#তোমাত_আমাতে
লেখা আশিকা জামান
পার্ট ১৯(শেষ পর্ব)
গোল্ডেন জরির পাড়ের শুভ্র সাদা শাড়ী, কপালে কালো টিপ, খোপায় বেলি ফুল জড়ালাম। আয়নায় নিজের চেহারা দেখে নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আলমারি থেকে পার্স টা বের করে নিলাম।
ওহ হ ফোনটাই নেওয়া হয়নি। তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে ফোনটা নিলাম। ফোন হাতে নিতেই মনে হলো,
“আচ্ছা ইমনকে কি ফোন করবো?। ও কি এইসময় বাসায় আছে? ”
— আদৃতা তোকে তো আজকে বেশ সুন্দর লাগছে?
তা সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছিস?
আমি লজ্জাজনিত ভঙ্গিতে মুখটা নিচু করে ফেললাম।
তারপর চোখটা কিঞ্চিৎ উপরর দিকে তুলে মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,
— শ্বশুরবাড়ী।
মূহূর্তেই মায়ের চোখে খুশির রেখা ঝিলিক দিয়ে উঠলো। মা খুব কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
— বুঝলে মা, বিয়ের পর শ্বশুড়বাড়ীই হচ্ছে মেয়েদের নিজের বাড়ী। স্বামী স্ত্রীর মাঝে মনোমালিন্য হলে সেটা দুইজনের মধ্যেই থাকাটাই বেটার। তৃতীয় পক্ষের হস্তপেক্ষ সবসময় সুখকর হয়না। আচ্ছা যাচ্ছো যাও কিন্তু ঠান্ডা মাথায় নিজের বিবেক বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করবে কেমন!
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। আশ্চর্যজনকভাবে উপলব্দি করলাম মায়ের উপদেশ চুপচাপ ভাবে শোনতে আজকে বেশ ভালো লাগলো। কিছুদিন আগেও এই ধরণের কথা শোনলে বিরক্ত লাগতো।
— আমি যাচ্ছি তুমি বাবা আর ভাইয়াকে বলে দিও।
একমূহূর্ত দেরি না করে আমি বাসা থেকে বের হয়ে এলাম।
আজকের দিনটা হয়তোবা আমার জন্য শুভ কেমন সহজেই রিক্সা পেয়ে গেলাম। অন্যদিন হলে না হলেও ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। আজকে রাস্তায় কোন জ্যাম নেই। উফ শান্তি শান্তি!!
শুধু একটাই চিন্তা হচ্ছে ও কি রিএক্ট করিবে?
আর সেদিনের চড়ের কথা মনে হয়ে আবার কান গরম হয়ে যাচ্ছে।
এলোপাথাড়ি অনেক কিছু ভেবে ভেবেই আমি দিশোহারা হতে লাগলাম। বাসার সামনে আসতেই কলিজাটা মোচড় দিয়ে উঠলো।
নিজেকে কোনরকমে সামলে নিয়ে বাসায় আসলাম।
কাপা কাপা হাতে কলিংবেলে চাপ দিলাম।
ডোরটা খুলে যেতেই আমার মনটা চঞ্চল হয়ে উঠলো।
— এ আমি কাকে দেখছি?
ইমনের মা এদিকে আসো? দেখ কে এসেছে?
আমাকে দেখেই বাবা মাকে অতিউৎসাহে ডাকতে চলে গেলেন। আমার কি এখানে দাঁড়িয়ে থাকা উচিৎ? নাকি চলে যাবো। ধুর আমি কি নতুন বউ নাকি যে আমাকে বরণ করে ঘরে তুলতে হবে। আমার বাড়ী আমার ঘর, আমার যখন খুশি তখন যাবো আসবো।
সামনে তাকাতেই দেখি মামনী আমার দিকে সবিস্ময়ে তাকিয়ে আছে।
আমি মামনী আর বাবাকে সালাম করলাম।
— থাক থাক, মা সালাম লাগবেনা। আমার ঘরের লক্ষী আমার ঘরে ফিরে এসছে এতেই আমরা খুশি।
মামনী আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।
— বাবা আপনার শরীর ভালোতো।
— ভালো তবে আমার মা এসে গেছে এখনতো আমি খুব ভালো থাকবো। মা না থাকলে সন্তানের যত্ন আত্তি কে করে বলো?
বাবার কথাগুলো কেমন ছোট বাচ্চার মত শোনালো।আর নিজেকে সত্যিই মা মা লাগতে লাগলো। মা কথাটা মনে হতেই ছোট বাচ্চার কথা মনে হতে লাগলো। ইস আমাদের ও ছোট্ট বেবি হবে। কবে যে হবে?
আচ্ছা ও কার মত হবে? আমার মত নাকি ইমনের মত? নিজের মনে নিজেই ভাবতে ভাবতে লজ্জায় একবার নীল আরেকবার লাল হতে লাগলাম।
— আদৃতা কি ভাবছো এতো? যাও রুমে যাও।
আমি মাথা নিচু করে ইশারায় সায় দিয়ে নিঃশব্দে রুমে প্রবেশ করলাম। রুমে ঢুকে আমার চক্ষু ছানাবড়া। রুমের এই হাল! মাটিতে বেডশিটের একাংশ নেমে গড়াগড়ি খাচ্ছে, বালিশ মেঝেতে পড়ে আছে।কারপেট উলটো হয়ে আছে। দুনিয়ার বই, খাতা, কলম বিছানা টেবিল দিয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কাপড়চোপড় একেকটা একেক যায়গায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। সব এলোমেলো। পুরা রুমের চেহারা দেখে আমার মাথা খারাপ হওয়ার যোগাড়। ধুর কিচ্ছু ভালো লাগছে না। মনটাই খারাপ হয়ে গেল যার জন্য এলাম এত তড়িঘড়ি করে সেইতো নেই। কোন চুলোয় গেছে কে জানে? কখন আসবে সেটাও জানি না।অগত্যা রুম গুছানোতে লেগে পড়লাম। এক ঘন্টা পর মনে হলো ঘরটা মনুষ্য বসবাসের উপযোগী। খুবই ক্লান্ত লাগছে। চোখজুড়া ক্লান্তিতে বুজে আসতে চাইলো। মনে হলো এমন শান্তি ঘুম কতদিন ধরে ঘুমুই না কেন জানে?
বেভোরে ঘুমুতে লাগলাম।
আমার কপালে কারো স্পর্শ অনুভব করলাম, আমি চোখ না খুলেই হাতটা স্পর্শ করলাম। এইটা আমার ইমনের হাত নয় মামনীর হাত। আমি আস্তে আস্তে চোখ খুলতে লাগলাম।
চোখ খুলতেই অস্পৃশ্য মানবীটি দৃশ্যমান হতে লাগলো। সাথে মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
— কি ঘুমালেই চলবে? পেটে কিছু না পড়লে ভালবাসা জানালা দিয়া পালাবে। মনে হয় আজকে তোমার বরের সুবুদ্ধি হইছে না বলতেই টেবিলে গিয়া বসে আছে। আর এই কয়েকদিনতো জোড় করেও খাওয়ানো যায়নি। সারাদিন বাইরা বাইরে। বাসায় আসলে মুড অফ করে বসে থাকতো। ওফ আমারতো বয়স হয়েছেরে মা, আমাকে এত কষ্ট তোরা দিস কেন? আর পারিনারে মা। এইবার উঠ…
আমি ইমনের কথা শোনে কৌতুহোলি হয়ে বিছানা ছেড়ে উঠলাম।
— মামনী কয়টা বাজে?
— ৯:৩০ বাজে। সবাই আপনার জন্যে টেবিলে বসে আছে। আপনার বরকে বললাম যাও ডেকে নিয়াসো?
উঁহু সে এখন আসতে পারবে না তার এতই খিদা লাগছে যে সে চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারছে না। অগত্যা তাই আমাকেই আসতে হলো।
মামনী চলে গেলে আমি ফ্রেশ হয়ে টেবিলে আসলাম। বাবা আর মামনী পাশাপাশি চেয়ারে বসে আছে। উল্টোদিকে ইমন বসে আছে। খোঁচা খোঁচা দাড়িতে ওকে বেশ লাগছে। অবশ্য খুবই গম্ভীর আর রাগি রাগি লুক নিয়ে বসে আছে। অবশ্য এই লুকটাও আমার কাছে ভালো লাগছে। ফিলিংস ভালবাসার মানুষের সবকিছুই ভালো লাগে!
রাগি লুকেই থাক তবুও আমারি থাক।
— আদৃতা বসছো না কেন?
আমি মাথাটা অবনত করে বললাম,
— জ্বী বাবা, এইতো বসছি।
ইমনের পাশের চেয়ারটা টান দিয়ে বসে পড়লাম। প্লেটে ভাত তুলে নিতে নিতে ওর দিকে আড়চোখে তাকালাম। কেমন গম্ভীর হয়ে বসে খাচ্ছে। আমার দিকে তাকানোর চেষ্টাটুকুও করছে না। মনে হচ্ছে ওর পায়ে সুড়সুড়ি দেই। না থাক সবার সামনে কি না কি রিএক্ট করে কে জানে। অদ্ভুত একটা মানুষ! অদ্ভুত তার ব্যাবহার। কিম্ভুতকিমার!
আমি ওর পাশে বসার পাচ ছয় মিনিটের মধ্যেই ওর খাওয়া শেষ!
যাও যাও কোথায় আর যাবা? রুমেইতো যাবা। আমিও আসছি। এইরকম কিছু একটা যে হবে আমি আগেই জানতাম। সেইরকম মেন্টাল প্রিপারেশন নিয়াই আসছি।
কোনরকমে কয়েকটা খেয়ে আমিও রুমে আসলাম। চান্দু কপালে একটা হাত দিয়া বিছানায় চোখবুঝে শুয়ে আছে। কপালের উপরের চুলগুলো উড়ছে।
আমি নিঃশব্দে ওর পাশে বসে পড়লাম। দখিনের জানালাটা খোলা থাকায় পর্দা ভেদ করে বাতাস এসে এক অদ্ভুত শীতলতায়
চারপাশ ভরিয়ে দিয়ে গেল।আমার শাড়ীর আচল বাতাসের তাড়নায় উড়ে গিয়ে ইমনের মুখে গিয়ে পড়লো। চোখদুটো মেলে ও আমাকে ওর পাশে আবিষ্কার করলো। চোখটা সরিয়ে নিয়ে বিছানা থেকে উঠে বসলো। তারপর কি মনে করে যেন আবার তাকালো। আমি তখনো ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে আছি। হৃদয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। ঠিক এই মূহর্তে ও বিছানা থেকে নেমে পড়লো।
ও কোথায় যাচ্ছে? এতদিন পর বউকে কাছে পেয়েও কোন ছেলে উঠে যেতে পারে?
আমি ওর হাত টেনে ধরলাম,
ও থমকে দাড়ালো।
— কোথায় যাচ্ছো?
— হাত ছাড়ো। কোথাও না। হ্যা তবে সুযোগ পেলে, সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে সন্ন্যাসী যেতাম। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য।
আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে নির্বিকারভাবে কথাগুলে বলে হাতটা ছাড়িয়ে নিলো। আমি ফ্যালফ্যাল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। রুম থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগ মুহুর্তে আমার দিকে ফিরে বললো,
— দরজাটা লাগিয়ে দাও।
কলিজাটা মোচড় দিয়ে উঠলো। মনের কোণে অনেক প্রশ্ন জেগে উঠলেও গলা দিয়ে কোন কথা বের হলো না।
ও চলে যাওয়ার পর রাগে দুঃখে আমার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে হলো। অতি কষ্টে আমার মাথা খারাপের জোগাড় হচ্ছে।কাঁদতে কাঁদতে বালিশ ভিজিয়ে ফেললাম। কিছুই ভালো লাগছে না। ঘুমতো আজকে আসবেই না। ব্যালকনিতে গিয়ে এলোপাথাড়ি অনেক কিছু ভাবতে লাগলাম। দমকা হাওয়া আমাকে আরো উদাস করে দিতে লাগলো। শাড়ী আচল বারবার উড়ে যেতে লাগলো। খোলা চুলগুলো আছড়ে বারবার মুখে এসে পড়ছে। আকাশে মেঘ করেছে। আমার মনেও মেঘ জমেছে। বৃষ্টি নামার অপেক্ষায় তীর্থের কাকের মত বসে আছে মেঘবতী আকাশ আর আমি। এই বৃষ্টি এলো বলে।
সহসায় আবার কান্না পেল।
হঠাৎ চেনা স্পর্শে আমি চমকে পিছনে তাকালাম।
নীল চোখ দুটি উৎসুক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। নীল চোখের সাথে যে ব্রাউন চোখের দৃষ্টিবিনিময় হচ্ছে।
নীরবতার সে ভাষা কেবল দুইজোড়া চোখই জানে।
কিন্তু নীরবতা ভেংগে বলতে লাগলো,
— এতরাতে এখানে কি? দেখতে পাচ্ছো না আকাশে মেঘ করেছে, বাতাস বইছে জোড়ে এখুনি বৃষ্টি নামবে!
এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে যে।
— লাগুক। তাতে কার কি যায় আসে?
— রুমে আসো। আমার ঠান্ডা লাগছে।
— যার ঠান্ডা লাগছে সে চলে গেলেই পারে।
ইমন ভ্রুকুচকে আমার দিকে তাকালো।
হঠাৎ করেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো। ছিটকে এসে বৃষ্টির ফোটা দুইজনের গায়ের উপরেই পড়তে লাগলো।
ঠান্ডায় আমি কাঁপতে লাগলাম। ঠোটদুটো থরথর করে কাঁপছে কোন কথা বলতে পারছি না। ইমন আমাকে টানতে টানতে রুমে নিয়াসলো।
তারপর ব্যালকনির গ্লাস লাগিয়ে দিলো।
— সমস্যা কি? হ্যা কি চাইতেছিলা জ্বর আসুক?
চেহারার কি হাল বানাইছো একবার আয়নায় দেখছো?
আমার দুই কাধ ধরে জোড় করে ধরে আয়নার সামনে দাড় করাই দিলো। ও আমার পিছনে দাঁড়াই থাকলো।
— এইগুলা কি চোখের নিচেতো ডার্ক সার্কেলের পাহাড় বানাই ফেলছো। চোখ মুখ ফুলাই কি করছো কান্না করতে করতে? কি বাপের বাড়িতে বেশি বেশি খেয়ে এমন শুটকি হইছো কেন? হু??
— ছাড়ো লাগছেতো?
চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
— এই প্লিজ কান্না বন্ধ করো। তোমার কান্না মানায় না। আচ্ছা আমি না অবাক হচ্ছি তোমার এই মনের জোড় দেখে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ এই মনের জোড় নিয়া আবার নিজের হাজব্যান্ডরে অন্যের হাতে তুলে দিতে যায়।
আমি ওর দিকে ঘুরে তাকালাম। সমস্ত দ্বিধা হয়তোবা আজকে আমি জয় করে ফেলেছি।
আমি ওর শার্ট খামচে ধরলাম।
— কি করবো আমি? যে স্ত্রী দিনের পর দিন স্বামীর অবহেলা সহ্য করে সে আর কি করবে?
এতদিনেও তুমি আমাকে ভালোবাসতে পারোনি এটার জানার পর আমি আর কি করতে পারি বলতে পারো?
— ওহ তাই না। তোমার মাথায় কি কোন বুদ্ধি নাই। নাইতো কোন বুদ্ধি নাই। খালি কিভাবে আমাকে ভুল বুঝা যাবে, আর কি কি কত প্রকারে কষ্ট দেয়া যাবে সেই বুদ্ধি আছে তোমার।
সব কি তোমাকে গিলিয়ে দিতে হবে। কিচ্ছু বোঝোনা তুমি।
ভালবাসি মুখে না বললে বোঝো না তুমি। বোঝনি কতটা ভালবাসি। হ্যা আমি খুব ভালোবাসি তোমায়। এতটা যা আমি তোমাকে এক্সপ্লেইন করতে পারবোনা। আমি সবসময় চাইতাম তুমি ভালো কিছু করো। আমি চাইতাম তোমার পড়াশোনা যাতে নষ্ট না হয় তাই আমার শত কষ্ট হওয়া সত্বেও নিজেকে তোমার থেকে দূরে দূরে রাখতাম। তোমাকে ছেড়ে একা একা থাকতে আমার যে কি পরিমাণ কষ্ট হতো সেটা তোমার জানার কথা না। তুমি কি জানো আমি সমস্ত লজ্জা ভুলে মামনী আর বাবাকে নিজের মুখে বলেছি তোমাকে এখানে নিয়ে আসার জন্য। মুখ ফুটে ভালবাসি কথাটা হয়তো বলিনি। কেন বলিনি জানো আমার ভয় হয় তোমাকে হারানোর।
কোন কিছুর বিনিময়ে আমি তোমাকে হারাতে পারবো না। কিন্তু তুমি কি করলে আমার সেই কালো অধ্যায়টা আবার আমার সামনে আনলে সাথে আমাকেও ইউশার হাতে তুলে দিতে চাইলে। কি করে পারলে? তুমি না আমাকে ভালোবাসো!
ইমন আমাকে ধরে ঝুকাতে লাগলো। আমি কোন উত্তর দিচ্ছিলাম না। ও আমাকে ছেড়ে দিয়ে বিছানায় গিয়ে বসলো।
আমি আমার চোখের জল মুছে বিছানায় গিয়ে বসলাম।
ও একদম চুপ হয়ে বসে আছে। আমি আমার দুইহাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
— আ’ম সরি ইমন। প্লিজ এইবারের মত ক্ষমা করে দাও।
— নাহ আমি কোন ক্ষমা টমা করতে পারবো না। শাস্তি পেতে হবে।
— কি শাস্তি?
সেদিন চড় মেরেও তোমার শান্তি হয়নি।
— হ্যা চড় তোমাকে আরো কয়েকটা দেয়ার দরকার ছিলো।
এত গাধা কেন তুমি?
আমি ওকে ছেড়ে গিয়ে দূরে সরে যেতে লাগলাম। ও আমার হাত ধরে ওর পাশে বসালো।
— কি ব্যাপার হু শাস্তি না নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?
— আগে তুমি আমাকে বলোতো, এতদিনে তুমি একবারো কেন আমার খবর নাও নি? আমি না আসলে কি তুমি আমার কাছে আসতে?
— তোমার কি মনে হয় আসতাম না। তোমার মত গাধাকে টাইট দেয়ার জন্যইতো এতদিন যাইনি। দেখছিলামতো তুমি কি কি করতে পারো। আর আজকে যদি না আসতে না আমি তোমাকে কালকে সুড়সুড় করে টানতে টানতে নিয়াসতাম। আমার ধৈয্যের বাঁধন অলরেডি ছিড়ে যাচ্ছিলো। যাক নিজেই আসছো।
আমি চুপ করে ওকে দেখতে লাগলাম।
— এই কি দেখছো?
— তোমাকে। তুমি না সত্যি খুব সুন্দর।
— ধ্যাৎ। সুন্দরতো আমার বউ।
ইমন আমার দিকে আমার ঠোট এগিয়ে দিলো।
— উঁহু
বলে সরে যেতে লাগলে ও আমার হাত ধরে ফেলে। এক চিবুকে ইমন ওর একটা হাত রেখে আমার দিকে ফিসফিসিয়ে বললো,
— কি উঁহু..
শাস্তিতো এখন পেতেই হবে।
তারউপর এতোদিন পর তোমাকে কাছে পেলাম। এত সহজেতো ছাড়বো না ম্যাম।
কিছু একটা বলতে যাওয়ার আগেই ওআমার ঠোট দখল করে ফেললো।