বকুলতলা পর্ব-৬+৭

0
308

বকুলতলা

৬.
তরী তখন নতুন নতুন ঢাকা শহরে এসেছে। কিচ্ছু চিনে না। প্রণয়ের বড় ভাই আবদুল ওকে ভার্সিটি নামিয়ে দিয়েছিল। বিশাল বড় ভার্সিটি! চোখ ধাধানো সুন্দর! তরী বড় বড় চোখে আশপাশটা দেখছিল। মাঠের কাছাকাছি আসতেই দেখলো, একটা লম্বা, চওড়া, সুন্দর মতো ছেলে ক্লান্ত শরীরে ঘাসের ওপর বসে আছে। চোখ বুজে অবিরাম আওড়াচ্ছে, “পানি, পানি, পানি।”

আরেকটু খেয়াল করতেই টের পেল, ছেলেটার ঠোঁটের কোণে ক্ষীণ রক্ত লেগে আছে। ঘর্মাক্ত কপালে গুটি কয়েক ত্যাছড়া আঁচড়। হাত, পা, পরনের শার্ট, জিন্স— সব ধূলোবালিতে মাখোমাখো। ভীষণ ক্লান্ত দেখাচ্ছে। তরী আনমনে নিজেকে নিজেই জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে?”
ঠিক তক্ষুণি ছেলেটার চোখা দৃষ্টি পরলো তার ওপর। ঘাড় কিঞ্চিত বাঁকানো। কি দারুণ সূক্ষ্ণ চাহনি! ডান ভ্রুটা উঁচিয়ে হঠাৎ-ই বলে উঠলো,
—“এই মেয়ে! পানি আছে?”
ভীতু তরী হকচকালো। এদিক-ওদিক নজর বুলিয়ে নিলো একবার। তারপর ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে এগিয়ে দিলো ছেলেটার দিকে। ছেলেটা সময় নিলো না। ঢকঢক করে প্রায় বোতলের অর্ধেকটুকু পানি শেষ করে ফেললো। এরপর কপাল কুঁচকে বললো,
—“বসো।”
—“জি?”
—“আমার পাশে বসো।”

কণ্ঠে একরাশ বিরক্তির আভাস। তরী বসলো না। নিমিষেই চোখ মুখ শক্ত করে ফেললো, “আমার বোতলটা দিন।”
ছেলেটা উঠে দাঁড়ালো এবার। হাত ঝেড়ে হাত ঘড়ির দিকে তাকালো। সকাল দশটা বাজছে। ছেলেগুলোর সঙ্গে হাতাহাতি করার সময় ঘড়ির স্ক্রীন ফেটে গিয়েছিল। ফেটে যাওয়া স্ক্রীন দেখে মনে মনে আফসোস করলো সে। আহ! তার সখের পাঁচ হাজার টাকা দামের ঘড়ি!
তরী তখন কপালে ভাঁজ ফেলে চেয়ে আছে। তার বিরক্তি লাগছে। ছেলেটার ব্যবহার ভীষণ অদ্ভুদ। দেখে তো বখাটে মনে হচ্ছে না। তবে মুখের ক্ষতগুলো স্পষ্ট খারাপ ছেলে হওয়ার স্বীকারোক্তি জানান দিচ্ছে। তরী বোতলটা আর নিলো না। পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাইলেই ছেলেটা আচমকা প্রশ্ন করলো, “নাম কি তোমার?”
তরী রয়ে, সয়ে উত্তর দিলো, “তরী মোশারফ।”
ছেলেটা ঠোঁট এলিয়ে হাসলো, “তরী অর্থ কি জানো? নৌকা।”

তরী শুধু তখন এক ঝলক তাকিয়েছিল ছেলেটার দিকে। মুখশ্রীতে যেন আগুনের ফুলকি জ্বলজ্বল করছে। সে আর দাঁড়ালো না। অসহ্য ভঙ্গিতে চলে গেল। তবে যেতে যেতে ছেলেটার উঁচানো কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিল, “মেয়ে, তুমি কোন নদীর নৌকা?”

পরে জানা গিয়েছিল, ছেলেটার নাম মাহাদ। বিকাল বেলা প্রতিদিন তাকে ভার্সিটির গেটের সামনে দেখা যায়। মাহাদের বাইকে বসার ভঙ্গিমাটাও দারুণ। সর্বদা রাজকীয় ভাবসাব নিয়ে থাকে। তাকে ঘিরে থাকে দশ-বারো জন অল্প বয়সী ছেলেপেলে।
মাহাদের যন্ত্রণায় তরী ভার্সিটি আসতো লুকিয়ে লুকিয়ে। তবুও যেন চতুর লোকটির হাত থেকে নিস্তার পেত না। দিনেদিনে মাহাদ যেন কেমন হয়ে উঠে। আগে তরীর সাথে কথা বলতো বুঝে শুনে, ঠাট্টার সুরে। তরী বুঝতো, মাহাদ শুধুমাত্র তার সাথে মজা করার জন্যই এসব করতো। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই সেই মজাটা যেন লাগামহীন, বেপরোয়া স্বভাবে পালটে যায়। দিন, ক্ষণ মনে নেই তরীর। মাহাদের পাগলামির শুরুটা তরীকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। সে তো কখনো কারো ভালোবাসা পায়নি। হঠাৎ আসা এই গাঢ় ভালোবাসাটা তার জন্যে দৃঢ় কালবৈশাখীর ঝড় বইয়ে এনেছিল।

রাস্তাঘাটে আজকে অনেক জ্যাম। আধঘন্টার রাস্তা পেরোতে পুরো একঘণ্টা লেগেছে তরীর। তখন আকাশে সন্ধ্যা মিলিয়ে গেছে। হলদেটে আভা গায়েব হয়ে ঘন আঁধার এসে হানা দিয়েছে ধরণীতে। তরী ধীর পায়ে বাড়ির ভেতর ঢুকলো। পা থেকে জুতা খুলে জুতার স্ট্যানে গুছিয়ে রাখলো।
আয়েশা খাতুন বসার ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। তরীকে দেখে বাঁকা চোখে তাকালেন।

—“তোমার ভার্সিটি ছুটি দিয়েছে কখন?” আয়েশা খাতুনে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন। তরীর সামলে উঠতে সময় লাগলো। চোখ পিটপিট করে বললো,
—“সাড়ে চারটায় মামী।”
—“এখন কয়টা বাজে?”
তরী নজর ঝুঁকালো। মিনমিনে কণ্ঠে উত্তর দিলো,
—“সাতটা।”
আয়েশা খাতুনের নজর টিভির পর্দায় স্থির। এতক্ষণ গম্ভীর গলায় কথা বললেও এবার খানিকটা ঝাঁঝালো শোনালো তার কণ্ঠ, “এটা তোমার নিজের বাসা না যে যখন ইচ্ছা তখন চলে আসবে। টাইম মেইনটেইন করা শিখো। পরেরবার এসব সহ্য করবো না আমি।”

জবাবে তরী ছিল নিরুত্তর। ঠোঁটের ফাঁক গলিয়ে মৃদু মৃদু নিশ্বাস ফেলছিল। ওটা কি শুধু ভেতর থেকে আগত উষ্ণ নিশ্বাস ছিল? আটকে আসা দীর্ঘশ্বাস তো একেই বলে।
সালেহা আশেপাশে নেই। হয়তো রান্নাঘরে কাজ করছে। ঘরে শুয়ে বসে থাকতে তরীর ভালো লাগছে না। কোনোমতে চুল হাতখোপা করে নিচে নেমে এলো সে। ডাইনিং টেবিলে প্রণয় বসে আছে। পরনে ডাক্তাদদের এপ্রোন। ফ্রেশ হয়নি বোধহয়। ফোনে কার সাথে যেন খুব চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কথা বলছে। তরী পাত্তা দিলো না অত। মাথা নুইয়ে ফেললো। প্রণয়ও তখন কথা বলা শেষে কান থেকে ফোন নামিয়েছে। শান্ত, স্থবির দৃষ্টি একটুর জন্য আটকে গেছে তরীর নমনীয় মুখপানে। আচমকা শুধালো, “আপনার কি ভীষণ মন খারাপ তরী?”

_____________

চলবে~

বকুলতলা

৭.
প্রণয় চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে তরীকে। তরীর অস্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু তা আমলে নেওয়ার সময় নেই। যত দ্রুত সম্ভব টেবিলে খাবার গুছাতে হবে। প্রণয় ইদানিং বেশ দেড়ি করে ফেরে। সবাই ততক্ষণে খাবার-দাবার শেষ করে ঘুমের দেশে পারি দিয়েছে। অগত্যা সালেহা আর তরীকেই প্রণয়ের খাবারের ব্যাপারটা সামলাতে হয়।
প্রণয় ভেঁজা চুলগুলো একহাতে ঝেঁড়ে হঠাৎ বললো, “বরফ পাওয়া যাবে একটু?”

সেসময় সালেহা গ্লাসে পানি ভরছিল। প্রণয়ের কথা শুনে দ্রুত রান্নাঘরের দিকে চলে গেল। টেবিলে লবণ নেই। কৌটা-টাও উধাও। সালেহা কি সাথে করে নিয়ে গেছে? তরী আড়চোখে একবার প্রণয়ের দিকে তাকালো। মাত্র গোসল করে এসেছে সে। পরনে পাতলা সুতীর ফতুয়া। গাঢ় সবুজ রঙের। মাথার চুলগুলো ভালো করে মুছেছে। বৈদ্যুতিক পাখার কৃত্রিম বাতাসে দুলছে সেগুলো। তরী নজর ফেরালো। লবণ আনতে এক কদম এগোতে না এগোতেই প্রণয়ের দৃপ্ত প্রশ্ন, “অর্ণবকে মনে আছে তরী?”

মনে হলো, ধুকধুক হৃদযন্ত্রের চলা থেমে গেছে। যেন হঠাৎ করেই বিদ্যুতের ঝলকানি ধ্বংস করে দিয়েছে সব। চোখের পাতা একত্রে মিলছে না। ক্ষীণ কাঁপছে৷ ঠোঁটযুগল নড়েচড়ে কি যেন বলতে চাইছে। কিন্তু নড়া ছাড়া যে আর কিছুই করার সামর্থ্য নেই। প্রণয় সবই খেয়াল করলো। পরখ করে নিলো ভীষণ সূক্ষ্ণতার সঙ্গে। আবার শুধালো,
—“মনে আছে, অর্ণবকে?”
শক্ত হয়ে জমে থাকা তরী এবার কথা বললো। কঠিন, গম্ভীর, থমথমে গলায়,
—“কি চাচ্ছেন আপনি?”
—“আমি কি চাইবো?”
—“জ্বালাচ্ছেন কেন তাহলে?”
—“আপনাকে তিন বছর আগের ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছিলাম। আর কিছু না।”
তিন বছর আগের ঘটনা! তিন বছর আগের তরী! ওই অর্ণব নামের লোকটা! সবটা যেন কয়েক সেকেন্ডের জন্য মাথায় রেকর্ডারের মতো রিপিট হলো। তরীর নিশ্বাস ভারি, ঘনঘন। চোখে কি পানি জমেছে? জমেছে হয়তো।
তরীর হালকা ভেঁজা স্বরের তেজি ভাব ভীষণ মিষ্টি শোনালো প্রণয়ের কাছে, “আমি জানি আমার অতীত। আপনাকে বলতে হবে না। দয়া করে, এত দয়া করবেন না আমার ওপর। আমার স্মৃতিশক্তি যথেষ্ট ভালো আছে।”
ডালে ভাত মাখালো প্রণয়। একলোকমা খেল। কি তৃপ্তি এই সাধারণ বাঙালি খাবারে! রোজ রোজ মাংস, বিরিয়ানি খেতে প্রণয়ের সত্যিই আর ভালো লাগে না। খেতে খেতে প্রণয় বললো,
—“আমার তো মনে হচ্ছে না আপনার আগের কথা মনে আছে। মনে থাকলে তো আর অন্য ছেলেদের সাথে ঘুরতেন না।”

তরীর সর্বাঙ্গ দারুণ চমকে হতবাক হলো। বিমূঢ়তা চোখে-মুখে স্পষ্ট। জিজ্ঞেস করলো, “আপনি আমার বিষয়ে এত কিছু জানেন কিভাবে?”
প্রণয়ের নির্লিপ্ত উত্তর, “আপনাকে একটা ছেলের সঙ্গে দেখেছিলাম কয়েকদিন আগে।”
—“আর তিন বছর আগের ঘটনা? ওগুলো কিভাবে জেনেছেন? মামা-মামী বলেছে?”

প্রণয়ের উত্তর আর শোনা হলো না৷ সালেহা চলে এসেছে। বাম হাতের বাটিতে অনেকগুলো বরফের কিউব আর ডান হাতে লবণের কৌটা। তরী আস্তে আস্তে সরে এলো সেখান থেকে। রান্নাঘরে যায়নি। একেবারে নিজের ঘরের দরজা আটকে বিছানায় শুয়ে পরেছে।

সময় গড়িয়ে গেছে। রাতের কালো আচ্ছন্নতা শেষে সূর্যের আলোকিত স্নিগ্ধতা মন ভুলিয়ে দিতে চলে এসেছে। তরী কাল সারারাত ঘুমাতে পারেনি। ফলসরূপ সকাল থেকে ভীষণ মাথাব্যথা। কাজ করতে গিয়েও যে কি আলসেমী লাগছে! ভার্সিটির জন্য তৈরি হতে গিয়ে খুব সময় লাগালো তরী। সাহেলার জোরাজোরিতে অল্প একটু পরোটা আর চা খেল।
মাহাদ তরীর জন্যই অপেক্ষা করছিল। তবে এবার ম্যানরোডের কাছে নয়, তরীর মামার বাড়ির সামছে দাঁড়িয়েছে। গেটের অনেকখানি দূরত্বে। দু’আঙুলের ভাঁজে সিগারেট রেখে একেকটা সুখটান দিচ্ছে। তরী তখন বেড়িয়েছে মাত্র। মাহাদকে প্রথমে খেয়াল করেনি। কিন্তু পরপরই যখন লোকটা ওকে ডাকলো, তরী থমকালো। মাহাদ সিগারেট ফেলে দিয়েছে। একেকটা দৃঢ় কদমে এগিয়ে আসছে ওরই পানে। কাছাকাছি হতেই পূর্ণ দৃষ্টে চাইলো। শান্ত, শীতল, ঠান্ডা দৃষ্টি।

—“তোমাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে। ঠিকঠাক খাওনি?” সন্তপর্ণে লুকিয়ে থাকা তীব্র যত্ন প্রশ্নটায়।
তরী মৃদু গলায় উত্তর দিলো,
—“খেয়েছি।”
তারপর একটু থেমে আবার বললো, “আপনি হঠাৎ এ এলাকায় এসেছেন কেন? বাড়ির সামনে এভাবে আর দাঁড়াবেন না।”
তরীর কথায় কি কখনো গ্রাহ্য করেছে মাহাদ? মনে পরছে না। সে বরাবরই নির্বিকার। দৃঢ়, একরোখা, জেদী। কারো কথায় যার কিছুই যায় আসে না।
আশপাশে বিরক্তিকর চাহনি নিক্ষেপ করে মাহাদ গাঢ় গলায় শুধালো,
—“বড়োলোকি রাস্তায় হাঁটতে এসেছিলাম। হেঁটে মজা পাইনি। হাঁটতে হাঁটতে যদি একটু ইট-পাথরে উসঠাই না খাই, তাহলে কি আর ভালো লাগে?”

তরী সরল চোখে তাকালো। তপ্ত নিশ্বাস ফেললো আস্তে আস্তে। উগ্র মাহাদকে হঠাৎই গভীর ভাবে অনুভব করলো। সেই অনুভব গভীরে গিয়েও যেন মন ছুঁলো না। মাঝপথে আটকালো, ক্ষতবিক্ষত হলো, ভাঙ্গলো, এরপর ফিরে এলো। ভেতরকার অতি গোপন কষ্ট যেন একটু একটু করে বাড়ছে। ডান চোখ থেকে একটুখানি পানি গড়িয়ে পরছে। একদম সামান্য। সেই সামান্য পানি আলতো হাতে মুছে দিলো মাহাদ। প্রথমবার! প্রথমবার তরীকে আদরমাখা হাতে স্পর্শ করলো। কপালের এলোমেলো চুল পেছনে ঠেলে ঠিকঠাক ঘোমটা আরও ঠিকঠাক করে দিলো। ঢিমে যাওয়া গলার স্বর উৎকণ্ঠা হয়ে উঠলো, “তরী? কি হয়েছে? বেশি খারাপ লাগছে? কিছু কিনে দেই? খাবে? এই মেয়ে! কথা বলছো না কেন?”
তরী সিক্ত নেত্রজোড়া নুইয়ে নিলো। থেকে থেকে বললো, “আমার– আমার কষ্ট লাগে।”
—“কেন লাগে এত কষ্ট? কেউ কিছু বলেছে? আমি কিছু করেছি?”

তরী ছোট্ট শিশুর মতো মাথা এদিক-ওদিক নাড়ালো। কেউ কিছু বলেনি। মাহাদও কিছু করেনি। মাহাদ এবার কোমলস্বরে প্রশ্ন ছুঁড়লো, “তাহলে?”
—“এখানে থাকতে ভালো লাগেনা।”
—“তবে চলো বিয়ে করে ফেলি। অন্য জায়গায় গিয়ে থাকবো। অনেক দূরে। সবার থেকে দূরে।”

তরী কান্না ভুলে বড় বড় চোখে তাকালো। ওর তাকানো দেখে মাহাদ হেসে ফেললো। বিস্তর অথচ নিঃশব্দে। বললো, “মজা করছিলাম। কোথায় থাকবে না? তোমার মামা বাড়িতে? হোস্টেলের ব্যবস্থা করবো?”
—“হোস্টেলে সীট খালি নেই তো। আমি খুঁজেছিলাম।”

গালের লবণ পানিগুলো আবারও মুছে দিলো মাহাদ, “এভাবে কাঁদবে না তরী। চোখ ফুলে তোমাকে ভয়ংকর দেখায়। আমি ভয় না পেলেও রাস্তার মানুষ কিন্তু তোমার নামে মামলা ঠুকে দিবে।”

_______________

চলবে~
ঈশানুর তাসমিয়া মীরা