বোনু পর্ব-১০

0
3886

#বোনু
#Part_10
#Writer_NOVA

৬ মাস পর…….

ঢাকার এক নামকরা বেসরকারি কলেজে সাংস্কৃতিক সপ্তাহ আয়োজন করা হয়েছে। সারা কলেজ সাজ সাজ রব।চারিপাশে ছেলে মেয়েরা রং বেরং-এর পোশাক পরে এসেছে।আরান আজ সেই রকম লুক নিয়ে এসেছে। কালো কালার প্যান্ট,আকাশি কালার শার্ট,চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা,হাতাটা কুনই পর্যন্ত ফোল্ড করা।পায়ে কালো বুট জুতা,চোখে কালো সানগ্লাস।গায়ের রংটা যদিও চাপা ফর্সা।বয়স ২৪ কি ২৫ বছর।এবার অনার্সের ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে।
সব মেয়েদের ক্রাস বয় আরান শিকদার।মেয়েরা তো আরান বলতেই অজ্ঞান।সবসময় একটা ভাব- সাব নিয়েই চলে।সাথে তার ২৪ ঘন্টা চামচা ও চেলাপেলা তো আছেই।ঈশান না থাকায় কলেজের পরিচালনা পরিষদের অনেক কাজেই আরানকে ডাকা হয়।যাতে তার এটিটিউড বেড়ে এখন আকাশচুম্বী।

গেইটের সামনে আরান ওর চামচগুলোকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাইকের সাথে হেলান দিয়ে মোবাইল গুতাচ্ছে।শুধু কি দাঁড়িয়ে থাকা ওদের কাজ, মেয়ে দেখলে টিজ করা, শিষ বাজানো,আজেবাজে মন্তব্য করাতো আছেই। কেউ ওর ভয়ে প্রিন্সিপালকে নালিশ ও করতে পারে না।আজও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।

নিশানঃ দোস্ত আজকে মেয়েগুলো যা সেজে এসেছে না।তবে বেশির ভাগই মেকাআপ সুন্দরী।
আসাদঃ আজকে সারাদিন বেশ কাটবে।কত সুন্দরী সুন্দরী মেয়ের দেখা পাবো।
জয়ঃ সাথে তাদের গালি তো ফ্রী আছে।
রুমানঃ ঐ দেখ কতগুলো মেয়ে আসছে।

আরান,নিশান,আসাদ,জয়,রুমান ৫ টা শয়তান বললেও কম বলা হবে।একসাথে থাকলেই বাজে কাজে জড়িত থাকবে।তবে সবার সামনে এমন ভেজা বিড়াল হয়ে থাকবে যে ভাজা মাছটা উল্টে খেতে পারে না।আসলে মাছ তো খায় সাথে কাটাশুদ্ধি খেয়ে ফেলে।৪/৫ টা মেয়ে গেইটের ভেতরে ঢুকতেই তাদের পথ আটকে দাঁড়ায়।

জয়ঃ চুমকি চলছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে? হার মেনেছে দিনের আলো, রাগলে তোমায় লাগে আরো ভালো।
আসাদঃ আরে সুন্দরীরা কেমন আছো তোমরা?
নিশানঃ আরান, আমরা কি একাই ওদের সাথে কথা বলবো নাকি তুইও যোগ দিবি।
আরানঃ আরে শালা,এই সময়ে আমাকে ভুলে যাস্।কই সিগারেট খাওয়ার সময় তো ঠিকই আমার পেছনে পেছনে লেজ ধরে ঘুরোস।

মোবাইলটাকে পকেটে রেখে হাত দুটোকে দুই দিকে প্রসারিত করে হাই তুলে সামনে এলো।মেয়ে গুলো কিছুটা ভয় পেয়ে কুঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের থেকে একজন অনেক কষ্ট করে সাহস জুগিয়ে বললো
—-আমাদের পথ আটকেছেন কেন? যেতে দিন আমাদের। আমরা আপনাদের কি ক্ষতি করেছি।
রুমানঃ আরান মাম্মা এইসব কি কয়? তুই সামনে দাঁড়িয়ে আছিস তারপরও এই মাইয়া কথা কওনের সাহস পায় কেমনে?
—আমাদের যেতে দিন প্লিজ। আমরা কি করেছি?
জয়ঃ চুরি করেছো হ্রদয়,তুমি ছারা কেউ নয়।তাই তো তোমায় বড় চেনা মনে হয়।
আরানঃ এই জয় চুপ কর।আরেকবার গান গাইলে তোর গানের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করবো।ঐ মাঠের কড়া রোদে তোকে কাকতাড়ুয়া বানিয়ে সাজায় রাখবো।
জয়ঃ আমার দরকার নেই। এমনি ফেয়ারনেস ক্রিম মেখে অনেক কষ্টে চেহারার রংটা একটু পাল্টাইছি।ইস,ঐ রোদে দাঁড়িয়ে চেহারা কালো করবো নাকি।সুন্দর হতে কষ্ট আছে। আমার ভাই অনেক কষ্ট করে মেয়েদের সুন্দর হওয়ার ক্রিম মেখে সুন্দর হয়েছে।আমি তো তাও ছেলেদেরটা মেখেছি।
আসাদঃ জয় হারামী চুপ করবি তুই।তুই তো আমাদের মান-সম্মান প্লাস্টিক করে ফেলবি।আমাদের সুন্দর হওয়ার রহস্য সবাই জেনে যাবে।
রুমানঃ ঐ শালা চুপ করবি।তোরা তো ছেলে জাতের কলঙ্ক।কি শুরু করলি তোরা?

ওদের কথা শুনে মেয়েগুলো মিটমিট করে হাসছে।একজন আরেকজনের কানে ফিসফিস করে বললো
—-এই জন্য তো বলি এই জয় কালুটা কয়েকদিনে সুন্দর ধলা বান্দর কি করে হলো।
কথাটা বলে একযোগে সবাই হাসতে লাগলো।আরানের মুখে রাগ ফুটে উঠতে দেখে সবাই চুপ হয়ে গেল।যখনি আরান রেগে কিছু একটা বলতে যাবে তখনি পেছন থেকে একটা মেয়ে জোরে ডাকলো।

অনুঃ আ–রা–ন।

মেয়েটাকে দেখেই আরান কলেজের উল্টো দিকে দৌড়। ওকে আর পায় কে? মেয়েগুলোও সেই ফাঁকে সেখান থেকে মানে মানে কেটে পরলো।বাকি ৪ বন্ধু অন্য দিকে ঘুরে পালাতে নিলে অনু এসে রাস্তা আটকে ফেলে।

🍁🍁🍁

অনুকে হঠাৎ করে দেখে যে কেউ ভয় পেতে পারে।পুরো মুখে মেকআপ দিয়ে ভূত সেজে আসে।সারা মুখ সাদা আর হাত পা কালো।এই মেয়েটাকে দেখলে আরান সহ ওর দল ভয় পেয়ে পালায়।যাকে একবার ধরবে তাকে সেদিন প্লেট নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে।এই মেকআপ সুন্দরী আপা আরানের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।আরান তো ওর হাত থেকে পালাতে পারলে বাঁচে। আরানের কথা মরে যাবে তাও অনুর সাথে প্রেম করবে না।দরকার পরলে সারাজীবন চিরকুমার থাকবে তাও অনুকে বিয়ে একেবারে অসম্ভব।

অনুঃ কি ব্যাপার আরান আমাকে দেখে এভাবে পালালো কেন?
আসাদঃ তোকে দেখলে যে কেউ পালাবে?দিনের বেলায় জলজ্যান্ত পেত্নী দেখলে কেউ কি ঠিক থাকে।
(বির বির করে)
অনুঃ আসাদ কিছু বললে?
আসাদঃ আরে না না কি বলবো তোমায় নিয়ে?
অনুঃ আমায় কেমন লাগছে?
রুমানঃ একদম মেকআপ পরী।
জয়ঃ মেকআপের আলোয় আলোকিত সুন্দরী।
নিশানঃ মুখে লাইট জ্বলছে আর হাত পায়ে লোডশেডিং।
অনুঃ কি বললে তোমরা?
আসাদঃ তোর জন্য কি মার্কেটে হাত- পা সুন্দর করার কিছু নেই রে।শুধু কি মুখটাকেই চোখে দেখিস তুই। দয়া করে বোন আমার, হাত-পায়ে ও কিছু মাখিস।
রুমানঃ বলি বোন, মেকআপ আজকে শেষ হয়ে গেছে।এতো কম মেকআপ করে আসছিস যে।
অনুঃ এ মা , সত্যি কম হয়ে গেছে। আগে জানলে তো আরেকটু করে আসতে পারতাম।আরান আজ তাহলে আমার দিকে তাকাবেই না।
জয়ঃ পুরো মেকআপ বক্স মুখে মেখে এসেছে।আর বলে নাকি কম হয়ে গেছে।আল্লাহ মাটিটা ফাঁক করো ঢুকে যাই।
নিশানঃ এক কাজ কর অনু তুই বরং রুমান কে সাথে নিয়ে মার্কেটে যা।সেখান থেকে মেকআপ কিনে মুখে লাগিয়ে নিস।
আসাদঃ আজকে তোকে রুমান মেকআপের সব জিনিস পত্র কিনে দিবে।
অনুঃ স–ত্যি—-!!! (চিৎকার দিয়ে)
রুমানঃ ঐ না।আমি যাবো না।আমার পকেট তো খালি করবোই সাথে আমাকেও বন্ধক দিয়ে আসবো।পুরা কসমেটিকসের দোকান উঠায় আনবো।আমার কাছে কোন টাকা নাই।ওরে হারামজাদারা আমাকে ফাঁসায় দিলি কেনো রে।আমার তো আজকে মার্কেটের সামনে প্লেট নিয়ে বসতে হইবো।
নিশানঃ অনু তুমি রুমান কে নিয়ে তারাতাড়ি যাও। নইলে কলেজের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে।তোমার দিকে আরানও তাকাবে না।
অনুঃ তোমাদের অনেক ধন্যবাদ ভাইয়ারা।চলো রুমান ভাইয়া।আজকে আমি যা চাইবো তাই দিবা।

রুমান উল্টো দিকে দৌড় দিতে নিলে জয় খপ করে ওর হাতটা ধরে ফেললো।

জয়ঃ রুমান মাম্মা, যাও কোথায়?
রুমানঃ শয়তানগুলি,তোরা বন্ধু নামে কলঙ্ক।আমি যাবো না।আমাকে ছেড়ে দে।😭😭

অনু রুমানের হাত ধরে টানতে টানতে মার্কেটের দিকে যেতে লাগলো।আর রুমান ওর হাত থেকে ছারা পাওয়ার জন্য ছটফট করতে লাগলো।কিন্তু রুমান আজকে সারাদিন কান্না করলেও অনুর হাত থেকে ছারা পাবে না।আজকে রুমানের পকেট তো খালি হবেই সাথে ওর বাবার ব্যাংক একাউন্ট ও খালি হতে পারে।বাকি ৩ বন্ধু হাসতে হাসতে পেটে খিল দেওয়ার জোগার।

নিশানঃ আজকে রুমান স্ট্রোক করবে।
আসাদঃ ভাগ্যিস মাথায় বুদ্ধিটা আসলো নয়তো আজ সারাদিনও এই অনু নামক অস্যকর প্যারা থেকে বাঁচতে পারতাম না।আরান তো পালিয়ে বাচঁলো।
জয়ঃ এই মেয়েটা যদি আরানের দূর সম্পর্কের আত্মীয় না হতো তাহলে ওকে যে কি করতাম আমি নিজেও জানি না।সবসময় আমাদের পিছনেই লাগতে হবে ওকে।চিন্তা কর আরানের মতো ছেলেও ওকে ভয় পায়।যাকে ধরবে তার পকেটের টাকা শেষ। আমি বুঝি না এতো মেকআপ দিয়ে করে কি?
আসাদঃ প্রতি দিন যদি মুখে পুরো একটা মেকআপ বক্স মেখে আসে তাহলে তো লাগবেই।
নিশানঃ চল, ভেতরে যাই।রুমানের অবস্থা আজকে খারাপ।শালা কিপ্টা জানি কোথাকার? এক প্যাকেট সিগারেট খাওয়াতে কষ্ট লাগে।এবার বুঝুক মজা।পুরো পেকেট খালি করে তারপর ছারবে।

🍁🍁🍁

মির্জা কুঠির…..

মির্জা বাড়িতে কীরকম জানি গম গম আমেজ বিরাজ করছে।বাড়ির সব সার্ভেন্টরা খুশি তবে সেটা একটা বিষন্নতায় ঢাকা পরেছে।কত মাস পর মির্জারা গতকাল রাতে ব্যাংকক থেকে বাড়ি ফিরছে।সবার কাছে খুশিটা যেনো চাপা।কারণ সবার মাঝে একটা বিষন্নতা কাজ করছে।উষার রুমটা তালা বন্ধ। চার ভাই চুপচাপ বসে খাবার নাড়ছে।কেউ মুখে খাবার তুলেনি।সবার মনটা খারাপ।

আদিলঃ আজ বোনুকে ছারা খাবার মুখে তুলতে হবে।বিশ্বাস হচ্ছে না কিছু।
ইশাতঃ সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেলো।
অর্ণবঃ কি রে খাচ্ছিস না কেন তোরা? সবাই খাবার নাড়ছিস কিন্তু মুখে তুলছিস না।
ঈশানঃ কিছু ভালো লাগছে না ভাইয়া।আমাদের সাথে কি এরকম হয়?
ইশাতঃ বোনুকে না খাইয়ে দিলে তো আমাদের গলা দিয়ে খাবার নামে না।
আদিলঃ আমাদের বোনু, তুই যেখানে থাকিস ভালো থাকিস।
ঈশানঃ তোর জন্য আমরা আল্লাহর কাছে নামাজ পড়ে মোনাজাতে দোয়া করি।
অর্ণবঃ আমাদের বিশ্বাস তুই অবশ্যই ভালো থাকবি।
ইশাতঃ বোনুর রুমটা আজ আমরা চার ভাইরা মিলে পরিষ্কার করবো।ঐ রুমেই তো আমাদের বোনুর সব স্মৃতি ও ছোঁয়া আছে।
আদিলঃ অন্য কেউ আজ ঐ রুমে যাবে না। কতদিন ধরে রুমটা তালা দেয়া।আমার বোনু থাকলে নিশ্চয়ই এতখণে মন খারাপ করে ফেলতো ওর রুমের এই অবস্থা দেখে।

চার ভাই হাত ধুয়ে উঠে গেল।কেউ একটা দানাও মুখে দেয় নি।সবার চোখ ছলছল করছে।অর্ণব একটা বিশাল বড় ছবির সামনে দাঁড়ালো। ওর পিছনে তিন ভাই এসে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলো।ছবিতে চার ভাই ও তাদের বোনু একসাথে আছে।বিশাল বড় ছবিটা দেয়ালের পুরো অংশ জুড়ে আছে।কিছু দিন আগে ব্যাংককে থাকা অবস্থায় ওদের সবার ইচ্ছায় এখানে বসানো হয়েছে।

ছবিতে উষা, ইশাত ও ঈশান বসে আছে।ঠিক ওদের পেছনে অর্ণব ও আদিল দাঁড়িয়ে আছে। ঈশানের চোখ বন্ধ করে ডান হাতের দুই আঙ্গুল উঁচু করে রেখেছে।ইশাত ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল উঁচু করে রেখেছে।উষা চুপ করে বাচ্চা ফেস করে তাকিয়ে আছে। অর্ণব দুই হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে। আদিল এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে ঘাড়টা সামান্য হেলে দাঁড়িয়ে আছে।
ছবিটার দিকে এক ধ্যানে সবাই তাকিয়ে আছে।চার ভাইয়ের চোখ দিয়ে পানি পরছে।

ওদেরকে কাঁদতে দেখে কেউ আড়াল থেকে খুশি মনে সরে গেলো।যেটা চার ভাইয়ের চোখ আড়াল হলো না।

ঈশানঃ ভাইয়ারা অনেক ড্রামা হয়েছে। এবার স্টপ কর।আমি আর পারছি না।
ইশাতঃ আমার প্রচুর হাসি পাচ্ছে।
আদিলঃ ইস, চোখটা অনেক জ্বলছে।
অর্ণবঃ নিশ্চয়ই অনেক গ্লিসারিন দিয়ে ফেলেছিস।
ইশাতঃ শেষ পর্যন্ত আমাদের গ্লিসারিন দিয়ে কান্না করতে হলো।ব্যাপারটা কি হাস্যকর তাই না?
ঈশানঃ চুপ কর ইশাত।দেয়ালেরও কান আছে।

চার ভাই একে অপরের দিকে তাকিয়ে জোরে হেসে উঠলো। চোখ গ্লিসারিনে এখনো জ্বলছে।একজনকে একটু বেশি বোকা বানানো হলো।বেচারা,সবকিছু বিশ্বাস করে তার মালিককে বলে দিবে।সেটা ভেবে আরেক দফা হেসে নিলো সবাই।

🍁🍁🍁

অন্য দিকে কলেজে…….

আরান একটা মেয়েকে ডিস্টার্ব করছিলো।কেউ ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না।মেয়েটাকে সবার সামনে অপমান করছে। মেয়েটা মাথা নিচু করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।

আরানঃ তোকে একটা ছোট কাজ দিয়েছিলাম য, আসাদকে বলবি তুই ওকে ভালবাসিস।সেটা যখন পারলি না তাহলে আমকে তো আমার কাজ করতেই হবে।এতো সাহস তোর আমার কথা মানিস না।
জয়ঃ ওকে কি শাস্তি দেওয়া যায় আরান?
নিশানঃ কি র্যাগিং দেওয়া যায় ওকে?
আসাদঃ মেয়েটাকে কি সহজ একটা কাজ দিলো আরান।সেটাও নাকি পারবে না।আমাকে ভালবাসি বলে দিলে কি এমন ক্ষতি হতো।এবার দিলি তো আরানকে রাগিয়ে।এবার তার পানিশমেন্ট বুঝতে পারবি।
নিশানঃ আজকালের মেয়েগুলো বড্ড বেশি বুঝে।সিনিয়রদের মুখে মুখে তর্ক তো করেই, সাথে কথা অমান্য করে।
জয়ঃ আরান কি করবি ওকে?
আরানঃ ওর শাস্তি আমি দিবো।এমন শাস্তি দিবো যে পরবর্তীতে সিনিয়রদের কথা অপমান্য করার আগে দশবার ভাববে।

আরান মেয়েটার সামনে এগিয়ে গিয়ে যেই মেয়েটার গায়ের ওরনা ধরে টান দিতে যাবে ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো আরানের গালে।

আরানঃ কার এতো বড় সাহস যে আমাকে থাপ্পড় মারে।আরান শিকদারের গালে থাপ্পড় মারার মজার সাহস পায় কোথা থেকে? আজ তার মজা আমি হারে হারে বুঝিয়ে দিবো। এতো সহস হয়ে গেছে এই কলেজের স্টুডেন্টদের।(রেগে+চিৎকার করে)

আরানের হুংকার শুনে সবার কলিজা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। কিন্তু সামনে থাকা মেয়েটা সরে যেতেই যাকে দেখতে পেলো তাকে দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।মুখটা অটোমেটিক হা হয়ে গেলো।
রাগ উধাও হয়ে অবাক ঘিরে ধরলো আরানকে।গালে হাত দিয়ে অনেক কথা আপনাআপনি বলে ফেললো।

আরানঃ তুমি এখানে?কি করে সম্ভব?তুমিতো অনেক আগেই আমাদের ছেরে চলে গেছো? তুমি ফিরে এলে কি করে? আমি কি কোন স্বপ্ন দেখছি?আমার কিছু বিশ্বাস হচ্ছ না।আমি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখছি না তো।কিভাবে কি হলো?

সামনে থাকা ব্যাক্তিটা কোন উত্তর দিলো না।শুধু মুচকি হাসলো।

#চলবে

#