মনের পিঞ্জরে পর্ব-১২+১৩

0
864

#মনের_পিঞ্জরে
#Ariyana_Nur
#Part_12

সোফায় বসে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে সিনথিয়া।সান পাশে বসে রাগি চোখে সিনথিয়ার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।সেদিকে সিনথিয়ার কোন খেয়াল নেই।কেননা সে তো তার মত হাসতে ব‍্যস্ত।

সান রাগি গলায় বলল……

—ডাইনী বের হ আমার রুম থেকে।

সিনথিয়া কোন মত হাসি থামিয়ে বলল…….

—ভাই শেষ পযর্ন্ত তোকে বড় ভাই বানিয়ে দিল।আহারে বেচারা আমার ভাই এর মুখটা তখন কেমন ছিলো তা দেখার মনে বড্ড ইচ্ছে জাগছে আমার।

কথাগুলো বলে সিনথিয়া আবার হাসতে লাগলো।

সান সিনথিয়ার মাথায় গাট্টা মেরে রাগি গলায় বলল……

—তুই আমার রুম থেকে বের হবি নাকি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তোকে বের করবো।

সিনথিয়া হাসি থামিয়ে ইনোসেন্ট ফেস করে বলল……

—আরে আরে এতো রাগ করছো কেন আমার উপর?এতোদিন তো এমন কিছু বলোনি।এখন নতুন আরেক বোন পেয়ে আমাকে অবহেলা করছো।(কথাটা বলে মিটমিট করে হাসতে লাগলো)

সান সিনথিয়ার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে দাতে দাত চেপে বলল……

—আমি বুঝিনা তোদের আমার সাথে কিসের এতো শক্রতা?আমার হবু বউরে আমার বোন বানানোর জন‍্য উঠে পরে কেন লেগেছিস?

সিনথিয়া ভেংচি কেটে বলল……

—এহ আসছে হবু বউ বলতে।পারলো না এখনো ভাবীকে প্রপোজ করতে।আবার বড় বড় কথা।দেখিস তুই তোর মনের কথা বলার আগেই কেউ ভাবীরে তোর চোখের সামনে দিয়ে নিয়ে যাবে।তখন তুই শুধু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারবি না।মিলিয়ে নিস আমার কথা।

সিনথিয়া কথাটা শেষ করতে না করতেই সান রেগে পাশের থেকে একটা ফুলদানি ফ্লোরে ছুড়ে মেরে চোখ,মুখ শক্ত করে বলল…….

—কেউ আমাদের মাঝে আসলে তাকে আমি কি করবো আমি নিজেও জানি না।ও শুধু আমার।

কথাটা বলেই হনহন করে রুম থেকে বের হয়ে গেল।যাওয়ার সময় নিজে রাগ দরজায় দেখিয়ে দরজায় এক লাঠি দিয়ে গেলো।

সান চলে যেতেই সিনথিয়া মিটমিট করে হেসে মনে মনে বলল…….

—তীর ঠিক নিশানায় লাগিয়েছি।এবার দেখা যাক কি হয়।

💦💦💦💦💦💦

মাঝরাতে ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল ইশফার।ইশফা বালিশের পাশ থেকে ফোন হাতে নিয়ে ফোন রিসিভ করে সালাম দিতেই অপর পাশ থেকে কর্কশ কন্ঠে ভেসে আসলো……

—কোথায় ছিলে তুমি।ফোন রিসিভ করতে এতো সময় লাগে কেন?

লোকটার কথা শুনে ইশফার রাগ হল।একে তো মাঝরাতে ফোন দিয়ে তার ঘুমের রফা-দফা করে দিয়েছে।তার উপরে তাকেই আবার কথা শুনাচ্ছে।ইশফা রাগটাকে সাইডে রেখে ভালো ভাবেই বলল……

—কে আপনি?কাকে ফোন দিয়েছেন?

—নাম্বারটা যখন তোমার তাহলে তো পাশের বাসার আন্টিকে ফোন দেইনি।অবশ‍্যই তোমাকে ফোন দিয়েছি।

ইশফা রাগি গলায় বলল……

—ফাজলামো পাইছেন।বাড়িতে মা,বোন নাই।এতো রাতে অন‍্যের ঘুম নষ্ট করে ইয়ারকী করতাছেন।

লোকটা মুচকি হেসে বলল…….

—মা,বোন তো বাড়িতেই আছে।তুমিই তো নেই।তাই তোমার কাছেই ফোন করলাম।আমার ঘুম হারাম করে আমার বাঘীনী শান্তিতে ঘুমাবে তা আমি কিভাবে হতে দেই বলো।

ইশফা কিছুক্ষন চুপ করে মাথায় কিছুটা জোর লাগালো।কিছু একটা মনে পরতেই সন্দেহের গলায় বলল….

—আপনি কি সে,যে আমাকে চিরকুট দিয়েছিলেন?

—বাহ মনে আছে দেখি আমার কথা।এখনো ভুলতে পারোনি আমাকে।

ইশফা দাতে দাত চেপে বলল…..

—মনে থাকবে না কেন?আমার হাত ধরার সাহস দেখিয়েছেন।এতো সহজে কি ভুলে যাব।আপনাকে শুধু একবার সামনে পাই।দেখবেন আপনার কি হাল করি।

—আমাকে পেয়ে যাবে।আমি তোমার আশেপাশেই আছি।তা নিয়ে মাথা ঘামিও না।এখন কাজের কথা শোন,ঐ সান,নিরব ওদের থেকে দূরে থাকবে।ওদের ধারের কাছেও যেন তোমাকে না দেখি।

—আপনার কথামত আমি চলবো নাকি?

—আমার কথা মত না চললে তাতে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে।

—ভীতুর মত দূর থেকে কথা বলছেন।আপনি যে কি করতে পারবেন তা আমার ভালো করেই জানা আছে।সাহস থাকলে পারলে সামনে এসে কথা বলুন। আর হ‍্যা দ্বিতীয় বার আমাকে ফোন করার সাহস দেখাতে আসবেন না।

কথাটা বলেই ইশফা কোন কেটে দিয়ে সাথে সাথে নাম্বার ব্লক করে দিল।ইশফা রাগে গজগজ করছে।ছেলেটাকে এখন সামনে পেলে যে ইশফা কি করতো তা সে নিজেও জানে না।

—বরফ আনবো মাথায় ধরার জন‍্য।

ইশরার কথা সুনে ইশফা টেবিল ল‍্যাম্প অন করল।ইশরা চোখ বন্ধ করে ইশফার দিকে মুখ করে শুয়ে আছে।ইশফা,ইশরার বাহুতে একটা থাপ্পর মেরে বলল…..

—ইয়ারকী করছিস আমার সাথে।

ইশরা হাত ডলতে ডলতে বলল……

—তোর আশিকের রাগ আমার উপর উঠাস কেন?

ইশফা হালকা চেচিয়ে বলল……

—ইরু……

—আরে চেতোস কেন?আমি কি কিছু ভুল বললাম নাকি।তা যাই হোক পোলার কিন্তু বহুত সাহস আছে।তোরে মাঝরাতে ফোন দিয়া ওয়ার্নিং দেয়।ভাবা যায় এসব।

—তুই থামবি?

—আরে শোন না আমার কথা।আমার না পোলাডার লিগা আসসোস হইতাছে।নিজেই নিজেরে বিপদের মুখে ফালাইতাছে।আল্লাহ তুমি পোলাডারে এই শাকচুন্নীর হাত থেকে রক্ষা করো।আমিন।(হাত উঠিয়ে)

ইশফা সন্দেহর চোখে তাকিয়ে বলল…..

—তুই আমার বোন?

—কেন সন্দেহ আছে তোর?

—আমার তো মনে হইতাছে হাসপাতালে পাল্টা-পাল্টি হইছে।তা না হলে এতো রাতে আমারে ফোন দিয়া একজন ডিস্টাব করছে।তুই তারে কিছু না কইয়া তার জন‍্য আসসোস করতাছোস।

—আরে বেচারা তো তোর মাসুম চেহারা দেইখা মনে হয় উস্টা খাইয়া তোর প্রেমে পইরা হাবুডুবু খাইতাছে।সে তো আর জানে না তুই কোন সুনামি।তাই একটু বেচারার জন‍্য আসসোস করতাছি।

ইশফা রেগে বালিশ দিয়ে ইশরাকে মারতে লাগলো।সাথে তো তার স্পেশাল বকা ফ্রি।

💦💦💦💦💦💦

জিদান স‍্যারের ক্লাশের আগেই ইশরা ক্লাশ থেকে বের হয়ে গেছে শরীরে হাওয়া লাগাতে।কেননা সে জিদানের মুখোমুখি হতে চাচ্ছে না।আজ তিন দিন পর সে কলেজে এসেছে।এই তিনদিন তিন ছুতো দিয়ে কলেজ বন্ধ করেছে।একদিন মাথা ব‍্যাথা, একদিন পেট ব‍্যাথা আরেক দিন পা ব‍্যাথা।ইশরা যে জিদানের খপ্পর থেকে বাচতে এসব ছুতো দিয়েছে তা ইশফার অজানা নয়।ইশরা আজ কোন ছুতো খুজে না পাওয়ায় এক প্রকার ধরে বেধেই ইশফা, ইশরাকে কলেজে পাঠিয়েছে।

লিপি তো জিদান স‍্যারের জন‍্য পাগল তাই সে ইশরার সঙ্গ দিতে আসে নি।ইশরাও লিপিকে বেশি জোর করেনি।কেননা সে চায় না নিজের জন‍্য লিপির ক্লাশ মিস হোক।

—মেরি সামনে ওয়ালি খিরকি মে এক চান্দ কা টুকরা রেহেতাহে…….

আশেপাশে লোকজন না থাকায় ইশরা গানটা গুনগুন করে গাইতে গাইতে কেন্টিনের দিকে যাচ্ছে।ইশফার সাথে রাগ করে না খেয়েই বাড়ি থেকে বের হয়েছে ।ইশরার মতে পেট শান্তি করে শরীরে হাওয়া লাগালে সেটা ভালো কাজে দিবে।

কেন্টিনে যাওয়ার পথেই জিদান ইশরার সামনে এসে দাড়ালো।ইশরা জিদানের পাশ কেটে চলে যেতে নিলেই জিদান ইশরার হাত ধরে ফেলল।

ইশরা হাতের দিকে এক পলক তাকিয়ে হাত ছুটানোর জন‍্য জোড়াজুড়ি করতে করতে জিদানের দিকে রাগি চোখে তাকাতেই তার হাত-পা মৃদু কাপতে লাগলো।কেননা জিদান চোখ-মুখ লাল করে রাগি চোখে ইশরার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।ইশরা কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে মিনমিনে গলায় বলল…….

—স‍্যার আ…আমার হাত ছা…ছাড়ুন।

জিদান শক্ত গলায় বলল…….

—এখনি তুই ক্লাশে যাবি।তা না হলে তোকে আমি কাধে করে ক্লাশে নিয়ে যাব।ফাজিল মেয়ে ক্লাশ না করে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুড়ছে।

ইশরা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল……

—এটা কলেজ।আর আপনি আমার স‍্যা…….

আর কিছু বলার আগেই জিদান ধমক দিয়ে বলল…..

—তুই এখন সোজা কথায় ক্লাশে যাবি নাকি আমি আমার মত তোকে ক্লাশে নিব।

—আপনি আমার সাথে এমন করতে পারেন না।

—আমি কি করতে পারি তা তোর অজানা নয়।
যদি ভুলে গিয়ে থাকিস তাহলে আমি মনে করিয়ে দিতে পারি।(রেগে)

ইশরা জিদানের কথা সুনে মনে মনে বলল…..

—এইটারে দিয়া বিশ্বাস নাই।হাতের কাছেই আছি কথা না সুনলে আমার গাল আর গাল থাকবো না।থাবরাইতে থাবরাইতে খাল বানাইয়া ফালাইবো।আগে এর হাত থেকে বাচি পরে দেখা যাবে কি করি।

—কিরে কথা বলছিস না কেন?আমি তো তোর সামনেই আছি।আমাকে নিয়ে ধ‍্যান করার দরকার নেই।

—আমি ক্লাশে যাচ্ছি।

—গুড।এবার সোজা ক্লাশে যাবি।

ইশরা মনে মনে বলল……

—তুই করাবি আমারে ক্লাশ।তোর কথা শোনার জন‍্যই তো বইসা রইছি।

ইশরা আশেপাশে তাকিয়ে বলল…..

—হাত না ছাড়লে ক্লাশে কিভাবে যাব।

জিদান ইশরার হাত ছাড়তেই ইশরা গটগট করে হেটে চলে গেল।তার একটাই প্রতিজ্ঞা সে ক্লাশ করবে না।তাই সে ক্লাশের দিকে না গিয়ে অন‍্য দিকে চলে গেল।

#চলবে,

#মনের_পিঞ্জরে
#Ariyana_Nur
#Part_13

জিদান এর সামনে কাচুমাচু করে দাড়িয়ে রয়েছ ইশরা।জিদান রাগি চোখে ইশরার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

—“কিরে কথা বলছিস না কেন?ক্লাশ না করে কোথায় গিয়েছিলি?”

জিদানের এমন গম্ভীর কথা সুনে ইশরা ঘামতে লাগলো।ইশরা ভাবতেও পারেনি জিদানের কথা না সুনে ত‍্যাড়ামি করে তখন ক্লাশ না করার করনে যে, জিদান ওকে এমন বাঘের মত ধরবে।

ইশরা তখন জিদানের কথা না সুনে ত‍্যাড়ামি করে জিদানের ক্লাশ করেনি।প্রথমত ইশরার জিদানের উপর ক্ষভ। দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাশ।যা তার ছোটবেলা থেকে শক্র।ইশরা ছোট থেকেই ইংলিশে প্রচুর কাচা।ইশরাকে ইংলিশ নিয়ে কেউ কিছু বললে, উল্টো সে তাকে কথা সুনিয়ে দেয়।তাও আবার বিশাল বিশাল ব‍্যাখ‍্যা দিয়ে।ইশরার মতে, যেহেতু আমরা বাংগালী।আমাদের মাতৃভাষা বাংলা।এই বাংলা ভাষার জন‍্য মানুষ কত কি না করেছে।এমনি হাজার হাজার মানুষ ভাষার জন‍্য শহীদও হয়েছে।তাহলে আমরা কেন অন‍্যের ভাষার দিকে এতো জোড় দিব?আমি বাংগালী।আর আমি বাংলা ভাষা বলতে,পড়তে, লিখতে সব পাড়ি।আমার অন‍্যদের মত অন‍্যের ভাষা শিখার এতো আদিক্ষেতা নেই।

ইশরার এরকম আরো উল্টাপাল্টা কথা বলে যে ইশরাকে বুঝাতে আসে তার তেরোটা বাজিয়ে দেয়।

ইশরা সব ক্লাশ শেষ করে জিদানের চোখ ফাকি দিয়ে কলেজ থেকে বের হয়ে যায়।কলেজ গেডের সামনে গিয়ে নিজেকে নিজে বাহ্ বাহ্ দিতে থাকে।
মুখে চলে আসে বিশ্ব যুদ্ধে জয়ী হওয়ার হাসি।

কিন্তু তার এই হাসিটা বেশিক্ষন মুখে টিকলো না।একজন পিয়ন হাপাতে হাপাতে ইশরার সামনে এসে বলল…….

—“ম‍্যাম আপনাকে ইশান স‍্যার ডাকছে?”

ইশরা পিয়নের কথা সুনে সাথে সাথেই বলল……

—“স‍্যার কে গিয়ে বলুন আমি বাসায় যাচ্ছি।এখন দেখা করতে পারবো না।”

পিয়নঃম‍্যাম স‍্যার আপনাকে এখনি দেখা করতে বলেছে।বলেছে খুব দরকার।আপনাকে এখন সাথে করে না নিয়ে গেলে ইশান স‍্যার আমাকে বকবে।

ইশরা কিছু একটা ভেবে বলল……

—“আচ্ছা আপনি কি নতুন টিচার জিদান স‍্যারকে দেখেছেন?না মানে স‍্যার কি কলেজে আছে।আসলে স‍্যারের সাথে পড়ার বিষয়ে কিছু কথা ছিল।কলেজের ভিতরে যখন আবার যেতেই হবে তাহলে এক কাজে দু কাজ করা হয়ে যেত।তাই আর কি?(হাসাল চেষ্টা করে)”

পিয়নঃম‍্যাম জিদান স‍্যার তো অনেক আগেই কলেজ থেকে বের হয়ে গেছে।

ইশরা খুশি হয়ে বলল…….

—“সত‍্যি?”

পিয়ন ইশরার দিকে অবাক হয়ে তাকাতেই ইশরা কথা ঘুড়ানোর জন‍্য মন খারাপ করার ভান করে বলল…..

—“চলে যখন গেছে কি আর করার কাল কথা বলে নিব স‍্যারের সাথে।”

ইশরা পিয়নের কথা মত ইশান স‍্যার এর রুমে এসে বসে রয়েছে।ইশান স‍্যার রুমে নেই।পিয়ন ইশরাকে বসতে বলে চলে গেছে।

ইশরা পায়ের উপর পা তুলি গুনগুন করে গান গাইছে।অনেকক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পরেও ইশান এর আসার খবর নেই। ইশরা বিরক্ত হয়ে চলে যাওয়ার জন‍্য বসা থেকে উঠে দাড়াতেই সুনতে পেল…….

—“চালাক তো ভালোই হয়েছিস?কি ভেবেছিলি আমার সাথে চালাকি করবি আর আমি এমনি এমনি তোকে ছেড়ে দিব?”

জিদানের কন্ঠস্বর সুনে ইশরা ঠাই দাড়িয়ে রইলো।ইশরার ইচ্ছে করছে এখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে।কিন্তু তার পা সায় দিচ্ছে না।ইশরার পা মনে হচ্ছে কেউ আঠা দিয়ে লাগিয়ে রেখেছে।

জিদান ইশরার সামনে এসে ইশরার মুখোমুখি হয়ে টেবিলের উপর বসে নিজের প্রশ্নের উওর চাইতে লাগলো।

বতর্মানেঃ

ইশরার আকাশ-কুসুম ভাবার মাঝেই জিদান টেবিলের উপর হাত দিয়ে বারি দিয়ে হালকা চেচিয়ে বলল……

—“বোবা হয়ে গেলি কেন?কথার উওর দে?”

জিদানের রাগ দেখে ইশরা হালকা কেপে উঠল।
ইশরা কাপাকাপা পায়ে রুম থেকে বের হবার জন‍্য সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন‍্য এক কদম বাড়িয়ে দ্বিতীয় কদম বাড়ানোর আগেই জিদান হুমকি দিয়ে বলল…….

—“আর এক পা বাড়াবি তো তোর পা আমি ভেঙে দিব।”

জিদানের হুমকি সুনে ইশরা কিছুটা সাহস জুগিয়ে জিদানের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল…….

—“কেন এমন করছেন?”

জিদান ইশরার দিকে কাপালে ভাজ ফেরে তাকিয়ে রাগি গলায় বলল…….

—“কেন এমন করছি তুই বুঝতে পারছিস না?”

ইশরা তাসিল‍্য হেসে বলল……

—“তাই তো বুঝতে পারছি না।আমার মত ছলনাময়ী,খারাপ,চরি……..

আর কিছু বলার আগেই জিদান ইশরার মুখ চেপে ধরে দাতে দাত চেপে বলর……

—“নিজের সম্পর্কে আর একটা খারাপ কথা বলার চেষ্টা করবি তাহলে তোর মুখ আমি আর মুখ রাখবো না।”

ইশান এতোক্ষন দরজার সামনে দাড়িয়ে ছিল।জিদানকে ইশরার মুখ চেপে ধরতে দেখে তাড়াতাড়ি এসে ইশরাকে জিদানের হাত থেকে ছাড়িয়ে বলল……

—“পাগল হয়ে গেছিস তুই জিদান?কি করছিস?জানিস না ও কেমন?পাগলের সাথে পাগলামী করলে চলে?”

জিদান দু’হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজেকে কন্টল করার চেষ্টা করছে।ইশানের কথার উওর না দিয়ে জিদান বলল…….

—“ইশান ওকে এখান থেকে চলে যেতে বল।আর বলে দে কাল থেকে ক্লাশ বন্ধ করার কথা স্বপ্নেও যেন না ভাবে।”

ইশান কিছু বলার আগেই ইশরা ধুপধাপ পা ফেলে চলে গেল।ইশরা চলে যেতেই ইশান জিদানের উপর রাগ দেখিয়ে বলল…..

—“কি করছিলি তুই?মেয়েটা এভাবেই তোর উপর অভিমান করে আছে।কোথায় তাকে মানানোর চেষ্টা করবি তা না করে উল্টো রাগ দেখাচ্ছিস?”

—“যা করেছি বেশ করেছি।ওর সাহস হয় কি করে আমার সামনে দাড়িয়ে ও নিজের নামে বাজে কথা বলার সাহস দেখায়।”

ইশান, জিদানের কাধে হাত রেখে নরম গলায় বলল…….

—“সব সময় রাগ দেখিয়ে সব হয় না।প্রথমে ভালো ভাবে বুঝিয়ে বলতে হয়।”

—“আমি ওকে রগে রগে চিনি।সবার ভালো কথা মেনে নিলেও আমার ভালো কথা সুনে ও আরো আমার মাথায় চেপে বসে।ওর চিন্তা তুই করিস না।ওকে কিভাবে ঠিক করতে হয় তা আমার ভালো করেই জানা আছে।”

💦💦💦💦💦💦

ইশফার আজ বাড়িতে ফিরতে একটু না বেশিই দেড়ি হয়ে গেছে।ভার্সিটির ক্লাশ শেষে রিধি আর তুশির অনুরোধ রাখতে ইশফা ওদের সাথে শর্পিং এ গিয়েছিলো।তার জন‍্যই ফিরতে দেড়ি হয়েছে।

ইশফার বাড়ির গেডের সামনে রিকশা থামতেই ইশফা ভাড়া বের করতে লাগলো।রিকশা ওয়ালাকে ভাড়া মিটিয়ে দিতে না দিতেই ইশফার ফোনটা বেজে উঠল।ইশফা ফোন রিসিভ করে বলল…….

—“হ‍্যা ভাইয়া বলো।

ফোনের অপর পাশের কথা সুনে ইশফা থমকে গেল।

অপর পাশের ব‍্যক্তি ইশফার কোন কথা সুনতে না পেয়ে হ‍্যালো, হ‍্যালো করতে লাগলো।ইশফা অপর পাশের ব‍্যক্তির গলার আওয়াজ সুনে কাপাকাপা গলায় বলল…..

—“ভাইয়া আই মিন পেশেন্ট এখন কোন হাসপাতালে আছে?”

(এর আবার কি হল?মরতে-তরতে গেছে নাকি🙄)

#চলবে,