বোনু পর্ব-০৭

0
3373

#বোনু
#Part_07
#Writer_NOVA

অর্ণব ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালো।আজ অনেক বছর পর প্রিয় মানুষটার সাথে দেখা হলো।সবকিছু শেষ হয়ে গেছে অনেক বছর আগে। জিনিয়ার সাথে এমনভাবে দেখা হবে বুঝতেই পারি নি।তখন কফির মগ হাতে জিনিয়া এসেছিলো।প্রায় ৪ বছরের সম্পর্কটা অর্ণবই ভেংগেছিলো। শুধু ওর বোনুকে নিয়ে একটা কথা বলার কারণে। ওর কাছে সবার আগে নিজের বোন।সবকিছুতেই অর্ণব নিজের বোনের কথা মাথায় রাখতো।জিনিয়া শুধু একবার বলেছিলো সবসময় তোমার বোনুকে নিয়ে না ভেবে আমাদের কথাও কিছু ভাবো।ব্যাস এতটুকু কথায় ৪ বছরের সম্পর্ক নষ্ট করতে অর্ণবের এক মিনিটও লাগে নি।ভাবছেন তাহলে ওর ভালবাসা সত্যিকারের ছিলো না। না,ভূল। অর্ণব ও জিনিয়াকে অনেক ভালবাসতো।তবে পরিস্থিতি বলতেও একটা শব্দ আছে।যার কাছে আমরা অসহায়। অর্ণব তখন পরিস্থিতির শিকার ছিলো।জিনিয়ার সাথে ৩ বছর পর দেখা হলো।এই কয় বছর জিনিয়া বিদেশে পড়াশোনা করেছে।তাই কারো সাথে কারোর দেখা হয়নি।

জিনিয়ার মা এসেই কিচেনে ঢুকেছে। চার ভাইয়ের জন্য নিজ হাতে রান্না করছে।মিসেস খান চার মির্জা ও উষাকে অনেক ভালবাসে।নিজের সন্তানের চেয়ে কোন অংশে কম দেখে না।দুপুরের খাবারটা অনেকদিন একসাথেই খাওয়া হয়না মির্জাদের। আজ সবাই একসাথে বসে খাবার খেয়েছে।১মে উষাকে খাইয়ে তারপর চার ভাই মুখে খাবার তুলেছে।জিবরান কে হাজার বার বলেও দুপুরে আনতে পারেনি।
জিবরান উষার কারণে অনেকটা ভেঙ্গে পরেছে।

কিছু সময় পর…….

মির্জা কুঠিরের সদর দরজা দিয়ে চিৎকার করে উষাকে ডাকতে ডাকতে ভেতরে ঢুকলো একটা মেয়ে।উষার সমাবয়সী।গায়ের রং উজ্জ্বল ফর্সা।চেহারার গঠন,দেখতে, শুনতে সব দিক থেকে মাশাল্লাহ। তারিকুল মাহমুদের ও রিশা আহমেদের একমাত্র মেয়ে তারিন মাহমুদ।উষার বেস্টু।তারিকুল মাহমুদের সাথে মির্জাদের বিজনেস নিয়ে খুব ভালো সম্পর্ক।মির্জাদের খারাপ সময়ে তারিকুল মাহমুদ অনেক সাহায্য করেছে।

তারিনঃ উষা—নি—-। বান্ধবী কুথায় তুমি?

বাড়িতে ইশাত বাদে সব ভাই আছে।তারিনের চিৎকারে সবাই হকচকিয়ে উঠলো।আসলে এই সময় ওকে কেউ আশা করে নি।যেদিন তারিন আসবে সেদিন সবার কানে তুলা লাগাতে হয়।প্রচুর কথা বলে সাথে দুষ্টামীতো আছেই।

তারিনঃ ভাইয়ুরা আমার বান্ধপী কই?
রিশাঃ তারিন এটা কি রকম কথা হলো? তাদের সাথে কুশল বিনিময় না করে তুমি কি জিজ্ঞেস করছো?
তারিনঃ মাদার বাংলাদেশ তুমি বুঝবা না।সবার আগে আমার উষানি বেবি তারপর সব।
(ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
তারিনঃ উষানি কোথায়?
আদিলঃ উপরে।
তারিনঃ থ্যাংকু মেজু ভাসুর জী।
ঈশানঃ ভাসুর কে ভাসুর? (ভ্রু কুঁচকে)
তারিনঃ এই রে কি থেকে কি বলে ফেললাম?
(জিহ্বা কামড় দিয়ে)আমি এসছি।

তারিন কোনমতে সেখান থেকে পালালো।আদিল, ঈশান ও তারিনের মা একসাথে হেসে উঠলো।

একসাথে সবাই উষার রুমে বসে আছে। অর্ণব উষার মাথায় তেল লাগিয়ে দিচ্ছে। আদিল বোনের নখ কেটে দিচ্ছে। ঈশান বোনুকে স্যুপ খাওয়াচ্ছে। তারিনের মনটা অনেক খারাপ।তার উষানি তাকে চিনতে পারে নি।তাই চুপ করে অসহায়ের মতো করে সোফায় বসে আছে।

অনেক সময় পর ঈশান খেয়াল করলো তারিন কেমন জানি উসখুস করছে।
ঈশানঃ কি রে তারু তুই এমন করছিস কেন?
তারিনঃ কোথায় ছোট ভাইয়ু? (আমতা আমতা করে)
রিশাঃ কি হয়েছে তোর? এমন করছিস কেন?
তারিনঃ আসলে হয়েছে কি?
আদিলঃ কি হয়েছে সেটা বল?
তারিনঃ ইশাত কোথায়?
আদিলঃ হঠাৎ ইশাতের কথা কেন? কোথায় আমাদের কথা তো জিজ্ঞেস করিস না।(ভ্রু নাঁচিয়ে)
তারিনঃ তোমরা তো আমার ভাসুর।আর ইশাত হলো আমার ভবিষ্যতে বাচ্চার আব্বু। তাহলে আমার বাচ্চার বাবার কথা জিজ্ঞেস করবো না তো কার কথা জিজ্ঞেস করবো।তোমরা না ভাইয়ুরা কিছু বুঝো না।
( মনে মনে)
ঈশানঃ তারু আমাদের সবাই কে ভাইয়া বলিস কিন্তু ইশাত কে নাম ধরে ডাকিস কেন?
তারিনঃ ছি ছি কি যে বলো না তোমরা।হবু বরকে কি ভাইয়া বলে ডাকা যায়।তোওবা তোওবা।(মনে মনে)
আদিলঃ কি ভাবছিস?
তারিনঃ ধূর, বলো না ইশাত কোথায়?
অর্ণবঃ ইশাত আবার কোথায় থাকবে? ক্লাবেই আছে।
তারিনঃ থ্যাংকু বড় ভাইয়ু।লাভ ইউ সো মাচ।আমি এখন ক্লাবে যাচ্ছি। বাই মাদার বাংলাদেশ। বাই ভাইয়ুরা,বাই উষানি।
রিশাঃ তারিন শোন–

মায়ের কথা শোনার আগেই সবার থেকে বিদায় নিয়ে তারিন ঘুড়ির মতো একটা দৌড় দিলো।গন্তব্য তার বাস্কেটবল ক্লাব।

🍁🍁🍁

নিউ ইয়র্ক….

নিউ ইয়র্ক শহর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মহানগরী। খুব সুন্দর ও গোছানো এই শহরটা। এই শহরে গিয়ে তার মায়ায় পরেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে।ছবির মতো রাস্তা-ঘাট,রোস্তরা,বার,ক্লাব, ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরা মেয়েদের সমাহার আরো নানা কিছু। নিউ ইয়ার্ক শহরের আয়তন ৩০২.৬ বর্গমাইল।এই শহরটি অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণ- পূর্ব কোণে অবস্থিত।আটলান্টিক মহাসাগরের তীরবর্তী একটি বন্দর শহর।১৫২৪ সালে ইতালীয় অভিযাত্রী জোভান্নি দা ভেরাৎসানো প্রথম ইউরোপীয় হিসেবে নিউ ইয়ার্ক শহর যেখানে অবস্থিত,সেই অঞ্চলটি আবিষ্কার করেন।আর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আশ্চর্যজনক ভাস্কর্য হিসেবে স্ট্যাচু অফ লিবার্টিতো আছেই। যেটা দেখতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা পাড়ি দেয় এই শহরে।

রাতে নিউ ইয়ার্ক শহরের বাইরের ব্যস্ত জনসমাগম থাই গ্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে দেখছে একটা ছেলে।বয়স ২৮ কি ২৯ বছর হবে।ছেলেটার এক হাত পকেটে গোঁজা, আরেক হাত থাই গ্লাসে রাখা।গভীর চিন্তায় মগ্ন সে। তার পুরো প্লান ভেস্তে গেছে।মির্জাদের একমাত্র বোন মরতে মরতে বেঁচে গেছে।নতুন করে গুটি সাজাতে হবে।দরজায় কেউ টোকা দিলো।পেছনে না তাকিয়ে তাকে ভেতরে আসার অনুমতি দিলো।

—-ইয়েস কাম ইন।

ভেতরে ঢুকলো ২৬ বছরের একটা ছেলে।নাম জিকু।জিকু সামনে থাকা ছেলেটার পি.এ।

—এনি ইনফরমেশন জিকু।
জিকুঃহ্যাঁ বস। মির্জাদের বোন এখন খুব শিঘ্রই সুস্থ হয়ে যাবে।তার ভাইরা তাকে অনেক খেয়াল রাখে।এই অবস্থায় তাদের বোনের ক্ষতি করা সহজ হয়ে উঠবে না। আমাদের এখন সুযোগের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

—ওকে।ইউ গেট রেডি ফর আপকামিং প্লান।আই এম আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্যা নেক্সট প্লান।
জিকুঃ ওকে বস।
—নাউ ইউ কেন গো ফর ইউর ওয়ার্ক।

জিকু চলে গেল।কিন্তু হঠাৎ করে অচেনা ব্যাক্তিটা রেগে সামনে থাকা বিশাল বড় ফুলদানিটা থাই গ্লাসে ছুঁড়ে মারলো।থাই গ্লাসটা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেল। সামনে থাকা টি- টেবিলটা এতো জোরে একটা লাথি মারলো যে দেয়ালের সাথে বারি খেয়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। তারপরও রাগ কমলো না।সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করে বারের দিকে রওনা দিলো।ইচ্ছেমতো ড্রিংক করলে যদি মাথাটা একটু ঠান্ডা হয়।

🍁🍁🍁

বাসা থেকে তৈরি হয়ে তারিন রওনা দিলো ইশাতের ক্লাবে।রেডি হতে গিয়ে অনেক দেরী হয়ে গেছে। রাত হয়ে এসেছে।তাতে কি সে তো ভয় পাওয়ার মতো মেয়ে নয়।বরং সবাইকে ভয় দেখায়।তারিন কিছুটা পাগলী টাইপের মেয়ে।কারো কথা শুনবে না।নিজের মন মতো চলবে।ভীষণ পছন্দ করে ইশাতকে।ওর যত কল্পনা-জল্পনা ইশাতকে ঘিরে।ইশাতের নাম নিতেই অজ্ঞান।ড্রাইভারের সিটে বসে গাড়ি চালাচ্ছে ও বির বির করছে।

তারিনঃ আচ্ছা আমার মাঝে কি নেই। এই ইশাত বজ্জাতটা কেন যে আমায় পছন্দ করে না।আমি ওকে কতভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু বেটা শয়তান কিছু বোঝার চেষ্টা করে না।আই লাভ ইউ ইশাত বেবস্।আমিও দেখবো তুমি আমায় ভালো না বেসে যাও কোথায়?আমাকে তো চিনো না।আমায় বলে কি না আমি ছোট,এখনো কিছু বুঝি না।আমার বয়স ২০ বছর।তার মানে প্রাপ্ত বয়সের থেকেও ২ বছর বেশি। আর আমি নাকি ছোট।ঠিক বয়সে বিয়ে হলে এখন ২ টা বাচ্চার মা হয়ে যেতাম।হু হু হু।আর উনি বলেন কি না আমি অবুঝ। আরে সবকিছুই বুঝি আমি।ধূর ভালো লাগে না।কবে যে বুঝবে তুমি ইশাত বেবস্।

কথাগুলো আপন মনে বির বির করে বলে গুন গুন করে গান গাইতে শুরু করলো তারিন।

দেখলে হাসে না,স্বপ্নে ভাসে না
নাম ধরেও ডাকলে আসে না
কি করি পরেছি যে দোটানায়
হায় আল্লাহ, হায় আল্লাহ
করবো কি যে হায়
এ ছেলের মনটা চুরি
করবো কি উপায়????

যত বেশি হয় যে দেখা, ততই কাঁদে মন
কথার মাঝে আসল কথা, হারায় সারাক্ষণ
ইচ্ছেগুলো বায়না করে, কাঁদায় সারারাত
পাগল ছেলে বুঝবে কবে,কিসের অজুহাত
বোঝেনা হাজারো বাহানা
হায় আল্লাহ, হায় আল্লাহ, করবো কি যে হায়
এ ছেলের মনটা চুরি, করবো কি উপায়??

তারিনঃ আল্লাহ এই ছেলেটার মন চুরি করার কোন আইডিয়া তো দেও।আমি ওর পেছনে ঘুরতে ঘুরতে টায়ার্ড হয়ে গেছি। এবার তো পটে যাও ইশাত বেবি।অনেক ভালবাসি তোমায়।

🍁🍁🍁

অর্ণব,আদিল ও ঈশান বোনুর সেবায় নিয়োজিত আছে।তারিনের মা কিছুখন আগে চলে গেছে।অর্ণবের হাতে দুধের গ্লাস, আদিলের হাতে তরল খাবার ৷ ঈশানের হাতে ফলের প্লেট। ইশাত এখনো ফিরেনি।ওর আজ ফিরতে দেরি হবে।বাস্কেটবল কম্পিটিশন আছে। উষা সব ভুলে গেলেও খাবার যে ওর পছন্দ না।সেটা হয়তো ভুলেনি।এমনটা মনে হচ্ছে ওর তিন ভাইয়ের।কারণ উষা কিছু খেতে চাইছে না।

উষাঃ আর খাবো না ভাইয়ু।আমার একটু ভালো লাগে না এসব খেতে।কি রকম পানসে খেতে?
অর্ণবঃ দুধ খেতে কি মিষ্টি লাগে নাকি? দুধে চিনি দিয়ে আনবো বোনু? তুই কিভাবে খাবি বল? সেভাবেই নিয়ে আসবো।তবে একটু মুখে দে।না খেলে শক্তি পাবি কিভাবে?
উষাঃ ওয়াক ওয়াক ছিঃ। ঐ টা খেতে ভালো না।পানি দেখতে সাদা কেন?আমি এই সাদা পানি খাবো না।আমার জন্য অন্য কিছু নিয়ে আসো।আমি এগুলো খাবো না।
আদিলঃ বোনু তুই কি খাবি বল?
ঈশানঃ এক পিস ফলের টুকরো মুখে দে।লক্ষ্মী বোনু আমার।এমন করে না।
উষাঃ আমি কিছু খাবো না। খাবো না।খাবো না।
(চিৎকার করে)
অর্ণবঃ বোনু তোকে কিছু খেতে হবে না।তুই মাথা ঠান্ডা কর।
উষাঃ আমার খেতে ভালো লাগে না। সরাও এগুলো আমার সামনে থেকে।

উষা ধাক্কা মেরে ভাইদের হাত থেকে সবকিছু রেগে ফেলে দিলো।বোনের এই অবস্থা দেখে তিন ভাই কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো।তাদের বোন কখনও এমন করে না।তিন ভাই পাগল প্রায়। তাদের বোনুর কি হলো?

আদিলঃ কি হয়েছে বোনু? বল আমাদের।তোর কিছু খেতে হবে না।তাও পাগলামি করিস না।
ঈশানঃ তুই কি খাবি বল? তুই যা খেতে চাস তাই আমি নিজে তৈরি করে আনবো।একবার তুই বলে দেখ।
অর্ণবঃ একবার বল বোনু।কি করতে হবে আমাদের?
উষাঃ তোমরা তিনজন কেন? আরেকজন কোথায়? তোমরা জানো না তোমাদের মধ্যে একজন না থাকলে আমি কিছু খাই না।ঐ ভাইকে আসতে বলো।ও না আসলে আমি কিছু খাবো না।

তিন ভাই হা করে তাকিয়ে আছে। তাদের বোনুর কিছুটা বোধহয় মনে পরেছে।যার কারণে বোন বলতে পেরেছে চার ভাই একসাথে না থাকলে ও খায় না।

ঈশানঃ বোনু তোর কি মনে পরেছে? আমরা চার ভাই না থাকলে তুই কিছু খাস না।হঠাৎ করে তোর সব মনে পরলো কিভাবে?
উষাঃ আমার মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে।আমি কিছু মনে করতে পারছি না।একটা ট্রাক, একটা ট্রাক আমার গাড়ির পেছনে।আমি আর কিছু মনে করতে কেন পারছি না? আমার মাথা–

মাথা ধরে কথাগুলো বললো উষা।জোরে চিৎকার করে উঠলো।তিন ভাই হন্তদন্ত হয়ে বোনুর কাছে গেল।
অর্ণবঃ কি হলো বোনু?
আদিলঃ তোর কি হয়েছে বোনু? তুই এমন করছিস কেন?শান জলদী করে ডক্টরকে আসতে বল।
ঈশানঃ আমি যাচ্ছি। বোনু তোর কিছু হবে না।আমরা চার ভাই কিছু হতে দিবো না।
অর্ণবঃ আদি,শান কুইক এন্ড ফার্স্ট।তারাতাড়ি কর।বোনু কেমন জানি করছে?

ঈশান জলদি করে ডক্টরকে কল করলো।তিন ভাইয়ের তো বোনের এই অবস্থা দেখে জানটা যেনো বের হয়ে যাচ্ছে। ডক্টর এসে চেকআপ করে উষাকে দেখতে লাগলো।

আদিলঃ ডক্টর আমাদের বোনুর খবর কি?
ডক্টরঃ পেসেন্ট কে কোনরকম মানসিক চাপ দিতে মানা করছি। তারপরপ উনি চাপ পেয়েছেন।পরবর্তী থেকে সাবধান। উনাকে আর কখনও কিছু মনে করাতে যাবেন না।তাহলে হয়তো তিনি ব্রেন স্ট্রোক করে বসতে পারেন।যত পারেন উনাকে হাসি-খুশি রাখার চেষ্টা করুন।আমি আরো কিছু ঔষুধ দিয়ে যাচ্ছি।নিয়মিত ঔষুধ ও খেয়াল রাখতে থাকেন। নিশ্চয়ই আল্লাহের রহমতে ভালো হয়ে যাবে।
অর্ণবঃ থ্যাংন্কস ডক্টর।
ডক্টরঃ সত্যি মিস উষা অনেক ভাগ্যবতী।তাই আপনাদের মতো একটা দুইটা নয় চারটা ভাই পেয়েছে। খাবার খাইয়ে দিয়ে ঘুমের ঔষধটা খাইয়ে দিবেন।কোন দরকার হলে অবশ্যই ডাকবেন।আমি আসি।আসালামু আলাইকুম।
অর্ণবঃ ওলাইকুম আস সালাম।শান ডক্টর কে পৌঁছে দিয়ে আয়।
ঈশানঃ ভাইয়া ড্রাইভারকে বলো না।আমি এখন বোনুকে ছেরে কোথাও যাবো না।
অর্ণবঃ ডক্টর কিছু মনে করবেন না।আপনি প্লিজ ড্রাইভারের সাথে চলে যান।আমিই পৌঁছে দিতাম।কিন্তু বোনুর এই অবস্থায় আমি ওকে ছেরে কোথাও যাবো না।তাই একটু ম্যানেজ করে নিবেন।
ডক্টরঃ চিন্তা করবেন না মিস্টার মির্জা।আমি আপনাদের ড্রাইভারের সাথেই চলে যাবো।

ডক্টর চলে গেল।তিন ভাই বোনুর পাশে বসে আছে। আদিল উষার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ইশাতকে কল করে নি।কারণ কল করলে কোন কাজ হবে না।ইশাতের ফোন বন্ধ। খেলা চলাকালীন মোবাইল বন্ধ রাখতে হয়।

#চলবে