#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_১১
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
ওদিকে,
–দোস্ত আমার কিন্তু ভয় হচ্ছে। (রাইমা)
–আরে চাপ নিস না আমি আছি তো। (আফিয়া)
রাইমা আর আফিয়া বাসা থেকে বের হলো।
শীতের দিন বেশ ভালোই কুয়াশা পরেছে।
এই দুই দিন শহরটা কেমন কুয়াশার তলে ঢাকা পরে থাকছে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত।
প্রচন্ড বেগে শীতল হাওয়া ও বইছে।
রাইমা আর আফিয়া হাঁটছে এর মধ্যে কোন রিকশায় উঠলে ওরা শীতে বরফ হয়ে যাবে।
–বেশ শীত না রে রাইমা।
–হুম অনেক শীত।
–তোমায় হাঁটতে তো কেউ বলে নি রাইমা আমি বলেছিলাম দাঁড়িয়ে থাকতে বাসার সামনে।
নীলের ঝাঁঝালো কন্ঠ শুনে রাইমা স্টাচু হয়ে গেল।
–রাইমা ইনি কি উনি(আস্তে করে আফিয়া)
–হু (আস্তে)
–আমি কিছু প্রশ্ন করেছি মনে হয়।
রাইমা এবার ভয় থেকে রেগে গেল।
–আপনি আমার কি হন?কিসের জন্য আমি আপনার কথা শুনবো? কি করানে?কি হন টা কি আপনি আমার? বলুন আমাকে।
সমস্যা কি আপনার আমার পিছু ছাড়া যায় না নাকি। সমস্যা টা কি বলেন আমাকে।
কি করলে আপনি আমাকে মুক্ত দিবেন বলুন।
আমার বাবা অসুস্থ মানুষ আমার আপুর বিয়ে হয়ে গেছে আমি একা থাকি বলে আপনি ভেবেছেন ইচ্ছে মতো পুতুল নাচাবো বলুন সমস্যা কি বলুন আমাকে।
(এক নিশ্বাসে কথাটা বলে ফেললো রাইমা)
নীল মুচকি হেঁসে রাইমার দিকে এক বোতল পানি এগিয়ে দিলো।
–পানি দিয়ে কি করবো আমি।
–খাবে এই যে এতো গুলো কথা বললে গলা শুকিয়ে যায় নি।
–আমি
–থাক আর রেগো না তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দিবো আমি চলো এখন আফিয়া তুমিও চলো।
নীল ওদের জোরপূর্বক কোচিং পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
কোচিং এ এসে,
–কিরে আফিয়া তুই তো বললি সব সামলে নিবো কাজের বেলায় তো কিছু করলি না।
–কি করবো তুই ওনাকে দেখছিস ভালো করে।
লম্বা ফর্সা অসাধারণ দেখতে।
ব্লাক সার্ট এর উপরে জেকেট। দেখে তো আমার হার্টবিট থমকে গেছিলো রে।
–আফিয়া(দাঁতে দাঁত চেপে)
–স্যার আসছে।
–তোকে আমি বাইরে গিয়ে দেখছি।
।
।
।
–পৃথুলা।
–জি মা।
–আর কতো করবি এবার খেতে আয়।
–এক মিনিট মা এটা শেষ আমি আসছি।
সব খাবার নিয়ে এলাম টেবিলে।
–বাবা গুড মর্নিং।
–গুড মর্নিং পৃথুলা মা।
কি কি রান্না করেছিস বল তো তোর মায়ের রান্না খেতে খেতে আমি এখন বোর।
–কি বললে প্রেয়নের আব্বু।
–তুমি চেতো কেন আমি তো বৌ মার প্রশংসা করছি যাতে তোমার কষ্ট না করা লাগে।
–তাই না।
–হইছে আপনারা থামুন এখন খাবার সময়।
সবাইকে খাবার দিয়ে খেতে বসলাম।
প্রয়ন চুপচাপ খেয়ে উঠে গেল।
হটাৎ এমন চুপচাপ ব্যাবহার করছে কেন বুঝলাম না।
আমিও খাবার শেষ করে উপরে চলে গেলাম।
–কিছু হইছে।
–কার।
–আপনার
–না কি হবে।
–কোন বিষয় নিয়ে চিন্তিত মনে হচ্ছে।
–না তেমন কিছু না আচ্ছা পৃথু তোর থেকে আমি ডকুমেন্টস চেয়েছিলাম ওগুলা।
–হ্যাঁ আমি আসার সময় নিয়ে এসেছিলাম এক মিনিট।
আমি ওগুলা বার করে ওনাকে দিলাম।
–এই যে।
–হুম সব আছে।
–হ্যাঁ বাবার টাকা জমা দেওয়া সব স্লিপ আছে।
–আচ্ছা পৃথু তুই কি জানিস এই জয়গার মালিক কে ছিলো।
–কোন নীল চৌধুরী সম্ভবত।
–হুম ২×২=৪।
–মানে।
–মানে তুই বুঝবি না সেই নীল চৌধুরীর কোন সমস্যা হয় নি এই যে এতো বড়ো একটা ফ্রট গিরি করলো।
–না উনি কে কেউ ওনাকে দেখেন নি ওনার সাথে জড়িত আরো কিছু লোককে ধরা হয়।
আর উনি মেইন মানুষ টা অনেক ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ তাই ওনাকে ধরা হয় নি।
কিন্তু আপনি এগুলা দিয়ে কি করবেন।
–কিছু না এমনি আমি একটু শুই তুই আমার মথাটা একটু টিপে দে পৃথু
–আচ্ছা।
উনি আমার কোলে মাথা দিলেন।
ওনাকে এভাবে দেখতে বেশ ভালো লাগে মনে হয় সময়টা কেন থমকে যাচ্ছে না এভাবে ওনার সাথে আমার জীবন কাটিয়ে দিতে ইচ্ছে করে।
কিন্তু ১ মাসের ৫ দিন কেটে গেছে।
আর মাত্র ২৫ দিন বাকি।
আমি বিলি কেটে দিতে দিতে উনি ঘুমিয়ে গেলেন।
ওনার মাথায় হাত দিয়ে ওনার বুকের উপর কখন আমিও ঘুমিয়ে গেলাম টের পাই নি।
।
।
।
ঘুমের মধ্যে মুখের উপর কারোর চুল টের পেয়ে বিরক্ত বোধ হচ্ছিল প্রেয়নের।
কিন্তু চুলের মিষ্টি ঘ্রাণে আবার ভালোলাগা কাজ করছে।
সব সংকোচ কাটিয়ে প্রেয়ন চোখ টিপটিপ করে মেলে পৃথুলাকে নিজের বুকে আবিষ্কার করে।
বুকের মাঝে ভালোবাসাকে দেখতে পেয়ে এতো ভালোলাগা কাজ করতে পারে কারোী তা নিজের ভালোবাসাকে না দেখলে প্রয়ন বুঝতে পারতো না।
হ্যাঁ প্রেয়ন পৃথুলাকে ভালোবাসে সেই ছোট থেকে৷
কিন্তু কখনো মুখ ফুটে বলে নি পৃথু তোকে খুব ভালোবাসি।
ঘুমন্ত পৃথুলা এতো মায়াবি তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
চলবে,