ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ পর্ব-০৭

0
509

গল্পের নামঃ- #ভালোবাসার_নতুন_প্রনয়ণ

লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)

part:07

ভার্সিটি শেষ করে দাড়িয়ে আছে হূর। 4:30 বাজে একটু পর নাকি ড্রাইভার চাচ্চু আসবে। তখনই পিছন থেকে কেউ হূরের চোখ বাঁধে ,, হূর কিছু বলতে যাবে তখনই তার কানের কাছে মুখ এনে হালকা করে বলে

” আমি হূরপাখি ভয় পেয় না। হূর রুমালটা খুলার চেষ্টা করতে করতে বলে

” কে আপনি, আপনাকে আমি চিনি না। ছাড়ুন আমাকে, নয়তো আমি চিৎকার করবো। হূর আর কিছু বলতে যাবে তখনই সেই অচেনা ব্যক্তি তাকে কোলে তুলে নিয়ে কারে বসিয়ে দেয়। আর হাতটা বেঁধে দেয়।

হূর বলে

” এই ছাড়ুন আমাকে, আপনি কি মেয়ে পাচারের কাজে যুক্ত? ব্যক্তিটা কিছু না বলে কারের ডোরটা লাগিয়ে ড্রাভিং সিটে বসে পরে। হূর বলে

” কেউ আছো হেল্প!? ব্যক্তিটা কার ইস্টার্ট করে বলে

” দেখ হূর অযথা নিজের এনার্জি লোস্ট করে লাভ নাই। কারণ তোমার আওয়াজ আমি ছাড়া আর কেউ শুনতে পারবে না। তার থেকে ভালো তুমি চুপ থাকো আর গান শুনো।

হূর বকবক করেই যাচ্ছে, তাকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে? কে সে!! শেষে লোকটা বিরক্ত হয়ে। ললিপপ থেকে খোসা ছাড়িয়ে হূরের মুখে দিয়ে দেয়। আচমকা এমন হওয়াতে হূর চমকে যায়। কিন্তু যখন বুঝতে পারে এটা ললিপপ তখন হূর বলে

” বাচ্চাদের মতো আমাকে চকেলট খায়িয়ে সেন্সলেস করে পাচার করে দিবেন? দেখুন আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি বলুন!? তখনই লোকটা আরেকটা ললিপপ হূরের মুখে পুরে দেয়। হূর বেচারি এখন কথা বলতে পারছে না। উম্মমমমমমম করছে। ব্যক্তিটা বিরক্ত হয়ে বলে

” তুমিতো এতো-বকবক করো কেন? কখনোই তো দেখেনি এতো বকবক করতে দেখেনি। চুপ থাকতে পারো না?

অপর দিকে বিরক্তির চরম পর্যায়ে অবস্থান করছে হূর। মুখটা ব্যথা হয়ে গিয়েছে । ঘন্টা দুয়েক পর যখন কারটা ইস্টপ হয় তখন আবার হূরকে সে কোলে তুলে নেয়। সারা রাস্তায় হূর আর একটা কথা বলে নাই। একটু পরই হূরকে কোল নিয়ে হাটতে লাগে। বেশ কিছু সময় পার হওয়ার পর হূরকে নামিয়ে দেয়। আর হাতের বাঁধান খুলে দিয়ে দূরে আড়ালে চলে যায়৷ হূর কারো আওয়াজ না পেয়ে ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে। আশেপাশে কাউকে না দেখে ভয় পেয়ে যায়। ভয়টা আরো বেশি হয় যখন আচমকা আওয়াজ শুনা যায়। আকাশের দিকে তাকিয়ে হূর দেখে আতশবাজি ফুটছে। আর খুব সুন্দর করে লেখা

” হ্যাপি বার্থডে হূর পরি। হূর তো অবাক সে ভুলেই গিয়েছিল আজ তার বার্থডে। সন্ধ্যার সময় হালকা অন্ধকার তার মাঝে এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। আশেপাশে তখন হাজারো জোনাকি পোকার আনাগোনা।

হূর নিজের হাত দিয়ে কয়েকটা জোনাকি পোকা আবদ্ধ করে নেয়,, তখনই কেউ একজন হূরের পিছন থেকে গোলায় একটা চেন পরিয়ে দেয়। হূর পিছনে ফিরে দেখে সেই লোকটা। সে খুব সুন্দর করে বলে

” আজকের দিনটা তোমার ছিল আর তুমিই ভুলে গিয়েছ! কিন্তু আমি তো ভুলিনি। হ্যাপি বার্থডে হূর, আমার হূর। হূরের চোখের কোনে পানি। এতটা তার জন্য কেউ করেনি। হূর বলে

” আমি জানি না আপনি কে, আমার কি হন, আমার ব্যাপারে এতটা কিভাবে জানেন। কিন্তু এতটা করার জন্য ধন্যবাদ। আমি সত্যি ভুলে গিয়েছিলাম। । ছেলেটা হূরের চোখের পানি মুছে বলে

” উহহু, কাদঁবে না। আর শুনো রাত হয়েছে বাসায় ফিরতে তো হবে তোমার। সবাই টেনশন করবে। কেকটা না হয় তোমার নেক্সট বার্থডে তে একসাথে কাটলাম। চলো এখন।

_____________
হূরও কিছু বলেনা। কেন যেন খুব ইচ্ছে করছে মানুষটাকে বিশ্বাস করতে। ছেলেটা আবার হূরের চোখ বেঁধে দিয়ে বলে

” এখন তোমাকে সত্যি সত্যি পাচার করে দিব কিন্তু তোমার বাসার লোকের কাছে । আর দেখ এই হাতাহাতি করো না। নয়তো আবার ঐ ভাবে রেখে দিব। হূর কিছু বলে না। চুপচাপ তার সাথে গিয়ে বসে। বাসার ঠিক একটু আগেই হূরকে কার থেকে নামিয়ে দেয়। আর কিছু না বলেই কার নিয়ে চলে যায়। হূর পিছনে তাকিয়ে দেখে কার টা অনেক দূর চলে গিয়েছে।

রাত অনেক। হূর ভাবছে বাসায় গিয়ে কাকে কি জবাব দিবে?? বাসায় ফিরতেই সম্পূর্ণ বাসা ফাঁকা৷ কেউ নেই । তখনই অহি, আর তিথি বেড়িয়ে আসে হ্যাপি বার্থডে বলতে বলতে। এরিশের মা আসে কেক নিয়ে। হূরের বাবা, কাকাই হূরের মা। সবাই মিলে কেক কাটে। হূর সবাইকে খায়িয়ে দিলেও হূরের মাকে দেয় না। হূরের মা নিজে কেক কেটে হূরকে খায়িয়ে দেয়। তখন হূরও একটু দেয়।

মৃধা, আর হূরের ছোট বোন এসে বলে

” উফফ এতো চিৎকার কেন করছ? হূর তার ছোট বোন আলাইনা কে ডেকে বলে

” আলাইনা আপ্পির কাছে আসো। আলাইনা বলে

” না মৃধা আপু বলেছে তোমার কাছে আসলে তুমি আমাকে মারবে। সবাই মৃধার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হূর বলে

” কিছু বলবো না আসো না একটু। আলাইনা হূরের কাছে গেলে হূর আলাইনাকে কেক খায়িয়ে চুমু দিয়ে বলে

” এইবার যাও। আলািনাও কি মনে করে হূরকে চুমু দিয়ে হ্যাপি বার্থডে বলে চলে যায়। মৃধা রেগে অনেক আগেই চলে গিয়েছে। হূরের দিদুন নিজের রুমে। হূর দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে এরিশ আসছে। এরিশের মা বলে।

” এরিশ এখানে আয়, আজ হূরের বার্থডে।

এরিশ হূরকে দেখে বলে।

” এতো আদিখ্যেতার কি আছে? আজব!! আজকে তো আর ওর একার বার্থডে না।

আর এরিশ চলে যায়। হূর জানতো এমনটাই কিছু হবে তাই আর কিছু বলে না। এরিশকে তার কাকাই কিছু বলতে চাইলে হূর বলে বাদ দিতে। পরে সবাই হূরকে বিদায় দিয়ে চলে যায়।

________

হূর নিজের রুমে এসে দেখে এরিশ বসে আছে। আর হূরের দিকে তাকিয়ে আছে হূর ধীর পায়ে এগিয়ে আসে এরিশের দিকে। এরিশকে দেখে বলে

” আপনি এখানে/? এরিশ ভ্রু কুচকে বলে

” কেন নিষেধ নাকি?? আর বাসায় ফিরতে লেট হলো কেন? ড্রেসও চেন্ঞ্জ করিসনি?কাঁধে ব্যাগ। আবার বার্থডে। বয়ফ্রেন্ডের সাথে বার্থডে সেলিব্রেট করেছিস?? হূর বিরক্ত হয়ে বলে

” সমস্যা কি আপনার?? যখন তখন আমার রুমে কি করেন?? এরিশ বলে

” এই রুমে আমি হিরা মুক্তা রেখে গিয়েছি তাই আসি তোর সমস্যা?? বাসা টা কিন্তু আমার শুধু রোমটায় তুই থাকিস। হূর বলে

” বাসাটা আপনার না। বাবাই আর কাকাইয়ের। আপনি এটা বলেন এখানে কেন এসেছেন?? আর আপনিও তো বাইরে ছিলেন?? একই ড্রেস৷ জিএফ এর সাথে ছিলেন নাকি ডেটে??এরিশ দাড়িয়ে যায় আর হূরের দিকে আগাতে আগাতে বলে

“আমার বিল্লি আমাকেই মিওয়াও। হূর পিছাতে পিছাতে বলে

” এই আপনি আগাবেন না। এরিশ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে

” ভয় লাগে??হূর কিছু বলতে যাবে তখনই এরিশ সিটি বাজাতে বাজাতে চলে যায় আবার কি মনে করে ফিরে আসে দেখে টেবিলের উপর ফলের ঝুড়ি রাখা। এরিশ এসে সেখান থেকে একটা আপেল নিয়ে খেতে খেতে বলে

“এই নে এখানে যেই সব ফল রাখা আছে এগুলো তোর বার্থডে গিফট আমার তরফ থেকে। হূর ফলের ঝুড়িটা এরিশের হাত ধরিয়ে দিয়ে বলে

” যান আপনাকেই গিফট করে দিলাম। কিন্তু প্লিজ যান। এরিশ বলে

” আমার থাকার ইচ্ছেও নেই। ভালো কথা তোর বান্ধবী তিথির ফোন নাম্বার টা লাগবে। হূর বলে

” কেন লাইক করেন?? এরিশ বলে

” তাতে তোর কি?? তোর তো নীলআদ্র আছে। হূর এরিশকে রুম থেকে বেরকরে মুখের উপর দরজা লাগিয়ে বলে

” দিব না নাম্বার যান ভাগেন এখান থেকে। এরিশ বলে

” তোকে দেখে নিব কালকে ৷ হূর দরজটা খুলে মুখ বের করে বলে

” এই যে এই দিকে তাকান। দেখছেন,? হয়েছে না। বায়। বলেই দরজা লাগিয়ে দেয়

চলবে