নেশাময় ভালোবাসার আসক্তি পর্ব-৩৩+৩৪

0
97

#নেশাময়_ভালোবাসার_আসক্তি
#পর্ব -৩৩
#নীলাম্বরী_সেন_রাধিকা

(কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদিও পোস্ট করেন লেখিকার নাম উল্লেখ করে পোস্ট করবেন)

“শশুর আব্বু, আপনি তো সব জানেন। কেনো আমি দেশের বাইরে ছিলাম? আমি তো চাইনি মেঘূর কিছু হোক? সব কিছুতো ঠিক ঠাক করেই গিয়েছিলাম। তবুও কেনো এমন হলো? আপনার মেয়ে নিজেকে কষ্ট দিয়ে মরছে সাথে আমাকেও মারছে।”

মেঘার আব্বু আর আদ্রিয়ান একটি রুমে আছে। যেটি আদ্রিয়ান এর সিক্রেট রুম। এই রুমের কথা আদ্রিয়ান, আসাফ, রুশ জানে। এছাড়া মেঘার আব্বুও এই রুমের সাথে পরিচিত হয়েছে কয়েক মাস আগে। মেঘার আব্বুও আগে সিক্রেট ওয়ার্ল্ডের মাফিয়া ছিলো। কিন্তু নিজের স্ত্রীর আদেশে সেই পথ বিচ্ছিন্ন করেছে প্রায় অনেক বছর আগেই। কিন্তু তার মধ্যে অনেক শত্রু যুক্ত করেছে যার জন্য তাকে লোকায়িত থাকতে হয়েছে মেয়েকে নিয়ে। তার জন্য নিজের নামও পরিবর্তন করতে হয়েছে তাকে। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। শত্রু দলের লোকেরা তার ঠিকানা পেয়ে গেছে। যার জন্য মেঘার আব্বু আবার নিজেকে লোকায়িত করেছে। কারণ তার ইনফরমেশন পেলেও মেঘার ইনফরমেশন পাইনি। শুধু জেনেছে যে তার একটি মেয়ে আছে কিন্তু মেয়ের বায়ো ডাটা কিছুই জোগাড় করতে পারেনি। আর এইসবই সম্ভব হয়েছে আদ্রিয়ান এর জন্য। এসবে আদ্রিয়ান নিজে সব কিছু হ্যান্ডেল করেছে।

“আদ্র বাবা, তুমি শুধু শুধু আমার মেয়েটার উপরে রাগ ঝাড়ছো। মেঘা আম্মু খুবই অভিমানী। সেটা তুমি এত দিনে ঠিকই বুঝেছো। অবশ্য এতে তোমারও দোষ নেই। তুমি যেই কাজে গিয়েছিলে সেখানে যদি মেঘার খুঁজ পেতো তাহলে হয়তো জিনিস গুলো আরও ডিফিকাল্ট হয়ে যেতো।”

মেঘার আব্বুর কথাই আদ্রিয়ান সেই দিনের কথা ভাবতে লাগলো। মেঘার সাথে যখন রাগ করে ওয়াশরুমে গিয়েছিল তখনই একটা ফোন আসে আদ্রিয়ান এর। ফোন রিসিভ করে জানতে পারে যে প্রায় পাঁচশো নারী ও শিশু পাচার হতে চলেছে। যা অলরেডী নাবিক রা জাহাজে করে উত্তর প্রদেশে নিয়ে যাচ্ছে। এতে আদ্রিয়ান এর চিন্তার প্রকোপ বেড়ে গেলো। যেভাবেই হোক তাদের কে উদ্ধার করতে হবে। দেশে হলে পাচার এর ব্যাপার টা আটকাতে পারতো। কিন্তু এটি দেশের বাইরে অলরেডী চলে গেছে। যার জন্য ব্যাপার টা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তাড়াহুড়া করে তাড়াতাড়ি অফিসে গেট আপে তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেলো। এরপর সারাদিন সেটি নিয়ে ব্যস্ত থাকাতে মেঘার খুঁজ নিতে পারেনি। সন্ধায় যখন আদ্রিয়ান আসে তখন খুবই উগ্র মেজাজে ছিলো। কারণ কোনো মতেই পাচার কারীদের সঠিক ইনফরমেশন কালেক্ট করতে পারেনি। যার জন্য তাকে এমার্জেন্সি লন্ডনে যেতে হবে। ওইখানে গেলে কাজ হবে। কারণ তার শক্তি শালী দল ঐখানেই ছড়িয়ে আছে। সবাইকে এখন বাংলাদেশে আনা সম্ভব না। আর এখানে এনেও খুব একটা লাভ হবে না। উল্টো সময় লস হবে। তাই তাড়াতাড়ি সে রাতের আটটার ফ্লাইটে রুশ ও তার দলের মেম্বার দের নিয়ে লন্ডনে রওনা দেই। অবশ্য দাদীমা আর মেঘার দেখাশুনার জন্য আসাফ কে রেখে যায়। আর মেঘা কে তেমন কিছু বলে আসেনি কারণ সেই সময় টা তার হাতে ছিল না। পরে এসে নাহয় মেঘাকে সব বুঝিয়ে বলবে এমন ধারণা নিয়েই সে লন্ডনে যায়। আর ঐখানে গিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রায় ছয়দিনের মাথায় সে তার পরিকল্পনায় উত্তীর্ণ হয়। আর এতে মেঘার আব্বুরও নিখুত অবদান আছে। কিন্তু যখন সে সব কিছু ঠিক ঠাক করে দেশে ফিরলো তখন মেঘার এরূপ পরিবর্তন দেখে পুরো পাগলের মতো হতে গেলো। মেঘা যখন অজ্ঞান ছিলো তখন মনে হচ্ছিলো আদ্রিয়ান এর পুরো শরীরে কেউ কাটা দিয়ে দিছে। কারণ মেঘার চেহারা ও শরীরের অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। আদ্রিয়ান চিতকার করে যখন মেঘাকে ডাকছিল তখন মেঘার কোনো সারা পাচ্ছিলো না। আদ্রিয়ান এর চিতকার দাদীমা এসে মেঘার এরূপ অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি আদ্রিয়ান কে বলল হসপিটাল এ নিয়ে যেতে। এরপর হসপিটাল এ গিয়ে ডক্টর রুমানার আন্ডারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আদ্রিয়ান কে কিছু কড়া কথাও শুনিয়ে দেই। কারণ উনি বার বার বলেছিল যাতে মেঘা যাতে খালি পেটে তেমন না থাকে। কারণ মেঘার খাদ্য থলিতে সমস্যা আছে। যদি সে অভুক্ত থাকে বা খাবার অল্প খাই তাহলে এই ব্যাথা ক্রমশই বাড়তে থাকবে। আর তাতে খাদ্য থলি ব্রাস্ট হওয়ার সম্ভবনা আছে। মেঘা ছোটো থেকেই কম খেতো যার জন্য তার খাদ্য নালী আস্তে আস্তে চিকন হতে থাকে। এই সমস্যার কারণে মেঘার খাবারের প্রতি অনিহা আসে। আর এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেঘার আব্বু চিকিৎসা করানো তে সুস্থ হলেও খাবার টা সে অল্প অল্পই খেতো। হঠাৎ হঠাৎ সমস্যা টা দেখা দিলেও অনেক বছর সেই সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করেই আবার সেই সমস্যা আবার দেখা দিয়েছে। যার জন্য আদ্রিয়ান সেটির চিকিৎসা করে যাচ্ছিলো মেঘার অগোচরেই। অনিয়ম করলেই সমস্যা টা বাড়বে। আর এতে মেঘার লাইফ রিস্ক হয়ে যাবে। এই সব কিছুই আদ্রিয়ান ও মেঘার আব্বুর জানা। কিন্তু এই মেয়ে নিজের এই অবস্থা যে করবে তার কোনো ধারণাই ছিল না। আদ্রিয়ান চোখ মুখ শক্ত করে মেঘার যেই রুমে চিকিৎসা চলছিল সেখানের এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিল হাত মুষ্টি বদ্ধ করে। চোখ গুলো রক্তিম হয়ে ছিলো। মনে হচ্ছিলো চোখের পলক পড়লেই অশ্রু গুলো গড়িয়ে পড়বে। মেঘার আব্বু খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ছুটে আসে। এরপর আদ্রিয়ান কে এইভাবে দাড়িয়ে আছে দেখে পিছনে গিয়ে দাড়ায়। এরপর কাধে হাত রাখলে আদ্রিয়ান পিছু ফিরে এক পলক তাকে দেখে আবার মেঘার দিকে তাকায়। যে এই মুহূর্তে ঘুমের ইনজেকশনের প্রভাবে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন আছে। ভেতর থেকে একটি দীঘনিঃশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে আবার খুলে তাকাই মেঘার দিকে

“শশুর আব্বু,, আপনার মেয়ে কাজটা ঠিক করেনি। সে তো জানে তার জানটা আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাহলে সে কিভাবে আমাকে মারার জন্য উতলা হয়ে উঠেছে? এই রকম চলতে থাকলে হয়তো একদিন সে আমাকেই হারাবে। তখন বুঝবে যে প্রিয় মানুষের ব্যাথার যন্ত্রণা কতোটুকু ভয়ানক।”

এইসব বলেই আদ্রিয়ান যখন পিছু ফিরে বেঞ্চে বসতে যাবে তখনই মাথাটা চক্কর মারে। এতে পা দুটো এলোমেলো হওয়ার দরুণ পরে যেতে নিলে মেঘার আব্বু তাড়াতাড়ি ধরে ফেলে। কিন্তু ততক্ষণে আদ্রিয়ান তার সেন্স হারায়। এতো প্রেশার ছেলেটা সামলাতে পারলেও এখন তার শরীর টা আর সামলাতে পারলো না। মেঘার আব্বু তাড়াতাড়ি ডক্টর কে ডেকে কেবিনে নিয়ে যায়। এরপর চেক করে দেখে সুগার বিপি দুইটাই বাড়তি। চিন্তার তেমন কোনো কারণ নেই একটু পরই জ্ঞান ফিরবে। আর জ্ঞান ফিরলে কিছু খাইয়ে দেওয়ার জন্য বলে গেলো। আদ্রিয়ান এর জ্ঞান ফিরলে মেঘার আব্বু জোর করে কিছু খাইয়ে দিলো। এরপর আদ্রিয়ান কে রেস্ট করতে বললে সে বলল সে এখন ঠিক আছে। তারপর তাড়াতাড়ি আবার মেঘার কেবিনে গিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখল মেঘার হাতে সেলাইন লাগানো। মেঘার শরীর অতিরিক্ত দুর্বল থাকায় সেলাইন দেওয়া হয়েছে। আদ্রিয়ান আস্তে আস্তে মেঘার কাছে গিয়ে বসলো। এরপর ডান হাত টি আলতো করে ধরে হাতের মোটুই নিয়ে উষ্ণু ঠোঁটের ছোঁয়া দিলো। এরপর মেঘার দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে চোখের তৃষ্ণা মিটাতে লাগলো। মেঘার আব্বু বাইরে থেকে এই দৃশ্য দেখে চোখের অশ্রু মুছলো। তার মেয়েটা ভাগ্য করে এমন একজন সঙ্গী পেয়েছে। মেঘার আব্বু দরজা থেকে সরে গিয়ে অন্য জায়গায় বসলো। এইভাবেই রাত টা পার হলো।

আদ্রিয়ান সম্বতী ফিরলো মেঘার আব্বুর ডাকে।

“আদ্র তুমি আর আমি একই ওয়ার্ল্ড এর। তাই তোমার কাজের জিনিস গুলো আমি বুঝলেও মেঘা মামনি কিন্তু এসবের কিছুই বুঝবে না। কারণ আমি কখনোই তাকে এসব সম্পর্কে অবগত করিনি। কিন্তু হ্যা সেল্ফ প্রটেকশন হিসেবে তাকে কিছু ট্রেনিং করিয়েছি। কিন্তু ফুল ট্রেনিং তার শরীর নিতে পারেনি। যার জন্য সবসময় তার জন্য চিন্তা থাকতো। এরপর যখন তুমি আসলে তখন মনে হলো আমার মেয়ের জন্য উপযুক্ত কাও কে রক্ষা কবজ হিসেবে পেয়েছি। এখন আমার কিছু হলেও চিন্তা নেই। তুমি সব সামলিয়ে নিবে।”

মেঘার আব্বুর এরূপ কথাতে আদ্রিয়ান রাগী দৃষ্টিতে তাকালো তার দিকে। আর এরূপ তাকানোতে আলতাফ মুচকি হাসলো। এরপর আদ্রিয়ান এর মাথায় হাত বুলিয়ে নিজেকে শান্ত করতে বললো। এরপর বেরিয়ে গেলো সেই রুম থেকে। আদ্রিয়ান নিজেকে কিছুক্ষন সামলালো। এরপর সেও বের হয়ে গেলো। মেঘার ওষুধ খাওয়ার সময় হয়ে গেছে।

__________________

আদ্রিয়ান খাবারের ট্রে নিয়ে রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিলো। এরপর খাবারের ট্রে মিনি টেবিলে রেখে মেঘার কাছে গিয়ে বসলো। শরীর আগে থেকে শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচে কালো দাগ পড়াতে মুখের অবস্থা কেমন যেনো মলিনতা ধারণ করেছে। আদ্রিয়ান মেঘার পাশে বসে ঘন একটি নিশ্বাস ফেললো। এরপর মেঘার মাথায় হাত বুলিয়ে আস্তে করে ডাকতে লাগলো

“স্নিগ্ধ পরী, এই পরী,, অনেক ঘুমিয়েছো তো। এখন উঠো তো সোনা। পরী,,”

আদ্রিয়ান এর আলতো স্পর্শকাতর ডাকে মেঘার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় ধীরে ধীরে সজাগ হলো। এরপর চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে আদ্রিয়ান কে ঝাপসা চোখে দেখলো। শরীর দূর্বল থাকায় আবার চোখ টা বন্ধ করে ফেললো। এরপর আবার যখন ধীরে চোখ খুললো তখন এক অস্বাভাবিক কাণ্ড ঘটলো তার সাথে। কি হয়েছে বুঝার জন্য কয়েক সেকেন্ড লাগলো। কিন্তু যখন বুঝতে পারল তখন আদ্রিয়ান কে সরানোর ব্যার্থ চেষ্টা করলো। কিন্তু মেঘার দুর্বল হাতের আক্রমণে আদ্রিয়ান কে সরাতে তো পারলো না উল্টো আদ্রিয়ান আরও গভীর ভাবে ছুঁতে লাগলো। আর সেই ছোঁয়ার মধ্যেই মেঘা হার মেনে তার সাথে রেসপন্স করতে লাগলো। সব মান অভিমান ভেঙ্গে গেলো সেই বৈধ প্রণয়াসক্ত স্পর্শে।

দীর্ঘ ক্ষণের আলিঙ্গন শেষ হলে মেঘা কান্না করতে লাগলো আদ্রিয়ান এর বুকে। চোখের অশ্রু যুগল বেয়ে পড়তে লাগলো আদ্রিয়ান এর লোমশ বুকে। এতে আদ্রিয়ান মেঘাকে কাদতে দিলো। কারণ একটু বেশীই কষ্ট দিয়ে ফেলেছে এই ছোট্ট জানটা কে।

“কি ব্যাপার জান। এখন তো কান্না করার মতো কিছুই করিনি। যখন কান্না করার কথা ছিল তখন তো নিজেকে সামলেছো। এখন তো ব্যথা পাওয়ার মতো কিছুই করিনি। তাহলে এখন কান্না করছো কোন কারণে সোনা?”

আদ্রিয়ান এর এরূপ কথা বার্তায় ভীষণ লজ্জা পেলো মেঘা। এতে আদ্রিয়ান বুকে চোখ মুখ ঢেকে

“ভীষণ অসভ্য আপনি!”

“যাক বাবা আমি আর কি অসভ্য তামো করলাম? আর বউয়ের কাছে অসভ্য না হলে কি জাতি আমাকে এই সমাজে রাখবে? উহু একদম রাখবে না!”

#চলবে_কি?

#নেশাময়_ভালোবাসার_আসক্তি
#পর্ব -৩৪(প্রথম পরিচ্ছেদ)
#নীলাম্বরী_সেন_রাধিকা

(কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদিও পোস্ট করেন তারা লেখিকার নাম উল্লেখ করে পোস্ট করবেন)

আজ প্রায় এক সপ্তাহ হলো মেঘার এইস.এস.সি এক্সাম শেষ হয়েছে। মুটামুটি ভালই এক্সাম দিয়েছে। অবশ্য এতে আদ্রিয়ান এর পরিশ্রম ছিলো প্রচুর। খুনসুটি সংসারে অনেক গুলো মাস চোখের পলকেই কেটে গেলো। আজ আদ্রিয়ান এর জন্মদিন। সেই উপলক্ষে মেঘা আদ্রিয়ান এর পছন্দের রেড ভেলভেট কেক তৈরি করছে তাও নিজ হাতে। সাথে দাদিমাও আছে হেল্প করার জন্য। কিন্তু মেঘা কোনো মতেই দাদিমা কে হেল্প করতে দিচ্ছে না। সে নাকি একাই সব করবে। কেক যখন তৈরি হলো তখন তা ডিপে রেখে রান্নার কাজে মনোযোগ হলো। মেঘা যখন মাছের স্টু অর্ধ রান্নার মাঝে যখন করাই এর ঢাকনা খুললো সাথে সাথে মাছের ঘ্রাণ টা তার নাসিকা রন্দ্রে গিয়ে পেট গুলিয়ে বমি চলে আসলো। সাথে মুখে হাত দিয়ে বেসিনে গিয়ে বমি করে দিলো। কিছুক্ষন বমি করে মুখ মুছে পিছনে ফিরে দেখল কেউ আছে কিনা। পুরো কিচেন খালি থাকায় সস্থির নিশ্বাস ফেললো। দাদিমা এতক্ষণ এখানে থেকে হাপিয়ে উঠে ছিলো। তাই নিজের ঘরে গিয়ে আপাতত রেস্ট নিচ্ছে। মেঘা তাড়াতাড়ি মাছের স্টু তৈরি করলো টিস্যু নাকের মধ্যে ঢুকিয়ে। এরপর ঘড়ির মধ্যে দেখল আদ্রিয়ান এর আসতে তেমন সময় আর বাকি নেই। তাই তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে গোসল করতে রুমে গেলো। শরীর ঘামে একদম নাজেহাল অবস্থা। আজ মেঘা আদ্রিয়ান এর মন মত সাজবে যা দেখে আদ্রিয়ান হয়তো ভেবেই লজ্জায় মুখ রক্তিম হয়ে গেলো। হঠাৎ করে কিছু মনে পড়াতে তাড়াতাড়ি ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে ফোন নিয়ে আদ্রিয়ান কে একটা মেসেজ দিল। এরপর খুশি খুশি আবার ওয়াশ রুমে ঢুকলো। সময় মতো সব কিছু হলেই হলো। কিছুদিন আগেই আদ্রিয়ান মেঘা কে ফোন কিনে দেই। আর এই ফোন পেয়ে মেঘা প্রচন্ড খুশি হয়। কারণ তার আগের ফোন টা আদ্রিয়ান তাকে ফেরত তো দেই নি। সাথে কোনো ফোন ব্যাবহারও করতে দেইনি। যার পরপ্রেক্ষিতে নতুন ফোন পেয়ে সে ভীষণ খুশি।

_______________________

আদ্রিয়ান মাত্রই বাড়ির সামনে এসেছে। ড্রাইভার যখন আদ্রিয়ান কে ডেকে বললো যে তারা পৌঁছে গেছে। তখন আদ্রিয়ান ফোন থেকে চোখ সরিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখল তারা চলে এসেছে। এরপর ফোনে দিকে দেখল মেঘার একটি ছবি যেটা সে এতক্ষণ ধরে দেখছিল। মেঘার মেসেজ সে কিছুক্ষন আগেই দেখে। সেখানে আদ্রিয়ান কে জরুরি ভাবে ডাকা হয়েছে। ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং ছিলো যেটা ক্যান্সেল করে তাড়াতাড়ি চলে এসেছে। গাড়ির দরজা একজন গার্ড এসে খুলে দেই। আদ্রিয়ান বের হয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ির ভেতরে ঢুকে। এখন রাতের প্রায় নয়টা। বাড়িতে ঢুকে দেখে বাড়িটা কেমন নিরব হয়ে আছে। সে অন্য দিকে না তাকিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে গেল। এরপর যখন রুমে ঢুকলো তখন দেখল রুম পুরোটা খালি। চারপাশে খুঁজেও যখন মেঘার কোনো হদিস পেলো না তখন কপাল কুচকালো। হঠাৎ করে ড্রেসিং টেবিলের মিররের মধ্যে কিছু একটা লাগানো দেখল। সামনে গিয়ে পেপার টা নিয়ে দেখলো মেঘার হাতের কিছু লেখা

“এই যে আদ্র। আপনি কিন্তু দিন দিন বেখায়িয়ালি হয়ে যাচ্ছেন। সেটা কি আপনি জানেন? আর বেখায়ালি করে যে আমার ওই হৃদপিণ্ডে কাপন সৃষ্টি করান সেই খেয়াল কি আছে আপনার? একদম নেই। এই ছোট্ট মেয়েটা আপনার আশায় কতক্ষন বসে ছিল। কিন্তু আসলেন এখন মহারাজা। এখন সেসব কথা বাদ। বেডের উপর দেখেন একটা পাঞ্জাবি রাখা আছে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে তৈরি হয়ে ছাদে চলে আসেন। সময় পনেরো মিনিট কিন্তু। এর বেশি হলে দেখবেন আমি কি করি। লেখা গুলোর শেষে কয়েকটা চোখ গরম করার এমোজি আঁকা ছিলো।”

আদ্রিয়ান মেঘার এরূপ লেখা দেখে মুচকি হাসলো। দিন দিন মেঘা আদ্রিয়ান কে যেভাবে আসক্ত করচে। এতে মনে হয় আদ্রিয়ান একদিন মেঘার মধ্যেই বিলীন হয়ে যাবে। মেয়েটা দিন দিন তার প্রতি এমন ভাবেই আসক্ত হচ্ছে যে আদ্রিয়ান এতে খুশি হওয়ার বদলে প্রচন্ড অবাক হচ্ছে। মেয়েটা মনে হয় আদ্রিয়ান অঙ্গে অঙ্গে একদম মিশে বিলীন হয়ে গেছে। আর এর থেকে ছাড়া পাওয়া প্রচুর কঠিন। সে ছাড়া পেতেও চাইনা। মিশে থাকতে চাই আজীবন। এরপর পত্রটি নিজের কোটের পকেটে রেখে ওয়াসরুমে গেলো গোসল করে তৈরি হতে।

বার মিনিটের মধ্যে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে নিলো। এরপর ছাদে যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হলো। সিড়িতে খুব সুন্দর করে দিয়া বাতি জ্বালানো। প্রত্যেক দিয়ে চারিপাশে গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো। সেসব দিয়া থেকে খুব সুন্দর একটা সুগন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে চারিপাশে। ওইসব দেখতে দেখতেই আদ্রিয়ান ছাদে পৌঁছে গেলো। ছাদে পৌঁছাতেই দেখলো ছাদ টা কালো সাদা সংমিশ্রণে সাজানো। এরপর সামনে এগিয়ে দেখলো ছাদে তেমন কেউ নেই। হঠাৎ করে কিছুর আওয়াজ হলো সাইডে তাকিয়ে দেখলো একটি বড় পর্দা যাতে দৃশ্যমান হচ্ছে আদ্রিয়ান এর কিছু ছবি। যখন ছবি গুলো দৃশ্যমান হচ্ছিল তখন স্লো মোশনে মিউজিক অন করা হলো। সাথে মাইক নিয়ে কেউ পর্দার পিছনে দাড়ালো।

Kya khub rabne Kiya
Bin man ge itna diya
Barna hain milta kaha
Hum kafiro ko Khuda

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,(নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)

মেঘার গান এতক্ষণ মুগ্ধ হয়ে আদ্রিয়ান শুনছিল। আর গানের তালে তালে পর্দায় আদ্রিয়ান এর পরিবার আর মেঘার সাথে তোলা অনেক ছবি প্রকাশ পেয়েছে। সাথে ছিলো কিছু সুন্দর সুন্দর মোমেন্ট এর ছবি। এরপর মেঘা গান শেষ করে আদ্রিয়ান এর কাছাকাছি আসলো। মেঘা আজ আদ্রিয়ান এর সাথে মিলিয়ে কালো ঝরঝেটের শাড়ি পরেছে। সাথে চুল গুলো সুন্দর করে খোঁপা করা। আর হালকা মুখে প্রসাধনী দিয়ে সাজ। এটাই যেনো খুবই সুন্দর লাগছে। আদ্রিয়ানো আজ মেঘার সাথে মিলিয়ে পাঞ্জাবি পড়েছে। এসব মেঘাই পছন্দ করে অনিয়েছে। মেঘা আদ্রিয়ান এর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আদ্রিয়ান কে একটু নিচু হয়ে বললো। আদ্রিয়ানো মেঘার কথা মত নিচু হলে মেঘা

“শুভ জন্মদিন আমার প্রিয় প্রেমিকপুরুষ।”

#চলবে_কি?

#নেশাময়_ভালোবাসার_আসক্তি
#পর্ব -৩৪(দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)
#নীলাম্বরী_সেন_রাধিকা

(কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদিও পোস্ট করেন লেখিকার নাম উল্লেখ করে পোস্ট করবেন)

“শুভ জন্মদিন আমার প্রিয় প্রেমিক পুরুষ”

মেঘার এরূপ উইশে আদ্রিয়ান এর মন হঠাৎ করেই পুলকিত হলো। মেঘা আদ্রিয়ান এর মাথার দুই পাশে হাত দিয়ে মেঘার দিকে একটু নিচু করলো। এরপর একটু উপর হয়ে আদ্রিয়ান কপালে উষ্ণ ঠোঁটের স্নিগ্ধ পরশ দিলো। আদ্রিয়ান চোখ বন্ধ করে প্রেয়সীর পরশ উপভুগ করলো। এরপর আদ্রিয়ান যখন চোখ খুলে তখন দেখে মেঘা সামনে দাড়িয়ে মুচকি হেসে আকাশে তাকাতে বললো। আদ্রিয়ান যখন আকাশের দিকে তাকালো তখন অনেক বাজি আকাশে মনোরম ভাবে ঝলকাতে লাগলো। আর যখন সেগুলো এক সাথে মিলিত হলো তখন সেখানে কিছু ইংলিশ ওয়ার্ড দৃশ্যমান হলো। যখন সব গুলো ওয়ার্ড স্পষ্ট হলো তখন সেখানে “হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার হাসব্যান্ড” লিখা গুলো দৃশ্যমান হলো। আদ্রিয়ান অবাক নয়নে সব কিছু দেখছে। এরপর হঠাৎ করেই ছাদে বাজি ফোটানোর মতো আওয়াজ হলো। আওয়াজ অনুসরণ করতে গেলে দেখতে পেলো সবাই একসাথে মিলিত হয়ে আদ্রিয়ান কে বার্থডে উইশ করলো। এরপর একে একে সবার সাথে মিলিত হয়ে মেঘার বানানো কেক করলো আদ্রিয়ান। বাবা মা মারা যাওয়ার পর থেকে আদ্রিয়ান কোনো সময় নিজের জন্মদিন সেলিব্রেট করেনি। কখনো বাড়ির কেউ সেলিব্রেট করতে চাইলে আদ্রিয়ান এক ধমক দিয়ে সবাই কে বারণ করে দিতো। এরপর থেকে আর কখনো কেউ সাহস করেনি জন্মদিনের আয়োজন করার।

আর এসব কিছু মেঘা শুনেছে দাদীমার থেকে। তাই সে জিদ ধরেছিল যে এইবার আদ্রিয়ান এর জন্মদিন সে নিজে আয়োজন করবে। বকা দিলে দিবে তাতে কি। এসব এখন তার জন্য কিছুই না। এই কয়েক মাসে বকার উপরই ছিলো। কিন্তু তবুও আদ্রিয়ান যে যতেষ্ট ভয় পাই। আজ যদি কিছু বলেও ভয় পাবে না সে। পেলেও ভিতরে ভিতরে রাখবে বাইরে প্রকাশ করবেই না। কিন্তু সবাই কে অবাক করে দিয়ে আদ্রিয়ান সবার সাথে সাভাবিক ভাবে সেলিব্রেশন করছে। তার মানে মেঘার কাজে রাগ করেনি। এসব ভাবছিল আর সবার জন্য কোল্ড ড্রিঙ্কস সাজাচ্ছিল। আদ্রিয়ান আপাতত ছাদের কর্নারে গিয়ে নিশির হাসব্যান্ড এর সাথে কথা বলছে। কিন্তু তার চোখ সব সময় মেঘার দিকেই ফলো করছে। মেঘার দিকে তাকিয়ে দেখলো মেঘার চোখ মুখ কেমন ক্লান্ত ক্লান্ত লাগছে। তাই আদ্রিয়ান যখন মেঘার কাছে যেতে নিবে তখন তার একটা কল আসে। কল টা গুরত্বপূর্ণ দেখে মেঘার দিকে না গিয়ে অন্য দিকে গিয়ে কথা বলতে লাগলো।

এইদিকে মেঘা আদ্রিয়ান কে জুস দিতে এসে দেখে আদ্রিয়ান কোনো দিকে নেই তাই সর্বাত্র যখন খুঁজে পেলো না তখন দেখলো আদ্রিয়ান গাছের সাইডে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলছে। হয়তো কোনো ইম্পর্ট্যান্ট কোনো কল এসেছে। তাই সে আর সেই দিকে না গিয়ে নিশি আর তন্নীর সাথে আড্ডায় যোগ দিলো। সাথে দাদিমাও ছিলো। রাত তখন বারোটা একে একে সবাই ঘুমানোর জন্য নিচে নামতে লাগল। মেঘাও যখন ছাদের দরজার দিকে যাবে তখনই একটি হাত তাকে টেনে দেওয়ালের কাছে মিশিয়ে নিলো। হঠাৎ এমন হওয়াতে মেঘা খুব ভয় পেলো। কিন্তু ব্যাক্তি টিকে তা বুঝতে বেশিক্ষণ সময় লাগলো না। কিন্তু হঠাৎ এভাবে টেনে নেওয়ার কি হলো। এই লোকটা একটু বেশি বেশি করে। মেঘা চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে দেখলো আদ্রিয়ান মোহনীয় দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। এই তাকানোতে মেঘার হৃদপিণ্ডে কেমন একটা অনুভুতি হতে লাগলো। আদ্রিয়ান এই দৃষ্টিতে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারে না। তাই মেঘা দৃষ্টি নিচের দিকে করে নিলো। আদ্রিয়ান মেঘার সরল দৃষ্টি গুলো উপভোগ করলো। এরপর মেঘার থুতনিতে ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে

“নিজেকে এখন পৃথিবীর সর্বোচ্চ সুখী ব্যাক্তি মনে হয় , স্নিগ্ধ পরি। জীবনের এতো গুলো বসন্ত নিলাসাই কেটেছে। কিন্তু যখন থেকে তুমিময় বসন্ত প্রকট হয়েছো। তখন থেকে প্রত্যেক সায়ানঃহ প্রহর গুলো তাল মিলিয়ে তুমিমই বসন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। কি এমন আছে তোমার মধ্যে বলোতো? যেই বসন্তের ছোঁয়া গভীর থেকে গভীরে যাচ্ছে?”

আদ্রিয়ান এরূপ কথাতে মেঘার চোখে অশ্রু চলে আসলো। আদ্রিয়ান তাকে এতটা স্পেশাল করছে প্রতি মুহূর্তে যে মাঝে মাঝে মনে হয় মেঘার ভালোবাসা কম পড়ছে আদ্রিয়ান এর জন্য। আরো বেশি কিছু দিতে চাই সে আদ্রিয়ান কে। সে সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করেও কিন্তু তবুও মনে হয় কোনো কিছু কমতি রয়ে গেছে।

“আদ্র একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?”

মেঘার কথাই আদ্রিয়ান মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল।

“এতো কেনো ভালোবাসেন আমায়? কেনো এতো আসক্ত হলেন আমার প্রতি? আমি যে এতটা সুখ পাওয়ার যোগ্য না! কেনো এতো বেকুল আপনি আমার প্রতি? বলুন আদ্র?”

মেঘা আদ্রিয়ান এর গালে হাত দিয়ে অস্রু যুক্ত চোখে উক্ত প্রশ্ন গুলো করলো। আদ্রিয়ান মেঘার এরূপ কথাই মুচকি হেসে বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে অশ্রু গুলো মুছে দিলো। এরপর মেঘার চোখের পাতায় শুষ্ক ঠোঁটের ছোঁয়া দিলো।

“এই প্রশ্ন গুলোর বিশ্লেষণ দেওয়া যে বড্ড কঠিন স্নিগ্ধ পরি। ভালোবাসা যে প্রকাশের বিষয় না। ভালোবাসি বললেই তো আর ভালোবাসা হয়না তাইনা? তাই কখনোই এসব প্রকাশ করে ভালোবাসা কে নিচু করবো না। কিন্তু প্রতিটি কর্ম কাণ্ডে বোঝাব যে কতটা গভীর এই ভালোবাসার অনুভূতি গুলো। যতো দিন যাবে তার গভীরতা ধীরে ধীরে বাড়বে। বাড়বে তোমার প্রতি আমার আশক্তিময় ভালোবাসা। কিন্তু প্রকাশ্যে নয়। আর তোমাকে পাওয়া হচ্ছে আমার শ্রেষ্ঠ তম সুখ। যা আমি প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে অন্তরালে মিশে যাচ্ছি। তাই নিজেকে কখনো মূল্যহীন ভাববে না। কারণ তুমি পুরোটাই একটা মানুষের জন্য খুবই মূল্যবান। আর সে মানুষটা হলো তোমার অর্ধাঙ্গ। তাই কখনো নিজেকে গুরুত্বহীন ভাববে না।”

আদ্রিয়ান এর এরূপ কথা শুনে মেঘা আদ্রিয়ান কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আদ্রিয়ানো মেঘাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করলো।

“আজ কিন্তু আমার বার্থডে গিফট হিসেবে তোমাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতে চাই। দেবে কি অনুমতি আমায় নতুন করে আবার তোমাকে ভালোবাসার। তোমার নেশার ছোঁয়ায় আলিঙ্গন করতে দেবে কি আমায় জান?”

মেঘা খুবই লজ্জা পেলো এসব কথা শুনে তাই আদ্রিয়ান এর বুকে হালকা একটা কামড় দিলো। আর এতে আদ্রিয়ান মেঘার সম্মতি পেলো। আদ্রিয়ানো আর দেরি করলো না মেঘাকে কোলে নিয়ে নিল। এরপর ছাদ থেকে নেমে নিজেদের কক্ষে ফিরে গেলো।

#চলবে_কি ?