ভালোবাসি বুঝে নাও-২ পর্ব-৫০+৫১+৫২

0
390

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#৫০_পর্ব

.

ওহ তাইতো,, এই বলে মেহরাব মাহিকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে চলে গেলো,, নিচে গিয়ে তো দুজনেই অবাক। ডয়িং রুমে সবাই বসে আছে সবার মুখে চিন্তার ছাপ,

কি বেপার কি হয়েছে???সাবাই এভাবে বসে আছে কেনো? মেহরাব বলল।

মেহরাব এর কথা শুনে সবাই পিছন ঘুরে গেলো,, দেখলো মেহরাব দাঁড়িয়ে আছে আর ওর পিছে মাহি গুটিশুটি হয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,, কিরে তোরা দুজনে কোথায় ছিলি?? সকালে উঠে তোদের কে না পেয়ে তো আমাদের সকলের টেনশন হচ্ছিল। (মেঘ)

হ্যাঁ মেহরাব কাউকে কিছু না বলে এভাবে কোথায় চলে গিছিলি,, যাবি যখন একবার বলে যাবি না??(শুভ)

আরে আমরা সকালের দিকে একটু হাঁটতে গিছিলাম,, সবাই ঘুমিয়ে ছিলো তাই কাউকে জাগায়নি, আর ইপ্সা মাহিকে ওয়াশরুম টা দেখিয়ে দাও তো ও ফ্রেশ হবে।

ঠিক আছে, মাহি তুমি আমার সাথে এসো,,, এই বলে ইপ্সা মাহিকে নিয়ে চলে গেলো,, আর বাকিরাও যে যার কাজে চলে গেলো।

যাই বলিস না কেনো আমার কিন্তু কেমন সন্দেহ হচ্ছে,, মেঘ মেহরাব এর কানে ফিসফিস করে বলল।

কিসের সন্দেহ কি বলতে চাইছিস তুই??

বউকে ছাড়া একটা রাত ও থাকতে পারলি না, আমি রাতেই দেখেছি তুই আমার পাশে নেই আর মাহিকে এতো সকাল সকাল ফ্রেশ হতে বললি কি ভেবেছিস আমরা কচি খোকা কিছু বুঝি না।

একটু বেশিই বুঝিস, আর আমি কিন্তু তোর বউয়ের বড় ভাই ওকে সো সম্মান দিয়ে কথা বল।

হুম তা তো দিবোই,,চলুন স্যার আপনাকেও ওয়াশরুম টা দেখিয়ে দিই ফ্রেশ হতে হবে তো নাকি সারারাত কি ধবল টাই না গেলো।

সেটাপ মেঘ,, এই বলে মেহরাব ও চলে গেলো মেঘ আর শুভ হাসতে লাগল নেহাল ভোরেই চলে গেছে বলছে যে ওর অফিস আছে,মেঘ আর মেহরাব এখন যাবে ,,,

আরো কয়েকটা দিন পাড় হয়ে গেলো সবাই নিজেদের কাজে ব্যাস্ত এতদিনে নেহাল অনেকবার চেষ্টা করেছে মীরার সাথে কথা বলার কিন্তু মীরা ওকে পাত্তাই দিই নাই, এমনি হয় এজন্যই তো কথায় বলে ভালোবাসা হলো এমন একটা জিনিস যখন ছেলেটা বোঝে তখন মেয়েটা বোঝে না আর যখন মেয়েটা বোঝে তখন ছেলেটা বোঝে না আর যখন দুজনেই বুঝতে পারে তখন পৃথিবী বুঝতে চাই না, নেহালের হয়েছে তেমন অবস্থা একটু মজা করতে গিয়ে এখন বেহাল অবস্থা,, আজকে শুক্রবার নেহাল বাড়িতে দশটার দিকে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরেছে উদ্দেশ্য মীরার সাথে কথা বলে ওর রাগ ভাঙানো, মীরার আজকে ভার্সিটি নেই তাই বাড়িতেই বসে তখনি ওর মা বলল যে পাশের দোকান থেকে ডিম আনতে ফ্রিজের ডিম শেষ হয়ে গেছে বিছানা থেকে উড়না টা নিয়ে মাথায় দিয়ে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল,, ডিম কিনে ফিরার পথে নেহাল ওর পথ আটকে দাঁড়ালো,,, ও যেদিকে যায় নেহাল ও সেদিকেই যাই।

কি হচ্ছে কি রাস্তার মাঝে এমন করছেন কেনো??

আমিও তো সেটাই বলছি কাঁদা সুন্দরী তুমি এমন করছো কেনো?? তুমি তো আমায় অনেক জ্বালিয়েছো সেই প্রথম থেকে, তো আমি তো তোমাকে বলেছিলাম এর শোধ নেবো তাই একটু মজা করেছি, প্লিজ মাফ করে দাও সরি,,

আপনার সরি বড়ি বানিয়ে পানি দিয়ে গিলে খান, আমার সামনে থেকে সরুন আমি বাড়ি যাবো,, (এতো সহজে আমি আপনাকে মাফ করবো না চান্দু আপনি আমায় কাঁদিয়েছেন, একটু তো ঘুরতেই হবে আমার পিছে মনে মনে বলল মীরা)

না আগে তুমি সরি একসেপ্ট করবে তার পর আমি তোমায় যেতে দেবো।

ধ্যাত এই বলে মীরা নেহালকে ঠেলে যেতে গেলো আর নেহাল ও মীরাকে যেতে দেবে না বলে ওর হাত ধরে জোরে টান দিলো, ফল স্বরূপ মীরার হাতে থাকা চারটে ডিম ধপাস করে রাস্তায় পরে ঠপাস করে ভেঙ্গে গেলো। মীরা চোখ বড় বড় করে একবার নেহাল তো একবার ডিমের দিকে তাকাচ্ছে। নেহাল একটা শুকনো ঢোক গিলে মীরার হাত ছেড়ে দিয়ে একটু সরে দাঁড়ালো।

ব,,বলছি কি, নেহাল কে কিছু বলতে না দিয়ে মীরা একটা জোরে চিৎকার দিলো।

আআআআআআআআআ কি করলেন এটা ডিমগুলো সব ভেঙ্গে দিলেন কেনো এখন আমি কি নিয়ে বাড়ি যাবো, বুঝেছি সব আপনার চাল আমাকে আম্মুর কাছে বকা শোনানোর ,,, রেগে লাল হয়ে বলল মীরা।

নেহাল কানে হাত দিয়ে ও জোরে বলল,, সরি আমি দেখতে পাইনি ভুল হয়ে গেছে আমি এক্ষুনি তোমার ডিম এনে দিচ্ছি,, এই বলে নেহাল কানে হাত রেখেই দোকানে চলে গেলো।

,,,,,,,,,,,

কি হচ্ছে কি মাহি ছাড়ো নয়তো পুড়ে যাবে তো।

যাক আমি তবুও আপনাকে ছাড়বো না, আমার বরকে আমি ধরেছি তাতে আপনার কি,, মেহরাব কে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলল মাহি,,

আজকে শুক্রবার তাই মাহি ঠিক করেছে যে আজ ভুনা খিচুড়ি আর গরুর মাংস রান্না হবে আর সেটা রান্না করবে মেহরাব,, তারপর রান্না শেষে নামাজ পড়ে এসে সবাই একসাথে খেতে বসবে,, তো মেহরাব রান্না করছিলো তখনি মাহি পিছন থেকে এসে মেহরাব কে জরিয়ে ধরলো,,, মেহরাব এর মা আর বাবা তাদের রুমে আছে,,।

মাহি আমার গা ঘেমে গেছে ছাড়ো আমায় গন্ধ লাগছে গা থেকে।

তাতে কি আপনার কাছে গন্ধ লাগলেও আমার কাছে লাগছে না,,,, এই বলে মাহি মেহরাব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো তখনি মেহরাব এর মা রান্নাঘরে আসলো। মাকে দেখে মাহি তড়িঘড়ি করে মেহরাব কে ছেড়ে মেহরাব এর হাত থেকে চামচটা নিয়ে নিলো।

দেখেছো আম্মু তোমার ছেলেকে আজকে একটু রান্না করতে বলেছি বলে আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে।

সেকি কি রে মেহরাব তুই তো নিজে থেকেই রান্না করতে এসেছিস তাহলে এখন মেয়েটাকে দিয়ে এভাবে কাজ করাচ্ছিস কেনো.?

আরে আমি তো,,,

থাক আর অযুহাত দিতে হবে না, আমিই করে দিচ্ছি।

না মাহি তোকে কাজ করতে হবে না তুই বরং আমার সাথে চল, মাথায় তেল দিয়ে দেবো।

এবার বুঝবে মজা আমাকে ফাঁসাতে এসে এখন নিজেই ফেঁসে গেলে (মনে মনে বলল মেহরাব)

মাহি করুণ চোখে মেহরাব এর দিকে তাকালো,, আরে এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে আম্মুই তো তুই যাহ তোকে এখানে কেনো কাজ করতে হবে না আম্মু যাও ওকে নিয়ে গিয়ে আচ্ছা মতো মাথায় তেল দিয়ে কাজের মেয়ে জবেদা বানাই দাও,, কথাগুলো দাঁত কেলিয়ে বলল মেহরাব।

ধুর কোথায় ভাবলাম ওনাকে জ্বালাবো তা আর হলো কই এখন তো উল্টো আমিই ফেঁসে গেলাম এখন নাকি মাথায় তেল নিতে হবে।

তারপর মেহরাব এর মা মাহির হাত ধরে নিয়ে চলে গেলো,,, মেহরাব এর রান্না শেষ করতে করতে প্রায় সাড়ে এগারো টা বেজে গেলো রান্না শেষ করে সবকিছু ঠিক করে রেখে রুমে চলে গেলো,, তারপর গোসল করে এসে দেখলো মাহি দাঁত কেলিয়ে খাটের ওপর বসে আছে।

এতো যলদি হয়ে গেলো?? কই তোমার মাথায় তো তেলের ছিটে ফোঁটাও নেই।

বুঝতে হয়,, আমি তেল নিলে তো থাকবে উল্টো আম্মুর মাথায় তেল দিয়ে আসছি,, তো আপনি তখন রান্নাঘরে আমায় কি বলছিলেন?? (মেহরাব এর দিকে আগাতে আগাতে বলল মাহি)

কই কি বলবো আমার মনে নেই।,, আয়নার সামনে চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বলল মেহরাব

আমি কাজের মেয়ে জবেদা???

ও এই কথা, তুমি তো নিজেই শিকার করছো তুমি জবেদা তাহলে আবার আমায় জিগাস করার কি আছে।

তবে রে দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা,, এই বলে মাহি মেহরাব এর টাওয়াল ধরে টান দিতে গেলো।

আরে আরে কি করছো খুলে যাবে তো,,,, মাহির থেকে টাওয়াল ছাড়াতে ছাড়াতে বলল মেহরাব।

খুলার জন্যই তো টানছি আজকে আপনার টাওয়াল হরণ করবো আমি,, এই বলে মাহি আবারো টানতে লাগলো,, মেহরাব ও মাহিকে ধরে টাওয়াল ছাড়াতে লাগল এভাবে টানাটানি করতে করতে দুজনি খাটের ওপর পড়ে গেলো মাহি নিচে মেহরাব উপরে।

এবার কি হবে, এখন যদি আমি তোমার অন্য কিছু হরণ করি তাহলে কি করবে হুমম,,মাহির মুখের থেকে চুল সরিয়ে বলল মেহরাব।

চলবে,,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#৫১_পর্ব

.
এবার কি হবে, এখন যদি আমি তোমার অন্য কিছু হরণ করি তাহলে কি করবে হুমম,,মাহির মুখের থেকে চুল সরিয়ে বলল মেহরাব।

ঘোড়ার ডিমের মাথা হবে সরুন আমার উপর থেকে দেরি হয়ে যাচ্ছে নামাজ পড়তে যাবেন নাহ??

সরতে পারবো না সরলে তুমিই লজ্জা পাবা।

মানে??

মানে হলো আমার টাওয়াল খুলে গেছে এখন যদি আমি উঠে দাঁড়াই তাহলে পুরোটাই খুলে পরে যাবে, কি বলো উঠে দাঁড়াবো??

ইইইই কোনো দরকার নাই ছিঃ কি একটা অবস্থা আমি চোখ ঢেকে রাখছি আপনি যান চেঞ্জ করে নিনি,, চোখে হাত রেখে বলল মাহি।

পাগলিটা,, এই বলে মেহরাব মাহির কপালে একটা চুৃমো দিয়ে উঠে চলে গেলো।

ওফ বাঁচলাম এই লোকটা দিনদিন চরম লেভেলের বদ হয়ে যাচ্ছে লম্বার উপর খাম্বা। শোয়া থেকে উঠে বলল মাহি,

মেহরাব একটা পাঞ্জাবি পরে বের হলো তারপর মাহির মুখের দুপাশে ধরে কপালে চুমো দিয়ে বলল।

তুমিও গোসল করে নাও আমি নামাজ পড়ে এসে তারপর একসাথে সবাই খাবো ওকে।

আচ্ছা ঠিক আছে।

এই নাও তোমার ডিম ইয়ে না মানে মুরগীর ডিম।

নেহালের ভিতু ভিতু মুখ দেখে ভীষণ হাসি পাচ্ছে কেউ কি বলবে যে একসময় এনি পুরো ভার্সিটি মাতিয়ে রাখতো কেউ ভয়ে ওনার সামনে কথা বলতে পারতো না,, সেই তাকেই নাকি আমি নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাচ্ছি বাহ সাবাশ মীরা,,, মনে মনে কথাগুলো বলল মীরা।

নেহাল এর হাত থেকে ডিম গুলো নিয়ে একটা রাগী লুক দিয়ে চলে গেলো মীরা,, বোকা ছেলে একটা।

বাবা বাঁচলাম পুরাই ধাঁনি লংকা এরে নিয়ে সারা জীবন সংসার করবো কেমনে কে জানে আল্লাহ বাঁচাও।

দেখতে দেখতে আরো সাত দিন চলে গেলো নেহাল অনেক চেষ্টা করলো কিন্তু কোনো মতেই মীরার মন গলাতে পারলো না যেনো আস্তো একটা পাথর দিয়ে তৈরি মেয়েটার মন, অবশেষে একটা বুদ্ধি বের করলো,, যেই ভাবা সেই কাজ মীরাকে খুঁজতে মীরার ভার্সিটি চলে গেলো গিয়ে দেখলো মীরা ওর বান্ধবীদের সাথে বসে গল্প করছে নেহাল মীরাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলো।

এই মীরা দেখ তোর আশিক এসেছে মনে হয় তোকেই খুঁজছে।

মীরার বান্ধবীর কথা শোনে মীরা মাথা তুলে দেখলো নেহাল মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে কাকে যেনো খুঁজছে,,তোরা থাক আমি ওনার বারোটা বাজিয়ে আসি, এই বলে মীরা চলে গেলো।

বুঝলে সাথে ভাবছি বিয়ে করবো, এখন তো আবার চাকরিও করছি বাড়ি থেকেও বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে আর যাকে ভালোবাসি সে তো পাত্তাই দিচ্ছে না তাই ভাবছি অনেক তো ঘুরলাম এবার একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়েটা করে নিলেই ভালো।

মীরা নেহাল কে ডাকতে যাবে তার আগেই নেহাল এর এমন কথা শুনে দুচোখ পানিতে ভরপুর হয়ে গেল, ও না হয় একটু মজাই করেছে তাই বলে এভাবে ওকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবে, মন খারাপ করে চলে যেতে যাবে তখনি নেহাল ডাকলো।

আরে মীরা যে শোনো তুমি তো আমার বউমনির বোন হও তাই আমার বিয়েতে তোমাকে কিন্তু থাকতেই হবে।

ওনি আমাকে মীরা বলল কখনো তো বলেনি সব সময় তো কাঁদা সুন্দরী বলতো তাহলে কি ওনি সত্যি অন্য কাউকে বিয়ে করছে এটা ভেবেই চোখে ধরে রাখা পানিগুলো বাঁধ ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইলো কিন্তু পারলো না মীরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলো।

কি হলো কথা বলছো না কেনো থাকবে তো নাকি।

এবার আর মীরা নিজেকে আটকাতে পারলো না মাথা নিচু করেই কেঁদে ফেলল।

আরে আরে কি হয়েছে কাঁদছো কেনো,, মীরার কাছে গিয়ে ওর মুখটা হাতের মধ্যে নিয়ে বলল।

আমার ইচ্ছে তাই ছাড়ুন আমায়,, অভিমানী গলায় বলল।

তুমি তো এখন আর আমায় ভালোবাসো না তাই ভাবলাম এভাবে বসে না থেকে বিয়েটা করেই ফেলি।

বাসি তো,, কেঁদে বলল মীরা।

কি বাসো??

ভালোবাসি তো, কিন্তু আপনি বাসেন না তাই জন্যই তো বিয়ে করতে চাইছেন,, আরো জোরে কেঁদে।

ওলে আমাল কাঁদা সুন্দরী রে, এই কথাটা আরো আগে বললে কি হতো তাহলে আর এভাবে কাঁদতে হতো না,, মীরাকে নিজের বুকের মধ্যে নিয়ে।

মানে,, নেহালের বুকের মাধ্যে থেকে বিড়াল ছানার মতো একটু খানি মাথা বার করে বলল মীরা।

মানে হলো আমি তো আমার কাঁদা সুন্দরী টাকে অনেক ভালোবাসি আর তাকে সারা জীবনের জন্য নিজের কাছে রাখতে চাই এই জন্যই তো এতো অভিনয় যাতে আমার কাঁদা সুন্দরী নিজের মুখে শিকার করে।, মীরাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।

আপনি খুব খারাপ,, নেহাল এর বুকের মধ্যে থেকেই বলল।

আমার বুকে থেকে আমাকেই খারাপ বলছো,,, এটা তো খুবি খারাপ কথা, দাঁড়াও এর শাস্তি তোমাকে দিতে হবে আর সেটা খুব শীঘ্রই তবে সেটা বাসর ঘরে দিবো।

নেহাল এর কথায় মীরা লজ্জায় নেহালের বুকে মুখ গুজলো।

,,,রাতে,,,

আমাদের বিয়ের তো ছয়মাস হতে চলল তাহলে আমরা কবে বেবি নেবো মেঘলা আপির তো আর চার মাস কিংবা তিন পর বেবি হবে তাহলে আমাদের কবে হবে,,, মেহেরাব এর বুকে মাথা রেখে বলল মাহি।

এখনো সময় হয়নি মাহি বেবি নেওয়ার আরো অনেক সময় পাবো,, তুমি এখনি এতো লাফালাফি করো না তো৷

না না আমার বেবি চাই চাই চাই কবে দিবেন সেটা বলুন

আরে বেবি তো আল্লাহ দিবে,, আমরা তো মাধ্যম মাএ, সময় হলে সব হবে এখন বেশি কথা না বলে ঘুমাও তো।

আচ্ছা ঘুমাচ্ছি তবে আমার কিন্তু বেবি চাই।

এই বলে মাহি মেহরাব এর বুকে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে গেলো মেহরাব মাথাটা একটু উঁচু করে মাহির মাথায় চুমো দিয়ে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।

,,চলবে,৷,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#৫২_পর্ব

.
চলে গেছে আরো কয়েকটা মাস পেরিয়ে গেছে আরো কয়েকটা বছর,, এরি মধ্যে সবার জীবনেই পরিবর্তন এসেছে শুভর মেয়ের বয়স প্রায় তিন বছরে পরবে আর মেঘলা ছেলে হয়েছে দুবছর বয়স,

মাহি তোমাকে নিষেধ করলাম তো তবুও এমন করছো কেনো চুপ করে বসে থাকো সব সময় শুধু দুষ্টামি৷

আমি যাবো ওদের কাছে ওরা কি সুন্দর করে সেজে বউয়ের কাছে বসে আছে আর আপনি আমায় যেতই দিচ্ছেন না৷

লাফালাফি বন্ধ করে চুপচাপ বসো আর তোমাকে এই অবস্থায় ওখানে যাওয়া ঠিক হবে না,, (হ্যাঁ মাহি ছয় মাসের পেগনেন্ট)

সব দোষ আপনার আপনার জন্যই আমি এখন মজা করতে পারছি না,

আরে আমি কি করলাম?? তখনি শুভর মেয়ে নুসরাত, আর মেঘলার ছেলে জয় আসলো, নুসরাত জয়ের হাত ধরে হেঁটে মেহরাব দের কাছে আসছে নুসরাত হাঁটছে আর জয়কে বলছে ভালো করে হাঁটতে এমন ভাবে বলছে যেনো ও অনেক বড়।

আংকেল তুমি মণিকে বকছো কেনো??(নুসরাত আধো আধো কন্ঠে বলল)

তোমার মণি অনেক দুষ্ট তো তাই বকা দিচ্ছি, কথা শোনে না,, মাহিকে খাওয়াতে খাওয়াতে বলল মেহরাব,।

পাশ থেকে জয় বলল, পতা।

এই দুষ্ট ছেলে পচা কাকে বলছো আমি অনেক ভালো একদম গুড গার্ল আর আমি না তোমার মণি, মণিকে কি কেউ পচা বলে??

আংকেল তুমি মণি কে অনেক খাওয়াও তাই জন্য তো মণি বেলি(পেট) এতো বড় হয়ে গেছে, আমি কম খাই দাখো আমার বেলি ছোট। মণির বেলি মটুর মতো হয়ে গেছে (নুসরাত)

নুসরাত এর কথা শুনে পাশ থেকে জয় বলে উঠল,, মোতু।

দেখেছেন ওরাও আমাকে মটু বলছে এই সব আপনার জন্য আমি বলি যে এতো খাবো না আপনি তবুও শোনেন না সব দোষ আপনার।

তুমি চুপ করো আর চুপ চাপ খাওয়া শেষ করো। মেহরাব নুসরাত দের বলল,,আসোলে কি বলতো তোমার মণির বেলির মধ্যে একটা ছোট্ট পুচকু বেবি আছে তাই তো মণির বেলি এতো বড় হয়ে গেছে।

ও তাই, আচ্ছা তাহলে বেবি আসলে আমি বেবিকে এই হাত ধরতে বলবো তারপর আমরা তিন হাঁটবো।

কেনো এই হাত ধরতে বলবে কেনো??

কেননা আমার এই হাত তো জয় ধরে রেখেছে তাই।

ওরা কথা বলছিলো তখনি পাশ থেকে জয় আম্মু যাবো বলে কান্ন করা শুরু করলো।

আরে আমার মামাটার কি হয়েছে আসো এই বলে জয় কে কোলে তুলে নিলো মেহরাব, জয়কে কোলে নেওয়া দেখে নুসরাত ও মেহরাব এর দিকে তাকাই থাকলো, মেহরাব মুচকি হেসে ওকেও কোলে তুলে নিলো,,, সবটা শেষ করো আমি ওদেকে দিয়ে আসছি এই বলে মেহরাব চলে গেলো।

সবটা শেষ করবো না ছাই আমি জীবনেও এতো খেতে পারবো না এই বলে মাহি পাশ থেকে একজনকে বলে খাবারগুলো তার হাতে ধরিয়ে দিলো

কিরে মীরা ইপ্সা ভাবি তো তোকে শুধু বলেছিলো যে আমার দেবরের সাথে প্রেমের অভিনয় করতে আর তুই দেখি ওকে বিয়েই করে নিলি (মেঘল)

হ্যাঁ তুমি তো দেখছি অনেক এগিয়ে। (ইপ্সা)

আজকে নেহাল আর মীরার বিয়ে ওদের বিয়েতেই সবাই আসছে ওরা গল্প করছিলো তখনি মেহরাব জয় আর নুসরাত কে কোলে নিয়ে ওদের কাছে আসলো।

এই নিজে তো সেজে বসে আছিস তোর ছেলে কোথায় সে কথা মনে থাকে না,, জয়কে মেঘলার কোলে দিয়ে বলল মেহরাব.

কেনো ও তো ওর বাবার কাছে ছিলো।

কে মেঘ?? মেঘ আর শুভকে তো দেখলাম ওইদিকে মেয়েদের সাথে লাইন মারছে (ডাহা মিথ্যা কথা ফাযিল দুটো যখন থেকে জেনেছে মাহির বেবি হবে তখন থেকে জ্বালিয়ে মারছে এবার বুঝবে মজা)

কি??(মেঘলা আর ইপ্সা দাঁড়িয়ে বলল)

হ্যাঁ বিশ্বাস না হলে তোমরা ওদিকে গিয়ে দেখতে পারো।

মেহরাব এর কথাশুনে মেঘলা আর ইপ্সা নুসরাত আর জয়কে কোলে নিয়েই মেঘ আর শুভর কাছে গেলো,, মেহরাব হাসতে হাসতে বলল, আব আয়ে গা আসলি মজা,,

ভাইয়া তুমি আজকেও ওদের পিছে লাগবে শুধু শুধু এখন ওরা বকা খাবে, (মীরা)

চুপ নতুন বউদের এভাবে কথা বলতে হয় না বুঝলি,, এই বলে মেহরাব চলে গেলো।

এই তিন শয়তান আর কখনো বদলাবে না,, বাবা হয়ে গেছে তবুও বাচ্চাদের মতো এওর পিছে লাগে

সব নিয়ম কানুন শেষে বিয়েটা হলো বাড়ি বেশি দূরে নয় এই জন্য রাতের আগেই বিয়ে হয়ে গেলো, তা নিয়ে অবশ্য মেহরাব মেঘ শুভ নেহালকে অনেক ক্ষেপিয়েছে,, বলেছে সবার হয় বাসর রাত আর তোর হবে বাসর দিন,, আহা একদম সূর্যের আলোই সবকিছু দেখে বাসর দিন হবে,, বেচারা নেহাল নতুন বর কিছু বলতেও পারছে না চুপ করে সবটা শুনে যাচ্ছে।

মাহি জেদ ধরেছিলে তাই জন্য মেহরাব ওদেরকে বিদায় দিয়ে অন্য একটা গাড়িতে মাহিকে নিয়ে বেরিয়েছে যেহেতু এখনো সন্ধ্যা হয়নি তাই।

মাহি বেবি আসার পর থেকে কিন্তু তুমি ভীষণ দুষ্ট হয়ে গেছো,, একদম বাচ্চা হয়ে গেছো। (গাড়ি চালাতে চালাতে বলল মেহরাব)

তাতে আপনার কি আমি আমার বরের সাথে দুষ্টামী করবো আর এসব আমি করি নাকি এসব তো বেবি করে। (ঠোঁট উল্টে বলল মাহি)

বেবি করে না?? ড্রামাবাজ একটা।

সত্যি বিশ্বাস হচ্ছে না আপনার এই দেখুন এই বলে মাহি আচমকা স্টিয়ারিং এর উপর থেকে মেহরাব এর হাত নিয়ে মাহির পেটে উপর রাখল। মেহরাব যলদি হাতটা আবার স্টিয়ারিং এর উপর রেখে রেগে মাহিকে বলল।

তুমি কি পাগল নাকি দেখছো না আমি ড্রাইভ করছি এমন কেউ করে যদি কিছু হয়ে যেতো।

মাহি মেহরাব এর ধমকানিতে কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলল, আমি নেমে যাবো আমি আপনার সাথে যাবো না,, এই বলে গাড়ির ডোর খুলতে গেলো,, আরে মাহি কি করছো তুমি কি চলন্ত গাড়ি থেকে নামবে নাকি, আচ্ছা সরি ডোরটা বন্ধ করো,

না করবো না,, এই বলে মাহি ডোরটা আস্তে করে আলগা করলো, মেহরাব একহাত স্টিয়ারিং এ রেখে অন্য হাতে মাহিকে ধরতে গেলে রাস্তা ভাঙা থাকায় ওতে গাড়ি ধাক্কা লাগল আর ওমনি মাহি গাড়ি থেকে পড়ে গেলো মেহরাব মাহিকে ধরতে গেলে ওর হাতে শুধু মাহির উড়না টাই চলে আসলো, মেহরাব যলদি করে গাড়ি থামালো একটু দূরে গিয়ে গাড়িটা থামলো। মেহরাব যলদি গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পিছনে আসলো,, দেখলো যে মাহি ওখানে নেই পাগলের মতো করে ওকে খুঁজতে লাগল,, আসোলে মাহি যেখান টাই পড়েছে সেখান টাই অনেক উঁচু গরান মতো আর জঙ্গল মতো হয়ত ওখানে পড়ে গরে নিচে পড়ে গেছে।

মেহরাব অনেক খুঁজেও মাহিকে পেলো না, রাস্তায় বসে পাগলের মতো মাহির নাম ধরে ডাকতে লাগল।

চলবে,,,,,???