ভালোবাসার অধিকার পর্ব-২৮+২৯

0
562

#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ২৮


পরেরদিন দ্বীপ অফিসে চলে যাওয়ার পর অনু দিয়ার রুমে যায়। দিয়া ডায়রিতে কিছু লেখছিলো। অনুকে আসতে দেখে দিয়া ডায়রি বন্ধ করে অনুর কাছে আসে।
দিয়া:তুই! ভাইয়া চলে গেছে?
অনু:হুম। তকে একটা বলার জন্য এসেছি।
দিয়া:কি?
অনু:মা বাবা তর বিয়ের কথা ভাবছেন।
দিয়া:মানে!
অনু:মানে শুভ আর সিমির সাথে প্রহর স্যার আর তর বিয়ের কথাও ভাবছেন।
দিয়া:কিইইই? ইমপসিবল। এই বিয়ে আমি কিছুতেই করতে পারবো না।
অনু:এটা কি বলছিস। অনেক আগে থেকে তদের বিয়ে ঠিক করা।
দিয়া:আমাকে বলে তো এই বিয়ে ঠিক করেন নি।
অনু:বাট তুই তো ঠিকই জানতি। আর এই বিয়ে করতে প্রবলেমটা কোথায় তর।
দিয়া:উনাকে শুধু আমি স্যার এর নজরে সবসময় দেখে এসেছি। উনাকে হাজবেন্ড কখনোই মানতে পারবো না।
অনু:স্যার তকে অনেক ভালোবাসে দিয়া।
দিয়া:বাট আমি বাসি না।
অনু:সত্যিই ভালোবাসিস না।
দিয়া:??
অনু:আর একবার ভেবে দেখিস।
এটা বলেই অনু রুম থেকে চলে আসে। দিয়াকে ভাবার জন্য সময় দিলো। দিয়া অনু যেথেই বিছানায় ধপ করে বসে পরে। কি করবে বুঝতে পারতেছে না। দিয়া প্রথম থেকেই জানতো প্রহরের সাথে ওর বিয়ে ঠিক। বাট এসব নিয়ে কখনো ভাবে নি। ও প্রহরকে সবসময় স্যারের নজরেই দেখেছে। মাঝে মাঝে দুষ্টুমিও করেছে। প্রহরের পিছনে লাগতে ওর ভালো লাগতো। বাট কখনো ভালোবাসে নি ওকে। দিয়া চোখ বন্ধ করতেই ঈশানের সেই ঘুমন্ত মুখটা ভেসে উঠলো। সাথে সাথে আবার চোখ খুলে নিলো।
দিয়া:কি করবো এখন আমি। ঈশান তো ভালোবাসে না আমায়। আর ভালোবাসলেও কখনো বলবে না। নিজের বেস্টফ্রেন্ড এর জন্য সেক্রিফাইজ করবে। আমাকে আর একবার ঈশানের সাথে কথা বলতেই হবে। আই নো স্যার আপনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন বাট আমি কিভাবে আপনাকে এক্সেপ্ট করবো। বুঝতেছি না। এই কিছুদিনে ঈশানকেই খুব ভালোবেসে ফেলেছি।

আরো ৮দিন পর সিমি আর শুভর বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। ওইদিনটা খুব ভালো বিয়ের জন্য। বাট প্রহর আর দিয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসা হয় নি।
দ্বীপ দিয়ার সাথে কথা বলেছিলো। কিন্তু দিয়া দ্বীপকে কিছুই বলেনি। শুধু বলেছে ২দিন টাইম দিতে। দ্বীপ ও রাজি হয়েগেছে। একমাত্র আদরের বোন। জোর করে কোনো কিছু করাতে চায় না। কখনো একফোটা কষ্ট পেতে দেয় নি। ফিউচারেও দিতে চায় না।
পরেরদিন দ্বীপ অফিসে চলে যায়। বাট আজ ঈশান যায়নি দ্বীপের সাথে। রুমে বসেই ফোনে গেইমস খেলছিলো। তখনি দিয়া রুমে ডুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। ঈশান দিয়াকে দেখে চমকে উঠে।
ঈশান:তুমি? দরজা বন্ধ করলে কেনো?
দিয়া:তোমার সাথে আমার কিছু ইমপর্টেন্ট করা আছে।
ঈশান:তার জন্য দরজা কেনো বন্ধ করলে কেনো? বাসায় আন্টি আছে উনি কি ভাববেন। দরজা খুলো।
দিয়া:মা নিজের রুমে। আর কেউ কিছুই ভাববে না। তোমার সাথে কথা বলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দরজা খুলবে না।
ঈশান:ওকে। জলদি কথা শেষ করে। বের হও।
দিয়া দৌড়িয়ে গিয়ে ঈশানকে জরিয়ে ধরে। হঠাৎ এমন করায় ঈশান কিছুই বুঝতে পারে না। ঈশান চোখ বন্ধ করে নেয়। আর হাতের মুট শক্ত করে নিজেকে কন্ট্রোল করছে।
ঈশান:এসব কি করছো দিয়া। ছারো আমায়।
দিয়া:আমি প্রহর স্যারকে বিয়ে করতে চাই না ঈশান। তোমাকে বিয়ে করতে চাই। প্লিজ ফিরিয়ে দিও না আমায়।
ঈশান:whatttt?? এসব কি বলছো। তোমার মাথা ঠিক আছে।
দিয়া:হুম। আমার মাথা ঠিক আছে। আর যা বলছি সব সত্যি।
ঈশান:দিয়া ছারো আমায়😡 আর এই রুম থেকে বের হউ। প্রহর তোমাকে ভালোবাসে। আর তোমাদের বিয়ে আজ থেকে না অনেক আগে থেকেই ঠিক।
দিয়া:আমি জানি। বাট আমি কি করবো। এই কিছুদিনেই তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি।
ঈশান:ওহ তাই। বাট আমাকে তো তুমি সহ্যই করতে পারতে না। ভালোবাসলে কবে।
দিয়া:এইটা প্রথম ফিল করি তোমার ঘুমন্ত মায়াবি মুখটা দেখে। তোমার সেই ঘুমন্ত মুখটা আমার কাছে এতো ভালোলেগেছিলো যতক্ষণ তোমার কাছে ছিলাম তোমার সেই ঘুমন্ত মুখের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। খুব ভালোলাগছিলো। তারপর থেকেই তোমার প্রতি অন্যরকম অনুভূতির জন্ম নেয়। প্রথম যখন স্যারকে বলেছিলাম। আমি তোমাকে ভালোবাসি তখনো না বুঝেই বলে দিয়েছিলাম। বাসায় এসে আমি এটা নিয়ে ভাবি অনেক ভাবি। চোখ বন্ধ করলেই তোমার ফেইসটা ভেসে উঠতো। তখনি ফিল করতে পারি……..
ঈশান চোখ বন্ধ করে এতক্ষণ দিয়ার কথাগুলো শুনে। খুব কষ্ট হচ্ছে। যাকে ৬বছর আগে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছিলো আজ তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। কারন প্রহর তো দিয়াকে এর আরো অনেক আগে থেকেই ভালোবাসে। বেস্টফ্রেন্ডকে কিভাবে ধোকা দেবে। দিয়ার মুখ থেকে এসব শুনে খুশি হবার বদলে খুব কষ্ট হচ্ছে। কখনো এক্সপেক্ট করে নি দিয়ার মুখ থেকে এসব শুনবে। ঈশান অনেক কষ্টে নিজেকে কন্ট্রোল করলো। তারপর নিজের থেকে দিয়াকে ছারিয়ে নিলো। দরজা খুলে দিয়াকে বের করে দিয়ে আবার দরজা লাগিয়ে দিলো।
দিয়া কিছুক্ষণ দরজার দিকে তাকিয়ে রুমে চলে গেলো। আর ঈশান দুহাত দিয়ে মুখ চেপে বসে আছে।
অনু দিয়ার রুমে এসে দেখে দিয়া উল্টো হয়ে শুয়ে আছে। অনু গিয়ে দিয়ার পাশে বসলো।
অনু:কি হয়েছে তর।
দিয়া ওই অবস্থায় থেকেই বললো,”কিছু হয় নি। মাথা ব্যাথা করছে।”
অনু:আমাকে আগে বললি না কেনো? ঠিক হয়ে ঘুমা। আমি মাথা টিপে দিচ্ছি।
দিয়া:লাগবে না।
অনু:তকে যা বলছি তাই কর। এত কথা বলিস কেনো?
অনু দিয়াকে ঠিক করে শুইয়ে দিলো। আর দিয়ার মাথা টিপে দিতে লাগলো। দিয়া চোখ বন্ধ করে ঈশান প্রহর ২জনের কথা ভাবছে।
দিয়া:(আমার লাইফটাই কেনো এরকম হলো।)
রাতে,,
দ্বীপ বাসায় ফিরে ফ্রেস হয়ে দিয়ার রুমে যায় গিয়ে দেখে দিয়া ঘুমিয়ে আছে। দ্বীপ গিয়ে দিয়ার পাশে বসলো। এই টাইমে দিয়া কখনো ঘুমায়নি আজ কেনো ঘুমিয়েছে দ্বীপ বুঝতে পারতেছে না। দ্বীপ দিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। দ্বীপের চোখ গেলো টেবিলের উপর রাখা ডায়রির দিকে। দ্বীপ গিয়ে ডায়রিটা হাতে নিলো। ডায়রির সব লেখা পরে দ্বীপ অবাক হয়ে দিয়ার দিকে তাকালো।
দ্বীপ:what is this? দিয়া ঈশানকে ভালোবাসে।
দ্বীপ ডায়রিটা রেখে নিজের রুমে গেলো। বসে বসে ভাবছে এটা কিভাবে পসিবল। অনু গিয়ে দ্বীপের কোলে বসে পরলো।
অনু:কি ভাবছো?
দ্বীপ:দিয়াকে নিয়ে ভাবছি।
অনু:কি?
দ্বীপ:দিয়া ঈশানকে ভালোবাসে এটা তুমি জানতে?
অনু:কিইইই? তোমায় কে বললো।
দ্বীপ:ওর ডায়রিতে এটা লেখা ছিলো।
অনু:এসব ও আমাদের আগে বলেনি কেনো?

ঈশান দুপুরেই এই বাসা থেকে বেরিয়ে চলে গেছে। এখানে থাকা আর ওর পক্ষে পসিবল না। শুভর সাথে কন্টাক করে শুভর বাসায় চলে গেছে। কিছুদিন ওর বাসায়ই থাকবে আর শুভর বিয়ের পর ইউএস বেক করবে। দ্বীপ ঈশানের রুমে গিয়ে দেখে ও রুমে নেই। ঈশানকে ফোন দিয়ে জানতে পারে ঈশান শুভর বাসায় চলে গেছে আর কিছু বলার আগেই ঈশান ফোন ও কেটে দেয়। দ্বীপের খুব রাগ হয়। এইভাবে কেউ না বলে চলে যায়। ঈশান এর সাথে অনেক কথা বলার ছিলো। দ্বীপ রুমে এসে বিছানায় বসে।
অনু:কি হয়েছে?
দ্বীপ:কিছু না। তুমি দিয়াকে ডেকে খাইয়ে দাও। আর বলবে কোনো টেনশন না করতে। আমি থাকতে ওকে কোনো কষ্ট পেতে দেবো না।
অনু:ওকে। আমি যাচ্ছি।
অনু দিয়ার রুমে গিয়ে দেখে দিয়া বিছানায় বসে আছে মাথা নিচু করে। অনু গিয়ে দিয়ার পাশে বসে। দিয়া একবার মাথা তুলে তাকায়। তারপর আবার মাথা নিচু করে পেলে।
অনু:আমাদের আগে বলিস নি কেনো তুই ঈশানকে ভালোবাসিস।
অনুর কথা শুনে অবাক হয়ে দিয়া অনুর দিকে তাকায় আর ভাবে,”ও জানলো কি করে।”
অনু:এটাই ভাবছিস তো কিভাবে এসব জানলাম। দ্বীপ তর রুমে এসেছিলো। তর ডায়রি সামনেই ছিলো। ওটা পরে দ্বীপ জানতে পারে আর আমাকে বলে।
দিয়া আরো অনেক অবাক হয়।”ভাইয়া এটা জানে”ভাবছে দিয়া।
অনু:এটা আমাদের আগে বললেই পারতি। কেনো লুকিয়ে রাখলি।
দিয়া:কি বলতাম। ঈশান আমাকে কখনই বিয়ে করবে না। তুই তো ওকে চিনিস না।
অনু:এটাই কি স্বাভাবিক না। প্রহর স্যার তো তকে ভালোবাসে। আর উনি ঈশানের ফ্রেন্ড। নিজের ফ্রেন্ড এর উড বিকে বিয়ে করতে কিভাবে রাজি হবে। তর এগুলো আগেই বলা উচিৎ ছিলো আর ভাবা ও উচিৎ ছিলো। তাহলে বিষয়টা এত কমপ্লিকেটেড হত না।
দিয়া:হুম।
অনু:এখন চল খাবি।
দিয়া:চল।

দ্বীপ ডিনার করে এসেই বেলকনিতে চলে যায় আর ঈশানকে ফোন দিতে শুরু করে ৩বার কল দিয়েছে বাট ঈশান ফোন রিসিভ করছে না। ৪বারের সময় শুভ ফোন রিসিভ করে।
শুভ:হ্যা দ্বীপ বল।
দ্বীপ:ঈশান কোথায়। ফোন ধরছিলো না কেনো?
শুভ:ও তো শান্তর রুমে। ফোন আমার রুমেই রেখে গেছে। আর আমি ওয়াশরুমে ছিলাম।
দ্বীপ: ও তুই ফোনটা নিয়ে ঈশানকে দে।
শুভ:ওয়েট দিচ্ছি।

এখনি মায়রার ফোনে একটা মেসেজ আসে। ওর জব কনফার্ম হয়ে গেছে। মেসেজটা দেখে মায়রা অনেক খুশি হয়। তারাতারি ওর ভাইয়ার কাছে যায়।
মাহি:কি হয়েছে এতো খুশি লাগছে কেনো তকে।
মায়রা:ভাইয়া একটা গুড নিউজ আছে।
মাহি:কি?
মায়রা:আমি আমাদেরই ভার্সিটিতে জব পেয়ে গেছি ২দিন আগে ইন্টারভিউ দিয়ে এসেছিলাম।
মাহি:কিই? তুই জব করবি।
মায়রা:হুম ভাইয়া।
মাহি:আমাদের কি কোনো কিছুর অভাব আছে যে তুই জব করবি।
মায়রা ওর ভাবির দিকে তাকায়। মায়রার ভাবি মায়রাকে একটা ভেংচি কাটে। মায়রা ওর ভাইয়ের হাত ধরে বলে,”আমার খুব ইচ্ছে জবটা করার। প্লিজ তুমি না করো না।”
মাহি:আচ্ছা তর যখন ইচ্ছে তাহলে কর। আমি তর সব ইচ্ছে পূরণ করার চেষ্টা করেছি। কোনো কিছুতে বাধা দেই নি এটায় ও দেবো না।
মাহি রুমে চলে যায় রুমে। মায়রা রুমে যাবে তখনি ওর ভাবির কথা শুনে আবার দারিয়ে যায়।
ভাবি:ছোট একটা জবই তো পেয়েছো এতে এত বাড়ি মাথায় নেওয়ার কি ছিলো সেটাই বুঝি না।
মায়রা পিছন ফিরে একবার ওর ভাবিকে দেখলো তারপর আবার রুমে গিয়ে বিছানায় বসলো আর অভিকে ফোন দিলো। ওর ভাবি মায়রাকে সবসময়ই এমন খুচিয়ে খুচিয়ে কথা বলে। মায়রা জব করার ডিসিশন ওর ভাবির জন্যই নেয়।

ঈশান দ্বীপের সাথে কথা বলে টেনশনে পরে যায়। হঠাৎ ঈশানের সাথে দ্বীপের কি এমন জরুরি কথা ঈশান বুঝতে পারছে না। কিছু বলার থাকলে ফোনেই বলতে পারতো। এইভাবে অফিসে কাল আসতে বললো কেনো। এসবই ভাবছিলো ঈশান শুভর ধাক্কায় শুভর দিকে তাকায়।
শুভ:কি বললো দ্বীপ।
ঈশান:কাল অফিস যেথে বলেছে।
শুভ:ও তাহলে আমার সাথেই চলে যাবি।
ঈশান:ওকে।
শুভ:চল। ডিনার করবো।
ঈশান:হুম

অভি:সত্যি।
মায়রা:হুম। এবার আর এসব শুনতে হবে না আমি বসে বসে খাই।
অভি:মায়রা প্লিজ এই সব বাজে কথা বলেছি না তোমাকে আর বলবে না। তোমাকে বিয়ে করার পর প্রয়োজন হলে সব টাকা আমি উনাকে দিয়ে দেবো। এই জন্য বলছি তুমি তোমার ভাইয়াকে আমাদের কথা বলে দাও। আর তোমাকে ঐ বাড়িতে রাখতে চাই না।
মায়রা:বাট ভাইয়া আমাকে সত্যিই খুব ভালোবাসে।
অভি:আই নো। আমি তো তোমার ভাইয়াকে কিছু বলছি ও না।
মায়রা: ভাইয়া,, আমার ভালোবাসা কম পরতে পারে এ জন্য এখনো কোনো বেবি প্লেন করেননি এর জন্যই ভাবি আমার উপর এতো রেগে আছে।
অভি:এতে তোমার দোষটা কোথায় সেটাই বুঝতে পারছি না। কেনো তোমাকে দায়ি করেন উনি। তুমি তো আর বলো নি এসব করতে তাহলে কেনো উনি তোমাকে অযতা এইভাবে দোষারোপ করবেন।
মায়রা:বাদ দাও এসব। আর কিছুদিন পরই বলে দেবো সব ভাইয়াকে। আমাদের বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে। ভাইয়া ও নিজের সংসার আগাতে পারবে।
অভি: হুম। আর মা তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছে। আমি দেশে আসার পর ফাস্ট এ একদিন গিয়েছিলে আর যাও নি।
মায়রা:কাল যাবো। আর তুমি এখানে যখন ছিলে না তখন তো প্রতিদিনই যেতাম।
অভি:এজন্যই মা খুব রেগে আছে। আমি আসতেই মাকে পর করে দিয়েছো।
মায়রা:আমি সত্যিই খুব লাকি। সেই ৫বছর ধরে তোমার মা আমাদের রিলেশনকে সাপোর্ট করছেন। অন্য কেউ হলে কখনো করতো না।
অভি:আমার মা তো তাই। আমার জন্য এমন একটা মা পেয়েছো। আমাকে একটা থ্যাংকস ও দিলে না।
মায়রা:কচু দেবো। মায়ের জন্য তোমাকে পেয়েছি। উনাকে থ্যাংকস দেবো।
অভি:আমার সাথে রিলেশনে না গেলে তো আর আমার মাকে পেতে না।
মায়রা:মা তোমাকে জন্ম না দিলে তো তোমাকে পেতাম না।
অভি:আমি তোমাকে ভালো না বাসলে তো আমার মায়ের সাথে দেখা করতে পারতে না।
মায়রা:মা তোমাকে এত ভালোবাসা দিয়ে বড় না করলে তো আমি তোমাকে পেতাম না।
এইভাবেই সারারাত ওরা তর্ক করে গেছে ওরা ২জন😒

চলবে?🙄

#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ২৯


ঈশান দ্বীপের সামনে বসে আছে। আর দ্বীপ ঈশানকে দেখছে। বুঝতে চাইছে ঈশানের মনে কি আছে।
ঈশান:এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো? কি বলতে চাস বল।
দ্বীপ:দিয়া প্রহরকে বিয়ে করতে চায় না তুই জানিস?
ঈশান:হুম।
দ্বীপ:কেনো করতে চায় না সেটা জানিস।
ঈশান স্বাভাবিকভাবেই বললো,”হুম” ঈশান বুঝতে পেরেছে দ্বীপ সব জেনে গেছে।
দ্বীপ:এখন কি করবো।
ঈশান:বুঝা ওকে। এগুলো সম্ভব না।
দ্বীপ:আমি জানি ঈশান সম্ভব না। একদিকে ফ্রেন্ড অন্যদিকে বোন। যে আমার হার্ট কলিজা সব। ওকে যে কষ্ট দিতে পারবো না।
ঈশান:এত বছরের ভালোবাসার কাছে ২দিনের ভালোবাসা কিছুই না।
দ্বীপ:দিয়াকে এসব আমার পক্ষে বলা সম্ভব না।
ঈশান:প্রহরকে বলতে পারবি? ও কতটা কষ্ট পাবে এসব জানলে বুঝতে পারছিস।
দ্বীপ:আই নো। তাই তো এখনো কোনো ডিসিশনে যেথে পারছি না।
এর মধ্যে অভি আর মৃনাল দরজা টেলে ভেতরে ডুকে।
মৃনাল:তদের এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেনো?
দ্বীপ সব বললো ওদের। এবার ওরা ও চিন্তায় পরে গেলো। কি প্রবলেমটায়ই না পরলো ওরা।
অভি:আই থিংক তদের প্রহরের সাথে কথা বলা উচিৎ।
মৃনাল:তার আগে ঈশান তুই বল তুই দিয়াকে তর লাইফে এক্সেপ্ট করবি তো।
ঈশান:সরি পারবো না। প্রহরকে কষ্ট বা ধোকা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
দ্বীপ ভালো করে ঈশানের দিকে তাকালো। দ্বীপ এবার ঈশানের ভেতর কি চলছে তা কিছুটা হলে ও বুঝতে পারছে।
অভি:শুধু কি এইটাই একমাত্র কারন না অন্যকোনো কারন আছে।
ঈশান:হুম আছে। তরা তো জানিন জেসি আমাকে কতো ভালোবাসে ইউএস বেক করে ওকেই আমি বিয়ে করবো। এতো দিন ওর প্রপোজাল এক্সেপ্ট করি নি। এবার ভাবছি করে ফেলবো।
দ্বীপ কিছু বললো না চেয়ার ছেড়ে উঠে দারালো। সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,”আমি একটু আসছি।”
মৃনাল:কোথায় যাবি।
দ্বীপ:এসে বলছি।
আর কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে দ্বীপ চলে গেলো। ঈশান ও উঠে দারালো।
ঈশান:আমি শুভ আর প্রহরের বিয়ের পর এখান থেকে চলে যাবো।
অভি:মানে?
ঈশান:আমি তো কোনো কমপ্লিকেটেড কথা বলি নি যে মানেটা বলতে হবে।
অভি:বাই এনি চান্স তুই কি আমাদের থেকে কিছু লুকাচ্ছিস।
ঈশান:আমি কি কখনো তদের থেকে কিছু লুকিয়েছি।
অভি:এখন আমার মনে হচ্ছে লুকিয়েছিস।
ঈশান:ভুল মনে হচ্ছে। আমি আসি।
ঈশান আর কারো কথা না শুনে চলে গেলো। অভি আর মৃনাল একে অপরেরদিকে তাকালো।


অনু চুপচাপ দিয়ার থেকে একটু দুরে বসে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে আর দিয়া মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষণ আগে ওর মা রুমে এসেছিলো ওর আর প্রহরের বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে। আরো কিছুদিন টাইম আছে এর মধ্যে সব কেনাকাটা সেরে নেওয়া যাবে। এখন শুধু দিয়ার হ্যা বলার অপেক্ষা। আজ রাত পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। দিয়া কি করবে বুঝতেছে না। বিয়েতে কি রাজি হয়ে যাবে। না বলে দেবে ও ঈশানকে বিয়ে করতে চায়। মাথাটা খুব ব্যাথা করছে দিয়ার আর কিছু ভাবতে পারছে না।
অনু:খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।
দিয়া:কার জন্য।
অনু:তর আর প্রহর স্যারের জন্য। আমি জানিরে ভালোবাসা না পাওয়ার যন্ত্রনাটা। একদিন হলেও আমি সেটা ফিল করেছি।
দিয়া:কেনো বল তো আমার মনে সেই ভালোবাসাটা প্রহর এর জন্য আসলো না যা ঈশানের জন্য এসেছে।
অনু:মন এর উপর কারো কন্ট্রোল থাকে না।
দিয়া:মা বাবা আংকেল আন্টি উনাদের কিভাবে আমি কষ্ট দেবো। আংকেল আন্টি ওরা তো প্রথম থেকেই আমাকে ওদের বাড়ির বউ মনে করে এসেছেন। না ভুল বললাম মেয়ে। আমি আর পারছি না কিছু ভাবতে। নিজের খুশির জন্য উনাদের কষ্ট দিতে চাই নারে। অনেক ভেবেছি। এই বিয়েটা হলে শুধু আমি কষ্ট পাবো। আর না হলে পুরো ২টি ফ্যামিলি।
অনু দিয়ার এই কথাগুলো সহ্য করতে পারছে না। অনু খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে দিয়া কতটা কষ্টে এই কথা গুলো বলছে। বাট অনু দিয়াকে শান্তনা ও দিতে পারছে না। কি বলে দিবে। দিয়া তো ঠিকই বলেছে। সবাই এই বিয়ে নিয়ে কতো আশা করে আছে। কতো খুশি সবাই। অনু কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেলো।


সিমি প্রহরের রুম দিয়েই যাচ্ছিলো। আয়নায় প্রহরের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। চোখে জল। সিমি তারাতারি প্রহরের রুমে ডুকে পিছন থেকে প্রহরকে জরিয়ে ধরে বলে,”ভাইয়া কি হয়েছে তর। কাদছিস কেনো?”
প্রহর:পাগল নাকি কাদবো কেনো? চোখে কি একটা পরেছে। দেখতো….
সিমি:আমাকে ভুল বুঝাচ্ছিস। ভুলে যাস না আমি তর বোন। অন্য কোনো মেয়ে না যে তকে বুঝতে ভুল করবো।
প্রহর:??
সিমি:বল না কেনো কাদছিলি। আমি তকে এভাবে কখনো দেখিনি। আমার ও খুব কষ্ট হচ্ছে।
প্রহর:কিছু হয় নি তো। মাথা ব্যাথা করছে তাই…..
সিমি তাকিয়ে দেখে প্রহরের ফোনে দিয়ার ছবি। “তারমানে দিয়ার ছবির সামনেই কাদছিলো”ভাবছে সিমি।
সিমি:দিয়া কি এই বিয়েতে রাজি না ভাইয়া।
প্রহর অবাক হয়ে সিমির দিকে তাকায়।
সিমি:এত অবাক হওয়ার কিছু নেই। তর ফোনের সামনে দিয়ার ছবি চোখে জল। সব কিছু একদিকেই ইন্ডিকেট করছে। আর তুই বড় কোনো বিষয় ছাড়া কাদিস না। সেটা ও আমি জানি।
প্রহর:হুম। দিয়া এই বিয়ে করতে চায় না। আজ দ্বীপ দেখা করতে এসেছিলো আমার সাথে ভার্সিটিতে।
সিমি:কি বলেছে?
প্রহর:বলেছে দিয়া এই বিয়েটা করতে চায় না। এবার কি করবে সেটাই জানতে এসেছিলো।
সিমি:তুই কি বলেছিস।
প্রহর:বিয়ে ক্যান্সেল করে দেবো।
সিমি:কিইইইইই?
প্রহর:আমি চাই না ওকে আমি জোর করে বিয়ে করতে। জোর করে বিয়ে তো করে নেবো। ভালোবাসা কখনো পাবো না। এটা ঈশানের জন্যই রয়ে যাবে।
সিমি:মানে?
প্রহর:ও ঈশানকে ভালোবাসে।
সিমির এখন দিয়ার উপর খুব রাগ উঠতেছে। এইভাবে ওর ভাইকে কষ্ট না দিলেও পারতো। প্রথম থেকেই তো জানতো পাগলের মতো ভালোবাসে ওকে। তাহলে কেনো এখন এসব করলো। সিমি নিজের রুমে চলে গেলো। ওর ও খুব কান্না পাচ্ছে। প্রহরের কষ্ট ওর সহ্য হচ্ছে না। শুভ ফোন দিচ্ছে। সিমি ফোন রিসিভ করলো। কিন্তু কিছু বললো না।
শুভ:হ্যালো কথা বলছো না কেনো।
সিমি:তুমি বলো।
শুভ:তুমি কাদছো?
সিমি:আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলবে।
শুভ:কি?
সিমি:যদি আজ জানতে পারো আমি অন্য একটা ছেলেকে ভালোবাসি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না। তখন তোমার কেমন লাগবে।
শুভ:এসব কি বলছো সিমু। পাগল হয়ে গেছো তুমি?
সিমি:প্লিজ বলো না।
শুভ:এটা ঠিক আমাদের রিলেশনটা বেশিদিনের নয়। বাট এই কিছুদিনেই তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি। তোমাকে হারানোর কথা ভাবতে ও পারি না। এবার তুমি বলো এই কথা কেনো বললে😡
সিমি:ভাইয়া খুব কষ্টে আছে শুভ খুব।
শুভ:মানে কি হয়েছে প্রহরের।
সিমি:দিয়া ভাইয়াকে বিয়ে করতে মানা করে দিয়েছে। ভাইয়া দিয়াকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে। আজ থেকে না। সেই ছোট বেলা থেকে। আমি দেখেছি ভাইয়াকে।
শুভ কিছু বলছে না চুপ করে আছে। সিমি আবার বললো,”তুমি ২দিনের ভালোবাসা হারানো কষ্ট সহ্য করতে পারবে না। ভাইয়া এতো গুলো বছর ধরে ভালোবেসে এসেছে সেগুলো হারিয়ে যাচ্ছে তা কিভাবে সহ্য করবে। ভাইয়াকে কখনো কাদতে দেখিনি জানো। আজ প্রথম দেখেছি।”
এসব বলছে আর সিমি কাদছে। শুভ কি বলবে বুঝতেছে না। সিমির কষ্ট পাওয়াটা স্বাভাবিক। নিজের ভাইকে এভাবে দেখে যেকোনো বোন কষ্ট পাবে। আর প্রহর……….
শুভ:রিজন কি?
সিমি:ঈশান।
শুভ:মানে।
সিমি:মানে বুঝতে পারছো না। ভালোবাসে ও ঈশানকে।(চিৎকার করে বলে আবার কান্না করে দেয়)
শুভ:সিমু প্লিজ শান্ত হও। দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে। যা হয় ভালোর জন্যই হয়।
সিমি:কি ভালোর জন্য হচ্ছে এসব। বিয়ে না হলে সবার ভালো হবে শুধু আমার ভাইয়াটাই কষ্ট পাবে।


রাতে দ্বীপ বাসায় এসে রুমে যায়। ফ্রেস হয়ে এসে সোফায় বসলো ল্যাপটপ নিয়ে। তখনি রুমে দিয়া আর দিয়ার পিছু পিছু অনু আসে।
দ্বীপ:তুই?
দিয়া:ভাইয়া আমি এই বিয়েতে রাজি।
দ্বীপ:মানে?
দিয়া:মানে তো ক্লিয়ারই।
অনু:তুমি কথা বলেছিলে ঈশান আর স্যারের সাথে।
দ্বীপ:হুম। প্রহর না করে দিয়েছে।
দিয়া:বাট আমি হ্যা করছি। বলেদিস উনাকে।
এটা বলেই দিয়া চলে যায়। দ্বীপ দিয়ার যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে থাকে।
অনু:ও ফ্যামিলির কথা ভেবে রাজি হয়েছে। তুমি ওসব নিয়ে ভেবো না।
দ্বীপ:হুম।

দ্বীপ গেলো ওর বাবার রুমে। উনি ল্যাপটপে কি একটা কাজ করছিলেন। দ্বীপকে আসতে দেখে ল্যাপটপ রেখে দেন। দ্বীপ উনার পাশে গিয়ে বসে।
দ্বীপের বাবা:কিছু বলবে।
দ্বীপ:দিয়া এই বিয়েটা করতে চায় না।
দ্বীপের বাবা:কিইইই?
দ্বীপ:এই বিয়েটা ক্যান্সেল করে ঈশানের সাথে……
দ্বীপের বাবা:whatttt! দিয়া এটা বলেছে?
দ্বীপ:না। দিয়া তো এই বিয়েতে রাজি বাট সবার খুশির জন্য। ও তো ঈশানকে ভালোবাসে।
দ্বীপের বাবা:মানে কি এসবের? দিয়া জানতো না প্রহরের সাথে ওর বিয়ে ঠিক তারপরো কিভাবে…..
দ্বীপ:মনের উপর কারো হাত থাকে না ড্যাড। প্লিজ তুমি কিছু আর বলো না। আই নো প্রহর খুব কষ্ট পাবে। বাট বিয়েটা হলে হয়ত আরো বেশি কষ্ট পাবে। কজ দিয়া মন থেকে প্রহরকে মেনে নিতে পারবে না। দিয়ার ইগনোরেন্স প্রহরকে আরো বেশি কষ্ট দেবে।
দ্বীপের বাবা কিছু বলছেন না। গম্ভির হয়ে বসে আছেন। দ্বীপ ওর বাবার দিকে তাকিয়ে আছে উওরের আশায়। কিছুক্ষণ পর উনি বললেন,”ওকে আমি দেখছি।”
দ্বীপ চলে আসলো ওর বাবার রুম থেকে। প্রহরের জন্য খুব খারাপ লাগছে ওর।
অনু:কি বললেন বাবা।
দ্বীপ:দেখবেন।
অনু:ওকে। আমি তোমার আর দিয়ার জন্য খাবার রুমে নিয়ে আসছি।
অনু চলে গেলো খাবার আনতে।



“ঈশান তুই প্লিজ আমার কথা ভাবিস না। আমি ঠিক আছি। বিয়েটা করে নে প্লিজ। অন্তত আমার জন্য।” ঈশানের হাত ধরে প্রহর কথাটা বললো।
ঈশান:তর মাথা ঠিক আছে। কিসব বলছিস। দিয়ার না হয় মাথা গেছে তরও কি গেছে।
প্রহর:যা বলছি ঠিক বলছি। রাজি হয়ে যা এই বিয়েতে।
ঈশান:ইমপসিবল। কোনোভাবেই না। আমি পারবো না এটা করতে।
প্রহর:পারতে হবে তকে। লুক এট মি আমার জন্য রাজি হচ্ছিস না তো। আমি কষ্ট পাবো বলে। পাবো না। বিলিভ মি। দিয়া যদি বলতো ও অন্যকাউকে ভালোবাসে তাহলে হয়ত কষ্ট হতো। খুব কষ্ট পেতাম। বাট ও তকে ভালোবাসে। তুই তো আমার বেষ্টফ্রেন্ড। কিভাবে কষ্ট পাবো। আমি জানি তুই আমার দিয়াকে খুব ভালো রাখবি খুব।
ঈশান:তুই কি করবি দিয়ার বিয়ে হয়ে গেলে।
প্রহর:আমি কি দেখতে বাজে? তুই জানিস না আমার জন্য কতো মেয়ে পাগল। এর মধ্যে একটা মেয়েকে না হয় বিয়ে করে নেবো। চিন্তা করিস না তুই। আই এম ফাইন।
কিছুটা হেসেই বলছে প্রহর। বাট ঈশান বুঝতে পারছে মনে মনে খুব কষ্ট পাচ্ছে। ঈশান প্রহরকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। প্রহরের চোখ দিয়ে একফোটা জল গরিয়ে পরলো আবার মুচে নিলো। ঈশানকে দেখাতে চায় না।


দিয়া যখন থেকে শুনেছে ঈশান এর সাথে বিয়েতে সবাই রাজি তখন থেকে বালিশে মুখ গুজে কাদছে। কিছুক্ষণ আগে প্রহর ফোন করে বললো এটা দিয়াকে। দিয়া স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে প্রহর খুব কষ্ট পাচ্ছে। দিয়ার খুব খারাপ লাগছে। এইভাবে একটা মানুষকে কষ্ট দিয়ে কি নিজে সুখি হতে পারবে। কিন্তু সবাইকে তো প্রহর নিজেই রাজি করিয়েছে ও কি করবে। দিয়া আর কিছু ভাবলো না। প্রহরের সাথে দেখা করতে ওর ইচ্ছা করছে। হঠাৎ ওর ফোনে টং করে একটা মেসেজ আসে। প্রহরই পাটিয়েছে বিয়ের শপিং করতে বেরিয়েছে ওরা। দিয়া আর অনুকে আসতে বলেছে।
কিছুক্ষণ পর দিয়া অনুকে নিয়ে শপিংমলে যায়। প্রহর সিমি শুভ তিথি মায়রা আর ঈশান রয়েছে। দিয়াকে আসতে দেখে ঈশান একবার দিয়ার দিকে তাকায়। প্রহর তাকায় নি দিয়া গিয়ে প্রহরের পাশে দারালো।
দিয়া:সরি।
প্রহর:কেনো?
দিয়া:কেনো খুব ভালো করে বুঝতে পারছেন। তারপরো কেনো প্রশ্ন করছেন?
প্রহর:তুমি এসব নিয়ে এখনো কেনো ভাবছো বলতো। যা হওয়ার তাই হবে। জানো আমি কখনো ভাগ্য বিশ্বাস করতাম না। কারন আমি জানতাম আমি তোমাকে পাবো। বাট এখন ভাগ্য বিশ্বাস করি।
দিয়া অবাক হয়ে প্রহরের দিকে তাকালো। চোখ দুটু লাল হয়ে গেছে। সিমি একবারো দিয়ার সাথে কথা বলছে না। দিয়া কথা বলতে গেলেও সিমি সরে যাচ্ছে। দিয়া বুঝতে পারছে কেনো সিমি এরকম করছে। খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। ভালোবাসাটা আসলেই খুব কষ্টের।
দিয়া:আমি তো এই বিয়েতে রাজি তারপরো আপনি এসব কেনো করলেন?
প্রহর:মন থেকে রাজি হওনি। ভালোবেসে বিয়ে করতে চাও নি। তাই……। তোমার একটু ভালোবাসা চেয়েছি তোমার শরির না। তাই এই বিয়েটা করেও কোনো লাভ হতো না।
দিয়া:আজ না হয় কাল হয়ত ভালোবাসতে পারতাম।
প্রহর:হয়ত?
দিয়া:না মানে….।
প্রহর:আর কিছু বলতে হবে না।


চলবে?🙄