বোনু ২ পর্ব-১০+১১

0
1813

#বোনু
#সিজন_০২
#Part_10
#Writer_NOVA

কিছুক্ষণ পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হলো।সবার প্রথমে মিহু ক্লাসিকাল ডান্স করলো।রবীন্দ্র সঙ্গীতে খুব সুন্দর করে নাচলো।নিবরাজ, মেহরাব, আইজান সবাই অবাক।মিহু এতো সুন্দর করে নাচতে পারে,সেটা কারো জানা ছিলো না।

নিবরাজঃ ওয়াও, ফ্যানটাস্টিক।এতো সুন্দর করে নাচছে কি করে?

মেহরাবঃ আমি নিজে ওর নাচ কয়েকবার দেখেছি। কিন্তু আজকেরটা বেস্ট।

আইজানঃ সাপ যদি বিনের তালে নাচতে না পারে তাহলে পারবেটা কে?(রাগে দাঁতে দাঁত চেপে)

নিবরাজঃ চুপ কর। নে মোবাইল ধর।সামনে গিয়ে ভিডিও করে নিয়ে আয়।

আইজানঃ আমি যাবো না। আমাকে হয় নাচের মধ্যেই হকি স্টিক ছুঁড়ে মারবে। নয়তো শাড়ি পরিয়ে ঘুরাবে।

নিবরাজঃ কথা কম বল।জলদী যা।(ধমকের সুরে)

আইজানঃ যাচ্ছি, ধমকাস না।সবসময় বাঁশ খাওয়ানোর জন্য আমাকেই দেখিস।

আইজান স্টেজের সামনে গিয়ে ভিডিও করতে লাগলো।মিহু নাচের মধ্যে সায়েমকে চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা করলো। সায়েম, আইজানের সামনে এসে দাঁড়ালো।

সায়েমঃ AK এখানে কি করছেন?

আইজানঃ দেখতে পাচ্ছো না ভিডিও করছি।ডিস্টার্ব করো না।(বিরক্ত সুরে অন্যমনস্ক হয়ে)

সায়েমঃ AK আপনার কি শাড়ি পরে সারা কলেজ ঘোরার ইচ্ছে আছে?

আইজানঃ একদম না।কে বলেছে আমি ভিডিও করছি।আমিতো আমার ছবি তুলছিলাম।হে হে হে কি যে বল না তুমি। (বেক্কল মার্কা হাসি দিয়ে)

সায়েমঃ ওহ আচ্ছা।ঐ দিকে গিয়ে তুলুন।

আইজান সামনে থেকে চলে গেল। মিহুর নাচ শেষ হলো।সবার করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠলো পুরো প্যান্ডেল।নাচটা সবার পছন্দ হয়েছে। রাজতো এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। ও জানতো মিহু একমাত্র সবাইকে সবাইকে হসপিটালে ভর্তি করতে পারে। মিহুর নাচ শেষ হলে রুশান গিটার হাতে স্টেজে উঠে গেল। রুশানের গান শেষ হলে রিম স্টেজে উঠে গেল।
কিছু সময়ের মধ্যে ওর রক ডান্স শুরু হয়ে গেলো।

আইজানঃ ভাই, ঘোড়াটা এমন ফালাচ্ছে কেন?

নিবরাজঃ এই নাচ এরকমই।

আইজানঃ ভাই, এটাকে নাচ বলে।তুই যদি এটাকে নাচ বলিস তাহলে এনাকোন্ডারটা কি ছিলো?

নিবরাজঃ ঐ টা ক্লাসিকাল ডান্স আর এটা রক ডান্স।

আইজানঃ আমি আর সহ্য করতে পারছি না।আল্লাহ আরো কত কিছু দেখাবে।এই মেয়েটাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু ওর নাচ দেখে আমার পছন্দ সব তল্পিতল্পা গুটিয়ে মনে হয় পালালো।

The tim of rainbow -এর কেউই এই ডান্স পছন্দ করে না।পুরো টিম কানে আঙুল দিয়ে বসে আছে।

মিহুঃ ঐ ওরে কেউ ধর তো।ও তো লাফাইয়া স্টেজ ভাইঙ্গা ফালাইবো।

আভাঃ ওরে ফালাইতে দে।
সায়েমঃ ব্যাঙ তো নতুন পানি পাইলে ফালাইবোই।
আফরাঃ আর সহ্য হইতাসে না।
রুশানঃ থামতে ক এইডারে।
কিরনঃ কান দুইটা ঝালাপালা হইয়া গেল।
আভাঃ হির,এই বিচ্ছিরি ডান্স আর সহ্য করতে পারতাছি না। বন্ধ করতে বল।
মিহুঃ আমারে কস কে?আমি কি করমু?
সায়েমঃ চুপচাপ সহ্য কর।কিছু করার নাই।

☘️☘️☘️

অবশেষে রিমের বিখ্যাত ফালাইন্না নাচ শেষ হলো।ওরা ছয়জন বিরক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বাকি সবাই বেশ ইনজয় করেছে।

আইজানঃ ভাই, তুই একটা গান শুনাবি।
নিবরাজঃ আমি!!!! পাগল হয়ে গেছিস।
মেহরাবঃ গাইলে সমস্যা কি? একটা গানই তো।
নিবরাজঃ আমি গান শুরু করলে,দেখবি অর্ধেকের বেশি মানুষ প্যান্ডেল ছেড়ে পালাবে।
আইজানঃ নিউইয়র্ক থাকতে তো অর্কর গিটার দিয়ে মাঝে মাঝে গান করতি।এখন সমস্যা কি?
রিমনঃ রাজ,প্লিজ একটা গান শুনাবি।
সাদাফঃ ঢং কম কর। জলদী যা।
আরিফঃ কবের থেকে তোর গান শুনি না।প্লিজ একটা শুনাবি।
সিয়ামঃ হবু ভাবীর জন্য অন্তত গান শোনা প্লিজ।
মেহরাবঃ মিহুর জন্যই একটা গান ধর।
নিবরাজঃ আচ্ছা, গান গাইবো।হয়েছে এবার।শান্তি!!

নিবরাজ, রুশানের কাছ থেকে গিটারটা হাতে নিয়ে স্টেজে উঠে গেল।

কিরনঃ ঐ হির NK কি এখন গান গাইবো?
মিহুঃ আমারে জিগাস কে?আমি কি জানি?
রিমঃ যেহেতু গিটার নিয়া গেছে তার মানে গানই গাইবো।
সায়েমঃ তাও ভালো।তোর ঐ বাজে,বিচ্ছিরি নাচতো নাচবো না।
রিমঃ কি কইলি? তুই আমার নাচেরে অসম্মান করলি?(রেগে)
সায়েমঃ তোর নাচের আবার অসম্মান।সম্মান থাকলে না ঐটারে অসম্মান করমু।
রিমঃ সায়েমমমরা তোরে তো আমি —
মিহুঃ থামবি তোরা।কি শুরু করলি?
রিমঃ আমি—
আফরাঃ চুপ কর।
রুশানঃ NK এর গানটা শুনতে দে।
কিরনঃ আর একটা পেচালও কেউ পারিস না।

নিবরাজ গিটার হাতে নিয়ে টুংটাং আওয়াজ করে সুর ঠিক করে নিলো।কলেজের সব মেয়েরা রাজের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। রাজ মিহুর দিকে তাকিয়ে গান শুরু করলো।

♪♪♪♪♪♪♪♪♪♥♥♥♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪

তোর মন পাড়ায়, থাকতে দে আমায়
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল, আমার সঙ্গে চল
ঐ উদাসপুরের বৃষ্টিতে, আজ ভিজবো দুজনায়
অভিমানি মন আমার, চায় তোকে বারবার (×২)
তাই বলি আয়রে ছুটে আয়

তোর হৃদয় আঙিনায়,থাকতে আমি চাই
তুই ছাড়া বাঁচার, নেই রে উপায়
কিভাবে ওরে,তোকে ছেড়ে
একাকি আমি জীবন কাটাই
অভিমানি মন আমার, চায় তোকে বারবার (×২)
তাই বলি আয়রে ছুটে আয়

♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♥♥♥♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪

রাজ,মিহুর দিকে তাকিয়ে পুরো গান গেয়েছে। মিহু মুগ্ধ হয়ে ওর গান শুনছে।গানটা যেনো মিহুকেই ডেডিকেট করলো।চারিদিকে করতালিতে মুখরিত হয়ে গেলো।তালির শব্দে মিহুর ধ্যান ভাঙলো।

মিহুঃ বাহ!! ভালো গান গাইতে পারে তো নিবরাজ চিলি মসলা।আমিতো জানতাম সবসময় চিলির মতো ঝাল ব্যবহারই করতে পারে। নাহ, এখন দেখছি বেশ ভালো গানও গাইতে পারে।(মনে মনে)

আইজানঃ কি ভাই, গানটা তো সেই হয়েছে?

নিবরাজঃ আমার মনে হচ্ছিলো মিহু আমার সাথে বসে আছে। আর আমি গিটার বাজিয়ে ওকে গান শোনাচ্ছি।আমি ভাবতে পারি নি গান গাইতে পারবো।

মেহরাবঃ বুঝতে হবে।প্রিয়তমার দিকে তাকিয়ে কোন খেয়ালে গেয়েছে নিজেও জানে না। (মুখ টিপে হেসে)

নিবরাজঃ হয়েছে তো এবার চুপ কর।

আরো কতগুলো নাচ-গান হয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলো। তারপর যে যার বাড়ি চলে গেল।

☘️☘️☘️

Scotland…….

রাতের সময় ধূসর চোখের ছেলেটা,রেগে জিহানকে বারবার কল দিচ্ছে।কিন্তু জিহান কল তুলছেই না।বেশ কিছু সময় পর জিদান কল ধরলো।

—- কোথায় ছিলে? কতগুলো কল দিয়েছি?

জিহানঃ সরি বস।আসলে আমি ওয়াস রুমে গিয়ে ছিলাম।

— তুমি কার ছবি পাঠিয়েছো?(রেগে)

জিহানঃ কেন বস, মিহুর না মানে ভাবীর।

—ফাইজলামি পাইসো।কোন ছেলেকে শাড়ি পরাইছো সেই ছবি পাঠিয়ে বলছো হিরের ছবি।

জিহানঃ ওয়েট বস।আমি দেখে নেই।

—- তুমি না দেখিয়ে ছবি পাঠিয়েছো।ডিজগাস্টিং।

জিহানঃ আসলে বস,ক্যামেরা ম্যান আমাকে ছবি পাঠিয়েছিলো, আমি ভালোমতো না দেখে আপনাকে সেন্ড করে দিছি।

জিহান ছবি চেক করতে গিয়েতো চোখ চড়কগাছ। এটা তো ক্যামেরা ম্যান।ওকে শাড়ি পরিয়ে ছবি পাঠালো কে? ক্যামেরা ম্যানকে ছবি তোলার জন্য জিহানই টাকা দিয়ে ছিলো।আর মিহুরা ক্যামেরা ম্যানের শাড়ি পরা ছবি জিহানকে পাঠিয়েছে। জিহান তাড়াহুড়োয় ছবি না দেখেই তার বসকে পাঠিয়ে দিয়েছে। নিজের মনে হেসে উঠলো জিহান।ও জানে এই কাজ মিহুর ছাড়া আর কারো না।

জিহানঃ হ্যালো বস।

—- হ্যাঁ,বল।

জিহানঃ এই কাজ আর অন্য কারো নয়।ভাবীই করেছে।ঐ ছেলেটা ক্যামেরা ম্যান।ভাবী বোধহয় ছবি তুলতে দেখে ফেলেছে। তাই ওকে শাড়ি পরিয়ে ছবি তুলে আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছে।

—- ইন্টারেস্টিং!!! এই না হলে আমার হির।ওকে বাই।(মুচকি হেসে)

জিহানঃ জ্বি বস ভালো থাকবেন,রাখছি।

☘️☘️☘️

দুই দিন পর……

রুশান সারা কলেজ দৌড়াচ্ছে।খুশিতে নয়।ওর পেছনে হকি স্টিক হাতে মিহুও আছে।রুশান আগে মিহু পেছনে।রুশনকে হাতে পেলে আজ হসপিটালে পাঠাবে।কারণ হলো গতকাল রুশানের খালাতো ভাই মিহুকে দেখতে গিয়ে ছিলো।কিভাবে জানি রুশানের মোবাইল থেকে ওর খালাতো ভাই ছবি দেখেছিলো।সব খবর নিয়ে সোজা মিহুদের বাড়ি উঠেছে। মির্জা বাড়ির কেউ বিষয়টা জানতো না।ছেলে-পক্ষকেও মিহু স্টিক হাতে দৌড়ানি দিয়েছে।এখন পালা রুশানের।রুশান, রাজ ও জানের সামনে গেল মিহুর হাত থেকে বাঁচতে।

রুশানঃ NK,AK আমাকে বাঁচান।
নিবরাজঃ কি হয়েছে? এভাবে হাঁপাচ্ছো কেন?
রুশানঃ বস,আমাকে বাঁচান।তা না হলে আমি আজ হসপিটালে ভর্তি হবো।
আইজানঃ আরে ভাই, বলবিতো কি হয়েছে?
রুশানঃ হির,হির আমাকে স্টিক নিয়ে দৌড়ানি দিয়েছে।
নিবরাজঃ কেন?

ততক্ষণে মিহু হকি স্টিক হাতে ওদের সামনে চলে এলো। রাগে ওর মুখ লাল হয়ে আছে।

মিহুঃ যদি ভালো চাস,এদিকে আয়।তোরে আজকে আমি আলু ভর্তা বানামু। (রেগে)
রুশানঃ হির,বোইনা।আমি সত্যি কিছু জানি না।
মিহুঃ কি জানিস, না জানিস সেটা পরে দেখা যাবে।আগে তুই এদিকে আয়।
রুশানঃ আসমু না।আসলেই তুই মারবি।
মিহুঃ না,মারুম না।তোরে আদর করমু।জলদী এদিকে আয়। (রেগে)

মিহু রুশানের দিকে এগিয়ে যেতে নিলে রুশান নিবরাজের পেছনে লুকালো।আর মিহুর এক হাত রাজ খপ করে ধরে ফেললো।

নিবরাজঃ শান্ত হও মিহু।কি হয়েছে আমাকে বল?(শান্ত কন্ঠে)
মিহুঃ ছাড়ুন আমায়।ওকে এখন আমি চাটনি বানামু।
আইজানঃ কি হয়েছে বলবে তো?
মিহুঃ ওর খালাতো ভাই গতকাল আমায় দেখতে গিয়ে ছিলো। ওর মোবাইল থেকে আমার ছবি দেখেছে।ওর ভাইকে তো স্টিক দিয়ে দৌড়ানি দিয়েছি।ধরতে পারি নাই।ধরতে পারলে নাক ফাটাইতাম।ওর ভাইকে কিছু করতে পারি নাই তো কি হয়েছে? এখন ওর মাথা ফাটামু।(রেগে)
নিবরাজঃ ওর এত বড় সাহস!!! (রেগে)
রুশানঃ বস,আমি এসবের কিছু জানি না। আমার খালাতো ভাই কখন আমার মোবাইল থেকে ছবি দেখেছে, কখন গিয়েছে,কি করেছে?কিছু বলতে
পারি না।
মিহুঃ তোরে তো আমি—
নিবরাজঃ তোমাকে আর কিছু করতে হবে না।
মিহুঃ কেন?? (অবাক হয়ে)
নিবরাজঃ তোমার হকি স্টিকটা দেও।তুমি আর কষ্ট করে ওর পেছনে কেন ছুটবা?তার চেয়ে আমায় স্টিকটা দেও।ওর ব্যবস্থা আমি করছি।

নিবরাজ রুশানের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কথাগুলো এক নিশ্বাসে বললো।
মিহুঃ এই নিন তাহলে।আমি হয়রান হয়ে গেছি।

রাজ, মিহুর হাত থেকে স্টিকটা নিয়ে রুশানের পেছনে ছুটলো।রুশান তার আগেই ভৌ দৌড়।প্রাণপণে ছুটছে সে।ওকে আর পায় কে?

রুশানঃ বা—প—রে—এ 🥶।হিরের হাতে স্টিকের বারি খেলে সামান্য মাথা ফাটতো।কিছু দিন পর ঠিক ভালো হয়ে যেতো।এখন NK- এর হাতে একটা বারি খেলে আমিতো সোজা উপরে শিফট হয়ে যাবো।
ভাগ রুশান ভাগ।নিজের জীবন বাঁচা। জান বাঁচানো ফরজ, মনে রাখিস।

#চলবে

#বোনু
#সিজন_০২
#Part_11
#Writer_NOVA

কয়েকদিন পর…….

কলেজের প্রিন্সিপালের রুমে আজ খুব ভীড়। রুমের ভেতরে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে মিহু।আরেক পাশে নিবরাজ ও আইজান।চেয়ারে গম্ভীর হয়ে বসে আছে প্রিন্সিপাল সুমন রহমান। তার অপজিট চেয়ারে বসে আছে দেশের নামকরা বিজনেস ম্যান আবির চৌধুরী। পাশের চেয়ারে বসা তার একমাত্র ছেলে রিকি চৌধুরী। নাকে বিশাল বড় ব্যান্ডেজ করা,কপালের মাঝ বরাবর লাল টুকটুকে হয়ে আছে।মনে হচ্ছে কেউ মেরে নাক ফাটিয়ে ও কপালে দাগ করে দিয়েছে। মিহু চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে না এখানকার কাউকে সে ভয় পাচ্ছে।

আবিরঃ কি ব্যাপার সবাই চুপ করে আছো কেন?

রিকিঃ ড্যাড,ঐ যে ঐ মেয়েটা আমার নাক ফাটিয়েছে।

আবিরঃ এই মেয়ে তোমার সাহস কী করে হয়,আমার ছেলের গায়ে হাত তোলার।আমার ছেলেকে আমি কখনো ফুলের টোকা পর্যন্ত দেয়নি।আর তুমি ওর নাক ফাটিয়ে এই হাল করেছো।

মিহুঃ ছেলের গায়ে ফুলের টোকা দেননি বলেই তো আজ এতো বেশরম,বেহায়া ও নির্লজ্জ্ব হয়েছে। এমন ছেলের জন্য আবার গর্ব করে কথা বলছেন। লজ্জা করে না আপনার।

নির্ভয়ে একদমে কথাগুলো বলে থামলো মিহু।

আবিরঃ হাউ ডেয়ার ইউ।জলদী তোমার বাবা কিংবা ভাই থাকলে তাদের কল করো।ইমিডিয়েটলি এখানে আসতে বলবে।

মিহুঃ এসব ছোট-খাটো ব্যাপার আমি একাই হ্যান্ডেল করতে পারে।আমার বাপি কিংবা ভাইয়ুর প্রয়োজন হয় না।

আবিরঃ তোমার সাহস কি করে হয় আমার ও আমার ছেলের ব্যাপারে কথা বলতে।নিজে আমার ছেলের নাক,ফাটিয়ে আবার বড় বড় ডায়লগ দিচ্ছো।

মিহুঃ ডায়লগ আমি নই আপনি দিচ্ছেন।ঐ রকম একটা নিচু মন-মানসিকতার ছেলের জন্য কথা বলতে লজ্জা করে না। ওহ্ লজ্জা করবে কি করে, আপনি নিজেও বোধহয় ঐরকমি।

আবির চৌধুরী রাগে সামনের টেবিলে ঘুষি মেরে দাঁড়ালেন।প্রিন্সিপাল সহ সকলের কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে। শুধু নিবরাজ ও মিহু নির্ভয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।

আবিরঃ তুমি আমার ওপর দিয়ে কথা বলছো? তুমি জানো আমি তোমার কি হাল করতে পারি? এমন অবস্থা করবো তুমি মানুষকে নিজের মুখ দেখাতেও লজ্জা পাবে।তোমাকে কেটে টুকরো টুকরো করে নদীতে ভাসিয়ে দিতে আমার যাস্ট কয়েক সেকেন্ড লাগবে।

আবির চৌধুরীর কথা শুনে নিবরাজের মাথায় রাগে আগুন ধরে গেছে। রাজ হাত মুঠো করে রেগে সামনে এগিয়ে যেতে নিলে জান বাঁধা দেয়।যদি আজ এখানে কিছু হয় তাহলে কলেজের অনেক বড় বদনাম হয়ে যাবে।

রিকিঃ ড্যাড,ওকে তুমি ছারবে না। ওর কতবড় সাহস ও আমার গায়ে হাত তুলেছে।

মিহুঃ আপনাদের মতো বড় টাকাওয়ালা মানুষরা ঐ সবই পারেন।শুধু পারেন না নিজের ছেলেকে মানুষ করতে।একটা মেয়েকে কি করে সম্মান করতে হয় তা আপনারা জানেন না।

আবিরঃ সম্মান করবে তোমাকে?(তাচ্ছিল্যের সুরে)

মিহুঃ ইয়েস মিস্টার আবির চৌধুরী।

আবিরঃ দাড়াও তুমি। দেখো আমি তোমার কি করি?

মিহুঃ কি করবেন করুন? আমি কাউকে ভয় পাই না।আমি কোন অন্যায় করিনি।আপনার ছেলে আমার সাথে বদমাশি করতে চেয়েছিলো, আমি তার প্রতিবাদ করেছি।টাকার পাওয়ার আমাকে দেখাবেন না।আপনার মতো হাজারটা আবির চৌধুরীকে কেনার টাকা রাখে আমার বাপি ও ভাইরা।

সুমনঃ মিহু মা-মণি চুপ করো।

মিহুঃ কেন চুপ করতে বলছেন প্রিন্সিপাল স্যার? আপনারা উনাকে ভয় পেতে পারেন কিন্তু আমি নই।তার টাকা আছে বলে তার ছেলে আমার সাথে বদমাশি করবে আর আমি চুপচাপ মেনে নিবো, কিছুতেই না।আমি অন্য দশটা সাধারণ মেয়ে নই।

আবির চৌধুরী রেগে পকেট থেকে মোবাইল বের করে কাকে জানি কল করলো।

নিবরাজঃ প্রিন্সিপাল স্যার,আমাদের মিহুর কথা শোনা উচিত।

সুমনঃ মিহু মা-মণি,সেদিন কি হয়েছিলো খুলে বলো তো?আমরা পুরো ঘটনাটা তোমার থেকে জানতে চাই।

মিহুঃ বলছি।দুদিন আগে—-

☘️☘️☘️

ফ্লাসব্যাক………

কলেজ থেকে ফেরার পথে খুব বৃষ্টি হচ্ছিলো।মিহুর বৃষ্টির পানিতে জ্বর চলে আসে।তাই ওর বাইকটাকে এক দোকানের নিচে দাঁড়া করিয়ে নিজেও তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু বৃষ্টি কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। হালকা-ভারী বর্ষণ চলছে।দোকানটা বন্ধ। আশেপাশে কোন মানুষ নেই। মিহু একা একটা মেয়ে রাস্তার পাশের দোকানে দাড়িয়ে আছে। ঠান্ডা বাতাসে বেশ শীত শীত করছে।হঠাৎ রাস্তা দিয়ে চারটা বাইক গেলো।চারটা বাইকে ৬ জন ছেলে ছিলো।কিছু দূর গিয়ে আবার ইউটার্ন নিয়ে আবার মিহুর সামনে বাইক থামালো।বাইক থেকে ছেলেগুলো নেমে মিহুর সামনে গোল করে ঘিরে দাঁড়ালো। এতক্ষণ মিহু আনমনে বৃষ্টি দেখছিলো আর না চাইতেও নিবরাজের কথা ভাবছিলো।একটা ছেলে কানের সামনে শিস বাজালে ওর ধ্যান ভাঙ্গে। পাশে তাকিয়ে ছেলে ৬ টাকে দেখে মনে মনে অনেকটা ভয় পেয়ে যায় মিহু।কিন্তু মুখে কোন ভয়ের চিহ্ন রাখে না।তাদের প্রধান হলো রিকি চৌধুরী।পুরো প্লে বয়।সারাক্ষণ মেয়ে নিয়ে পরে থাকে। কয়েকদিন আগে বিদেশ থেকে ফিরেছে।

রিকিঃ কি সুন্দরী, একা একা কার কথা ভাবছো? নিশ্চয়ই আমার কথা।আর ভাবতে হবে না, দেখোনা আমি এসে পরেছি।(বাঁকা হেসে)

রিকির কথা শুনে মিহুর মাথায় রক্ত উঠে যায়।কিন্তু কোন কথা বলে না।পা থেকে মাথা পর্যন্ত রিকিকে স্ক্যান করতে থাকে।মিহুকে দেখে মনে হচ্ছে সে তার কাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে পেয়ে গেছে।

রিকিঃ এভাবে কি দেখছো ডার্লিং?একা মেয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে বাজে লোকেরা নজর দিবে।চলো তোমায় পৌঁছে দেই।

কথাটা বলে সবাই মিলে একটা বিদঘুটে হাসি দিলো।যেটা দেখে মিহুর পিত্তি জ্বলে গেলো।মনে মনে নিজের ইজ্জতের খুব ভয় করছে মিহু।কিন্তু মুখে সেই ভয়টা দেখাচ্ছে না।খুব শান্তভাবে চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে রিকিকে দেখছে।

রিকিঃ আরে বেবি এভাবে কি দেখছো?বোবা নাকি তুমি? কথা বলছো না কেন? চাইলে তুমি আমার সাথে রুমডেট করতে পারো।তার জন্য আমি তোমায় বেশ বড় অঙ্কের টাকাও দিবো।বেশী না যাস্ট ওয়ান নাইট।কি বেবী রাজি আছো তো?তুমি কিন্তু দেখতে হেব্বি হট। ইচ্ছে করছে এখুনি —-

তার আগেই রিকির নাকে পরপর দুইটা ঘুষি পরলো।তারপর চুলের মুঠি ধরে গালে বেধরম চড় দিতে লাগলো ও বললো।

মিহুঃ হারমজাদা, আমাকে দেখে কি তোর পতিতা মনে হয়? রুমডেট করবো তোর সাথে? বড় অঙ্কের টাকা দিবি আমাকে।একটা রাত কাটাবি আমার সাথে। আমি দেখতে অনেক হট তাই না।তোর সাহস কি করে হয় আমাকে এসব কথা বলার?একটা মেয়েকে একা দেখেই মনে খারাপ ধারণা চলে এসেছে। তোর কি মনে হয় আমি রাস্তার মেয়ে? অন্য দশটা মেয়ের তোর কথা শুনে যাবো।অনেকক্ষণ ধরে সহ্য করছি।কিছু বলছিলাম না বলে বেড়ে গেছিস? দেখ তোর কি হাল করি?

রিকির সাথে থাকা বাকি ৫ টা ছেলে হা করে তাকিয়ে আছে। ওরা পুরো বোকা হয়ে গেছে। কি হচ্ছে তা ওরা যেনো কিছু বুঝতে পারছে না। একটা মেয়ে তাদের বন্ধুকে মারছে, ওরা তা দেখে সামনে এগুতেও ভয় পাচ্ছে। মিহুর চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। রিকির চুলের মুঠি ধরে মিহু দোকানের সামনে থাকা সিমেন্টের পিলার মধ্যে জোরে ঢুঁসা মারলো।মাথা না ফাটলেও খুব জোরে ব্যাথা পেলো রিকি।ততক্ষণে বৃষ্টি অনেকটা থেমে গেছে।রিকিকে ধাক্কা মেরে নিচে ফেলে দিয়ে সোজা দৌড়ে বাইকে উঠলো মিহু।এক মুহুর্তও দেরী না করে বাইক স্টার্ট দিলো।

রিকিঃ দাঁড়িয়ে দেখছিস কি তোরা?ধর, ঐ মেয়েটাকে।ওকে আমার চাই,চাই। ওর সাহস কি করে হয় আমাকে মারে।আমিও আবির চৌধুরীর একমাত্র ছেলে রিকি চৌধুরী। আমি ওকে ছারবো না। (রেগে+চিৎকার করে)

বাকি পাঁচ ছেলে ধরতে যাওয়ার আগেই মিহু বাইক নিয়ে গায়েব হয়ে গেলো। রিকি এক হাতে নাক ও অপর হাতে কপাল ডলছে।নাক দিয়ে রক্ত পরছে।

রিকিঃ আমি তোকে ছারবো না। একটা রাত তো তোকে আমার সাথে কাটাতেই হবে।তোকে আমি ঠিক খুঁজে নিবো।

পুরো ঘটনাটা দোকানের আড়াল থেকে দেখলো মিহুর ছোট ভাই।কিন্তু মিহু তাকে দেখেনি।মিহুর ছোট ভাইয়ের মুখে বিশ্ব জয় করা হাসি।তার বোনু নিজেকে রক্ষা করতে শিখে গেছে। সবসময় নিজের বোনকে ফলো করে সে।যখনি সে তার বোনুকে রক্ষা করতে এগিয়ে যাবে ঠিক তখনি মিহু Action সিন শুরু করে দিয়ে ছিলো।সেও খুশি মনে সিনটা উপভোগ করলো।

এই দুইদিনের মধ্যে মিহুর সব খবর নিয়ে ফেলে রিকি।তারপর ওর বাবাকে নিয়ে খান কলেজে এসেছে। যেমন ছেলে তেমন বাবা।

ফ্লাসব্যাক এন্ড……..

☘️☘️☘️

এখন……

মিহুর মুখে এসব কথা শোনার পর নিবরাজের চোখ লাল হয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে এখুনি গিয়ে রিকিকে গলা চেপে মেরে ফেলতে।কিন্তু কলেজের কথা হাত মুঠি করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। ওর বাবা ও চাচা অনেক কষ্ট করে এই কলেজকে আজ ঢাকার নামকরা কলেজ করেছে। এখন যদি সিনক্রিয়েট করে তাহলে পুরো কষ্ট বিফলে যাবে।এতক্ষণ ধরে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মিহুর সব কথা শুনছিলো ওদের থানার নতুন সিনিয়র অফিসার। সব কথা শুনে ওর মাথায়ও রক্ত চড়ে গেছে। গায়ে পুলিশের পোশাক।বয়স ২৮। গায়ের রং হলদে ফর্সা।উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি।চেহারাটা রাগী রাগী।মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি।জিম করা বডি।

অফিসারঃ আসতে পারি।

সবার নজর পেছনের দরজায় গেলো।মিহু অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। তাই অফিসারকে দেখতে পারলো না।

আবিরঃ আরে আসুন, আসুন অফিসার।আমি তো আপনার জন্যই অপেক্ষা করছি।

অফিসার রুমের ভেতর চলে এলো।সে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এক দৃষ্টিতে রেগে রিকির দিকে তাকিয়ে আছে।মুখ দেখা মনে হচ্ছে আজ রিকিকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে।

আবিরঃ বসুন,আমি অনেকক্ষণ ধরে আপনার জন্য বসে রয়েছি।আপনাকে কল করে আমি আসতে বলেছি।আপনি কি দেখছেন মিস্টার ঐশীক মির্জা।

অফিসারের নাম ঐশীক মির্জা।নামটা শুনতেই মিহুর বুকটা ধক করে উঠলো।এতক্ষণ পর সে ছেলেটার দিকে তাকালো। তারপর অবাক ও মুচকি হেসে সবার সামনে দৌড়ে গিয়ে অফিসারকে জরিয়ে ধরলো। সবাই অবাক হয়ে গেলো মিহুর কান্ডে।রাজের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরেছে। এই দৃশ্য কোনদিন দেখতে হবে তা নিবরাজ জীবনেও ভাবতে পারেনি।মুহুর্তের মধ্যে চোখ দুটো টকটকে লাল হয়ে গেলো।মাথা ঝিম ঝিম করছে তার। সামনে থাকা চেয়ারটাকে সজোরে লাথি মেরে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রাজ।পেছন পেছন আইজানও চলে গেল। আইজান তো ভয়ে শেষ। কে জানে নিবরাজ আজ বাড়ি গিয়ে কি করবে? সেটা একমাত্র আল্লাহ জানে। বিষয়টা মিহুর চোখ এড়ালো না। মিহু, ঐশীক-কে ছেড়ে দিলো।

মিহুঃ বড় ভাইয়ু,তুমি কবে এলে বান্দরবান থেকে? ঐ খানে গিয়ে তো আমাদের কথা ভুলেই গিয়েছো?তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসোনি।তাইতো কোন খবর নেও নি।এখানে এসেছো তাও দেখা করতে আসোনি।তোমার সাথে আমি একটুও কথা বলবো না। তুমি পঁচা হয়ে গেছো।তোমার এই ছোট্ট বোনুটাকে মনেই রাখোনি।এর আগে কতদিন আগে নাকি এসেছিলে তাও আমার সাথে দেখা করতে আসোনি।কি একটা কাজ ছিলো।তা করার জন্য কয়েক ঘন্টা সময় নিয়ে এসেছিলে। সেটা সম্পূর্ণ করে রাতেই চলে গিয়েছো।আমার সাথে দেখা করোনি।আমাকে ভাইয়ু সব বলেছে।

মিহু কথাগুলো বলে মুখটা ছোট বাচ্চাদের মতো করে গোমড়া করে রাখলো।সাথে ঠোঁট উল্টে রাখেছে।ঐশীক মুচকি হাসলো। তারপর পকেট থেকে বিশাল বড় বড় ৫টা চকলেট বের করলো।

ঐশীকঃ নে ধর, এগুলো তোর।

মিহুঃ ধরবোও না,খাবোও না তোমার চকলেট। তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না।তুমি অনেক পঁচা। (মুখ ভার করে)

ঐশীক মিহুর সামনে এক হাঁটু গেড়ে বসলো।তারপর এক হাতে চকলেট ও অন্য হাতে নিজের এক কান ধরলো।আশেপাশের মানুষ যে ওদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সেটাতে ভাই-বোনের কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই।

ঐশীকঃ I am very very sorry.My little angle. আমার হির বোনু কি আমার সাথে রাগ করেছে? I am really sorry sister.হির বোনু দেখ আমি কানে ধরছি তো।আমি তোকে সব খুলে বলবো।প্লিজ তুই রাগ করিস না।আমার লক্ষ্মী বোনু।

মিহুঃ তোমার সাথে একটাও কথা বলবো না। কাট্টি তোমার সাথ(মুখ ঘুরিয়ে)

ঐশীকঃ সরি বললামতো,আর কখনো এরকম ভুল হবে না।সত্যি বলছি।তোর প্রমিস।তুই জানিস না আমি তোর প্রমিস নিয়ে কখনো মিথ্যে কথা বলি না।

মিহুঃ মনে থাকবে তো।
ঐশীকঃ একশ বার থাকবে।
মিহুঃ দেও,আমার চকলেট দাও।
ঐশীকঃ সরি, আজকে আসার সময় একটা দোকানে এই ৫ টা ছাড়া আর পাইনি।প্লিজ এই ৫ টা নে।পরে পুরো ৫ বক্স কিনে দেবো।
মিহুঃ ঠিক আছে। নো প্রবলেম।
আবিরঃ হচ্ছেটা কি?আমরা কি এখানে দাঁড়িয়ে ওদের নাটক দেখবো নাকি।পুলিশ অফিসার এই মেয়েটার ভাই।

আবির চৌধুরীর কথা কানে না দিয়ে ঐশীকের থেকে চকলেট গুলো নিলো।ঐশীক সবার সামনে এক হাত দিয়ে মিহুকে জরিয়ে ধরলো। তারপর কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো।মিহু ছোট বাচ্চাদের মতো খিল খিল করে হেসে উঠলো। জানালা দিয়ে পুরো ঘটনাটা মনযোগ সহকারে দেখলো নিবরাজ।তবে রুমের ভেতরের কোন কথা সে শুনতে পাইনি।ও যে কি রেগে আছে তা ওর মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে গাড়ি নিয়ে চলে গেল।আইজানও পেছন পেছন আরিফের গাড়ি নিয়ে রাজকে ফলো করতে লাগলো।রাজ যা রেগে আছে তাতে নিজের যেকোন সময় নিজের ক্ষতি করে ফেলতে পারে।

#চলবে