প্রেয়সী পর্ব-০৩

0
1731

#প্রেয়সী♥️
#লেখনীতেঃmoumita_mehra
#পর্বঃ০৩

৫.
দোয়েল পাখির মতো আকাশের দিকে পা তুলে সিটিয়ে আছি বিছানার উপর। দোয়েল পাখির মতোই মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ার ভয়ে এমন কর্ম আমার। মনের মাঝে ছুটাছুটি করছে নিতু আপুর বলে যাওয়া কথাটা। সেটা শোনার পর মাথার উপর অলরেডি দুই-তিনটা ঠাডা পরে খনিকের জন্য একটু শান্ত হতে পারলেও আবারও যেন সেই একই কথায় এবার মাথার উপর পুরো আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়। নিতু আপু আমার বড় চাচার মেয়ে। অনলি ওয়ান পিস ধলা কাউয়া। আমি অবশ্য ওর মতো ধলা নই! আমি হলাম শ্যামলতা। বড় চাচীও ফর্সা। বড় চাচীর থেকেই নিতু আপুর গায়ের রং এমন। নিতু আপুর চেহারায় চাচীর কোনো মিল না পেলেও আমার বাবার ঘরের উত্তর দিক টাতে বিশাল আকারের যে ছবিটা টানানো,,, সেই ছবির অধিকারিনী মানুষটার সাথে বড্ড মিল পাই। যখনই আমি ঐ ছবিটার সামনে গিয়ে দাঁড়াই, ভেতরটা ছ্যাঁত ছ্যাঁত করে কেঁপে উঠে। কিছু একটা অনুভব করি। আমার শরীরের প্রতিটি শিরায় উপশিরায় ঝিমুনি ধরে যায়। কেন জিজ্ঞেস করা হলে, উত্তর হবে জানিনা! কখনো জানতেও ইচ্ছে হয়না। কারন ঐ অদ্ভুত অনুভূতি গুলো এখন আমার অভ্যাস। রোজ দু’বেলা ঐ ছবিটার সামনে গিয়ে না দাঁড়ালে ভেতরটা খুব অস্থির হয়ে উঠে।

আমার বড় চাচা আসাদুজ্জামান খান। খান বাড়ির বড় প্রদীপ। আর আমার বাবা আহাদুজ্জামান খান। খান বাড়ির ছোট্ট প্রদীপ। যদিও প্রদীপ হয়েও কাজে কেউই আসতে পারেনি। আমার বাবা যাও একটু পেরেছেন,কিন্তু বড় চাচা সেটুকুও পারেননি। বড় চাচার অস্থির এক স্বভাব রয়েছে। দু’দিন বাদে বাদে নিতু আপুর জন্য বুড়ো দামড়া গন্ডার টাইপ লোক নিয়ে আসে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তাদের না থাকে কোনো চারিত্রিক সনদ আর না থাকে কোনো রূপের সনদ। শুধু গরুর মতো ইয়া মোটা একখানা পেট আর পেটের মধ্যে অগণিত টাকা। আর বড় চাচা সেটা দেখেই মুখিয়ে পড়েন সেদিকে। এবারও তার ব্যাতিক্রম নয়। হাম্পটি শার্মা টাইপ। নিতু আপু সেই কথা শুনতেই রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ধলা কাউয়া থেকে এক নিমিষেই লাল কাউয়াতে পরিনত হয়েছে। পারলে তো রেগেমেগে ঐ বেটার মাথার চুল সব উগলিয়ে দিয়ে চলে আসে! অনেক কষ্টে বুঝিয়ে তাকে ম্যানেজ করেছি! কিন্তু ওর শেষ প্ল্যান টা শুনে তো আমি আহাম্মক হয়ে গেছি। নিতু আপু বাড়ি থেকে পালাতে চায়। কি সাংঘাতিক কথা! রাফিন ভাইয়ার সাথে পার্মানেন্টলি পালাবে সে! কথাটা শুনতেই হার্টের বারোটা বেজে গেছে আমার। কথা হলো ও পালালে বড় চাচা নিঃশব্দে আমার গর্দান নিবেন। কাউকে কিছু বলার সুযোগ টাও দিবেনা। উফফ আর ভাবতে পারছিনা। ঐ বেটা কুতুবউদ্দিনের জন্য নিতু আপুর পালানোটা মেনে নিতে আমার বদহজম হয়ে যাচ্ছে যে। এর রূপান্তর কিছু তো একটা ভাবতেই হবে।

—-” নিধি মা?”

এরে কে ডাকে অসময়ে! দরজার কাছ থেকে কারোর ছায়া ভেসে আসছে। গলাটাও বাবারই মনে হলো। লাফ দিয়ে উঠে বসলাম। বেডের পাশের বড় মিরোরটা থেকে দেখা যাচ্ছে বাবার স্যান্ডেল জোড়া। হ্যাঁ বাবাই।

—-” বাবা,এসো ভেতরে এসো!”

আমার ডাক পেয়ে বাবা মুখে মিষ্টি হাসির রেখা টেনে ভেতরে ঢুকলো। বাবার হাসিতে আমার মুখেও আপনাআপনি হাসির রেখা ফুটে উঠল বুঝতে পারলাম। হাত এগিয়ে বাবার হাতটা ধরে পাশে বসাতে বসাতে অভিযোগের সুরে বললাম,

—-” আজ এতো লেট কেন হু? টাইম দেখেছো ক’টা বাজে? শুনো বাবা, এই রোজ রোজ তোমার লেট করে বাসায় ফেরা আমি কিন্তু মোটেও বরদাস্ত করবো না বলে দিলাম। তোমার বয়স হচ্ছে, বুঝতে হবে… সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত করে বাসায় ফেরা মোটেও ভালো ছেলেদের কাজ নয়।”

বাবা হেসে উঠলো। বুঝলাম, বাবা আমার শাসনটা সিরিয়াসলি নিচ্ছে না। আমি কপাল কুঁচকে বাবার দিকে তাকাতেই বাবা হাসতে হাসতে আমায় বুকে জড়িয়ে নিলো। কপালের মাঝখানে একটা চুমু খেয়ে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,

—-” আজ ভার্সিটির ফার্স্ট ডে কেমন গেলো? ফার্স্ট ডে-র এক্সপেরিয়েন্স বলতো দেখি শুনি একটু?”

“ফার্স্ট ডে-র এক্সপেরিয়েন্স” কথাটা মাথায় বেজে উঠতেই আরেকটা ঠাডা পড়লো মনে হলো। শব্দবিহীন ঠাডা যাকে বলে। আমি বাবাকে ছেড়ে উঠে বসলাম। প্রস্তুতি নিচ্ছি মাত্রা ছাড়িয়ে একখানা মিথ্যা কথা বলার। যা হয়েছে তা তো আর বলা যায় না! যা হয়নি সেটাই বলা বাহুল্য। মুখে জোরপূর্বক হাসির রেখা টানার চেষ্টা করলাম। খামখা উত্তেজিত হওয়ার ভাব ধরলাম। যাকে বলে ওভার এক্টিং। মানে এমন বোঝাতে হবে যেন আমি কথা গুলো বাবার সাথে শেয়ার করার জন্য একদম মরে যাচ্ছি! আসলেই মরে যাচ্ছি। তবে সত্যি কথা গুলো বলা যাবেনা। বাবা ধরে না ফেললেই হলো।

—-” আর বলো না বাবা! সে কি বলবো তোমায়? ভার্সিটি গেলাম পরে এতো এতো মানুষ আমাদের সম্বর্ধনা দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলো,ইশশ আমি তো মনে করো খুশির ঠেলায় জ্ঞানই হারাবো এমন অবস্থা হয়েছিলো। ফুল,চকলেটস,গিফ্টস নিয়ে সব স্টুডেন্টস্-রা একদম মুখিয়ে ছিলো। একজন ফুল দিচ্ছে তো, আরেকজন চকলেট দিচ্ছে।”

—-” কারা?”

কথার মধ্যে বাবার কথা বলে ওঠায় থতমত খেয়ে গেলাম। কয়েক সেকেন্ডের জন্য মাথায় ‘অ’ থেকে ‘আ’ অব্দি এলো না। বোবা গলায় প্রশ্ন করলাম বাবাকে,

—-” অ্যা?”

বাবা সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বলল,

—-” কারা এতো সম্বর্ধনা করলো?”

বাবা আমার অতি চালাক। ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে মিথ্যে বললে বাবা ঠিকই ধরে ফেলে। কিন্তু আমিও তো তারই মেয়ে। এতো সহজে ধরা পড়া তো একদম চলবে না।

—-” কারা আবার! উফফ বাবা তুমি না কিচ্ছু বুঝোনা। কারা আবার সম্বর্ধনা দিবে? স্টুডেন্টস্-রা। হেহে, বললাম না মাত্র?”

বাবা চিন্তিত স্বরে বলল,

—-” কিন্তু নিধি মা, আমি যতদূর জানি ভার্সিটির ফার্স্ট ডে তে তো এতো কিছু দিয়ে স্টুডেন্টস্-দের সম্বর্ধনা দেয়না। তার জন্য একটা নির্দিষ্ট দিন থাকে। একটা নামও থাকে। কি যেন একটা!! হ্যাঁ___ মনে পড়েছে, সেদিনটাকে নবীন বরন বলে হয়তো? তাই না?”

আমি বলদার মতো তাকিয়ে রইলাম বাবার দিকে। হাসবো না কাঁদবো ঠাহর করতে কষ্ট হচ্ছে। বিরহে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে পালাতে ইচ্ছে হচ্ছে। এই জন্যই বলে অতি চালাকের গলায় দড়ি! ওভার এক্টিং করতে গিয়ে ঠিকই ধরা! হলো কিছু? এবার খুলতে হবে আরেকটা ওভার এক্টিং এর ডিব্বা।

—-” হ্যাঁ সেটা তো আছেই বাবা। কিন্তু, ঐ ভার্সিটির তো এটাই বিশেষত্ব। মনে করো যেদিন স্টুডেন্টরা প্রথম পা রাখে ভার্সিটিতে সেদিনই তারা এভাবে বরন করে। নবীনদের। মানে আমাদের যেভাবে করলো।”

বাবা কিছু একটা ভেবে অতি উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,

—-” তা হ্যাঁ রে মা,,, তুই কয় বক্স পেলি?”

বাবার উড়িয়ে ছোঁড়া প্রশ্ন মাথায় ঢুকলো না। তাই আবারও বোবা গলায় প্রশ্ন ছুঁড়লাম,

—-” কি বাবা?”

বাবার ভাব ভঙ্গিমার পরিবর্তন হলো না। একই সুরে আবারও একই কথা বলে উঠলো,

—-” কয় বক্স পেলি? কয় বক্স!”

আমি ভ্রু কুঁচকে নিলাম। ভাবনার জগতে হাতছানি দিয়ে ভাবতে লাগলাম,” কি কয় বক্স পেলাম?”

—-” কি রে বল?”

বাবার উত্তেজিত স্বরে আমার রীতিমতো কান্না পেয়ে যাচ্ছে। বাবার প্রশ্ন টা তো ঠিকঠাক ধরতেই পারছিনা। এখন কি কথা বলতে গিয়ে কি বলে ফেলবো? শেষে ধরা। এতক্ষণ যাবত এতো সুন্দর করে বানোয়াট কথা গুলো এক “ফু”-য়ে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে যে। আমি দুঃখী দুঃখী মুখ করে বললাম,

—-” বাবা, কি কয় বক্স পেলাম?”

বাবা চারপাশে নজর দিতে দিতে বলল,

—-” আরে চকলেট চকলেট! কয় বক্স পেলি মা? জলদি বের কর আমিও একটু খাই। কতদিন ধরে চকলেট খাইনা। আজ বাপবেটি মিলে কব্জি ডুবিয়ে খাবো। কি বল?”

এই সেরেছে! এবার কি বলবো? বাবা যে আমার চকলেট খেতে খুব ভালোবাসে। মিথ্যে বলে যে একের পর এক ফেঁসেই যাচ্ছি! এবার কি বলি?

—-” বাবা….”

—-” কয় বক্স পেলি মা?”

এবার আমি কেঁদেই ফেলবো। না না কেউ আঁটকাতে পারবে না আমায়। সত্যি কেঁদে ফেলবো।

—-” ত…ততিন!”

মুখ ফসকে বেরিয়ে গেলো আরেকটা বোম। এবার এটা ব্লাস্ট হলে আমায় কেউ খুঁজে পাবেনা। সেন্টি খেয়ে মাস দেরেক বেহুঁশ হয়ে থাকবো সিউর। বাবার চোখ দুটো গোলাকার হয়ে উঠলো। অবাক কন্ঠে বলল,

—-” তিন বক্স?”

আমায় কেউ তুলে নাও। চল নিধি আরেকটা মিথ্যে ঝাড়।

—-” বাবা তিন বক্স নয়! তিন বলতে আমি তিনটে বুঝিয়েছি!”

বাবার মুখটা মলিন হয়ে গেলো। গুমোট বাঁধা মুখে ফিসফিসিয়ে বলল,

—-” তোর ভার্সিটির লোকগুলো এতো খাটাশ কেন? কেউ কাউকে সম্বর্ধনা দিতে গিয়ে মাত্র তিনটে চকলেট দেয়? তাদের তো বোঝা উচিৎ, যে তাদের বাসায় ছোট বড় অনেক মানুষ থাকতে পারে,তাদেরও ইচ্ছে হতে পারে চকলেট খেতে!”

আমি অসহায় মুখ করেই ফিক করে হেসে দিলাম বাবার কথায়। হাসতে হাসতে বলল,

—-” আসলেই বাবা,ভীষণ খাটাশ ওরা। একদম বুঝেনা।”

বাবা মুখ কালো করে মাথা নাড়লো। বাচ্চাদের মতো করে গাল ফুলিয়ে কিছু একটা বলতে নিলে আমি থামিয়ে দিলাম। বকার সুরে বললাম,

—-” অনেক কথা হয়েছে। এবার জলদি উঠো,ফ্রেশ হয়ে টেবিলে এসো। একসাথে ডিনার করবো। খুব বেশি ক্ষিধে পেয়েছে কিন্তু!”

বাবা চোখ দুটো গোল গোল ঘুরিয়ে বলল,

—-” জাস্ট ফাইভ মিনিটস মা। এই যাবো আর এই আসবো।”

আমি হেসে মাথা দুলালাম। বিছানা ছেড়ে নামতে নামতে বললাম,

—-” ঠিক হে মেরি বাচ্চে।

৬.

দাঁড়িয়ে আছি শেখ ফরহাদ স্যারের ডিপার্টমেন্টের সামনে। ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের চিতাবাঘ স্যার। এক নামে সবাই চিনে। মানুষের ভালো করতে গিয়ে অলওয়েজ বাঁশ খাড়া। সে আর নতুন কি! কিন্তু এবার যে নিজের ফাঁদে নিজেই পড়লাম। মানুষ কখনো ভালো হবার নয়। ধারনাটা সব সময় একদম গেঁথে রাখি মগজের প্রত্যেকটা রগের সাথে। কিন্তু কোন খুশিতে যে কয়েক মুহুর্তের জন্য ভুলে গিয়েছিলাম আল্লাহ মালুম। ভালো মানুষ সাজতে গিয়ে সিনিয়রদের সরি বলতে গিয়েছিলাম! ভালোয় ভালোয় সরি বলে ফিরেও আসছিলাম কিন্তু শেষ মুহুর্তে দিলো একখানা বাঁশ চেপে। সব হলো সুশীল সমাজের অশ্লীল ছেলেপুলে। বলে কিনা চিতাবাগ স্যারের সাথে নাকি বাংলা ডিপার্টমেন্টের শায়লা ম্যামের সাথে এফেয়ার আছে। বুঝো ঠ্যালা। আমি যদি সে কথা চিতাবাঘ স্যারকে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে পারি তবেই উনারা আর আমাদের পিছন লাগবেন না! বুঝলাম রাফিদ নামের ছেলেটা তাদের গ্যাং লিডার। অবশ্য হওয়াই উচিৎ। তার পার্সোনালিটি আর এটিটিউড মেয়েদের নাকি নিগড়িয়ে মারে। সত্যি বলতে আমিও ক্রাশ খেয়েছিলাম। কিন্তু তার খবিশের মতো আচরনে এক ধাক্কা মেরে ক্রাশের লিস্ট থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশ্নই আসেনা এমন ফালতু লোকের উপর ক্রাশ খাওয়া। তবুও, আবলুস মন মানতে চায়না সে ফালতু লোক। আজকের এই মরন ব্যাধি ডেয়ারটা উনারই দেওয়া। ইচ্ছে হয়েছিলো পাশের বড় বটগাছ টায় চড়ে লাফিয়ে পড়ে মরে গিয়ে কিছুক্ষনের জন্য পেত্নী হয়ে তার ঘাড় মটকে দেই। কিন্তু হলো না। পাশের বিশাল জায়গা জুড়ে স্থান পাওয়া বড় বট গাছটা টেপুশ মার্কা। বেঁটে টাইপের। তাই ওখানে উঠে ঝাপিয়ে পড়ে মরে যাওয়ার ইচ্ছে তার শিকড়ের নীচেই চাপা দিতে হয়েছে।

রাইয়ের কাঁপা কাঁপিতে ভানায় ছেদ ঘটলো আমার। মুখ কুঁচকে ওর দিকে তাকাতেই ওর কেঁদে ফেলার উপক্রম হলো। মেয়েটা পড়েছে ফেসাদে। চিতাবাঘ নাম শুনেই একদফা বেহুঁশ হতে চেয়েছিলো! কিন্তু আমি আর তা হতে দেইনি! ওকে সটান করে দাঁড় করিয়ে বিনা বাক্যে স্যারের ডিপার্টমেন্টের সামনে এসে হাজির হয়েছি। পাশে কুম্ভকর্ণ দেখতে একটা আপু দাঁড়িয়ে। সিনিয়রদের দলের। নাম অরিন,,,দেখতে ভালোই। ছেলেদের চোখে পড়ার মতো। কিন্তু তাকে আপাতত সুন্দরীদের লিস্টে ফেলে তারিফ করতে পারছিনা! স্যার কে কথাটা আসলেই জিজ্ঞেস করতে পারবো কি পারবো না সেটার সাক্ষী হতেই চলে এসেছেন উনি। মনডায় চায় চুল গুলো ছিঁড়ে শাকের মুড়িঘণ্ট বানাই। আমার রান্নার হাত বেশ পাঁকা। মা না থাকার সুবিধা আরকি। ছোট বেলা থেকেই শিখে পড়ে বড় হয়েছি। তাই আমি চাইলেই এই শাঁকচুন্নির চুল ছিঁড়ে ঘন্টা খানেকের মধ্যে মুড়িঘণ্ট বানাতে পারবো।

—-” দোস্ত!”

রাই কাঁদো কাঁদো কন্ঠে ডেকে উঠলো। ওর ডাকে মায়া হলো বেশ। শান্তনা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কিছু বলতে যাবো তার আগেই ডাক পড়লো ভেতর থেকে। পিয়নের ডাকে রাই চমকে উঠে আমার হাত খামচে ধরলো। পাশ থেকে কুম্ভকর্ণ আপু মানে অরিন আপু রুক্ষ স্বরে বলল,

—-” স্যার ডাকছেন ভেতরে চলো।”

আমি রাই কে চোখের ইশারায় শান্ত হতে বললাম। যা হবে ভালোই হবে। এই খাটাশ গুলোর ডেয়ার ডান করতে গিয়ে যদি কোনো প্রবলেম হয় তবে আমিও তাদের দেখিয়ে ছাড়বো কত ধানে কত চাল! হুহ্।

#চলবে____________________

[ ভুল-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]