প্রতিশোধ পর্ব-০১

0
186

#প্রতিশোধ
#শিখা
#পর্ব_১

_____বউ সেজে বসে আছি বাসর ঘরে,বাবার জিদ্দে আজ বিয়েটা হলো তাও অচেনা একটা মানুষের সাথে..

আমি তার চেহারাও দেখিনি, কলেজ থেকে আসার পর বাবা কয়েকটা শপিং ব্যাগ হাতে দিয়ে বললো রেডি হয়ে নে,আজ তোর বিয়ে..

বাবার মুখের উপরে কিছু বলার সাহস নেই আমার,আমি কিছু বললে বাবা মার উপর অত্যাচার করে..

আমি শিখা,সবে মাএ কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম বাবা মার একমাএ মেয়ে.. বাবা আমার দেশের বড় ব্যাবসায়ীদের একজন,বাবা নিজের জীবনে শুধু তার ব্যাবসাকেই ভালোবাসে আজও একটা ডিলের জন্য আমাকে বেঁচে দিছে…

এখন গল্পে ফিরি কেমন..

আমি এটাও জানি না আমার বর কেমন দেখতে চুপচাপ বসে আছি তার অপেক্ষায়। একটু পর কেউ একজন আসে, ঘুমটার হালকা ফাকে দেখে বুঝলাম এটাই আমার স্বামী…

কিন্তু তৎক্ষণায় তার আসল রূপ আমি দেখতে পেলাম, তার সাথে একটি মেয়েও ভিতরে আসলো মেয়েটি একটি মিনি ড্রেস পড়ে আছে, একদম মডেলের মতো
আমার স্বামীর নাম শুভ চৌধুরী..সে ও তার বাবার একমাএ ছেলে

শুভঃ ওই মেয়ে তুই এখান থেকে বের হ, আজকে আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ড এখানে থাকবো তাই না বেবি (মেয়েটিকে কিস করে)

আমি নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারলাম না আমার স্বামী আমার সামনে একটি মেয়েকে কিস করছে।

শুভ: কি বলছি শুনতে পারিস নি তাড়াতাড়ি এখান থেকে বের হ, এটা বলে সামনে থাকা টেবিলে লাথি দিলো

আমি ভয় পেয়ে খাট থেকে নিচে দাঁড়ালাম

আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম আপনি তো আমার স্বামী তাহলে আমি কেন এই ঘর থেকে বের হবো..

শুভ: কিসের স্বামী আমি তোকে আমার বউ মানি না, এখনই আমার রুম থেকে বেরো বলছি, আমি শুধু ডেড এর কথায় তোকে বিয়ে করেছি, আর না হলে তোর মত মেয়েকে এই শুধু চৌধুরী নিজের আশপাশেও আসতে দেয় না..
আর হ্যা এরপর থেকে আমার সামনে আসলে এমন করে মুখ ডেকে আসবি তোর চেহারা আমি দেখতে চাই না…
আমার চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছিলো,শুভর পাশে থাকা মেয়েটি তখনই আমার কাছে আসে এসে, আমার হাত ধরে টেনে আমাকে রুম থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়, আমি গিয়ে ফ্লোরে পরে যাই আর মেয়েটি আমার মুখের সামনে দরজা লাগিয়ে দেয় আমার স্বামীকে রুমে নিয়ে..

আমি ফ্লোরে বসে বসে কান্না করছিলাম, কি করবো বুঝতে পারছিলাম না

দরজার পাশে বসে থাকি কখন যে চোখ লেগে যায় তা জানি না, সকালে একটা চাকর এসে আমাকে ঘুম থেকে তুলে

ময়না: ছোট ম্যাডাম আপনি এমনি ঘুমাইতেছেন কেন?

ময়নার কথা শুনে আমি উঠে দাঁড়াই।ওর চেহারা খুব মায়াবী গায়ের রং টা একটু ময়লা,দেখে মনে হচ্ছে গ্রাম থেকে সবে মাএ এসেছে..

আমিঃ তুমি ছাড়া আমাকে আর কেউ দেখেছে এভাবে..?

ময়না: না ম্যাডাম বাকি সবাই তো নিচে আপনাগো ডাকতে কইছে..

আমি: আচ্ছা তুমি যাও আমি একটু পর আসছি

ময়না চলে যেতেই আমি দরজায় টোকা দেই অনেকবার টোকা দেওয়ার পর শুভ দরজা খুলে, খুলেই আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়

আমার চোখে পানি চলে আসে আমি আমার গাল দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি

শুভঃ তোকে না বলছি আমার সামনে আসবি না, তোকে আমি দেখতে চাই না, এত সকালে আমাকে ডাকতেছিস কেন?(রাগে চিল্লানী দিয়ে)

আমিঃসবাই নিচে ডাকছে আমাদেরকে আর আমার কাপড় চোপড় সব আপনার রুমে যদি একটু দিতেন(কাপা কাপা গলায়)

শুভ: তোকে কে বলেছে তোর কাপড় চোপড়া আমার রুমে রাখতে আর তুই কাপড়-চোপড় পড়ে যাবি কি না, এটা তোর বিষয়! আমাকে এত সকালে ঘুম থেকে উঠালি কেন? (চিল্লানী দিয়ে)আমার দুই হাত চেপে শুভ কথাটি বললো…

আমি ব্যাথায় কুকরে উঠলাম

শুভ রাগে ভিতরে চলে গেল আমি তার পিছন পিছন গিয়ে আমার ব্যাগ নিয়ে থেকে কাপড় বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম..

ওয়াশরুমে গিয়ে কান্না করতে করতে শাওয়ার সারি,আয়নার সামনে দাড়িয়ে আছি,গালে আঙুলের ছাপ পরে গেছে,মুখ টাও দেখেনি আমার স্বামী আমার..

আমি একটা শাড়ী পরে, একটু উঁকি দিয়ে বাহিরে তাকাই,শুভ আবার ঘুমিয়ে গেছে আমি তাড়াতাড়ি বাহিরে চলে যাই…

খাবার টেবিলে সবাই অপেক্ষা করছিলো,যেতেই শ্বাশুড়ী আমাকে তার পাশে বসায়..

রহিমা চৌধুরীঃ তুমি ঠিক আছো মা?(আমার হাত ধরে)

আমিঃ হ্যা আন্টি..

রহিমা চৌধুরীঃ কিসের আন্টি মা বলবে..?

তখনি শুভ নিচে নামে,আমি তাড়াতাড়ি মুখ ডেকে ফেলি..

শুভ একবার তাকিয়ে চলে যেতেছিলো…

মিরাজ চৌধুরীঃ শুভ এখন তুই কই যাস,বউ মা কে নিয়ে ওর বাপের বাড়ী যাবি তুই..

শুভঃ নো ডেড আমি এসব পারবো না,আমার অনেক কাজ আছে..

মিরাজ চৌধুরীঃ আজকে কোন কাজ নেই, চুপচাপ যা বলছি করো..

শুভ রাগে আমার দিকে তাকায়,আমি ভয়ে ডুক গিলি..

শুভঃ আমি গাড়িতে ওয়েট করছি(এটা বলে বের হয়ে যায়)

রহিমা চৌধুরীঃ খেয়ে যা তুই..

শুভ কিছু না বলে বেরিয়ে যায়…

আমি নাস্তা সেরে কাপড় গুছিয়ে বের হই, আমার শাশুড়ি আমাকে গাড়ি পর্যন্ত ছাড়তে আসে অনেক সাহস নিয়ে আমি গাড়ীতে বসি, আমি বসতেই শুভ গাড়ী স্টার্ট দেয়..

একটু দূর যেতেই শুভ গাড়ি থামায় আমি ভয় পেয়ে যাই

শুভ: দেখ আমার পরিবার আর তোর পরিবারের সামনে তুই কিছু বলবি না, কি বলছি শুনছত( চিল্লানি দিয়ে)

আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে হ্যাঁ বলি

এরপর শুভ ফুল স্পিডে গাড়ি চালায় আমি ভয় পেয়ে বারবার বলি আসে চালাতে, যতবার আসতে বলছিলাম শুধু আরো স্পিড বাড়াচ্ছিল…

…চলবে..