তোমার হাতটি ধরে পর্ব-১২

0
885

#তোমার_হাতটি_ধরে
#পর্ব_১২
#Jechi_Jahan

আমার সামনে সুমন ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে।ওনাকে দেখে যতটা না ভয় করছে তার থেকে বেশি ভয় করছে জোবানকে।পার্কে এসে সুমন ভাইয়াকে সামনে পাবো ভাবতেই পারিনি।তার চেয়ে বড় কথা জোবান আমাকে সুমন ভাইয়ের সামনে এনেছে।

জোবান-তো সুমন,,,তোমরা কথা বলো।আমি আর লিনা ওদিকে যাচ্ছি।

সুমন-ঠিক আছে।

আমি-কই যাচ্ছেন???(জোবানের হাত ধরে)

জোবান-আমরা আছি,,,তুমি আর সুমন এখানে থাকো।

আমি-আমি ওনার সাথে কথা বলবো না।

জোবান-তুমি আমার কথা শুনবে না।

আমি-ঠিক আছে,,,তাহলে আপনি সহ থাকুন।

জোবান-ও তোমার সাথে একা কথা বলতে চায়।

আমি-তো??

সুমন-শিশির প্লিজ,,,লাষ্ট টাইম।

আমি-ঠিক আছে।

আমার কথা শুনে জোবান চলে যায়।সুমন ভাই আমাকে নিয়ে একটা বেঞ্চিতে বসে।দুজন কিছুক্ষণ চুপ ছিলাম,,,অবশেষে নিরবতা ভেঙে আমিই বলি।

আমি-সুমন ভাই কি বলবেল তাড়াতাড়ি বলুন।

সুমন-হুম,,,

আমি-বলুন।

সুমন-সরি”””

আমি-কেনো???

সুমন-সব কিছুর জন্য,,,তোমার সাথে প্রথম থেকে যা যা অন্যায় করেছি তার সবকিছুর জন্য।(আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি-(কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলাম)

সুমন-জানো,,,যেদিন তোমাকে প্রথম দেখি যেদিন তোমাকে এত ভালো লেগেছিলো যে কি বলবো।সব সময় তোমার মুখটা আমার সামনে ভেসে উঠতো।প্রথমে ভেবেছিলাম তুমি আমার মোহ।কিন্তু না,,তুমি আমার মোহ ছিলেনা।তুমি আমার ভালোবাসা ছিলে যা শেষ হওয়ার মতো ছিলো না।

আমি-আপনি এসব কেনো বলছেন??

সুমন-কারণ আর কোনো দিন সু্যোগ পাবোনা।

আমি-(চুপ করে বসে আছি।)

সুমন-আচ্ছা শিশির,,,আমার ভালোবাসায় কি খুব কমতি ছিলো।যার জন্য তুমি আমাকে একসেপ্ট করতে পারলেনা।কম তো ভালোবাসিনি তোমাকে তবুও আমার ভালোবাসা হেরে গেলো।(ছলছল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে)

আমি-(নিশ্চুপ)

সুমন-হ্যাঁ মানছি আমি তোমাকে ভালোবাসার নামে টর্চার করেছিলাম।কিন্তু সত্যি কারের ভালো তো বেসেছিলাম।তুমি যদি আমার টর্চার গুলোকে একটু সহ্য করে আমার ভালোবাসা টাকে মেনে নিতে তাহলে কি হতো।(এটা বলে কেঁদে দিলো)আমি না এখনো মানতে পারছি না যে তুমি অন্য কারোর।যেদিন শুনেছিলাম,,,যে তোমার বিয়ে হয়ে গেছে সেদিন যেনো আমার পুরো দুনিয়া উল্টে গেছিলো।আমার ভালোবাসার মানুষটার বিয়ে হয়ে গেলো আর আমি টের ও পাইনি।বিশ্বাস করো শিশির আমি যদি টের পেতাম তাহলে আমি সাথে সাথে গিয়ে বিয়েটা ভেঙ্গে দিতাম।কিন্তু তোমার বিয়েটাই এমন করে হলো,,যে কেও টেরই পায়নি।

আমি-আপনার কথা শেষ হলে আমি এখন আসি।

সুমন-আজকেও পালাই পালাই করবে।

আমি-(না পালিয়ে আর কি করবো সুমন ভাই।আমার যে আপনার এই চোখের পানি সহ্য হচ্ছেনা)

সুমন-ঠিক আছে যাও!!!কিন্তু(আমার হাতটা ধরে) আমি না খুব চেয়েছিলাম #তোমার_হাতটি_ধরে সারাজীবন থাকতে।কিন্তু আমার কিছু ভুলের জন্য সেটা আর পারলাম না।শিশির তুমি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিও। I am soory for everything…. (বলে উঠে চলে গেলো)

আমি হাতটাকে এখনো ওভাবে রেখে বসে আছি।এবার আর চোখের পানি চোখে থাকলোনা,,,পরে গেলো।আমি উঠে জোবানের কাছে চলে গেলাম।

জোবান-তুমি কাঁদছো কেন শিশির?

আমি-(নিশ্চুপ)

লিনা-কিরে,,,সুমন ভাই কি কিছু বলেছে?

জোবান-শিশির কথা বলছো না কেনো???

আমি-আমি বাড়ী যাবো

জোবান-চলো।

ওনারা আর কিছু না বলে আমাকে নিয়ে বাড়ী চলে এলেন।বাড়ীতে এসে আমি একদম স্বাভাবিক ভাবেই সবার সাথে কথা বলি।রাতে যখন জোবান খাটি বসে ছিল তখন আমার ওনাকে খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করলো।যে উনি সুমন ভাইকে কই পেল আর আমার সাথে কেনো দেখা করালো।

আমি-জোবান,,,,(ওনার পাশে বসে)

জোবান-হুম।

আমি-একটা প্রশ্ন করি???

জোবান-একটা প্রশ্ন তো এখনো করলে।

আমি-প্লিজ,,,

জোবান-ওকে।

আমি-আপনি সুমন ভাইকে কোথায় পেলেন??

জোবান-আমি তোমার সুমন ভাইকে পাইনি।

আমি-তাহলে???

জোবান-কালকে তোমার ভাই কোথা থেকে জানি আমার নাম্বার নিয়ে আমাকে ফোন দিলো।আর ফোন দিয়ে বললো তোমাকে যেন শেষ বারের মত ওর সাথে একটু দেখা করাই।তাই আমি ওকে ওই পার্কের এড্রেস দিয়ে আসতে বলি।আর ও আসার পর তোমাকে ওর কাছে নিয়ে যাই।

আমি-উনি বললো আর আপনি আমাকে দেখা করিয়েও দিলেন।বিশ্বাস হচ্ছে না,,,

জোবান-শিশির,,,এক সময় এই রকম একটা রিকুয়েষ্ট আমিও একজনের কাছে করেছিলাম।কিন্তু ও আমার মুখের উপর না করে দেয়।তো সুমন যখন আমার কাছে এরকম একটা রিকুয়েষ্ট কর ছিলো তখন আমি আর না করতে পারিনি।

আমি-মানে???

জোবান-আব,,কিছু না।(কি বলে দিলাম আমি)

আমি-কিছু একটা বলেছিলেন,,,বলুন বলুন।

জোবান-বলছিলাম You looking so hot….

আমি-দূর(বলে উঠতে নিলে উনি আমাকে ধরে নেয়)

জোবান-আচ্ছা,,,সুমন তোমায় কি বলেছে??

আমি-সবকিছুর জন্য ক্ষমা চেয়েছে।

জোবান-সবকিছুর জন্য মানে??ও তোমাকে থাপ্পড় মারা ছাড়া আর কি কি করেছে??

আমি-দূর,,,কিসব বলেন।

জোবান-সরি মজা করছিলাম।

আমি-আচ্ছা জোবান,,,আমার মত আপনারও কি কোনো অতিত আছে???

জোবান-(শিশিরে প্রশ্নে একটু ভরকে গেলাম) না।

আমি-ওহহহ।

সেদিন রাতে আমাদের মাঝে শুধু এতটুকুই কথা হয়েছিলো।এরপর জোবানই আর আমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ দেয়নি।সকালে উঠে সেই একই কাজ দুজনের।আমি ভার্সিটিতে আর উনি অফিসে।

৫ মাস পরঃ-

এই ৫ মাসটা যেনো খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলো।এই পাঁচ মাসে আমি জোবানের সাথে খুব ভালোভাবেই মানিয়ে নিতে শিখে গেছি।আগে যেমন জোবানকে মন থেকে ভালো পেতাম না এখন মন থেকেই ভালো পাই।কিন্তু জোবানের কি হলো জানিনা।এই পাঁচ মাসের মাঝে প্রথম সাড়ে দুই মাস উনি আমার সাথে ভালো ব্যবহার করেন।কিন্তু পরে যেনো আমার দিকে ফিরেও তাকায় না।এর মাঝে আমার শ্বশুর ও চলে গেছে ওনার ভাইয়ের কাছে ইংল্যান্ডে।বাড়ীতে শুধু আমি,জোবান আর তিনটা সারভেন্ট আছে।ভার্সিটিতে ও এখন আর আশিক আমাদের বিরক্ত করেনা।কখনো দেখা হলেও এড়িয়ে চলে যেতো।

লিনা-শিশির।

আমি-হুম।

লিনা-আমরা সবাই নিচে গিয়ে গল্প করছি আর তুই এখানে একা বসে আছিস।কি হয়েছে??

আমি-কিছুনা,,,এমনে ভালো লাগছেনা।

লিনা-শরীল খারাপ নাকি???

আমি-জানিনা।

লিনা-ভাইয়াকে বলবো???

আমি-না তার দরকার নেই।

লিনা-শরীল বেশি খারাপ লাগলে বাড়ী চলে যা।

আমি-যাবো???

লিনা-হুম,,,যা।

আমি-ঠিক আছে।

আমি লিনার কথায় ভার্সিটি থেকে বাড়ীতে চলে আসি।বাড়ীতে এসে দেখি সারভেন্টরা খাবার বানাচ্ছে।ওরা আমাকে ওসময়ে বাড়িতে দেখে একটু অবাক হলো।একজন এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে।

সারভেন্ট-ম্যাডাম,,,আপনি এই অসময়ে বাড়ীতে??

আমি-শরীল খারাপ লাগছিলো তাই ভার্সিটি থেকে চলে এসেছি।

সারভেন্ট-বেশি শরীল খারাপ লাগছে ম্যাডাম।স্যার কে খবর দিবো??

আমি-না,,,তার দরকার নেই।একটু ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে।

সারভেন্ট-আচ্ছা।

আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়েও গেলাম।কিন্তু বাঁধা আসলো রাতে।আমার যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন দেখি জোবান সহ সারভেন্টরা আমার সামনে বসে আছে।ওদের এভাবে বসে থাকতে দেখে আমি একটু অবাক হই।

আমি-তোমরা এভাবে বসে আছো কেনো???

জোবান-যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।

আমি-কি হয়েছে???

জোবান-কি বলেছি শুনতে পাওনি???

জোবানের কথায় আমি এবার ফ্রেশ হতে যাই।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি জোবান খাটে বসে আছে।আমি গিয়ে ওনার সামনে দাঁড়াই আর বলি।

আমি-আপনি এমন গম্ভীর হয়ে বসে আছেন কেন?

জোবান-তুমি আমার ফোন ধরোনি কেনো??

আমি-আপনি ফোন দিয়েছিলেন??(অবাক হয়ে)

জোবান-মানে???

আমি-মানে গত তিন মাস ধরে তো আপনি আমায় কোনো ফোনই দেননি।বরং আমিই আপনাকে ফোন দিতাম কিন্তু আপনি রিসিভ করতেন না।তো আপনি ফোন দিয়েছিলেন শুনে একটু অবাক হই।

জোবান-কি হয়েছিলো তোমার??

আমি-কি হবে আমার???

জোবান-তুমি নাকি দুপুরে ঘুমিয়ে ছিলে।

আমি-হুম।

জোবান-এমন বেহুশের মত কেও ঘুমায়???

আমি-মানে???

জোবান-তোমাকে সারভেন্টরা কয়বার ডেকেছে তুমি জানো।

আমি-কই ডেকেছে???

জোবান-তোমাকে ডেকে কোনো সারাশব্দ পাচ্ছিলো না।তাই ওরা আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে।আমিও এসে তোমাকে ডাকলাম কিন্তু তুমি তো ঘুম।

আমি-কই,,আমিতো এসব খেয়ালই করিনি।

জোবান-বাদ দাও,,,কি হয়েছিল তোমার??

আমি-আবার একি প্রশ্ন,,,কি হবে আমার।

জোবান-সারভেন্টরা বলছিলো তোমার নাকি শরীল খারাপ তাই ঘুমিয়ে ছিলে।

আমি-ওসব নিয়ে আপনার না ভাবলেও চলবে।(জানি কেনো শরীল খারাপ করছে।কিন্তু আপনাকে আমি বলতে পারবোনা।কারণ আপনি আর আমার কথা শুনার জন্য আগের জোবান রইলেন না।)

জোবান-What do you mean???

আমি-মানে আপনাকে আমায় নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

জোবান-Oh I see! শুনো তোমায় নিয়ে চিন্তা করার জন্য আমি বসে রইনি।এটা আমার দায়িত্ব ছিলো তাই জিজ্ঞেস করলাম।নাহলে I don’t care.

আমি-ওহ,,,,(এভাবে বলতে পারলো)

জোবান-তোমার এই so cold অসুস্থার জন্য আমি আমার ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং ফেলে চলে এসেছি।

আমি-(এবার আর সহ্য হলোনা) তো আপনাকে কি আমি আসতে বলেছিলাম।কেনো এসেছিলেন এই ঠুকনো দয়া দেখাতে।লাগবেনা আপনার এই ঠুকনো দয়া।একটা কথা মনে রাখবেন আমার যদি কোনো দিন মরণব্যাধি রোগও হয় তবু আমার আপনাকে লাগবেনা আর না লাগবে আপনার দয়া।(এগুলো বলে আমি রুম থেকে বের হয়ে ছাদে চলে এলাম।)

জোবান-এই মেয়েটা আমাকে এতগুলো কথা শুনিয়ে দিলো।প্রথমে যদি একে বিশ্বাস না করতাম তাহলে হয়তো আজ এমন হতো না।(বলে রুম থেকে বের হয়ে গেলো)

আমি ছাদে এসে ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখের পানির বিসর্জন দিচ্ছি আর ওনার কথা ভাবছি।চার মাস আগেও সব ঠিক ছিল তাহলে হঠাৎ এমন কেনো হলো।উনি যেনো আমায় এখন সহ্যই করতে পারেনা।হ্যাঁ একটা সময় সহ্য করে যখন আমাকে কাছে টানে।কিন্তু তারপরে আমার সাথে আর কথাই বলেনা।আমি একদিন রাগের বসে জিজ্ঞেস করেই ফেলি।যে আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেনো।সেদিন উনি খুব ভালো করে জবাব দেন যে উনি কাজের চাপে আমায় সময় দিতে পারেনা।কিন্তু তার পরের দিন থেকে আবার সেই সেম কাজ শুরু করে।আমিও কিছু বলতে পারিনা কারণ আমি ওনাকে ভালো বেসে ফেলেছিলাম।তাই ওনার এই অবহেলা সহ্য করেও বাড়ীতে পরে রইলাম।

সারভেন্ট-ম্যাডাম,,,

আমি-হুম,,(চোখের পানি মুছে)

সারভেন্ট-স্যার বলেছিলো আপনাকে খেয়ে নিতে।

আমি-তুমি যাও,,,আমি আসছি।

সারভেন্ট-ম্যাডাম,,স্যার ও খেতে বসেছে।

আমি-তো যাও,,আমি আসছি।

সারভেন্ট-স্যার বলেছে আপনাকে সাথে করে নিয়ে যেতে।

আমি-চলো।

আমি খাবার টেবিলের সামনে এলে দেখি জোবান আরাম করে বসে বসে খাবার খাচ্ছে।আমিও ওনার সামনে বরাবর টেবিলে বসে পরি।উনি কেমন স্বাভাবিক ভাবেই বসে আছেন যেনো কিছু হয়নি।
আমিও এবার খাবার খেতে লাগলাম।খাবার শেষে রুমে এসে আমি আমার বিখ্যাত ঔষুধটা হাতে নিই।এই ঔষুধটা আমি বিয়ের এক মাস পর থেকে নেওয়া শুরু করি।আর এই ঔষুধটার জন্যই আমার শরীল এত খারাপ করে।ঔষুধটা খেয়ে আমি গিয়ে খাটে শুয়ে পরি।কিছুক্ষণ পর মহাশয় এসে যদি দেখে আমি ঘুমিয়ে গেছি তাহলে আজ আমার মাপ আছে।মানে কোনোদিন যদি আমি ভুলবশত ঘুমিয়ে যাই সেদিন উনি আর আমাকে কাছে টানেন না।কিছুক্ষণ পর উনি এসে শুয়ে গেলেন।আর আমিও কিছু না ভেবে ওপাশ ফিরে ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালেঃ-

আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ঘুমন্ত জোবানের পাশে বসে আসি।বসে আছি বললে ভুল হবেবওনাকে পর্যবেক্ষণ করছি।পর্যবেক্ষণ করে যা বুঝলাম ওনার কোনো চিন্তা বা কাজের চাপ নেই।যে কাজের চাপে রেগে আমার সাথে এমন করবে।আমি এবার বুঝতে পেরেছি উনি ইচ্ছে করে আমার সাথে এমন করছেন কারণ আমি মিডেল ক্লাস ফ্যামিলির।আর কিছু না ভেবে আমি উঠে ভার্সিটির জন্য বের হয়ে গেলাম।

লিনা-কিরে,,,এত দেরি করলি??

আমি-(ঘড়ির দিকে তাকিয়ে)দেরি কই হলো??৮ টা বাজেই তো ভার্সিটিতে আসলাম।

লিনা-দেরিই তো,,,আমরা না রোজ তাড়াতাড়ি এসে ভার্সিটিতে একটু হাঁটাহাঁটি করি।

আমি-আমার তো শরীল খারাপ আজ আর নাই বা হাঁটি।যখন বিরতি দিবে তখন হাঁটবো।চল ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।

লিনা-আচ্ছা চল।

আমি আর লিনা মনে প্রথম তিনটা ক্লাস করলাম।তিনটা ক্লাসের পর যখন বিরতি দেয় তখন আমরা একটু হাঁটাহাঁটি করে ক্যান্টিনে যাই।ক্যান্টিনে বসে কফি খাচ্ছিলাম এমন সময় লিনা ক্যান্টিনের বাইরে হা করে তাকিয়ে রইলো।লিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমিও সামনে তাকালাম আর আমার মুখও হা হয়ে গেলো।আমি সাথে সাথে বলে উঠি।

আমি-জোবান,,,

লিনা-পুরো তিন মাস পর।

জোবান-হাই লিনা।(আমাদের সামনে এসে)

লিনা-হাই,,,

জোবান-এমন হা করে আছো কেনো??

লিনা-আমি সপ্ন দেখছি না তো??

জোবান-মানে??

লিনা-মানে ভাইয়া আপনি সত্যি ভার্সিটিতে এসেছেন?

জোবান-হুম।

আমি-কেনো??

জোবান-আমার সাথে চলো।

আমি-কোথায়?

জোবান-গেলে দেখতে পাবে।

লিনা-কোথায় নিবেন ভাইয়া??

জোবান-তোমার বান্ধবীর নাকি শরীল খারাপ।তাই ভসবলাম কিছুদিন ক্লাস না করে রেস্ট নিক।

আমি-দরকার নেই।

জোবান-কি দরকার আছে আর কি দরকার নেই সেটা আমি জানি।(বলে আমাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো)

আমি-জোবান কি করছেন??আশেপাশের সবাই দেখছে।

জোবান-চুপচাপ চলো আমার সাথে।

আমি-আমি লিনাকেও নিবো।

জোবান-ওকে,,,যাও ডেকে আনো।

আমি লিনাকে ডাকার জন্য যেই পেছনে ফিরবো ওমনি লিনা আমার সামনে দাঁড়িয়ে যায়।ওর হাতে আমার ব্যাগ এতক্ষণে কেমন আনলো ব্যাগটা।

লিনা-তোর ব্যাগ নিয়ে যা।

আমি-লিনা,,তুই ও আমার সাথে চল।

লিনা-দরকার নেই তুই যা।

আমি-লিনা প্লিজ,,

লিনা-আমি কাবাবের মধ্যে হাড্ডি হতে চাইনা।

জোবান-ওকে,,সো চলো।

আমি লিনার দিকে রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে জোবান এর সাথে হাটঁতে লাগলাম।জোবান আমাকে গাড়ীতে বসিয়ে নিজেও বসে গেলো।গাড়ীটা চালু হলে একেবারে একটা হাসপাতালের সামনে থামে।উনি আমাকে নামিয়ে হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যাচ্ছেন।ভেতরে যত যাচ্ছি তত আমার ভয় বাড়ছে।

আমি-(আল্লাহ,,,হাসপাতালে যদি আমাকে দেখাতে আসে।তাহলে তো উনি বুঝে যাবে,,,যে কেনো আমার শরীল খারাপ হয়।)

-চলবে