প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো পর্ব-০২

0
13013

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০২
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

–চড়টা জোরেই মারলাম কারন আগের চড়টা ঢাকার ছিলো।
আমি ছল ছল নয়নে প্রেয়ন ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছি।
–ওই যে কাপড় আর গয়না পরে রেডি হয়ে নিচে আয়।
আমি কিছু বললাম না প্রেয়ন ভাই নিচে চলে গেল।
আমি দরজা লাগিয়ে শাড়ি পরে নিলাম।
গয়না গুলো পরতে আয়নার সামনে তাকিয়ে নিজের গালে হাত দিলাম।
দুইটা চড়ের কারনে গালটা বেশ খানিকটা ফুলে আছে।
আমার তিব্র ব্যাথা অনুভব হচ্ছে।
খারাপও লাগছে নিজের জীবন টাকে কেথায় ঠেলে দিলাম আল্লাহই জানেন৷
আচ্ছা প্রেয়ন ভাই তো চাইলে আমাকে এমনি সাহায্য করতে পারতো তাহলে এভাবে বিয়ে কেন করলো।
ছোট থেকেই আমার ফুপি আর আমাদের মধ্যে ধনি গরিবের একটা ফারাক ছিলো।
আমি তেমন কখনো এ বাসায় আসি নি৷
কারন প্রেয়ন ভাইয়ের কথা গুলো আমার বেশ ভালো লাগতো না।
তবে ফুপি আমাকে মায়ের মতো স্নেহ করতেন।
আমার বোনটাকেও খুব ভালোবাসতেন।
এখন কি আর আগের মতো ভালোবাসবে আমাকে হয় তো আর বাসবেন না ভালো।
আমি এগুলা ভাবছিলাম হটাৎ মনে হলো কেউ আমার পিঠে হাত দিছে৷
হতভাগ হয়ে আয়নায় তাকাতে দেখি প্রেয়ন ভাই।
–ক কি করছেন৷
–চেইন লাগাচ্ছি।
–আমি পারবো।
–চুপচাপ দাড়িয়ে থাকো।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলাম সে চেইন লাগিয়ে আমাকে তার দিকে ঘুরালো।
আমার বাম গালে হাত দিলো।
–খুব জ্বলছে নাকি তোর।
আমি ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছি কি বলে কি।
–সরি রে,
আমি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি৷
প্রেয়ন ভাই নিজে একটু নিচু হয়ে আমার গালে কিস করলো।
আমার চোখ রসগোল্লা হয়ে গেছে।
–এবার সেরে যাবে।
বাহ কিস করছে তাই সেরে যাবে কি আইন রে মা গো।
–নিচে যাবেন নাকি?
–হ্যাঁ অবশ্যই।
প্রেয়ন ভাই আমার হাত ধরে নিচে নিয়ে এলো।
ফুপি বেশ গোমড়া মুখ করেই দাঁড়িয়ে ছিলো৷
আমি মাথা নিচু করে ছিলাম।
–বিয়ে যখন হইছে মেনে না নিয়ে তো আর উপায় নেই৷
আমি চাইবো তুই আমার ঘরের বৌ এর মতো না আমার মেয়ের মতো থাকবি।
ফুপির কথায় চোখের জমে থাকা পানি গুলো গড়িয়ে পরলো।
–কাঁদছিস কেন এটা শুখের খবর৷।
ফুপি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন৷
সত্যি আমি ভুল ভেবেছিলাম ফুপিকে ফুপি সত্যি এক জন ভালো মানুষ আমাকে আগের মতোই ভালোবাসে।
–প্রেয়ন৷
–আম্মু৷
–পৃথুলা কে এবার ছেড়ে দেও ও এখন একটা মিষ্টি বানাবে৷
–এমন ভাবে বলছো যেন তোমার বৌ কে আমি একাই ছাড়ছি না।
–হ্যাঁ ছাড়ছিস না তো আমি তো দেখছি না এখনে হাত ধরে আছিস।
ফুপির কাথায় প্রেয়ন ভাই আমার হাত ছেড়ে দিলেন।
–চল আয়৷
ফুপি আমাকে নিয়ে কিচেন রুমে এলেন।
–সোন মা তোকে কিছু রান্না করতে হবে না এই যে দুধ আর……….
কোথায় কি আছে সব বুঝিয়ে দিলেন ফুপি।
–বুঝতে পারছিস৷
–হুম।
–এবার একটু মিষ্টি বানা তাতেই হবে।
–আচ্ছা।
ফুপি চলে গেলেন।
শাড়ির আচল টা কোমড় এ গুজে কাজে লেগে গেলাম।
সব অদ্ভুত ব্যাপার ঘটেই চলেছে আমার সাথে।
এই বিয়ে এই মিষ্টি বানানো।
আল্লাহ কি জানি বাবা কেমন আছেন।
এসব ভাবতে ভাবতে হটাৎ প্রেয়ন ভাই এর আগোমন।
–পৃথু।
–জি।
–একটু পানি দে তো।
–জি দিচ্ছি।
আমি প্রেয়ন ভাইকে পানি এগিয়ে দিলাম।
— তোকে না গিন্নি গিন্নি লাগছে পৃথু।
–১ মাসের জন্য হলেও গিন্নি তো হয়ে গেছি তাই না ভাই।
–আচ্ছা তুই গিন্নি কার জন্য হইলি।
–আপনার জন্য।
–তাহলে আমি তোর কি?
–বর।
–তুই আমার?
–বৌ।
–হ্যাঁ তাহলে এখানে ভাই টা কে (রেগে)
–ভাই টা কে? তুমি! (দাঁত বের করে)
–তবে রে৷
–আমার মিষ্টি পুড়ে যাবে প্লিজ৷
–আচ্ছা যা ছেড়ে দিলাম।
–হ দয়া করলেন (বির বির করে)
–কি বললি,
–বললাম রন্না টা শেষ করি.
–হুম কর,
–মাগো রে কি মানুষ এটা চড় মেরে চুমু খাই ভাই বললে রাগ হয় অথচো ১ মাসের জন্য বিয়ে করে।
আমার মাথা ঘুরাচ্ছে 🥴
চলবে,