বৃষ্টি নামার পরে পর্ব-০৭

0
3681

#বৃষ্টি_নামার_পরে❤
#লেখিকা-ইশারাত জাহান ফারিয়া
#পর্ব-৭

৮.
“ভোরবেলা গুঞ্জনের ঘুম একটু তাড়াতাড়িই ভেঙ্গে গেলো।ফ্রেশ হয়ে ব্যলকুনিতে গিয়ে গাছগুলোতে পানি দিয়ে খানিকক্ষণ বসে রইলো। পূর্ব আকাশ এখনো অন্ধকার,বাতাস বইছে জোরে।ধূসর মেঘেরা উড়ছে কুন্ডলী পাকিয়ে।হঠাৎ করে কিছু একটা মনে হতেই গুঞ্জন রুমে আসলো। বিছানায় মৃন্ময় ঘুমুচ্ছে।ঠান্ডা লাগায় ফর্সা গাল লাল হয়ে আছে,গুঞ্জন কপালে হাত দিয়ে জ্বর আছে কি না চেক করলো।নাহ,নেই!কপালের কোণে কালো কুচকুচে তিলটায় গুঞ্জনের চোখ আটকে গেলো।ধীরে ধীরে এক পা,দু’পা করে গুঞ্জন মৃন্ময়ের দিকে এগিয়ে গেলো। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মৃন্ময়ের আদুরে মুখের পানে।”

“কিছুক্ষণ এভাবে তাকিয়ে থাকার পর যেই না গুঞ্জনের হাতটা একটু ফসকে গেলো,ঠিক তখনই মৃন্ময়ের ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।”

“গুঞ্জনকে নিজের অতি কাছে মুখের দেখেই লাফ দিয়ে উঠে বসলো বিছানায়! চোখে -মুখে রাগ ফুটিয়ে বলে উঠলেন,

-‘এই ফাজিল!তুমি কি করছো এখানে?”

“গুঞ্জন হঠাৎ ভয় পেয়ে আমতাআমতা করে বললো, আ,,,মি আমি, কই কিছু করছিলাম না তো!”

“মৃন্ময় বিরক্ত হয়ে বললো,একদম মিথ্যা বলবে না।তোমাকে চিনার আর বাকি নেই।একটু শান্তিতে ঘুমাতেও দিবে না।বলো,কি করছিলে?”

“গুঞ্জন জোর করে হাসার চেষ্টা করে বললো, আমি না আসলে পা স্লিপ করে পড়ে যাচ্ছিলাম।তাই,আপনার বিছানাতে টেনে ধরেছিলাম।”

“মৃন্ময় ভ্রু কুঁচকে কড়া গলায় বললো, সকাল সকাল আমার মেজাজ খারাপ করাবে না গুঞ্জন।আমি জানি তুমি মিথ্যে বলছো!”

“গুঞ্জন মুখ নামিয়ে বললো,আসলে, দেখছিলাম আপনাকে।”

-“হোয়াট?”

-“মানে আপনার জ্বর আছে কি না,দেখছিলাম!”

-“তোমাকে কে দায়িত্ব দিয়েছে দেখার?”

“গুঞ্জন মানে আপনি জেগে আছেন কি না দেখছিলাম!তাছাড়া রাতে তো আপনার শরীর খারাপ ছিলো, তাই!”

“মৃন্ময় তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললো, বুঝেছি! আমি ঘুমিয়ে থাকলে তুমি আমাকে কিছু একটা করতে,তাই না?তা বলো দেখি,কি প্রতিশোধ নিতে চাও আমার উপর?আমি তোমার কোন পাকা ধানে মই দিয়েছি?”

“গুঞ্জন ঠোঁটের কোণে অতি কষ্টে হাসি ফুটিয়ে বললো, সকাল সকাল আপনাকে ঝগড়া করছেন কেন?আমি শুধু দেখছিলাম আপনার জ্বর আছে কি না!একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে অসুস্থ লোকের সেবা করাটা আমার কর্তব্য!”

“মৃন্ময় গুঞ্জনের কাচুমাচু অবস্থা দেখে বেশ মজা পেলো।আরও একটু বিব্রত করার জন্য গুঞ্জনকে টান দিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে নিজের মাথাটা ওর কোলে রাখলো।চোখ বন্ধ করে বললো, সকাল সকাল বউয়ের সাথে একটু রোমান্স করলে দিনটা ভালো যাবে!নাও,মাথায় হাত বুলিয়ে দাও!”

“আকস্মিক এমন ঘটনায় গুঞ্জন অবাক এবং অপ্রস্তুত হলো।এই মৃন্ময়ের আবার কি হলো?আজব!”

“মৃন্ময় গুঞ্জনের কোমড় জড়িয়ে ধরে বললো, দাও না আমার মাথায় হাত বুলিয়ে,,

” গুঞ্জন রোবট হয়ে বসে আছে।এভাবে যে ফেঁসে যাবে সেটা কল্পনাতেও আনেনি।এই মৃন্ময় তো ওকে বউ হিসেবে মানে না,তাহলে আজ এত্ত বউ বউ ডাকছে কেন?দরদ উতলিয়ে পড়ছে নাকি?”

“মৃন্ময় গুঞ্জনের পেটে জড়িয়ে ধরে কিসব বলছে যেন।গুঞ্জন এদিকে ফ্রিজড হয়ে বসে আছে।ভেবেছিলো মৃন্ময়কে একটা উচিৎ শিক্ষা দেবে,কিন্তু এখন দেখছে উল্টো ওকেই মৃন্ময় উচিৎ শিক্ষা দিচ্ছে।কান পেতে মৃন্ময়ের কথা শোনার চেষ্টা করতেই মৃন্ময় জোরে জোরে কবিতা বলতে শুরু করলো,

“আমার বিয়ে হয়েছিলো একদিন রাতে
রেগেমেগে ঢুকেছিলাম বাসর ঘরে
কাপড় চোপড় মাটিতে দিলাম ফেলে
অতঃপর গুঞ্জন পাগলি এসে দিলো আমাকে ফেলে।
আমার মতো নিষ্পাপ ছেলেটাকে দিল পায়ে লাথি
সেই লাথি খেয়ে আমি পিছলালাম ভালোভাবে।
বউ নামক মেয়েটা নিজেকে খুব চালাক ভাবে
চালাকি করে আমাকে ইচ্ছেমতো টর্চার করে।
রীতিমতো ঘুসি,কিল দিয়ে আমায় অসুস্থ বানিয়ে ফেলেছে,
আড়ি পেতে কথা শোনা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অসুস্থ হওয়ায় কাল রাতে আমাকে আদর করে খাইয়ে দিয়েছে।
সেই খাবার লেগেছে আমার কাছে অমৃতের মতোন!
বউ আমায় করেনা আদর, বাসেনা ভালো!
এখন আমি কি করবো পারি না বুঝতে,
এই পাগলির খপ্পর থেকে বাঁচাবে আমায় কে?
এই হলো আমার বউ,যার নাম গুঞ্জন।”

“এই কবিতা শুনে গুঞ্জন স্তব্দ হয়ে বসে রইলো খানিকক্ষণ।ওর মার ওকেই ফিরিয়ে দিচ্ছে?এ কি আদৌ নিজের ইচ্ছেতে এসব বলছে?নাকি অসুস্থতার ঘোরে?”

“যত যাই-ই হোক বলেছে তো এই মৃন্ময়ই।তাই গুঞ্জন রেগে ওর চুলে এমন জোরে টান দিলো যে,মৃন্ময় লাফিয়ে উঠলো।ঘুমঘুম গলায় রেগে জিজ্ঞেস করলো,কি হয়েছে গুঞ্জন?চুলে টান দিলে কেন?”

“গুঞ্জন বললো, আপনি আমার নামে উল্টো পাল্টা কিসব বলছেন?হুম?”

“মৃন্ময় রেগে চিৎকার করে বললো, হোয়াট দ্যা হেল গুঞ্জন? তুমি এতো মিথ্যে কিভাবে বলো?আমি এতক্ষণ ঘুমাচ্ছিলাম আর তুমি বারবার ডিস্টার্ব করছো,আর এখন এসে বলছো আমি তোমাকে উল্টো পাল্টা বলছি?হাউ ইজ দিস পসিবল গুঞ্জন?আমি ঘুমিয়ে ছিলাম!”

“গুঞ্জন একটু ভড়কে গেলো।ঠিকই তো!ও শুনেছে মানুষ অসুস্থ থাকলে উল্টো পাল্টা অনেক কথা বলে।মৃন্ময় ও হয়তো এরকম কিছু একটা করেছে। তাই হবে হয়তো।গুঞ্জন আর কিছু না বলে বিছানা থেকে নামতে গিয়ে মৃন্ময়ের সাথে অসাবধানতা বশত একটা ধাক্কা খেয়ে বিছানার উপর একজন আরেকজনের উপর পড়লো।”

“গুঞ্জন তাড়াতাড়ি উঠে গেলো।বললো, স্যরি স্যরি!”

“মৃন্ময় নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, স্যরি কেন?”

“গুঞ্জন বললো, আসলে আমি দেখিনি।আপনি সামনে ছিলেন তো তাই,আমি ধাক্কা দিতে চাইনি!তাই স্যরি!”

-“কেনো?তুমি কেনো স্যরি বলবা?আমিও তো দেখিনি!”

-“সেজন্যই তো স্যরি বলছি ব্রো!”

“মৃন্ময় একটু রাগলো।ফর্সা গাল জুড়ে ছড়িয়ে পড়লো লালচে আভা।কাঠ গলায় বললো,আমি তোমার ভাই?”

“গুঞ্জন অবাক হবার ভান করে বললো,ভাই-ই তো ছিলেন।এখন বিয়ে হওয়ায় খালি ভাই থেকে বর হয়েছেন!”

“মৃন্ময় রেগে বললো, আমি যেন এই ডাক তোমার মুখে না শুনি।আজব!”

“গুঞ্জন চুটকি বাজিয়ে বললো, আমার যা ইচ্ছে তাই ডাকবো বুঝলেন?আপনার আজাইরা প্যানপ্যানানি শোনার টাইম আমার নাই।”

“মৃন্ময় রাগী গলায় বললো,ডাকবে না মানে ডাকবে না!”

“আরে আপনি রাগছেন কেন? আপনি বা আমি কেউই তো এই বিয়ে মানিনা।তাই এত ফর্মালিটি করারও দরকার নেই!আমি চিল মুডে আছি আপনিও থাকুন।”

-“মানে?”

-“মানে আপনিও যা ইচ্ছা আমাকে তা-ই ডাকতে পারেন।আপু,বোন যা ইচ্ছে।চিল করুন ব্রো চিল চিল!”

৯.
“ব্রো ডাকাতে মৃন্ময় প্রচন্ড রেগে গেলো।বারবার মানা করা স্বত্ত্বেও গুঞ্জনের ভাই ডাকাটা বন্ধ কর‍্যে পারেনি।তাই এবার রেগে গুঞ্জনকে একটান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।গুঞ্জনের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট হালকা ছুঁইয়ে দিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে রাগী গলায় বললো, বিয়ে মানি বা না মানি,আমি।যেন নেক্সট টাইম তোমার মুখে ভাই ডাকটা না শুনি,বুঝলে?তোমার সব পাকনামি আমি সহ্য করছি কিছু বলছি না।কিন্তু দিনদিন তুমি নিজেত লিমিট ক্রস করে ফেলছো,যা আমি আর মেনে নিবো না।তাই নিজেকে বেশি চালাক ভেবো না।গট ইট?”

“গুঞ্জন হতভম্ব হয়ে গিয়েছে। এই লোকটা এমন পাগলামি শুরু করেছে কেন?ছিহ ছিহ,শেষমেশ গুঞ্জনের সম্মান নিয়ে টানাটানি। আবার ওর ঠোঁটে ও….ছিহ!এ মুখ কই দেখাবে গুঞ্জন।খোদা তুমি তোমার এ নাফরমান বান্দীকে তুলে নাও গো!”

“গুঞ্জন চোখ বন্ধ করে রইলো।মৃন্ময় এখনো ওর কপালে কপাল ঠেকিয়ে আছে।গাঢ় নিঃশ্বাস এসে পড়ছে গুঞ্জনের মুখে।একসময় চোখ বন্ধ করেই বলে উঠলো, আপনি প্লিজ চোখ বন্ধ করন!’

” মৃন্ময় এভাবে থেকেই বললে, কেন?আমাকে চোখ বন্ধ করতে হবে কেন?”

আমার লজ্জা লাগছে! আপনি এটা কি করলেন?ছিহ!আমি এখন তাকাতে পারছি না।প্লিজ চোখ বন্ধ করে সরুন আপনি!”

হাউ ফানি?তোমার লজ্জাও আছে?ইন্টারন্যাশনাল পাগলিদের যে লজ্জা থাকে সেটা আজ জানলাম আমি!জানোতো,রুহির কিন্তু এতো লজ্জ্বা ছিলো না,কতবার ওকে চুমু খেয়েছি,আহা!”

“গুঞ্জন বললো, আল্লাহর ওয়াস্তে চুপ করুন প্লিজ!আমার প্রচুর লজ্জ্বা লাগছে!’

” আহারে আমার লজ্জ্বাবতী রে।এত বড় ধ্যাড়ি মেয়ে যে সারা বাড়ি লাফিয়ে বেড়াও তখন লজ্জা করে না?সারাদিন মারামারি, ঝগড়া করো তখন লজ্জ্বা লাগে না?”

“গুঞ্জন অনেক কষ্টে বললো, না করে না!”

“করবে কিভাবে?তুমি তো একটা বেলাজ মেয়ে!”

“দেখুন..আমি মোটেও বেলাজ মেয়ে নই।আমি মেয়ে এবং মেয়েদের প্রচুর লজ্জ্বা আছে!আপনি জানেন না লজ্জ্বা নারীদের ভূষণ?”

“মৃন্ময় গা জ্বালানো হাসি দিয়ে বললো,লাইক সিরিয়াসলি গুঞ্জন?তুমি মেয়ে?আমি তো ভেবেছিলাম তুমি…!”

“গুঞ্জন একথা শুনে অকপটে চোখ খুলে বলে উঠলো,কি ভেবেছিলেন?”

“ভেবেছিলাম তুমি মেয়ে নও!”

“গুঞ্জন রাগী গলায় বললো, তাহলে কি ভেবেছিললেন?”

“মৃন্ময় আবারও ওর কপালে কপাল ঠেকালো।অদ্ভুত মাদকতা মিশ্রিত কন্ঠে বললো, ভেবেছিলাম তুমি কোনো এক গ্রহের এলিয়েন।দেখতে কুৎসিত, রক্ত সবুজ এমন ধরনের কোনো প্রাণী যে সারাক্ষণ ঝগড়া, মারামারি করে কাটায়।যে বৃষ্টিতে ভিজলেও অসুস্থ হয় না আর চাঁদের আলো কুচিকুচি করে খেয়ে নিজের ক্ষিধে মেটায়!”

“একথা শুনেই গুঞ্জন রেগে মৃন্ময়কে ধাক্কা মেরে নিজের উপর থেকে ফেলে দিলো। রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে গেলো। ততক্ষণে সকাল হয়ে গিয়েছে।”

“আর গুঞ্জনকে আরও একবার জব্দ করতে পেরে মৃন্ময় খুব আনন্দিত হলো।গুঞ্জনের রাগী চেহারার কথা মনে হতেই ও বিছানায় গড়াগড়ি দিয়ে হাসতে লাগলো। প্রচন্ড হাসি,অনেকদিন পর বোধহয় এভাবে হাসলো মৃন্ময়।এই এলিয়েন লিজ্জ্বাবতী মেয়ের সাথে ক’দিন থেকে ও নিজেও একটু হাসি-ঠাট্টা শিখে ফেলেছে।”

________

“সকালের নাস্তায় ডাইনিংয়ে মৃন্ময় দেখলো ওর আম্মু-আব্বু,দিদা আর আলিশা বসে আছে।অন্য সিটে গুঞ্জন আর ওর পাশের সিটটাই শুধু খালি।তার মানে মৃন্ময়কেও এখন ওর পাশে বসতে হবে। ধীরপায়ে গিয়ে গুঞ্জনের পাশে বসে পড়লো ও।”

“সবাই খাচ্ছে।এদিকে গুঞ্জন ওর দিকে তাকিয়ে বারবার মুখে ভেংচাচ্ছে।মৃন্ময়ের প্রচুর রাগ লাগছে। সবার সামনে ওকে কিছু বলতেও পারছে না।মৃন্ময়ের সবচেয়ে অপছন্দের কিছু কাজের মধ্যে মুখ ভেঙানো অন্যতম।”

“গুঞ্জন এদিকে বেশ মজা পাচ্ছে।গুঞ্জনকে এলিয়েন বলার শাস্তি এই ফালতু লোকের।কি সাহস? বলে কি না গুঞ্জন এলিয়েন?হুহ,ক্যায়সা লাগা মেরি মাজাক মিস্টার মৃন্ময় চৌধুরী? মনে মনে বললো গুঞ্জন।মুখ ভেঙিয়েই মৃন্ময়ের দিকে আর তাকায় না, যাতে করে মৃন্ময়ের রাগী ফেইস টা আর দেখতে না হয়।কিছুক্ষণ এমন করার পর হঠাৎ টেবিলের নিচ দিয়ে গুঞ্জনের পায়ে কে যেন খুব জোরে একটা লাথি দিলো।মুহূর্তেই গুঞ্জন ভাবলো এটা নিশ্চয়ই বজ্জাত মৃন্ময়ের কাজ!”

“তাই গুঞ্জন চিৎকার করে উঠলো।সবাই খাওয়া থামিয়ে অবাক হয়ে গুঞ্জনের দিকে তাকালো।গুঞ্জন ইনোসেন্ট ফেইস নিয়ে মৃন্ময়ের বাবাকে বললো, বড় আব্বু দেখো তোমার ছেলে আমার পায়ে লাথি দিয়েছে জোরে!”

“মৃন্ময়ের বাবা একথা শুনে রেগে বললেন, কিহ?”

“গুঞ্জন কেঁদেকেঁদে বললো, হুম সত্যি।দেখো আমার পা আ আ আ কি ব্যথা…..!”

চলবে…..ইনশাআল্লাহ!