তুমি বললে আজ পর্ব-১৮+১৯

0
432

#তুমি_বললে_আজ
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
পর্বঃ ১৮.

.
নিস্তব্ধ রাতের শুনশান নীরবতায় কে*টে গেল কিছু সময়, কিছু মুহুর্ত। এক সময় ফোঁপানোর শব্দও কমে গেল, থেকে গেল শুধু নিশ্বাসের আনাগোনা। ঠিক কতটা সময় কে*টে গেছে জানা নেই। কিন্তু মধ্য রাত যে পেরিয়ে গেছে সেটা ঠিকই অনুভব করতে পারছি। তাসফি ভাইয়ের প্রতি আমার ভয়টা একটুও কমে নি, কিন্তু তবুও ঘাপটি মে*রে পড়ে আছি ওনার বুকে। উনিও দু’হাতে শক্ত করে চেপে ধরেছেন নিজের সাথে। ওনাকে ভয় লাগলেও বারংবার মনে হচ্ছে এটাই আমার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। যতকিছুই হয়ে যাক না কেন, ওনার বুকে থাকলে কখনোই কোনো ক্ষতি হবে না আমার।
তাসফি ভাই কয়েকবার ডেকে গেলেও সারা দিলাম না আমি, সেভাবেই পড়ে রইলাম ওনার বুকের সাথে, ঝাপটে ধরে। আমার সারা না পেয়ে একটু থামলেন উনি। এক হাত আমার কোমর থেকে উঠিয়ে গালে রাখলেন। ব্যাথায় কুঁকড়ে গেলাম যেন, অস্পষ্ট সুরে ‘আহ্’ করে আত্মদান বেরিয়ে এলো। আমার ব্যাথার উৎসটা উনি হয়তো ঠিক বুঝতে পারলেন না। আবারও গালে হাত চেপে ধরতেই অস্পষ্ট সুরে বলে উঠলাম,
“আহ্! লাগছে আমার….”

“কি হয়েছে? কোথায় লাগছে তোর….”

ওনার কথার প্রতিত্তোরে কিছু বললাম না আমি। ওনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চেষ্টা করলাম। আস্তে করে বলে উঠলাম,
“এ..এখানে কি করছেন আপনি? চচ্…চলে যান।”

ওনাকে ছেড়ে একটু দূরে সরে গেলাম। উনি সাথে সাথে এগিয়ে এলেন। দু’ হাতে ধরতেই আমি আবারও পিছনে সরে গেলাম। আমাকে এভাবে সরে যেতে দেখে উনি আস্তে করে বলে উঠলেন,
“কি হয়েছে রুপু… এমন করছিস কেন? বল আমাকে, কোথায় লাগছে?”

“চলে যান না আপনি…. আমি আর কারোর সাথে কথা বলবো না… কারোর সাথে না। প্লিজ! তাসফি ভাই, আপনি চলে যান।”

“এই রুপু…. রুপুসোনা তাকা আমার দিকে, দেখ আমাকে। তুই কি আমাকে ভয় পাচ্ছিস?”

উত্তর দিলাম না ওনার কথার। মনের ভয়টা কিছুতেই বের করতে পারছি না যেন। মনে হচ্ছে, এই বুঝি আরেক গালে ওনার শক্তপোক্ত হাতের থাপ্পড় পরবে। ভেবেই নিজেকে আরও গুটিয়ে নিলাম। হঠাৎ থেমে গেলেন উনি। না আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন, আর না কিছু বললেন। প্রায় মিনিট দুয়েক পর যখন বুঝতে পারলাম উনি চুপ করে গেছেন, তখন মাথাটা হালকা করে তুলে তাকালাম ওনার দিকে। বারান্দা ও জানালা দিয়ে আসা রাতের আলোয় ওনার চেহারা দেখতে কোন অসুবিধা হলো না আমার। থমকে গিয়ে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। এক পলক তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নিলাম। উনি কিছু সময় পর হুট করেই এগিয়ে এলেন আমার কাছে। চমকে গিয়ে ওনার দিকে তাকাতেই দু’ হাতে আগলে নিয়ে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেন,
“সরি! রুপুসোনা, ভুল করে ফেলেছি আমি। প্লিজ! ক্ষমা করে দে আমাকে। একবার তাকা আমার দিকে। এভাবে ভয় পাস না, দূরে ঠেলে দিস না আমাকে।”

একটু চুপ থেকে কপালে আলতে করে ঠোঁটের স্পর্শ দিলেন। আরও কাছে টেনে নিয়ে বলে উঠলেন,
“আমাকে ক্ষমা করে দে রুপু, তখন সত্যিই ওমনটা করতে চাই নি। রাগের মাথায় তখন কি করেছি নিজেই জানি না। ছেলেটার সাথে তোকে ওভাবে দেখে মাথা ঠিক ছিলো না আমার, কিছু জানার চেষ্টা না করে রাগ দেখিয়েছি। সরি! রুপু, এভাবে ভয় পেয়ে থাকিস না।”

“আ..আপনার ভয়টা কাটিয়ে উঠতে পারছি না তাসফি ভাই, কিছুতেই পারছি না।”

“একদম ভয় পাবি না, কিছু করবো না আমি তোকে, আমার রুপুসোনা কে কিছু করবো না।”

বলেই আবারও বুকের সাথে আবারও জড়িয়ে নিলেন। অনেক কিছু বলে বোঝাতে চাইছেন আমাকে, বারংবার বলতে লাগলেন যেন ভয় না পাই ওনাকে। পুরোপুরি ভয়টা না কাটলেও ওনার টি-শার্ট খামচে ধরে বুকে মুখ গুঁজে চোখ বন্ধ করে নিলাম।

.
সকালের সদ্য ওঠা সূর্যের তীব্র আলো মুখের উপর পরতেই ঘুমটা আলগা হয়ে এলো। জানালা দিয়ে আসা প্রতিদিনের যান্ত্রিক শব্দ আজকে কেন জানি তীব্র ভাবে অনুভব হতে লাগলো। গভীর ঘুমটাও ছুটে গেল তাতে। প্রচন্ড মাথা ভার অনুভব হওয়ায় চোখটাও খুলতে পেলাম না। তবুও বেশ কিছু সময় নিয়ে চোখ দু’টো খোলার চেষ্টা করলাম, বালিশের পাশ থেকে মোবাইলটা হতে নিয়ে সময়টা দেখে নিলাম। সাতটা বাজে, খুব একটা সকাল বলে মনে হলো না। মোবাইলটা আবারও আগের জায়গায় রেখে চোখ দুটো বন্ধ করে নিলাম। শরীরটা কেন জানি একদমই ভালো লাগছে না। না চোখ দুটো খুলপ রাখতে পারছি, আর না পারছি শরীরের দূর্বলতা কাটাতে। চুপ করে বালিশে মাথা গুঁজে শুয়ে রইলাম।

.
ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেতেই কেঁপে উঠলো পুরো শরীর, কানে এলো তাসফি ভাইয়ের কণ্ঠস্বর। মিটমিট করে চোখ খুলতেই ভেসে উঠলো ওনার চেহারা। একটুপর ফুপির কণ্ঠও ভেসে উঠলো। আমাকে চোখ খুলতে দেখেই ফুপি ঝাপিয়ে পড়লো আমার উপর। দু’ হাতে আমাকে ধরে উদ্বিগ্ন গলায় বলে উঠলেন,
“ঠিক আছিস তো মা? শরীর কেমন লাগছে এখন? এতটা জ্বর উঠেছে, আমাকে ডাকিস নি কেন? রূপা…. এই রূপা….”

“আম্মু…. সরো তুমি, আমাকে দেখতে দাও।”

“কি দেখবি তুই…. কি দেখবি… হ্যাঁ? খবরদার ওর কাছে আসবি না। দেখছিস? মে*রে কি অবস্থা করেছিস ওর? গালটা কেমন লালচে ধরে আছে, জ্বরে গা টা পুড়ে যাচ্ছে মেয়েটার।”

ফুপির কথায় সহসায় উত্তর দিলেন না উনি। একটু সময় নিয়ে আস্তে করে বলে উঠলেন,
“এখন কি এসব বলার সময় আম্মু? এমনিতেই ও অসুস্থ, তার মাঝে তুমিও শুরু করলা? দেখতে দাও আমাকে। ওকে কিছু খাইয়ে ওষুধ খাওয়াতে হবে।”

আর কিছু বললো না ফুপি, আমি একটু ওঠার চেষ্টা করতেই তাসফি ভাইয়া এসে ধরলেন আমাকে। ফুপিকে বললেন, উনি আমাকে সামলাচ্ছে, ফুপি গিয়ে তরল কিছু বানিয়ে আনে যেন। বাধা দিলো না ফুপি। আমাকে সামলে রাখতে বলে চলে গেলেন খাবার আনার জন্য।

ফুপি রুম ছেড়ে বেড়িয়ে যেতেই তাসফি ভাইয়া কিছু বলতে চাইলেন। তার আগেই আমি অস্পষ্ট সুরে বললাম ওয়াশরুমে যাবো, ছেড়ে দিতে। উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বিছানা থেকে নামলেন, আমি নামার জন্য একটু এগোতেই উনি একটু নিচু হয়ে ফট করে কোলে তুলে নিলেন আমাকে। দূর্বল শরীরে ছটফট করতে না পারলেও মুখ ফুটে অস্পষ্ট সুরে বলতে লাগলাম নামিয়ে দিতে। কিন্তু কোন কথায় কানে নিলেন না উনি, সোজা ওয়াশরুমে নিয়ে গেলেন আমাকে।

.
সারাদিন কিভাবে কে*টে গেল বুঝতেই পারলাম না। প্রচন্ড জ্বরের মাত্রায় শরীরের দূর্বলতা আর মাথা ব্যাথা নিয়েই কে*টে গেছে যেন। জ্বরের ঘোরে সারাটাদিন ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলেও মাঝে মাঝে যখন জেগে ছিলাম তখন ঠিকই সবার কথা অনুভব করতে পেরেছি। ফুপি ও তাসফি ভাইয়া সারাদিন আমার পাশে থেকে নড়ে নি। ফুপি কাজের জন্য গেলেও তাসফি ভাইয়া এক মুহুর্তের জন্যও নড়েন নি হয়তো আমার পাশে থেকে। যতবারই চোখ মেলে তাকিয়েছি ঠিক ততবারই ওনাকে দেখতে পেয়েছি।

বিকেলের পর কিছুটা জ্বর কমলেও রাতের বেলা দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেলো যেন। গায়ে মোটা কম্বল দিয়েও কেঁপে কেঁপে উঠলাম শুধু। ফুপি অনেক কষ্টে কিছুটা সুপ খাইয়ে দিলো, তারপর ওষুধটা খাইয়ে দিতে গিয়ে বাঁধলো আরেক বিপত্তি। বমি করে একাকার অবস্থা হয়ে গেল। তারপরই একদম নির্জীব হয়ে গেলাম। তাসফি ভাই ও ফুপির কথা কানে এলেও কোন কথাই ঠিকঠাক ভাবে ধারণ করতে পারলাম না মস্তিষ্কে।
সারারাত একই ভাবে কেটে গেল যেন, থেকে থেকে বেশ কয়েকবার বমি হলো। আমাকে সামলাতে সামলাতে নির্ঘুম কাটিয়ে দিলো ফুপি ও তাসফি ভাই। ফুপি একটু ঘুমালেও তাসফি ভাই একইভাবে পাহারা দিয়ে গেলেন আমাকে।

.
ম্যাচ ম্যাচে শরীর নিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠতেই কোথা থেকে যেন দৌড়ে এলেন তাসফি ভাই। আমাকে এক হাতে ধরে উত্তেজিত কণ্ঠে বলে উঠলেন,
“কি হয়েছে রূপু? উঠছিস কেন, কিছু লাগবে? লাগলে আমাকে বল, আমি এনে দিচ্ছি। ”

অবাক হয়ে তাকালাম ওনার দিকে। এতটুকুতেই কতটা উত্তেজিত হয়ে গেছেন উনি, ওনার চেহারার দিকেও ঠিকভাবে তাকানো যাচ্ছে না। কি অবস্থা করেছেন নিজে এই তিন দিনে।
আজকে তিন দিন পর কিছুটা ভালো লাগছে শরীরটা। এই তিন দিনে প্রতিটা মুহুর্তে তাসফি ভাই সামলিয়েছেন আমাকে, আগলে রেখেছেন সবসময়। আমার কোন উত্তর না পেয়ে গেলাম উনি আবারও ধীর কণ্ঠে বলে উঠলেন,
“রুপু! কিছু লাগবে? বল আমাকে…”

মাথা ঝাঁকালাম আমি, বোঝালাম লাগবে না কিছু। উনি কপালে হাত দিলে, দেখতে লাগলেন জ্বরটা কেমন আছে। কপালে হাত দিয়ে জ্বরের মাত্রটা হয়তো বুঝতে পারলেন না। হাত নামিয়ে গালে রাখলেন, তারপর গলায় দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলেন। আস্তে করে বলে উঠলেন,
“শরীর কেমন লাগছে এখন? ভালো লাগছে তো?”

“হুম…. ”

“আগের থেকে ভালো লাগছে তো? মাথা ব্যাথা কমেছে?”

“হুম!”

এবারও ছোট করে জবাব দিলাম। আমার পজিটিভ উত্তর পেয়ে জোরে করে নিশ্বাস ছাড়ললেন, এবার হয়তো কিছুটা শান্ত হলেন উনি। আমি এক মনে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে, কয়েকদিনে নিজের চেহারাটাই যেন অন্যরকম বানিয়ে ফেলেছেন উনি। খাওয়া দাওয়া ঘুম সব কিছুই যেন ছেড়ে দিয়েছেন।
আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আলতো করে গালে হাত দিলেন। বললেন,
“কি হয়েছে? কিছু বলবা আমাকে?”

“নিজের যত্ন নেন নি কেন? চেহারার এই অবস্থা হয়েছে কেন আপনার?”

আমার কথায় হাসি ফুটে উঠলো ওনার ঠোঁটের কোণে। সহসায় কিছু বললেন না। একটু সময় নিয়ে আস্তে করে বলে উঠলেন,
“আমার রুপুসোনা এভাবে পড়ে আছে, আর আমি নিজের যত্ন নিবো? এটা কিভাবে সম্ভব, বলো?”

“ভালো লাগছে না আপনাকে এভাবে দেখতে।”

এবার বেশ শব্দ করেই হেঁসে উঠলেন উনি। আমাকে আলতো করে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলে উঠলেন,
“তাহলে, তোমাকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে আমার কেমন লেগেছে, বলো? কিভাবে সহ্য করেছি আমি? একদম ভালো লাগে নি আমার, তোমাকে এভাবে দেখে, একদমই না।”

প্রতিত্তোরে কিছু বললাম না আমি। ওনার বুকে মাথা রেখে চুপ করে রইলাম। এই কয়েদিনে যে ফুপি ও উনি ঠিক কতটা কষ্ট করেছেন, সেটা খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছি। ওই বাসায় জানাতে চাইলেও আমি বারণ করে দিয়েছি ফুপিকে না বলতে। গালের লালচে দাগটা দু’দিন খুব স্পর্শ ভাবেই ছিলো, যা অনায়াসে সবার নজরে পড়তো, প্রশ্ন উঠতো সেটা নিয়ে। তাই জ্বরের ব্যাপারটাও না জানাতে বলেছি। অনেক ভেবে ফুপিও আর জানায় নি। এই কয়েটাদিন আমার জন্য বেশ কষ্টও হয়েছে সবার। আগামীকাল রাতে ফুপাও বাসায় এসেছেন। সেদিন দুপুরের বিষয়টা না জানার কারণে কাউকে কিছু বলেনও নি।
তাসফি ভাইয়া হঠাৎই নিজের সাথে একদম মিশিয়ে নিলেন আমাকে। গভীরভাবে জড়িয়ে নিয়ে ধীর কণ্ঠে বলে উঠলেন,
“সরি রুপুসোনা, অনেক অনেক সরি। অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি তোমাকে, তাই না? অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, তোমাকে এভাবে দেখে। সবকিছুর জন্য সরি! প্লিজ ক্ষমা করে দিও আমাকে।”

.
.
চলবে…..

#তুমি_বললে_আজ
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
পর্বঃ ১৯

.
সন্ধ্যা রাতে একে একে জ্বলে উঠলো ল্যাম্পপোস্টের আলো গুলো। আধো অন্ধকার থেকে হলদেটে আলোতে আলোকিতো হয়ে উঠছে রাস্তার আনাচে কানাচে। রাস্তায় মানুষের আনাগোনা তাতেও যেন কমে গেল না, বরং বারতে থাকলো। ঘরমুখো মানুষেরা ঘরে ফেরার জন্য তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে। সমান তালে ছুটে চলে যানবাহন গুলো। বারান্দায় বসে দেখে চলেছি রাত নামার আগ মুহুর্তের শহরটা। যদিও আমার রুমের বারান্দাটা রাস্তার অপজিটে হওয়ায় পুরোপুরি ভাবে রাস্তাটা নজরে আসে না। বারান্দা থেকে শুধু শহরের এই ছোট বড় বিল্ডিংয়ের অবস্থানটাই খুব করে নজর কারে।

ফুপির বাসা থেকে বাসায় এসেছি দুপুরের পর। জ্বরটা কমার পর আরও দুই দিন ফুপি ও তাসফি ভাইয়ের জোরে থাকতে হয়েছে সেখানে। বাসা থেকে ফোন দিলেও এটা ওটা বলে বুঝিয়েছে। তাসফি ভাইয়া নিজেই নিয়ে এসেছেন বিকেলে, চলে যেতে চাইলেও আম্মু বড়মা মিলে যেতে দেয় নি ওনাকে।
বাসায় এসেই জানতে পেরেছি রিফাপুর বিয়ের ডেইট এক মাস এগিয়ে এসেছে। সাদিক ভাইয়ার ঢাকায় ট্রান্সফার হবে দু’ মাস পর, তাই বিভিন্ন ঝামেলায় ব্যস্ত থাকবে। বিয়ের ডেইট পেছাতে চাইলেও রিফাপুর ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পেছাতে পারে নি। তাই, দু’ পরিবারের মতামতে এক মাস এগিয়ে নিয়ে আসাটাই ভালো মনে করেছেন। কথাটা শোনার পর মনটা একেবারে ফুরফুরে হয়ে উঠেছে। পাঁচ বছর পর পারিবারের কারো বিয়ে বলে কথা, মনটা তো ভালো হবেই। শেষ বিয়েটা রিমি আপুর ছিলো, পাঁচ বছর আগে। অনেকটাই ছোট ছিলাম তখন, ছোট বলে সবার সাথে ঠিক ভাবে মজাটাও করতে পারি নি। আর সেই দ্বায়িত্বটা পালন করেছিলেন মি. বজ্জাত তাসফি। কিন্তু এবার তো আর কোন বারণ করতে পারবেন না উনি, করলেও শুনবো না। অনেক কিছু প্ল্যান করে রেখেছি রিফাপুর বিয়ে তে। ওই বজ্জাত লোকটা বাগড়া না দিলেই হয়।

আকাশ কুসুম ভাবতে ভাবতে মোবাইলটা হাতে নিলাম। একটু আগেই রিফাপুর সাথে কথা বলেছি। ভীষণ খুশি আপু, হবে নাই বা কেন? তাদের এতদিনের ভালোবাসার পূর্ণতা পাবে বলে কথা।
মোবাইল হাতে নিয়ে অনলাইনে যেতেই বেশ কিছু নোটিফিকেশন এসে জমা পড়ে গেল। গত কয়েকদিনের জ্বরের কারণে অনলাইনে আসায় হয় নি। নোটিফিকেশন গুলো চেক করতে করতে হঠাৎ জয়ের মেসেজ দেখে বেশ অবাক হলাম। এই ছেলেটা আবার কি বলে? ইচ্ছে হলো না সিন করার। ওর জন্য এতকিছু হলো, প্রথম বার তাসফি ভাই আমার গায়ে হাত তুললো। আবার কি করতে মেসেজ করেছে? সিন করতে না চাইলেও কিছু একটা মনে করে সিন করলাম। ওকে বারণ করা উচিত যেন আর মেসেজ না দেয়, তাসফি ভাইয়ের চোখে পড়লে আবারও ঝামেলা করবেন।

‘আই অ্যাম সরি রামিয়াত। আজকের সিন ক্রিয়েটের জন্য আমি সত্যিই সরি। আর যাই হোক ওভাবে তোমার হাত ধরাটা উচিত হয় নি আমার। বন্ধুত্ব নষ্ট হবার ভয়ে নিজের মনের কথাটা এতদিনে বলতে চাই নি, কিন্তু আজকে সেই কথাটা বলেই আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট করে দিলাম। তবে আমি চাইবো না এই সম্পর্ক ঠিক করতে, কারণ তোমার সামনে হয়তো আর দাঁড়াতেও পারবো না কখনো। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’

‘তোমার নতুন জীবনের জন্য অনেক শুভকামনা। তাসফি ভাই সত্যিই তোমায় অনেক ভালোবাসেন, যেটা আমি হয়তো কখনোই পারতাম না। আজকে ওনার সাথে দেখা না হলে, হয়তো কখনোই তোমার কথাটা বিশ্বাস করতাম না, কিছুটা হলেও সন্দেহ থেকে যেত। ওনার পারসোনালিটি সত্যিই আলাদা, সব দিক থেকেই তোমার জন্য পারফেক্ট। আমার কথা জানার পর যে এভাবে আমাকে খুঁজে বের করবেন, সেটা দেখেই আমি অবাক হয়েছি। ওনার রাগ দেখেও অবাক হয়েছিলাম। রাগ করারই কথা, ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারোর সাথে দেখলে রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। অবশ্য পরে ব্যাপারটা বোঝানোর পর উনি বুঝেছেন। তোমাকে নিয়ে সত্যিই অনেক পজিটিভ উনি। ভীষণ ভালোবাসে উনি তোমাকে, ওনার ভালোবাসা হারিয়ে যেতে দিও না কখনো। অনেক ভালো থাকবে ওনার সাথে, অনেক ভালো রাখবে তোমায়। ভালো থেকো রামিয়াত।’

চোখে মুখে হাজারো বিষ্ময় নিয়ে থম মে*রে বসে আছি আমি। প্রথম মেসেজটা দেখার পর অবাক না হলেও পরের টা দেখার পর যেন বিষ্ময় কাটছেই না আমার। মেসেজটার সময় সেদিন রাতের দেখাচ্ছে, তার মনে তাসফি ভাই জয়ের সাথে সেদিনই দেখা করেছেন? কিভাবেই বা খুঁজে পেল ওকে, আর কি-ই বা বলেছেন? উফ্! সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

এবার ঠিকই বুঝতে পারছি, সেদিন রাতে কেন ওভাবে বারবার ক্ষমা চাচ্ছিলেন উনি। জ্বরের মাঝে ওনার আমার প্রতি যত্ন, কেয়ার দেখে সবকিছু যেন ভুলেই গিয়েছিলাম।
লোকটা আসলেই বজ্জাত। না জানি জয় কে কি কি বলেছেন? কতটুকুই বা বলেছেন? আমাদের বিয়ের কথাটা যে জয় কে বলেছি, সেটাও শুনেছেন কি না, আল্লাহ -ই ভালো জানেন। উফ্! কথাটা ভেবেই কেমন জানি লজ্জা লাগছে।

জয়ের মেসেজের উত্তরে আর কিছু বললাম না। না বলাটায় শ্রেয় মনে করলাম। দু’ একটা কথায় আরও যে কথা বারবে, সেটা খুব ভালো ভাবেই জানি।
আর বসে থাকতে ইচ্ছে হলো না বারান্দায়। উঠে রুমে আসতেই হঠাৎ কিছু একটা খেতে ইচ্ছে হলো। গত কয়েক দিনে ফুপি এই অভ্যাসটা খুব ভালো ভাবেই শিখিয়েছে আমাকে। প্রতিদিন এই সময়টা কিছু না কিছু বানিয়ে দিয়েছে খাবার জন্য।
মোবাইলটা বিছানায় রেখে বেরিয়ে আসলাম রুম ছেড়ে। পুরো বাসাটা কেমন জানি গুমোট পরিবেশে ছেয়ে গেছে। রিফাপু থাকলে তবুও অন্য রকম হয়ে উঠে বাসার পরিবেশ। সবগুলো কাজিন আসলে তো কোন কথায় নেই। এ’পাশে শুধু আমি আর তাসফি ভাইয়ের রুমে উনি আছে। এ ‘ পাশে এসে কেউ আলোটাও জ্বালায় নি। একদম অন্ধকারে ছেয়ে আছে। লাইটের সুইচটা রিমি আপুর রুমের দেওয়ালের সাথে। অন্ধকারে যতটুকু পারলাম এগিয়ে গিয়ে লাইট জ্বালানোর চেষ্টা করলাম। হঠাৎ কারোর সাথে ধাক্কা লাগতেই প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলাম। ভয়ে ‘আহ!’ করে চিৎকার দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই খপ করে ধরে ফেললো আমাকে। সাথে সাথে ভারী কণ্ঠে বলে উঠলো,
“ভর সন্ধ্যায় এভাবে চিৎকার করছিস কেন? বেয়াদব!”

তাসফি ভাইয়ের গলা শুনে সাথে সাথে ওনার থেকে সরে আসার চেষ্টা করতে লাগলাম। এমনিতেই জয়ের মেসেজেটা দেখার পর আমার বলা কথাটা ভেবে লজ্জা লাগছে। ওনার সামনে কিভাবে থাকবো। আমাকে ছটফট করতে দেখে উনি আবারও ধমকে উঠলেন।

“পেঙ্গুইনের মতো এভাবে লাফালাফি করছিস কেন? লাফালাফি না করলে শান্তি পাস না? বেয়াদব!”

.
সময়টা যে কিভাবে চলে যায় সেটা বোঝা বড়ই কঠিন। মাস চলে গিয়ে পরের মাস কিভাবে এলো ঠিক ভাবে বোঝায় গেল না যেন। পুরো দমে রিফাপুর বিয়ের তোরজোর চলছে। ফুপিরাও এসেছে, কিন্তু বড় ফুপি এখনো আসেন নি, কাল বা পরশু চলে আসবেন। ভাইয়া আসতে না পারলেও রিমি আপু আজকেই আসবে হয়তো। বিয়ের বিভিন্ন কাজের কারণে সাহিল ভাইয়া, সাগর ভাইয়া এবং রাহাত কেও তাড়াতাড়ি আসতে বলেছেন তাসফি ভাইয়া। আর মাত্র এক সপ্তাহের মতো আছে বিয়ের, পাঁচদিন পর হলুদ।

সেদিনের জ্বরটা ছেড়ে যাবার পরও বাসায় এসে থেকে থেকে কিছুটা জ্বর এসেছিলো। আজকেও সকাল থেকে একটু আধটু জ্বর জ্বর অনুভব হতে লাগলো। তেমন একটা পাত্তা দিলাম না, রিফাপুর বিয়ের আনন্দে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই সবার চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ ভেসে আসতে লাগলো। বুঝে গেলাম বজ্জাত বাহিনী চলে এসেছে বাসায়। ড্রয়িংরুমে যেতেই নজরে এলো সবাইকে। সোফায় বসে ট্রি টেবিলে এক গাদা কার্ড নিয়ে বসে আছেন বড় বাবাই, তার পাশে বসে আছেন তাসফি ভাইয়া ও সাহিল ভাইয়া। বাকিরাও মনোযোগ সহকারে বড় বাবার বুঝিয়ে দেওয়া কথা শুনে চলছে।
ডাইনিং টেবিলের কাছে যেতেই বড়মা খাবার জন্য তাড়া দিলেন। চেয়ারে বসতেই আম্মু এসে তাড়াহুড়োয় খাবার দিতে লাগলো প্লেটে। আম্মু তাড়াহুড়োয় কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললাম, আমি নিজেই নিচ্ছি, তুমি যাও। প্রতিত্তোরে কিছু বললো না আম্মু। সামনের চেয়ারে রিফাপু বসে খেয়ে চলেছে আপন মনে। আমিও খেতে খেতে তাকিয়ে আছি আপুর দিকে। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখতেই বলে উঠলো,
“কি হয়েছে? এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?”

“দেখছি তোমাকে, আর ভাবছি।”

“আমাকে এত দেখার কি আছে? আর কি এত ভাবছিস?”

“ভাবতেছি, এতদিন এতএত খেয়েও মোটা হও নি, কিন্তু এবার একটু খেয়েই মোটা হয়ে যাবা।”

“তো…. কি এমন খাবো যে, মোটা হয়ে যাবো?”

“কি আবার? কয়েক দিন পর তোমার বিয়ে, বিয়ের পর সাদিক ভাইয়ার আদর খেয়েই মোটা হয়ে যাবা।”

“ওও… আচ্ছা! কি….. কি বললি তুই রূপা?”

এবার খিলখিল করে হেঁসে উঠলাম আমি। রিফাপুর রিয়াকশন দেখে প্রচন্ড হাসি লাগছে এই মুহুর্তে। হাসতে হাসতেই খেতে লাগলাম। রিফাপু কিছুটা রেগে যাবার ভান ধরে বলে উঠলো,
“বড় বোন কে এসব বলতে লজ্জা লাগে না তো? এসব কি কথাবার্তা? হু!”

তবুও হাসতে লাগলাম আমি। হাসতে হাসতে বলে উঠলাম,
“তুমি আমার বড় বোন? যাও বিশ্বাস করলাম না তোমার কথা।”

“তুই আসলেই বেয়াদব হয়ে যাচ্ছিস রূপা, দাঁড়া তাসফি ভাইকে বলে তোর একটা ব্যাবস্থা করছি।”

বলেই একটু থামলো রিফাপু, সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে সন্দিহান গলায় বলে উঠলো,
“আচ্ছা রূপা সত্যি করে বল তো, তাসফি ভাইয়ের থেকে যে এতএত আদর খাস, তবুও মোটা হচ্ছিস না কেন বল তো?”

“তোমার ওই আদরের বজ্জাত ভাইটা কি আমাকে আদর করেছে কখনো, যে মোটা হবো? সারাদিন তো শুধু ধমকের উপরেই রাখে।”

“তাহলে তাসফি ভাইকে বলি, কি বলিস? ছোটখাটো আদরের ডোসটা বারিয়ে বড় বড় আদর দিকে, মোটাতাজা করার ব্যাবস্থা করতে বলি।”

নিমিষেই হাসিটা বন্ধ হয়ে গেল, খুকখুক করে কেশে উঠলাম আমি। খাবারটা গলায় আঁটকে গেল যেন। এবার রিফাপু উচ্চস্বরে হেঁসে উঠে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিলো আমার দিকে। সাথে সাথে পুরো গ্লাসের পানিটা শেষ করে রিফাপুর দিককে তাকালাম। কথাটা যে কিভাবে নিজের অজান্তেই বেরিয়ে এসেছে, বুঝতেই পারি নি।উফ্! রূপা তুই আসলেই একটা গাধী, কিচ্ছু নেই তোর মাথায়। মি. বজ্জাত তাসফির মতো যে রিফাপুও অসভ্য হয়ে গেছে, এটা জানা ছিলো না আমার। উফ! সবগুলো এক, এদের সাথে থেকে থেকে আমিও এদের মতো হয়ে যাচ্ছি।
তাড়াতাড়ি করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম, আর থাকা যাবে না। তা না হলে আবারও কিছু না কিছু শুনতে হবে। যেতে যেতে রিফাপুর দিকে তাকিয়ে আস্তে করে বলে উঠলাম,
“তোমার ওই বজ্জাত ভাইয়ের আদরের দরকার নাই আমার। হু!”

রিফাপুর দিকে না তাকালেও তার জোরে জোরে হাসির শব্দটা ঠিকই ভেসে আসলো আমার কানে।

.
বসার রুমে আসতেই দেখি সবাই মিলে গভীর আলোচনায় ব্যস্ত। সবার আলোচনার মাঝে গিয়ে দাঁড়ালাম, কিন্তু গভীর আলোচনার কারণে আমার দিকে কারোর নজর পড়লো না। ঠিক বুঝতে পারলাম না কি নিয়ে কথা হচ্ছে তাদের।
একটু পর রাহাতের নজর পড়লো আমার দিকে। আমাকে দেখে রাহাত একবার তাসফি ভাইয়ার দিকে তাকালো রাহাত। তারপর হঠাৎই বেশ জোরে করেই বলে উঠলো,
“রূপা…. রূপা যাক, বাসায় তো ওর কোন কাজ নেই।”

রাহাতের কথায় আমার দিকে তাকালো সবাই। আমি কিছু না বুঝে আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছি। বড় বাবাই বলে উঠলো,
“ও যাবে? তোরাই কেউ যা তাসফির সাথে।”

সাহিল ভাইয়াও একইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে তাসফি ভাইয়ের দিকে তাকালো একবার। তারপর বড় বাবার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
“আমাদের তো এদিকে অনেক কাজ, এদিক টাও তো সামলাতে হবে। তাসফি ভাইয়ের সাথে ও গেলেই ভালো হবে, রিফার বোন হিসেবে।”

“কোথায় যাবো আমি? কোথায় যাবার কথা বলছো তোমরা?”

“আর বলিস না মা, রিফার শ্বশুর বাড়িতে এই কার্ড আর এএই জিনিসগুলো দিতে হবে। তাসফি একা একা যাবে, কেমন দেখায় না। যতই ওর বন্ধুর বাড়ি হোক, এখন তো আত্মীয়তা করতে যাচ্ছি।”

চিন্তিত হয়ে কথাটা বলেই থামলেন বড় বাবা। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি সবার দিকে। এতগুলো মানুষ থাকতে আমাকেই কেন যেতে হবে ওনার সাথে। না যাবার জন্য বলে উঠলাম।
“আমাকে টানছো কেন সবাই? এই রাহাত, তুই তো যেতে পারিস ওনার সাথে।”

“না না…. আমি পারবো না, আমার এদিকে অনেক কাজ আছে।”

“আমিও পারবো না, আমার এতগুলো কার্ড দেওয়ার দ্বায়িত্ব আছে।”

সাথে সাথে সাহিল ভাইয়াও বলে উঠলো। সাগর ভাইয়া কিছু না বলায়, ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম,
“ছাগল ভাইয়া…. ছাগল ভাইয়া গেলেই তো হয়, ওনার সাথে….”

“তুই আবারও আমাকে ছাগল বললি? তাসফি ভাই কি সাধে তোকে বেয়াদব বলে? আমার কি আর কাজ নাই, তোর মতো বসে আছি নাকি আমি?”

আমার কথাটা শেষ না হতেই ধমকে উঠলো সাগর ভাইয়া। এদের সবার কথায় বুঝে গেলাম কেউ যেতে রাজি নয়, তার উপর যেতে আসতে দুই দুইয়ে চার ঘন্টার পথ জার্নি। এদিকেও অনেক কাজ বাকি। বড় বাবাইও চুপ করে বসে আছেন। সবাইকে থামিয়ে দিয়ে তাসফি ভাই বলে উঠলেন,
“ওরা তো ঠিকই বলেছে, তোর তো আর বাসায় কোন কাজ নেই, বসে বসে মোবাইল টেপা ছাড়া। বাসায় বসে না থেকে, একটু তো কাজ কর।”

আমি না যাবার জন্য বারণ করলেও বড় বাবা যাবার কথা বললেন। এটাও বললেন, তাছাড়া আর উপায়ও নেই। তাসফি ভাই কিছুটা জোরে ধমক দিয়ে রেডি হতে বলতেই আর না বলার সাহস পেলাম না। বাসায় না বসে থেকে একটু ঘোরাঘুরিও হবে বাইরে গেলে, সেটা ভেবেই রেডি হবার জন্য রুমে চলে আসলাম।

.
.
চলবে……