#তোর_উঠানে_বিকাল_ছায়া🥀
২৩তম খন্ড
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
সকালের মিষ্টি রোদটা দেখার সৌভাগ্য হয় না কারোর।
কারন সকালে এতোই মেঘ এতোই বৃষ্টি হচ্ছে যে মনো হচ্ছে আজ পৃথিবীর বুক থেকে সমস্ত ময়লা ধুয়ে মুছে জাবে।
কতো না ভালো হতো যদি সত্যি বৃষ্টির পানি দ্বারা পৃথিবীর সব ময়লা দুর করা যেত তাই না।
–কি ভাবছো ছায়া?
ছায়া বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ছিল নামাজ শেষ করে।
হটাৎ নির্ঝর এর কথায় নির্ঝর এর দিকে তাকায়।
–ভাবছি যদি বৃষ্টির পানিতে পৃথিবীর সব ময়লা দুর হয়ে যেত তবে খুব ভালো হতো তাই না।
–তুমি ত বেশ unique চিন্তা ভাবনা করো ছায়া।
–আচ্ছা বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেলে কেমন হয়।
–তোমার খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে হচ্ছে?
–হ্যাঁ বৃষ্টি তে খিচুড়ি বেশ মানাবে।
–তোমার ইচ্ছে হলে ত সেটা অবশ্যই রান্না হবে আমি সার্ভেন্ট দের বলে দিবো।
–না।
–কি না।
–আর সব সার্ভেন্ট দিয়ে করিও শুধু খিচুড়ি টা রুহির হাতের প্লিজ।।
–রুহি ভালো রান্না করে কি?
–হ্যা হাতের খিচুড়ি খেলে আপনার তাক লেগে যাবে।
–আচ্ছা বলবো কিন্তু আনার এখন কনফারেন্স মিটিং আছে।
আমি সেটা করে আসি তুমি এই চা বিস্কুট আর এই ফল গুলো শেষ করো ছায়া আমি জেন এসে কিছু না পাই।
নির্ঝর চলে গেল অন্য রুমে।
নির্ঝর অন্য রুমে যাবার কিছু সময় পর রুহি আসে রুমে।
–কি রে আমার পুচুকু কি করিস তুই?
–খাচ্ছি খাবি।
ছায়া বেশ বিরক্ত নিয়ে কথাটা বলে।
রুহি খিলখিল করে হেসে দেয়।
–হায় রে বাবুর আম্মু খেতে মোটে ইচ্ছে হয় না তাই না।
–সত্যি একটুও ইচ্ছে হয় না।
রুহি শুন৷
–হ্যাঁ বল এখানেই আছি।
–বলছি খিচুড়ি রান্না করবি?
–তুই খাবি?
–হুম।
–কেন করব না অবশ্যই করব।
আমি ত বলি এখনি করব।
–সত্যি!
–হ্যাঁ।
সকালে সবাই মিলে খাওয়া যাবে।
–কি মজা আই লাভ উ মেরে জান।
–আই লাভ উ টু মারি জান।
আয় হাঁটিয়ে আনি তোকে।
রুহি ছায়াকে নিয়ে বেলকনিতে আসে।
রুম দিয়ে হাঁটিয়ে আনে।
কিছু সময় পর বসিয়ে দেয়।
–আচ্ছা ভাইয়া চলে আসবে এখনি আমি গেলাম রান্না করতে ঠিক আছে।
–আচ্ছা।।
রুহি নিচে চলে আসে।
নির্ঝর কিছু সময় পর ছায়ার কাছে চলে যায়।
রুহি রান্না করছে আর সার্ভেন্ট রা সাহায্য করছে।
হটাৎ আবির এসে বলল,
–এই তোমরা কি করো?
–স্যার ম্যাম কে হেল্প করি।
–আমি করছি তোমরা অন্য কাজ করো।
–আপনি পারবেন স্যার।
–পারব না কেন সেতু যাও।
রুহি চোখ রসগোল্লা করে তাকিয়ে আছে।
আবির কি বলছে টা কি ছেলেটা একদম পাগল।
সেতু চলে যাওয়ার পর।
আবির গিয়ে রুহির কোমড় জড়িয়ে ধরে।
–ইয়া আল্লাহ আমি জানতাম হেল্প এর নামে তুমি এগুলা করবা ছাড়ো প্লিজ।
–আল্লাহ সমস্যা কি তোমার।
–তুমি এমন করো কেন আজব।
–কেমন করি।
–আমি কাজ করছি কেউ চলে আসলে কি হবে।
–কিছুই হবে না করো কাজ।
–উফ তোমার জন্য আমি পাগল হয়ে যাবো।
–আচ্ছা তার পর এক সাথে পাবনা গিয়ে ঘুরে আসব।
–আবির।
–রুহি!
রুহি জানে আবির কে কিছু বলে লাভ নাই তাই রুহি আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খাবার এর দিকে মন দেয়।
রান্না র সবরা সময় জুড়ে আবির রুহিকে জ্বালিয়েছে।
রুহি বেচারি কিছুই বলে নি।
খাবার টেবিলে সবাই বসে।
–মেরি জান তুই আমার জন্য এতো সুন্দর খিচুড়ি রান্না করবি তাহলে আমি সারা দিন খিচুড়ি খাবো।
–থাক আর পাম দিও না।
–মুই পাম দেয় না। মুই সত্যি কথা কই।
— হ হ খাইয়া মুরে ধন্য করো।। তোমার খাওয়া দেখলে ভালো লাগে।
ছায়া হেসে দেয়।
–রুহি তোমার বান্ধবী বলছিল রুহির হাতের খিচুড়ি খেলে জীবনে ভুলবেন না।
বান্ধবী কিন্তু তোমার সত্যি কথা বলেছে
খুব সুন্দর হয়েছে।
–ধন্যবাদ ভাইয়া।
সবাই খাওয়া শেষ করে।
ছায়া একটু টিভি দেখতে বসে রুহিকে সাথে করে।
নির্ঝর কাজের জন্য রুমে চলে যায়।
আর আবির বৃষ্টির জন্য অফিসে যায় নি তাই অনলাইনে মিটিং এটেন্ট করতে যায়।
নয়লা বেগম তিনি নাতি/নাতনির জন্য কাথা সেলাই করতে বসেন।
যতোই হোক প্রথম নাতি/নাতনি বলে কথা।
রুহি আর ছায়া মিলে টিভি এনজয় করছে এমন সময় হটাৎ মেইন ডোরে কলিং বেল বেজে ওঠে।
রুহি উঠতে যাবে তখন সেতু বলে,
–ম্যাম আপনারা বসুন আমি খুলছি।
সেতুর কথায় রুহি বসে পরে।
হটাৎ কারোর চিৎকার শুনে রুহি ছায়া দু’জন পেছনে তাকায়।
পেছনে তাকিয়ে ছায়া থ হয়ে যায় রুহির হাত থেকে রিমোট টা পরে যায় টিভির।
তমা শাড়ি পরে এসেছে বাবার সাথে লয়ার নিয়ে।
তমার আবিরের নাম ধরে চিল্লাতে আছে।
তমার চিৎকার শুনে সবাই নিচে চলে আসে।
আবির তমাকে দেখে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে নেয়।
নির্ঝর আবিরের পিঠে হাত দেয়।
আবির চোয়াল শক্ত করে নেয়।
–আবির আমি থাকতে তুমি ওই মেয়েকে বিয়ে কি করে করলে?
আমার সাথে তেমার ডিভোর্স হয় নি।
তোমায় আমি ভালোবাসি আবির।
তুমি আমায় তোমার বাড়ি থেকে বের করে দিলে আমি ভেবেছিলাম তুমি আমায় নিতে আসবে কিন্তু না তুমি আসো নি উল্টে বিয়ে করে নিলে।
কেন আবির?
তমা যে অভিনয় করছে তা বুঝতে কারোর বাকি রইলো না।
আবির নিজেকে শান্ত করে বলে,
–আমি তোমায় আজও ভালোবাসি তমা।
ওকে বিয়ে করেছি শুধু সার্থের জন্য।
তুমি তোমার কাপড় নিয়ে আমার রুমে যাও।
রুহির জিনিস পত্র বের করে দেও।।
নয়লা বেগম কথাটা শুনে আবিরের গালে চাড় বসিয়ে দেয়।
–এই শিক্ষা দিয়েছি তোকে আমি।
মায়ের রাগ কন্ট্রোল করতে নির্ঝর নয়লা বেগম কে ধরে বসে।
–মা প্লিজ প্রেস চলে আসবে তুমি সিনক্রিয়েট করো না।
–প্রেস মিডিয়ার ভয়ে আবির কাপুরষ হয়ে যাবে নির্ঝর।
–না মা প্লিজ তুমি রেগো না।
নির্ঝর নয়লা বেগম কে থামিয়ে নেয়।
রুহির চোখ দিয়ে টুপটুপ করে অশ্রু পরছে।
আবিরের দিকে দৃষ্টি স্থির রুহির।।
কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে।
রুহির অবস্থা দেখে ছায়া রুহির হাত ধরে।
নির্ঝর ছায়ার কাছে যায়।
–রুহি তুমি,
–ভাইয়া কি হচ্ছে এগুলা।
–কি হচ্ছে এগুলা এই মেয়ে এই তুই আমি থাকা সত্ত্বেও আমার স্বামীকে বিয়ে করিস লজ্জা লাগে না। (তমা)
–নির্ঝর ওকে থামতে বল (নয়লা বেগম)
–আবির।
নির্ঝর আবিরের দিকে তাকায়।
আবির তমাকে নিয়ে রুমে চলে যায়।
সেখান থেকে উকিল আর তমার বাবাও চলে যায়।
রুহি উপরের দিকে তাকায়।
তার সব কাপড় ছুড়ে ফেলছে তমা ঘরের বাইরে।
–মা আমায় অনুমতি দিন আমি আর এখানে থাকতে চাই না।
নির্ঝর রুহির কথা শুনে রুহির হাত দুটো ধরে বসে।
–রুহি বোন আমার ভাই এর মতো করে আমাকে শেষ বারের মতো বিশ্বাস করো আমি সব ঠিক করে দিবো।
সেতু রুহির কাপড় মায়ের রুমে রেখে দেও।
–বউ মা তুমি চলে গেলে আমারা কি নিয়ে থাকবো।
–তুই যাস না রুহি আমি কি করবো রুহি।
সবার দিকে তাকিয়ে রুহি দৌড়ে শাশুড়ী মায়ের রুমে চলে আসে।
হটাৎ এ কি ঝড় এলো।।
যা শুখের পরিবার তচনচ করে দিচ্ছে।
নির্ঝর চোখ বন্ধ করে শপথ নিলো।
–শেষ এটাই আমি আর অশান্তি হতে দিবো না।
একটু ভরশা রাখো মা।
ছায়াকে নিয়ে নির্ঝর উপরে চলে আসে।
চলবে,