তুমি_প্রেম_আমার পর্ব-০৩

0
5510

#তুমি_প্রেম_আমার❤️
#part:03💘
#Writer: #TanjiL_Mim❤️
.
.
🍁
“কলিং বেল বাজতেই আম্মাজান এসে দরজা খুলে দিলেন!!তাঁরপর আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম!!তারপর এটা ওটা করে চলে গেল আজকের দিনটা!!

“পরেরদিন সকালে……….
.
.
.

“আরিয়ানঃ ইউ ডাফার মেয়ে চোখ কোথায় থাকে এখনই তো গাড়ির নিচে পরে উপরে চলে যেতে!!কি হতে পারত ভাবতে পারছো!!!

-“ছেলেটির কথা শুনে তার মুখের দিকে তাকাতেই ৪৪০ ভোল্টকা ঝটকা খেলাম আমি!!ও নো এ দেখি “ভাঙা টেপ রেকর্ডার”!!

“আসলে ভার্সিটি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি রাস্তায়!! উদ্দেশ্য ছিল রিতুর আসার অপেক্ষায়!! কিন্তু হর্ঠাৎ ওর ফোন আসায় ও বলল ও একটু পর আসবে তাই আমাকে একাই যেতে বলল!!আর ওর সাথে কথা বলতে বলতে কখন যে গাড়ির সামনে এসে পড়েছি বুঝতেই পারি নি!!!

“আরিয়ানের কথায় জবাব না দেওয়াতে একরাশ বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে বলল সেঃ

——“ওই ইউ “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ”কথা বলছ না কেন????

“মুহূর্তেই মেজাজ বিগড়ে গেল আমার একই ফোনটা হাত থেকে পড়ে ভেঙে গেছে তার উপর আবার এই “ভাঙা টেপ রেকর্ডার” প্যাক প্যাক করছে!!মেজাজ বিগড়ে যাওয়াতে চেচিয়ে বললাম আমিঃ

——–“ওই যে মিস্টার “ভাঙা টেপ রেকর্ডার”ইচ্ছে করে করেছি নাকি!!ভুল করে হয়ে গেছে!!

——-“ভুল করে এখন যদি কিছু হয়ে যেত তাহলে কি হতে পারতো!!চোখ থাকতেও কানা কোথাকার!!!

——“What আপনি আমাকে কানা বলেছেন!!নিজে কি তবে আপনি একটা তাইলে হনুমান হু!!!

-“এই নিয়ে পুরো রাস্তার মাঝখানে ঝগড়া লেগে গেল আমাদের!!হর্ঠাৎ ছেলেটার ফোনটা বেজে উঠল!!!ফোন তুলার সাথে সাথে ওপাশ থেকে বললো কেউঃ

—-“কই তুই এসে পড়েছিস???

—-“আরিয়ানঃ আসছি দাঁড়া আসলে রাস্তায় একটা কানার সাথে দেখা হয়েছে তো তাই একটু দেরি হচ্ছে তুই চিন্তা করিস না!!দুই মিনিটের মধ্যে আসছি আমি!!এই বলে ফোনটা কেটে চলে গেল ছেলেটি আর আমি বোকার মতো কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চললাম ভার্সিটির উদ্দেশ্যে!!!
.
.
.
.
“কালকে আপু বলেছিল এই ভার্সিটিতে আমার এডমিশন করেছে!!আমি আর রিতু একসাথেই আসার কথা ছিল কিন্তু ওই ময়দা সুন্দরীর নাকি আবার দেরি হবে তাই একাই যাচ্ছি, হু ভালো লাগে না!!!
.
.
.

“ভার্সিটিতে ঢুকতেই বুক দক দক করতে শুরু করল আমার!! কারন এই মুহুর্তে কেউ নেই আমার সাথে!!আস্তে আস্তে করে ভিতরে ঢুকছিলাম!!এমন সময় কিছু ছেলে ডাকলো আমায়!!সাথে সাথে ভয়ে পুরো কলিজা কেঁপে উঠল আমার!!কিছুক্ষন আগেও যে আমি কারো সাথে ঝগড়া করে আসলাম ভাবতেই পারছি না!!!ছেলেগুলোর ডাকশুনে আমি গেলাম তাদের সামনে!!হর্ঠাৎই ছেলেগুলো বলল আমায়!!!

——-“নাম কী???নতুন

——“জ্বী, ভাইয়া TanjiL Mim!!!

—–“তা কোন ডিপার্টমেন্টে তুমি!!

——“মার্কেটিং বিভাগে ভাইয়া!!!পাশ থেকে আরেকজন বলে উঠলঃ

——“হে হালুয়া এ মেয়ে দেখি সব কথায় ভাইয়া ভাইয়া করে!!!

“প্রথম ছেলেটি বললঃ

——“হুম দেখছি তো!!শোনো তোমায় একটা কাজ করতে হবে!!!

—–“কি কাজ করতে হবে ভাইয়া!!!

——“এখনই একটা ছেলে বাইক নিয়ে আসবে ওই ছেলেটাকে তোমাকে প্রপোজ করতে হবে তাও আবার ভাইয়া বলে!!!

——“কী কখনো নয়,,আমি পারবো না!!!

“এমন সময় তাদের মধ্যে থাকা তিন নাম্বার ছেলেটি বললঃ

——“এই এমন করিস না আরিয়ান আর অারুশ ওরা জানলে আমাদের আর আস্ত রাখবে না!!

“ছেলেটিকে দমক দিয়ে প্রথম ছেলেটি আবার বললঃ

—-“চুপ কর!!!

—-“তাইলে আপু তুমি রেডি তো!!!

-“ছেলেটির কথা শুনে ভয়ে ঢোক গিললাম আমি!!তারপর ছেলেগুলোর কথা মতো মাথা নিচু করে হাঁটতে শুরু করলাম আমি!!এর ভিতর ওই ছেলেটাও ভার্সিটিতে ঢুকে বাইক থামিয়ে ভিতরে ঢুকলো!!তাকে না দেখেই মাথা নিচু করে বলে দিলাম!!!

-“i Love U ভাইয়া!!!

“আমার কথা শুনে পুরো ভার্সিটির ছেলেমেয়েরা হেঁসে দিল!! অবশ্য হাসবে না কেন!!!কোনো মেয়ে যদি কোনো ছেলেকে প্রপোজ করতে এসে ভাইয়া ডাকে তবে হাস্যকর নয়তো কী!!!কিন্তু আমার কি দোষ আমি কী ইচ্ছে করে এসেছি নাকি ছেলেটাকে প্রপোজ করতে!!হর্ঠাৎ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে উঠলোঃ

——“কানে ধরো!!!

“ছেলেটার কথা শুনে পুরো কেঁপে উঠলাম আমি!!আস্তে আস্তে উপরে তাকালাম আমি!!সামনের ছেলেটির মুখ দেখে ভয়ে আরো চুপসে গেলাম আমি!!!

“ওহ নো আবার “ভাঙা টেপ রেকর্ডার”!!সকাল সকাল কার মুখ দেখে ঘুম উঠেছিলি আজকে!!আজকে দিনটা পুরো গেল রে!!!
হায় আল্লা প্রথম দিনই কপাল খারাপ আমার!!!তুই একটা বোকা মীম কাকে প্রপোজ করছিস মুখটা তো একটু দেখার উচিত ছিল নাকি!!সব হয়েছে ওই ছেলেগুলোর জন্য!!

“আরিয়ান দমক দিয়ে বললঃ

—–“এই মেয়ে কি বলেছি কথা কি কানে যাচ্ছে না!!!ছেলেটির কথায় পুরো শরীর কাঁপছে আমার!!চোখ বন্ধ করে বললাম আমিঃ

—–“বিশ্বাস করুন ভাইয়া আমার কোনো দোষ নেই!! ওই ভাইয়াগুলো বলল যে আপনাকে এসে বলতে না হলে ক্লাসে যেতে দিবে না তাই আরকি!!!সরি ভাইয়া!!!
.
.
.

“এদিকে আরিয়ান ভাবছে রাস্তায় বসে বড় বড় কথা না!!এখন যখন একটা সুযোগ পেয়েছি তাহলে এটার সুযোগ তো নিতেই হবে মিস “ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ”!!এই ভেবে আবারো ঝাঝালো কন্ঠে চেচিয়ে উঠলো আরিয়ানঃ

——“আমি একবারের বেশী কথা বলি না!!তাই যা বলছি তাড়া তাড়ি কর!!!

“এবার না পারে চোখ দিয়ে পানি পরতে শুরু করবে!!তারপরও নিজেকে অসম্ভব রকম শান্ত রাখার চেষ্টা করছি আমি!!!আমি জানি শালায় আমাকে রাস্তার বসে ঝগড়া করার জন্য তার শোধ নিচ্ছে!!কিন্তু কি করার তাই বাধ্য হয়ে ভরা ভার্সিটির সামনে কান ধরে দাঁড়িয়ে পরলাম আমি!!আর বাকি সবাই তার মজা নিচ্ছে!!!আজকের এই সবকিছু হয়েছে আপুর জন্য!!আর একবার রিতুর বাচ্চা তোরে সামনে পাই তোরে ছারুম না দেখিস!!!

__________________________________________


“বাঁচাও বাঁচাও কে আছো এই বলে চেঁচাচ্ছে রিতু আর দৌড়াচ্ছে!!কারন তার পিছনে কুকুর আছে!!বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় কুকুর দেখে এক দৌড় দিল রিতু!!

“হর্ঠাৎই সামনে কারো সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে নিলে ধরে ফেলে সামনে থাকা ছেলেটি!!!

—–“অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরুশ রিতুর দিকে!!!পরক্ষণেই কিছু মনে পড়তেই ছেড়ে দেয় আরুশ রিতুকে!! সাথে সাথে ঠাস করে পড়ে যায় রিতু নিচে!!!

“রিতু চেচিয়ে বললঃ

—-“ও মা গো আমার কোমড়টা মনে হয় গেলো!!এই “ফাটা ডিসপ্লে” এই ভাবে কেউ ছেড়ে দেয়!!আমার কোমড়টা মনে হয় গেলো রে!!

——-“যা হয়েছে বেশ হয়েছে এইভাবে গরুর মতো দৌড়ালে পরতে তো হবেই!!!

——“কি আমি গরু,!!

——“না ইউ হলে “পঁচা পান্তা ভাত”!!!

“রিতু আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়ে বললঃ

——“চুপ করুন মিস্টার “ফাটা ডিসপ্লে”!!পিছনে কুকুর তাড়া করছিল তাই তো দৌড়াতে ছিলাম!!

“রিতুর কথা শুনে হাসতে লাগল আরুশ!!

——-“লাইক সিরিয়াসলি যা হয়েছে বেশ হয়েছে!!!কালকে ঝগড়া করেছিলে না তার শোধ উঠে গেছে!!

“আরুশের কথা শুনে আরো রেগে গেল রিতু!!কিন্তু এই মুহুর্তে কিছু বলার মুডে নেই রিতু!!একই তো ব্যাথা পেয়েছে তার সাথে মীম একা একা চলে গেছে ভার্সিটিতে!!তাই কিছু না বলেই রিতু গাড়ি করে চললো ভার্সিটিতে…..!!!আর আরুশ রিতু যাওয়া পানে তাকিয়ে থেকে হাসতে হাসতে সেও চললো ভার্সিটি!!!

__________________________________________


“ভোরের ফুড়ফুড়ে আলোতে ঘুম ভাঙল মেঘলার!!কালরাতের দু-বোন মিলে প্রচুর গল্প করেছে তারপর রাত ২ টা বাজে ঘুমিয়েছে তারা!!হর্ঠাৎ ফোনে টুং করে শব্দ আসল সাথে সাথে ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে মুচকি আসল মেঘলা!!কারন মেসেজটা আকাশের আর তারা আজকে বিকেলে দেখা করবে এমনই কিছু মেসেজ!!!মুচকি হেসে বিছানা থেকে উঠে বসে পরল সে!!তারপর চলে গেল ওয়াশরুমে!!!
.
.
.
.
“মেঘলাকে মেসেজ দিয়ে প্লেন থেকে নেমে চললো আকাশ তার নিজের বাড়িতে!!তার বাবা ওলরেডি গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে তাই মুচকি হেসে গাড়িতে বসে পরল সে!!আজকে তার আম্মু আর ছোট্ট ভাইকে অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবে সে!!কারন তার বাবা ছাড়া আর কেউ জানে না যে সে এসেছে!!!এই ভেবে চললো সে নিজের গন্তব্যে…………

__________________________________________


“প্রায় দেড় ঘন্টা যাবৎ কানে ধরে দাঁড়িয়ে আছি আর আরিয়ান সামনে বাইকে বসে দাঁত কেলানি হাসি দিচ্ছে!!ইচ্ছে তো করছে শালার মাথাটাই ফাটিয়ে দেই প্রথম দিনই এত ঝামেলা!!এর শোধ আমি সুদে আসলে ফেরত নিবো মিস্টার “ভাঙা টেপ রেকর্ডার”!!একটা হনুমান,গাধা,গরু,ছাগল,মহিষ!!!তোর বউ তোরে একটুও ভালোবাসবে না দেখিস!!রোজ ঝগড়া করবে তোর সাথে!!আমার মতো বাচ্চা মেয়ের সাথে এমন করলি না দেখিস!!তোর বউও তোরে একদিন সেই রকম একটা শাস্তি দিবে!!!হু……

“আমাকে অবাক করে দিয়ে আরিয়ান বললঃ

——–“আমাকে গালাগালি দেওয়া শেষ হয়েছে!!!

——“না”!!!

——“কী”

——-“কিছু না”

——-“আচ্ছা এখন শোনো আজকের জন্য এতটুকুই চলবে কাল থেকে কোনো ভুল করলে এর চেয়েও আরো বড় শাস্তি ভোগ করতে হবে মাইড ইট!!!!

“আমিও মাথা ঝুলিয়ে সমর্থন দিলাম!!কিন্তু ভিতরে ভিতরে শয়তানি হাসি!!!

“এমন সময় উধায় হলো মিস “ময়দা সুন্দরী”!!আমাকে কান থেকে হাত সরাতে দেখে দৌড়ে আসল সে!!এসে বললোঃ

——-“কি হয়েছে…..

——-“কি হয়েছে দাঁড়া ময়দা সুন্দরী আজ তোর একদিন কি আমার একদিন এই বলে দিলাম দৌড় আর রিতু আমাকে দৌড়াতে দেখে সেও দিল দৌড়!!!

“এমন সময় ভার্সিটির ভিতরে ঢুকছিল আরুশ!!তারপর যা হওয়ার তাই হলো রিতু এত দ্রুত গতিতে দৌড়াতে ছিল যে সামনের ব্যক্তিকে দেখেও আর স্পিড কমাতে পারলো না!!তারপর গিয়ে পরল রিতু আরুশের গায়ের উপর!!!

“আবারো একে অপরকে দেখে দুজনেই একসাথে বলে উঠলঃ

———“ইউ “পঁচা পান্তা ভাত” আবার

——–“ইউ ফাটা ডিসপ্লে” আপনি…😂
!
!
!
!
#চলবে……..