#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ১৬
।
।
১৫দিন পর,
এই কিছুদিনে অনুর সাথে দ্বীপের তেমন একটা কথা বা দেখা হয় নি। দ্বীপ ওর কাজ নিয়ে বিজি ছিলো। অনু ওর পড়াশুনা নিয়ে। মাঝখানে একদিন ভার্সিটিতে দেখা হয়েছিলো। দ্বীপ দিয়াকে ড্রপ করতে এসেছিলো। অনু তাকায় নি দ্বীপের দিকে। দ্বীপ একবার তাকিয়ে চলেগেছিলো।
আজ তিথির বার্থডে।
সবাইকে ইনভাইট করেছে। দ্বীপ ঈশান প্রহর আবির অভি শুভ ওদের ও। অনু আসতে মানা করে দিয়েছিলো। দিয়া বলেছে ও আসার সময় সাথে করে নিয়ে আসবে। এই কিছুদিনে তিথি আর আবিরের মধ্যে ভালোই রিলেশন তৈরি হয়েছে। তিথি ও আবিরের জন্য ফিল করে। তাই তিথি আবিরের প্রপোজাল এক্সেপ্ট করে নেয়। ফিরিয়ে দিতে পারে নি। আর এই সব অনু দিয়া দ্বীপ ঈশান সবাই জানে।
সন্ধ্যা বেলায়,
দিয়া দ্বীপকে ফোন দেয়,
দিয়া: হ্যালো ভাইয়া।
দ্বীপ: বল।
দিয়া: কখন যাবি তিথির বাসায়।
দ্বীপ: আমার আসতে একটু লেইট হবে। একটা ইমপর্টেন্ট কাজ পরে গেছে। বাট আবির অভি আর শুভকে একনি পাটিয়ে দিচ্ছি।
দিয়া: তাহলে আমি ঈশানের সাথে চলে যাচ্ছি।
দ্বীপ: ওকে।
দিয়া: বাই।
দিয়া ফোন কেটে ঈশানের রুমে যায়। গিয়ে দেখে ঈশান আয়নার সামনে দারিয়ে চুল আচরাচ্ছে।
দিয়া: শেষ?
ঈশান: হুম।
দিয়া: তাহলে চলো। অনুর বাসায় ও যেথে হবে।
ঈশান: ওকে। চলো।
দিয়া ঈশানের সাথে বেরিয়ে পরে। কিছুক্ষণ পর পৌছে যায় অনুর বাসায়। ঈশান ড্রয়িংরুমে অনুর মা বাবার সাথে বসে গল্প করে আর দিয়া যায় উপরে। দিয়া উপরে গিয়ে দেখে অনু রেডি হয় নি। চুপচাপ বসে আছে।
দিয়া: অনুউউ।
অনু: তুই!
দিয়া: তুই একনো রেডি হস নি কেনো?
অনু: আমি তো বলেছিলাম যাবো না।
দিয়া: চুপ! যাবি না মানে নি। তর জন্য আমি এসেছি। চুপচাপ রেডি হো। তকে না নিয়ে তো আমি যাবো না।
অনু: কে কে আসবে।
দিয়া: সবাই। ভাইয়া ও আসবে।
অনু: ওহ। দারা একটু ওয়েট কর। আমি আসছি রেডি হয়ে।
অনু ওয়াড্রপ থেকে একটা ড্রেস বের করে যার গলা ও অনেক বড় আর ড্রেসটা ও সর্ট। অনু এসব ড্রেস কখনো পরে না। বাট আজ পরবে। দেখতে চায় অনুকে এইভাবে দেখে দ্বীপ কি রিয়েক্ট করে। অনুর ধারনা ভুল না ঠিক সেটাই দেখতে চায়।
অনু ওয়াশরুম থেকে বেরতেই দিয়া পুরো হা হয়ে যায় অনুকে দেখে😮
অনু: এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
দিয়া: তুই এইভাবে যাবি।
অনু: হুম। কেনো খারাপ লাগছে।
দিয়া: আরে না। দারুন লাগছে। আজ যে ছেলে দেখবে সেই পাগল হয়ে যাবে।
অনু: 😐চল।
অনু নিচে নামতেই ওর মা বাবা ঈশান হা হয়ে অনুর দিকে তাকিয়ে থাকে। আজ ফাস্ট অনুকে এইভাবে দেখছে তারা।
অনু: আমি কি কোনো এলিয়ান। এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো তোমার।
অনুর মা: তুই ঠিক আছিস তো।
অনু: হুম। আমার আবার কি হবে।
অনুর বাবা: বাদ দাও এসব। সাবধানে যাবি আর জলদি ফিরে আসিস।
অনু: ওকে। বাই।
ওরা তিনজন গিয়ে গাড়িতে বসলো। গাড়িতে বসেই ঈশান অনুকে জিজ্ঞেস করলো,”হঠাৎ এরকম ড্রেস পরলে কেনো?”
অনু: এমনি। ইচ্ছে করলো।
ঈশান: ইউ লুকিং সো নাইস।
অনু: থ্যাংকস।
দিয়া: আমাকে নাইস লাগছে না।
ঈশান: 😁ডায়নিকে আর কি নাইস লাগবে।
দিয়া: 😡😡
।
কথা বলতে বলতে কিছুক্ষণ পর ওরা পৌছে যায় তিথির বাসায়। গিয়ে দেখে আবির অভি শুভ প্রহর সিমি মায়রা ওরা চলে এসেছে। দিয়াকে দেখে তিথি এগিয়ে যায়।
তিথি: তদের এতো লেইট হলো কেনো?
দিয়া: অনুর জন্য।
তিথি অনুর দিকে তাকায়। তাকিয়ে বলে,”তুই এরকম ড্রেস কেনো পরলি। কখনো তো পরিস নি।”
অনু: কখনো পরি নি বলে আর পরবো না। তা তো নয়।
তিথি: হুম। তকে দারুন লাগছে। সবাই তো তর দিকেই তাকিয়ে তাকবে দেখছি।
অনু: কেনো তুই কি চাস তর দিকে তাকিয়ে তাকতো। আবিরকে বলবো এসব।
তিথি: তুই ও না। নিউ রিলেশনে গেলাম একনি ব্রেকাপ করাতে চাস।
অনু: 😁😁
তিথি: চল।
তিথি দিয়া অনু ঈশানকে ভেতরে নিয়ে গেলো। ঈশান চলে গেলো আবির শুভ ওদের কাছে দিয়া গেলো সিমি মায়রার কাছে অনু পাশের একটা চেয়ারে একা বসে আছে আর ফোন টিপছে। অনেকক্ষণ পরে হঠাৎ একটা ছেলে অনুর পাশের চেয়ারে এসে বসলো। অনু ভ্রু কুচকে ছেলেটির দিকে তাকালো।
ছেলেটি: হাই আই এম রোদ। ইউ?
অনু: অনু?
রোদ: নাইস নেইম।
অনু: থ্যাংকস।
রোদ: আপনি তিথির কি হন?
অনু: ফ্রেন্ড।
রোদ: ওহ। আমি ওর কাজিন।
অনু: ওহ।
রোদ: আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি।
এতক্ষণ অনু ছেলেটির দিকে ভালো করে তাকায় নি। এবার চোখ ছোট ছোট করে ভালো করে তাকিয়ে দেখলো। দেখতে দারুন। ক্রাশ খাওয়ার মতো। লুক অনেকটা প্রেবয় সিংগার আদিত্য নারায়ন এর মতো। অনুর এইভাবে তাকানো দেখে রোদ বললো,”আপনার প্রবলেম হলে থাক। আমি জোর করবো না।”
অনু দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে দ্বীপ আসছে নেহাকে সাথে নিয়ে। ওদের দেখে অনুর মাথা গরম হয়ে গেলো।
অনু: আরে না কিসের প্রবলেম। ফ্রেন্ডস।
অনু হাত বারিয়ে দিলো।
রোদ ও মুচকি হেসে হ্যান্ডসেক করলো। ওদের হাত মেলানোর সিনটা দ্বীপের চোখ এরালো না।
অনু: ফ্রেন্ড যখন তাহলে তো আপনি বলা বাদ দিতে হবে। এখন থেকে তুমি।
রোদ: সিওর।
প্রথমে অনুর ওই ছেলেটার সাথে কথা বলা দেখেই দ্বীপের রাগ উঠে গিয়েছিলো। তারপর ভালোভাবে অনুর দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করলো অনুর ড্রেস…. অনেক ছেলেরা অনুর দিকে তাকিয়ে আছে। এইরকম ড্রেস পার্টিতে আরো অনেকেই পরে এসেছে নেহা ও পরে এসেছে। বাট অনুকে সবার থেকে আলাদা লাগছে। তাই সবাই অনুর দিকে তাকিয়ে আছে। যা দ্বীপের রাগ আরো বেশি বারিয়ে দিচ্ছে।
অনু ওর মতো রোদের সাথে হেসে কথা বলেই যাচ্ছে।
নেহা: দ্বীপ ওই দিকে চলো।
দ্বীপ: তুমি যাও আমি আসছি।
নেহা: ওকে। জলদি এসো।
দ্বীপ: হুম।
দ্বীপ অনু আর রোদের সামনে এসে দারালো।
রোন: এনি প্রবলেম।
দ্বীপ: নো। অনু তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
অনু: সরি এখন কথা বলতে পারবো না।
দ্বীপ: তুমি আসবে না?
অনু: না।
দ্বীপ অনুর হাত ধরলো। রোদ তা দেখে সেই হাত রোদ ও ধরলো। দ্বীপ ভ্রু কোচকে রোদের দিকে তাকালো।
রোদ: অনু বলছে যাবে না। তাহলে ওর সাথে জোর করছেন কেনো।
দ্বীপ: তুমি আমাদের আটকানোর কে?
রোদ: আমি অনুর ফ্রেন্ড।
দ্বীপ:ওহ তাই।
অনু দ্বীপের দিকে তাকিয়ে দেখে দ্বীপের মুখ রাগে লাল হয়ে গেছে। অনু ভয় পেয়ে গেলো দ্বীপকে এইভাবে দেখে। অনু রোদকে বললো,”আমি কথাটা শুনেই আসছি। তুমি এখানে থাকো।”
রোদ: ওকে। জলদি এসো।
রোদ হাত ছেড়ে দিলো। দ্বীপ অনুর হাত ধরে টেনে তিথির কাছে নিয়ে গেলো।
দ্বীপ: তিথি তর রুমটা কোনদিকে।
তিথি: উপরের সেকেন্ড রুমটা। কেনো? কি হয়েছে?
দ্বীপ: কিছু না। কিছুক্ষণ যেনো ওই রুমের আশে পাশে ও কেউ না আসে।
দ্বীপ আর কারো কথা না শুনে অনুর হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে গেলো। নেহা রাগে ফুসছে অনুকে দ্বীপের সাথে দেখে। দ্বীপ অনুকে তিথির রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা লক করে দিলো।
অনু: কি করছো এসব।
দ্বীপ: এটা কি ড্রেস পরেছো।
অনু: আমার ইচ্ছা আমি কি পরবো। এটা তুমি বলার কে।
দ্বীপ: তোমার সাহস কি করে হয়। নিজের শরির অন্যদের দেখে বেরানো।
অনু: মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ দ্বীপ। আমার বিষয়ে কথা বলার কোনো অধিকার তোমার নেই।
দ্বীপের ইচ্ছে করছে বলতে অধিকার আছে “ভালোবাসার অধিকার।” সেই অধিকার দিয়েই বলবো।
বাট কিছু বললো না। দ্বীপ কিছু না বলে অনুর দিকে এগিয়ে গেলো। অনু ভয়ে পিছচ্ছে। অনু পিছতে পিছতে দেয়ালের সাথে লেগে গেলো। দ্বীপ অনুর কাছে এসে টান দিয়ে অনুর জামা ছিরে ফেললো। সাথে সাথে অনু ঘুরে গেলো।
দ্বীপ: তিথির ওয়াড্রপে দেখো ড্রেস আছে একটা পরে নাও।
অনু কাদতে কাদতে বললো,”তুমি এটা ঠিক করো নি।”
দ্বীপ: ঠিক করেছি কিনা। এটা আমি জানি। এবার চুপচাপ ড্রেস পরো। আমি ঘুরে আছি। দেখবো না।
অনু: তুমি রুম থেকে বের হউ।
দ্বীপ: না। ওয়াশরুমে ডুকে যাও।
অনু আর কিছু না বলে তিথির একটা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরূমে ডুকে গেলো। রোদ আর নেহা দরজা ধাক্কাচ্ছে।
অনু ড্রেস পরে বের হওয়ার পর দ্বীপ দরজা খুলে দিলো।
নেহা: দ্বীপ তুমি এতক্ষণ কি করছিলে ওর সাথে।
রোদ: অনু তুমি ঠিক আছো। একি তোমার ড্রেস চেন্জ কেন?
অনু: ভালো লাগছিলো না। তাই তিথির একটা ড্রেস পরেছি।
নেহা: মানেটা কি দ্বীপের সামনে….
অনু: জাস্ট সাট আপ। ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম আমি।
রোদ: আগের ড্রেস এ তোমায় অনেক সুইট লাগছিলো। এই ড্রেসে ও কিউট লাগছে। তুমি যাই পরো তাতেই তোমাকে অনেক সুন্দর লাগে।
অনু: থ্যাংকস।
দ্বীপ হাতের মুট শক্ত করে এখান থেকে চলে গেলো রোদের কথা গুলো ওর সহ্য হচ্ছে না। নেহা ও গেলো দ্বীপের পিছু পিছু। তিথি দিয়া অনুর কাছে আসলো।
দিয়া: কি করেছে ভাইয়া।
অনু: কিছু করে নি।
তিথি: অনু তুই ঠিক আছিস। আর ভাইয়া তুই এখানে।
রোদ: হুম। অনু তো এখন আমার ও ফ্রেন্ড হয়ে গেছে।
তিথি: তাই নাকি। ভালো।
দিয়া: অনু চল নিচে।
তিথি: ভাইয়া তুই ও চল।
রোদ: হুম।
ওরা সবাই নিচে গেলো। তিথি আবিরের কাছে গিয়ে বললো,” এই তুমি দেখো তো দ্বীপের কি হয়েছে। খুব রেগে বেরিয়ে যেথে দেখলাম।”
আবির: উপরে কি হয়েছিলো।
তিথি: পরে বলছি। আগে তুমি দ্বীপকে দেখো।
আবির: ওকে।
আবির চলে গেলো বাইরে। দ্বীপ তিথিদের বাগানে গেছে। সিমি আর শুভ কথা বলছে। অন্যদিকে অভি আর মায়রা। শুভ আর সিমির রিলেশনটাও আগে থেকে অনেকটা নরমাল হয়ে গেছে। সিমি এখন আর শুভকে আপনি করে বলে না।
দিয়া দারিয়ে আছে আর প্রহর দুর থেকে দিয়াকে দেখছে। এই কিছুদিনে প্রহর দিয়ার সাথে প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথা বলে নি। যখনি কথা বলতে গেছে দিয়ার সেই কথা গুলো মনে পরে গেছে। ঈশান গেছে আবিরের সাথে দ্বীপের সাথে কথা বলতে।
।
।
চলবে?🙄