বাবার ভালোবাসা পর্ব-৮+৯

0
338

বাবার_ভালোবাসা।

পর্বঃ০৮
লেখাঃরাইসার_আব্বু।

ম্যাডাম প্রথমত আপনাকে ধন্যবাদ বিপদের সময় আপনার বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য। তার পর অফিসে চাকরি দেওয়ার জন্য। তবে আমি আপনার সম্মানন রাখতে পারিনি। আর কোন চরিএহীনের পক্ষে সম্মান রাখা সম্ভবও না।
– রাজ আমাকে বলতে দাও।
– আপনি যা বলবেন তা আমি জানি। আপনি চাননা কোন চরিএহীন আপনার অফিসে কাজ করুক। এতোদিন দয়া দেখানোর জন্য ধন্যবাদ। এই নেন আমার রিজাইনলেটার। আসি।
– আমি চেয়ার থেকে উঠে যখনি রুম থেকে বের হবো তখন পা দু’টো সড়াতে পারছি না। নিচের দিকে চেয়ে দেখি কথা পা দু’টি জড়িয়ে ধরে আছে। ম্যাডাম কি করছেন কেউ দেখলে কি বলবে? কার পা ধরেছেন আপনি? একটা চরিএহীনের পা। যে মেয়ে দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে।
– রাজ প্লিজ স্টপ! আর বলো না। আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি না জেনে তোমাকে অপমান করেছি তোমার গায়ে হাত তুলেছি। প্লিজ ক্ষমা করে দাও আমায়!
– আশ্চর্য ক্ষমা কেন চাচ্ছেন? আপনি ঠিক কাজ করেছেন। প্লিজ ম্যাডাম কেউ দেখার আগে পা টা ছেড়ে দেন।
– রাজ তুমি যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত পা ছাড়বো না।
– ম্যাডাম গরীবরা মনে রাগ পুষে রাখে না। তারা জানে বড়লোকদের চড় খাওয়ার জন্যই হয়তো তাদের জন্ম। আর ক্ষমা সেটা তো আগেই করে দিয়েছি এখন পা ছাড়েন।
– সত্যি আমাকে ক্ষমা করেছ?
– হ্যাঁ ক্ষমা করেছি। তবে একটা কথা মনে রাখবেন। আপনারা যেমন রক্ত মাংসে গড়া মানুষ। আপনাদের যেমন মন আছে তেমনি আমার মতো গরীবদেরও আছে। তাই কারো সম্পর্কে না জেনে এমন করবেন না।
– জানো রাজ, সত্যি বলতে আমি তোমার পাশে কেন জানি অন্যকে সহ করতে পারি না। কাল যখন তোমার উপর সাথি পড়েছিল। আর সাথির ঠোঁটের লিপিস্টিক লেগেছিল। তখন আমার হিতাতিত জ্ঞান ছিল না। আমার ছোটবেলা থেকেই একটু রাগ বেশি। বাট কাল সাথি যখন বলেছে তুমি তাকে কিস করেছ তখন রাগ চেক দিতে পারিনি। জানি তোমার প্রতি আমার কোন অধিকার নেই! তারপরও এসব আমার সহ্য হয় না। খুব কষ্ট হয়।
– জানো কাল রাতে যখন সাথি ফোন দিয়ে বলল দোষ তোমার না। সাথি নিজে ইচ্ছায় তোমার উপরে পড়ে গিয়েছিল। আর সাথি নিজে ইচ্ছায় তোমাকে কিস করতে গিয়েছিল। তুমি ওকে সড়িয়ে দিয়েছিলে। সাথি মজা করেই আমাকে বলেছিল তুমি ওকে কিস করেছ। কিন্তু আমি সেটা বুঝতে না পেয়ে তোমাকে সবার সামনে অপমান করেছি। সাথি কাল সবার সামনে বলতে চেয়েছিল। কিন্তু পারেনি। প্লিজ রাজ আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো।

– আচ্ছা! রিজাইন লেটারটাতে সাইন করে দিলে খুশি হতাম।
– কথার চোখ দিয়ে পানি পড়বে পড়বে ভাব।
– এমন সময় সাথি এসে বলল ‘ দোস্ত, রাজকে নিয়ে একটু তোর রুম থেকে বেরো।
– কথা আমাকে নিয়ে, তার রুম থেকে বের হতেই দেখে অফিসের সব ষ্টাফরা দাঁড়িয়ে আছে।
– আমি সবাইকে দেখে চমকে গেলাম।
– হঠাৎ কর্মচারীদের মাঝে একজন বলে ওঠল’ চরিএহীন লোকটা আবার কেন এসেছে?

– সাথি কথার কাছে এসে বলল ‘ আপনাদের সবাইকে আমি চিনি না। আপনারাও হয়তো আমাকে চিনেন না? যাই হোক আমি সাথি তোমাদের ম্যাডামের বান্ধবী। তোমরা মিঃরাজকে তো চিনে? সবাই তাকে চরিএহীন বলেই চিনো তাইনা?
– আমি সাথির কথা শুনে মাথাটা নিচু করে ফেললাম।
– শুনেন তাহলে আপনারা সেই চরিএহীন রাজকেই আজ সবার সামনে বলছি ‘ আমি রাজকে ভালোবাসি। বলতে গেলে নিজের থেকেও বেশি।
– সবাই একে -অপরের দিকে তাকাচ্ছে! কথা ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে দেখি ম্যাডাম কেমন জানি রাগে ফুলতেছে। কিন্তু কিছু করার নেই?
– কি হলো আপনারা অবাক হলেন? একটা চরিএহীনকে কেন নিজের থেকে ভালোবাসি?
– তাহলে শুনুন, রাজ কালকে আমাকে কিস করেনি। আমি রাজের উপর পড়ে গিয়ে যখন কিস করতে চেয়েছি তখন সে মুখ সড়িয়ে নেয়। আর ফলস্বরূপ রাজের গালে লিপিস্টিকের দাগ বসে। কিন্তু আমি ওঠে গিয়ে কথাকে বলি, রাজ আমাকে জোর করে কিস করেছে। আমি কথাটা মজা করেই বলেছি। কারণ কথা জানতো আমি রাজকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসি। কথাকে বলতেও বলেছি, যে রাজকে বলিস আমি ওকে ভালোবাসি। আর গতকাল কথা আমার মজাকে নিয়ে এতো বড় একটা ঘটনা করে ফেলল। আমি পরে বলতে চেয়েছিলাম। বাট কথা আমার কথা শুনেনি। পড়ে আপনাদের সবার সামনে বলার সাহস হয়নি। আর আপনাদের সহকর্মী কোন চরিএহীন নয়। চরিএহীন কেউ থাকলে আমি। আজ আপনাদের সবার সামনে কথাগুলো বললাম ‘ এতে কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমা করবেন। আর রাজ আমি তোমার সবটা জেনেও তোমার পায়ের নিচে একটু আশ্রয় চাই দিবে?
– এই সাথি কি বলছিস এসব? রাজের মেয়ে আছে। তোর বাবা -মা মানবে না। পাগলামী করিস না।
– কথা আমি সবটা ভেবেই বলেছি। আমার প্রকৃত আশ্রয় রাজের পায়ের নিচে।
রাজ আজ সবার সামনে বলছি, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার বুকে একটু জায়গা দিবে। এ বলে যখনি সবার সামনে হাতটা ধরবে সাথি! তখনি ঠাস! করে চড় বসিয়ে দিলাম। লজ্জা করে না? এতোগুলো মানুষের সামনে ভালোবাসার কথা বলতে?ভালোবাসা কি বুঝেন? ভালোবাসা কি আপনার বাবাকে বা মা’কে জিজ্ঞেস করেন।
আর থাপ্পরটা দিলাম আপনার পাগলামোর জন্য। আপনার অবস্থান কোথায় আর আমার কোথায় জানেন? এতোগুলো মানুষের সামনে আমাকে ভালোবাসেন কথা বলে নিজের বাবা-মার মাথা নিচু করতে লজ্জা করে না। আর যে মেয়ে বিয়ের আগে অশ্লীলতা করে। কিস করতে যায় সেটা পতিতা পল্লিতে যাওয়া কোন পুরুষ নামে কাপুরুষের শোভা পায় আপনাকে বিয়ে করা। পর্দায় থাকেন। আর নেক্সট টাইমে আমাকে বলবেন না আমাকে ভালোবাসেন।
– আমি কিছু জানি না। আমি তোমাকেই ভালোবাসি আর ভালোবাসব!
– ভালোবাসা বাজারের পণ্য না। আমায় ক্ষমা করবেন।
-সত্যি রাজ তোমাকে বড্ডবেশি ভালোবাসি। আমি যা করেছি সব অন্যায় করেছি। তবে এটা ঠিক তোমার জন্য নিজের জীবনটাও দিয়ে দিতে পারি। এক দিন আমি প্রমাণ করে দিবো তুমি শুধু আমার।
– আমি কিছু বললাম না। শুধু মনে মনে বললাম’ মৌ আর সাথি দু’জনের মাঝে কতটাই পার্থক্য!’
সাথি চোখের পানি মুছতে মুছতে চলে গেল!
– কথা ম্যাডাম নিজের রুমে চলে গেল।
-অফিসের সবাই একে একে সরি বলে যাচ্ছে!
– আমি মুচকি হেসে মনে পাথর চেঁপে বলছি ইটস ওকে!
-ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দাও।
– কি হলো কাঁদছিস কেন?
– ভাইয়া না জেনে কাল আপনাকে কি সব বলেছি।
– আরে পাগলী তুই তো জানতি না?
– সবাইকে বললাম, আমি আর আসবো না। তোমরা ভালো থেকো।
– অফিসের সবাই বললো’ রাজ ভাই তুমি অফিসে না আসলে আমরাও আসবো না! ম্যাডাম তোমাকে আর তাড়াতে পারবে না।
– আরে আমি নিজ ইচ্ছায় চলে যাচ্ছি। প্লিজ তোমরা এমন কিছু করো না যেন অফিসের কোনন ক্ষতি হয় এটা তোমাদের প্রতি আমার অনুরোধ।
– অফিস থেকে বের হওয়ার সময় দেখলাম কথা ম্যাডাম অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এ চোখের ভাষা বুঝার সাধ্য যেন আর কারো নয়।

– বিকেলে রাইসাকে নিয়ে আসতে স্কুলে গেলাম। স্কুল থেকে আসার পর রান্না করে রাইসাকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে মৌ এর ছবিটা নিয়ে কাঁদছিলাম।
– রাত নয়টা বাজে এমন সময় করিম আঙ্কেল ফোন দিয়ে বললো তাদের বাসায় যেতে।
– আমি সকালে যেতে চাইলেও তিনি রাতেই যেতে বললেন।
– আমি একা যাবো ভেবে যখনি রুম থেকে বের হবো তখনি রাইসা বলে উঠল’ বাবাই কোথায় যাচ্ছো আমিও যাবো।’
– আর বাবাই তুমি ওই পচাঁ মেয়ের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদলে কেন?
– রাইসা তুমি না ঘুমিয়েছিলে?
– আমার বাবাই কাঁদবে আর আমি ঘুমাবো। এটা সম্ভব কিভাবে বাবাই। তুমি জানো না তোমার চোখে পানি দেখলে আমার খুব কষ্ট হয়।
– আচ্ছা আর কাঁদবো না চলো মামনি আমি আর তুমি বেড়াতে যাবো।
-আচ্ছা!
– রাইসাকে নিয়ে কথা ম্যাডামদের বাড়িতে যেতেই। রাইসা বলল’বাবাই তুমি এখানে আসলে কেন?
– বেড়াতে মামনি।
-ওহ!
– রাইসাকে নিয়ে ভেতরে যেতেই আঙ্কেল আমাকে ডেকে নিয়ে বলল’ বাবা রাজ, আমি তোমার বাবার বয়সী। আজ তোমার বাবা যদি তোমায় কাছে একটা অনুরোধ করত তুমি রাখতে না?
– হুম আঙ্কেল বলেন কি বলবেন?
– বাবা রাজ তুমি অফিস থেকে যেয়ো না। আমার মেয়েটা তোমার সাথে খুব অন্যায় করছে। জান বাবাই কথা গতরাত থেকে এক ফোঁটা পানিও স্পর্শ করেনি। আমাকে জড়িয়ে ধরে সব বলছে। তোমার সাথে যে অবিচার করছে। কথা নিজেকে ক্ষমা করতে পারছে না। বাবা আমার মেয়েটাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আর অফিস থেকে যেয়ো না প্লিজ।
– তোমার কাছে বড়ো বয়সে অনুরোধটা করলাম। রেখো বাবা।
– আচ্ছা আঙ্কেল যাবো না।
– রাজ শুনে বড় খুশি হলাম। চলো সবাই মিলে ডিনার করি।
– আঙ্কেল কথা ম্যাডামকে ডিনার রেডি করতে বলল। ডিনার শেষ করে আঙ্কেলের সাথে কথা বলতে বলতে রাত প্রায় বারোটা বেজে যায়।
– আঙ্কেল থাকতে বললেও রাইসাকে নিয়ে চলে আসি। একটা রিক্সা করে যখন আসছিলাম হঠাৎ রাস্তার পাশে একটা কার্র দাঁড়ানো।
– আর একটু সামনে যেতেই গলির মুখে মেয়েলি কন্ঠে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনলাম।
রিক্সওয়ালে দাঁড়াতে বললে রিক্সা ওয়ালে দাঁড়ালে। রাইসাকে রিক্সায় রেখে গলির মুখে নতুন বেল্ডিং এর কাজ চলছে সেখানে তিনজন ছেলেকে দেখলাম একটা মেয়েকে জোর করে রের্প করার চেষ্টা করছে। আমি কি করবো ভাবতে পারছি না। বেল্ডিং স্লাইডে পড়ে থাকা একটা দু’হাত লম্বা কাঠ দিয়ে একজনের শরীরে বারি দিতেই বাকি দু’জন আমার দিকে ত্যাড়ে আসে। কাঠ দিয়ে কয়েকটা এলোপাতাড়ি বারি মারতেই রিক্সাওয়ালাও এসে পড়ে। তারা আমাদের দু’জনকে দেখে ভাবে আরো মানুষ আছে। এভেবে পালাতে যাওয়ার আগে আমাকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা লেগে কপালের কিছু অংশ কেটে যায়। এদিকে দেখি মেয়েটার বুকের কাপড় ছিড়ে ফেলেছে। বাধ্য হয়ে নিজের শার্টটা মেয়েটার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে। মেয়েটার মুখের দিকে যখনি মোবাইলের ফ্লাশ মেরেছি। তখন আমার বুকের ভেতরটা ধর্ক করে ওঠলো। চেয়েই দেখি মৌ। মৌকে ওঠানোর সাহস ধরছে না। রিক্সাওয়ালাকে নিয়ে মৌকে নিয়ে রাইসাকে সাথে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার দেখে বলল’তেমন কিছু হয়নি ভয় পেয়ে সেন্সলেন্স হয়ে গেছে।
– নার্স এসে বললো আপনার কি হয়?
– রাইসা বলে ফেলল ‘ আমার মম হয়। আর এটা আমার বাবাই। কথাটা বলে জিবে কামড় দিলো।
– আশ্চর্য আপনার কপাল থেকে তো রক্ত ঝরছে।
– ঝরতে দিন এর চেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ যে আমার বুকে হচ্ছে!
– কিছু বললেন?
– না কিছু বলেনি।
চলেন আপনার কপালের কাটা অংশ ডেসিং করে দেয়। আমি কপালে ব্যান্ডেজ করে এসে দেখি। রাইসা মৌ এর মাথার কাছে বসে জিমাচ্ছে।
– আমি আর বলতে পারলাম না ‘মামনি এটা তোমার মম হয় না! ‘ কি যেন অদৃশ্য মায়ায় মৌ এর পাশে বসে পড়লাম।
– নিজের অজান্তেই মৌ এর কপালে হাত রাখলাম। কে যেন বললো আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবে? আমার ঘুম আসছে না।
– হঠাৎ করে অতীতের কথা মনে পড়ে গেল’ মৌকে ছোট্ট বাচ্চার মতো মাথায় হাত বুলিয়ে না দিলে ঘুমাতো না। কিন্তু আজ তো মৌ এর উপর কোন অধিকার নেই। তারপরও নিজের অজান্তেই মৌ এর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় খেয়াল নেই।
– সকাল বেলা মৌ এর জ্ঞান ফিরতেই দেখে আমি মৌ এর বুকে। আমাকে দেখে যতটা না চমকে তার চেয়ে বেশি রাগ ওঠে পড়ে তার।
– এই ছোটলোকের বাচ্চা ওঠ!
– প্লিজ আর একটু ঘুমাই?
– মৌ জোরে করে ধাক্কা মেরে বলে এই ছোটলোকের বাচ্চা তোর কতো বড় সাহস আমার বুকে তোর মাথা রাখছিস?

চলবে”””””””

বাবার ভালোবাসা।

পর্বঃ০৯.
লেখাঃরাইসার_আব্বু।

মৌকে ছোট্ট বাচ্চার মতো মাথায় হাত বুলিয়ে না দিলে ঘুমাতো না। কিন্তু আজ তো মৌ এর উপর কোন অধিকার নেই। তারপরও নিজের অজান্তেই মৌ এর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় খেয়াল নেই।
– সকাল বেলা মৌ এর জ্ঞান ফিরতেই দেখে আমি মৌ এর বুকে। আমাকে দেখে যতটা না চমকে তার চেয়ে বেশি রাগ ওঠে পড়ে তার।
– এই ছোটলোকের বাচ্চা ওঠ!
– প্লিজ আর একটু ঘুমাই?
– মৌ জোরে করে ধাক্কা মেরে বলে এই ছোটলোকের বাচ্চা তোর কতো বড় সাহস আমার বুকে তোর মাথা রাখছিস। মৌ অামাকে ধাক্কা দিতে সময় খেয়াল করল। ছোট্ট দুইটা হাত তাকে বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
– মৌ এর ধাক্কায় আমার ঘুম ভেঙে যায়।
– চোখ কচলাতে কচলাতে মৌকে বললাম ‘সরি ‘ আমার ভুল হয়ে গেছে!
– মৌ আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো।
– প্লিজ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।
– কি বললি? ছোটলোক আমাকে তুমি করে কোন সাহসে বলিস? আপনি করে বল!
– প্লিজ আপনি আমাকে ক্ষমা করে দেন।
– আর শোন তোর মেয়েকে তুই সামলা। আমার সামনে যেন না আসে। আর তোর মতো ছোটলোকের কিভাবে সাহস হয় আমার শরীর স্পর্শ করার?মৌ চেয়ে দেখে তার গায়ে কাপড়টা ছেড়া। একটা শার্টটা জড়ানো। মৌ এর বুঝতে বাকি রইল না এটা ছোটলোকটার কাছ। কষে থাপ্পর বসিয়ে দিয়ে বলল’ তোর মতো রাস্তার ছেলের কীভাবে সাহস হয় আমার সাথে এসব করার? তোকে যদি আর কোনদিন আমার সামনে দেখছি জুতো-পিটা করবো। তোর মা মনে হয় জন্মদিয়ে মেয়েদের সম্মান করতে শিখায়নি।
– মা’কে নিয়ে এমন কথা সহ্য করতে পারলাম না। মৌ এর গালে কষে একটা থাপ্পর বসিয়ে দিয়ে বললাম ‘ তোর মতো মেয়ের সাথে নোংরামী করবো আমি? ভাবলি কি করে? আরে তোর চেয়ে পতিতারা ভালো। তারাও নিজের সন্তানকে ভালোবাসে। তারাও অসুস্থ স্বামীকে ফেলে অন্য কোথাও চলে যায় না। রাইসা মামনি তুমি একটু বাহিরে যাও তো!
– আচ্ছা বাবাই।
– কি বললি তুই? আমি পতিতা!
– সরি তোকে পতিতা বললে, পতিতাদের অসম্মান করা হবে। আরে পতিতারা তো পেটের দায়ে এসব করে। আর তুই পেটের দায়ে নয় তোর শরীরের চাহিদা মেটাতে। শোন তুই যদি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়েও থাকিস তোর দিকে এই রাজ ফিরে তাকাবে না। কি ভাবছিস ছোটলোক? হ্যাঁ ছোটলোক হলেও আমার আত্মসম্মানবোধ আছে। আর এই আত্মসম্মান নিয়েই কবরে যেতে চাই। আর আমার মা কে নিয়ে যদি কোন দিন বাজে কথা বলিস তাহলে এই রাজ তোকে ক্ষমা করবে না। তোর দেয়া হাজারো ব্যাথা বুকে দাফন করে ফেলেছি। কিন্তু মা’কে নিয়ে কোন কথা নয়। আর শোন, আল্লাহ সত্যিই ন্যাবিচারক। শুনে রাখ এমন একটা দিন আসবে, তুই মৌ পায়ে ধরে আহাজারি করবি কিন্তু সেদিন তোর কান্নায় কোন লাভ হবে না। আর তোকে ইচ্ছা করে জড়িয়ে ধরিনি। ঘুমের ঘরে তোকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। সেজন্য করোজুড়ে ক্ষমা চাচ্ছি। আসি!


– রাইসা নিয়ে হসপিটালের বিল মিটিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
– হঠাৎ মৌ খেয়াল করল, এটা তো তার বাসা না আর তার গায়ে শার্ট কেমনে করে পরালো ছোটলোকটা? এমন সময় নার্স এসে বলল ‘ ম্যাডাম কেমন আছেন?
– জ্বি ভালো। বাট আমি এখানে কিভাবে আসলাম?
– আপনার স্বামী নিয়ে এসেছে অজ্ঞান অবস্থায়।
– স্বামী মানে? মৌ যখন এ কথা বলবে তখনি নার্স বলল’ ম্যাডাম আপনাকে কিছু কথা বলব, যদি বলতে বলেন! ‘
-অবশ্যই কেন না বলো।
– ম্যাম জানেন, ২০১৯ এ ডিজিটাল যুগে আপনার স্বামীর মতো স্বামী খুব কমই পাওয়া যায়। আর যে স্বামী অসুস্থ বউয়ের জন্য নামায পড়ে দোয়া করে। স্ত্রীর অসুস্থতার সময় সারারাত মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ঘুমিয়ে যায়। সত্যিই আপনি অনেক ভাগ্যবতী। আপনি কি এমন পূণ্যের কাজ করেছিলেন। যার জন্য আপনি এতো ভালো একটা স্বামী পেয়েছেন। জানেন ম্যাডাম আপনার দায়িত্বে ছিলাম কাল আমি। রাত প্রায় একটা বাজে যখন রুমে আসবো তখন দেখি, আপনার স্বামী নামায পড়ছে আপনারি পাশে।
– আমি আর ঢুকতে সাহস করে ওঠতে পারিনি। ভেবেছি একটু পর আসবো। কিছুক্ষণ পর জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখি আপনার মাথার্ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আমি ঘন্টাখানেক পর আবার এসে দেখি উনি ঘুমিয়ে গেছে।
– জানেন আপু, আমার যখন জ্বর হয় আমার স্বামী তো পাশে থাকবে দূরের কথা রাতে মদ খেয়ে এসে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। মাঝে মাঝে বাহির থেকে নষ্টা মেয়েকে এনে রাত কাটায়। একটা বার আমার কথা চিন্তা করে না। তারপরও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি ও যেন ভালো হয়ে যায়। দোয়া করবেন আপনার ছোট্ট মেয়েটার মতো আমাদের যেন একটা রাজকন্যা হয়। আপনার মেয়েটাকে যখন দেখেছি মনে হয়েছে পূর্ণিমার চাঁদ। আর আমার স্বামীটা যেন আপনার স্বামীর মতো ভালো হয়।

– আচ্ছা, দোয়া রইল তোমার প্রতি। মৌ বিরক্তি নিয়ে কথাটা বলল!
– আচ্ছা ম্যাডাম আপনার হাসবেন্ড কোথায় গিয়েছে?
-মৌ কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। তার বলে দিল সে বাসায় চলে গেছে। পড়ে আসবে।
– আচ্ছা ম্যাডাম আসি আমি।
– ওকে! নার্স চলে গেলে। মৌ ভাবতে লাগল কেমনে সে হসপিটালে আসলে।
– হঠাৎ মনে পড়ল কাল রাতে যখন পার্টি থেকে ফিরছিলো এমন সময়, রাস্তায় একটা ছেলে সিঙ্গনাল দেয় দাঁড়াতে। যখন দাঁড়ায় তখন তাকে জোর করে নতুন বিল্ডিং কন্টাক্টশনে নিয়ে যায়। যখন জোর করে গায়ের কাপড় খুলতে লাগে । এমন সময় সে চিৎকার করে ওঠে। তারপর আর কিছু মনে নেই! তাহলে রাজই কি এখানে নিয়ে এসেছিল।

-তুমি হসপিটালে আমাকে একটাবার ফোন করেও জানাবে না ? জানো সারারাত আমি কত টেনশন করেছি। ঘুমাতে পারিনি। জানো না তুমি আমার কে?
– মৌ চেয়েই দেখে সাইফ তার সামনে দাঁড়ানো।
– সরি কি করবো, আমার জ্ঞান ফিরেছে সকালে।
– আচ্ছা, আর কোথাও আমাকে না নিয়ে যাবে না। আমাকে সাথে নিয়ে যাবে। আজ যদি ভদ্রলোক আমাকে ফোন করে না বলতো তুমি এই হসপিটালে আমি হয়ত এতোক্ষণে পাগল হয়ে যেতাম।
– যাও তো আমার কিছু হবে না। আর আমি তো মরে কথাটা শেষ করার আগেই সাইফ মৌ এর মুখটা ধরে ফেলল। মৌ এর ঠোঁটে ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দিল! এদিকে মৌ এর গায়ে শার্ট দেখে সাইফ চমকে ওঠল।
-সুইর্ট হার্ট তোমার গায়ে এ শার্ট কেমনে আসলো?
– মৌ তখন রাতের ঘটনা খুলে বলল! কিন্তু রাজের কথা বললো না।
– মৌকে সাইফ শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলল ‘ তোমার কিছু হলে আমি সত্যি মরে যাবো! ‘ তুমি আমাকে ছেড়ে কখনো যেয়ো না।
– আশ্চর্য জান তুমি এমন করছো কেন?আমি তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো না।
– চলো তোমাকে হসপিটালে থাকতে হবে না।
– আচ্ছা চলো।
– এমন সময় নার্স এসে বললো’ম্যাডাম উনি আপনার কে?
– মৌ মুচকি হেসে বলল ‘ আমার স্বামী। ‘
– নার্স চমকে গেল! নার্সের মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। মৌ সাইফ চৌধুরিকে নিয়ে বের হয়ে গেল। কিন্তু নার্সের মাথাটা কেন যেন ঘুরতে লাগল। মনে হচ্ছে তার সামনে সাপলুডু খেলা হয়ে গেল।

– এদিকে বাসায় এসে শুইয়ে ঘুম দিলাম।
– হঠাৎ কে যেন বারবার দরজা নর্ক করছে। রাইসার হাতটা বুক থেকে সরিয়ে দরজা খুলে দিলাম।
– দরজা খুলেই দেখি একটা নীল পরি দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। কথা ম্যাডামকে যে শাড়িতে এতো সুন্দর লাগে তা আগে জানা ছিল না।
– ভেতরে আসুন ম্যাডাম।
– কথা ম্যাডাম রুমে আসতে আসতে বলল’ রাজ আপনি আজ অফিসে যাননি কেন? হুয়াট রাজ তোমার মাথায় ব্যান্ডেজ কেন?
– তুমি একটা ফোন দিয়ে তো বলতে পারতে। আশ্চর্য এতটাই পর ভাবো?
– প্লিজ ম্যাডাম আস্তে কথা বলুন রাইসা ঘুমাচ্ছে।আর হ্যাঁ আপনার সাথে আমার মালিক-শ্রমিকের সম্পর্ক। আর মালিক শ্রমিকের সম্পর্ক যেমনটা হওয়া চায়। আমার মনে হয় তাতে কোন ঘাটতি নেই।
আর হ্যাঁ ম্যাডাম সপ্তাখানেক অফিসে যেতে পারব না। শরীরটাও বেশি ভালো না।
– শুধু সাতদিন না যতদিন পর্যন্ত সুস্থ না হবে ততদিন অফিসে যাওয়ার দরকার নেই।
-ধন্যবাদ ম্যাডাম!
– আমার মা কোথায় রাজ?
– আমার মা মানে?

-হুঁ রাইসা কোথায়!
– সরি ম্যাডাম রাইসার খুব সুন্দর একটা নাম আছে। সেটা ডাকলেই খুশি হবো। রাইসা এখন ঘুমাচ্ছে।
– হঠাৎ রাইসার ডাক ‘বাবাই তুমি কোথায় গেলে?’
– এইতো মা আমি। দৌড়ে রাইসার কাছে গিয়ে বললাম মা কি হয়েছে?
– বাবা খুদা লাগছে আমার খুব।
– আচ্ছা তুমি বসো আমি বাহির থেকে খাবার নিয়ে আসছি।
– বাবাই আমার জন্য কাচ্ছি বিরিয়ানি নিয়ে এসো!
-আচ্ছা মামনি।
– বাসা থেকে বের হয়েই অটোতে চড়ে সোজা নিউমার্কেট।
– নিউমার্কেটে ভালো একটা রেস্টুয়েন্টে যখন ঢুকবে। ভাগ্যের কি নির্মম খেলা, সেদিনের সে ছোট্ট মেয়েটা তার ভাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেছে খেতে। হঠাৎ দেখলাম মৌকে আর সাইফ কে। আমি আর রেস্টুরেন্টে ঢুকতে চেয়েও ঢুকলাম না। যখন বের হয়ে আসবো। এমন সময় মৌ এর গলা শুনতে পেলাম’ এই ওয়েটার এই সব আর্বজনা এখানে কেমনে আসে?
– আপনার এখানের পরিবেশটা ভালো মনে করেছিলাম।
– হঠাৎ রিত্ত তার ছোট ভাইকে বলল’ তোকে বলেছিলাম না এখানে আসা যাবো না। ‘
– ম্যাডাম, আপনারা খান আমরা চলে যাচ্ছি। কি করমু কন, ছোড ভাইডা কতদিন ধরে বলছে এই বড় হোটেল বিরিয়ানি খাবে তাই নিজে না খেয়ে ছোড ভাইয়ের জন্য ২৪৫ টাকা জমিয়েছি। ওকে খাওয়াবো। কিন্তু ম্যাডাম জানতাম না এখানে টাকা হলেই খাওয়া যায় না। সুন্দর পোশাক লাগে।
-রিত্ত তার ছোটভাইকে নিয়ে যখন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হচ্ছে। সবাই ছোট্ট মেয়েটা আর তাে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।ওয়েটার টাও করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। দাঁড়াও বলতে সাহস পাচ্ছে না ।
– মৌ আর সাইফ বার্গার খাচ্ছে আপন মনে। আমি রেস্টুয়েন্টে থেকে বের হয়ে যেতে চেয়েও রেস্টুয়েন্টে ঢুকলাম। তবে একা নয় রিত্ত আর তার ভাইকে নিয়ে।
– ওয়েটারকে বললাম তিন প্যাক কাচ্ছি বিরিয়ানি দাও। রিত্তের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কি হলো কাঁদিস কেন?
– নাহ ভাইয়া এমনি। ওয়েটার বিরিয়ানি টেবিলে রেখে ছলছল দৃষ্টিতে বলল ‘ ভাইয়া এই নেন!
– আমি স্পর্ষ্ট দেখতে পেলাম, ওয়েটারের চোখেও পানি।
– কি হলো রিত্ত খাচ্ছিস না কেন?
– ভাইয়া তোমার হাতে খাবো!
– ওহ্ আচ্ছা।
– খাওয়া শেষ করে, ওয়েটারকে যখন ১০০ টাকার বখশিশ দিয়েছি। ওয়েটার তখন নোটখানা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল’ ভাইয়া পৃথিবীর সেরা বখশিশ আমি পেয়েছি আপনার থেকে। যা হলো ভালোবাসা। টাকা লাগবে না। ছোট্ট বাচ্চা দুইটার মুখের হাসি আমার বখশিশ।রেস্টুরেন্টে মৌকে দেখলাম আঁড় চোখে তাকালো একবার। তারপর সাইফকে নিয়ে চলে গেল।
– এদিকে বাসায় গিয়ে দেখি, টেবিলে খাবার সাজানো। রাইসাকে গিয়ে সরি বললাম।
– মামনি এই নাও তোমার বিরিয়ানি ।
– বাবাই আন্টি বিরিয়ানি রেঁধেছে। চলো খাবে। জোর করে খেতে বসিয়ে দিল।

– দিনগুলি ভালোই কাটছিল মৌ এর। কোনকিছুর অভাব নেই। সাইফ তাকে যথেষ্ট ভালোবাসে। কিন্তু আজ হঠাৎ সাইফের মন খারাপ।
– মৌ সাইফের কাছে গিয়ে বলল’ কি হয়েছে?
– সাইফ মৌকে জড়িয়ে ধরে বলল’ জানো আজ অফিসের পিয়ন আমাকে সবার সামনে বলেছে স্ত্রীর কোম্পানিতে নেতামি করেন? বলেই চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছে!
– ওহ্ এই কথা কালই তোমাকে আমার কোম্পানি সব কিছু লিখে দিব।
-এসব লাগবে না।
– আরে তোমার থাকা মানে তো আমারি। চাই না কেউ তোমাকে হেয় করুক।
– পরের দিন মৌ তার সব সম্পদ সাইফকে লিখে দেয়।
– কয়েকদিন পর মৌ বলল ‘ আমি আমার বান্ধবীর বাড়িতে যাবো। তার বোনের বিয়ে। ফিরতে চারদিন লেট হবে। তুমিও চলো।
– সাইফ অফিসের কাজের কথা বলে মৌ কে একা পাঠিয়ে দেয়।

– মৌ বান্ধবীর বাসায় গিয়ে শুনতে পারে, বিয়ে হবে না। তাই রাতেই ব্যাক করে। বাসার সামনে এসে দেখে ‘রাত এগারোটা ছুঁই ছুঁই! মৌ মনে মনে ভাবল সাইফকে চমক দেবে। তাই দরজায় নর্ক না করে তার কাছে থাকা ডপ্লিকেট চাবি দিয়ে বাসায় ঢুকতেই দেখে তাদের রুমে বাতি জ্বলছে। মৌ এক দৌঁড়ে উপরে চলে যায়। এদিকে রুমের ভেতরে মেয়েলি কন্ঠের আওয়াজ শুনে মৌ চমকে যায়। জানালার পর্দা সরিয়ে দেখে সাইফ সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তারই অফিসের কলিগ ‘ নাসরিনের সাথে ””

চলবে”””’

বিঃদ্রঃভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন