তুমি হাতটা শুধু ধরো ২ পর্ব-১৪+১৫

0
259

#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো_২
#পর্বঃ১৪
#Jhorna_Islam

সোহা অনুষ্ঠানের জায়গায় উপস্থিত হয়ে দেখে বিয়ে হয়ে গেছে। সকলেই তাদের জন্য মোনাজাত ধরেছে মাত্র।
সোহা ও এক পাশে দাড়ায় তারাতাড়ি মাথায় ঘুমটা টেনে মোনাজাতে শা’মিল হয়।

মোনাজাত শেষ হতেই নোহার কাছে যেতে নেয়।হঠাৎ করেই পিছন থেকে দায়ান ডেকে উঠে। সোহা ঘুরে দায়ানের দিকে তাকায়।

— এতো সময় কই ছিলে?

— আ’প’দ দূর করে এলাম!

— মানে?

— আরে তেমন কিছু না। দেখেন নি আমার নাম করে কে আপনাকে ডেকেছিলো সেটাই দেখতে গিয়ে ছিলাম।

— এটা দেখতে এতো টাইম লাগে? আর জানতে পেরেছো কে ছিলো?

— তেমন কিছুই না। বাচ্চারা আপনার সাথে ম’জা করে ছিলো।

— এসব নিয়ে কেউ এমন ম’জা করে? আর বাচ্চারা আমাকেই পেলো ম’জা করার জন্য অদ্ভুত!

সেসব কথা বাদ দিন। সরুন আপুর কাছে যাই।আপু হয়তো মুখ ফুলিয়ে বসে আছে এতক্ষন তার পাশে ছিলাম না বলে।বলেই সোহা নোহার কাছে চলে যায়।

নোহার পাশে গিয়ে বসতেই,নোহা বলে উঠে,, কি চাই এখানে?যা এখান থেকে বলছি।

আপুুওও

কে আপু,কার আপু? আমি কারো আপু না।

তুমি না আমার মিষ্টি আপু? রাগ করে না প্লিজ। আসলে একটা ঝামেলা হয়ে ছিলো তো তাই ঐখানে ছিলাম।না হলে তোমাকে ছেড়ে আমি বাইরে ঘুরে বেড়াতাম? তুমিই বলো।

কিসের ঝামেলা?

তেমন কিছু না ওসব বাদ দাও।

——————————
আজ দায়ান রা সোহাদের বাড়িতেই থাকবে।আগামীকাল সকাল সকাল নিজেদের বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরবে।সেই অনুযায়ী সকলেই গোছগাছ মোটামুটি করে রেখেছে।

সোহার বাবা মা অবশ্য বলেছে আরো কয়েক দিন এখানে থেকে যেতে।এতে কেউ ই রাজি হয় নি।

মোটামুটি অনেক দিন থাকা হয়ে গেছে। আত্নীয়র বাড়িতে এতোদিন থাকা ঠিক না। তাছাড়া তারা যে কারণে এতো আগে এসে এখানে থেকেছে সেটা পূর্ণ হয়েছে।দায়ান কে কিছু টা স্বাভাবিক করার জন্য তারা এতো তারাতাড়ি এসেছিলো।দায়ান এখন অনেকটাই স্বাভাবিক।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ান কে ফোন ও দিচ্ছে যতো দ্রুত সম্ভব জয়েন হওয়ার জন্য।

রুশ ও বলে দিয়েছে আর থাকা যাবে না। নয়তো লোকজন ঘর জামাই বলা শুরু করবে।নানান লোক নানান কথা বলবে।এর থেকে চলে যাওয়াই বেটার।

সবার কথা শুনে সোহার বাবা মা আর বারণ করতে পারে না। আর মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই আজ হলেও ওদের যেতে দিতে হবে, কাল হলেও দিতে হবে।

তাই ওরা যখন চাইছে কাল চলে যেতে তখন যাক।

———————————-
পরের দিন খুব ভোরেই সকলে তৈরি হয়ে নেয়।ওদের ব্যাগ,অন্যান্য জিনিস পত্র ও গাড়িতে নিয়ে তুলছে।একটু সকাল সকাল ই বেরিয়ে যাবে তারা। সকালে রাস্তাটা একটু ফাঁকা থাকবে।নয়তো জ্যামের ক”বলে পরলে সারাদিন রাস্তায়ই পার হয়ে যাবে।

সোহাদের বাড়ির সকলেই ওদের গোছগাছ করতে সাহায্য করছে।

সোহা মন খারাপ করে গুটিশুটি মেরে এক কোণে বসে আছে।চোখের পানি ছলছল করছে।পলক ফেললেই টুপ করে গাল বেয়ে নিচে গড়িয়ে পরবে।

নোহা রেডি হয়ে বাইরে বেরিয়ে সোহার দিকে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার ও যে কষ্টে বুক টা ফেটে যাচ্ছে। নিজের বোনটা কে ছেড়ে এই বাড়ি ছেড়ে,, বাড়ির লোকদের ছেড়ে থাকতে হবে।

বিকেল হলেই আর সোহার সাথে গ্রামে ঘুরে বেড়ানো হবে না। বাবা মায়ের কাছে দুই বোন গিয়ে এক সাথে এটা ওটা বায়না করতে পারবে না।বোনকে মায়ের বকা,আর মারের হাত থেকে বাঁচানো হবে না। এসব ভেবে আরো খারাপ লাগছে। ঠিক তখনই কেউ নোহার কাঁধে হাত রাখে।

নোহা পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে তার মা।

নোহার মা মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,,, ভালো ভাবে থাকবি।পরিবারের সকলের আর নিজের যত্ন নিবি।ওরা যে ভাবে চলতে বলবে সে ভাবেই চলবি।কারো কথার অবাধ্য হবি না। আগে ওটা তোর ফুপির বাড়ি হলেও এখন কিন্তু ওটা তোর স্বামীর বাড়ি।রুশের খেয়াল রাখিস।

নোহা মায়ের কথা গুলো মন দিয়ে শুনে।তারপর মাথা নাড়িয়ে জানায় সব মেনে চলবে।

নোহার মা মুচকি হেসে মেয়ের কপালে চুমু খায়। তিনি জানেন নোহা কে এসব না বললেও নোহা সব কিছু মেনে চলবে।

নোহা মায়ের আদরে আর নিজেকে আটকাতে পারে না। মা কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়। নোহার মা ও নিরবে চোখের পানি ফেলছে।

সোহা নিজের মা বোনকে কাঁদতে দেখে দৌড়ে এসে দুজন কে জড়িয়ে ধরে নিজেও কেঁদে দেয়।

সকলেই চুপচাপ ওদের তিনজন কে দেখে।

নোহার বাবা এবার বলে,, কি শুরু করলে বলোতো তোমরা? এসবের কোনো মানে হয়? আর নোহার মা তুমি ও কি বাচ্চা হয়ে গেলে নাকি ওদের মতো।আমাদের মেয়ে তো ঐ বাড়িতে রাজরানি হয়ে থাকবে।তাহলে কাঁদছ কেনো? হাসি মুখে যেতে দাও।

তারপর রুশের দিকে তাকিয়ে বলে,,, রুশ তুই নোহা কে নিয়ে গাড়িতে উঠ।নয়তো এরা কাঁদতে কাঁদতে বন্যা বানিয়ে ফেলবে।বলেই উনি বেরিয়ে যান তারাতাড়ি।

সোহা এতো সময় নিজের বাবার দিকেই তাকিয়ে ছিলো।চোখের পানি আড়াল করতে যে তার বাবা তারাতাড়ি করে চলে গেছে তা আর বুঝতে তার বাকি নেই।

সোহাকে সেই কখন থেকে দায়ানের মা আর রুশের মা ওদের সাথে যেতে বলছে।সোহা শুনছেই না। বসে বসে কাঁদছে।

তারপরে যখন সকলেই গাড়িতে উঠে বসছে।তখন ও বলেছে সোহা রাজি হয় নি।

এবার দায়ান ও বলেছে সোহা চলো আমাদের সাথে। তোমার ও ভালো লাগবে নোহার ও ভালো লাগবে।

নাহ আমি যাবো না।

কেনো? তোমার বাবা মা তো কিছু দিন পর যাচ্ছেই,,ওদের রিসেপশনে।তখন রুশ আর নোহা তো আসবেই তুমি ও ঐসময় চলে আসবা।

আমি চলে গেলে বাবা মা আরো ভেঙে পরবে।ওদের কে সামলাবে? এখন আপু নেই সব দায়িত্ব তো আমারই।আপু চলে যাচ্ছে সাথে যদি আমিও চলে যাই ওরা আরো কষ্ট পাবে। আমি বাবা মায়ের সাথে রিসেপশনেই যাবো আপু কে আনতে। ঐখানে আপু কে সামলানোর জন্য রুশ ভাইয়া আছে।আপনারা সকলেই আছেন কিন্তু এইখানে কেউ নেই।

দায়ান সোহার কথা বুঝতে পারে। আসলে ঠিকই বলছে।তাই আর কথা বাড়ায় না। ঠিক আছে তখনই যেও। আসছি ভালো থেকো।

আপনিও ভালো থাকবেন।

আমার এই পিচ্চি বন্ধুটাকে অনেক মিস করবো।

ক”চু করবেন।দেখা যাবে কতো যে মিস করেন।

দায়ান সোহার কথায় হেসে দেয়। তারপর নিজে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসে।

সকলের থেকে বিদায় নিয়ে ওদের গাড়ি শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পিছনে ওদের গাড়ির দিকে সোহা আর ওর বাবা মা কতোক্ষন চেয়ে থাকে।তারপর সোহা নিজেকে ঠিক করে বাবা মা কে নিয়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে যায়।

————————————-
রুশের আর নোহার রিসেপশন আজ এক সপ্তাহ পর আয়োজন করা হয়েছে।

অনেক কে দাওয়াত আর আয়োজন করতে কিছু টা সময় লেগে গেছে,, যেহেতু খুব বড় করে আয়োজন করা হয়েছে।

এরমধ্যে সোহার সাথে নোহার কথা হয়ে গেছে অগনিত বার।কিন্তু দায়ানের সাথে এই কয়দিন এক বারের জন্য ও কথা হয় নি। এতে সোহার কিছু টা মন খারাপ। সোহার নাম্বার লোকটার কাছে আছে তাও একটা বার কল করে খুজ নেওয়া তো দূরের কথা একটা মি’স’ড’কল ও দেয় নি। সোহা ভাবতে থাকে দায়ান কি রকম পা/ষাণ হয়ে গেছে। হয়তো তার কথা দায়ানের মনেই নেই।

সোহারা সেই সকালের দিকেই চলে এসেছে। এখন সন্ধার কাছাকাছি সকলেই কমিউনিটি সেন্টারে এসে উপস্থিত হয়েছে। অথচ সোহার চোখ যাকে খুজে চলেছে তার দেখা সে পাচ্ছে না।

লোকটা কোথায় আছে,,? নিজের ভাইয়ের রিসেপশনেও উপস্থিত নেই।

এর মধ্যে বাম দিকের গেটে চোখ আঁটকে যায়।দায়ান ফরমাল ড্রেসআপ এ দাড়িয়ে আছে। মুখে কিছু টা ক্লান্তির ছাপ অথচ কয়েক জনের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।

সোহা এক দৃষ্টিতে দায়ানের দিকে তাকিয়ে রয়। মনে হচ্ছে এক সপ্তাহ না কয়েক বছর পর দেখছে দায়ান কে। চোখের তৃষ্ণা মেটে না শুধু দেখতেই মন চাচ্ছে। বুকে ঢিপ ঢিপ শব্দ বেজে চলেছে। উতলা মন টা কিরকম প্রশান্তি লাভ করেছে।

দায়ান কথা বলতে বলতেই সামনের দিকে চোখ যায়। তাকিয়ে দেখে সোহা তার দিকে তাকিয়ে আছে।

দায়ান যাদের সাথে কথা বলতেছিলো তাদের থেকে বিদায় নিয়ে বড় বড় পা ফেলে হাসি মুখে সোহার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।

সোহা দায়ানকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে কেমন অস্বস্তিতে পরে যায়। হা”স ফাঁ”স করতে থাকে। তাও দায়ানের থেকে দৃষ্টি সরায় নি।

হঠাৎ করেই দায়ানের ফোন টা বেজে উঠে। দায়ান দাঁড়িয়ে কপাল কুঁচকে পকেট থেকে ফোন বের করে কানে ধরে। তারপর কি যেনো বলতে থাকে।

তারপর আবার উল্টো দিকে ঘুরে দায়ান চলে যেতে থাকে। যাওয়ার আগে পিছন ফিরে সোহার দিকে একবার তাকায় দায়ান।তারপর কথা বলতে বলতে চোখের সীমার বাইরে চলে যায়।

সোহা দায়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কেটে মনে মনে বলে,,,,,,,

“কাছে আসলে পো”ড়ে মন,
দূরে গেলে ঠ’ন ঠ’ন।”

#চলবে,,,,,,,,,,,,,,

#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো_২
#পর্বঃ১৫(বোনাস)
#Jhorna_Islam

“আই লাভ ইউ দায়ান।”
কথাটা বলেই সোহা হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে ল’জ্জা’য়। প্রচুর ল’জ্জা লাগছে তার।ইশশশ ভালোবাসি কথাটা বলতে এতো ল’জ্জা অ’স্ব’স্তি ঘিরে ধরে কেনো?

না না আই লাভ ইউ কথাটাতে এতোটা ও ফিলিংস কাজ করে না।যতোটা আমি আপনাকে ভালোবাসি কথাটাতে কাজ করে।

ইংরেজিতে লাভ ইউ বলার থেকে বাংলায় ভালোবাসি কথাটা বেশি সুন্দর।

তাছাড়া কেউ খুব সহজেই আই লাভ ইউ বলে দিতে পারে।আমি তোমাকে ভালোবাসি কথাটা বলতে পারে না কেউ সহজে যদি কারো ভালোবাসায় কোনো খা”দ থাকে তাহলে একটু হলেও শব্দ তিনটি বলার আগে মুখে আটকাবে।

সোহা আই লাভ ইউ কথাটা খাতায় লিখে ছিলো।কিন্তু মন মতো হয়নি বলে কেটে খাতা থেকে ছিড়ে ফেলে।সোহা ঠিক করে রেখেছে ভালোবাসি কথাটা দায়ান কে চিরকুট হিসেবে দিবে।মুখে গিয়ে দায়ানের সামনে বলতেই পারবেনা।ল’জ্জা জড়তা সব এসে এক সাথে আ”ষ্টে পি’ষ্টে জড়িয়ে ধরবে।

মানুষের মনে যখন ল’জ্জা এসে হা’না দেয়।তখন মনের ভাব অন্য কে জানানোর জন্য চিঠির চেয়ে সুন্দর পদ্ধতি হতেই পারে না।

একটার পরে একটা করে চিঠি লিখছে আর কেটে ফেলে খাতার পৃষ্ঠা ছিড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছে। একটাও মন মতো হচ্ছে না।

—————————–
ঐদিনের পরে আরো এক মাসের মতো কেটে গেছে। রিসেশনে ঐদিন দায়ান আর যেতে পারে নি।সোহা দায়ানের মায়ের থেকে জানতে পেরেছিলো,,সোহাদের বাড়ি থেকে এসেই দায়ান হসপিটালে জয়েন হয়।আর কাজে প্রচুর ব্যস্ত হয়ে পরে। ডাক্তার দের তো আর ছুটি নেই।ওদের দিন রাত পার হয়ে যায় হাসপাতালে রু’গি’র সেবা করে।

রুশের রিসেশনের দিন ও দায়ান ছুটি পায় নি।মাত্র দুই ঘন্টার জন্য ছুটি নিয়ে সন্ধায় এসেছিলো।কিন্তু একটা রু”গির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো জরুরি অপারেশন করতে হবে নয়তো লোকটাকে বাচানো যাবে না। এজন্য দায়ান কে ফোন করা হয়েছে। তাই চলে যেতে হয়েছিলো।

সোহার আর তার পরিবারের লোকজন ঐদিন আর ফিরে আসেনি।থেকে গেছে দায়ানদের বাড়িতে।

পরেরদিন খুব ভোরেই সোহা ঘুম থেকে উঠে দায়ানদের বাড়ির ছাদে যায়।ছাদে গিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে হা হয়ে তাকিয়ে রয়। চোখের পলক ই যেনো ফেলতে ভুলে গেছে।

দায়ান ছাদে থ্রি কোয়াটার টাউজার আর হাতা কাটা টিশার্ট পরে বু’ক ডাউন দিচ্ছে। কপাল বেয়ে ঘাম ঝড়ছে।উফফ কি সুন্দর যে লাগছে।

দায়ান হঠাৎ করে ছাদে কারো অস্তিত্ব টে’র পেয়ে তাকিয়ে দেখে সোহা।তাই তারাতাড়ি করে উঠে দাঁড়ায়।

হেই পিচ্চি বন্ধু কি অবস্থা তোমার?

আপনাকে বলবো কেনো আমার অবস্থা? হুয়াই?

ওরে বাবা রাগ করেছো বুঝি আমার উপর?

এটাও বলবো না!

আচ্ছা বলতে হবে না। আমি বুঝতে পেরেছি। আমার ডাক্তার ম্যাডাম আমার উপর প্রচুর খে”পে আছে।

আসলে আমি স’রি। তোমাদের বাড়ি থেকে আসার পর হসপিটালে জয়েন হয়ে একটুও সময় হয়ে উঠেনি।দেখলেই তো কাল যাই একটু সময় নিয়ে এসেছিলাম তাও চলে যেতে হলো।
তারপর সোহা মনে মনে বললো আপনার মায়ের কাছে শুনেছি।মুখে কিছু বলেনা চুপ করে থাকে।

সোহাকে চুপ করে থাকতে দেখে দায়ান বলে,,ঠিক আছে আর রা’গ করো না কয়েকদিন আমাদের বাড়িতে থেকে যাও।আমি সময় বুঝে আমাদের শহর তোমায় ঘুরিয়ে দেখাবো।

থাক আর ঘু”ষ দিতে হবে না। আমি উনাকে আমাদের গ্রামে ঘুরিয়েছি বলে উনি উনাদের শহরে ঘুরিয়ে সমান সমান করতে চাইছে হুহ।

আরে কি বলো ঘু”ষ কেনো হবে? তুমি আমার বি’য়া’ই’ন না? তার উপর আবার আমার ডাক্তার পিচ্চি বন্ধু।তোমার একটা হ”ক আছে না?

সোহা তারপর কিছু একটা ভেবে বলে ঠিক আছে। আপনি আগে ফ্রি হোন পরবর্তীতে এসে ঘুরবো।আজ আপুকে নিয়ে চলে যাবো।

আচ্ছা ঠিক আছে। এই কয়েকদিন আমারো একটু বেশি কাজের চা’প।তারপর হয়তো একটু ফ্রি হবো।

তারপর সোহা তার বাবা মায়ের সাথে নোহা ও রুশকে নিয়ে ঐদিন ই সকালের খাবার খেয়ে চলে যায়।

ওখানে গিয়ে রুশ আর নোহা আরো এক সপ্তাহ থাকে।
সোহার এইচএসসির রেজাল্ট দিতে আরো অনেক দেরি। ভালোভাবে পড়াশোনা করে এডমিশন টেষ্ট দিতে পারলেতো চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু এই মেয়ে পড়ছেই না।আগে যাই নোহা জোর করে পড়তে বসাতো। এখন তো নোহা ও নেই। সোহা নোহাকে ছাড়া কারো কাছে পড়তেও চায় না যে, টিচার রেখে দিবে।

এসব নিয়ে নোহার বাবা মা নোহা ও রুশের সাথে আলাপ করেছিলো।
রুশ সব কথা শুনে বলে,,,,সোহাকেও তাদের সাথে নিয়ে যাবে।ওখানে নোহা পরাবে।না হয় কোচিং এ ভর্তি ও করিয়ে দিবো।আর বাড়িতে ও এক্সট্রা টিচার রেখে দিলাম কোনো সমস্যা নেই। আর এডমিশনের জন্য ঢাকা তো যেতেই হবে।

নোহা রুশের কথা শুনে খুশি হয়ে যায়। বোনকে তাহলে নিজের কাছে রাখতে পারবে।বাবা মা কে ও বলে রাজি হওয়ার জন্য।

সোহার বাবা মা ভেবে বলে,,দেখ তোরা যা ভালো বুঝিস কর।কিন্তু সোহা কি যেতে রাজি হবে?

নোহা বলে,,এটা না হয় আমার উপর ছেড়ে দাও।

নোহা গিয়ে সব সোহাকে বলে। সোহা সব শুনে প্রথমে রাজি হয় না। নোহার জোরাজোরিতে আর দায়ান কে দেখতে পাবে এই ভেবে পরে রাজি হতে যায়।

পরেরদিন ব্যাগ পেক করে রুশ আর নোহার সাথে সোহা ও দায়ানদের বাড়িতে উপস্থিত হয়। সকলেই ওদের সাথে সোহাকে দেখে অনেক খুশি হয়।

——————–
দায়ানের সাথে সোহার আবার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। হাসপাতাল থেকে ছুটি বা বন্ধ পেলেই দুটিতে মিলে শহর ভ্রমনে বেরিয়ে পরে।

সোহা তো দায়ান বলতে এখন প্রায় পা/গল।সারাক্ষণ দায়ানের সাথে দুষ্টুমি করে।

দায়ান ও সোহাকে তেমন কিছু বলে না।মনে মনে হয়তো সোহার দুষ্টুমি গুলো সেও বেশ উপভোগ করে।

দায়ান যতক্ষন বাড়িতে থাকবে সোহা সারাক্ষণ দায়ান কে লুকিয়েছে লুকিয়ে দেখতে থাকে।কি যে ভালো লাগে। ইচ্ছে করে দায়ানকে নিজের সামনে বসে পলকহীন ভাবে দায়ানের দিকে তাকিয়ে থাকতে।

সোহা এতোদিনে নিজের মন কে বোঝে গেছে।যে সে কেনো দায়ানকে এক পলক দেখার জন্য উতলা হয়ে উঠে। দায়ান কাছাকাছি থাকলে কেনো তার বুকটা শব্দ করে ঢিপ ঢিপ করে। আসলে এসব তো ভালোবাসারই একটা অংশ। হে সোহা দায়ানকে ভালোবেসে ফেলেছে। এই লোকটা কে ছাড়া সোহা এখন কিছু ভাবতেই পারে না। দায়ানের মনে কি চলছে তা সোহা জানে না। সে শুধু জানে দায়ানকে সে ভালোবাসে।জীবন টা দায়ানের সাথেই কাটাতে চায়। দায়ান কে পাওয়ার জন্য যা করা লাগে করবে।সোহার শুধু একটাই চাওয়া লোকটা যেনো সোহার ভালোবাসা বোঝে।সোহাকে ও যেনো একটু ভালোবাসে।

————————-

আজ দায়ানের মায়ের সাথে দায়ানের হাসপাতালে গিয়ে ছিলো দুপুরের খাবার নিয়ে।

দায়ানের মায়ের সাথে ক্যাবিনে ঢুকে দেখতে পায়,, দায়ান একটা নার্সের সাথে কি যেনো নিয়ে কথা বলছে আর হাসছে।

এই দৃশ্য দেখে সোহাট মাথায় র/ক্ত উঠে যায়।উনি কেনো এই সুন্দরী সাথে হেসে হেসে কথা বলবে? নার্সের চাহনি দেখেই বোঝে গেছে সোহা যে মেয়ে টা দায়ানকে হয়তো পছন্দ করে।

তমা শাঁ/কচু”ন্নি থেকে বাঁচিয়েছে। আর কতোজন থেকে বাঁচাতে হবে? লোকটা দিন দিন এতো সুন্দর হচ্ছে কেনো?

এসব ভেবে দায়ানের সাথে কথা না বলেই আজ এসে পরেছে।এসেই সেই যে বসেছে চিঠি লিখা নিয়ে। কিন্তু একটাও মন মতো হচ্ছে না ধূ”র।

ইচ্ছে করছে দায়ানকে নিজের আঁচলের তলায় লুকিয়ে রাখতে।তাহলে যদি কেউ লোকটার দিকে না তাকায়।

#চলবে,,,,,,,,,,,

বিঃদ্রঃ কেমন হলো জানাবেন।