ভিলেন পর্ব-১৩

0
588

#গল্পঃ_ভিলেন

লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি

পর্বঃ ১৩

———————★★———————–

এক পা করে পিছাতে লাগলাম…! এক দৌড়ে ওখান থেকে সাদে চলে আসলাম,,,,, সাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে ভাবতে লাগলাম….

আমি: আজ যার আমারে সবচেয়ে সাপোর্ট করার কথা ছিলো কিন্তুু সেই মানুষটা আমায় মিথ্যা অপবাদ দিতেও দুবার ভাবলো না অতচ ওই লোকটা অন্য সন্তান জেনেও নিজের সন্তানের পরিচয় দিতে প্রস্তুুত….
আমি কি ভুল মানুষকে ভালোবেসে ফেলছি হে আল্লাহ তুমি পথ দেখাও!!!…. উহু আর নয় এবার থেকে আমার যেটা করার উচিত আমি সেটাই করবো..

____চোখের পানি মুছে নিজেকে শক্ত করলাম!!!

★★ এভাবে দুদিন কেঁটে গেলো..!

বিকালের দিকে বাসায় ডুকে দেখি বাসায় সবাই নিচে বসে আছে সাথে আব্বু আম্মু…বেশ আবাক হলাম সবাই একসাথে কোন সমস্যা হলো নাকি!!

আমি: আব্বু আম্মু তোমরা হঠাৎ,,,,

আব্বু: শুভ বললো জরুলি নাকি কথা আছে তাই আসতে বাদ্ধ হলাম,,,

আমি: জরুলি কথা,,,,

মা: তুমি কিছু জানো না,,,

আমি: না তো মা,,,,,

মা: ওহহ!!

বাবা: কি কথা বলবে সেই কখন থেকে বসিয়ে রাখছে,,,,

হঠাৎ শুভ পিছন থেকে বলে উঠলো,,,,

শুভ: সরি পাপা এতক্ষন ওয়েট করার জন্য,,,,

বাবা: তোমরা দুজন

নদী: হ্যাঁ আংকেল ভালো আছেন তো,,,

বাবা: হ্যাঁ মা,,,,,তুমি.?

নদী: আলহামদুলিল্লাহ..

মা: আদিবা এরা এখানে ব্যপার কি ( কানে ফিস ফিস করে)

আমি: জানি না মা,,,,

মা: হুমম কি বলবে শুভ,,,,

আমি: শুনি দেখি কি বলে,,,,,,,

হঠাৎ নিরবতা ভেঙ্গে শুভ বলতে লাগলো

শুভ: পাপা আমি আর আদিবা ডিসিশন নিয়েছি আমরা বিয়েটা আর এগিয়ে নিতে পারবো না তাই ডিবোর্স ব্যবস্থাও করে ফেলছি,,,

শুভর কথা শুনে সবাই আবাক বিষেশ করে আব্বু আম্মু উপর যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো,,,,,

আব্বু: ডিবোর্স

শুভ: হ্যাঁ আংকেল,,,,

আব্বু: বাবা এসব কি বলছো

বাবা: শুভ কি বলছো সব কিছুর লিমিট আছে,,,,

শুভ: জানি পাপা

বাবা: ভুলে যেও না তোমাদের সন্তান খুব তাড়াতাড়ি আসতে চলে আর তুমি ডিবোর্স

শুভ: পাপা আমাদের মাঝে তেমন করে সম্পর্ক হয়নি বেবি আসবে কেমনে ( রেগে) !! আদিবা আপনি কেনো বলছেন না চুপপ যে,,,,

বাবা: বউমা কি বলবে হ্যাঁ,,,,

শুভ: পাপা তুষার আদিবাকে আর আদিবাও তুষারকে ভালোবাসে ওদের একটা সম্পর্ক আছে পাপা আমাদের বুঝতে ভুল হয়ছিলো তাই ভুল যখন করেছি খেশারত তো দিতেই হবে তাই ডিসিশন নিয়েছি সামনে সাপ্তাহে ওদের বিয়ে দিয়ে দিবো,,,,

বাবা: শুভভভভ!!!….

হঠাৎ আব্বু গিয়ে তুষার কাছে গিয়ে তুষার গালে ঠাসসস করে চর বসিয়ে দিলো,,,,

আব্বু: তুষার তুই আবার আমার মেয়ের জীবনে পা দিয়েছিস ওর জীবনটা নষ্ট করার জন্য

তুষার: আংকেল আপনি সব সময় আমাকে ভুল বুঝেন

শুভ: আংকেল তুষারকে ভুল বুঝছেন ও আদিবা কে খুব ভালোবাসে একটু বুঝার চেষ্টা করেন,,

আম্মু: আমার মেয়েটাও তোমায় ভালোবাসে বাবা,,,,

শুভ: আন্টি প্লিজজ এই সামান্য ভালোবাসা ৩/৪ বছরের ভালোবাসার কাছে তুলো ধরে ভালোবাসার ওজন কমাবেন না,,,,

আব্বু: বাবা!!.. তোমার পায়ে পড়ে এমনটা করো না আমার মেয়েটার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে,,,,

আমি: আব্বুু কি করছো,,,,!

শুভ: আংকেল কি করছেন,,, দেখুন সবটা জেনেও কিন্তুু তুষার শুধু আপনার মেয়েকেই ভালোবাসা তাই এই সম্পর্কে মেনে নেন প্লিজজ,,,,

আব্বু: আমার প্রান থাকতে এই সম্পর্ক মানবো না,,,,আর তুষার তোকে তো আমি,,,,

__ আব্বু তুষারের উপর চর তুলতেই আব্বুর হাত ধরলাম,,,,,,

আব্বু: আদিবা,,,,

আম্মু: সোনা ( আবাক হয়ে)

আমি: আব্বু থাক!!..আমি তুষার কে বিয়ে করবো….

মা: আদিবা

বাবা: বউমা

আমি: হ্যাঁ!! করবো….. মা একটা কথা ভালো করেই বুঝে গেছি জোর করে আর যায় হক ভালোবাসা পাওয়া যায় না

মা: বউমা ( অসহায় ভাবে তাকিয়ে)

আমি: হুমমম মা,,,,!!!

___কাঁধে থাকা ব্যাগ থেকে পেপারটা বের করে শুভর দিকে ধরলাম,,,,,

শুভ: কি এটা

আমি: ডিবোর্স পেপার!!! আমি সাইন করে দিছি আপনি করে দিয়েন..আজ থেকে আপনি মুক্তি…!!! আর হ্যাঁ বিয়ে ব্যবস্থা করেন আমি রাজি বিয়ে করতে

শুভ সহ সবাই ভুত দেখার মতো তাকিয়ে রয়লো,,,,,,হঠাৎ আব্বু এসে সামনে দাড়ালাম,,,

মা: বউমা এসব কি বলছো,,,,

আব্বু: ঠাসসসসসস!!!…

আম্মু: কি করছো তুমি!!

আমি: আব্বু,,,( গালে হাত দিয়ে)

আব্বু: ভাবতেই আবাক লাগছে তুই আমার সেই মেয়ে,,,,, তুই তুষারকে বিয়ে করবি ওকে ফাইন কর আজ থেকে তোর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক থাকবে না,,,

আমি: আব্বু আমার কথা তো শুনবে!! আব্বু আমি কি করে থাকবো যেখানে প্রতি নিয়ত আমাকে

আব্বু: ঠাসসসস!!! চুপপপ একদম যা বলার বলে দিছিস আর শোন আজকের পর তুই আমাদের কাছে মৃত্য…( রেগে)

আমি: আব্বু ( চোখ বয়ে পানি পড়তে লাগলো)

আব্বু: মিরা এসে চলো,,,,

আমি: আব্বু প্লিজ ভুল বুঝো না আমায় আব্বু

আম্মু: কি করছো এসব প্লিজ এমনটা করো না মেয়েটার কথা শুনো একবার

আব্বু: আসতে বলছি,,,,

আম্মু: সোনা,,,,

আমি: আব্বু আব্বু প্লিজজ প্লিজ একটু শোন

আব্বু আম্মুর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে চলে গেলো,,,,আমি কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পড়লাম,,,,

বাবা: আমার ভাবতে লজ্জা হচ্ছে আমার ছেলে এরকম কাজ করতে পারে,,,,

মা: হুমমম,,,

শুভ: পাপা আম্মু তোমরা আমায় ভুল বুঝো না দেখো তুষার আদিবা বড্ড ভালোবাসে

মা: ব্যসসসস তুই আমাকে মা ডাকবি না

শুভ: আম্মু,,,,,

নদী: সব ঠিক হবে কুল,,,,

শুভ: হুম

মা: আদিবা উঠো এসো,,,,

আমি: আব্বু আমায় এভাবে ভুল বুঝলো একবার শুনতে পারতো !!( কাঁদতে কাঁদতে)

মা: হুমম!! সব ঠিক হবে,,,,এসো

মা আমায় নিয়ে রুমে আসলো,,,,

মা: বসো,,,

আমি: হুমমম,,,,

মা: আমায় ক্ষমা করে দিও আমি চিনতে পারিনি আমার ছেলে কে ও এতটা পাষান হতে পারে প্লিজজ ক্ষমা করে দিও,,,

আমি: মা আপনি ক্ষমা চেয়ে লজ্জায় ফেলবেন না,,,,,

মা: আজ তুমি ঠিক সিন্ধান্ত নিছো… আমি দাড়িয়ে থেকে বিয়ে দিবো তুষার সাথে

আমি: মা

মা: হুমমম,,,, আমার মেয়ের সুখে থাকাটাই আমার কাছে সব

বাবা: ঠিক বলছো,,আমি কেনো বুঝতে পারিনি যদি বুঝতাম তাহলো শুভ সাথে বিয়েটা দিতাম না

আমি: বাবা আপনি

বাবা: হুমমম!!… খুব শখ করে বউ করে এনে ছিলাম কিন্তুু শয়তান ছেলেটা সব শেষ করে দিলো,,,বউমা তুমি কষ্ট পেও না আমরা আছি তো তোমার সাথে সব সময়

আমি: হুম বাবা,,,,

____বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে গেলো,,,,,

সন্ধার দিকে সাদে দাড়িয়ে আছি তখনি তুষার এসে পাশে দাড়ালো,,,,তুষার আমার হাতে হাত রাখলো,,,,

তুষার: সব ঠিক হয়ে যাবে ভরসা রাখো….!

আমি: হুমমম

তুষার: দেখবে একবার বিয়ে হয়ে গেলেই সবাই মেনে নিবে,,,,

আমি: হ্যাঁ,,,,,,

তুষার তার বুকে আমার মাথা রেখে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো,,,,
হঠাৎ পাশে তাকিয়ে দেখি শুভ অনেকটা দুরে দাড়িয়ে আছে ইচ্ছে না থাকার সত্তেও তুষারকে জোরিয়ে ধরলাম…..

★★ পরের দিন সকালে,,,,

শুভ: কি করছিস এসব,,,,

আমি: নিশ্চপ,,,

শুভ: কি হলো কথা শুনতে পাচ্ছিস না,,,,

আমি: দেখতে তো পাচ্ছেন প্যাক করছি

শুভ: এতো জিনিস প্যাক করে কয় নিয়ে যাচ্ছিস

আমি: জাহান্নামে,,,( চিল্লিয়ে)

শুভ: মানে,,,,,

আমি: ডংং কইরেন না,,,সরেন

শুভ: ওয়াটটট ডংং

আমি: আপনার আমার ডিবোর্স হয়ে গেছে তো তাই কোন সম্পর্ক নেই,, সো একটা পরপুরুষের সাথে একি রুমে থাকতে পারবো না তাই সব গুছিয়ে নিচ্ছি,,,,,

শুভ: কিহহ!! আমি পরপুরুষ ( আবাক হয়ে)

আমি: তো কি ( কোমড়ে হাত দিয়ে)

শুভ: তাও ঠিক!!!…আচ্ছা যা

___ শুভ গিয়ে বিছানায় বসে পড়লো আমি কোমড়ে শাড়ি আচল বেঁধে সব জিনিস গুলো টানতে টানতে বাইরে বের করে আনলাম,,,,,

শুভ: এতো জিনিস না নিলে হয় না!!!যাবি তো আশার রুমে যখন যেটা লাগবে এসে নিয়ে যাবি….

আমি: পাররররবো না….! কোন পরপুরুষের রুমে বার বার আসতে,,,,

হঠাৎ কাজের মেয়ে রহিমা হাজির,,,

রহিমা: বউমনি তুমি তো সব কাম শেষ করে ফেলছো,,,

আমি: ওহহ তুমি আসছো!!.তোমার লেট হচ্ছিলো তাই একাই করলাম,,,,বাইরের জিনিস গুলো আশার রুমে নিয়ে যাও

রহিমা: আচ্ছা বউমনি,,,,শুভ ভাইজান একটা কথা বলমু যদি কিছু না বলেন

শুভ: তুই আবার কি বলবি আচ্ছা বল,,,,

রহিমা: এমন একখানা মিষ্টি বউকে ছেড়ে দিলেন তো দেখবেন এমন একটা দিন আসবো কপাল থাবরায়বেন কিন্তুু সেইদিন দেরি হয়ে যাবে!!!.. থাকতে কদর বুঝলেন ভাইজান,,,,

রহিমা কথাটা বলে ভেচকি কেঁটে চলে গেলো শুভ হা করে তাকিয়ে রহিমার দিকে তাকিয়ে আছে……..

( চলবে)