ভিলেন পর্ব-১৫

0
634

#গল্পঃ_ভিলেন

লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি

পর্বঃ ১৫

———————★★———————–

লোকটা কে না দেখতে পেয়ে জোরে জোরে চিল্লিয়ে বলতে লাগলাম….!

আমি: ওখানে কে!!… কথা বলছো না কেনো কে ওখানে সামনে আসো..

হঠাৎ লোকটা আমার কথা শুনে থেমে গেলো… আমি সামনে দিকে হাঁটা দিলাম হুট করে তখনি পিছলে পড়ে যেতেই

শুভ: এইইইইইই

আমি: আহহহহহহ

দুচোখ মেলে তাকিয়ে দেখি শুভ ধরে ফেলছে,,,,

শুভ: একটু সাবধানে চলবি তো না হলে এখনি একটা দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো ননসেন্স!!

আমি: সব দোষ আপনার কখন থেকে চিল্লাচ্ছি শুনছেনই না তাই তো তাড়াহুরু করে যেতেই…

শুভ: আমি তোর মতো বাচ্চা নয় যে বৃষ্টি দেখলে ব্যাঙের মতো লাফাবো তাই ওখানে দাড়িয়ে ছিলাম,,,,,

আমি: কিহহ আমি ব্যাঙ মতো লাফাই

শুভ: হ্যাঁ ব্যাঙ,,,,

আমি: ছাড়েন ট্রাস করবেন হুসসস

শুভ থেকে নিজেকে সারিয়ে নিয়ে ফাঁকে দাড়ালাম,,,,

শুভ: অনেক লাফিয়েছেন এবার দোয়া করে ভিতরে চলেন না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে

আমি: যাবো না!!.. লাগলে আপনার কি

শুভ: আমার কিছুই হবে না!. আপনার জন্য শুধু শুধু ডক্টরেরর পিছনে টাকা ফুরাতে হবে

আমি: কিহহ টাকা খুঁটা দিচ্ছেন ওকে ফাইন একদিন সব শোধ করে দিবো হুম

শুভ: সে না হয় দিয়েন এখন চলুন,,,এভাবে এখানে ব্যাঙের মতো লাফিয়েন না প্লিজজজ আশাপাশে লোকজন দেখলে খারাপ ভাববে….

আমি: আমি ব্যাঙ তাই না..! ওয়েট,,,,

___চারপাশে কিছু একটা খুঁজতে লাগলাম…

আমি: ওই তো,,,,

পাশে থাকা ফুলদানির টপটা হাতে নিয়ে শুভর দিকে এগিয়ে গেলাম,,,

শুভ: এইইই এইই কি করছিস ভালো হবে না….

আমি: আমি ব্যাঙ হুম ,,,, আজ তোর একদিন কি আমার যে কয়দিন লাগে

__হঠাৎ শাড়ি পায়ের সাথে বেজে ফুড়দানিটা হাত থেকে ছুড়ে গেলো আমি গিয়ে ধপাস করে শুভর উপর পড়লাম…
বৃষ্টি পানি আমার নাক বয়ে গিয়ে শুভর ঠোঁটের উপর টপ টপ করে পড়তে লাগলো ‘ দুজন দুজনের চোখের মাঝে হারিয়ে গেছি…!
হঠাৎ তখন উপর থেকে ফুলদানির টপ এসে মাথার উপর পড়তেই,,,,,,

আমি: ও মাগো ( চিৎকার করতেই)

সাথে সাথে সেন্সলেন্স হয়ে গেলাম,,,

ব্যস কিছুক্ষন পর সেন্স ফিরে মাথায় হাত দিয়ে ক্রুকরে উঠলাম,,,,,

আমি: শয়তান ছেলে তোরে আমি ছাড়বো না…. ( বিড় বিড় করে)

মা: আদিবা কিছু বলছো,,,

আমি: মা আপনি… আহা হা মাথাটা ফেঁটে গেলো,,,( কাঁদো কাঁদো হয়ে)

আশা: কেমনে কি হলো বলো তো,,,

শুভ: ওই যে কথায় আছে না অন্যের জন্য গর্ত করলে সেই গর্তে নিজেই পড়ে ঠিক সেটাই হয়েছে,,,,

আশা: মানে কি,,,,

শুভ: ওতো মানে খুঁজতে হবে না!! দেখ উনার আবার মাথা সেলাই করা লাগবে নাকি

আমি: গোরু,,,,

পাশ থেকে বালিশ নিয়ে ছুড়ে মারলাম শুভ বালিশটা ধরে নিলো আসতে করে সোফায় রেখে মিটিমিটি হেসে রুম থেকে চলে গেলো,,,,

আশা: এটা কি হলো,,,,

মা: তোর সারা দিন শুধু এটা না ওটা নিয়ে ভাবা যা রহিমা কে বল গরম দুধ আনতে,,,,বউমা এখন কি ব্যাথা করছে,,,,

আমি: হ্যাঁ মা ব্যাথায় যন্ত্রনা করছে ( মাথা চেপে ধরে)

মা: আহারে,,, ঠিক হয়ে যাবে কিছু ব্যাথার মেডিসিন নিলে,,,,

আমি: হুমমম,,,,,,গন্ডারের বাইচ্চা গন্ডার তোর জন্য আমার এমন হলো তোরে ও আমি সিড়ি থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিবো ( মনে মনে)

___ বালিশে মুখ গুজে দিয়ে কান্না করতে লাগলাম……

★★ দুদিন পর!!!!….
আজ বাসায় ছোট করে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে….আশা সাজিয়ে গুছিয়ে নিচে এনে বসিয়ে দিলো,,,

মা: ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে এই লক্ষী টা অন্য কারো ঘরে চলে যাবে,,,

বাবা: আমার কি কম কষ্ট হচ্ছে! কে জানতো ছেলেটা এত খারাপ হবে,,,,

মা: দেখো তোমার ছেলে একদিন পস্তাবে

বাবা: হুমমম একদিন এই আদিবা কেই খুঁজবে,,,

মা: হুমমম,,,,,,

একটু পর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো একে একে সবাই হলুদ লাগালো,,,,হঠাৎ নদী শুভকে নিয়ে আসলো হলুদ লাগানোর জন্য,,,,

নদী: কি হলো শুভ লাগা হলুদ,,,,

শুভ: আমি এসব পারবো না যাস্ট প্যারা তোরা লাগা

নদী: লাগা ( ধমক দিয়ে)

শুভ: লাগাচ্ছি ,,,,

পাশে থেকে একটু হলুদ নিয়ে শুভ আমার গালে ছুয়ে দিতেই গাল বয়ে টপ করে পানি পড়লো শুভ আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে কিছুক্ষন তাকিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম……

আশা: ভাবি এসো না

আমি: কোথায় ( চোখের পানি মুছতে মুছতে)

আশা আমার চোখটা ধরে টেনে নিয়ে আসলো,,,

আমি: এখানে কেনো আনলে

আশা: চোখ বন্ধ করে থাকবে কেমন?

আমি: কেনো

আশা: আমি বলছি তাই প্লিজজ

আমি: ওকে,,,,

হঠাৎ চারপাশে বাজি ফুঁটতে লাগলো চোখটা খুলেই দেখি চারপাশে মোমবাতি আলো ঝলঝল করছে সামনে তুষার হাঁটু গেরে এক গুচ্ছ ফুল নিয়ে বসে আছে,,,,,,

তুষার: I will love you ♥♥….Do you love me? Adiba….

আমি হা করে তাকিয়ে আছি!!. তুষার হাত থেকে ফুল গুলো নিতেই তুষার আমার হাতটা ধরে ঘুরিয়ে দিলো তখনি উপর থেকে গোলাপের পাপড়ি পড়তে লাগলো,,,,,,,ঠিক তখনি চারপাশে সবাই হাতে তালি দিতে লাগলো পিছনে তাকিয়ে দেখি শুভ ও মুখে হাসি নিয়ে বার বার শিস দিচ্ছে,,,,,,

তুষার: এসব শুধু তোমার জন্য করেছি শুধু তোমার জন্য,,,

আমি: আমার জন্য এতো কিছু,,,

তুষার: হুমমম শুধু তোমার জন্য,,,,,( হাত বাড়িয়ে)

হঠাৎ পিছন থেকে কেউ একজন ধাক্কা দিতেই সোঁজা তুষার বুকে গিয়ে পড়লাম তুষার শক্ত করে জোরিয়ে ধরলো….

আমার চোখ বারাবর শুভর দিকে….! তখনি শুভ হাসতে হাসতে পিছন দিকে হাঁটা দিলো ওখান থেকে চলে গেলো পিছন পিছন নদীও চলে গেলো,,,,,,,

____প্রায় সন্ধার দিকে হঠাৎ ফোনটা বেঁজে উঠলো তাড়াতাড়ি করে রিসিভ করতেই অপাশ থেকে বলতে লাগলো,,,

আহিরা: আপু আব্বু কাল হার্টএয়াট করেছিলো…! আজ হসপিটাল থেকে বাসায় আনা হলো,,,আব্বু বার বার বলছে তোকে কল না দিতে কিন্তুু আমার মনে হলে তুই আসলে আব্বু ঠিক হবে আপু প্লিজজ চলে আয় আব্বু অবস্থা ভালো না,,,,,,,

আমি: ওয়াটটটটট

ছোট বোনের কথা শুনে হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো…. সাথে সাথে আমিও ফ্লোরে বসে পড়লো….! জোরে জোরে কাঁদতে লাগলাম

একটু পর চোখ মুঁছতে মুঁছতে পাশের টেবিল থেকে ব্যাগটা নিয়ে সোঁজা দৌড় দিলাম…… রাস্তা থেকে রিক্সশা নিয়ে চলে আসলাম বাসায়,,,,,

রিক্সশা থেকে নেমে বাসায় ডুকবো তখনি বাসা থেকে একটা গাড়ি বের হলো গাড়িতে বসে থাকা লোকটা কে দেখতে রিতি মতো শক্ট হলাম…….!

আমি: শুভ এখানে…..?

( চলবে)