প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো পর্ব-১৭

0
6714

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_১৭(রহস্য সমাধান)
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

কেটে গেল ৩ দিন এই ৩ দিন পৃথুলা প্রেয়নের সাথে একটা কথাও বলে নি যদি কোন প্রয়োজন হয় তবে চিঠি লিখে সেটা প্রকাশ করে দেয়।
এক দিকে বাবা অসুস্থ, অন্য দিকে বোন, অন্য দিকে প্রেয়ন।
এতো গুলো চাপ পৃথুলার পক্ষে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
প্রচুর কষ্ট হচ্ছে পৃথুলার৷
এক প্রকার ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।
চনচল সভাবের পৃথুলা এক দম চুপচাপ হয়ে গেছে।
আগে থেকে রোগাটে ভাব চলে এসেছে।
চেহারার মাধর্য হারিয়ে গেছে।
পৃথুলা আর আগের মতো হাসে না।
প্রেয়ন এগুলা দেখে প্রতিনিয়ত কষ্টে মরছে কিন্তু করার কিছু নেই।
এটাই নিয়তি।

অন্যদিকে,
রাইমার সভাব ও এক। চুপচাপ হয়ে গেছে।
আগের মতো আর দুষ্টুমি করে না।
না আগের মতো লাফালাফি।
আর না করে আগের মতো পাগলামি।
নীল এগুলা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।
এগুলা তার উপর প্রভাব ফেলে ঠিকি কিন্তু সে এই মুহুর্তে কিছুই করতে পারবে না।



একটি বাংলো বাড়ির ভেতরে একটি টেবিলের এক পাশে বসে আছে প্রেয়ন অন্য পাশে বসে আছে নীল।
চারি দিকে গার্ড।
দুই জনি চুপ আছে।
কিছু সময় চুপচাপ থাকার পর প্রেয়ন বলে উঠলো,
–সো মি.চৌধুরী আপনি বলুন আমার সাথে আপনার শত্রুতা কি? কেন আমার স্ত্রী আর বোনের পিছনে পরে আছেন?
আমার স্ত্রী কে মারার চেষ্টা করে চলেছেন প্রতিনিয়ত।
কেন আমার বোনকে বিয়ে করে মানষিক টর্চার করছেন?
i want answer.
–দিবো সব উত্তর দিবার জন্য ই আপনাকে এখানে ডাকা।
–আমিও শুনবার জন্যই এখানে এসেছি।
–সবি বুঝাবো কিন্তু তার আগে ছোট্ট একটা সর্ত আছে।
–বলুন।
–আপনার সব গার্ড দের বাইরে পাঠান।
–মানে!
–চিন্তা করবেন না আমার গার্ড রাও এখানে থাকবে না।
–ওকে ঠিক আছে।
প্রেয়নের ইসারায় সবাই চলে যায়।
রুমে এখন শুধু নীল আর প্রেয়ন।
–মি.খান বলবো নাকি বড়ো ভাইয়া বলবো।
–আমকে বড়ো ভাই বলার অধিকার আপনার নেই।
–হুম আমি জানি আমার কোন অধিকার নেই এই জন্য তো এতো আয়োজন।
–মানে,
–মানে টা খুবই পরিষ্কার শুরু থেকে বলি,
২০০ একোড় জমি যার মালিক,
নীল চৌধুরী তার থেকে ২০০ কোটি টাকা দিয়ে আমি জমিটা কিনলাম।।
কারন পৃথুলা ভাবি বলি।
ভাবি ই তো পৃথুলা জামান আমার ভাবি এর বাবা আজিজ রায়হান তার জীবনের সমস্ত সম্পদ এই জমিতে থাকা একটা ফ্লাট এর পেছনে ইনভেস্ট করেন।
আমি জানতাম আপনি পৃথুলা আপুকে ভালোবাসেন।
আপু যখন অসহায় হয়ে পরবে তখন আপনি ওনাকে সাহায্য করবেন আর যদি আপনি ওনাকে সাহায্য করেন তবে আমি কনফার্ম আপনি ওনাকে ভালোবাসেন আর আপনি যে দিন ওনাকে সহায্য করবেন তার পরের দিন পৃথুলা আপুর লাশ আপনার বাসার সামনে প্যাকেট করে পাঠিয়ে দিবো।
আমার প্লান যখন এটা তখন আপনি আমার প্লানের উপর পানি দিয়ে ওনাকে বিয়ে করে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন।
আমি হেরে গেলাম। ২০০ কোটি টাকার প্রোপার্টি কিনেও আমার প্লান ঠিক হলো না।
তখন আমি খবর নিয়ে বুঝলাম আপনি আপনার স্ত্রী কে ভালোবাসেন না যদিও এখন বুঝি সবটাই আপনার চালাকি কিন্তু তখন ধরতে পারি নি।
তার পর আমি আপনার বোন মানে রাইমা ওর দিকে ফোকাস করলাম আমি ওর পিছে পিছে ওর দিকে লক্ষ রাখলাম।
চাইছিলাম ওকে মারতে ওকে মারলে হয় তো তোমরা কষ্ট পাবে কিন্তু নিজের অজান্তে আমি ওকে ভালোবসে ফেলি।
ব্যাস এটুকুই আমার সব প্লান ই ফ্লপ হয়ে যায়।
এতো সময় দুহাত ভাজ করে সব গুলো কথা শুনছিলো প্রেয়ন৷
নীলের কথা শেষ হতে সে বললো,
–তারপর এগুলা তুমি কেন করেছো সেটার কি কোন উত্তর আছে।
–অবশ্যই আছে।
তোমরা আমাকে একা ছেড়ে দিয়েছিলে।
তোমার মা বাবা তো আমাও মা বাবা কথাটা কি ভুল?
–না এক দম ঠিক তুমি আমার ছোট ভাই তুমি নীল চৌধুরী না নীল খান।
–হ্যাঁ এই পরিচয় টা আমার থেকে তোমরা কেঁড়ে নিয়েছো আমি কি করে তোমাদের ছেড়ে দিবো৷।
–নীল তোমায় কতো বার বলেছিলাম তোমার থেকে কেউ কিছু কাড়ে নি তুমি হারিয়ে গেছিলে। যখন মা তোমায় খুঁজে পায় মানে ২ বছর আগে তুমি নীল। তোমায় বাসায় আনতে চেয়েছিলো কিন্তু তুমি আসো নি নীল এতে কেনো আমাদের দোষ দেও।
আর তুমি অন্যায় এর সব সীমা অতিক্রম করেছো।
–হা হা আমি কোন সীমা অতিক্রম করি নি ভাই জান আপনারা আমাকে বাদ্ধ করেছেন।
–এটা তোমার ভুল ধারনা৷
–আমার কখনো ভুল ধারনা হয় না।
–তাহলে কি তুমি আজো মানবে না।
আমরা চাইলে এক সাথে থাকতে পারি পরিবার হয়ে।
–আমি চাই না।
–তবে আমার বোনকে ছেড়ে দেও (রেগে)
–কখনো না আমি আমার জীবন কে আপনাকে দিয়ে দিতে পারি না।
–কি চাইছো তুমি নীল কি করলে মুক্তি দিবে শুধু মাত্র তুমি আমার ভাই তাই আজো বেঁচে আছো এই কথা গুলো বলার জন্য।
এমন কিছু করো না আমি যাতে ভুলে যায় তুমি আমার ভাই।
আর একটা কথা
রাইমাকে আমি ফিরিয়ে আনবো সেটা খুব জলদি।
কথাটা বলেই প্রেয়ন চলে এলো।

–সত্যি যদি ভাই মানতে তবে এমন হতো না। আর রাইমাকে আমি কখনোই আমার থেকে আলাদা করবো না।



প্রেয়ন ড্রাইভ করে বাসায় পৌঁছে পৃথুলাকে খুঁজতে থাকে।
রুমে না পেয়ে সারা বাড়ি খুঁজে কোথাও নেই।
তার পর ছাদে গিয়ে দেখে।
হালকা গোলাপি রঙের শাড়ি পরা চুল গুলো ছেড়ে একটি মিষ্টি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
সূর্যের তেজ কমে গেছে চারিদিকে লাল আভা।
এ যেন এক অপরুপ সুন্দরী।
প্রেয়ন কোন কথা না বলেই পৃথুলাকে হটাৎ পাজকোলে করে নেয়।
–আরে কি করছেন সমস্যা কি?
–কিছু না সমস্যা চল আমার সাথে।
চলবে,