তোমায় ভালোবাসি খুব পর্ব-০৭

#তোমায়_ভালোবাসি_খুব💜
#Part:07🥀
#Writer: #TanjiL_Mim💜
.
.
🍁
“আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি আমি,,চুলগুলো দিয়ে টপ-টপ করে পানি পরছে’!!অগ্নি আমার জন্য অনেক আগেই অনকগুলো শাড়ি কিনে এনে রেখেছিল তার মাঝখান থেকে একটা পরলাম আমি,আজকে টকটকে লাল রঙের একটা শাড়ি পরেছি,,চুলগুলো ভেজা অবস্থায় খোলা,,চোখে হালকা কাজল,,কেনো জানি না আজকে একটু সাজতে মন চাচ্ছে আমার’!!কিন্তু পরমুহূর্তেই আবার বাড়ির কথা মনে পরতেই মন খারাপ হয়ে গেল আমার’!!চোখে কোনে জমলো হালকা পানি,,মুহূর্তেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলাম আমি’!!তারপর আস্তে আস্তে অগ্নির কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম আমি’!!অগ্নি এখনো ঘুমোচ্ছে’!!আমি অগ্নির কপালে হাত দিলাম,,শরীরের তাপ অনেকটাই কমে গেছে’!!হর্ঠাৎই অগ্নি চোখ খুলে তাকালো আমার দিকে’!!আচমকা এইভাবে আমাকে অগ্নির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অগ্নি বলে উঠলঃ

——-“এই ভাবে তাকিয়ে আছো কেন??

“অগ্নির কথা শুনে হকচকিয়ে উঠলাম আমি তারপর বলে উঠলামঃ

——“না তেমন কিছু নয় তোমার জ্বর কমেছে কিনা সেটাই দেখতে এসেছিলাম’!!

——–“তোমায় কে দেখতে বলেছে,অতিরিক্ত সেবা করতে আসবে না’!!আমার এইসব নেকামি সহ্য হয় না’!!

“অগ্নির কথা শুনে আমি আবারো অবাক হলাম,,তাহলে কাল রাতে যা বলেছিল সবই মিথ্যে ছিল জানতাম আমি,,অতিরিক্ত জ্বরের ঘোরেই এমনটা করেছিল অগ্নি’!!হয়তো কালরাতে একটু বেশিই ড্রামায় আঁটকে গিয়ে ছিলাম আমি’!!এইভেবে এক দীর্ঘ শ্বাস ফেললাম আমি’!!তারপর হালকা এসে সরে আসতে নিবো এমন সময় অগ্নি বলে উঠলঃ

——-কোথায় যাচ্ছো,, আর এতো সেজেগুজে আছো কেন,,আর যাও আমার জন্য খাবার নিয়ে এসো??

“অগ্নির কথা শুনে রাগ আসলো আমার তারপরও কিছু না বলে হন হন করে চলে আসলাম রুম থেকে,,রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে আমার’!!

___________________

“এদিকে অগ্নি নেহার রাগান্বিত ফেস দেখে হাসলো’!!মেয়েরা রাগলে সত্যি আরো কিউট দেখায় এই ভেবে হাসলো অগ্নি,,তারপর মুচকি হেঁসে অগ্নি বলে উঠলঃ

——-“এখনো সময় আসে নি তোমার সত্যি জানার সময় আসুক সব বলে দিবো’!!ততক্ষণ তোমায় একটু কষ্ট দিলে খুব একটা খারাপ হবে না,,এই তিনবছর যতটা তোমরা জন্য পুরেছি আমি,,ততটা পোড়াতে হবে তো তোমায় নাকি,,আর কালরাতটা ছিল আমার জীবনে সবচেয়ে সৃষ্ট একটা রাত “নেহাজানু”,,আই লাভ ইউ নেহাজানু,,আই রেয়েলি লাভ ইউ,,’!!!এই বলে আনমনে হাসলো অগ্নি,, তারপর ক্লান্ত মাখা মুখ নিয়ে চলে গেল ওয়াশরুমে’!!

____________________

“রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে আছি আমি,,আর অগ্নিকে হাজারটা গালাগাল দিচ্ছি,,শালা অসভ্য, বান্দর, হনুমান তোরে আমি পুলিশে দিবো,,এই বলে একা একা বিড় বিড় করছি আমি’!!এমন সময় লেডি গার্ডটি এসে বললঃ

——–“ম্যাম আপনি কি কিছু বলছেন??

“হর্ঠাৎ পিছন থেকে লেডিটির কথা শুনে আমি আমতা আমতা করে বললামঃ

——–“না তো,,অগ্নির জন্য খাবার নিয়ে যেতে এসেছি তৈরি হয়ে গেছে খাবার’!!

———“জ্বী ম্যাম তৈরি,, তারপর লেডি একটা ট্রে তে খাবারগুলো সাজিয়ে দিলো আমার হাতে,,তারপর আমিও মুচকি হেঁসে খাবারগুলো নিয়ে চলে আসলাম রুমে’!!

___________________

“এদিকে অগ্নি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসল’!!তারপর চুপচাপ বসে পরল বিছানায়’!!শরীর তার খুব ক্লান্ত’!!জ্বর এখনো কমেনি তার’!!এমন সময় রুমে ঢুকলো নেহা,,নেহাকে দেখে অগ্নি কিছুটা রাগী লুক নিয়ে বললোঃ

——–“এত সময় লাগে খাবার আনতে……..(দমক দিয়ে)

“অগ্নির দমকে শুনে কেঁপে উঠলাম আমি’!!তারপর তাড়াতাড়ি করে খাবারগুলো নিয়ে অগ্নির পাশে বসে খাওয়াতে লাগলাম অগ্নিকে’!!

“এদিকে অগ্নি মনে মনে হাসছে খুব কিন্তু বাহিরে তা প্রকাশ করছে না’!!কিছুক্ষনের মধ্যে অগ্নিকে সব খাবার খাইয়ে দিল নেহা’!!তারপর অগ্নির মুখ মুছে দিয়ে অগ্নিকে ঔষধ খাইয়ে দিল’!!

“অগ্নিকে ঔষধ খাইয়ে দিয়ে শুয়ে দিলাম আমি’!!অগ্নিও চুপটি করে শুয়ে রইল’!!

“মাঝখানে কেটে গেল দু-দিন’!!অগ্নি এখন পুরো পুরি সুস্থ’!!দুই দিনে অগ্নির রাগ আবারো আগের মতো হয়ে গেছে’!!তবে বিষয়টা নিয়ে খুব একটা খারাপ লাগছে না আমার’!!মোটামুটি সবই স্বাভাবিক এখন’!!শুধু স্বাভাবিক হলো না আমার পরিবার,,!!ভাইটার কথাও খুব মনে পরছে আমার সাথে মা-বাবারও,,না জানি আমার জন্য কতো কথা শুনতে হয়েছে তাদের’!!

“একবুক সাহস নিয়ে আমার মোবাইলটা নিয়ে ফোন করলাম আম্মুর নাম্বারে,,ফোনে রিং বেজে উঠল কিন্তু কেউ ধরল না ‘!!এই ভাবে বেশ কয়েকবার কল করার পরও কেউ ধরলো’!!কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে আমার চোখ বেয়ে পরছে পানি’!!বেশ কয়েকবার কল করার পরও কেউ কল না উঠাতে আমিও আর ফোন দিলাম না’!!ফোনটাকে বিছানায় রেখে কেঁদে দিলাম আমি’!!একসময় কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম বুঝতেই পারি নি’!!

“সন্ধ্যায়………….

“নেহার মাথায় হাত দিলো অগ্নি’!!নেহার মায়াবী ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে সে’!!অগ্নির চোখের কোনে থাকা পানি দেখে অগ্নির বুঝতে বাকি রইল না নেহা হয়তো কাঁদতে কাঁদতেই ঘুমিয়ে পরেছে’!!অগ্নি তার হাত দিয়ে নেহার কপালে আসা চুলগুলোকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিল তারপর ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে বললোঃ

——“সব ঠিক করে দিবো আমি নেহাজানু,,তোমার সব কষ্ট আমি শেষ করে দিবো শুধু একটু সময় দেও আমায়’!!এই বলে নেহার গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিলো অগ্নি’!!তারপর লাইট বন্ধ করে দিয়ে চলে যায় অগ্নি,,কোনো এক দরকারী কাজে এসেছিল অগ্নি বাসায়,,রুমে এসে নেহাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে চোখ আঁটকে যায় তার’!!

__________________________________________

___________________

রাত_৮ঃ০০টা………

“আস্তে আস্তে চোখ খুললাম আমি’!!কুটকুটে অন্ধকার হয়ে আছে’!!বেলকনি থেকে হালকা মৃদু আলো এসে পরল রুমে আমিও বিছানা থেকে উঠে রুমের আলো জ্বালিয়ে দিলাম’!!তারপর ওয়াশরুম থেকে হালকা ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম নিচে’!!

“সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছি আমি’!!এই শাড়ি বরাবরই আমার অসহ্যকর একটা বিষয়’!!হর্ঠাৎ শাড়ির আঁচলের সাথে পা বেজে পড়ে যেতে নিলে কেউ আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে ফেলল’!!আমিও ভয়ে চোখ বন্ধ করে তার হাত শক্ত করে ধরে নিলাম’!!কিছুক্ষন পর আস্তে আস্তে চোখ খুললাম আমি’!!আস্তে আস্ত চোখ তুলে উপরে থাকাতেই ভয়ে ঢোক গিললাম আমি’!!কারন অগ্নি চোখ লাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে’!!হর্ঠাৎই অগ্নি আমায় কোলে তুলে নিয়ে রুমে দিকে হাঁটা ধরলো’!!অগ্নির এমন কাজ দেখে ভয়ে আমার হাত পা কাঁপতে শুরু করল’!!

___________________

“অগ্নি রুমে এনে আমায় বিছানায় ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠলঃ

——“যেগুলো পরতে পারো না সেগুলো পরো কেন??এই বলে অগ্নি আমার শাড়ির আঁচল ছিঁড়ে ফেললো,,তারপর আলমারিতে থাকা সব শাড়ি বের করে আগুনে পুড়িয়ে দিল,,অগ্নির এমন কাজ থেকে ভয়ে আতকে উঠলাম আমি’!!তারপর অগ্নি আমার কাছে এসে আমার মুখ চেপে ধরে বললঃ

——–“কাল থেকে যদি তোমায় শাড়ি পরতে দেখেছি তাহলে কিন্তু আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না,,এই শাড়ি হলো সব নষ্টের কারন,,,’!!এই বলে আমার মুখ ছেড়ে দিয়ে হন হন করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল,,রাগে অগ্নির চোখ মুখ সব লাল হয়ে গেছে’!!!

“অগ্নি যেতেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলাম আমি,,শাড়িগুলোর দিকে তাকাতেই কষ্ট লাগছে খুব’!!কিন্তু কথা হলো এখন আমি পরবো কি???

__________________________________________

___________________

“রাত_১১ঃ০০টা………

“ছেঁড়া শাড়ি পরেই অপেক্ষা করছি আমি অগ্নির জন্য সেই কখন রেগে চলে গেছে এখনো আসার নাম নেই’!!এদিকে অগ্নির জন্য খাবার নিয়ে বসে আছি আমি’!!আমারও খুব ক্ষুধা লেগেছে তারপরও খেতে পারছি না’!!এমন সময় হাতে কিছু ব্যাগ নিয়ে রুমে ঢুকলো অগ্নি………….
!
!
!
!
!
#চলবে……………

#TanjiL_Mim❤️