ভালোবাসি বুঝে নাও ৩ পর্ব-৩৭+৩৮+৩৯

0
399

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_৩৭
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
মেঘ হন্তদন্ত হয়ে নেহাল এর রুমে প্রবেশ করল। নেহাল বিছানায় বসে কিছু ফাইল চেক করছিলো তখনি মেঘ এসে বলল, এসব কি নেহাল তুই মেহরাব এর সাথে এমন ব্যবহার কেনো করেছিস?

কি হচ্ছে কি ভাইয়া আস্তে কথা বল বাড়িতে মা বাবা আছে শুনতে পেলে অযথা চিন্তা করবে।

সেটা তোর কাজটা করার আগে ভাবা উচিত ছিলো।

আমার তো মনে হয় না আমি এমন কোনো কাজ করেছি যার জন্য তুই আমার উপর চেঁচাবি। আর বাইরের একটা মানুষের জন্য তুই আমাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি করছিস কেনো?

মুখ সামলে কথা বল নেহাল মেহরাব মোটেও বাইরের কেউ নয় ও আমার বন্ধু আমার ভাইয়ের মতো। আর তুই এসব কি করছিস আমি একদিন বাসায় ছিলাম নাহ আর এর মধ্যে বাবা মা কে নিয়ে মাহিদের বাসায় গিয়েছিস কোন সাহসে?

আজব ধরনের প্রশ্ন কেনো করিস ভাইয়া মাহিকে আমার ভালোলাগে পছন্দ হয়েছে। ওকে ভালোবাসি তাই জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছি এতে সাহসের কি আছে বুঝলাম নাহ।

তুই জানতিনা যে মেহরাব মাহিকে ভালোবাসে তারপরেও তুই এমন কাজ কীভাবে করতে পারিস?

বাহ ভাইয়া আজকে একটা বাইরের কেউ তোর কাছে তোর নিজের ভাই এর থেকেও বেশি আপন হয়ে গেলো?

নেহাল তুই কেনো বুঝতে পারছিস নাহ তুই ঠিক করছিস নাহ৷ কেননা মেহরাব মাহিকে অনেক ভালোবাসে।

ভালোতো আমিও বাসি ভাইয়া অনেক বেশি ভালোবাসি৷ তুই কি পারবি নাহ তোর ভাইয়ের জন্য মাহিকে এনে দিতে?

নেহাল তুই কিন্তু এবার বেশি বেশি করছিস তোর এতোটাও রিয়েক্ট করার আমি কোনো করনই দেখছি নাহ।

হ্যাঁ তোরা তো কেনো কারণ দেখবিই নাহ৷ আজকে তোর কাছে নিজের ভাইয়ের থেকে বন্ধুই বড় হয়ে গেলো।

ভাই যদি ভুল পথে যায় তাহলে তাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতেই হবে। আর আমি মোটেও মেহরাব এর পক্ষ নিচ্ছি নাহ যেটা সঠিক আমি সেটাই বলছি৷ নেহাল আর মেঘের কথার মাঝেই মেঘলা ওখানে আসলো চোখে মুখে আতংক মেঘলা কে দেখেই নেহাল মেঘলার কাছে গিয়ে মেঘলার দু হাত ধরে করুন স্বরে বলল, ও বউ মণি তুমি দেখো নাহ ভাইয়া কেমন করছে৷ না না তুমিতো আমার বড় আপু আমার বন্ধু তুমি একটু মেহরাব ভাই কে বলবে যেনো মাহিকে ভুলে যাই৷ আমি জানি মেহরাব ভাই তোমার কথা ঠিক শুনবে যতই হোক একমাত্র ছোট বোনের কথা তো আর ফেলে দিতে পারবে না।

নেহাল এর কথা শুনে মেঘলার কথা বন্ধ হয়ে গেলো। ও মনে মনে যেটার ভয় পেয়েছে সেটাই হলো। এখন নেহাল কে কি বলবে এটা ভেবেই মেঘলার গলা শুকিয়ে গেলো। শুকনো একটা ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বলল, নেহাল তুমি তো সবি বোঝো বলো আর আমি সত্যি বলছি ভাইয়া সেই ছোট্ট বেলা থেকে মাহিকে ভালোবাসে। তুমি জানো মাহি যখন ফুপির পেটে ছিলো তখন নাকি ভাইয়া সারাক্ষণ ফুপির বাসায় পড়ে থাকত। আর ফুপির পিছনে পিছনে ঘুরত ছোট ছোট হাত দিয়ে ফুপিয়ে পেট জড়িয়ে ধরে ফুপিকে নাকি বলত যে ছোট বাবু কবে আসবে? মেয়ে বাবু হলেই আমি কিন্তু নিয়ে যাবো৷ আরো কত কি বলতো তুমি একটু বোঝার চেষ্টা করো নেহাল। আচ্ছা আমরা তাহলে তোমার জন্য মেয়ে খুঁজি চলো একদম হুবুহু মাহির মতো সেম টু সেম কার্বন কপি। বরং ওর থেকেও আরো ভালো দেখে বউ আনবো আমাদের নেহাল এর জন্য কি বলেন মেঘ।

মেঘলার কথা শুনে নেহাল মেঘলার হাত ছেড়ে দিয়ে মেঘলার থেকে দূরে গিয়ে বলল, আসলে আমারই ভাবা উচিত ছিলো মেহরাব তো তোমার ভাই তুমি তো ওর পক্ষ নিবেই। আমি তো তোমার কেউ নই এই জন্য তুমি খুব সহজেই বলতে পারলে মাহিকে ভুলে যাওয়ার কথা। কই তোমরা তো কেউ একবার ও মেহরাব কে বলছো নাহ যে মাহিকে ভুলে যেতে। আর বউমনি আমি ছোট নয় যে আমার যেভাবে বোঝাবে আমি তাই বুঝবো।

ওদের শোরগোল শুনে পাশের ঘর থেকে মেঘ এর মা বাবা ও চলে আসলো। জিগাস করলে মেঘ ওনাদের সবটা খুলে বলল সবটা শোনার পর মেঘ এর বাবা মাও নেহাল কে বোঝালো কিন্তু নেহাল বুঝলো নাহ উল্টে রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো। মেঘ এর মা নেহাল কে থামাতে গেলেও নেহাল কারো কথা শুনলো নাহ৷ দেখেছেন মেঘ আমি আপনাকে আগেই বলেছিলাম এখন দেখলেন কি হলো আমার ভীষণ ভয় করছে মেঘ এখন কি হবে? নেহাল তো বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো আর আমাকেও ভুল বুঝলো।

মেঘ মেঘলা কে জড়িয়ে ধরে ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল, চিন্তা করো নাহ সব ঠিক হয়ে যাবে আমি আছি তো। আর তুমি মোটেও কোনো ভুল করোনি বরং যেটা সত্যি সেটাই বলেছো। চিন্তা করো নাহ আমরা সবাই মিলে নেহাল কে বোঝায়ে তারপর ওকে বাড়ি ফিরিয়ে আনবো।

মাঝ রাত বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে চারিদিকে মুখরিত। মুষল ধারে বৃষ্টি পরছে বারান্দায় বসে আমার সেদিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। কীভাবে সেদিন ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে মেহরাব ভাই এসেছিলো তাও আমি বাসায় একা ভয় পাবো সেই কথা ভেবে। কথা গুলো মনে করে একা একাই হাসতেছিলাম তখনি রুম থেকে ফোন বাজার শব্দে আমি দৌড়ে রুমে চলে গেলাম৷ ফোনটা হাতে নিলাম কে ফোন করেছে সেটা দেখার জন্য। হাতে নিতেই আমার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে কেননা মেহরাব ভাই ফোন দিয়েছে৷ আমি হাসি মুখে ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে ভেসে আসল করো মত মাতানো কন্ঠ।

এই বৃষ্টি ভেজা রাতে তোমাকে আমার মনের ছোট রাজ প্রসাদে তোমার নিমন্ত্রণ রইল। আসবে কিন্তু কেননা রাণী ছাড়া তো পুরো রাজ প্রাসাদ টাই শূন্য আর রাজা সে তো রাণীর বিরহে কাতর। জলদি আসো এখনো তো তোমার সাথে বৃষ্টি তে ভেজা বাকি।

ওনার কথা শুনে আমি নিরবে হাসলাম সত্যি লোকটাকে বুঝি না৷ এই কঠোর তো আবার এই এক পাগল প্রেমিক আমি হেসে বললাম। হুম কবি কবি ভাব কবিতার অভাব৷ আমার কথায় হয়ত ওনি ওপাশে নিরবে মুচকি হাসলেন কিন্তু কিছু বললেন নাহ শুধু আস্তে করে বলল, আয়।

আয় মানে? কোথায় আসব? আর বাইরে কি জোরে বৃষ্টি হচ্ছে দেখছেন? কিসব আবুল তাবুল বলছেন বলুন তো?

ওই যে বললাম তোমার সাথে এখনো বৃষ্টি তে ভেজা বাকি। তাই বলছি চুপিচুপি রুম থেকে বেরিয়ে বাইরে আয় আমি অপেক্ষা করছি।

ওনার কথায় যেনো আমি আকাশ থেকে পড়লাম আমি অবাক হয়ে বললাম। আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আর আপনি বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন মানে বাইরে তো প্রবল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে। এই আপনি ছাতা নিয়ে আসছেন তো? নাকি রেইনকোট পড়ে আসছেন?

তোর এতো প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারবো না পারলে এসে দেখে যাহ৷ জলদি আসবি কিন্তু বৃষ্টির পানি অনেক ঠান্ডা শীত করছে তো। ওনি এসব কি বলছেন আমার মাথায় তো কিছুই ঢুকছে নাহ আমি তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে উঠে আমার রুমের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম দেখলাম ওনি দাঁড়িয়ে আছে। ততক্ষণে ফোন কেটে দিয়েছেন আমার তাকানো দেখে ওনি হাত নাড়ালো ওনাকে দেখে আমি জানালা বন্ধ করে রুমের দরজা খুলে বেরিয়ে গেলাম। আমার এতোটাই ভুলো মন যে ছাতাটাও না নিয়ে বেরিয়ে গেছি। গেট খুলে বেরিয়ে ওনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম ততক্ষণে আমিও ভিজে গেছি।

এসব কি আপনি এতো রাতে এখানে কেনো? আর এভাবে ভিজতেছেন কেনো? অন্তত ছাতাটা তো আনতে পারতেন তাও আনেননি৷ আমার কথায় ওনি কিছু বলল নাহ শুধু কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে আলতো হাতে আমাকে ওনার বুকের মাঝে নিয়ে নিলেন। আমার শরীল কেঁপে কেঁপে উঠছে কেননা ওনার গাঁ ভীষণ ঠান্ডা কিজানি কতক্ষণ ধরে এখানে দাঁড়িয়ে আছে। এতো ভুলো মন কেনো তোর? এখন তো তুইও ছাতা না নিয়েই চলে এসেছিস।

ওনার কথায় আমার টনক নড়ল সত্যিতো আমিও তো ছাতা আনিনি। এবার ওনি আমাকে ওনার বুকের মাঝে শক্ত করে চেপে ধরে বলল, তুই কি আমাকে ভালোবাসিস?

আচমকা ওনার এমন প্রশ্নে আমি বেক্কল বনে গেলাম। এতোকিছুর পর ওনি আমায় জিগাস করছে আমি ওনাকে ভালোবাসি কি নাহ। আজব তো আপনি এই কথাটা বলার জন্য এতোরাতে এখানে এসেছেন?

অযথা বকবক না করে যেটা জিগাস্যা করছি সেটার উত্তর দে।

জানিনা কেনো আপনি সব জেনেও আমাকে কেনো জিগাস করছেন। আর জানতেও চাই নাহ যদিও সব মেয়েরই এই কথাটা বলতে অনেক লজ্জা লাগে আমারও লজ্জা লাগছে তারপরেও আমি বলব। আমি বলব যে আমি আপনাকে ভালোবাসি অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি আর আপনি? আমি ওনার বুকের থেকে হালকা করে মাথা উঁচু করে জিগাস করলাম। ওনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, বুঝে নাও।

মানে?

মানে হলো ভালোবাসি বুঝে নাও।

এটা আবার কেমন কথা সরাসরি বললে কি হতো খামোখা শুধু পেঁচান কেনো?

আচ্ছা অনেক ভেজা হয়েছে এবার তুই বাসায় যা নয়ত শরীল খারাপ করবে আর আমি সকালে আসছি তোর বাপকে আমাদের বিয়ের কথা বলতে রেডি থাকতে বলিস কিন্তু।

সত্যি?

তা নয়ত কি আমি কি তোর সাথে মজা করছি? গাধী যা বাসায় যা অনেক রাত হয়েছে না ঘুমিয়ে শুধু বাইরে বাইরে থাকা জলদি গিয়ে এখনি ঘুমিয়ে পড়বি নয়ত খবর আছে। ওনার কথা শুনে আমি হা করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি আজব তো ওনিই আমাকে ডেকে এখন ওনিই এসব কথা বলছে। আমি আর কিছু বললাম নাহ কেননা ওনার সাথে কথা বলায় বিথা আমি ওনাকে ছেড়ে বাসার ভিতর চলে আসলাম অনেক খুশি লাগছে কেননা কালকে আব্বু কে ওনি সবটা বলবে।

সকালে

আমি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছি কিছুক্ষণ আগের কথাটা ভাবতেই আমার কান্না পাচ্ছে। মেহরাব আব্বু কে আমাদের কথা বলতেই এসেছিলো সাথে মামা মামীও ছিলো তখনি নেহাল এসে ওনাকে এরেস্ট করে নিয়ে গেলো। বিষয় টা এসো দ্রুত হয়েছে যে আমি থ হয়ে গেছি কিছু বলতেও পারছি নাহ।

চলবে…..

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_৩৮
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
পুরো বাড়িটা কেমন নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেছে মেহরাব ভাই কে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই সবার এমন অবস্থা। আজকে কত খুশি ছিলাম আমি কখনো ভাবিনি এক মুহুর্তের মধ্যে আমার সব খুশি এভাবে শেষ হয়ে যাবে। মেহরাব ভাই নাকি ড্রগ সাপ্লাই করে এই জন্যই ওনাকে এরেস্ট করা হয়েছে। আমি কখনো ভাবিনি যে মেহরাব এমন কিছু করবে আর ওনাকে এরেস্ট করার সময়ইও ওনি কিছু বললো না৷ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য কিছুই বলল নাহ এর জন্য আমি আরো অবাক হয়েছি। মামী মণি অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই জন্য আমরা সবাই মেহরাব ভাইদের বাসায় আমি মামীর কাছেই বসে ছিলাম তখনি নিচে জোরে জোরে কথার আওয়াজ পেলাম। মামী মণি এইমাত্র ঘুমিয়েছে তাই ওনাকে ঘুমে রেখেই আমি আস্তে আস্তে রুমের বাইরে চলে এলাম। মেঘ ভাইয়া এসেছে সাথে মেঘলা আপুও আছে আপু দৌড়ে আমার সামনে দিয়েই মামীর কাছে গেলো।আমি সেদিকে না গিয়ে সোজা নিচে চলে গেলাম।

এসব কি হচ্ছে কি মেঘ তোমার ভাই কোন সাহসে আমার ছেলেকে এরেস্ট করল তাও আবার কোনো প্রমাণ ছাড়া। মামার কথায় মেঘ ভাইয়া কিছুই বলল নাহ শুধু মাথা নিচু রেখেই প্রায় অনেকসময় পর মেঘ ভাইয়া বলল, বাবা বিশ্বাস করুন আমি এর কিছুই জানতাম নাহ৷ নেহাল যে এমনটা করবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। তাই জন্যই তো আমি যখনি শুনেছি তখনি বিষয়টা দেখতে গিয়েছি। আর সেখান থেকে জানতে পারি বিষয়টা সত্যি নেহাল শুধু শুধু মেহরাব কে এরেস্ট করেনি প্রমাণ ছিলো বিধায় ও এরেস্ট করেছে। আমি তাও মেহরাব কে বাঁচানো চেষ্টা করতাম বিষয়টা আবার ও তদন্ত করতাম কিন্তু মেহরাব কি করলো ওকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে ও নাকি পালিয়েছে।

মেঘ ভাইয়ার কথা শুনে আমাদের সবার চোখ কপালে উঠে গেছে। মেহরাব ভাই পালিয়েছে এই কথাটা যেনো সবার উপর বজ্রপাতের মতো পড়ল মামা ধপ করে সোফায় বসে মাথায় হাত রেখে বলল, এসব কি বলছো তুমি?

আমি ঠিকি বলছি বাবা প্রথমে তো আমিও বিশ্বাস করিনি কিন্তু এটাই সত্যি। আমি ভাবতে পারছি না মেহরাব পালাতে কেনো গেলো এতে তো ও আরো নিজেকে দোষী প্রমাণ করছে। ওতো নেহাল কে আরো সুযোগ করে দিলো এখন আমি যে কি করবো।

সবার মাঝেই কেমন যেনো হতাশার ছাপ দেখা গেলো। কেউ যেনো বিশ্বাসই করতে পারছে না যে মেহরাব এমন একটা কাজ করতে পারে। মুহুর্তেই কি থেকে কি হয়ে গেলো বুকের মধ্যে কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে মনে হচ্ছে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে এখন একটা ফাঁকা জায়গা প্রয়োজন প্রাণ ভরে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য। আমি ওখানে আর দাঁড়ালাম নাহ দৌড়ে ছাঁদে চলে গেলাম ছাঁদের মাঝখান টাই গিয়ে জোরে জোরে কয়েকবার লম্বা শ্বাস নিলাম৷ হ্যাঁ এবার একটু শান্তি লাগছে এসব কি হচ্ছে চারপাশে? আমার সাথেই এমনটা কেনো হচ্ছে কাল রাতেও তো সবটা ঠিক ছিলো কতটা কাছাকাছি ছিলাম আমরা তাহলে কেনো মেহরাব আপনি এমনটা কেনো করলেন? আমার ভাবনার মাঝেই কেউ পিছন থেকে বলে উঠল।

এবার খুশি তো তুই দেখ তোর জন্য আজ কি কি সব হচ্ছে। শুধু তুই দায়ী এই সব কিছুর জন্য আজকে তোর জন্য দু দুটো জীবন ধ্বংসের মুখে। আমার ভাই আজকে পলাতক আর আরেক ভাই ঘর ছাড়া বুঝতে পারছি না আমি এখন ঠিক কি করবো। কার পক্ষ নিয়ে কথা বলবো দুজনই যে আমার খুবি আপনজন খুবি কাছে।

তুমি এসব কি বলছো মেঘলা আপু তুমি অন্তত আমাকে বিশ্বাস করো তুমি তো জানো সবটা তারপর ও কেনো এভাবে কথা বলছো। তুমি কি বুঝতে পারছো নাহ আমার ও যে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে আর আমার মন বলছে আমার মেহরাব কখনোই এমন কোনো কাজ করবে না যেটা আইনবিরোধী।

এটাই তো সম্যসা তোকে অবিশ্বাস করতে পারবো নাহ৷ কিন্তু আমি কি করবো বল আমি যে আর নিতে পারছি নাহ সবি তো ঠিকি ছিলো হঠাৎ করে কোথা থেকে যে কি হয়ে গেলো। আমিও জানি ভাইয়া কখনোই খারাপ কোনো কাজ করবে নাহ কিন্তু ভাইয়া পালাতে গেলো কেনো? এখন তো আরো বেশি সম্যসা হবে।

আমি আপুর কাছে গিয়ে আপুকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তুমি একদম চিন্তা করো না আপু আমি আমার মেহরাব কে চিনি ওনি যা করছেন নিশ্চয়ই এর পিছনে কোনো কারণ আছে। এখন শুধু আমাদের ধর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
,,,,,,,
পরপর দুদিন রাতেই যেনো আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামছে৷ কদিন আগেও বৃষ্টির কোনো নাম গন্ধও ছিলো নাহ অথচ এখন রাতে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে যেনো সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। রুমে বসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইল দেখছিলো নেহাল বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ চলে গেছে। সারা বাড়ি অন্ধকার রুমের মধ্যে চার্জার লাইট জ্বালিয়ে রেখেছে। সেদিন রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসার পর আর বাড়ি ফিরিনি নেহাল। দু’তালা দুটো রুম একটা ছোটখাটো কিচেন আর একটা ডাইনিং রুম বিশিষ্ট ফ্ল্যাট নিয়ে একা একা এখানেই থাকছে। বাইরে প্রচন্ড জোরে বৃষ্টি হচ্ছে আর মাঝে মাঝে কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো বিদ্যুৎ চমকানোর আওয়াজ। অনেক মনোযোগ দিয়েই কাজ করছিলো নেহাল তখনি রান্না ঘর থেকে কিছু পড়ার আওয়াজ হলো৷ প্রথমবার তেমন পাত্তা দিলো নাহ কিন্তু পরোক্ষণেই আবার কিছুর ভাঙার আওয়াজ পেয়ে ফাইলটা বন্ধ করে বিছানা থেকে উঠে বসল। সামনের ডয়ার থেকে গানটা নিতে গিয়েও নিলো নাহ পাশ থেকে ফল কাটার বড় ছুরিটা নিয়ে লাইট নিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে গেলো। নেহালের মনে এখন অনেকগুলো প্রশ্ন কে হতে পারে এতেরাতে হয়ত মেহরাব হবে নয়ত কোনো চোর হবে। কিন্তু নেহাল ভেবে নিয়েছে মেহরাবই হবে কেননা ওতো আজকে থানায় নেওয়ার পথে পালিয়েছে এখন হয়ত ওর কোনো ক্ষতি করার জন্য এসেছে। ডান হাতে ছুরি আর বাম হাত লাইট নিয়ে নেহাল আস্তে আস্তে রান্না ঘরের গেলো। গিয়ে দেখলো নিচে কাঁচের গ্লাসটা পড়ে ভেঙ্গে গেছে। কয়েকদিন হলো এই ফ্ল্যাটে উঠেছে একা মানুষ তাই বেশি কিছু জিনিস কেনা হয়নি। কিন্তু একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য রান্না করে খাওয়ার জন্য যা যা লাগে তার প্রায় সবটাই এখানে আছে।

নেহাল গ্লাসের ভাঙ্গা অংশ টা উঠিয়ে উপরে রেখে দিলো আর রান্না ঘরটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিলো নাহ এখানে কেউ নেই। সবটা দেখা শেষে এবার নেহাল যেই ফিরে যাবে তখনি ফ্লোরে কারো কাঁদা মাথা পায়ের ছাপ দেখল। এবার তো আমি শিওর নিশ্চয়ই বাড়িতে কেউ আছে কিন্তু যেই থাকো না কেনো আজকে তোমায় ধরা পড়তেই হবে। নিজেই নিজেকে কথাটা বলে নেহাল মেন দরজার কাছে গেলো দেখলো দরজাটা খোলা তখনি মনে পড়ল মেহরাব পালিয়ে যাওয়াই টেনশনে মাথা ঠিক ছিলো নাহ৷ তাই হয়ত দরজা লক করার কথা ভুলে গেছে নেহাল দরজাটা লক করে একটা বাকাঁ হাসি দিয়ে আবার নিজের রুমে চলে গেলো। লাইট দিয়ে পুরো রুম দেখে নিলো কিন্তু ওর কেনো যেনো মনে হচ্ছে জানালার লম্বা পর্দাটার পিছনে কেউ একজন আছে।

নেহাল সাবধানে পা ফেলে পর্দার কাছে গেলো ঠিক ধরেছি এখানে কেউ আছে। তবে তাকে পালাতে দেওয়া যাবে নাহ। এই কথা ভেবে নেহাল হাতে থাকা ছুরিটা দিয়ে পর্দার উপর থেকেই হালকা করে একটা টান দিলো। তখনি পর্দার ভিতর থেকে কারো করুণ আর্তনাত ভেসে আসল হয়ত সে আঘাত পেয়েছে। নেহাল মুচকি হাসলো এবার সে আহত এবার আর পালাতে পারবে না এটা ভেবে টান দিয়ে পর্দাটা সরিয়ে দিলো৷ আর পর্দার ওপারের মানুষ টাকে দেখেতো নেহালের চোখে বেরিয়ে আসার উপক্রম।

আপনি এখানে?

চলবে…..

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_৩৯
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
ভয়ে এতোটুকু হয়ে চেয়ারে বসে ঠকঠক করে কাঁপছে মীরা। কাঁদতে কাঁদতে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে তবুও কান্না যেনো থামতেই চাইছে নাহ৷ নেহাল মীরার হাতে ব্যান্ডেজ করা শেষে মীরার মুখোমুখি বসল। হাতের কব্জিতে কেটে গেছে মীরা ব্যান্ডেজ করা জায়গায় ধরে হিঁচকি তুলে তুলে কাঁদছে। অনেক তো কাঁদলেন এবার একটু থামুন প্লিজ।

নেহালের কথা যেনো মীরা শুনতেই পেলো নাহ ওতো ওর মতো কাঁদতেই ব্যাস্ত নেহাল এবার চেয়ার থেকে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর গ্লাসে করে ঠান্ডা পানি এনে মীরার সামনে ধরল ততক্ষণে বাইরের বৃষ্টিটা প্রায় অনেকখানিই থেমে গেছে। নিন এই পানিটা খেয়ে নিন তাহলে একটু ভালো লাগবে।

নেহাল বলতে দেরি মীরা খপ করে নেহাল এর হাত থেকে কাঁপা কাঁপা হাতে পানিটা নিয়ে ঢকঢক করে এক নিশ্বাসে পুরোটা পানি খেয়ে নিলো। খালি গ্লাসটা নেহাল এর দিকে বারিয়ে দিলো। নেহাল গ্লাসটা নিলে আবার ও মীরা কাঁদতে লেগে গেলো। নেহাল এর যেনো এবার ধর্য্যের সব বাঁধ ভেঙ্গে গেলো মীরাকে একটা ধমক মেরে বলল, থামুন এবার সেই কখন থেকে কেঁদেই যাচ্ছে। সামান্য তো একটু হাতই কেটেছে এতে এতো কান্না করার কি আছে? আর আপনার আগেই ভাবা উচিত ছিলো যে পুলিশের ঘরে চুরি করতে এলে এমন বিপদ হবেই।

এবার যেনো মীরার মুখে কথা ফুটল কাঁপা কাঁপা গলায় বলল আমি মোটেও চুরি করতে আসিনি।

তো সেই সদূর সিলেট থেকে এতোরাতে আমার বাসায় কি করতে এসেছেন শুনি আমাকে শুভ রাত্রি জানাতে আসেননি নিশ্চিয়? নেহাল এর কথা শুনে মীরা কিছু বলল না এখনো থরথর করে কেঁপেই যাচ্ছে। এমনিতেই বাইরে অনেক বৃষ্টি পড়ছিলো মীরা বৃষ্টিতে ভিজে একদম চুপচুপ হয়ে গেছে তাই এখন শীত লাগছে। নেহাল ব্যাপারটা বুঝতে পেরে একবার মীরা দিকে তাকিয়ে তারপর বলল, পাশের রুমে গিয়ে আগে আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন তারপর না হয় সব কথা শুনবো। নেহাল এর কথামত মীরা আস্তে আস্তে হেঁটে পাশের রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে আলমারি থেকে টাওয়ালটা বার করে মাথাসহ পুরো শরীল মুছে নিলো। কিন্তু এই ভেজা কাপড়ে থাকলে তো ঠান্ডা লেগে যাবে এখন শুকনো জামা পড়লে ভালো হতো কিন্তু এখানে তো মীরার কোনো জামা নেই। তাই মীরা পুরো রুমে একবার চোখ বুলালো আসলে ও এখন নেহাল এর রুমে। বৃষ্টি কমে গেছে তাই কারেন্ট ও চলে আসছে। মীরা আলমারীটা খুলে তার ভিতর থেকে নেহাল এর টাওজার আর একটা টির্শাট পড়ে নিয়ে টাওয়ালটা গায়ে ভালোমতো জড়িয়ে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

মীরাকে দেখে নেহাল কিছুক্ষণ মীরার দিকে তাকিয়ে ছিলো। তারপর বলল, বাবা আমিতো শুধু আপনাকে ফ্রেশ হতে বলেছিলাম এখন তো দেখছি আপনি আমার রুম সহ পুরো জামা কাপড় ও কব্জা করে ফেলেছেন।

আসলে অনেক শীত লাগছিলো আর এখানে আমার পড়ার কিছু ছিলো নাহ তাই বাধ্য হয়ে আপনার গুলোই পড়তে হলো।

আচ্ছা ঠিক আছে এখন বলেন তো আসল কাহিনী কি আপনি এতোরাতে আমার বাসায় কেনো?

আসলে বাসা থেকে আমার জন্য ছেলে দেখছে কিন্তু আমি এখনি বিয়ে করতে চাইনা। আসলে আমিতো মেহরাব ভাই কে পছন্দ করি তাই বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। প্রথমে ভেবেছি যে সোজা মেহরাব ভাইদের বাসায় যাবো কিন্তু পরে ভাবলাম যে যদি এখন আমি ও বাসায় যায় তাহলে খালামণি ঠিক আমার আম্মু কে ফোন করে বলে দেবে যে আমি তাদের বাসায়। তাই খালামনির বাসায় যাইনি ভাবলাম বাসায় ফিরে যাবো আব্বু আম্মু কে বোঝায়ে বলব। কিন্তু তার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো আবার এদিকে সন্ধ্যাও হয়ে গেছে কোথায় যাবো ভাবতে ভাবতে এই ফ্ল্যাটের নিচে এসে দাঁড়ালাম। নিচে কেউ ছিলো নাহ তাই আমি বাঁধাহীন ভাবে উপরে চলে আসতে পারছি। তারপর দেখি এই রুমের দরজাটা খোলা ভাবলাম এখানে রাতটা থাকি বাসার যে থাকবে তাকে বলে। কিন্তু তার আগেই আপনি আমায় চোর মনে করে হাতটা কেটে দিলেন।

নেহাল হ্যাঁ করে মীরার কথাগুলো শুনলো তারপর মনে মনে কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেসে বলল, আপনার যতদিন ইচ্ছে আপনি এখানে থাকতে পারেন আমি কাউকে কিছু বলবো নাহ। অনেক রাত হয়েছে আপনি এই রুমে ঘুমিয়ে পড়ুন আমি পাশের রুমেই আছি কিছু দরকার হলে আমাকে ডাক দিবেন। এখন তাহলে ঘুমিয়ে পড়ুন আমি গেলাম। নেহাল রুম থেকে বেরিয়ে গেলো আর মীরাও একটা সস্তির নিশ্বাস ফেলে নিশ্চিতে ঘুমিয়ে গেলো।
….
বৃষ্টি থেমে গেছে প্রায় অনেকক্ষণ হলো চারিদিকে ঝিঁঝি পোকার ডাক। নিশ্চুপ শহর সবাই ঘুমে মগ্ন কিন্তু ঘুম নেই কেবল আমার চোখে বৃষ্টি পড়ায় ঠান্ডা লাগছে খুব কাথাটা কমর অবধি নিয়ে মাথার নিচে হাত রেখে সটান হয়ে শুয়ে আছি। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে চোখ থেকে পড়া অবাধ্য পানি গুলো মুছে নিচ্ছি। আপনি কেনো এমনটা করলেন মেহরাব ভাই এমনটা করা কি খুব প্রয়োজন ছিল? এখন আমি কি করবো কার কাছে যাবো কিছুই তো বুঝতে পারছি নাহ। আমার এসব ভাবনার মাঝেই ব্যালকণিতে ঝুপ করে কিছু পড়ার আওয়াজ হলো। আমি সজাগ চোখে ব্যালকণির দিকে তাকিয়ে উঠে বসলাম। উড়না দিয়ে মুখটা মুছে ভালো করে উড়নাটা গায়ে দিয়ে আমি সাবধানে পা ফেলে ব্যালকণির দিকে এগোলাম। কিন্তু মনে মনে ভীষণ ভয় হতে লাগল যদি কোনো খারাপ লোক বা চোর ডাকাত হয় তাহলে কি হবে। আমি ফিরে এসে ফোনের আলো জ্বালিয়ে রুমে শক্ত কিছু খুঁজতে লাগলাম যেটা দিয়ে আমি সামনের জনকে প্রতিহত করতে পারবো৷ রুমে আলো জ্বালালাম না কেননা যদি সে পালিয়ে যায় বা আচমকা আমার উপর আক্রমণ করে সেই জন্য। ঘরের কোণ থেকে ছোট চিকন লাঠিটা নিয়ে আস্তে আস্তে ব্যালকণির দিকে গেলাম। পর্দা সরিয়ে সামনে তাকাতেই দেখি উল্টো হয়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছে সামনের লোকটা যথেষ্ট লম্বা আমি ওনার মাথায় আঘাত করতে পারবো না তার আগেই হয়ত ওনি ঠিক পায়ে যাবে তাই ভাবলাম আগে প্রথমে পায়ে আঘাত করবো তারপর ওনি বসে পড়লে ওনার মাথায় আঘাত করবো। যেই ভাবা সেই কাজ আমি দ্রুত গিয়ে যেই ওনাকে আঘাত করবো ওমনি সে সামনে ঘুরে আমার হাত ধরে বলল, আরে আরে কি করছি অল্প বয়সে বিধবা হওয়ার সখ হয়েছে নাকি?

খুব চেনা পরিচিত কন্ঠ পেয়ে আমি মাথা তুলে উপরে তাকাতেই দেখি দুটো চোখ আমার দিকে ব্যাকুল হয়ে তাকিয়ে আছে। যেনো কতদিন সে আমাকে দেখে নাহ৷ আমি মেহরাব কে সামনে দেখে আমার হাত থেকে লাঠিটা পড়ে গেলো ভিতর থেকে যেনো সব কান্না একবারে উঠে আসছে। আমি ছোটদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে লাফ দিয়ে ওনার গলা জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম। ওনিও আমার কমর জড়িয়ে ধরে আমাকে আরো নিবিড় ভাবে ওনার বুকের মাঝে নিয়ে নিলো। প্রায় অনেক সময় পর আমি ওনাকে ছেড়ে দিয়ে ওনার থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে বললাম। কেনো এসেছেন? আপনার তো কাউকে প্রয়োজন নেই আপনি তো একাই একশো তাহলে এখানে এসেছেন কেনো? আপনার তো কারো চিন্তা নেই নিজের মন মর্জি মতো সব করেন। ওনি আমাকে পিছন থেকে আলতো করে জরিয়ে ধরে বলল, প্লিজ রাগ করিস না আমি তোকে সব বলব এখন আমায় কটা খেতে দে তো অনেক ক্ষিদে পেয়েছে সারাদিন পেটে তেমন কিছু পরেনি।

ওনার কথা শুনে আমি পিছন ঘুরে ওনার দিকে তাকালাম ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল যখন ওনি বললেন সারাটা দিন ওনি কিছু খায়নি। আমি ওনার মুখে হাত দিয়ে বললাম, আপনি বিছানায় গিয়ে বসুন আমি এখনি আপনার জন্য খাবার আনছি। একি আপনার হাতে কি হয়েছে?

কি আবার হবে তোর বাপ এতো উঁচু করে প্রাঁচিল দিয়েছে ওটা টপকে এখানে উঠতে গিয়েই তো হাতটা ছিলে গেছে।

ইস কতটা ছিলে গেছে আপনি রুমে আসুন তো আগে তারপর সব কথা হবে।

এতোরাতে একটা জোয়ান ছেলেকে ডেকে রুমে নিচ্ছিস কিছু হলে কিন্তু আমার দোষ নেই। কেননা আমি কিন্তু যায়নি তুই আমায় ডেকে নিয়ে যাচ্ছিস। কথাটা বলেই ওনি চোখ টিপ দিলো। আজব এই সময়েও ওনার মজা করা লাগবে সত্যি এই লোকটা বড় আজব কখন কি করে বোঝাই মুশকিল।

চলবে…..