ভালোবাসি বুঝে নাও ৩ পর্ব-৪২ এবং শেষ পর্ব

0
597

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও
#সিজন-৩ পর্ব_৪২
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
,
এসব আপনি কি বলছেন আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে নাহ। একটা মেয়ে কতটা খারাপ হতে পারে সিমির কথা না শুনলে তো বুঝতেই পারতাম নাহ। মীরার কথা শুনে নেহাল বলল, আমিও তো বিশ্বাস করতে পারিনি কিন্তু পরে সবটা শুনে আমিতো অবাক। আসলে ভালোবাসা সত্যিই মানুষ কে অন্ধ করে দেয় সে কি করছে কেনো করছে কিছুই বুঝতে পারেনা৷ মানলাম মিস সিমি ভালোবেসেছে তবে ওনি ভালোবাসার মানুষ কে পাওয়ার জন্য যেই পথটা বেঁচে নিয়েছে সেটা নিতান্তই ভুল পথ। আসলে ভালোবাসা হলো, তারপর মাহি নেহাল কে যা যা বলেছিলো নেহাল ও মীরা কে সবটা বলল। মীরা তো মুগ্ধ হয়ে নেহাল এর কথা শুনছে। যেনো চারপাশে কি হচ্ছে কারো কোনো খেয়াল নেই একে অপরের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।

বলছি যে এভাবেই তাকিয়ে থাকবি নাকি আমার বিয়ের আয়োজন ও করবি। তবে চিন্তা করিস নাহ খুব শীঘ্রই তোর ব্যাবস্হাও করা হবে।

হঠাৎ পিছন থেকে কারো গলা শুনে নেহাল মীরা দুইজনই চমকে পিছনে তাকালো দেখল মাহি মেহরাব মেঘলা মেঘ সবাই একসাথে দাঁড়িয়ে আছে। আর সবাই মিটমিট করে হাসতেছে নেহাল মাথা চুলকে বলল, আরে তোমরা কখন এলে এসো ভিতরে এসো।

আমরা তো অনেকক্ষণ আগেই এসেছি ভাইয়া তবে তোমার কি সেদিকে কোনো খেয়াল আছে। তুমি তো এখন অন্য দুনিয়ায় আছো। মেঘলার কথা শুনে নেহালের লজ্জা যেনো আরো কয়েকগুন বেড়ে গেলো। তবে মীরাকে এখানে দেখে আমি অনেক অবাক হয়েছি তবুও কিছু বললাম নাহ।তবে মেহরাব এগিয়ে গিয়ে মীরার কাছে গিয়ে বলল, কীরে তুই এখানে কি করছিস? তুই নাকি আজ কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ওদিকে খালামণি তো অস্থির হয়ে তোকে সব জায়গায় খুঁজতেছে। আর তুই এখানে ঘাপটি মেরে বসে আছিস ব্যাপার কি?

মেহরাব এর কথ শুনে মীরা ঘবড়ে গেলো তবুও আমতা আমতা করে বলল, ইয়ে মানে আসলে মেহরাব ভাই আমি, মীরাকে থামিয়ে দিয়ে নেহাল বলল, আসলে হয়েছি কি মেহরাব ভাই মীরা এখানে ইচ্ছে করে আসিনি। তারপর নেহাল মেহরাব কে সবটা বলল সবটা শুনে আমি বললাম। তবুও মীরা আপু তোমরা দুজনই অবিবাহিত এভাবে একসাথে থাকলে লোকজন খারাপ বলবে। আমার কথা শুনে মেহরাব বলল তাহলে ওদের দুজনকে বিয়ে করায়ে দিই কি বলিস? মেহরাব এর কথা শুনে সবাই ওর দিকে তাকিয়ে একসাথে বলে উঠল, কিহ?

আরে এতো অবাক হওয়ার কি আছে আমিতো এমনি বললাম। এখন চল যাওয়া যাক আর এক সপ্তাহ পর আমার বিয়ে অনেক কষ্টে ওর বাপকে রাজি করায়েছি বলে কিনা আমার মেয়ে ছোট ওদিকে যে ওনার মেয়ে পে*কে ঝানু হয়ে গেছে তা বলবে নাহ। মেহরাব এর কথা শুনে আমার তো রাগে শরীল জ্বলে যাচ্ছে কিসব বলছে। এই আপনি এসব কি বলছেন হ্যাঁ আমার আব্বু তো ঠিকি বলেছে আমিতো ছোটই আপনিই তো বুড়ো ভাম হয়ে আমার মতো বাচ্চা মেয়েকে বিয়ে করতে এসেছেন।

হয়েছে হয়েছে এবার তোদের ঝগড়াটা থামা দয়া করে অনেক হয়েছে। আর মীরা তুই আমাদের সাথে চল তুই এখন আমাদের বাসায় যাবি আর মেঘ আপনি ভাইয়াকে নিয়ে যান।

মেঘলার কথা শুনে মেঘ টপ করে সবার সামনে বলে উঠল, মানে কি তাহলে তুমি কোথায় যাবে?

কোথায় যাবো আবার আমার একমাত্র ভাইয়ার বিয়ে বলে কথা মজা করতে হবে না? আমি এখন সোজা বাড়ি যাবো আর আপনারা আপনাদের বাসায় যান। মেঘলার কথা শুনে মেঘ বলল, না না তুমি কোথাও যাবে না আজব তুমি গেলে আমি রাতে ঘুমাবো কীভাবে তোমার কোথাও যাওয়া হবে নাহ। সোজা বাড়ায় যাবা এখন আমার সাথে।

মেঘ এর কথাশুনে মেঘলা লজ্জায় মরি মরি অবস্থা লোকটার কোনো কান্ডঙ্গান নেই কোথায় কি বলতে হয় তাও জানে নাহ৷ ওদিকে সবাই হাসতেছে যেহেতু মেঘলা মেহরাব এর বোন তাই মেহরাব বহু কষ্টে নিজেকে আটকে রাখছে নয়ত এতোক্ষণে কখন মুখ থেকে বেফাঁস কথা বলে মেঘ এর বারোটা থেকে চোদ্দ টা বাজায় দিতো। অতঃপর মেহরাব সবাইকে চুপ করতে বলে সবাইকে বাসায় যেতে বলল আর মেঘলা মেহরাব এর সাথেই গেলো। ওদিকে বেচারা মেঘ মুখটা শুকনো করে নেহাল কে নিয়ে বাসায় চলে গেলো। আহারে ভাইয়া মন খারাপ করিস না আপু চলে আসবে আমি নাহয় রাতে তোর কাছে ঘুমাবো তাহলে আর তোর রাতে ভয় করবে নাহ। নেহালের এমন আবলা মার্কা কথা শুনে মেঘ রেগে বলল, ফালতু কথা বন্ধ করে গাড়ি চালা নয়ত সোজা জেলে পুরে দিবো। সব কটা একসাথে জোট বেঁধেছে আমার বউ নিয়ে টানাটানি এই মেহরাবই আসল নাটের গুরু। ওর ও তো বিয়ে এবার আমার পালা আমিও দেখাবো বউ না থাকলে কেমন এতিম এতিম লাগে। এবার বুঝবে মেহরাব কথাগুলো মনে মনে বলে মুখে একটা ভিলেন মার্কা হাসি দিলো মেঘ।
,,,,,
অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটা এসেই গেলো বাড়ি ভরা মেহমান। গ্রাম থেকে আমার ছোট মামা ছোট মামি নানু ঈশিতা সবাই এসেছে। আজকে আমার গায়ে হলুদ কিন্তু তাতে আমার কি আমিতো এখন ঘুমাতে ব্যাস্ত। আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কি সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম তখনি ঈশিতা এসে ডাক দিলো আর আমার এতো সাধের স্বপ্ন টা ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেলো। এই মাহিপু জলদি উঠো কয়টা বাজে সেদিকে তোমার খেয়াল আছে? কে বলবে যে এই মেয়ের আজকে গায়ে হলুদ উঠো। একটু পরেই তো মেঘলা আপুরা তোমায় হলুদ দিতে আসবে রেডি হতে হবে তো।

ঈশিতার ডাকাডাকি তে আর ঘুম হলো নাহ শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লাম মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে। খানিক্ষন বসে থাকার পর ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম। সবাই ঠেসে ধরে গান্ডে পিন্ডে খাইয়ে দিলো কোনো রকমে রুমে এসে বসে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম। বিয়ে করা কত ঝামেলা বিয়ে না করলে তো বোঝতেই পারতাম নাহ। তবে আমার এই আরাম বেশিক্ষন স্হায়ী হলো নাহ ঈশিতা সহ আরো কতগুলো কাজিন এসে আমাকে টেনে নিয়ে গেলো। তারপর গোসল করে সাজুগুজু করে এখন স্টেজে বসে আছি। আর যে পারছে এসে মুখে হলুদ দিয়ে যাচ্ছে। মেঘলা আপুরা খানিকক্ষণ আগেই এসেছে। দেখতে দেখতে হলুদ দেওয়া শেষ হয়ে গেলো সন্ধ্যা নেমে রাত হয়ে এসেছে। মেঘলা আপুরা কেউ যায়নি আমরা সবাই মিলে বসে গল্প করছিলাম আমি হলুদ লেহেঙ্গা পরেছি সেটাও এখনো খোলা হয়নি। আমাদের গল্পের মাঝেই বক্সে গান বেজে উঠল আমরা হইহই শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখি। মেহরাব নেহাল মেঘ ভাইয়া ইমরান ভাইয়া আরো অনেকেই সবাই পাঞ্জাবি পড়া। বক্সে গানের বাজনা হচ্ছে আর সবাই নাচতে নাচতে আমাদের দিকেই আসছে। আসলে আমরা কেউ ভাবতেও পারিনি ওনারা এমনটা করবে। ছোট ছোট বাচ্চারা তো নাচ দেখার জন্য চেয়ার পেতে আরাম করে বসে পরেছে আর বড়টাও লজ্জার মাথা খেয়ে নাচ দেখতে বসে গিয়েছে।অবশ্য কেউ কেউ আবার রুমেও চলে গেছে। মেহরাব ভাই আমার দিকে এগিয়ে এসে তার কমর দিয়ে আমার কমরে আলতো করে ধাক্কা দিয়ে গানের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে বলল।

Tujhko hi tujhko hi
Tujhko hi tujhko hi

tujhko hi dulhan banaonga (এই টুকু গাইতেই সবাই অয়ে বলে চিল্লিয়ে উঠল আর আমি তো বেক্কল এর মতো হা করো দাঁড়িয়ে আছি)

tujhko hi dulhan banaonga

Warna kunwara mar jaonga

tujhko hi dulhan banaonga.Warna kunwara mar jaonga( মেহরাব ভাই থামতেই এবার আমি আর চুপ থাকলাম নাহ আমিও গানের তালে নাচতে নাচতে ঠোঁট মিলালাম)

jake jagan ban jaungi sang.
tere me naa aaungi.
sab se me yeh keh jaungi.
tujhko naa dula banaungi

tujhko naa dula banaungi. chahe kunwara mar jaonagi.

এভাবেই গান আর হাসি মজা দিয়ে আমাদের হলুদ সন্ধ্যা শেষ হয়ে গেলো। তারপর দুহাত ভর্তি করে মেহেন্দি নিয়ে রুমে চলে গেলাম কেননা প্রচুর ঘুম পাচ্ছে এতোক্ষণে হয়ত রাত দুটোর বেশি বেজে গেছে। সকাল বেলা কারো কান ফাঁটা চিৎকারে আমার ঘুম ভাঙ্গল আমি তড়িঘড়ি করে লাফ দিয়ে উঠে বসে হাঁফাতে হাঁফাতে পাশে তাকালাম দেখলাম ঈশিতা আমার হাত ধরে বসে আছে।

মাহিপু তোমার মেহেন্দীর রঙ কত গাড়ো হয়েছে পুরো কালো হয়ে গেছে। হায় তোমাকে তো মেহরাব ভাই হেব্বি ভালোবাসবে অবশ্য এখনো তো অনেক ভালোবাসে সেকি আর আমরা জানি নাহ।

ঈশিতার এমন কথা শুনে মন চাইকে ওকে পানিতে চুবিয়ে মারি নয়ত আমিই পানির মধ্যে ডুব মারি। এই কথা বলার জন্য কেউ এভাবে চিল্লায়? আমিতো ভাবছি কি না কি হয়ছে। তবুও ঈশিতাকে ইচ্ছে মতো কয়টা ঝাড় দিয়ে আমি বাথরুমে চলে গেলাম। বেচারি হাবলার মতো বসে আছে আসলে কি হয়েছে আর ওকে কেনোই বা মারলাম বেচারীর ছোট্ট মাথায় কিছুই ঢুকিনি।
……
চুপচাপ বসে আছি আর বসে আছি বললে ভুল হবে অবাক হয়ে বসে আছি। সামনে কাজি সাহেব বারবার তাড়া দিচ্ছে কবুল বলার জন্য৷ কিন্তু কবুলটা বলবো কীভাবে মুখের সামনে হাজারটা মানুষ হা করে তাকিয়ে আছে। যেনো আমি কবুল বললেই তারা নিশ্বাস নিবে নয়ত তাদের নিশ্বাস নেওয়া বারুণ৷ আবার ওদিকে নেহাল ভাইয়া আর ইমরান ভাইয়া মুখের সামনে ক্যামেরা ধরে রাখছে আর বারবার বলছে। ভাবি কবুল ভাবি কবুল। আজব সব কবুল তো ওনারা সবাই বলে ফেলছে তাহলে আমি কি বলবো? যাক আমি আর তাদের অস্হিরতা আর বাড়ালাম নাহ। একটু চুপ থেকে বড়সর একটা নিশ্বাস নিয়ে কবুলটা বলেই দিলাম। আমার কবুল বলা শেষ হতেই মনে হলো সবাই একসাথে জোরে আটকে রাখা নিশ্বাসটা ছাড়লো।

বিয়েটা শেষে এবার বিদায়ের পালা যদিও শশুর বাড়ি কাছে সবাই চেনা তবুও অনেক কষ্ট হচ্ছে। আব্বু আম্মু কে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কেঁদেছি সবাই মিলে বহু কষ্টে আমাকে গাড়িতে তুলে দিলো। মেহরাব ও পাশেই বসে আছে তাতে কি আমি আমার মতো কেঁদেই যাচ্ছি। পাশে তাকিয়ে দেখি ওনি আমার দিকে অবাক চোখে চেয়ে আছে। কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? নাক টেনে বললাম।

তোর কান্না দেখে মনে হচ্ছে তোকে কিডন্যাপ করে নিয়ে যাচ্ছি। পুলিশ দেখলে তো বলবে মেয়ে রাজি নয় জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আপনি শুধু এক লাইন বেশিই কথা বলেন। অনেকক্ষণ কান্না করার ফলে মাথা বেথ্যা করছে তাই আস্তে করে ওনার কাঁধে মাথা রাখলাম ওনিও বা হাতে আমার মাথায় হাত বুলায়ে দিলো।

মীরা মেঘলার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে ও আজকে লাল রঙের লেহেঙ্গা পরেছে। যদিও ওরা মাচিং করে জামা পরেনি তবুও নেহাল এর পাঞ্জাবি সাথে ওর লেহেঙ্গার রঙটা মিলে গেছে। মীরার চোখ নেহালের চোখে পড়তেই নেহাল দূর থেকে হাতে ইশারা করে বলল সুন্দর লাগছে। ব্যাস তাতেই মীরা একদম লজ্জায় লাল নীল হয়ে গেছে আর নেহাল ও মীরার লজ্জা মাথা মুখটা উপভোগ করছে। এভাবেই হয়ত আরেকটা ভালোবাসার গল্প শুরু হবে ইঞ্চি ইঞ্চি করে।
……..
গাড়ি মেহরাবদের বাসার সামনে থামতেই সবাই বাসা থেকে বেরিয়ে আসল তারপর নতুন বউকে বরং করে ভিতরে নিয়ে গেলো। আজব ব্যাপার হলো সবাই বাসার মধ্যে গিয়েই মেঘ নেহাল ইমরান নাহিদ সহ মেহরাব এর সব বন্ধু উধাও শুধু মাত্র রিফাত ছাড়া। মেহরাব চারপাশে তাকিয়ে রিফাতকে জিগাস করল কিরে সবাই কই কাউকেই তো দেখছি নাহ। আর তোকে যেই কাজটা দিয়েছি সেটা ঠিকঠাক মতো করেছিস তো?

জি ভাই আপনি যা যা বলেছেন সবটা করেছি একদম সব ঠিকঠাক। তবে সবাই কই গেছে এটা তো আমি জানি না।

মেহরাব চারপাশে আরো একবার সর্তক চোখ বুলিয়ে বাঁকা হাসলো৷ কেননা মেহরাব এর মাথায় কি চলছে সেটা কেউ জানে নাহ।

উফ কি মশা এই খাটের তলায় মনে হয় আজকে সকালে পরিষ্কার করা হয়নি আসার সময় একটা কয়েল আনলে ভালো হতো। খাটের নিচে শুয়ে শুয়ে কথাগুলো বলল নেহাল। নেহালের কথা শুনে ডেসিং টেবিলের পিছন থেকে মাথা বার করে ইমরান বলল, ওই নেহাল তুই চুপ থাক কেউ এসে দেখে ফেললে সব প্ল্যান ফেল হয়ে যাবে। নেহাল আর ইমরানের কথাশুনে মেঘ আলমারি থেকে মাথা বের করে বলল, কিরে তোরা দুজন এখানে কেনো?

মেঘ এর কথা শুনে ইমরান বলল, আমি কেনো মানে জানিস নাহ? ওই মেহরাব সালা আমার বিয়ে ১ বছর পিছায়ে দিয়ে নিজে নাচতে নাচতে বিয়ে করে নিলো। আর আমি ওকে ছেড়ে দিবো? আমিও দেখি আমি থাকতে ও বাসর কেমনে করে। তবে তুই এখানে কেনো?

ইমরানের কথা শেষে মেঘ বলল আরে ও আমাকে বউ থাকতেও এতিম বানায় দিছে। আমার জলজ্যান্ত বউটাকে কীভাবে নিয়ে চলে আসলো তাও আবার বিয়ের সাতদিন আগেই রাতে আমার একটুও ঘুম হয়নি আমিও আজকে ওর ঘুম হারাম করে ছাড়বো।

সে নাহয় ঠিক আছে আমরা দুজন এখানে আসছি কেননা মেহরাব আমাদের বউ নিয়ে টানাটানি করছে তাই তবে নেহাল এখানে কেনো? ওর আবার কি নিয়ে টানাটানি করছে? অভ্রর কথা শুনে নেহাল খাটের নিচে থেকে বলল, আরে অভিজ্ঞতা নিতে এসেছে ভাই কীভাবে অন্যের বাসর নষ্ট করা যায় সেটার অভিজ্ঞতা। তাহলে না নিজের বাসর নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে পারবো।
,,,,,,,
কি ব্যাপার আপনি আমায় চোখ বেঁধে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন মেহরাব?

একটু চুপ করে থাকনা তোকে তো আর হেঁটে যেতে হচ্ছে নাহ কোলে করেই তো নিয়ে যাচ্ছি। তাই একটু কিছু সময় চুপচাপ থাক। ওনার কথার পিঠে আর কিছু বললাম নাহ৷ কিছুক্ষণ পর ওনি আমায় নামিয়ে দিয়ে চোখ খুলে দিলো। চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে তো আমি অবাক সারা ছাঁদ সুন্দর করে সাজানো। ওয়াও অনেক সুন্দর লাগছে মনে হচ্ছে আমি জান্নাতের বাগানে আছি।

তাই তাহলে চল তোর আনন্দ আরো বাড়িয়ে দিই। ওনার কথা আমি বুঝলাম না তাই ওনার দিকে তাকাতেই ওনি আমায় নিয়ে চিলেকোঠার ঘরে চলে গেলো। পুরো রুমটা ফুল আর মোমবাতি দিয়ে সাজানো বিছানায় ফুলের ছাড়াছরি আমি অবাক হয়ে ওনাকে একটা গাধীর মতো প্রশ্ন করে ফেললাম। এসব কেনো?

হা-ডুডু খেলবো তাই। গাধী এসব কেনো বুঝিস নাহ?

আরে আমি সেটা বলতে চাইনি আমিও বলতে চাইছি যে এখানে কেনো? আপনার রুমে কি হয়েছে?

আমার রুমে যে কি হয়েছে সেটা আমি ভালো করেই জানি। আমি নিশ্চিত সবগুলো উৎ পেতে বসে আছে। থাক সারারাত কোনো লাভ হবে নাহ। তোকে এতোকিছু ভাবতে হবে নাহ চল গিয়ে বসি। ওনি আমাকে নিয়ে ছাঁদে রাখা দোলনায় বসায়ে দিলেন আমি ওনার কাঁধে মাথা রেখে বসে আছি। ওনি আমার হাত ওনার হাতের মধ্যে নিয়ে ওখানে চুমো দিলেন তারপর পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা বক্স বার করে ওটা থেকে একটা আংটি বার করে আমার আঙুলে পরায়ে দিয়ে তাতে চুমো খেয়ে বলল, এটা তোমার জন্য আমার ভালোবাসার উপহার।

কিছু সময় আমরা ওভাবে থাকলাম কিছুক্ষণ পর ওনি বলল, মাহি।

হুম

মে আই?

ওনার কথার পিঠে কি বলবো বুঝতে পারছি না লজ্জায় ওনার বুকে মুখ লুকালাম ওনিও হয়ত কিছু বুঝতে পেরেছ। মুচকি হেসে আমাক পাজাকোলে তুলে নিয়ে রুমের দিকে চলল আর আমিও লজ্জায় ওনার বুকে মুখ লুকালাম। আমার লজ্জায় হয়ত চাঁদ ও লজ্জা পেয়েছে তাই জন্যই হয়ত এক টুকরো মেঘ এসে কেমন টুপ করে চাঁদ টাকে ঢেকে দিলো।

সমাপ্ত।

ভালোবাসি বুঝে নাও সিজন-০১ পড়তে লেখাটি উপর ক্লিক করুন

ভালোবাসি বুঝে নাও সিজন-০২ পড়তে লেখাটি উপর ক্লিক করুন