজীবন মা বলে-ই ডাকবো’।
মিনারা বেগমে আহানে’র মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল’।
–পাগল ছেলে’।
–আচ্ছা মা আপনার বাবার কথা মনে পড়ে না।
আহানে’র কথা শুনে,মিনারা বেগমে’র কলিজা কেঁপে উঠলো’।নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো’।
–আপনার মনটা খারাপ করে দিলাম তাই না মা’।দেখবেন আপনার খারাপ মনটা নিমিষেই ভালো করে দিব’।
মিনারা বেগম’ আহানে’র দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে।আহান কিভাবে তার মন ভালো করার কথা বলছে’।আহান মিনারা বেগম’কে একটু অপেক্ষা করতে বলে চলে গেলো’।একটু পরে মনির সাহেব’কে ধরে রুমের মধ্যে নিয়ে আসলেন।মনির সাহেব খুড়িয়ে খুড়িয়ে আহানে’র হাত ধরে হেঁটে আসছে’।মিনারা’র কাছে এসে সালাম দিলো’।সালাম দিয়ে বলল।
–কেমন আছো তুমি’।
মিনারা বেগম পলকহীন ভাবে মনির সাহেবর দিকে তাকিয়ে আছে’।সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে’।নিজের চোখকে-ও বিশ্বাস করতে পারছেন না’।
–তুমি বেঁচে আছো’।
–আমি মরে গিয়ে ছিলাম কবে’।এতবড় অপারেশনের পড়ে যখন বেঁচে গিয়েছিলাম।হঠাৎ করে মরে গেলাম সন্দেহ হলো না তোমার’।এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে আমাকে’।
–বিশ্বাস করো আমি ভুলি নাই’।শারমিন আপা আমার সাথে এতবড় বিশ্বাস-ঘাতকতা করবে।আমি বুঝতে পারি নাই’।শারমিন আপা একটা সাইকো’।সেজন্য তাকে মেডিকেল থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছে’।উনি তোমাকে নিয়ে গেছে,আমি জানতাম।শুধু বড় আপা আর দুলাভাই’কে বাঁচানো’র জন্য আমি সেদিন এত নাটক করছিলাম’।শারমিন আপা’র কথাতে’ই আমি অধরা আর আকাশে’র সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি’।শারমিন আপার সব অন্যায় মুখ বুঁজে সয্য করছি’।অধরা’কে অনেক বলার চেষ্টা করেছি’।কিন্তু অধরা’র যে,রাগ শারমিন আপা’কে যদি মেরে ফেলত’।তাহলে আমি তোমাদের সবাই’কে হারিয়ে ফেলতাম’। বড় আপা অধরা আর আকাশ’কে কতটা ভরসা করে আমাদের হাতে তুলে দিয়ে গিয়েছিল’।আমি কি করে অধরা আর আকাশে’র বিপদ ডেকে নিয়ে আসতাম’।এমনিতে-ই অধরা ইন্টার লেভেলে গিয়ে মাফিয়া জগতে যোগদান করেছিলো’।এক বছর ট্রেনিং-ও নিয়েছে’।তারপরে যখন-তখন বাসা থেকে বের হয়ে যেতো’।সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম মেয়েটা’র কখন কি হয়ে যায়’।তারপরে তুমি ওকে মাথায় হাত দিয়ে শপথ করিয়ে নিলে,অধরা যেনো এই পথে না আসে’।ওর হাতে আর কোনো মানুষের প্রাণ না যায়।তোমার কথা মতো অধরা আবার পড়াশোনা শুরু করলো’।তুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে,
অধরা’র মাথার ওপরে এসে সংসারে’র সব দায়িত্ব পড়ল’।মেয়েটা সবকিছু ভুলে পড়াশোনা আর চাকরি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল’।এর মাঝে বাবা-মাকে পাগলের মতো খুঁজে বেড়িয়েছে’।কিন্তু শারমিন আপার বুদ্ধি সাথে পেরে উঠে নাই।শারমিন আপা খুব চালাক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন।তারপরে অধরা’র বিয়ে হলো,ভাবলাম এবার হয়তো’ মেয়েটা আমার শান্তি পাবে।সবকিছু কি দূরে ঠেলে দিয়ে,সুখে সংসার করবে।কিন্তু আপা হতে দিলো কই।তোমাকে আমার কাছে থেকে নিয়ে গেলো’।আমাকে বাধ্য হয়ে আকাশ আর অধরা’কে পর করে দিতে হলো’।আমি ইচ্ছে করে কি নি’।বিশ্বাস করো’ আমি নিজের জন্য কিছু করি নি’।সব অধরা আর আকাশের জন্য করেছি।আমি তো মনে করেছিলাম,শারমিন আপা তোমাকে নিয়ে গিয়ে মেরে-ই ফেলছে’।বলে-ই হাউমাউ করে কান্না করে দিলো’।মনির সাহেব,মিনারা বেগমের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল’।
–কান্না করো না তুমি’।আমি জানি তুমি নিজের জন্য কিছু করো নি’।যা কিছু করেছো আকাশ আর অধরা’র জন্য’ করেছো।
–সত্যি কথা বলতে আমি’ও একটা অন্যায় করে ফেলছি।আমি আকাশ আর অধরা’কে হারাতে চাই নাই’।সেজন্য শারমিন আপা যখন এ-বাসায় এসেছিলো’।আমি’ও আপাকে সাহায্য করেছি।আমি’ও অপরাধী’।আমাকে শাস্তি দেওয়া হোক’।আমি ভেবে ছিলাম।আপা আসলে আকাশ অধরা’কে নিয়ে যাবে’।আমাকে আর দিবে না ওদের।এই একটা ভয়ে আমি তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম’।ওদের নিয়ে গেলে,আমি কি নিয়ে বাঁচব’।তুমি ভালো করেই জানো আমি সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম।
–তুমি তো’ ভুল কাজে অন্যায় করিস নি’।আমি তোর প্রতি অনেক অবিচার করেছি’।তোর নামে মায়ের কাছে আজেবাজে বলে তোকে ত্যাজ্যকন্যা করিয়েছি’।আমি অন্ধের মতো শারমিনকে বিশ্বাস করেছি।ওর বলা প্রতিটি মিথ্যা কথা সত্যি মনে করে।আমি তোকে ভুল বুঝেছি।মায়ের থেকে তোকে আলাদা করেছি।তোর নামে বাজে কথা বলেছি’।তুই আমাকে মাফ করে দে’।আকাশ আর অধরা’কে তুই রেখে দে’।আমার মা হবার কোনো যোগ্যতা নেই রে’ মিনারা’।আমি জন্মের পরে অধরা মেয়ে হয়েছে বলে,অবহেলা করে তোকে দিয়ে দিয়েছি’।আকাশ যখন হলো’ শারমিন আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছিলো’।আমি ভয়ে আকাশ’কে তোর কাছে রেখে দেশ ছেড়ে চলে যেতে চেয়েছিলাম।কিন্তু শারমিন আমাদের ধরে ফেলে,আর আমাদের নিজের কাছে আটকে রাখে’।এমন’কি আমি অধরা’র সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলতাম।আমার নাম্বার থেকে আজেবাজে মেসেজ পাঠাতো’।যেনো অধরা’র স্বামী অধরা’কে ভুল বুঝে’।আমি যখন অধরা’কে বলতাম।এই জায়গায় আছি।পরেরদিন জায়গা বদলে ফেলতো’।ও আমাদের রুমে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে রাখতো’।যখন যা’ করতাম সব দেখে ফেলতো’।আমি মায়ের কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারি নাই।তুই আকাশ আর অধরা’র মা’।একদমে কথা গুলো বলে থামলেন তুলি বেগম’।
–তোমারা দুজনে-ই আমাদের মা’।আমাদের চোখে দু’জনেই সমান’।এমন ভাবে কান্না করলে,আমি খুব রাগ করবো’।তোমরা আর কেউ কান্না করবে না।এবার থেকে আমরা সবাই মিলে,সুখে সংসার করবো’।কেউ আমাদের আলাদা করতে পারে না।শারমিন খালাকে আমরা পুলিশের হাতে তুলে দিব।
–একসাথে দু’টো মা পেয়ে গেলাম’।এখন থেকে সবকিছু দু’টো করে পাব তাই বল আপাই’।আকাশে’র কথা শুনে সবাই আকাশে দিকে তাকালো’।
–তুই এখনো জেগে আছিস’।
–না রে’ আপাই আমি ঘুমিয়ে গিয়ে ছিলাম।তোদের বকবকে’র জন্য আমার ঘুম ভেঙে গেলো’।
–অধরা তারমানে তুমি সবকিছু জানতি’।বলল মিনারা বেগম।
–হুম মা জানতাম।আকাশ হবার পরে মা আমাকে সবকিছু বলেছিল,এটা-ও বলেছিল সে আমার আসল মা’।
–তাহলে আমাকে এতদিন বলিস নাই কেনো’।
–তুমি আমার কলিজার টুকরা মা’।তোমাকে কিভাবে কষ্ট দেই বলো’।মেয়ের কথা শুনে মিনার বেগম মেয়েকে বুকে টেনে নিলেন’।
–দুই মাকে পেয়ে এখন আমাদের কেউ চিনবে না’।অধরা’র বাবা আর মনির সাহেব বলল।সবাই মিলে,হেঁসে দিলো’।মা-বাবা মেয়ে’র মিলন দেখে আহানের মনে প্রশান্তি বয়ে গেলো’।তার দায়িত্ব শেষ’।অধরা’র মুখের হাসি অধরা’কে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে।এটা ভেবেই আহানের ভেতরে ভালো লাগা কাজ করছে’।এখানে আর আমার কোনো কাজ নেই।আহান কোনো কথা না বলে সেখানে থেকে আস্তে করে বেড়িয়ে আসলো’।খুব সাবধানতার সাথে বেড়িয়ে আসছে’।
ফাঁক রাস্তা,হালকা শীতের রাত,চারিদিকে নেই কোনো কোলাহল’।জনশূন্য রাস্তায় আপন মনে গাড়ি চালিয়ে,নিজের বাসার উদ্দেশ্য যাচ্ছে আহান’।বুকের মাঝখানে কেমন জানি ফাঁকা ফাঁক লাগছে’।বড্ড অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে’।না চাইতে-ও চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে’।শব্দহীন কান্না খুবই ভয়ংকর’।গাড়ি চালিয়ে বাড়ি পর্যন্ত যেতে-ই ইচ্ছে করছে না আহানে’র।সবকিছু বিরক্ত লাগছে’।কোনো রকম বাসায় এসে ফ্রেশ না হয়ে-ই শুইয়ে পড়ল’।দু-চোখের পাতা কিছুতে-ই এক করতে পারছে না’।উঠে বিরক্ত হয়ে ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিলো’।তবু-ও ঘুম আসছে না।সারারাত ছটফট করতে করতে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমিয়েছে আহান’।
পরের দিন সকাল বেলা সবাই খাওয়া-দাওয়া করে নিজের কাজ করছে’।আহান আর অধরা আসছে না দেখে সবাই অবাক হলো’।এগারোটা’র দিকে আশরাফুল চৌধুরী তিতলি আর বীরকে ডেকেছেন।বীর সকাল বেলা’ই উঠে পড়েছে’।কিন্তু তিতলি এখনো ঘুমাচ্ছে’।বীরের সাথে ভালো-মন্দ কথা বলছিলেন আশরাফুল চৌধুরী’।তখন-ই তিতলি ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে আসে’।
–এতবেলা করে ঘুমালে চলবে’।শশুর বাড়ি গিয়ে-ও এমন করবে নাকি’।
–সবাই তো’ আর নিজের বাবা-মা না’।আমি আর শশুর বাড়িতে যাব না।
–খেয়ে আসো আগে’।তোমার সাথে আমার কথা আছে’।তিতলি আর কোনো কথা না বলে খেতে চলে গেলো’।খেয়ে এসে বাবার পাশে বসলো’।আশরাফুল চৌধুরী মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল’।
–দেখো মা’।মানুষের বিয়ে একবার-ই হয়’।তাই বলে সংসার করবে না।এটা কেমন কথা’।বলছি কি’ ছেলেটা না হয়’।একটা ভুল করে ফেলছে’।সে,তো তার ভুল বুঝতে পেরেছে’।সে,তার ভুল বুঝতে পেরে মাফ চেয়ে একটা সুযোগ চেয়েছে’।যে,ভুল করার পরে মাফ চায়।নিজেকে ঠিক করে নেওয়া’র একটা সুযোগ চায়।তাকে মাফ করে একটা সুযোগ দিতে হয়’।ধরে নিলাম তুমি সংসার করবে না।সংসার ছেড়ে যখন তুমি আবার আমার কাছে আসবে’।তখন সমাজ তোমাকে আগের মতো মেনে নিবে না মা’।তুমি যখন রাস্তা দিয়ে যাবে।তোমার আড়ালে তারা তোমাকে নিয়ে কটু কথা বলবে’।অনেকে তোমার সামনে বলবে’।রাস্তায় যখন যাবে’।লোকে দেখে বলবে দেখো’ ডিভোর্সি মেয়ে যাচ্ছে’।একবছর সংসার করে খেতে পারলো না’।এর থেকে-ও বাজে কথা বলবে’।আমি বাবা হয়ে সেসব কথা কি করে বলি’।বীর কিন্তু আরেকটা বউ পেয়ে যাবে।তুমি আরেকটা স্বামী পেয়ে যাবে।কিন্তু আমাদের সমাজে ছেলেদের দোষ’কে দোষ বলে মনেই করে না।আর মেয়েদের পান থেকে চুন খোঁসলে হাজার রকমে’র কথা শুনতে হয়’।আমাদের সামাজে মানুষ মেয়েদের থেকে ছেলেদের প্রাধান্য দেয় বেশি।মেয়েদের দোষ,দোষ।কিন্তু ছেলেদের দোষ,দোষ না কারন তারা ছেলে’।এখন যদি বলো আমি তোমাকে খাইয়ে পড়িয়ে রাখছি।তুমি সমাজের খাও না।তাহলে তাদের কথা কেনো শুনবে’।তোমার শুনতে হবে না’।তারা বলতে বলতে এমন এমন কথা বলবে,তোমার কলিজায় দাগ কেটে যাবে।তাদের কথাগুলো ধারালো অস্ত্রের মতো আঘাত করবে’।তুমি না চাইলে-ও তাদের কথা তোমাকে আঘাত করবে।মন খারাপ হবার কারন হবে’।একটু একটু করে শেষ করে দিবে তারা তোমাকে’।তাদের কাজ’ই এটা যারা ভালো থাকবে তাদের কিভাবে নিচে নামানো যায়।আর যারা আঘাত প্রাপ্ত তাদের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কিভাবে ক্ষত-বিক্ষত করা যায়।তুমি’ই বলো,তোমাকে কেউ বাজে কথা বলুক এটা তুমি চাও।আর আমি বাবা হয়ে মেয়ের নামে কেমন করে কটু কথা শুনবো বলো’।তাই বলছি বিয়েটা যখন হয়ে গেছে’।ছেলেটা’কে একটা সুযোগ দিয়ে দেখো’।তুমি বলতে পারো বাবা জোর করে নিজের মতামত আমার ওপরে চাপিয়ে দিচ্ছে’।আমি তোমাকে জোর করছি না মা’।আমি তোমাকে শুধু বললাম’।রাগ না করে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নাও।তুমি যা বলবে আমি তাই করবো’।তোমার মতামতের বাহিরে যাব না’।
আহান নিচে আসছিল’ বাবার কথা শুনে দাঁড়িয়ে যায়’।সে-ও ভাবলো’ সত্যি তো’ বীর ভাইয়া নিজের ভুল বুঝতে পারছে’।আপু’কে ভালোবাসার একটা সুযোগ চাচ্ছে’।একটা সুযোগ দিয়ে দেখা উচিৎ’।আহান’কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বীর বলল’।
–আহান দাঁড়িয়ে আছো কেনো’।
–এমনই ভাইয়া’।
–আহান অধরা কোথায়’।
–ওকে নানির বাসায় রেখে আসছি বাবা’।ও আর কোনোদিন আসবে না’।
–আমি ভেবে দেখছি বাবা।আমি তোমাকে পরে উত্তর দিব।বলে’ই তিতলি উঠে চলে গেলো’।বীর-ও তিতলি’র সাথে গেলো’।সবাই আহানে’র কথাটা সাধারণ ভাবে-ই নিয়েছে’।এর আগে-ও এমন করেছে তারা দু’জন’।
–মজা করছো আহান’।
–তুমি আমার ফ্রেন্ড হও বাবা।তোমার সাথে আমি মজা করবো’।
ছেলের শান্ত কণ্ঠে বলা কথাটা আশরাফুল চৌধুরীর মনে ভয় ধরিয়ে দিলো’।ছেলে আমার কখনো এমন করে কথা বলে না।ছেলেকে আমার কেমন বিধস্ত দেখাচ্ছে’।আশরাফুল চৌধুরী ছেলের কাছে গেলেন।মাথায় হাত দিয়ে বললেন’।
–কি হয়েছে বাবা’।তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো’।রাতে ঘুমাও নি’।তুমি তো’ এত বেলা করে ঘুমাও না’।
–আজকে তো’ শুক্রবার’।তাই ঘুমিয়েছি বাবা’।অধরা কিন্তু সত্যি আসবে না।আমি তোমার সাথে মজা করছি না।কালকে আমি রেখে আসছি ওকে’।এখন হয়তো ভালো আছে।বলে-ই খেতে বসলো আহান’।দু’বার খাবার মুখ দিয়ে খেতে ইচ্ছে করলো না’।খাবার রেখে উঠে চলে গেলো’।সারাদিন আর বাসায় ফেরে নি আহান’।আফরোজা চৌধুরী ড্রয়িং রুমে বসে ছেলের জন্য অপেক্ষা করছে’।সাতটার দিকে আহান বাসায় আসলো’।
–সারাদিন কোথায় ছিলে,বাসার কথা একবার-ও মনে হয় নাই।সবাই তোমার জন্য চিন্তা করছে।
–বাসায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসে মা’।আমি নিশ্বাস নিতে পারি না।জানো মা’ আমার অনেক কষ্ট হয়’।বলে’ই ওপরে চলে গেলো’ আহান’।ছেলের এমন করুন অবস্থা দেখে আফরোজা চৌধুরীর চোখ ছলছল করছে’।চোখের পলক ফেললে-ই পানি গড়িয়ে পড়বে’।আফরোজা চৌধুরী আহানে’র ফ্রেন্ডদের আসতে বলল’।তারা বলেছে আমরা থাকতে আপনার চিন্তা করা লাগবে না আন্টি।একটু অপেক্ষা করুন।আমরা সবাই চলে আসছি।তারপরে দেখবো কেমনে আহান মন খারাপ করে থাকে।
চলবে…..