#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_২৪[ধামাকা]
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
,
–আমাদের কেও জায়গা দেও মা।
কথাটা বলেই এক জন মহিলার হাত ধরে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো নীল।
প্রেয়ন আর পৃথুলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
কারন মহিলাটা পুরোই তাদের মায়ের মতো দেখতে।
–প্রেয়ন উনি কে?
পৃথুলা নয়লার দিকে হাত দিয়ে প্রশ্ন করলো।
–নীল তুমি কাকে নিয়ে এসেছো আমার বাড়ি ডোকার সাহস তোমায় কে দিয়েছে।
–আব স সেটাই ক কে দ দিয়েছে (তুতলে)
–মা তুমি ভয় পাচ্ছো কেন ওদের দেখে?
এটা নিশ্চিত নীলের কোন চাল। (প্রেয়ন)
–হ্যাঁ আ আমি ত তো তাই ব বলছি।
এই শীতেও ঘেমে গেছে আয়লা।
–মা তুমি ঘামছো কেন আমার জানা মতে এটা তখন হয় যখন মানুষ কোন ভুল করে তুমি তো কোন ভুল করো নি তবে এই শীতে ঘামছো কেন?
–কি যে বলিস বাবা ভ ভুল কি।
এদের বাড়ি থেকে বের কর।
–কেন মা তুমিই তো আমাকে বলেছিলে নীলকে এই বাড়ি নিয়ে আসতে তাহলে আজ কেন এ কথা বলছো?
–হ্যাঁ মা তুমি তো চাইতে আমি তোমার আদর পাই সবাই মিলে এক সাথে এ বাড়িতে থাকি (নীল)
–প্রেয়ন, নীল কি বলছো তোমরা এগুলা আমাকে পরিষ্কার করে বলো(নীল,প্রেয়নের বাবা)
–বাবা পরিষ্কার কথা হলো এই মহিলা আমাদের মা নয় এই মহিলা হলো আমাদের মায়ের জমজ বোন আয়লা। (প্রেয়ন)
–কি বলছিস কি এগুলা।
–হ্যাঁ প্রেয়ন কি বলছো এগুলা।
–ভাই ঠিক বলছে ভাবি আমাদের জীবনের প্রতিটি কষ্ট প্রতিটি খারাপ সময়ের জন্য এক মাত্র দায়ি এই মহিলা।
এই মহিলা আমার মাকে আটকে রেখেছিলো এতো দিন এক অন্ধকার পুরিতে।
এই মহিলা আমাকে ফেলে দিয়ে এসেছিলো।
ওনার প্লান ছিলো আমাকে মাফিয়া বানিয়ে প্রেয়ন ভাই এর জীবন নিবে।। কিন্তু আমার জীবনে আমার পালিত বাবা চলে আসায় সে কাজে সফল হতে পারে নি।
তার জন্য প্রতিনিয়ত আমাকে ভুল বুঝাতো ভাই আর বাবার নামে।
আমি বিষাক্ত হয়ে গেছিলাম।
এই মহিলার বিষে।
–শুধু তাই নয় তোমায় গুলিও এই মহিলা করেছে।
আমাদের জীবনের প্রতিটি খারাপ সময় এর জন্য এসেছে। আমার ভাইকে আমার থেকে দুরে রেখেছে তোমায় মারার চেষ্টা করেছে। আমার আসল মাকে প্রতিদিন কষ্ট দিছে।
জীবনের সমস্ত ঝড় এই মহিলার জন্য এসেছে।
–বাবা।
নীল আর প্রেয়ন নয়লা রহমানের মুখে বাবা ডাক শুনে ছলছল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,
–তুমি চিন্তা করো না মা আমরা সবাই আজ তোমার সাথে আছি।
–আয়লা তুই আমার স্ত্রী এর জায়গায় এতো দিন ছিলি।
কিন্তু কেন আমার সংসার টাকে এভাবে ভেঙে তোর কি লাভ হলো।
–হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ আমি করেছি সব আমি এই আয়লা করেছি সব।
কেন জানো ভালোবাসতাম তোমায়।
কখনো আমার ভালোবাসার মূল্য দেও নি তুমি কখনো না সব সময় আমাকে বোনের চোখে দেখতে আমি তো আমার বোনের মতো দেখতে ছিলাম কিন্তু তাও তুমি আমাকে দুরে সরিয়ে দিতে।
সর্বদা এতো অবহেলা সহ্য করে তাও ছিলাম কিন্তু নয়লার কোলে প্রেয়ন আসার পর তুমি যখন আমাকে এই বাড়ি থেকে বের করে দিলে তখন আমি পন করেছিলাম এই ছেলে আর তোমাদের সংসার কখনো আমি ভালো থাকতে দিবো না।
–তুই আমার বাচ্চাদের মারতে চেয়েছিলি বলেই তোকে বের করে দিয়েছিলাম।
–হ্যাঁ চেয়েছিলাম মারতে আমার সহ্য হতো না তাই মারতে চেয়েছিলাম।
বিশ্বাস করো আমি তোমায় ভালোবাসি আবির।
–নীল প্রেয়ন এই মহিলার জন্য কি ব্যাবস্থা করেছিস।। —
–মেন্টাল হসপিটাল।
উনি মানসিক ভাবে অসুস্থ। (প্রেয়ন)
–না আমি অসুস্থ নয় আমি সত্যি তোমায় ভালোবাসি।
–নার্স
নার্স এসে আয়লা কে নিয়ে যায়।
–আল্লাহ এতো কিছু কি করে?
কথাটা বলেই আমি বসে পরলাম।
–খারাপ লাগছে তোমার।
প্রেয়ন উত্তেজিত হয়ে বললো,
–না আমি ঠিক আছি। রাইমা।
–আমি এখানে।
রাইমা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে।
–আপু আই মিস উ।
–আই মিস উ টু৷।
–আমি এতে বছর পর নিজের পরিবার কে আবার এক সাথে দেখতে পাবো তা কখনো ভাবি নি। (নায়লা)
–তোমার ছেলেরা থাকতে তোমার কোন ভয় নেই মা।
সবাই নায়লা কে জড়িয়ে ধরে।
,
রাতে,
খাবার শেষ করে সবাই এক জায়গায় বসেছে,
–আমরা আজ থেকে সবাই এক জায়গায় থাকবো (নীল)
–হ্যাঁ পৃথু বাবাকেও আনার ব্যাবস্থা চলছে সাথে নীলের বাবাকেও।
–আল্লাহ আমাদের এতো বড়ো পরিবার হবে ভেবেই খুশিতে নাচতে ইচ্ছে হচ্ছে (রাইমা)
–হ্যাঁ তুমিতো সুন্দর নাচতে পারো (পৃথুলা)
— ডোন্ট আন্ডারেস্টিমেট দ্যি পাওয়ার অফ মাই ড্যান্স। (ভাব নিয়ে)
–ওরে বাবা কে তুমি?
–তোর বোন(দাত বের করে)
–হ্যাঁ হইছে নেও।
–তোমারা দু বোন থামো ও দিকে দেখো কারা এসেছে।
সবাই মেইন ডোরের দিকে তাকিয়ে দেখে,
আজিজ রায়হান আর বাবর চৌধুরী (নীলেী পালিত বাবা)
আসছেন।
সবাই খুশিতে উঠে দাঁড়ায়।
আজিজ রায়হান হাঁটতে পারেন না হুইলচেয়ারে বসে আছেন।
–বাবা কেমন আছো?
বাবার কাছে গেলাম আমি আর রাইমা।
বাবার চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে।
নিজের হাতটা আমাদের মাথায় রাখলেন।
কতো দিন পর বাবাকে দেখছি।।
ভিশন মিস করছিলাম।
আজ আমাদের পরিবার কানায় কানায় পূর্ণ।
–এই খুশির সময় আমি একটা খুশির খবর শোনাতে চাই (নয়লা)
–কি খবর। (নীল)
–নীল💖রাইমা এবং প্রেয়ন💖পৃথুলার পুনোরায় বিবাহো হইবে।
–বাহ বেশ বলেছেন আপনি (বাবর চৌধুরী)
–হ্যাঁ পুনোরায় খুশিতে মেতে উঠবে খান বাড়ি।
আমার ছেলে আর ছেলে বৌ দের খুশিতে আমরাও খুশি হবো।
আমার মৃত্যুর আগে এ টুকুই যথেষ্ট।
–মা মৃত্যুর কথা বলবেন না আমরা সবাই আপনাকে অনেক ভালোবাসি। (রাইমা)
কিছু সময় আমরা গল্প করে রুমে চলে এলাম।
।
প্রেয়ন, পৃথুলার রুমে,
–প্রেয়ন জি কি করছেন?
–বিছনা গুছাই।
–আমি গুছিয়ে দি।
–না কোন দরকার নেই তুমি রেস্ট নেও।
–উফ সব সময় তো রেস্ট নিচ্ছি।
–কেন কাজের দরকার নাকি তোমার বৌ (বাকা হেসে)
–দেখুন আপনি না উল্টো পাল্টা বলবেন না এক দম। একটা কথা বলুন?
–আমি উল্টো পাল্টা কই বললাম।কি বলো।
–আমাকে এক মাসের জন্য কেন বিয়ে করেছিলেন,?
–ওটা সারা জীবনের সাইন ছিলো কিন্তু তোমায় বলেছিলাম ১ মাস করান নীল জানতে পারলে তোমায় আমি ভালোবাসি তাহলে তোমায় মেরে দিতো।
–এতো ভালোবাসেন?
–প্রচুর।
প্রেয়ন কথাটা বলেই আমার হাত টেনে তার বুকের উপর ফেলে।
–তো এতো দিন তো কিছুই হলো না আজ হয়ে যাক (দাঁত বের করে)
–যতোদিন না দ্বিতীয় বিয়ে হচ্ছে ততদিন আমি আপনার আসল বৌ না সো ততদিন অপেক্ষা করুন।
–আচ্ছা ঠিক আছে তবে সেদিন কিন্তু ছেড়ে দিবো না।
–পাজি লোক কোথাকার।
–হুম তোমার পাজি।
প্রেয়ন আমার গালয় মুখ ডুবিয়ে ঘুম দিলো।
–আর একটা প্রশ্ন?
–কি?
–এতো কিছু জানলেন কি ভাবে।
–এটা কাল বলবো।
বলেই আমার ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দিলেন,
–আউ কি করছেন পাগল নাকি।
–হুম।
ছেলেটা সত্যি পাগল।
।
এদিকে,
–মহারানী আজ কি আমাকে মাফ করেছেন.
(করুন শুরে নীল)
–না (ভাব নিয়ে)
–কেন?
–কারন আপনি পঁচা।
–এ্যা বললে হলো কি পঁচা কাজ করেছি হুম পঁচা হলে না সব হয়ে যেত এতো দিন।
–ইয়ে মানে আপনিও না সরুন৷
–কেন সরবো
কাছে এগোতে এগোতে,
–এই দেখুন,
–বলো মাফ করেছো?
–হ্যাঁ করেছি দুরে সরুন এবার।
–মাফ যখন করেছো দুরে থেকে কি লাভ।
–এই ছেলে।
–কি হুম।।
নীল কথাটা বলে রাইমাকে নিয়ে শুয়ে পরে।
–ছাড়ুন৷
–বেশি নড়াচড়া করলে ২য় বিয়ের অপেক্ষা করবো না কিন্তু মেয়ে.
–ও মা শুধু ভয় দেয়।
–হাহা তুমি তো আমার কলিজা।
কথাটা বলে নীল রাইমাকে জড়িয়ে শুয়ে পরে।
।
।
।
আজ চন্দ্র যেন খুশি পরিবারের এই শুখ দেখে।
সত্যি বড়ে কঠিন পরিস্থিতি পার করে পুরো পরিবার আজ এক জায়গায়৷
এতো বাঁধা এতো বিপত্তি সব কিছু কাটিয়ে আজ সবাই এক জায়গায়।
চলবে,