#তোকে_ছাড়া_আমি_শূন্য
পর্বঃ২৯
#Faria_Siddique
।
।
।
।
।
।
এই রুফা রুফা শোন… থাম বাবা আমার লক্ষি মেয়ে টা।আর এক লোকমা খেয়ে নেয়। আর দিব না।
একটা বাচ্চার পিছনে দৌড়া তে দৌড়ে বলছি আমি।
রুফা— না মাম্মা আমি আর খাবো না!
কে কি খাবে না? রুদ্র এসে বললো।
রুফা— বাবা আমি আর খাবো না মাম্মা কে বলো না…
(রুদ্রর কোলে উঠে)
রুদ্র— না মামনি খেতে তো হবে নাহলে শরীর খারাপ করবে।তুমি খেয়ে নাও আমরা ঘুরতে যাবো তারপর।
আমি— এই এখন কিসের ঘুরতে যাওয়া রাত ১০’টা বাজে হু খেয়াল আছে?
রুফা— তো কি হয়েছে? আমরা যখন ইচ্ছা ঘুরতে যাবো রাতের কি?
রুদ্র— না মামনি আজকে না কালকে ঘুরতে যাবো। তুমি খেয়ে নাও।
রুফা— তাহলে তুমি খাইয়ে দাও বাবা।
রুদ্র— ঠিকাছে।
রুদ্র রুফা কে খাইয়ে দিল।রুফাও লক্ষি মেয়ের মতো খেয়ে নিল।আর আমি খাওয়া ছিলাম আমাকে জালিয়ে
জালিয়ে শেষ করে দিলো।কি শয়তান আল্লাহ্।
।
।
।
।
।
।
ওইদিন বিয়ের পর আমরা বাসায় ফিরলে রুদ্রর মা আমাদের বরণ করে ঘরে ঢুকান।তারপর আমাকে রুদ্রের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে পুরা ঘর ফুল দিয়ে সাজানো। আমি ঘুরে ঘুরে পুরা ঘর দেখছিলাম।ঠিক তখনি রুদ্র এসে আমার পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরল। আমি ভয় পেয়ে পিছনে তাকাতেই রুদ্র আমাকে কোলে করে খাটে বসিয়ে দিল।তারপর আলমারি থেকে একটা গোলাপি রঙের শাড়ি নিয়ে এসে আমার হাতে দিল
রুদ্রঃযাও শাড়িটা পপড়ে এস।
আমি কোন কথা না বলে পড়ে আসলাম।
রুদ্র এসে আমার কপালে চুমু খেল।আমি মুচকি হেসে ওর দিকে তাকালাম।
রুদ্রও মুচকি হেসে আমাকে কোলে করে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে বসালো। তারপর আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরল।
রুদ্রঃশত বাধা পেরিয়ে আমি তোমাকে আমার করে নিলাম।ভালোবাসার জয় হলই।
আমিঃহুম।
রুদ্রঃআর কখনো একা করে যাব না।
আমিঃঠিক তো
রুদ্রঃহুম ময়না পাখি।
তারপর রুদ্র চট করে উঠে গিয়ে আমাকে কোলে করে নিয়ে রুমে চলে গেল।
তারপর………
(সবাই নিজ দায়িত্বে বুঝে নিন।আমি আর কইতে পারতাম না)
।
।
।
।
।
।
।
আর পরের দিন আমরা খোঁজ পাই কে রুদ্রর এ্যাকসিডেন্ট ইচ্ছা করে করিয়েছিল।তাকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়া হয়।আর সে হলো রুদ্রের অফিসের ম্যানেজার।আমরা সবাই অবাক।
আমিঃতার মানে উনিই তোমাকে আর রুশাকে মারতে চেয়েছিল?কিন্তু কেন??
রুদ্রঃআহ ময়না পাখি এসব বিষয় নিয়ে আর মাথা ঘামিয়ো না।নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে বরের সাথে ভালো করে প্রেম কর তো
আমিঃ তা না হয় ঠিক আছে।কিন্তু ওই লোক ছাড়া পেয়ে যাবে না??
রুদ্রঃ আহ তোমার বর কি এতই বোকা নাকি।আমি এই কেসের সাথে বেশ কিছু কেস করি যাতে সহজে ছাড়া না পায়।
আমিঃও আচ্ছা।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
আমি আর রুদ্র তার ১বছর পর বিদেশে সিফট করি। রুদ্রর মাও থাকেন আমাদের সাথে।রুদ্রর বাবা মারা গিয়েছেন রুফার জন্মের ২বছরের মধ্যে।এই কয়েক বছরে অনেক কিছুই পাল্টছে।সময় কারোর জন্য অপেক্ষা করে না।জীবন সবসময় একরকম থাকে না।আমরা সবাই এখন ভালোই আছি।যার যার কাজ,সংসার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি।
।
।
।
।
।
।
বাবা আর দাদাভাই দেশে আছে।দাভাই দেশের বিজনেস দেখছে।আর দাভাইয়ের এখন একটা ছেলেও আছে। দাদাভাই তার দুই ছেলে মেয়ে কে নিয়ে সুখে আছে। আর বিদেশের বিজনেস আমি আর ভাইয়া সামলাই।ও ভালো কথা রুশা আর ভাইয়ার ছেলে হয়েছে রাইহান।ও রুফার থেকে বড় প্রায় ১.৫বছরের।তারজন্য রাইহান খালি রুফা কে শাসন করতে যায় আর লেগে যায় দুজনের।যদিও রুফা খাওয়া ছাড়া অন্য বিষয় জ্বালায় না।লক্ষি মেয়ে একদম।।বিশাল ভাবনা আছে ওদের লাইফ নিয়ে আরামে।আর ভাবনা এখন ৪মাসের প্রেগনেন্টও। খুবই জলদি মেয়ে বা ছেলে বেবি হবে ওদের। তাহলে ফ্রেন্ড সার্কেলের সকলেই বিবাহিত ও প্যারেন্টস হয়ে গিয়েছে। আসলে সময় কিছুই না বর্তমানে।
আর এরই মধ্যে রুদ্রর যে এ্যাকসিডেন্ট করিয়েছিলো সে মারা গিয়েছে জেলের অত্যাচারে।নিজের পাপের শাস্তি পেয়েছে।
।
।
।।
।
।
।
আমি রাতের বিছানা ঠিক করছিলাম এমন সময় রুদ্র আসে আর পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমাকে।
আমি— কি হয়েছে… বিছানা ঠিক করছি দেখো না.. সরো রুফা আসবে লুচ্চামি ছাড়ো।
রুদ্র— রুফা এখন ওর দাদির কাছে গল্প শুনছে আর আজকে দাদির কাছেই ঘুমাবে বুঝেছো? আর একটু জড়িয়ে ধরেছি নিজের বউকে ওইটা লুচ্চামি দাড়াও বলে আমাকে কাতুকুতু দিতে শুরু করে
আমি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি।
আমি— রুদ্র!…থামো আর কাতুকুতু দিয় না প্লিজ থামো মরে যাবো!(এই আল্লাহ মরার কথা উচ্চারণ করে ফেলেছি রুদ্র তো ছাড়বে না!)
রুদ্র— এই মরার কথা উচ্চারণ করতে মানা করেছি না।
একবার বলেছি না #তোকে_ছাড়া_আমি_শূন্য!
বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে আর আমি।আসলেই ওকে ছাড়া আমিও শূন্য।
সমাপ্ত…