দেওয়া নেওয়া সানাই পর্ব-০৯

0
303

#দেওয়া_নেওয়া_সানাই
পর্ব:9
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ

সকালের ব্রেকফাস্ট টেবিল

সবাই খাবার খাওয়ার সাথে গল্প ও করছে।ইফরাজ আমার পায়ের উপর ওর এক পা উঠায় রাখছে কি অসভ্য ভাবুন একটু।এই ছেলের আশেপাশের কোন কিছু দেখার দরকার পরেনা।শুধু নিজের পাগলামি কেই প্রাধান্য দেয়।(ঐশানী)

আজকে দুপুর এ তন্নি আর অরিন আসবে।(মামমাম)

কাজ সারছে তাহলে কি আবার 1971এর যুদ্ধ দেখব আজকে?(ইফরাজ কপালে হাত দিয়ে)

কেনোরে ইফু তারা আবার কি করল?(ইতি মুখ টিপে হেসে)

ভাব কম নিস আপু তুই জানিস কেনো আমি এই কথা বলছি।তার উপর তাদের আমার বৌভাতেও বলি নাই আমি।তার উপর দুইজন এক সাথে আসবে যুদ্ধ কি না হবে।আচ্ছা মামমাম আব্বু তোমাদের দুইজন এর বোন একই দিনে কিভাবে আসে?(ইফরাজ চিন্তিত কন্ঠে)

তাতো আমি ও জানি নারে।শোন মা একটু বুঝে থাকিস আমার বোন আর শালির থেকে দুইজন এই ধানি মরিচ।(আব্বু ঐশানীর উদ্দেশ্য)

আমি বোকার মতো সবার কথা শুনছি।যাদের চিনিনা তাদের নিয়ে এমন কথা শুনতে অবাক এই লাগে।তার থেকেও বড় কথা নিজের বোন আর শালি নিয়ে কথা গুলো বলল আব্বু।এই পরিবারের সব পাগল।
খাওয়ার পর সব গুছিয়ে দিলাম।মামমাম বলল শাওয়ার নিয়ে রেডি হতে।রান্নার কাজ আমেনা আন্টির সাথে করে নিবে।আমি করতে চাইলেও জোর করে ইফরাজ এর সাথে উপরে পাঠায় দিলো।আর এই অসভ্য ইফরাজ সেতো এক দন্ড বসে থাকেনা সারাদিন আমাকে জ্বালাতন করে।এই লোকের দুইটা শোরুম সেখানে গিয়ে ওতো বসতে পারে।সারাদিন বাসার মধ্যেই থাকতে হয়।আমি শাওয়ার নিতে যাবো এমন সময়ই ইফরাজ আমাকে টেনে তার পাশে বসিয়ে দিলেন।
কি হলো আবার ?(ঐশানী)

আমার ফুফু আর খালামনি অনেক কিছুই বলতে পারে রাগ করবেনা ঠিক আছে।আমি সব সামলে নিবো।আসলে ফুফু আর খালামনির দুইজনের দুইমেয়ের সাথে আমার বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল।কিন্ত এতে সম্পর্ক নষ্ট হবে যদি যে কোন একজন কে বিয়ে করি এই ভেবে আব্বু আর মামমাম ঝগড়া ও করেছিলেন তাদের সাথে।আর সবচেয়ে বড় কথা ওদের আমি আমার ছোট বোনের মতো দেখি।আর ওরাও আমাকে ভাই এই ভাবে।এক সময়ই আমার ফুফু আর খালামনির অনেক ভাব ছিলো।একেবারে কলিজার ফ্রেন্ড বলা চলে।কিন্ত তাদের মধ্যেই কম্পিটেশন শুরু হয় আমাকে নিয়ে।সব মা বাবাই চায় তার মেয়েকে একজন স্টাবলিশ ছেলের হাতে তুলে দিতে।আর তুমি তো জানো আমার মতো ভদ্র,স্টাবলিশ,সুশীল ছেলে আর একটাও নেই।(দাঁত বের করে ইফরাজ)

সব কথা হজম করতে পারলেও শেষের লাইন টা মানতে কষ্ট হলো।
ওরে আমার ভদ্র,স্টাবলিশ,সুশীল জামাইরে কোই কথাটা বলছেন ভেবে বলুন?আপনি যদি ভদ্র আর সুশীল হোন তাহলে যারা সত্যকার অর্থে ভদ্র তারা কচু গাছের সাথে ফাঁ*সি খাবে।(ঐশানী)

কেনো আমি ভদ্র না?(ইফরাজ ব্রু কুচকেই)

কচুর ভদ্র অসভ্য একটা।(ঐশানী)

শোনো আমি যথেষ্ট ভদ্র সবার সাথে এটা তুমি অস্বীকার করতে পারোনা।তবে তোমার সাথে রোমান্স করি বলে তোমার কাছে আমি নাহয় অসভ্য পুরুষ বলো সত্য কিনা?(ইফরাজ ঐশানীর হাত ধরেই)

হুম অসভ্য পুরুষ মানুষ ছাড়েন শাওয়ার নিবো।মামমাম রেডি হতে বলছে।(ঐশানী)

ঐ সোনাপাখি।(ইফরাজ ঐশানীর চুল ধরে)

কি সমস্যা চুল টানেন কেন?ব্যাথা পাইনা বুঝি?(ঐশানী ইফরাজ এর হাত সরিয়ে)

তোমার সাথে শাওয়ার নিতে যাই আজকে?(ইফরাজ ঐশানীর হাত আবার ধরেই)

একদম না।আপনার মতো অসভ্য মানুষের সাথে তো জীবনেও না।হাত ছাড়েন। (ঐশানী)

একদিন এই অসভ্য পুরুষটার জন্য পাগল জদি না বানাইছি তোমারে তাহলে আমিও ইফরাজ খান নিজের নাম পাল্টে ফেলব।(ইফরাজ)

তাহলে পাল্টে ফেলেন।ঐদিন কোনদিন আসবেনা।(ঐশানী)

দেখা যাবে সোনাপাখি বউ। (ইফরাজ)
_________

আমি শাওয়ার নিয়ে একটা কালো জামদানি শাড়ি পরেছি সাথে ছোট ছোট গ্লোডের জিনিস।যেমন চুড়ি,একটি লকেট চেইন,দুইটা আংটি, নাকে ডায়মন্ড এর নাকফুল আর কানে ছোট্ট বালি।সাজতে চাইছিলাম ইফরাজ কিছুতেই দিলোনা।জাস্ট একটু লিপজেল দিতে বলে ওয়াশরুম চলে গেল শাওয়ার নিতে।আমি তাও একটু কাজল আর হালকা লিপস্টিক দিলাম। শাওয়ার শেষে এসে আমার সাথে মিলিয়ে কালো পাঞ্জাবী পড়ল।আমি বসে আম্মুর সাথে কথা বলছিলাম।কথা শেষ করতেই হঠাৎই ইফরাজ এসে আমাকে কিস করে দিলো।
ইফরাজ দেখছেন আমি একটু সেজেছি আপনি তা ঘেটে দিচ্ছেন কেন?(ঐশানী)

ঠোঁটটা তো এমনেই সুন্দর আবার লিপস্টিক কেন দিলা।আমার তোমাকে সাজ ছাড়াই ভালো লাগে।তাই লিপস্টিক মুছে দিলাম।(ইফরাজ চোখ টিপ দিয়ে)

খবিশ।আপনার ভালো না লাগলে কি হবে আমার তো সাজ পছন্দ। (ঐশানী)

আমার অপছন্দ কখন বলছি?বললাম তোমাকে সাজ বিহিন আমার ভালো লাগে।আচ্ছা যাইহোক লিপস্টিক ঠিক করো।নিচে যেতে হবে।(ইফরাজ)

অসভ্য পুরুষ। (ঐশানী)
________

আমি নিচে এসে মামমাম এর হাতে হাতে কিছু নাস্তার ব্যবস্থা করে রাখছি।যেমন সেমাই, শরবত,মিষ্টি,আর ফল আসলে কাটব।আমি ইতি আপির সাথে গল্প করছিলাম।অনা আমার কোলে বসা।এত্ত কিউট যা বলার বাইরে।মাসাআল্লাহ বিদেশি একটা মেম লাগে।লাল ব্রাউন চুল ফর্সা গায়ের রং চোখ গুলো হালকা লালছে।পুরাই পুতুল বাচ্চা।হঠাৎই ইফরাজ অনাকে নিয়ে রান্নাঘরের দিকে গেলো।একটু পর বাটিতে সেমাই এনে অনাকে খাইয়ে দিচ্ছে সাথে নিজেও খাচ্ছে। এই ছেলের উন্নতি হবেনা।খাদক একটা।(ঐশানী)

দুপুর বারোটার সময়

ফুফু আসার ঠিক আধা ঘন্টার পর খালামনি ও আসলেন।আমার এক পাশে ফুফি অন্য পাশে খালামনি বসা।আমি ঐশানীর দিকে তাকিয়ে দেখি ও কোমরে শাড়ি গুজে কাজ করছে।এমনেই ফর্সা তার উপর পরেছে কালো পুরো যেন একটা কালো গোলাপ লাগছে।হঠাৎই কি মনে করে তাদের মাঝের থেকে উঠে এসে সোজা ঐশানীর কোমর থেকে শাড়ির আচল খুলে দিলাম।
আমার জিনিস অন্য কেউ দেখুক তা আমার পছন্দ না।সেইটা মেয়ে মানুষ এই হোকনা কেন।আর এখন সবার সামনে কিছুই করতে পারছিনা তাই যতো পারো ঢেকে থাকো।নাহলে আমি আবার নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পরালে এখান থেকে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো।(বলেই একটা আপেল নিয়ে আবার এসে সোফায় বসলাম ইফরাজ)

অসভ্য। (ঐশানী বিরবির করে)

তা ভাবি ছেলের বিয়ে করালে আমাদের তো বলতে পারতে।আমরা কি তোমার বাপের বাড়ির মতো এত্ত খাই যে আসলে খাবার এ টান পরতো?(অরিন ফুফু )

এই মুখ সামলে কথা বল অরিন।আমাদের এত্ত খাবার এর ইচ্ছে নেই যে বোনের শশুর বাড়ি এসে খাব।আমার স্বামীর যথেষ্ট আছে তার টা খেয়েই আমরা শেষ করতে পারিনা।আমরা তো ভাইয়ের টা খাইনা।(তন্নি খালামনি)

লেগে গেলো এক দফা যুদ্ধ। দুইজন এর চিৎকার চেচামেচিতে সবাই যেখানে ওনাদের থামানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।সেই দিকে ইফরাজ দুইজন এর মাঝে বসেই খেতে ব্যাস্ত।আমি ইতি আপির পাশেই বসেই ওনাদের ঝগড়া দেখছি সাথে ইফরাজ এর খাওয়া ও।আল্লাহ কেমনে এই খাদক কে আমার কপালে ঝুটাইলো।হঠাৎই ইফরাজ এর চিৎকার এ পুরো রুম ঠান্ডা হয়ে গেলো।আমিতো ভয় পেয়ে গেছি ওর এই রুপ দেখে।(ঐশানী)

সবাই চুপ।আর একটা চিৎকার চেচামেচি জদি শুনি সবার খবর আছে।তোমাদের এই বস্তি মার্কা যুদ্ধ আমার পছন্দ না বলেই আমার বিয়েতে তোমাদের বলি নাই।আর ঐশানী আর আমি পালিয়ে বিয়ে করছি।আব্বু আর মামমাম এই যানতো না।ওকে আমি তুলে নিয়ে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে আসছি।পরে আমার শশুর শাশুড়ি কে মানাইছি।সেই জায়গাতে তোমাদের বউ ভাতে বলি আর তোমরা এসে আমার বিয়ের বারোটা বাজাতে।এটাতো আমি মানবোনা।অনেক কষ্টে একটা বউ পাইছি।নাহলে তোমাদের দুইজন এর জন্য তো অন্য জায়গাতেই বউ এই পাইনি আমি।আর হ্যা আমি আগেও বলছি এখন ও বলি আমি জুলিয়া আর আরিশা কে আমার নিজের বোনের মতো দেখি।আর ওরাও আমাকে বড় ভাই হিসাবে।কিন্ত তোমরা দুইজন যা শুরু করছো পাচঁ বছর ধরে আমি বিরক্ত হয়ে তোমাদের ও ওদের সাথে কথা পর্যন্ত বলিনা।একটা মাত্র ফুফি একটা মাত্র খালামনি তাদের থেকে দুরে থাকতে হয় বুঝবা কি এর কষ্ট। মাঝের থেকেই আমার আব্বু আর মামমাম এর মধ্যেই পেচ লেগে রয়েছে তোমাদের নিয়ে।কার বোনকে সন্তুষ্ট করবে এই নিয়ে বেচারারা চুপ রয়েছে।যাইহোক তোমরা গুরুজন এভাবে চিৎকার করা উচিত না।তাও করেছি বলে মাফ চাইছি।বেড়াতে আসছো থাকো খাও কিন্ত আমার বাড়িতে কেউ যেন ঝগড়া না করে বলে দিলাম। ঐশানী ফুফু আর খালামনির সাথে কথা বলে উপরে আসো আমার একটু বাইরে যেতে হবে।(ইফরাজ বলেই হাটা দিলো)

হুম।
পুরো ডাইনিং রুমে সবাই চুপচাপ বসে আছে।ফুফু আর খালামনি মাথা নিচু করে আছে।হঠাৎই ইতি আপু আমার কাছে এসে ফিসফিস করে বলল।(ঐশানী)

আরে চিল করো।তোমার বর একটু ভাব নিলো।কোন বাইরে যাচ্ছে না ও হুদাই বলল।যাতে তোমাকে বেশিক্ষন এখানে বসিয়ে না রাখে।দুইজন তোমাকে প্রশ্ন করতে করতে যেনো আবার ঝগড়া না করে এই জন্য এমন করল।তুমি যাও তাদের খেতে বলো।আর কথা বলো দেখবা সব আবার আগের মতো হয়ে গেছে।(ইতি ফিসফিস করে)

আচ্ছা। (ঐশানী)

_______

রাতের খাবার এর পর আমাদের ফ্লাটে ফুফু আর খালামনির ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিলাম। দুইটা রুম যেহেতু একটাতে তাদের চারজন কেই ঘুমাতে দেওয়া হলো।খাবার খাওয়ার পর সব গুছাতে রাত বারোটা বেজে গেল।আমি উপরে এসে রুমে ঢুকতেই দেখি ফুফু আর খালামনির ভাব জমেছে।তারা গল্প করছে।বাহ ইফরাজ এর কথার প্রভাব পরেছে।কিন্ত ছেলেটা মিথ্যা কেন বলল বুঝলাম না।মাথা ব্যাথা করছে অনেক।আমি রুমে এসে শাড়ি চেঞ্জ করে নিলাম।আমি সোফার উপর হেলান দিয়ে বসে আছি।ইফরাজ মেবি ছাদে গেছে সিগারেট খেতে।এমনেও রুমে খায়না।বাইরের থেকে খেয়ে আসে।আর আজকে তো রুমে ওর ফুফু খালামনি আছে।আমি সোফার উপর হেলান দিয়ে বসে আছি।অনেক মাথা ব্যাথা করছে।(ঐশানী)

ছাদের থেকে রুমে এসে দেখি ঐশানী হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে।আমি আবার বের হয়ে ফুফু আর খালামনিকে বলে আসলাম কিছু লাগলে কল দিতে।আমরা ঘুমাতে গেলাম।তারপর এসে গেট লক করে ব্রাশ করে এসে ওর পাশে বসলাম।
সোনাপাখি বউ কি হয়েছে?(ইফরাজ)

কিছুনা।(ঐশানী)

চোখ থেকে পানি পরছে কেন তাহলে?কেউ কিছু বলছে?(ইফরাজ)

না কে কি বলবে?(ঐশানী সোজা হয়ে)

তাহলে কান্না কেন করছ?মিথ্যা বলোনা কে কি বলছে বলো?(ইফরাজ দাঁতে দাঁত চেপে)

মাথা ব্যাথার করছে ইফরাজ।তাই পানি পরছে।(ঐশানী)

মিথ্যা বলোনা আমি গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করব?(ইফরাজ দাড়িয়ে)

এই ছেলে এত্ত বুঝেন কেন?বসেন এখানে মাথা ব্যাথা করছে।কালকে রাতে ব্যাথা পেলাম না ঐখানে দেখুন তো এত্ত ব্যাথা কেন করছে?(ঐশানী ইফরাজ এর হাত ধরেই)

আমি ওর চুল সরিয়ে কালকের ব্যথার জায়গাটা দেখে পুরো টাসকি রক্ত জমে আছে।
চলো আব্বুর কাছে।(ইফরাজ)

কেনো এত্ত রাতে যাবো?তারা ঘুমায়।আপনি একটু ঔষধ মালিশ করে দেন।(ঐশানী)

রক্ত জমে আছে ঐখানে।ট্রিটমেন্ট না করলে পরে সমস্যা হবে সোনাপাখি।(ইফরাজ)

আচ্ছা সকালে দেখাব।এখন একটু ঔষধ দিয়ে দেন।(ঐশানী)

নিজের প্রতি যত্নশীল হতে হবে সোনাপাখি।এখনই যাবো চলো নিচেই আমার আব্বু আছে।একজন ডাক্তার থাকতে আমার বউ কস্ট করবে তাতো হতে দিতে পারিনা।চলো।(ইফরাজ ঐশানীর হাত ধরেই)

এখন তারা ঘুমায় ইফরাজ। তাদের জ্বালাতন করতে হবেনা।(ঐশানী ইফরাজ এর কাধে মাথা রেখে)

ঘুম ভাঙ্গলে কিছু হবেনা।কিন্ত তোমার কান্না আমার সহ্য হচ্ছে না।আর আমার আব্বু একজন ডাক্তার সোনাপাখি তার ঘুম এর আগে পেসেন্ট।চলো এখন।
বলেই ওকে কোলে নিয়ে হাটা দিলাম। এমনে সময়ই ও খুব চিৎকার চেচামেচি করলেও আজকে চুপ।ও চোখ মুখ খিচে ব্যথা সহ্য করছে।ওর চোখ দিয়ে পানি পরেই যাচ্ছে।নিচে এসে কলিংবেল দেওয়ার কিছুক্ষণ পর মামমাম গেট খুললেন।
আব্বু কি ঘুমায় মামমাম?(ইফরাজ)

না।ঐশানীর কি হয়েছে কান্না করে কেন?(মামমাম উদ্বিগ্ন হয়ে)

ও কালকে পরে ব্যথা পাইছে তখন ঔষধ দিয়েছি।কিন্ত আজকে দেখি রক্ত জমে গেছে।আব্বুকে বলো কিছু করতে।(ইফরাজ)

রুমে আয়।(মামমাম)

কিছুক্ষণ পর

ব্যথা সহ্য করতে হয়না মামনি।এইযে এখন একটা বড় অঘটন ঘটতো।এই সব ব্যথার রক্ত জমে অনেক সময় বড় রোগ হয়ে যায়।ভাগ্য ভাল আজকে আবার ব্যথা করছিল তাই ট্রিটমেন্ট করতে পারলাম।যাও গিয়ে ঘুমায়।বেনডেজ এ যেনো নাড়া না পরে।(আব্বু)

ওর কিছু হবেনা তো আব্বু?(ইফরাজ প্রায় কান্না করে)

না এখন আর ভয় নেই।কিন্ত দেখে রাখিস যেনো বেনডেজ সরে না যায়।(আব্বু)

আচ্ছা।
বলেই ঐশানীকে নিয়ে আবার উপরে চলে আসলাম। ও ঘুমের ঔষধ দেওয়ার কারণে ঘুমিয়ে পড়ল।আমি ওর পাশে বসে আছি।আসলে আব্বু ব্যাথার জায়গা হালকা কেটে জমাট রক্ত বের করে বেনডেজ করে দিছে।জদিও ঔষধ দিয়ে নিয়েছিল।এসব ছোট ছোট জমাট রক্তের দারা ব্রেন ক্যান্সার ও হতে পারে।তাই মাথার ব্যথাতে সব সময়ই মনোযোগি হতে হবে।আমি ওকে আমার হাতের উপর শুইয়ে দিলাম।ও ঘুমে বিভোর। আমি অনেকক্ষন জেগে থেকে একটা সময় ঘুমিয়ে পড়লাম ।(ইফরাজ)

**************(চলবে)*************