প্রেমদণ্ড পর্ব-০৩

0
169

#প্রেমদণ্ড (০৩)💚

বিছানার ওপর একগাদা শপিং ব‍্যাগ। সবটাতেই কিছু না কিছু আছে। মুশফিকা উৎফুল্ল চিত্তে এক এক করে অনুজাকে সব খুলে দেখাচ্ছে। অনুজা বিরস বদনে চুপটি করে বিছানার এক কোণায় বসে আছে। ব‍্যাগগুলোর পাঁচটাতে সুতি থ্রি পিস। একটাতে দুটো আবায়া। আরেকটাতে দুটো শাড়ি। আর শেষের ব‍্যাগ দুটোতে দু জোড়া পায়ের জুতা। এক এক করে অনুজাকে বুঝিয়ে দিচ্ছিল মুশফিকা। সে সকালবেলায় ব্রেকফাস্ট সেরে ইজহানকে নিয়ে বেড়িয়েছিল শপিংয়ের উদ্দেশ্য। অনুজা গতকাল থেকে এক শাড়ি পড়ে আছে। ওদের বাসা থেকে জামাকাপড় না এনে নতুন বউয়ের জন্য নতুন পোশাক কিনে আনাটাই সে উত্তম মনে করেছে।

মুশফিকা অনুজার উদ্দেশ্য বলল, “পছন্দ হয়েছে অনুজা? নিজের পছন্দে নিয়ে এলাম। এরপর থেকে তুমি পছন্দ করে কিনে নিও কেমন!”

অনুজা প্রতিত্তোরে শুধু মাথা দুলালো। অর্থাৎ তার পছন্দ হয়েছে।

হঠাৎ ফাতিমা বেগম এসে বললেন, “হয়েছে দেখানো? দুপুরের খাবার সময় হয়ে এল। এখনো অনুজার গোসল হল না। তুই বকবক পরে করিস। ওকে গোসলে পাঠা।”

মুশফিকা স্বায় জানিয়ে বলল, “হ‍্যাঁ তাই তো। অনুজা এখান থেকে এই লাল রঙা কামিজ সেটটি নিয়ে যাও। তোমাকে ভালো লাগবে। নতুন বউ লাল রঙ না পড়লে চলে?”

অনুজা বিনা বাক‍্যব‍্যায়ে মুশফিকার বেছে দেওেয়া পোশাকটি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো।

মুশফিকা মায়ের উদ্দেশ্যে বলল,
“আম্মা, তাহলে আগামীকাল অনুষ্ঠান সেরে ফেল। ওর দুদিন বাদে পরিক্ষা। পরে তো পরিক্ষা বেধে যাবে। শুধু যাদের না বললেই নয় তাদের নিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করবে। ওদের বিয়ে হয়েছে অনেকেই জানেন না। দেখা গেল ওদের দুজনকে একসাথে দেখে আবার কে কি বলে বসবে।”

ফাতিমা বেগম মেয়ের কথায় সম্মতি জানিয়ে বললেন, ” আচ্ছা।দুদিন বাদে মেয়েটার পরিক্ষা। অথচ গোটা একটা রাত-দিন চলে গেল এখনো বই হাতে বসতে পারলো না। তুই এক কাজ করিস, দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষে ওদের বাসা থেকে বইগুলো নিয়ে আসিস।”

“আচ্ছা আম্মা। তা ইজহান কোথায়? দেখছিনা যে!”

“বাবুকে নিয়ে ছাদে গিয়েছে।”

“ওহ।”

অনুজা বেশ সময় নিয়ে গোসল করল। গতকাল সন্ধা থেকে জীবনের ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে তার ক্ষয়ক্ষতি হিসাবে চেহারাতেও বেশ পরিবর্তন এসেছে। চোখের নিচে হালকা কালো হয়ে গেছে। মুখটাও ফ‍্যাকাশে হয়ে গেছে। অনুজা ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে দেখল মুশফিকা তখনও বসে আছে।

অনুজাকে দেখে মুশফিকা বলে উঠল, “ড্রেসিং টেবিলের বাম কর্ণারের তাকে তোমার সব কসমেটিকস আমি সাজিয়ে রেখেছি। গেলেই পাবে।

অনুজা ছোট্ট করে জবাব দিল, “আচ্ছা।”

গতকালের পর থেকে ইজহান রমিজ উদ্দিনের দিকে চোখে চোখ রাখতে লজ্জা পাচ্ছে। কেমন যেন অস্বস্তি ঘিরে ধরছে তাকে। খাবার টেবিলে যখন পিনপতন নিরাবতা বিরাজ করছে তখনই রমিজ উদ্দিন বলে উঠলেন, “বিকালে আমার সাথে বেড়িও তো ইজহান।”

ইজহান কিছু না বললেও মুশফিকা জিজ্ঞাসা করল, “কোন সমস্যা হয়েছে আব্বা? কোথাও যাবে তোমরা?”

রমিজ উদ্দিন বললেন,”না। সেরকম কিছু না। কিছু কেনাকাটা করার দরকার। তাই যাওয়া প্রয়োজন।”

ইজহান ছোট করে বলল, “আচ্ছা যাব।”
__________________
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পরে অনুজা চুপচাপ বসে ছিল রুমে। হঠাৎ মুশফিকা এসে ব‍্যাগ ভর্তি বইখাতা অনুজার সামনে রাখল। সে এতগুলো বই আনতে গিয়ে হাপিয়ে গিয়েছে। বেড টেবিলের ওপর রাখা জগ থেকে এক গ্লাস পানি ভরে ঢকঢক করে গিলে ফেলল। তারপর অনুজার উদ্দেশ্যে বলল, “একটা দিন তো গেল হেলাফেলা করে। আর সময় নষ্ট করে কাজ নেই। তুমি বরং পড়তে বস। কাল থেকে কোচিংয়ে যাবে। ঠিক আছে?”

“ঠিক আছে। আপু, আম্মু কেমন আছে? অনিসা, আরিশ ওরা ভালো আছে?” মা-ভাইবোনদের কথা বলতেই অনুজার কন্ঠ কেঁপে কেঁপে উঠছিল। একটা দিন অতিবাহিত হতে যাচ্ছে অথচ মা ভাইবোনদের সে দেখেনি।

মুশফিকা অনুজার কাধে হাত রেখে বলল, “সবাই ভালো আছে। ওরা কাল সবাই আসবে তো। কাল ছোট করে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে আম্মা। কাল কিছুটা সময় হয়তো পড়ার সময় পাবে না। আর সময় নষ্ট করে কাজ নেই। তুমি বরং পড়তে বসো। আমি বাবুর কাছে যাচ্ছি।আর হ‍্যাঁ দরজাটা লাগিয়ে দাও।”

“আচ্ছা আপু।”

অনুজা মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করলো। পড়তে পড়তে বিকাল হয়ে গিয়েছে। অনুজা এবার চেয়ার টেবিল ছেড়ে উঠল। একটু হাটাহাটি করা দরকার। কোমর লেগে আসছে। এমন সময় দরকার ওপাশ থেকে মুশফিকার কন্ঠস্বর শোনা গেল।

“অনুজা!”

অনুজা দরজা খুলে দিল। কিন্তু মুশফিকার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠল। মুশফিকার পাশেই দাড়িয়ে আছে অনুজার একমাত্র ব্রেস্টফ্রেন্ড ইসরাত!

অনুজা গিয়ে জড়িয়ে ধরল ইসরাতকে।

মুশফিকা দুই বান্ধবীকে একা ছেড়ে মুচকি হেসে বেড়িয়ে আসল। এখন সময় ওদের। সেখানে তার না থাকাটাই বেটার।

“গতকালও তো কোচিংয়ে দেখা হয়েছিল। ফোনেও কিছু বললি না। বুঝলাম না এক রাতের মধ্যে বিয়ে কি করে হল? শশুর বাড়িতে চলে আসলি!” ইসরাতের একের পর এক প্রশ্নবাক‍্যে অনুজা বলল, “তুই শান্ত হয়ে বোস। বলছি সব।”

“তুই চুপ থাক। একমাত্র বেস্টুর বিয়ে আর আমি কিছুই জানতে পারলাম না! এত নিষ্ঠুর হতে পারলি কি করে? আজ যদি তোর খোঁজে না আসতাম জানতেই পারতাম না মহারানি বিয়ে করে সংসার শুরু করে দিয়েছে।”

অনুজা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, “আমি নিজে কি জানতাম? বিয়ের কিছুক্ষণ আগেও জানতাম না আমার বিয়ে হবে। এক দমকা হাওয়ায় জীবনটা কেমন উল্টেপাল্টে দিল। জানানোর সুযোগ টাই তো পেলাম না। প্লিজ! ভুল বুঝিস না।”

অনুজার কথা শুনে ইসরাত নড়েচড়ে বসল। রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে। সে এমনিতেও থ্রিলার প্রেমি। দুই ভ্রুদ্বয়ের মাঝখানে দুটো ভাজ ফেলে শুধালো, “সবটা বল তো। রহস্য রাখিস না। কি হয়েছিল? আন্টির মন খারাপ দেখেলাম।”

অনুজা ফের দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতে শুরু করল তার জীবনে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সব শুনে ইসরাতের মুখ থমথমে হয়ে গেল। বলল, “লোকের কথায় এভাবে কান দেওেয়া মোটেও উচিত হয়নি। এখন মানুষ এতটা বোকা আছে নাকি? কিন্তু অনুজা ব‍্যপারটা যদি সত্যিই প্রেমের হতো তাহলে কিন্তু তোদের অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়েকে প্রেমদণ্ড হিসাবে আখ্যায়িত করাই যেত। প্রেম করার দায়ে দণ্ডিত দুজন নর-নারী। তা আমাদের দুলু কোথায়?”

“কিজানি কোন চিপায় গিয়ে বসে আছে।”

ইসরাত অনুজার কানে ফিসফিসিয়ে বলল, “তবে যাই বল। বাড়িটা কিন্তু বেশ সুন্দর। এমন কাউকে পেলে আমাকে জানাস। আমি এমনিতেই রাজি হয়ে যাব। বুঝলি সিঙ্গেল জীবন পানসে লাগে রে।”

ইসরাতের মুখ হাসি হাসি ভাব। অনুজা স্বস্তির শ্বাস নিল। যাক বেস্টুর রাগ ভাঙানো গিয়েছে তবে। ইসরাত একমাত্র বেস্টফ্রেন্ড অনুজার। আর অনুজাও ইসরাতের একমাত্র বেস্টফ্রেন্ড। দুজনের বন্ধুত্ব সেই ছোট্ট বেলা থেকে।

কিচেনে মেহমানের জন্য নাস্তা বানাচ্ছিল মুশফিকা। ফাতিমা বেগম বাবুকে নিয়ে তার ভাইয়ের বাসায় গিয়েছেন। রমিজ উদ্দিন, ইজহান কেউই বাসায় নেই। হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল। প‍্যানে নুডলস। আরেক চুলায় দুধ জ্বাল হচ্ছে চায়ের জন্য। যেকোনো সময় দুধ উতলে উঠতে পারে।এ মুহুর্তে এক পাও কিচেন থেকে সরানো যাবে না। অগ‍্যতা মুশফিকা জামিলার মাকে ডেকে বলতেই তিনি গিয়ে দরজা খুলে দিলেন।

দরজার ওপাশের মানুষটাকে দেখে জামিলার মায়ের হাসি প্রসস্ত হলো। পৃথিবীর আরেকটা ভালো মানুষ তার সম্মুখে।ভদ্রলোক নিজেই জিজ্ঞাসা করলেন,
“আসসালামু আলাইকুম। ভালো আছেন খালা?”

“ওয়ালাইকুমুস সালাম। আছি আল্লাহর রহমতে ভালা। আব্বায় ভালো আছেন?”

“জি আলহামদুলিল্লাহ্।”

ভদ্রলোক ড্রয়িং রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে কাউকে না দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “বাড়ির সবাই কোথায়? এত নিরব কেন?”

“আফা, ভাইজান, ইজহান আব্বা বাড়িতে নাই। নতুন বউ তার বান্ধবীর সাথে গফ করে। আর মুশফিকা আম্মায় কিচেনে। কি যেন বানায়।” প্রতিত্তোরে বাড়ির সবার অবস্থান বিশ্লেষন করে জামিলার মা লম্বা শ্বাস নিলেন।

ভদ্রলোক বললেন, “ওহ আচ্ছা বুঝেছি। বাবু কোথায়? ঘুমাচ্ছে নাকি?”

“না। আফা বাবুরে নিয়ে ওনার ভাইয়ের বাসায় গিয়েছেন।”

ভদ্রলোক অস্বস্তি বোধ করছেন। এ মুহুর্তে তার এক দৌড়ে কিচেনে চলে যাওয়া উচিত। কিন্তু জামিলার মায়ের জন্য যেতে পারছেন না। কি থেকে কি ভাববেন। ইতস্তত বোধ করে বললেন, “আচ্ছা আমি তাহলে অপেক্ষা করি। আমি তাহলে যান।”

“আম্মারে খবর দিব?”

“না থাক। আমি অপেক্ষা করছি।”

জামিলার মা ড্রয়িং রুম ছাড়তেই ভদ্রলোক তরিৎ গতিতে উঠে দাড়ালেন। দ্রুত পায়ে হেঁটে কিচেনে ব‍্যস্ত হাতে রান্না করা যুবতী রমনীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন। রমনীর বুঝতে বাকি রইল কার আগমন। অজান্তেই মুখের কোণে এক টুকরো সুখের হাসি ফুটে উঠল।

“আহ! কি করছো? কেউ দেখে ফেললে কি ভাববে? ছাড় তো।” মুশফিকা কপট রাগ দেখিয়ে কথাগুলো বললেও ভদ্রলোকের মধ্যে কোন ভাবান্তর লক্ষ্য করা গেল না। তার পুরুষালি হাতের বাধন আরেকটু শক্ত হল। অর্ধনগ্ন ঘাড়ে মুখ খুজে মোহনীয় কন্ঠে বলে উঠল, “বউ গো! কি নিষ্ঠুর তুমি। গত সাড়ে আট ঘন্টা আমাকে ছেড়ে রয়েছ, অথচ একটাবার খবর পর্যন্ত নিলে না। শালাবাবু বউয়ের কোলে আরামে ঘুমাচ্ছে অথচ আমাকে একা করে তুমি চলে আসলে। এটা কি ঠিক হলো?”

মুশফিকা মুখ ঘুরিয়ে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখল তার মানুষটার মুখটা চুপসে গিয়েছে। মুশফিকা চিন্তিত স্বরে শুধালো, “খাওনি তাই না? এত অবুঝ কেন আহিদ। সকাল, দুপুর নিশ্চয় না খেয়ে ছিলে?”

প্রতিত্তোরে আহিদ অবুঝ বালকের ন‍্যায় বলল, “খাব কেন? তোমাকে ছাড়া কখনও খেয়েছি আমি? দিব‍্যি ছিলে। একটা খোঁজ পর্যন্ত নাওনি।”

মানুষটার ভালোবাসা যেন দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। সেই পাঁচ বছরের পরিণয়। অথচ আহিদের আচরণে মনে হয় নিউলি ম‍্যারিড কাপল। অনুতপ্ততায় ছেয়ে গেল মুশফফিকার শ‍্যামবর্ণের মুখখানা। নরম স্বরে বলল,
“সরি গো! একটু ব‍্যস্ত ছিলাম। বুঝতেই পারছো নতুন বউ বাড়িতে।”

“বিগত সাড়ে আট ঘন্টা আমাকে ছাড়া থেকেছ। দুবেলা খাবার সময় তোমার মায়াময় মুখখানা দেখার থেকে আমাকে বঞ্চিত করেছ। এখন ফটাফট আটশটা চুমু দাও। তোমাকে না দেখে মুখটা দেখ কেমন শুকিয়ে গিয়েছে।”

আহিদের আবদার শুনে মুশফিকার চোখ যেন কোটর থেকে বেড়িয়ে আসবে। অবাক স্বরে বলল,
“আটশটা?”

“অবশ‍্যই। সাড়ে আটঘন্টায় আটশ পঞ্চাশটা হয়। তোমার কথা ভেবে পঞ্চাশটা ছেড়ে দিলাম। এখন কথা না বাড়িয়ে ফটাফট চুমু দাও তো। আমার সহ‍্য হচ্ছে না।”

“চা আর নাস্তাটা দিয়ে আসি। এরপর দিব। ঠিক আছে?”

আহিদ নাছোড়বান্দা। তার এক কথা, “আগে চুমু পরে যাওয়া।”

“চা টা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। প্লিজ বেবি!”

“দাড়াও।” বলেই ফটাফট মুশফিকার পুরো মুখে কমপক্ষে বিশটা চুমু একে দিয়ে তবেই সে ক্ষান্ত হয়েছে।

অন‍্যদিকে মুশফিকা যেন কেঁদেই ফেলে। আহিদ মুশফিকার করুণ মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে পুনরায় আরেকটা চুমু দিয়ে দুষ্টু হেসে বলল, “কাঁদে না ডার্লিং। এটা তোমার একমাত্র জামায়ের ভালোবাসা। বরং শুকরিয়া আদায় করো আমার মত এত ভালো একজন মানুষ পেয়েছ।”

মুশফিকা আর কথা বাড়াল। দ্রুত ট্রে তে নুডলস, চায়ের কাপ, আলুর পাকোড়া সাজিয়ে একপ্রকার দৌড়ে পালিয়ে গেল আহিদের থেকে। কি ভয়ংকর পুরুষ! তার রোমান্টিক অত‍্যাচারে বেচারা মুশফিকার জীবন তেজপাতা হয়ে যাচ্ছে।

ইনশাআল্লাহ চলবে…