বৃষ্টিস্নাত তুমি পর্ব-০৫

0
337

#বৃষ্টিস্নাত_তুমি – (৫)
হুযাইফা মাইশা

‘ নাটক করছেন এত রাতে? মায়ের সাথে কথা বলেছি না? এবার ফিরে যান!’
‘ তুমি কি ভেবেছ? প্রতিদিন এভাবে ছুটে ছুটে আসবো? মাকে মিথ্যা বলবো? তোমার জন্য করবো এসব?’
‘ সত্যি বলে দিবেন। আমি কি বলেছি নাকি আমার জন্য মিথ্যে বলতে?’
‘ আবার একই কথা! মা কষ্ট পাবে সেটা তুমি চাও?’

দমে গেলো পূর্ণতা। কাজল ভীষণ ভালোবাসেন ওকে। ঠিক নিজের মেয়ের মতো। উনাকে এসব বললে আস্তে আস্তে সেটা পূর্ণতার বাবার কানেও যাবে। তখন কি ঘটবে ভাবতেই গা কেঁপে উঠে। পূর্ণতাকে গভীর ভাবনায় দেখে মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে ইয়াভকিন আগের ন্যায় তাড়া দিয়ে বলল,
‘ যাও, ব্যাগ গুছাও! এক পা ও নড়বোনা নাহলে।’
‘ আমার কালকে পরীক্ষা আছে।’
‘ তো? আমার ফ্ল্যাট থেকে পরীক্ষা দিতে গেলে কি ভার্সিটিতে ঢুকতে দিবেনা নাকি?’

অসন্তুষ্ট নজরে একবার তার দিকে তাকিয়ে ধপধপ পা ফেলে বাড়ির ভেতর গেল পূর্ণতা। পিছু ফিরে একবার সরাসরি ইয়াভকিনের চেহারার দিকে তাকিয়েছে শুধু। আগু’ন ঝড়ছিল যেন দৃষ্টি! ভ’স্ম করার ক্ষমতা আছে যেন মেয়েটার!
ইয়াভকিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ছিল।

বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে যাওয়ার আগে বলে এল। নওশিন, বর্ষা আগে থেকেই বলছিল এভাবে থাকা ঠিক না। সুতরাং আসার সময় তেমন কোনো কিছু বললনা। পূর্ণতা বের হয়ে দেখল ইয়াভকিনের গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে। আগের ন্যায় রাগান্বিত দৃষ্টি নিয়ে এগিয়ে গেল সেদিকে।

একধ্যানে গাড়ি চালাচ্ছে ইয়াভকিন। কিঞ্চিৎ কুঁচকানো ভ্রু আর কয়েকটা ভাঁজ পড়া কপাল দেখে বুঝার জো নেই আপাতত তার মস্তিষ্কে কি চলছে। পাশে বসা উৎকন্ঠা পূর্ণতাও আড়চোখে তাকাচ্ছে। না চাইতেও! কি ভীষণ অস্থির দেখাচ্ছে ওকে। অথচ, ড্রাইভিং সিটে বসা পুরুষটা কি শান্ত, নিশ্চুপ।

ফ্ল্যাটে যাওয়ার বদলে কোনো এক বড় রেষ্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামাল ইয়াভকিন। পূর্ণতা চকিত নয়নে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করার সময় ইয়াভকিন বেরিয়ে গেছে গাড়ি থেকে। জানালার ধার ঘে’ষে মাথা মৃদু বের করে নিচু স্বর দিয়ে উচ্চারণ করল পূর্ণতা,
‘ যাচ্ছেন কোথায়? এখানে কি?’

অন্য ধার হতে এদিকটায় ততক্ষণে ঘুরে চলে এসেছে ইয়াভকিন। পূর্ণতার দিকের দরজাটা খুলতে উদ্যত হতে হতে বলল,
‘ বাসায় খাওয়ার কিছু নেই। রাতে না খেয়ে থাকবে? তোমার এতো ইচ্ছা থাকলে, বসো। আমি খেয়ে আসছি। আর যদি ইচ্ছা থাকেনা, তাহলে প্রশ্ন না করে নেমে আসো।’
‘ আপনি না বাইরের খাবার খাননা?’
‘ আজ খাবো। ক্ষিদে পেলে বাইরের খাবার আর আনহেলদি লাগেনা। বুঝেছ?’

দরজা খুলে একটু দূরত্ব বাড়িয়ে দাঁড়াল ইয়াভকিন। পূর্ণতা ঠায় বসে। এলোমেলো কেশগুলো পেছনে ঢিলে ভাবে হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে আটকানো, কয়েক গোছা চুল বাঁধনছাড়া হয়ে দু’পাশে পড়ে আছে। গায়ে হালকা গোলাপি রঙের সাধারণ কামিজ। এই অবস্থায় এই রেষ্টুরেন্টে যাওয়া চলে? বাইরের চাকচিক্য জানান দিচ্ছে এই রেষ্টুরেন্টটা কতোটা নামী-দামী! আসার সময় ঠিকঠাক মতো চুলও বাঁধেনি। এই রাতের বেলা এই অবস্থায় কে-ই বা তাকাবে ওর দিকে।

পূর্ণতা নামছেনা দেখে ইয়াভকিন ধ’ম’কে উঠল,
‘ না খেয়ে থাকার ইচ্ছে এতো?’
‘ এই অবস্থায় ওখানে যাওয়ার মানে হয়? আপনি যান। আমি বসছি।’

ইয়াভকিন চোখ বুলাল ওর দিকে। গভীর পর্যবেক্ষণ যাকে বলে! আশ্চর্য, এই অবস্থায়ও এই সাধারণ মেয়েটাকে ওর কাছে অসাধারণ লাগছে! কারণ কি?
পূর্ণতা অস্বস্থির তলানিতে। শব্দ করে হাত বাড়িয়ে গাড়ির দরজা লাগিয়ে দিল। ইয়াভকিন গটগট পায়ে রেষ্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকল।
সুপ্ত রাগ মাথায় উঠল তখন পূর্ণতার। রাগ নাকি অভিমান, ও-ই ভালো জানে। লোকটা নিশ্চয়ই একা একা খেয়ে দেয়ে চলে আসবে। বাসায় গিয়ে দিব্যি নিশ্চিন্তে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমাবে। কিন্তু ও? না খেয়ে সারা রাত জেগে পড়বে? কি নির্দয় এই লোক! বাবা-মা কি করে এই লোকের এতো প্রশংসা করে!

বেশ কিছুক্ষণ পর ইয়াভকিনকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল। একহাতে খাবারের প্যাকেট। গাড়ির কাছটায় দাঁড়িয়ে পেছনের দিকে প্যাকেট গুলো রেখে সামনে এসে বসল। সব কিছুই চমকিত নেত্রযুগলে, নিশ্চুপে দেখে গেল পূর্ণতা। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে একহাত নিজের পাতলা চুলগুলোয় বুলাল ইয়াভকিন। সেসময় আড়চোখে তাকাল পূর্ণতার দিকে। মেয়েটা ওর দিকে তাকিয়ে! কি আশ্চর্যজনক কান্ড! পূর্ণতা চোখ ঘুরাল। পরক্ষনে নত করল দৃষ্টি। লোকটার চোখগুলো একটু অদ্ভুত। বাদামী রঙের। রঙ অদ্ভুত নয় তবে হুটহাট তাকানোর ধরণ অদ্ভুত! ভীষণ!

_

রাত তখন দু’টোর কাছাকাছি। ঘড়ির কা’টার দিকে নজর একদমই নেই পূর্ণতার। সে সব ধ্যান জ্ঞান দিয়ে বইয়ের পাতায় মুখ গুঁ’জে আছে। প্রাণপণে পড়ার চেষ্টায় ও। দরজা ভিড়িয়ে রাখা। ফ্ল্যাটের বাকি লাইট নিভানো। শুধুমাত্র এই রুমের লাইট জ্বা’লানো। খানিক পরে দরজায় নক করতেই দরজা মৃদু খুলে গেল। চকিত নয়নে একবার তাকিয়ে ঢোক গিলল পূর্ণতা,
‘ কে?’

অন্ধকারের তলানি থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসলো ইয়াভকিন। চোখমুখে ঘুম। পূর্ণতা বই বন্ধ করে প্রশ্ন রাখল,
‘ আবার কি?’
‘ এখন পড়ছ কেনো? কয়টা বাজে, দেখেছ?’

ফোন হাতে নিয়ে সময়টা দেখে নিল পূর্ণতা। অত্যন্ত স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল,
‘ দু’টো বাজে।’
‘ ঘুমাও। সকালে পড়ো!’
‘ আমার কাল এক্সাম। তাছাড়া আপনার কি? নিজে ঘুমান গিয়ে! ডিস্টার্ব তো করছিনা।’
‘ করছো,লাইট জ্বালিয়ে রেখেছ।’
‘ এই রুমের আলো ওই রুমে যাবে? হাস্যকার কথাবার্তা!’

গম্ভীর ইয়াভকিনের তাকানোর দৃষ্টি। পূর্ণতা বিচলিত হলোনা। বলল,
‘ যান, আমায় পড়তে দিন।’

গটগট পায়ে বেরিয়ে গেল ইয়াভকিন। যাওয়ার আগে ধরাম শব্দে দরজা লাগিয়ে গেল। এবার বিচলিত হওয়ার সাথে সাথে চমকেও উঠল পূর্ণতা। লোকটা যেন দরজার উপর রাগ ঝা’ড়ল!

_

তিনটার দিকে ঘুমিয়েছে পূর্ণতা। ফলস্বরুপ উঠতে উঠতে সাড়ে নয়টা বাজল ওর। সাড়ে দশটার আগে ভার্সিটি যেতে হবে। খানিক্ষণ হন্তদন্ত হয়ে সব গুছিয়ে গোসল করে রেডি হলো ও। নাশতা করার কথা মাথায় নেই। কিংবা সময়ের কারণে সেই চিন্তা মাথায় আসছেনা। ইয়াভকিনকে না জানিয়েই তৎক্ষনাৎ বেরিয়ে পড়ল।

ভ্যাপসা গরমে অস্থির পূর্ণতা। ক্যান্টিনে এসেছে সবে মাত্র। এক্সাম শেষ। পাশে বসা বর্ষা। আপাতত তার সকল ধ্যান ফোনে। আশেপাশে নজর নেই। পূর্ণতা ঘেমে জবুথবু। গলার কাছ হতে ওড়না একটু সরালো। ক্যান্টিনের ফ্যান যেন চলছেই না।

‘ হেয়, পূর্ণতা। এতোদিনে আসলে? তোমায় কতো খুঁজেছি জানো?’

আচমকা উচ্ছ্বসিত পুরুষালী কণ্ঠে চমকালো পূর্ণতা। পাশ ফিরে তাকাতেই অতি সুদর্শন এক যুবককে নজরে এল। অথচ সেই সুদর্শনের রুপ খানা চোখে বিশেষ ভাবে ধরা দিলোনা পূর্ণতার। বরং তার উপস্থিতি পূর্ণতাকে বিরক্ত, থমথমে করে তুলল। জবাব না দিলে ছেলেটা একা একা বকবক করবে। ক’ড়া ভাষায় কিছু বললেও বিশেষ ভাবাবেগ দেখাবে না। বর্ষা চোখ তুলে তাকিয়েছে ততক্ষণে। একবার তন্ময়ের মুখশ্রী অবলোকন করে ইশারায় জবাব দিতে বলল পূর্ণতাকে। পূর্ণতা এক ঢোক পানি গিলে শান্ত কণ্ঠে জবাব দেয়,
‘ কোনো দরকার ভাইয়া?’
‘ হ্যাঁ, তোমাকেই তো দরকার।’

চোখেমুখে অসন্তুষ্টভাব ফুঁটে উঠল। অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়া ছেলেটা গত একমাস যাবত ইনিয়ে-বিনিয়ে বুঝাচ্ছে যে সে পূর্ণতাকে পছন্দ করে। বাড়াবাড়ি রকমের পছন্দ যাকে বলে। প্রথম দিকে যেমন বিশেষ পাত্তা দেয়নি পূর্ণতা, বর্তমানেও তাই। ছেলেটা কেবল দেখতে সুন্দর। আচার-আচরণের কথা তোলাই থাক! এ অব্দি ক’টা সম্পর্কে জড়িয়েছে সে হয়তো নিজেও জানেনা। দেখতে সুন্দর হওয়ায় পেছনে মেয়েদের লাইন। সুতরাং মেয়ে নিয়ে তাকে ভাবতে হতোনা। কিন্তু গত একমাস ধরে পূর্ণতাকে নিয়ে সে বেশ ভাবছে। সব মেয়ে ওকে পাত্তা দিলেও এই মেয়ে কেন দিবেনা? রাগ থেকেই হোক বা যা! সে এই মেয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েই ছাড়বে বলে পণ করেছে।

তন্ময়ের হাসি হাসি মুখখানা একবার পরখ করে নিয়ে ব্যাগসহিত উঠে দাঁড়াল পূর্ণতা। যথাসম্ভব চোখ-মুখ শক্ত করে বলল,
‘ আমাকে কেনো দরকার পড়বে ভাইয়া?’
‘ বসো, বসো। উঠছো কেনো! কথা আছে। খুব জরুরী!’

পূর্ণতা বড় বড় কদম ফেলে এগিয়ে গেল। যেন শুনেনি কোনো কিছু। পিছু পিছু বর্ষা যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই তন্ময় বলে উঠল,
‘ এই বর্ষা? তোমার বান্ধবীকে দাঁড়াতে বলো!’
‘ কেনো?’
‘ বললাম না, দরকার!’
‘ তা আমার বিবাহিতা বান্ধবীকে কি কারণে দরকার আপনার, শুনি?’

প্রথমে এক মিনিট বিস্ফো’রিত নয়নে বর্ষার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল তন্ময়। পরমুহূর্তেই বন্ধুবান্ধব সহিত হেসে উঠল। উচ্চশব্দে, গড়াগড়ি খাওয়ার ন্যায় অবস্থা। তাদের হাসির শব্দে বিরক্ত হলো আশেপাশের মানুষজন। বিরক্ত হলো বর্ষাও। অদূরে থাকা পূর্ণতা এদিকে তাকায়নি বিধায় দেখতে পাচ্ছেনা এদের গড়াগড়ি খাওয়া হাসি। বর্ষা পা বাড়াতেই তন্ময় বলল,
‘ বিবাহিতা? ইশ! মজা করছ নাকি? মজা করার মুডে নেই আমি।’
‘ আপনার সাথে আমার মজা করার ইচ্ছে নেই। শুধু শুধু ওর পেছনে পড়ে থেকে ওকে বিরক্ত করবেন না প্লিজ।’
‘ আচ্ছা? ও বিবাহিত? এটা ওকে এসে বলতে বলো।’

থমথমে চেহারায় বর্ষা বিদায় নিল। তন্ময় একবার তার গমন পথে তাকিয়ে থেকে প্রস্থান করল বন্ধুবান্ধব সহ।

পূর্ণতা গেটের দিকে অগ্রসর হলো। ক্লাস নেই, উদ্দেশ্য চলে যাবে। বর্ষা যাবেনা এখন। গেটের পাশটায় আসতেই কালো রঙের গাড়িটা নজরে আসলো তখনই। মিনিট কয়েক পিটপিট করে তাকানোর সময়ই গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো ইয়াভকিন। গায়ের ছাই রঙা শার্টটা শরীরে লেগে আছে। ফর্সা মুখ লালচে দেখাচ্ছে। কয়েককদম নিজ থেকেই এগিয়ে গেল পূর্ণতা। থমথমে কণ্ঠে কিছু উচ্চারণ করার আগেই ইয়াভকিন বলে উঠল,
‘ গাড়িতে উঠো। যা বলার উঠে বলো। যা গরম পড়েছে!’

বেশ খারাপই লাগল পূর্ণতার। এই গরমে লোকটা তাকে নিতে আসলো?
গাড়িতে উঠে বসতেই এসি ছেড়ে দিলো ইয়াভকিন। ইজি হয়ে বসলো তক্ষুনি। পেছন থেকে পানির বোতল থেকে কয়েক ঢোক খেয়ে স্টার্ট করল গাড়ি। পূর্ণতা প্রশ্ন করতে চাইলনা। তারপরও মুখ থেকে বের হয়ে গেল,
‘ এতো জলদি অফিস শেষ?’
‘ আজ কাজ ছিলোনা। এদিক দিয়েই তো যাই। মাঝপথে তোমার ভার্সিটি, তাই আরকি।’
জ্যামে বসে থেকে ঘেমেনেয়ে একাকার হয়ে উল্টোদিকে আসার কাহিনিটা চেপেই গেল ইয়াভকিন।

গেটের পাশটায় তখন তন্ময় দাঁড়িয়ে। পূর্ণতার পিছু পিছু আসছিল। অচেনা একজনের সাথে পূর্ণতাকে দেখে তার কপালে ভাঁজ পড়লও। মেয়েটা কি আসলেই বিবাহিত?

_

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল। তক্ষুনি কল আসলো কাজলের। ইয়াভকিনের সাথে কথা সেড়ে তিনি পূর্ণতার সাথে কথা বলতে চাইলেন। সর্বপ্রথমই বললেন,
‘ ওকে বাড়ি আসার কথা বলেছ?’

তখন পূর্ণতা ইয়াভকিনের ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে। থতমত খেয়ে তখন একবার ইয়াভকিনের দিকে তাকিয়ে দূরত্ব বাড়াল পূর্ণতা। ফিসফিস করে বলল,
‘ আসলে মা, আমার এক্সাম ছিল। সময় পাইনি বলার।’
‘ আচ্ছা তাহলে ধীরে সুস্থেই বলো। পাছে ও যদি রাগ করে।’

কথা শেষে নিজের রুমে চলে আসলো পূর্ণতা। খানিক্ষণ থেকে আবারও এল ইয়াভকিনের রুমের কাছে। দরজা পুরো খোলা। আলমারি হাতড়ে কি যেন খুঁজছে ইয়াভকিন। পূর্ণতা গলা ঝেঁড়ে মনোযোগ নেয়ার চেষ্টা করল। তৎক্ষনাৎ ঘাড় বাঁকিয়ে একটু তাকাল ইয়াভকিন। গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘ কি?’
‘ কথা ছিল।’
‘ কি কথা?’
‘ মা বলছিলেন কি…’
‘ মা কি বলছিলেন জানি আমি।’

বড় বড় চোখজোড়ায় এবার বিস্ময় ছেয়ে গেল। সেদিকে একবার তাকাল ইয়াভকিন।
পূর্ণতা বলল,
‘ যাবেন?’
‘ আপাতত যাওয়ার ইচ্ছে নেই।’

মন খারাপ হলো পূর্ণতার। ওদের বাড়ি গেলে হয়তো বাবার বাড়িটায়ও যাওয়া হতো। কতোদিন বাবা-মাকে দেখা হয়নি ও। থমথমে মুখশ্রী নিয়ে বিদায় নিতেই ইয়াভকিন স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়ল। এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে আড়চোখে তাকানোটা যদি মেয়েটা ধরে ফেলত! কি যে হতো!

চলবে।