তুমি_প্রেম_আমার পর্ব-১৯

0
3838

#তুমি_প্রেম_আমার❤️
#part:19💘
#Writer: #TanjiL_Mim❤️
.
.
🍁
“ওটা ওইখানে দেও,ওটা আমার কাছে দেও,ওটা ওইভাবে ভালো দেখাচ্ছে না,”ঝাঁঝ বতী লবঙ্গ” তুমি ওটা করতে পারবে না আমার কাছে দেও,ওখান থেকে তুমি পরে যাবে তাই বলছি আমার কাছে দেও একের পর এক এটা ওটা নিয়ে কথা শোনাচ্ছে আরিয়ান’!!এদিকে আমার এইসব শুনতে শুনতে বিরক্ত লাগছে এখন’!!সেই ভোর বেলা থেকে ভার্সিটিতে এসে এটা করে যাচ্ছি আমি’!!এত কাজ কোনোদিন একসাথে করি নি আমি’!!তারওপর এটা ওটা নিয়ে আরিয়ানের কাছে কথা শুনতে হচ্ছে’!!এই মুহুর্তে দেয়ালের সাথে কিছু বেলুন আটকানোর জন্য চেয়ারের উপর দাড়িয়ে আছি আমি অনেকক্ষন যাবৎ চেষ্টা করছি কিন্তু একবার আটকাটে পারছি না এতে চরম বিরক্ত আমি তারওপর আরিয়ানের বক বক শুনতে শুনতে আরো চরম প্রকারের বিরক্ত আমি’!!একরাশ বিরক্তি মাখা মুখ নিয়ে আরিয়ানকে বললাম আমিঃ

———“আপনি একটু থামবেন “ভাঙা টেপ রেকর্ডার” কতোক্ষন যাবৎ শুধু প্যাক প্যাক করেই যাচ্ছেন আপনাকে কি শুধু শুধু “ভাঙা টেপ রেকর্ডার” ডাকি’!!হুহ

“আরিয়ান আমার কথা শুনে রেগে গিয়ে বললোঃ

——-“আমি প্যাক প্যাক করি ঠিক আছে তুমি যদি ওখান থেকে পরে যাও আমি তোমাকে কিন্তু ধরতে পারবো না’!!

——-“হুম ঠিক আছে ঠিক আছে ধরতে হবে না আপনাকে’!!এই বলে আবারো বেলুন লাগানোর চেষ্টা করলাম আমি’!!আর তাতেই ঘটলো আরেক বিপদ’!!চেয়ারটা অতিরিক্ত নাড়ানোর ফলে চেয়ার থেকে নিচে পড়ে যেতে নিলাম আমি’!!সাথে সাথে আরিয়ান কোলে তুলে নিল আমায়’!!হর্ঠাৎ এমন হওয়াতে ভয়ে আরিয়ানের শার্টের হাতা খামচে ধরলাম আমি’!!চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলেছি আমি’!!মনে হচ্ছে চোখ খুললেই সব শেষ আমার কোমড় ভেঙে চার ভাগ হয়ে যাবে মনে হয়’!!

“এমন সময় কানের কাছে এসে আরিয়ান ঝাঁঝালো কণ্ঠে চেচিয়ে বললঃ

———-“ইউ ইডিয়েট,, ইডিয়েটই থাকবে কতোবার বলেছি পড়ে যাবে পড়ে যাবে শুনছিলে না কেন এখন যদি না ধরতাম কোমড় ভেঙে গেলে তো আ আ করে গান গাইতে’!!

“আরিয়ানের কথা শুনে আস্তে চোখ খুলে হালকা ঢোক গিললাম আমি’!!তারপর আরিয়ানও কোল থেকে নিচে নামালো আমায়’!!ওনার কোল থেকে নিচে নেমে ছোট্ট শ্বাস ফেললাম আমি’!!তারপর আরিয়ান আবারো চেচিয়ে বললঃ

——-একদম চুপ করে দাঁড়াবে এখানে’!!

“আমিও আরিয়ানের কথা শুনে মুখে হাত দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে পরলাম’!!তারপর আরিয়ান কাজ করতে লাগলেন আর আমি চুপটি করে তা দেখতে লাগলাম’!!

__________________________________________

*
“আয়না সামনে দাঁড়িয়ে আছে রিতু’!খুব সুন্দর করে একটা নরমাল সাজ দিয়েছে সে’!!কারন সে এই মুহুর্তে মীমদের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হচ্ছে’!!আজকে রিতু অনেক খুশি সে ভাবতেই পারছে সে কাকে ভালোবেসে ফেলেছে’!!রিতু মনে মনে ভেবেই রেখেছে একবার দেখা হলেই তার সাথে সে তার মনে কথা সব বলে দিবে তাকে’!!হর্ঠাৎ বুকের ভিতর এই তীব্র অনুভূতিগুলোকে আর আটকে রাখতে পারবে না রিতু’!!সব বলে দিবে সে তাকে তার মনের কথা বা অনুভূতিগুলোকে তারপর যা হবে দেখা যাবে’!!এই রকম নানা জিনিস ভেবে তৈরি হচ্ছে রিতু’!!এমন সময় ফোন বাজল রিতুর উপরে মীমের নাম দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা ধরে ফেলল রিতু’!!

——–“তুই কি এখনিই আসছিস’!!ওপাশ থেকে কথা টা বলে উঠল মীম’!!

———হুম,,

——–“আচ্ছা শোন আমি ভার্সিটিতে আসছি কিছু কাজে তুই ও আয় তাড়াতাড়ি তোর সাথে কথা আছে’!

“মীমের কথা শুনে রিতু অবাক হয়ে বললোঃ

———“আজকে তো শুক্রবার ভার্সিটিতে গেলি কেন???

——–“তুই আগে ভার্সিটিতে আয় তারপর সব বলবো এতটুকু বলে ফোনটা কেটে দিল মীম’!!রিতুও আর কিছু না ভেবে ভার্সিটি যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো’!!

“বাসায় থেকে রিতু তার মা বাবাকে বিদায় জানিয়ে বসে পরল রিকশায় তারপর রিকশা চলতে শুরু করল তার আপন গতিতে………

__________________________________________

*
“চোখ মুখ কালো করে বেলকনিতে বসে আছে আরুশ’!!কাল রাত থেকেই বেলকনিতে বসে অনেকগুলো বিড়ি আর বিয়ার খেয়েছে সে’!!যার ফলে চোখ মুখ পুরো কালো হয়ে গেছে’!!তার সাথে মাথাটাও ভার হয়ে আছে তার’!!বুকের ভিতর অসয্য ব্যাথা অনুভব করছে সে’!!কালকে রিতু বলা ভালোবাসে অন্যকাউকে সে তা শুনেই আরুশের বুকের ভিতর অসয্য ব্যাথা করছে’!সে যেটা ভেবেছিল সেটাই হলো সত্যি সত্যি আরুশ হারিয়ে ফেললো রিতুকে’!!এতদিন শুধু শুধু অচেনা মানুষ হয়ে কথা বলে গেল আরুশ রিতুর সাথে’!!আর ডাকবে আরুশ রিতুকে বিরিয়ানির প্যাকেট বলে’!!চোখ পুরো লাল হয়ে আছে আরুশের যা দেখে বোঝাই যাচ্ছে আরুশ কাল সারারাত ঘুমায় নি’!!এমন সময় ফোন বাজল আরুশের উপরে আরিয়ানের নাম্বার দেখে চোখ মুখ মুছে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিল আরুশ তারপর ফোনটা তুলে বললোঃ

——–“হ্যালো’!!

“ওপাশ থেকে আরিয়ান বলে উঠলঃ

———-“কই তুই ভার্সিটি আসবি কখন??

“আরুশ বুঝতে পারছে না কি বলবে তারপরও মনকে শক্ত করে বলে উঠলঃ

———“আসছি আমি’!!তারপর ফোন কাটল আরুশ’!” তারপর চলে গেল ওয়াশরুমে'”!

“কিছুক্ষনপর……..

“ফ্রেশ হয়ে বাইকে করে চললো আরুশ ভার্সিটির উদ্দেশ্যে’!!

*
এদিকে আমি আর আরুশ একে অপরের দিকে তাকিয়ে বললাম আসছে ওরা’!!তারপর আমরাও চলে আসলাম বাহিরে……..

__________________________________________

*
রান্না ঘরে কাজ করছে মেঘলা এমন সময় সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিল আকাশ’!!এই মুহূর্তে ব্রেকফাস্ট করবে আকাশ’!!আকাশ টেবিলে বসতেই মেঘলা এসে খাবার দিলো তাকে’!!তারপর আকাশের বাবা মাও আসলেন খাবার টেবিলে তারপর সবাই মিলে ব্রেকফাস্ট করে চলে গেলেন যে যার রুমে’!!এমন সময় আকাশ বললো মেঘলা একটু রুমে আসো তো’!!মেঘলা বললোঃ

——–“আসছি…….মেঘলার কথা শুনে আকাশ চলে গেল উপরে……
কিছুক্ষনপর……..
মেঘলাও গেল রুমে’!!

“মেঘলা রুমে ঢোকার সাথে সাথে আকাশ মেঘলাকে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে তার কোমড় ধরে ধরে বললঃ

———“সারাদিন শুধু পালাই পালাই কর কেন???

“মেঘলাও মুচকি হেঁসে আকাশের গলা জড়িয়ে ধরে বললঃ

——-“কোথায় পালাই পালাই করছি শুধু বাড়ির কিছু কাজের জন্য একটু বিজি থাকছি আর কি’!!এমনিতে তো মা-ই সব করে আমি তো শুধু এই শুক্রবার টাই একটু করি মশাই’!!

“মেঘলার কথা শুনে মুচকি হাসলো আকাশ’!!তারপর মেঘলাকে জড়িয়ে ধরে বললো আকাশ’!!

——-“তোমায় খুব ভালোবাসি’!!কখনো ছেড়ে যাবে না কিন্তু’!!

“মেঘলাও শক্ত করে আকাশকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ

———-“আমিও তো তোমায় ভালোবাসি খুব তাই ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্ন কোথা থেকে আসে’!!

“মেঘলার কথা শুনে খুব খুশি হলো আকাশ’!!তারপর মেঘলার কপালে চুমু একে দিল আকাশ’!!তারপর মেঘলাও চুমু দিল আকাশের কপালে’!!এমন সময় ডাক দিল মেঘলার শাশুড়ী মা তারপর আকাশকে ছাড়িয়ে চলে গেল মেঘলা মুচকি হেঁসে’!!

“আকাশও আর কিছু না ভেবে মুচকি হেঁসে বিছানায় বসে পরল’!!

__________________________________________

*
“ভার্সিটির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রিতু’!!আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকলো সে’!!আশেপাশে কাউকেই দেখতে পারছে না রিতু’!!ধীরে ধীরে ভার্সিটির ভিতরে ঢুকলো রিতু’!!তারপর এদিক ওদিক খুঁজতে লাগল রিতু মীমকে’!!হর্ঠাৎই একটা রুমে ঢুকতেই বাহির থেকে কেউ দরজা বন্ধ করে দেই’!!সাথে সাথে পুরো রুম অন্ধকারে ঢেকে যায়’!!হর্ঠাৎই রুমে আলোয় ভরে গেল’!!কিন্তু রুমের অবস্থা দেখে চমকে গেল রিতু’!!কারন পুরো রুমটাই অগোছালো ভাবে রয়েছে’!!সাজানো রুমটা কেউ ভেঙে চুরে ফেলেছে’!!সব বেলুন এদিক ওদিক পড়ে আছে’!! গোলাপের পাপড়ি পড়ে ভরে গেছে পুরো রুম’!!হর্ঠাৎই সামনে চোখ গেল রিতুর’!!কারন রুমের এক কোনায় একটা কাটা বিশিষ্ট গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে বসে আছে আরুশ আর তার হাত দিয়ে পরছে অনেক রক্ত’!!যা দেখে রিতু দৌড়ে যায় আরুশের কাছে’!!আরুশের পাশে বসেই বলে উঠল রিতু’!!

——-“এগুলো কি করেছেন আপনি’!!হাত থেকে তো রক্ত বের হচ্ছে’!!

——–“এতটুকুতে কিছু হবে না সামন্য কেটে গেছে’!!!

——–“সামন্য কেটে গেছে মানে’!!পুরো হাত বেয়ে রক্ত বের হচ্ছে এখন কি করবো আমি’!!এই ভেবে রুম থেকে বাহিরে এসে একটা দোকান থেকে স্যাভলন আর কিছু ব্যাডেন্জ আর তুলো কিনে আনলো রিতু তারপর আরুশের হাতের রক্ত মুচছে লাগল রিতু’!!!আর আরুশ শুধু তাকিয়ে আছে রিতুর দিকে’!!হর্ঠাৎ আরুশ রিতুকে জড়িয়ে ধরল হর্ঠাৎ এমনটা হওয়াতে রিতু পুরো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল’!!রিতুও আর কিছু বললো না হয়তো সে যেটা ভেবেছিল সেটাই সত্যি হলো…………..

“কিছুক্ষন আগে আরুশ ভার্সিটিতে ঢুকেই পুরো সাজানো রুম ভেঙে চুরে তছনছ করে ফেলে যা দেখে রীতিমতো মীম আর আরিয়ান চরম অবাক হয় পরে যখন সে চিৎকার দিয়ে বলে রিতু অন্য কাউকে ভালোবাসে’!!সেটা শুনেই মীম আর আরিয়ান বেরিয়ে যায় রুম থেকে’!!রুমের দরজার বাহিরের থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড এর এমন কাজ কিছুতেই সয্য করতে পারছিলো না আরিয়ান তাই সে চলে যায় ভার্সিটির ছাঁদে আর তার পিছন পিছন চলে যায় মীমও………

__________________________________________

*
“ছাঁদের এক কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে আরিয়ান’!!এই মুহূর্তে তার খুব কষ্ট হচ্ছে বেস্টফ্রেন্ডের এমব কষ্ট দেখে’!!

“আরিয়ান নীরবতায় দাঁড়িয়ে আছে’!!তার থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছি আমি’!!উদ্দেশ্য হচ্ছে আমি কি যাবো ওনার সামনে’!!কিন্তু গিয়ে কী বলবো’!!তারপর আর কিছু না ভেবেই চলে গেলাম সামনে আরিয়ানের'”!!

“আরিয়ানের সামনে যেতেই দেখতে পেলাম আরিয়ানের চোখে পানি’!!তার মানে উনি এতক্ষণ কাঁদছিলেন’!!ভাবতেই আমার বুকের ভিতরটা দক করে উঠল’!!সাথে সাথে অনেকটা কাছে চলে গেলাম আরিয়ানের তার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম আমিঃ

——–“আপনি এতক্ষণ কাঁদছিলেন’!!

“বিনিময়ে আরিয়ান কিছু বললো না’!!আমি আবারো বলে উঠলামঃ

———“কি হলো কথা বলছেন না কেন????হর্ঠাৎই আরিয়ান শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন আমায় আর হর্ঠাৎ করে ওনার এমন কাজে অবাক হয়ে গেলাম আমি’!!এই মুহূর্তে আরিয়ান আরুশের আচরণের সাথে সাথে অন্য কিছু ভেবেও কষ্ট পাচ্ছে আর সেটা হলো কাউকে হারানোর ভয়…………
!
!
!
!
!
#চলবে…………………..

#TanjiL_Mim❤️