ভালোবাসি হয়নি বলা পর্ব-১৬+১৭

0
333

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ১৬

আমি জানিনা আমার এই বাসায় থাকা হবে কিনা হয়তো আমি গরিব মানুষ আমাকে মেনে নেবে না, এখন দেখা যাক আমাকে আর কত কষ্ট সহ্য করতে হয়

মাহিনঃ এখানে এইভাবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে না থেকে সুপায় গিয়ে বসলেই তো হয়

আমিঃ আপনারা এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন আর আমি একাই গিয়ে বসে কি করব

ছুটকিঃ আরে ভাবি ওই বাটপারের কথা বাদ দাও তুমি আমার সাথে আসো আমরা দুজনে গল্প করব

মাহিনঃ দেখ এই ভাবী টা তুই কিন্তু এমনিতেই পাসনি আমার জন্য পাইছিস তাই আমাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত তা না করে তুই উল্টা আমাকে পচাছিস

ছুটকিঃভাবি তুমি আসো তো আমি তোমাকে বাড়িটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাই তুমি অতিথি এখন আমার বাসার তাই যতক্ষন থাকবে তুমি আমার সাথে থাকবে ওই বাটপারের সাথে কোন প্রকার কথা বলবে না যদি কথা বলো তাহলে তুমি আমার সাথে কথা বলতে পারবোনা

আমিঃ এটা আবার কেমন শর্ত

ছুটকিঃ ও বুঝতে পেরেছি স্বামীর জন্য দরদ উতলে উতলে পড়তেছে তাই না

আমিঃ আরে সেরকম কিছু না আমি তো শুধু বললাম যে এটা আবার কেমন শর্ত একজনকে সাথে কথা বললে অন্য জনের সাথে কথা বলতে পারবোনা আমি দুজনের সাথে কথা বলতে চাই

ছুটকিঃ দেখো ভাবি আগলা পিরিত বাদ দাও কারণ আমি ওই বাটপার এর কাছে আমি টাকা না নেওয়া পর্যন্ত ওর সাথে কথা বলবা না। যদি তুমি কথা বলতে চাও তো আমি তোমার মুখের টেপ মেরে দেবো কথা বলতে দেবো না।

মাহিনঃ তোর মতো একটা বোন থাকলে আর শত্রুর দরকার হয় না বুঝছিস।

ছুটকিঃ তুই চুপ থাক তুই আমার সাথে কথা বলবি না ভাবি তুমি আমার সাথে আসো তো।

মাহিনঃ তোর ভাবি এইখান থেকে এক পা নড়বে না।

উফফফ কি ঝামেলায় পড়লাম এখন কোথাও যাইতে পারবোনা।

আমিঃ আচ্ছা তোমরা ঝগড়া করো আমি একটু বাসা থেকে ঘুরে আসি এসে তোমাদের সমাধান করে দেব

মাহিনঃ বলছি না এখান থেকে এক পা নরলে খবর খারাপ আছে।

আমিঃ আচ্ছা আপনি বলুন এখন আমি কি করবো যেহেতু আপনার সাথে আমি সারা জীবন থাকবো তাই আপনার কথাটাই আমাকে মানতে হবে ছুটকি সরি বোন আমি তোমার সাথে যাইতে পারবোনা

হঠাৎ করে চোখ আটকে গেল সিঁড়ির উপরে একটা ভদ্রমহিলা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আস্তাছে

উনাকে দেখে দুজনেই চুপ হয়ে গেল তার মানে ইনি হলেন আমার শাশুড়ি মা

শাশুড়ি মা ঃ সকাল সকাল তোরা ২ জন কি শুরু করছিস কালকে রাতের কথা কি সব ভুলে গেছিস আবার সকালে শুরু করে দিয়েছিস আর এই মেয়েটাকে এখানে কেন

মাহিনঃ মা আসলে ও হলো

শাশুড়ি মা ঃ বেশি রকম ন্যাকামি করবি না যা বলবি সরাসরি বলবি

ছুটকিঃ মা মেয়েটা হল ভাইয়ার বউ

শাশুড়ি মা : মাহিন ও যা বলছে সেটা কি সত্যি নাকি মিথ্যা?

আমি খেয়াল করে দেখলাম উনি মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে/

আমি বুঝতে পারলাম না যে মানুষটা এত রাগী সেই মানুষটা তার মায়ের সামনে এসে ভিজাবিরাল হয়ে গেল?

শাশুড়ি মা ধমক দিয়ে বললেন

শাশুড়ি মা : কিরে এরকম মাথা নিচু করে আছিস কেন আমি কি তোরে মাথা নিচু করে থাকতে শিখাইছি সবসময় মাথা উঁচু করে থাকবি তুই আর কি ঘটনা ঘটেছে যার ফলে আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করে সোজা বউ বাড়ি নিয়ে এসেছিস

মাহিনঃ আসলে আম্মু

শাশুড়ি মা : দেখ এরকম তোতলামি করবি না আমার সামনে বুঝছিস,,, তোরা দুইজন এখন আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা আমি যতক্ষণ না তোদের ডাকবো ততক্ষণ তোরা আমার চোখের সামনে আসবি না আমি মেয়েটার সাথে কথা বলব।

ওনার কথা শুনে আমার সারা শরীর কাঁপতে লাগল বুঝতেছিনা কি কি প্রশ্ন করবে আর আমি কি ওনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।!!

তারপর ওরা দুজন অই খান থেকে চলে গেল

মা: দেখো মা আমার ছেলে তোমার সাথে কি করেছে কি না করেছে আমি সেসব কিছুই জানিনা আর তোমাদের মাঝে কি সম্পর্ক ছিল না ছিল সেটা আমি জানি না তুমি আমাকে নির্ভয় সব কিছু বলতে পারো দেখো আমি ওদের সাথে যেরকম খারাপ আচরণ করলাম বা রাগ এইভাবে কথা বললাম আমি কিন্তু মোটেও সেরকম না আমি একজন মা তাই ছেলেটাকে একটু শাসন করতেই হয়
আসলে কি হয়েছিল তোমাদের মাঝে কী কারণে তোমাদের বিয়ে পর্যন্ত আসলো সম্পর্কটা আমি কিছুই জানি না তুমি যদি আমাকে সব কিছু খুলে বলতে তোমার নিজের মা হিসেবে আমি খুশি হইতাম।।।

আমি উনার এই রকম উদারতা মন দেখে অবাক হয়ে গেলাম যে মানুষটাকে একটু আগে ভেবেছিলাম অনেক রাগী হবে কিন্তু এখন দেখতেছি সেই মানুষটা অনেক ভালো।।

আমি চুপ থাকতে পারলাম না আস্তে আস্তে সবকিছু উনার সাথে শেয়ার করলাম উনাকে সব কিছু বলার পর আমি খেয়াল করে দেখলাম আমার চোখ থেকে নোনাজল টপটপ করে পরতেছে কিন্তু তার থেকে অবাক করা বিষয় হলো আমি যেই উনার মুখের দিকে তাকালাম দেখতেছি ওনার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল

আমিঃ আন্টি আপনার চোখে পানি কেন

মা: তুমি এত ছোট একটা মেয়ে তোমার উপর দিয়ে এত চাপ চলে গেছে তারপর তুমি হাসিমুখে সবার সাথে কথা বল এত অল্প বয়সে এটা কিভাবে তুমি সহ্য করো মা???

কথাগুলো বলতে বলতে উনি আরো কান্না করে দিলেন যেটা আমি কখনোই আশা করিনি ””’

মা: আচ্ছা যে করেই হোক তোমাদের তো বিয়েটা হয়ে গেছে আর আমার ছেলের বিয়ের উপযুক্ত সময় হয়ে গেছে বিয়েটা করেছে আমি অনেক খুশি হয়েছি কিন্তু ও তোমার সাথে প্রথমে যেটা করেছে তার জন্য ওকে শাস্তি পেতেই হবে

আমিঃ আসলে আনটি উনার কোন দোষ নেই আমি যদি ওনাকে অফার না করতাম তাহলে উনি কখনোই আমাকে ওইভাবে চেয়ে দেখতেন না কারণ আমার সেদিন টাকার প্রয়োজন ছিল না হলে আমি আমার ভাইকে বাঁচাতে পারতাম না কিন্তু অবাক করা বিষয় আমার টাকায় ভাইকে বাঁচাতে পারিনি কে জানি আমাকে সাহায্য করেছিল আমি সেটা আজ পর্যন্ত জানিনা,, কথা বলতেছি চোখ দিয়ে পানি আপনাআপনি গড়িয়ে পড়তেছে জানিনা এটা সুখের কান্না নাকি দুঃখের

মাঃ তুমি আজ থেকে এইবারের বৌমা তাই তোমার এইসব আচরণ পাল্টাতে হবে এবং মনোবল শক্ত করতে হবে আর আমার ছেলেটা অনেক বদমেজাজী তার সাথে তোমাকে মানিয়ে চলতে হবে ও যদি তোমাকে কিছু বলে সরাসরি আমাকে এসে বিচার দিবা তারপর দেখবা আমি ওর কি করি
এখন ছুটকির সাথে পুরো বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখো আর যাওয়ার আগে কিছু খেয়ে যাবা নয়তো তোমার কপালে দুঃখ আছে,,,,

আর তোমাকে যাওয়ার কথা বলছি এই কারণে কারন আমি তোমাকে তোমার পুরো সম্মান দিয়ে আমার বাসায় তুলবো তাই,, আমাদের সোসাইটির লোক জানতে পারলে আমাদের অনেক সি সা দিবে তাই আমি দেখিয়ে দিতে চাই আমার ছেলের বউকে আমি কিভাবে বরণ করে নেই

আমি এখন আর এরকম উদাহরণ দেখে ওনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম

আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনাই যে আমি সত্যিই রকম সম্মান ভাবো কোনদিন

আমি তো ভেবেছিলাম আমার হয়তো এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে আমি এই পৃথিবীতে আরো যুগ যুগ বেঁচে থাকব আর বেঁচে থাকতে চাই

সবার ভালোবাসার মাঝে,,,

মাঃ এই পাগলি মেয়ে কান্না করতে হবে না এখন যাও তোমার ইচ্ছামত ঘুরে ঘুরে দেখো বাড়িটা কারণ বাড়িটা টা তোমার,,,,

এইদিকে,,

মাহিনঃ তোর জন্য ভালো করে শুনতে পেলাম না মা ওকে কি বলল তুই এতো আমাকে জ্বালাস কি জন্য বলতো

ছুটকিঃ তুই এভাবে বেহায়ার মত লুকিয়ে লুকিয়ে কি শুনিস ওদের,,,আমি মাকে গিয়ে এক্ষণি বলে দিচ্ছি দাঁড়া

মাহিনঃ বইন বইন এটা কখনো করিস না তুই আমাকে কি বইন তুই এটা যদি করিস তাহলে আমার সব শেষ হয়ে যাবে

ছুটকিঃ তাহলে আমার টাকাটা দিয়ে দে তোর পকেট এ দেখছি অনেকগুলো টাকা আছে ওখান থেকে একটা টাকা নিতে পারবি না সব টাকা আমার সেগুলো আমাকে দিয়ে দে

মাহিনঃ আমি বুঝিনা তুই এত টাকা টাকা করিস কেন নে ভাগ এখান থেকে

আমি মায়ের ওখান থেকে উঠে এসে ওনাদের কথাবাত্রা শুনে তো মুচকি মুচকি হাসতেছে ব্যাপার কি তার মানে উনারা দুজনেই আমাদের কথা শোনার জন্য এখানে লুকিয়ে ছিলেন

আমি ওনাদের ওখানে গিয়ে একটু গলার আওয়াজ করলাম

আমাকে এইভাবে এখানে দেখে দুজনে চমকে উঠলেন

ছুটকিঃ আরে ভাবি তুমি এখানে কখন এলে

আমিঃ আমি কখন আসলাম সেটা বড় কথা নয় তোমাদের এখানে কি হচ্ছে সেটা বল নয়তো আমি মাকে এখনই সব বলে দিবো তোমরা আমাদের কথা শোনার জন্য এখানে লুকিয়ে ছিলে

তারপর মাহীন বাবু যেটা করলো আমি তো হাসতে হাসতে শেষ

এরকম কেউ বউয়ের সাথে করে আমি তো জানতাম না এটা না দেখলে,,,

চলবে…….

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ১৭

তারপর মাহীন বাবু যেটা করলো আমি তো হাসতে হাসতে শেষ

এরকম কেউ বউয়ের সাথে করে আমি তো জানতাম না এটা না দেখলে,,,

মাহিনঃ অরে বউ রে আজ থেকে তুই আমার বইন তাও তুই আম্মু কে কিছু বলিস না রে তাহলে আমাকে বাসায় থাকতে দিবে না রে,,,

ছুটকিঃ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস বউ কে বইন বলিস

মাহিনঃ তুই চুপ কর এখন আমার পকেটে এক টাকাও নাই রে যদি আম্মু বলে দেয় আমি কোথায় যাব রে,,,,

আমি তো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি এসব কি আমি সত্যি দেখতাছি নাকি শ্বপ্ন এই মানুষ টা কি সত্যি এত হাস্যকর নাকি না এইটা সত্যি না শ্বপ্ন দেখতাছি

ছুটকিঃ এই নে তোর টাকা তাও এভাবে কান্না করিস না ভাই তোর কান্না আমার সহ্য হয়না এই নে তোর টাকা

মাহিনঃ হাহাহাহা আমার টাকা আমি পেয়ে গেছি হাহাহা

ছুটকিঃ বাটপার চিটার তুই আমার সাথে চিট করলেই তার মানে তুই এতক্ষণ থেকে অভিনয় করতে ছিলি তোকে তো আমি

কথাটা বলে ছুটকি উনাকে মারতে আসলো

আর উনি এসে আমার পিছনে দাঁড়িয়ে গেল আর আর দুই বাহুতে দুই হাত রাখল আর ছুটকি আমার সামনে, উনি আবার আড়ালে লুকিয়ে গেলো ছুটকি এদিক-ওদিক করে উনি আমাকে এদিক-ওদিক করে আমার খুব বিরক্ত লাগতাছে কিন্তু মজাও লাগতাছে

ছুটকি অনেক চেষ্টা করল উনাকে মারার জন্য কিন্তু শেষমেশ ব্যর্থ হলো মন খারাপ করে চলে যেতে নিল আমি ছুটকির হাত ধরে ফেললাম

আমিঃ আরে মন খারাপ করে কি হবে বলতো সুযোগে সৎ ব্যবহার করবা এখন তো ওনার সাথে পারতেছ না যখন সুযোগ হবে তখন ইচ্ছামত পিঠাবে এখন আসো তোমাদের বাড়ি টা ঘুরে দেখি

মাহিনঃ আমিও তোমাদের সাথে তোমাকে বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখাই আমি একা একা বসে থেকে কি করবো বোরিং লাগবে তো আমার

ছুটকিঃ না তুই যাবি না

মাহিনঃ ওকে,,

তারপর আমরা দুজন যেতে নিলাম ছুটকি আগে আগে আমি ছুটকি একটু পরে যাচ্ছি আর আমার পরে পরে মাহিন বাবু আসতেছে উনি যতই না বলুক না কেন এখন ঠিকই পিছনে পিছনে আসতেছে ,,,

উনি আসতেছে ঠিক আছে কিন্তু আমাকে এতো ডিস্টার্ব করার কি আছে একবার আমার চুল ধরে টানতেছে। একবার আমার পেটে হাত দিচ্ছে একবার আমার পিঠ ধরে চিমটি কাটতেছে একদম অসহ্য লাগতেছে কিছু বলতেও পারতেছিনা এখন

আমিঃ এসব কি হচ্ছে আপনি কি শুরু করছেন ছুটকি আছে এখানে দেখলে কিন্তু আপনাকে পিটাবে আমি কি ছুটকি কি ডাকবো

মাহিনঃ এই তুমি এত আনরোমানটিক কেন বলতো আমার যেটা করতেছি করতে দাও চুপচাপ ওর সাথে সাথে বাড়িটা ঘুরে দেখো আর আমার মত আমাকে মজা করতে দাও নয়তো কিন্তু রাতে,,

আমিঃ উফফফফফ ভাল লাগে না

মাহিনঃ ভালো না লাগলেও সহ্য করতে হবে

তারপর বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম অনেক সুন্দর বাড়িটা

বাড়িটা সুন্দর কিন্তু লোকটা আস্ত একটা খচ্চর আমাকে একটু শান্তির মতো ঘুরে ঘুরে বাড়িটা দেখতে দিলো না,, এত জ্বালা,,

ছুটকিঃ কি রে বদমাশ এখানে কি,,, আমরা বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখতেছি আর তুই এখানে কি করতেছিস আমাদের পিছু পিছু

মাহিনঃ আমি তো তখন থেকেই এইখানে আছি তুই হয়তো দেখতে পাসনি তাই হয়তো এখন বলতেছিস,,,তাই এখন তোরা বাড়ি ঘুরা গুড়ি কর আমি আমার মত কাজ করি

আমিঃ এই ছুটকি তুমি আমার পিছু পিছু থাকবে আর আমি তোমার সামনে সামনে থাকব

মাহিনঃ এটা কেমন কথা তুমিতো এই বাড়ির কিছুই চেনো না হঠাৎ করে কোন দিকে চলে যাবা তখন

আমিঃ দেখুন আমি এখনো বাচ্চা না যে একটা বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যাব তাই আপনি নো টেনশনএ রুমের ভিতরে শুয়ে শুয়ে টিভি দেখতে পারেন আর আমাকে আমার মত থাকতে দেন

ছুটকিঃ ও বুঝতে পারছি তার মানে ওই বদমাশটা এতক্ষণ তোমার পিছু পিছু তোমাকে ডিস্টার্ব করতে ছিল তো তুমি আমাকে ডাকলে না কেন তার পর দেখতে মজা কাকে বলে দাড়াও আমি আম্মুকে এখনো গিয়ে এসব বলে দিতাছি আমাদের শান্তি মতো বাসা গজুরে ঘুরে দেখতে দিচ্ছেনা

তারপর উনি ওখানে আর এক সেকেন্ডও দাঁড়ালো না শুধু একটা দৌড় দিল এমন হয় দৌড় দিল যেন ছোট বাচ্চা

ওনার এরকম কান্ড দেখে আমাদের হাসতে হাসতে শেষ তারপর আমাদের জন্য অনেক গল্প করলাম

পুরো বাসাটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম,, কি সুন্দর একটা বাসা আমার মত গরীব মেয়ের কপালে কি সারা জীবন এই সুখটা থাকবে নাকি 2,,,1 দিনের মায়া জড়িয়ে আবার চলে যেতে হবে

হয়তো এখন খুব ভালো লাগতাছে কিন্তু টেনশন একটাই আমি কি এই বাড়ির সবার মনের মতো হতে পারব,,, যদি হতে না পারি তাহলে হয়তো আমাকে হয়তো এই বাসার মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হবে যেহেতু এখন আমি এই বাসায় আসিনি তাই এখন চলে গেলে কোন সমস্যা হবে না কিন্তু যখন এই বাসার সবার প্রতি মায়ায় পড়ে যাবো তখন তো তাড়িয়ে দিলে অনেক কষ্ট হবে

ছুটকিঃ ভাবি এসব কি ভাবতেছ তুমি আর এরকম করে আনমনে হাঁটতেছ কেন একটু হলেই তো তুমি পড়ে যেতা

আসলেই তো আমিতো লক্ষ্য করিনি আরেকটু হলেই তো আমি পড়ে যেতাম আর এত দূর থেকে পড়ে গেলে আমি মারা যেতাম

আমরা দুজন কথা বলতে ছিলাম তখন আমি আবার উনি চলে আসলেন আমাদের কাছে

মাহিনঃ দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আর আম্মু তোমাকে ডাকতেছে নাস্তা রেডি তুমি চলে আসো তাড়াতাড়ি নাকি তুমি সব কিছু ভুলে গেছো এখানে এসে

আসলেই তো আমি এখানে আছি সবকিছু ভুলে গেছি আমার তো হসপিটালে যাওয়ার কথা ছিল আর এখন আমি এখানে আড্ডা দেখছি অনেক দেরি হয়ে গেছে ইসসস

তারপর তাড়াহুড়ো করে নিচে আসতে লাগলাম আমার তাড়াহুড়া থেকে ছুটকি একটু ভয় পেয়ে গেল

ছুটকিঃ আরে ভাবি কি এমন হয়েছে যার জন্য এত তাড়াহুড়ো করতে চাও আসতে চলো পড়ে যাবে তারপরে গেলে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো ক্ষতি হবে। ভাইয়া তুই তোর বউকে তো সামলাতে পারিস নাকি তুই একটা বদমাশ

মাহিনঃ চুপ কর উনি বাচ্চা মেয়ে না পড়ে যাবে

তার মনেও উনি আমার কথা আমাকে শোধ দিচ্ছে তাই তো আমিও দেখে নেবো বাছাধন কতদূর যাইতে পারো

নিচে গিয়ে দেখি মা সবকিছু খাবার রেডি করে টেবিলে একটা চেয়ারে বসে আছে হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছে

আমিঃ আরে মা হয়ে গেছে তো একটু ডাকলেই পারতেন এভাবে আমাদের জন্য অপেক্ষা করার কি আছে

মা: আরে পাগলি মেয়ে,, ওসব কিছু না এখন চুপচাপ বসে পড়

আমিঃ না আপনারা বসেন আমি খাবার সার্ফ করব

ছুটকিঃ এটা হয় না তুমি আমাদের বাসায় নতুন মেহমান বা অতিথি এখনও যেহেতু তুমি পার্মানেন্টলি এই বাসায় সেট হয়নি তাই তুমি এখন অতিথি আর অদিতিকে এসব কাজ করতে দেখি না আমরা যখন আসবে তখন দেখবো কত করতে পারো এখন আমি খাবার সার্ভ করবো তুমি বস আর চুপচাপ খেয়ে নাও আর একটা কথা বলবা না

আমি আর কিছু না বলে চুপচাপ একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লাম আর আমার অপজিট সাইডে ওই বদমাস লোকটা বসে পড়ল

মাত্র খাওয়া শুরু করছি এরমধ্যে বদমাশ লোকটা উনার পা দিয়ে আমার পায়ে স্লাইড করতেছে ইচ্ছা করতেছে ,, ওনাকে মাথার উপর তুলে সুন্দরভাবে একটা আছাড় দিয়ে কোমর টা ভেঙে ফেলেছে,, কিন্তু দুঃখের বিষয় এটা করতে গেলে আমার সমস্যা হবে একেতো শক্তি নেই
আবার যদি কমর ভেংগে যায় তাহলে আমাকে ওনার সেবা করতে হবে ধুর ভালো লাগেনা

আমি চোখ দিয়ে ইশারা করতেছি এসব কি হচ্ছে

আর উনি নিঃশব্দে ইশারা করে বলতেছে কই কিছু নাতো

আমার খুব রাগ হচ্ছে ইচ্ছা করতেছে খাবার টেবিল থেকে উঠে যাই কিন্তু এখানে উঠতে পারবো না

তখন থেকে তো জ্বালাতে জ্বালাতে আমার জীবনটাই শেষ করল এখন আবার জালানো শুরু করছে খাইতে বসেও সান্তি নাই,,😭😭😭

তারপর কোনরকম খাওয়াটা কমপ্লিট করে তাড়াহুড়ো করা চেয়ার থেকে উঠে পড়লাম আমার এরকম কান্ড দেখে

মাঃ কিরে মামা কি হয়েছে এরকম তাড়াহুড়ো করতে ছিস কেন

আমিঃ তেমন কিছু না একটা বিড়াল

মা; আরে মা আমাদের বাড়িতে বিড়াল নেই তাহলে খাবার টেবিলের নিচে কিভাবে বিড়াল আসবে

আমি ওনার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে তার মানে বোঝাতে চাচ্ছে আমি যেন ওনাকে বিড়াল না বলি

আমিঃ মা তাহলে ওটা কি হবে বিড়াল না হলে

ছুটকিঃ ওইটা ছোটবেলা অনেক বড় বিড়াল তাই ওইটুকু তোমাকে ডিস্টার্ব করবে তোমাকে মেনে নিতে হবে

কথাটা বলে ছূটকি মুখ টিপে টিপে হাসতে লাগল তার মানে ছূটকি বুঝে গেছে সবকিছু

মা: কিরে কি বলতেছিস তোরা এসব আমিতো কিছুই বুঝতেছিনা

ছুটকিঃ আম্মু তোমাকে কিছু বুঝতে হবে না খাওয়াটা শেষ করো,,,

মা: তোরাও না কখন কি বলিস সবকিছু আমার মাথার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে কিছুই বুঝতেছিনা

তারপর সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যে যার রুমে চলে গেল কিন্তু আমি কোথায় যাব,,

হঠাৎ করে উনি কোথা থেকে এসেছে যেনো আমার হাতটা টেনে ধরে উপরে নিয়ে যেতে লাগল তার মানে উনি এখন ওনার রুমে নিয়ে যাচ্ছে এটাই বোঝা যাচ্ছে

আমিঃ আরে আস্তে এত তারাহুড়ো করার কি আছে ব্যাথা পতিত হাতে একটু আসতে ধরুন

উনি কোন কথা না বলে ঠিক আগের মত করে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে বুঝলাম এখন হয়তো অনেক অনেক রেগে আছে কারণ অনেক পচাইছি উনাকে

তারপর সোজা উনি উনার রুমে আমাকে নিয়ে গেলেন এবং রুমে গিয়ে আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলে না

আমিঃ কি করতেছেন এসব মাথার কিছু হইল নাকি এতক্ষণ তো ঠিক ছিল এখন আবার কি হলো

উনি কোনো কথা বলতেছো না চুপচাপ আমার দিকে এক পা এক পা করে এগিয়ে আসতেছে আর আমি বিছানা থেকে উঠে এক পা এক পা করে পিছিয়ে যেতে লাগলাম

আমি যতই পিছিয়ে যাচ্ছে উনি ততোই এগিয়ে আসতেছে আমি পিছিয়ে যেতে যেতে একসময় দেয়ালে আমার পিঠ ঠেকে গেল আমি আর কি পিছাতে পারতাছি না আর উনি আমার অল্প একটু সামনে

উনি এগিয়ে এসেছে একদম আমার কাছাকাছি চলে এসেছে যতটা কাছাকাছি চলে আসলে একে অন্যের হার্টবিটের শব্দ শোনা যায়

আমার দুই বাহুর দুই পাশ দিয়ে উনি ওনার দুইটা হাত দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে রাখলে না

যাতে আমি নড়াচড়া করতে না পারি

আর ওনার মুখটা একদম আমার মুখের কাছাকাছি এনেছে হয়তো অল্প একটু হলেই এক হয়ে যাবে

আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিয়েছি হঠাৎ অনুভব করলাম উনা নাক দিয়ে আমার নাকে ঘষা ঘষি করতেছে আমরা যেন অন্য রকম একটা অনুভূতি হতে লাগল কিন্তু অসহ্য লাগতাছে

আমার বুকে ধুকধুকানি অনেকটা বেড়ে গেছে মনে হচ্ছে কোন কাঠ মিস্ত্রী তার হাতুড়ি দিয়ে আমার হার্টবিটে অনেক জোরে জোরে পিটাচ্ছে
আর অনেক জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগলাম কেন জানি আস্তে নিশ্বাস নিতে পারতেছিনা আমি যতই চাচ্ছি স্বাভাবিক থাকার কিন্তু পারতাছিনা,,

উনি হঠাৎ করে উনার একটা হাত আমার পেটে নিয়ে গেল এবং পেটে অনেক জোরে চেপে ধরল

আমি ভয় কাঁদতে লাগলাম আর চোখ দুটো অনেক জোরে বন্ধ করে রেখেছি অনেক চেপে ধরে,,,

তারপর উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে যেটা করলো
সেটা আমি ভাবতে পারিনি কারণ এত সহজে উনি এই কাজগুলো করবে

চলবে……..