বাবার ভালোবাসা পর্ব-১০+১১

0
330

বাবার_ভালোবাসা
পর্বঃ১০।
লেখাঃরাইসার_আব্বু।

– মৌ বান্ধবীর বাসায় গিয়ে শুনতে পারে, বিয়ে হবে না। তাই রাতেই ব্যাক করে। বাসার সামনে এসে দেখে ‘রাত এগারোটা ছুঁই ছুঁই! মৌ মনে মনে ভাবল সাইফকে চমক দেবে। তাই দরজায় নর্ক না করে তার কাছে থাকা ডপ্লিকেট চাবি দিয়ে বাসায় ঢুকতেই দেখে তাদের রুমে বাতি জ্বলছে। মৌ এক দৌঁড়ে উপরে চলে যায়। এদিকে রুমের ভেতরে মেয়েলি কন্ঠের আওয়াজ শুনে মৌ চমকে যায়। জানালার পর্দা সরিয়ে দেখে সাইফ সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তারই অফিসের কলিগ ‘ নাসরিনের সাথে মিথস্ক্রিয়ার ব্যস্ত! দু-জন দুজনকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে।
– মৌ কি করবে ভাবতে পারছে না। যে সাইফকে, এতটা বিশ্বাস করতো সে সাইফ আজ এরকম নোংরা খেলায় লিপ্ত! বুকের ভেতরটা বারবার দুমড়ে-মুচড়ে চাচ্ছে! কলিজা ফেটে যাচ্ছে। সাইফ কেন এমন করল? সাইফ, তো এমন ছিল না।
– আর সহ্য করতে না পেয়ে। দরজা ধাক্কা দিতেই সাইফ চমকে গেল! নগ্ন অবস্থায় দু’জন দু’জনের ওপরে শুইয়ে আছে।
– সাইফ তাড়াহুড়ো করে শরীরে কাপড় জড়িয়ে নিল! নাসরিন চাদর প্যাঁচিয়ে বিছানায় এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে রইল!
– মৌ এর চোখ দিয়ে অশ্রুর ফোরায়া নামতে শুরু করল।

– মৌ সরি। আমার ভুল হয়ে গেছে।
– ঠাস তোর লজ্জা করে না? সরি কাকে বলিস?তুই এতবড় চিট! সরি বললাম তো।
– তোর কোন ক্ষমা নেই!
-এদিকে নাসরিন তার কাপড় পরে রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছে।
– এই ছোটলোকের বাচ্চা কই যাস? তোর লজ্জা করে না আমার স্বামীর সাথে কুকর্ম করতে?
-সরি আপু আমার ভুল হয়ে গেছে। ক্ষমা করে দিয়ো আমায়। কোনদিন করবো না।
– তুই ক্ষমা চাচ্ছিস আমার কাছে? কাছে আয়।
– নাসরিন কাছে আসতেই মৌ নাসরিনের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে বলে ‘ এই নে তোর ক্ষমা বেশ্যা মেয়ে!

– ঠাস! তোর লজ্জা করে না? বেশ্যা বলতে আমাকে। আরে আমি যা করেছি তুই তো তার চেয়ে বেশি করেছিস। তুই তোর ফেরেশতার মতো বাচ্চাকে রেখে সাইফের সাথে কি করেছিস? আরে তোর হাজবেন্ডের অসুস্থতার সুযোগে নিজেকে সাইফের কাছে সর্পে দিয়েছিস।

– তুই এ মুহূর্তে এ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবি।
– আমার বাড়ি থেকে তাড়ানোর তুই কে?
– তোর বাড়ি কিভাবে? তোর তো কোন কিছুই নেই?
– কে বলছে কোন কিছুই নেই?
– আমার স্বামীর বাড়ি এটা। তুই এ মুহূর্তে এ বাড়ি থেকে বের হয়ে যাবি। নইলে তোকে ফুটবলের মতো লাথি দিতে দিতে বের করবো।
‘ ছোটলোকের বাচ্চা তোর কিভাবে সাহস হয়’ এই বলে আবার যখন মৌ নাসরিনকে চড় দিতে যায়। তখন কে যেন পিছন থেকে হাতটা ধরে ফেলে। মৌ পিছনে তাকিয়ে দেখে সাইফ।
– সাইফ তুমি?
– মৌ এর গালে চড় বসিয়ে দিয়ে বলল ‘ হ্যাঁ আমি। ‘আর তোর কিভাবে সাহস হয় আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার?
– তোমার স্ত্রী?
– হ্যাঁ নাসরিন আমার স্ত্রী। নাসরিনের কপালে চুমু এঁকে দেয়।
– তাহলে আমি কে?
– তুই আমার রক্ষিতা ছিলে। যতদিন তোর সম্পদ ছিলো ততদিন তুই রক্ষিতা হিসেবে ছিলে। আচ্ছা কিভাবে ভাবলে তুর মতো এক বাচ্চার মা’কে আমি বিয়ে করবো? যে কিনা তার স্বামীকে রেখে আমার সাথে রং তামাশায় ব্যস্ত। জানিস তোর হাসবেন্ডের কান্না এখনো আমার চোখে ভাসে। তুই তোর হাসবেন্ডের অসুস্থতার সময় তাকে ছাড়তে পারলে আমাকেও ছাড়তে পারবি। আর শোন নাসরিন আমার বিবাহিত স্ত্রী। নাসরিনকে মৌ এর সামনে বুকে টেনে নিল। নাসরিন শক্ত করে সাইফকে জড়িয়ে ধরল!শুধু তোর জন্য ওকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলাম। তবুও আমার ভালোবাসার মানুষ আমার স্ত্রীকর নিজের কর্মচারী বানিয়ে নিজের চোখের সামনে রেখেছিলাম। তোকে শুধু বিয়ে করেছিলাম তোর সম্পত্তিগুলে কারায়ত্ত করতে। ভেবেছিলাম কয়েকদিন পর তোকে সব বলবো। কিন্তু না সেটা হলো না। তার আগেই সারপ্রাইজ দিয়ে দিলি। কি হলো কাঁদছিস কেন? তোর ছোট্ট মেয়েও বিয়ের আসরে কেঁদেছিল। সেদিন বুঝেছি তুই মেয়ে নামে কলঙ্ক। কিন্তু নাসরিন এর কথা মতো তোকে বিয়ে করি। আর, মুহূর্তে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবি। ড্রয়ার থেকে ডির্ভোস পেপারটা নিয়ে এসে বললো’এই নে একটা সাইন করে দিস। ‘

– মৌ এর চোখদিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। মনে হচ্ছে বুকের উপর কেউ পাথর তুলে দিয়েছে।
– কি হলো এখনো দাঁড়িয়ে রইলি যে? নাকি আমাদের স্বামী স্ত্রীর রোমাঞ্চ দেখার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন?
‘ আচ্ছা দাঁড়াও ‘ এই বলে নাসরিনের ঠোঁটের সাথে সাইফ নিজের ঠোঁটটা মিলিয়ে দিল!

– মৌ এক দৌড়ে বাসা থেকে নেমে পড়ল। আজ তার কিছুই নেই। নিজের শরীরটার দিকে নিজেরি তাকাতে বড্ড ঘৃণা লাগছে। এই মুখ নিয়ে রাজের সামনেও যেতে পারবে না । পারবে না না মেয়ের মুখে মা ডাক শুনতে। মাঝ রাস্তা দিয়ে হাটঁছে।

– এদিকে কথা, তার বান্ধবীর বিয়ে শেষ করে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। মাঝরাস্তায় কাউকে দেখা যাচ্ছে। হুইসেল দিচ্ছে দূর থেকে তবুও সরছে না। কথা তাই গাড়ি ব্রেক করে। গাড়ি থেকে নেমে, মেয়েটাকে ডাক দেয় ‘ এই মেয়ে মাঝরাস্তায় হাঁটছো কেন?’

– মৌ পিছন দিকে তাকাতেই কথা চিনে ফেলে এটা মৌ! আপনি এতোরাতে? মাতালের মতো হাঁটছেন কেন?
– মৌ কথাকে দেখে কান্না করে দেয়।
– কি হলো ছোট্ট বাচ্চার মতো কাঁদছেন কেন?
– আপু আমার সব শেষ! আমার বাবার সব সম্পদ লিখে নিয়ে এখন, আমাকে সাইফ ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আমার যাওয়ার মতো কোন জায়গা নেই। তাই ভাবছি সুসাইড করবো। আমি আর বাঁচতে চাই না। এই মুখ আমি কাকে দেখাবো? যে আমাকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতো। তাকে ছোট লোক ছাড়া কোন কথায় বলিনি। প্রতিটি পদে পদে তাকে অপমান করেছি। তারকাছে ক্ষমা চাওয়ারো যোগ্যতা নেই আমার।
– আচ্ছা আপু যায় কেউ নাই তার আল্লাহ আছে। আর সুসাইড করার কথা বলো না এতে আল্লাহ নারাজ হয়। আর কিছু মনে না করলে আমার বাড়িতে চলো। পরে কোন ব্যবস্থা হলে চলে যেয়ো।
-মৌ কিছু না বলে কথার সাথে গাড়িতে উঠে পড়ে। বাসায় এসে কথা তার বাবাকে সব বলে। কথার বাবা মৌকে তাদের অফিসে জয়েন করতে বলে।
– মৌ কোনকিছু না ভেবেই হ্যাঁ বলে দেয়।

– পরের দিন সকালে রাইসা আমার কপালে চুমু দিয়ে বলল’ বাবাই উঠবে না? আমার স্কুলের সময় হলো যে।
– আমি ঘুম থেকে ওঠে রাইসার কপালে চুমু দিয়ে বললাম’উঠতে হবেই তো, আমার মা যে স্কুলে যাবে। রাইসাকে রেডি করে বাড়ির বাহিরে বের হতেই দেখি কে যেন গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একটু কাছে যেতেই বুঝতে পারলাম এটা সাথি। বুঝতেছি না মেয়েটা কেন যে এতো পাগলামি করে।
-আমি একটা রিক্সা ডাক দিতেই। সাথি বললো’ আমি ওদিকেই যাচ্ছি। চলো তোমাদের লিফট দেয়।
– লাগবে না। ধন্যবাদ।
– রাইসা আমাকে নিচু হতে বলল।
-আমি নিচু হলেই। রাইসা কানে কানে বলল ‘ বাবাই একটা কথা বলি রাগ করবে না তো?’
-হুম বলো মামনি।
– জানো বাবাই এই আন্টিটা প্রতিদিন আমাকে মম ডাকতে বলে। অনেক চকলেট কিনে দেয় আমায়। আমি নেয়নি বাবাই। বলেছি, আমার বাবাই আমাকে অনেক চকলেট কিনে দেয়!
– রাগ করলে বাবাই?
– রাইসার কপালে চুমু দিয়ে বললাম’ নারে মামনি। রাগ করবো কেন?
– কি হলো উঠবে না?
– না উঠবো না। দরকার হলে হেঁটে যাবো।হেঁটেই রওয়ানা দিলাম।
– এমন সময় সাথি দৌঁড়ে এসে সামনে দাঁড়ালো।
– কি হলো সামনে দাঁড়ালে কেন? তুমি যদি গাড়িতে না উঠে তাহলে আমি সবাইকে ডেকে বলবো তুমি পঁচা কথা বলেছো।
– এ্যাঁ বললেই হলো। আমার বাবাই কাউকে পঁচা কথা বলতে পারে না।
– প্লিজ গাড়িতে উঠো। সাথি এক প্রকার জোর করেই গাড়িতে করে রাইসাকে স্কুলে পৌঁছে দিল।
– রাইসাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে। সাথি একটানে একটা পার্কে নিয়ে এসে পড়ে।
– পার্কে নিয়ে আসলেন কেন? অফিসে যেতে হবে।
– ধ্যাত কিছুই বুঝো না কেন তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি?
– কেন নিয়ে এসেছো?
– আমি তোমাকে ভালোবাসি রাজ। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তোমার মেয়ে আছে কোন প্রবলেম নেই। আজ থেকে রাইসা আমারো মেয়ে। আমার কোন সন্তান লাগবে না। জানো রাজ বার্থডে পার্টিতে যখন তোমায় কন্ঠে প্রথম গান শুনি তখনি তোমার প্রেমে পড়ে যায়। তারপর যত বারই তুমি আমার সামনে এসেছো ততই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি আমি। নিজের অজান্তেই আমার এ মনটা তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। তোমাকে ছাড়া আমি কিছুই ভাবতে পারি না। প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝো না। এই বলে সাথি আমাকে জড়িয়ে ধরে।
– আমি সাথিকে সড়াতে পারছি না। পারছি না সাথির পাগলামীগুলো নিতে। সাথিকে ছাড়িয়ে কষে একটা থাপ্পর তার গালে বসিয়ে দেয়।
-কি হলো একটা মারলে কেন? আরো, মার।সত্যিই কি, কাউকে মনে-প্রাণে ভালোবাসা অন্যায়? তুমি মারতে মারতে আমাকে মেরে ফেললেও বলবো তোমাকে ভালোবাসি। জানো ইচ্ছা করলে শহরের নামকরা ধনীর ছেলেকে বিয়ে করতে পারি। কিন্তু ভালোবাসতে পারি না। আমি শুধু তোমাকে চাই রাজ। তোমার মেয়ের মা হতে চাই।
– আমি পার্ক থেকে সোজা বের হয়ে এসে পড়লাম। পিছু ফিরে তাকালাম না। জানি পিছু ফিরে তাকালে অজানা মায়ার আবদ্ধ হয়ে যাবো ।
– পার্কে থেকে একটা গাড়ি করে অফিসে এসে বসতেই পিয়ন বলে গেল ম্যাডাম আমাকে ডাকছে।
– পিয়নের কথা শুনে ম্যাডামের রুমে গিয়ে দাঁড়াতে ম্যাডাম বসতে বলল।
– কেমন আছো?
– জ্বি ভালো।
– পায়ের কি অবস্থা?
– আলহামদুলিল্লাহ পুরোপুরি সুস্থ।
– আচ্ছা রাজ নীল শাড়িতে আমাকে কেমন লাগছে?
– আমি নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম। ভালো ।
– শুধু ভালো? আচ্ছা চলো।
– কোথায় ম্যাডাম?
– বলছি চলো।
– ম্যাম আমাকে নিয়ে শপিংমলে ঢুকল। কয়েকটা শাড়ি কিনল। রাইসার জন্য কয়েকটা ড্রেস সাথে আমার জন্য নীল রঙের একটা পাঞ্জাবী। জোর করেই হাতে ধরিয়ে দিল।
-আচ্ছা রাজজ কাল এটা পরে আসবে কেমন?
– যদি না পরে আসি?
– হয় খুন হবো না হলে খুন করবো বলে কথা হেসে দিল।
-পরের দিন যথারীতি, অফিসে যাওয়ার জন্য যখন রেডি হচ্ছিলাম তখন তিনটা কার্র এসে বাড়ির নিচে এসে দাঁড়ালো।
– একটা বয়স্ক লোকের সাথে সাথিকেও দেখলাম।
– আমি রেডি হয়ে যখনি রাইসাকে নিয়ে বের হবো তখনি ‘ সাথি রুমে এসে হাজির। ‘
-সাথির সাথে আরো কয়েকজন চাচার বয়সী লোক।

– রাজ আমার বাবা।
– আমি সালাম দিয়ে বসতে বললাম।
– বাবা বসতে আসিনি। তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।
– জ্বি আঙ্কেল বলেন?
– জানি না কথাটা তুমি কিভাবে নিবে। আমার একমাত্র মেয়ে সাথি। ছোটবেলায় ও মা মারা যায় সড়ক দুর্ঘটনায়। ওর জন্য আমি আর বিয়ে করিনি। তোমাকে নাকি ভালোবাসে। কাল সে জন্য ওর গায়ে প্রথম হাত তুলেছি। কিন্তু মেয়ের জেদের কাছে হার মেনেছি। আমার মেয়ে তোমাকে ছাড়া বাঁচবে না বাবা। তুমি আমার মেয়েটাকে বিয়ে করো। যা চাও তাই দিবো। তবু পাগলামীটাকে বিয়ে করো।
– আঙ্কেল ক্ষমা করবেন। আপনি যেমন আপনার মেয়ের কথা চিন্তা করে বিয়ে করেননি। তেমনি,আমিও পারব না। কারণ আমার কলিজার টুকরা রাইসার সৎ মা আনতে পারবো না ক্ষমা করবেন। আঙ্কেল আর কিছু বললো না। সাথিকে নিয়ে চলে গেল।

-আমি রাইসাকে স্কুলে রেখে। অফিসে পা রাখতেই বুকের ভেতরটা কেমন করে ছ্যাঁত করে ওঠলো। কথা ম্যাডাম সবার সাথে মৌকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
– এই যে রাজ, এতোক্ষণ লাগল তোমার। যাইহোক তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
– শোন রাজ এই হচ্ছে মৌ। আমাদের কোম্পানিতে আজ থেকে কাজ করবে। আর তোমার কলিগ এটা!
– মৌ সকলের সাথে পরিচয় হয়ে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেই আমি সালাম দিয়ে কেটে পড়লাম। যে হাতটা ছেড়ে দিয়েছি সে হাতটা আর কিভাবে ধরব। কথা আমার হাত ধরে টানতে টানতে তার ডেস্কে নিয়ে মৌ এর বিষয়ে সব বলল। তার হাসবেন্ড চিট করেছে!
– আমি কিছু বললাম না। ডেস্কে এসে কাজ করছি। কোন কাজেই মন বসছে না। হঠাৎ ফোনটা বেজে ওঠল’।
-ফোনটা রিসিভ করতেই।
– হ্যালো রাজ, আমি সাথির বাবা বলছি। সাথি বাসায় এসে ঘুমের পিল নিয়েছে অনেকগুলো। এখন হসপিটালে আছে। প্লিজ বাবা ””’

চলবে””””’

বিঃদ্রঃভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

বাবার_ভালোবাসা।
পর্বঃ১১
লেখাঃরাইসার_আব্বু।

– এই যে রাজ, এতোক্ষণ লাগল তোমার। যাইহোক তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
– শোনো রাজ এই হচ্ছে মৌ। আমাদের কোম্পানিতে আজ থেকে কাজ করবে। আর তোমার কলিগ এটা!
– মৌ সকলের সাথে পরিচয় হয়ে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেই আমি সালাম দিয়ে কেটে পড়লাম। যে হাতটা ছেড়ে দিয়েছি সে হাতটা আর কিভাবে ধরব। কথা আমার হাত ধরে টানতে টানতে তার ডেস্কে নিয়ে মৌ এর বিষয়ে সব বলল। তার হাসবেন্ড চিট করেছে!
– আমি কিছু বললাম না। ডেস্কে এসে কাজ করছি। কোন কাজেই মন বসছে না। হঠাৎ ফোনটা বেজে ওঠল’।
-ফোনটা রিসিভ করতেই।
– হ্যালো রাজ, আমি সাথির বাবা বলছি। সাথি বাসায় এসে ঘুমের পিল নিয়েছে অনেকগুলো। এখন হসপিটালে আছে। প্লিজ বাবা তুমি একটু আসো হসপিটালে।
-কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম ‘ আঙ্কেল আপনি কোন হসপিটালে আছেন ঠিকানাটা দেন আমি আসছি।’ বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
– কোথায় যাবে রাজ?
– হসপিটালে যাবো?
– হসপিটালে কেন রাইসার কিছু হয়েছে?
– আরে না। সাথি ঘুমের পিল নিয়েছে। আঙ্কেল ফোন করে জানালো।
– কী বলছো এসব? সাথি এমনটা করবে ভাবতেও পারিনি। কথার বুকের ভেতরটা কেমন করে ওঠল। রাজকে হারানোর ভয় হচ্ছে। মন চাচ্ছে সব বলে দেয়।

– কি হলো ম্যাডাম ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? আচ্ছা ম্যাডাম আমি কি এখন হসপিটালে যেতে পারি?

– আচ্ছা তুমি যাও। আমি রাইসাকে নিয়ে পড়ে যাবো।
-ধন্যবাদ ম্যাম।
– একটা গাড়ি করে হসপিটালের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। রাস্তা যেন শেষ হচ্ছে না।

– আচ্ছা ম্যাডাম আপনাকে একটা কথা বলতে পারি?
– হুম। অবশ্যই।
– একটু আগে মিঃ রাজ কোথায় গেল?

-ওহ্ আর বলো না আমার বান্ধবী রাজকে ভালোবাসে। আর রাজ ভালো না বাসায় সুসাইড করতে চেয়েছিল। এখন হসপিটালে। সন্ধ্যায় রাইসাকে নিয়ে দেখতে যেতে হবে।

– কথার কাছে এমন কথা শুনে মৌ এর বুকের ভেতরটা চুর-মার হয়ে যাচ্ছে। কেন কষ্ট হচ্ছে রাজকে তো তাড়িয়ে দিয়েছি। ম্যাম আমি কি আপনাদের সাথে সন্ধ্যায় যেতে পারি?
– আচ্ছা ঠিক আছে। আপনি আপনার ডেস্কে যান আমি রাইসাকে নিয়ে আসতে যাচ্ছি।

– এদিকে আমি হসপিটালে যেতেই বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠলো। আজ আমার জন্য সাথি মরতে বসেছে। নিজেকে বড্ডবেশি অপরাধী মনে হচ্ছে। আনমনে হেঁটে হেঁটে সাথির রুমের সামনে আসতেই আঙ্কেলকে দেখলাম। চেয়ারের বসে আছে বিষন্ন মনে।
– আমাকে দেখেই আঙ্কেল বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলল’ বাবা আমার মেয়েটা ছাড়া কেউ নেই। ওকে তুমি বাঁচাও। সাথির বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ-মাউ করে কাঁদছে। আঙ্কেলকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

– আঙ্কেল প্লিজ কাঁদবেন না। সাথির কিছুই হবে না।
– জানো বাবা কাল রাত না খেয়ে দরজা আকটিয়ে শুয়ে পড়ে। আজ সকালে অনেক ডাকাডাকির পর যখন দরজা খুলছিল না। তখন দরজা ভেঙে আমার মেয়েকে ফ্লরে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠি। এই নাও বাবা এই চিঠিটা সাথির হাতে ছিল।

– আমি আঙ্কেলের কাছ থেকে চিঠিটা নিয়ে পড়তে লাগলাম।
– প্রিয় রাজ,
তুমি যখন চিঠিটা পড়বে হয়তো তখন আমার অস্তিত্ব এ পৃথিবীতে থাকবে না। জানি না আর কখনো তোমার মায়াবী মুখটা দেখতে পারব কি না। জানো তোমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি। শুধু তোমাকেই নয় আমি রাইসাকেও বড্ড বেশি ভালোবাসি। চেয়েছিলাম রাইসার মা হবো। কিন্তু আমার ভাগ্যে নেই। চাঁদ ছোঁয়ার ক্ষমতা যেমন কারো থাকে না তেমনি তোমাকে ছোঁয়াও আমার ভাগ্যে হলো না। জানো তোমার বুকে একটু আশ্রয় চেয়েছিলাম দাওনি। কি করবো বলো এ জীবন দিয়ে যে জীবনে তোমাকে পাবো না। আমার ভালোবাসা তো নিঃস্বার্থ ছিল। তোমাকে বেশি ভালোবাসা কি আমার অপরাধ। বার্থডে পার্টিতে যাকে এক পলক দেখেই এই হৃদয়ে স্থান দিয়েছি। খুব কষ্ট হচ্ছে। আচ্ছা রাজ যদি মারা যায় আমায় একটু জড়িয়ে ধরো। আমার আত্মাটা শান্তি পাবে। ক্ষমা করে দিয়ো আমাকে। তোমাকে ইহকালে না পেলেও পরকালো চাই।

-চিঠিটা শেষ করতেই বুকের ভেতরটা হু-হু করে ওঠলো। চিঠিটা বুক পকেটে রেখে চেয়ারে গিয়ে বসতেই ডাক্তার বলল রোগির জ্ঞান ফিরেছে।
– আঙ্কেল ছোট বাচ্চার মতো দৌড়ে রুমে গেল।
– সাথি আস্তে আস্তে চোখ খুলছে।
– কিরে মা বুড়ো বয়সে কার কাছে আমাকে রেখে চলে যেতে চেয়েছিলি? আমাকে ঘুমের পিল খাইয়ে তারপর তুই খেতি। বাবা আমি বাঁচতে চাই না।
– চুপ কর তুই। রাজকে যেভাবে পায় হাতজোড় করে হলেও তোর জন্য ওকে চাইব। তবুও মরার কথা বলিস না। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে আছি। আঙ্কেল আমাকে দেখে রুম রুম থেকে বের হয়ে গেল। আমি এক পা দু’পা করে সাথির কাছে যেতেই সাথি মুখটা ঘুরিয়ে নিল।

– এদিকে মৌ অফিসের ডেস্কে বসে বসে ভাবছে ‘রাজ আমাকে কি ক্ষমা করবে? ‘আমি হিরাকে কাচ ভেবে যে ভুল করেছি জানি না এ ভুলের ক্ষমা পাবো কি না। নিজের মেয়েটাকে থাপ্পর দেওয়ার কথা মনে পড়তেই কেমন যেন শরীরটা শিউরে ওঠে। এমন সময় খেয়াল করল একটা রাজকন্যা কথার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে। এ সুন্দর কোন বাচ্চা হতে পারে। একদম রাজকন্যার মতো এসব ভাবতেই চোখে জল এসে যায়। নিজের মেয়ের সৌন্দর্যটাকেও এতদিন ফিল করতে পারেনি।
– মৌ আপনি নাকি হসপিটাল যাবেন?
‘ হুম চলেন’

এই বলে চোখের পানি মুছে। ঠিক তখনি রাইসা মৌকে দেখে চমকে যায়। রাইসার খুব করে মন চাচ্ছে মৌকে জড়িয়ে ধরে মম ডাকতে। কিন্তু না বাবাইকে যে কষ্ট দিয়েছে মম। বাবাইকে কথা দিয়েছে আর কখনো কাউকে মম ডাকবে না।

-রাইসা মামনি তুমি কাঁদছো কেন?
– না আন্টি কাঁদছি না। মম এর কথা খুব মনে পড়ছিল তো তাই।
– কথা রাইসার দু’গালে চুমু দিয়ে বলল আমিই তোর মম।
– না আপনি আমার আন্টি।
– এমন সময় কথার চোখ যায় মৌ এর দিকে। মৌ এর চোখে পানি।
– কথা কিছু না বলে রাইসা আর মৌকে নিয়ে হসপিটালে রওয়ানা করে। মাঝপথে এসে হঠাৎ কথার মনে পড়ে বার্থডের কথা। রাইসা মৌকে জোর করেই মম ডেকেছিল। কিন্তু কেন?
– কথা গাড়ি ব্রেক করে মৌকে জিজ্ঞেস করে মৌ আপনাকে একটা প্রশ্ন করি?
– হ্যাঁ করেন।
– আচ্ছা আমার বার্থডে পার্টিতে আপনাকেই তো রাইসা মম ডেকেছিল। অনেক কিছু বলেছিল তাই না? আচ্ছা তুমি কি সত্যি রাইসার মম? মিথ্যা বলবে না।
– মৌ চোখের জল মুছে বলবে হ্যাঁ রাইসা আমার মেয়ে। ঠিক এমন সময় রাইসা বললো -আন্টি আমি বলছি। জানো কথা আন্টি সেদিন আমার ভুল ছিল। কারণ আমার মম অনেকটাই দেখতে উনার মতো ছিল। তাই বার্থডেতে মম ডেকেছিলাম। কিন্তু আমার মম তো আমাকে আর বাবাইকে রেখে মারা গিয়েছে। তাই না আন্টি।
– মৌ এর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল রাইসা।
– মৌ কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়ালো।

– এদিকে অনেকক্ষণ ধরে বিছানায় পাশে বসে আছি আমি। সাথি অন্যদিকে ফিরে আছে। আমি স্পর্ষ্ট বুঝতে পারছি সাথি অন্যদিক ফিরে কাঁদছে।
– কি হলো কাঁদছেন কেন?
– আমি কাঁদলেই কারো কি আসে যায়।
– প্লিজ কাঁদবেন না।
– আচ্ছা কাঁদবো না আমায় সারাজিবনের জন্য আপনার বুকে জায়গা দিবেন?
– আশ্চর্য এসব কেন বলছো? শোন প্লিজ আর পাগলামী করো না। তোমার বাবার তোমার ছাড়া কেউ নেই। তাই এসব করো না আর। মানুষটাকে কষ্ট দিয়ো না।
– আমি বাঁচতে চাই না রাজ। আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না
– আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। আর হ্যাঁ ভুলে যেয়ো না আমি বিবাহিত। আমার মেয়ে আছে।
– আমি কিছুই জানতে চাই না আমি শুধু তোমাকে চাই। আর রাইসা আমার মেয়ে।
– রাজ আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। আমি পারছি না। মনে হয় মরেই যাবো একটু বুকে নাও না। এ কথা বলে সাথি আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি ছাড়ানোর শক্তি পাচ্ছি না। মেয়েটা ছোট্ট বাচ্চা যেমন ভয় পেলে কাউকে জড়িয়ে ধরে। সেভাবে জড়িয়ে ধরে আছে। চোখের পানিতে আমার বুক ভিজিয়ে ফেলছে। আমি ছাড়াতে চেয়েও ছাড়াতে পারছি না।
– এদিকে বাবাই ডাক শুনে চমকে গেলাম। চেয়েই দেখি কথা মৌ আর রাইসা। এদিকে সাথি শক্ত করে জড়িয়ে আছে।
– মৌ এর দিকে তাকাতেই বুঝলাম তার চোখ দিয়ে বাঁধলের দ্বারা নামবে।
– এদিকে কথার কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কেন কষ্ট হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না। মন চাচ্ছে সাথিকে রাজের বুক থেকে সরিয়ে দেয়। তাও এসব সহ্য হচ্ছে না। রাজটাও যে কি মেয়ে মানুষের কোমল স্পর্শ সামলাতে পারছে না।
কিছু একটা করতে হবে এ ভেবেই সাথিকে বলল’ এই সাথি আর কতো জড়িয়ে ধরে থাকবি? বিনা টিকেটে সিনেমা তো প্রায় সম্পূর্ণ দেখে ফেলেছি। সাথি কথার কথা শুনে আমাকে ছেড়ে দেয়। আমি মাথা নিচু করে আছি। রাইসা আমার ডান সাইডে এসে বসল। এমন সময় আঙ্কেল এসে বলল ‘ বাবা রাজ তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই। ‘
– জি আঙ্কেল বলেন?
– বাবা আমি তোমার কাছে করোজোড়ে অনুরোধ করি আমার মেয়েটাকে তুমি বিয়ে করো। আমার মেয়েটাকে বাঁচাও। সাথি তোমাকে সত্যি অনেক ভালোবাসে। নেক্সট টাইম আবার যদি এমন পাগলামী করে তাহলে ওকে বাঁচানো যাবে না। প্লিজ আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট করো না বাবা।

– আচ্ছা আঙ্কেল।
– মৌ আমার মুখে এমন কথা শুনে তাড়াহুড়া করে বের হয়ে গেল রুম থেকে।

– মৌ বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে চোখ থেকে টপটপ করে জল পড়ছে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে রাজের বিয়ের কথা শুনে। কিভাবে বাঁচবে সে। রাজের বিয়ের কথা শুনেই নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। আন্টি আপনি এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন সবাই খুঁজছে আপনাকে!
– মৌ পিছন দিকে তাকাতেই দেখে তারই রাজকন্যাটা দাঁড়িয়ে।
– আচ্ছা যাচ্ছি। আমার কাছে এসো মামনি।
– রাইসা কাছে আসতেই মৌ রাইসাকে বলল ‘ এক বার মা ডাকবে আমাকে?’
– আমার মা মারা গিয়েছে। এ ছাড়া এখনো আমার বাবাকে মারার কথা আমার মনে পড়ে।এই দেখেন আন্টি আমার ঠোঁটে কাটা দাগ এটা মম ডাকার জন্য।

– মৌ আর কিছু বলতে পারে না। এখনো ছোট্ট মুখটাতে কাটা দাগ দেখা যায়।

– মৌ চোখের পানি মুছে রুমে আসতেই দেখে রাজ আর সাথি একসাথে বসে আছে। কথা কোন কথা বলছে না।

– এদিকে আঙ্কেলকে কথা দিয়েছি। সাথি হসপিটালে সারাক্ষণ আমাকে সাথে রেখেছিল। কোনভাবেই ছাড়ছে না। রাত্রিবেলা মৌ আর কথা রাইসাকে নিয়ে চলে যেতে চাইলে সাথি বাধা দেয়। সাথি রাইসাকে বুকে নিয়ে সারারাত শুইয়ে থাকে। রাইসাও কিছুটা আঁচ করতে পেয়েছে।
-পরের দিন অফিস থেকে ছুটি নিয়ে কথাকে বললাম রাইসাকে যেন দেখে রাখে।
– সাথি মোটামুটি সুস্থতাবোধ করলে ওকে বলি আমরা একটা জায়গায় বেড়াতে যাচ্ছি। -সাথি খুশিতে আমাকে জড়িয়ে ধরে। সাথিকে ছাড়িয়ে বললাম ‘ যাও আজ সুন্দর করে সাজবে। যেন তোমার মাঝে হারিয়ে যেতে পারি।
– সাথি চলে গেল রুমে। প্রায় ঘন্টাখানেক পর বের হলো, নীল পরীর সাজে।
– নীল শাড়িতে এতটা সুন্দর লাগে সাথিকে হয়তো না দেখলে অজানাই থেকে যেতো। চোখের কোণে কাজল দেওয়াতে সাথিকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। যে কেউ তাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলবে। আমি সাথিকে নিয়ে রওয়ানা দিলাম। প্রায় ৪ ঘন্টা জার্নি শেষে অবশেষে কাঙ্খিত জায়গায় এসে পোঁছালাম। সারারাস্তায় সাথি আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছিল। কিন্তু আজকের পর আর কখনো এভাবে ধরবে না । গাড়ির দরজা খুলে বললাম আসো।
– সাথি গাড়ি থেকে নেমেই কেমন যেন চমকে গেল। রাজ তুমি এখানে কেন নিয়ে আসলে? আমার ভয় হচ্ছে। ভয়ের কিছু নেই আজকের পর আর তুমি ””’ চলবে ””

বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন