মন নিয়ে পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব

0
644

মন নিয়ে (শেষ পর্ব)

গাড়িটা নিয়ে যখন ওরা পারিদের হোটেলের সামনে এসে থামল, তখন হাতে সময় একেবারেই নাই। ফ্লাইট ধরতে হলে ওদের তখনি বেরিয়ে পড়তে হবে। ওরা গাড়ি থেকে নামতেই মাহা, জেরিন, সাফাত আর জামিল রিসেপশান থেকে দৌড়ে এল। জেরিন আর মাহা পারিকে জড়িয়ে ধরল। মাহা তো কেঁদেই ফেলল
— কই ছিলে তোমরা? কী হয়েছিল? আমরা দুশ্চিন্তা করে করে শেষ। পুলিশের কাছে যাব না কী করব, কিছু বুঝতে পারছিলাম না।

রিককে ছেঁকে ধরল জামিল আর সাফাত।
— হোয়াট হ্যাপেন্ড, ম্যান? ডিড ইউ গাইজ ফল ইন্টু সাম সর্ট অফ ট্রাবল?
রিক সংক্ষেপে বলল
— রাস্তা ভুলে লোকালয়ের বাইরে চলে গেছিলাম। তারপরে গাড়ি পড়ে গেল এক গর্তে। নেটওয়ার্ক নাই। যা তা অবস্থা হয়েছিল।
জেরিন শিউরে উঠল
— মাই গড! তোমরা রাত্রে ছিলে কোথায়
— এক মায়া পরিবারের সাথে। ভাগ্যিস তার বাড়ি আশেপাশে ছিল, নাহলে গাড়িতেই বসে থাকতে হত আমাদের। গাড়িটাকেও গর্ত থেকে তুলতে পারতাম না। সেই আরও লোক জোগাড় করে হেল্প করল।

শুনে মাহা পারিকে আরও জোরে আকড়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল
— ওহ! ইউ পুওর সোল। কতটা সাফার করলে। আমি হলে তো ভয়েই মরে যেতাম।
জামিল সিচুয়েশান কন্ট্রোলে আনতে চাইল তাড়াতাড়ি।
— ওকে গাইজ। পরে এনিয়ে কথা হবে। তোমরা দুজনে ঠিকমতো ফিরে এসেছ, আমরা বিশাল এক দুশ্চিন্তার হাত থেকে রক্ষা পেলাম। কিন্তু এখন হাতে একদমই সময় নাই। প্লেন ধরতে হলে আমাদের এখনি বের হয়ে পড়তে হবে। আমাদের প্লেন অবশ্য একটু পরে। কিন্তু রিক আর সাফাতের ফ্লাইট মাত্র দেড় ঘন্টা পরে। লেটস গো গাইজ।
রিক বলল
— আমাকে জিনিসপত্র নিতে হোটেলে যেতে হবে একবার।
— ডোন্ট ওয়ারি, রিক। তোমার জিনিস আমি প্যাক করে হোটেল থেকে চেক আউট করেছি। আমার সাথেই আছে।
— থ্যাঙ্কস ম্যান।

পারি বলল
— আমি তাহলে রুমে যাই আমার জিনিসগুলি গুছিয়ে নিতে।
— নো নিড, পারি। আমিও তোমার জিনিস প্যাক করে চেক আউট করে ফেলেছি। বুঝছিলাম না কী করব। ভেবেছি লাস্ট মোমেন্টেও যদি এসে পড়ো তো সাথেসাথে এয়ারপোর্টে রওনা দিব। আর যদি না আসো, তো পুলিশের কাছে যাব।
হাসল পারি
— থ্যাঙ্ক ইউ, জেরিন।
— চলো চলো, থ্যাঙ্কস পরে দিও। গাড়ি লোড করে চলো রওনা দেই।

মাহা বলল
— কিন্তু জামিল, ছয়জন মানুষ আমরা, গাড়িতে ফিট করব কিভাবে? আর একটা গাড়ি লাগবে তো।
— সময় নাই, মাহা। যেভাবেই হোক ফিট করতে হবে। সাফাত চালাক, আমি পাশে বসে থাকব, তুমিও আমার সাথে বসবে। বাকি তিনজন পিছে।
মাহা পুরাই শকড
— জামিল! সামনে তিনজন? পুলিশ ধরবে আমাদের।
— ধরলে তখন দেখা যাবে, মাহা। তুমি নাহয় মাথা নীচু করে থেকো যাতে দেখা না যায়। তাছাড়া এটা কানাডা না, এটা মেক্সিকো। এখানে আইন এত কড়া না।
মাহা তাও কিছু বলার জন্য মুখ খুলবার চেষ্টা করতেই জামিল দিল এক ধমক
— মাহা! এত পেসিমিস্টিক হয়ো না তো। বি রোমান ইন রোম। আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি যদি সামনে আমার সাথে মাথা লুকিয়ে বসো তো কথা দিচ্ছি কানাডায় ফিরে গিয়ে তোমাকে কচ্ছপের ডিম পাড়া দেখাতে নিয়ে যাব। কচ্ছপ না পেলে যারা ডিম পাড়বে, তাকেই দেখতে যাব আমরা।
এরপরে মাহা আর আপত্তি করার মতো কোনো কারণ খুঁজে পেল না।

সবাই ঝটপট গাড়িতে উঠতেই গাড়ি ঝড়ের বেগে চালিয়ে দিল সাফাত।
পারির পাশে বসে রিক খুব আলতোভাবে ওর দুই আঙুল নিজের আঙুলে জড়িয়ে নিল। ইচ্ছা থাকলেও পারি হাতটা সরিয়ে নিতে পারল না।
এয়ারপোর্টে পৌঁছে গাড়ি জমা দিয়ে রিক আর সাফাতের হাতে তেমন সময়ই আর ছিল না। পারিদের ফ্লাইট অবশ্য এক ঘন্টা পরে। ওরা আধা ঘন্টা পরে গেট দিয়ে ঢুকবে কিন্তু রিকদের এখনি ঢুকে পড়তে হবে।

সাফাত জেরিরেন কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিল। চেষ্টা করছিল রোমান্টিক হতে। কতটা সফল হয়েছিল, জানা যায় নি। তবে জেরিন এমনভাবে কেঁদে ভাসিয়েছিল যেন তাদের আর দেখা নাও হতে পারে!

রিক পারির হাত ধরে ওকে একটু আড়ালে নিয়ে এল।
— যাচ্ছি আমি, পারিজা।
— গুডবাই রিক। থ্যাঙ্কস ফর এভ্রিথিং।
অসহিষ্ণু শোনাল রিকের গলা।
— ক্যান ইউ স্টপ বিয়িং ফর্মাল ফর ওয়ান সেকেন্ড, পারিজা? আমরা যার মধ্যে দিয়ে গেলাম, এরপরে কি ফর্মাল হবার দরকার আছে আর?
হাসল পারি।
— না, নাই। তবে একটা ধন্যবাদ তো দিতেই পারি।
— দরকার নাই।
— আচ্ছা ধন্যবাদ তুলে নিলাম তাহলে।
এবারে রিকও হেসে ফেলেল
— সেন্স অফ হিউমার কম নাই দেখি।
— সেন্স অফ হিউমার শুধু তোমারি থাকবে এমন বাজে ধারণা তোমার হল কেমন করে বুঝলাম না তো আমি।

রিকের চোখে ভোরবেলার মতোই মুগ্ধতা ফুটে উঠল।
— তাহলে ফিরে গিয়ে কবে দেখা হচ্ছে আমাদের?
— আমাদের?
— হু, আমাদের। কবে দেখা করছি আমরা?
— আমরা, আমাদের বলে কিছু নাই, বুঝলে। এখানেই আমাদের দেখাশোনা শেষ।
— শিওর?
— ১০০%। ফিরে গিয়ে আমি তোমার বাটিপাগল মায়ের সাথে ডিল করতে চাই না। তোমাকেও আমার বিয়েপাগল মায়ের সাথে ডিল করতে হবে না, রিক।
— আবারও জিজ্ঞেস করছি আমি, পারিজা। তুমি শিওর তো? ধরো, ৫০-৫০ চান্স নাই?
— এবসোলিউটলি নট!
— ৬০-৪০?
— শাট আপ!
— এই তো তুমি হেসে ফেললে! তাতে ১০% বেড়ে গেল কিন্তু।
— কার বাড়ল?
— আমার! ৭০-৩০ হয়ে গেল। মনে হচ্ছে আমার লাকটা ফেভার করছে।
— ঐ আশাতেই থাকো!
— তা আছি। অসুবিধা নাই। বাকি ৩০% নাহয় নেক্সট ট্রিপের জন্য রেখে দিলাম!
— নেক্সট ট্রিপ? সেটা আবার কবে হল?
— হল না, হবে। হানিমুনে যেতে হবে না?
— হানিমুন! ইন ইয়োর ড্রিমস!

রিক অবলীলাক্রমে বলে ফেলে
— ড্রিম তো করতে শুরু করে দিয়েছি! গতরাতে একঘরে থাকার পর মনে হল ব্যাপারটা খারাপ হবে না!
— শাট আপ!
— পারিজা, তোমাকে কখনো বলেছি যে হাসলে তোমাকে সুন্দর লাগে?
— বলো নি, বলার দরকারও নাই।
লম্বা শ্বাস ফেলল রিক।
— তুমি এত আনরোমান্টিক কেন, বলো তো। তোমাকে ট্রেনিং দিতে হবে যা বুঝতে পারছি। সাফাতকে যেমন দিয়েছিলাম।
—রিক, তুমি যাবে এখান থেকে? প্লেন মিস করবে তুমি।
— ফিরে গিয়ে দেখা করবে তো?
— আগে ফিরে যাও তো। তারপরে দেখা যাবে।
— একটু হাসলে মনে হয়। তারমানে ১০০%, তাই না?

রিককে এক ধাক্কা দিল পারি।
— জাস্ট গো, রিক।
— ওকে। সি ইউ ইন টরোন্টো।
হাসতে হাসতে চলে গেল রিক। যেতে যেতে বলল
— ইউ টেক এজ মাচ টাইম এজ ইউ ওয়ান্ট, পারিজা। আই উইল বি ওয়েটিং ফর ইউ। দেয়ার ইজ নো এস্কেপিং মি, ইউ নো!
— তাহলে সারাজীবন অপেক্ষা করতে হচ্ছে তোমাকে।
— সারাজীবন লাগবে না, এই অল্প কিছুদিন!
— তোমার কনফিডেন্সের দেখি অভাব নাই!
— আমার পিছে কিন্তু অনেক মেয়ে ইন্টারেস্টেড, পারিজা। ভেবে দেখো, হাতছাড়া করতে চাও নাকি!
হাত নেড়ে গেট দিয়ে ঢুকে গেল রিক।
একটা লম্বা শ্বাস ফেলল পারি। মুখে বলল
— ইম্পসিবল ম্যান!
কিন্তু ওর ঠোঁটে খুব হাল্কা একটা হাসি ফুটে উঠল।

পরিশিষ্ট

টরোন্টোতে ল্যান্ড করে বেরিয়ে আসতেই দেখে এরাইভালে দুই বান্দা রিক আর সাফাত দাঁড়িয়ে রয়েছে। দুজনের মুখেই ১০০ ওয়াটের বাতির হাসি।

শ্বাস ফেলে মাহা বলল
— আই ডোন্ট বিলিভ ইট। এরা দুজন দেখি লাভ ক্রেজি হয়ে গেছে!
পাশে থাকা জামিলের হাতে থাপ্পড় মারল।
— দেখেছ? তুমি কোনোদিন এভাবে আমার জন্য ওয়েট করেছ?
— মাহা! এইমাত্র তোমার আবদার রাখতে হানিমুনে নিয়ে গেলাম। তারপরেও বেছে বেছে কী কী করিনি খুঁজে বের করছ? আবার তো ডিম পাড়াও দেখাতে নিয়ে যাব বললাম।
— এমনভাবে বলছ যেন আমি তোমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কথা আদায় করে নিয়েছি। আচ্ছা যাও, যাবো না আমি দেখতে। এত অনিচ্ছা যখন।
— আহ মাহা। আমি বলেছি একবারও যে যাব না?
— সব কিছু মুখ ফুটে বলার দরকার হয় না। সামান্য একটা জিনিস চাইলাম, তাও কতো অনিচ্ছা। যাও তুমি, আর কোনোদিন যদি কিছু চাই তোমার কাছে।
— মাহা, আই এম সরি। আমার একদম অনিচ্ছা নাই। তুমি চেয়েছ, আমি কখনো না বলেছি?
দুজনে মান অভিমান পর্ব চালাতে চালাতে পার্কিং এর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

ওরা চলে যেতেই সাফাত দুহাত এরোপ্লেনের ডানার মতো নাড়তে নাড়তে জেরিনের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। হাত নাড়াবার কারণ ওর দুহাতের এক হাতে একটা মাঝারি সাইজের টেডি বিয়ার রয়েছে। সাদা রঙ এর টেডি বিয়ারের বুকে লাল রঙের হার্ট, সেখানে লেখা
উইল ইউ ম্যারি মি?
অন্য হাতে এক বক্স চকলেট!

সাফাতের মুখে রাজ্যজয়ের হাসি। যেন সে রোমান্সের শাহরুখ খান! যদিও এতে ওর কোনোই ক্রেডিট নাই। রিক নিজের ফোনে “হাউ টু প্রপোজ ইন এ রোমান্টিক ওয়ে” লিখে সার্চ দিয়ে এ তরিকা খুঁজে পেয়ে সাফাতকে জানিয়েছে। পাশেই ছিল গিফট শপ। তাই জেরিন আসবার আগেই সব ম্যানেজ হয়ে গেছে।
কিন্তু জেরিন এতকিছু বুঝতে পারেনি। সে সাফাতের ইমপ্রুভমেন্টে রীতিমত ইম্প্রেসড। সাফাতের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর দুই গলা জড়িয়ে ধরল
— সাফাত, আর ইউ সিরিয়াস?
— প্লিজ সে ইয়েস, জেরিন। ডোন্ট কিপ মি ইন সাসপেন্স।
— অফ কোর্স আই উইল ম্যারি ইউ, সাফাত।
ইমোশানের আতিশয্যে জেরিন সাফাতকে বাকি দুজনের সামনেই কিস করে ফেলল। দুজনে কলকল করে গল্প করতে করতে সাফাতের গাড়ির দিকে হেঁটে যেতে থাকে।
পিছে যে পারি আর রিক থেকে গেল, ওরা খেয়ালও করল না।

— পারিজা।
— রিক, তুমি এখানে কেনো? বাড়ি যাওনি কেন?
— বিকজ আই ওয়ান্টেড টু গিভ ইউ সামথিং।
রিক পিছনে রাখা হাত সামনে এগিয়ে আনল। সেহাতে বারোটা গোলাপ। হলুদ রঙের। দেখে পারি কেবলি শুরু করতে যাচ্ছিল
— রিক, আমার মনে হয় না…
— প্লিজ ডোন্ট সে নো, পারিজা।
হাত বাড়িয়ে গোলাপগুলি নিল পারি।
— আচ্ছা নিচ্ছি। হলুদ গোলাপ যখন দিচ্ছ, অসুবিধা কি?
রিকের চেহারায় কনফিউশান ফুটে উঠল।
— গোলাপ হলুদ হলে কোনো অসুবিধা আছে?
ঠোঁট টিপে হাসল পারি রিকের অজ্ঞতায়।
— হলুদ কালার বন্ধুত্বের কালার। আমাকে হলুদ গোলাপ দেয়া মানে আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাও তুমি।
— সত্যি? হলুদ গোলাপ বন্ধুত্ব মিন করে? মুখ গোমড়া হয়ে গেল রিকের।

মনেমনে নিজেকে স্টুপিড, ইডিয়ট ও অন্যান্য ছাপার অযোগ্য গালি দিল।
— তাই তো মিন করে। রিকের ঝুলে পড়া মুখ দেখে পারির হাসিই পাচ্ছে। বহুকষ্টে চেহারা স্বাভাবিক রাখল ও।
— ড্যাম! আই ডোন্ট বিলিভ ইট! সাফাতকে এত টিপস দিলাম আর নিজের বেলায় কিনা ডাহা ফেল।
পরমুহুর্তেই চেহারা উৎসুক হয়ে গেল
— তো প্রপোজ করতে চাইলে কী কালার দিতে হবে?
— রিক!
— আই নো! আই নো! ইটস টু সুন। কিন্তু আমি আগে থেকেই আমার ইন্টেনশানস ক্লিয়ার রাখতে চাই, পারিজা।
পারির হাত থেকে গোলাপগুলি কেড়ে নিল রিক। পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিল।
— হু ওয়ান্টস ফ্রেন্ডশিপ ফ্রম ইউ! আমার অনেক বন্ধু আছে। আই ওয়ান্ট সামথিং এলস।
— রিক! আবার!
কাচুমুচু হয়ে গেল রিকের চেহারা
— সরি এগেইন। বাট আই ওয়ান্ট টু মেক ইট ক্লিয়ার দ্যাট ফ্রেন্ডশিপ ইজ এবসোলুটলি নট পসিবল ফ্রম মাই সাইড।

হাল ছেড়ে দিল পারি। বুঝল রিককে ঠেকানো যাবে না। তাও শেষ চেষ্টা করল
— তুমি লাকি যে সাদা গোলাপ অফার করো নি।
— কেন? সাদা কী মিন করে? আতংকিত হয়ে গেল রিক।
— হোয়াইট মিনস সরো। কেউ মারা টারা গেলে সাদা গোলাপ দেয়। শোকের রঙ!
শুনে অসম্ভব মেজাজ খারাপ হল রিকের
— আই ডোণ্ট লাইক দিস! আই ডোন্ট লাইক দিস এট অল। কোন ইডিয়ট এগুলি আবিস্কার করেছে? রিকের গলায় উস্মা।
— প্রবাবলি ফ্লাওয়ার শপের মালিকেরা। ওদেরও তো বিজনেস করতে হবে! ঠোঁট টিপে হাসতে থাকে পারি।
— আই হেট দেম ফ্রম দা বটম অফ মাই হার্ট! চলো তোমাকে রেড রোজ কিনে দেই। এখন মনে পড়েছে রেড রোজ কী মিন করে!
— রিক! এগেইন? তুমি আমাকে বাসা পর্যন্ত নামিয়ে দিতে পারবে। আপাতত এতটুকু ইজ এলাউড। এর বাইরে কিছু না।

নাছোড়বান্দা রিক বলল
— ক্যান আই কাম ইনসাইড টু সে হাই টু ইয়োর মম?
— রিক! আমার মায়ের খপ্পরে পড়েছ তো গেছ তুমি বলে দিলাম কিন্তু!
— শোনো, সেরাত্রে আসিনি, তারজন্য সরি বলতে হবে না?
স্তম্ভিত হয়ে গেল পারি
— তুমি সেরাতে আসোনি?
— তুমি যখন নিচে নামলে না তখন মা আমাকে ফোন দিয়েছিল। আমি তখন রাস্তায়। সাথেসাথে প্ল্যান ক্যান্সেল করে গাড়ি ঘুরিয়ে ডাউনটাউনে চলে এসেছিলাম।
— এজন্য! আমি সবসময় আশ্চর্য হতাম তুমি দাওয়াত ছেড়ে ডাউনটাউনে কী কর!
— তারপরে এক রেস্টুরান্টে দুজনের দেখা হয়ে গেল। দিস ইজ এ সাইন, পারিজা।
— সাইন না কচু। আমি একদম সুপারস্টিসাশ না, রিক।
— ঠিক আছে, এগুলি নিয়ে পরেও ডিসকাস করা যাবে। এখন চলো ফ্লাওয়ার শপে। ওদের বিজনেস আরেকটু বাড়িয়ে দেয়া যাক।
রিকের কনুই ধরে ওকে থামিয়ে দিল পারি। টানতে টানতে বাইরে বের করে আনল।
— রিক! চলো তো, চলো এখন।

দুজনে হাঁটতে হাঁটতে কার পার্কের দিকে যেতে থাকে
— পারিজা, ক্যান ইউ ডু মি এ ফেভার?
— কী ফেভার?
— এক সেট বাটি কিনে মন্ট্রিয়ালে মা’র কাছে পাঠাতে পারবে?
পারি হাঁ হয়ে গেল আব্দারের নমুনা শুনে।
— কেন?
— মানে বলছিলাম কী, সেদিন তুমি এলে না দেখে মা’র একটু রাগ রাগ ভাব দেখেছিলাম আরকি। নাথিং সিরিয়াস। বাটি গিফট করলেই সেটা চলে যাবে। তারপর বাকিটা আমি দেখছি!
হাসতে হাসতে শেষ হয়ে গেল পারি।
— আই ডোণ্ট বিলিভ দিস।
— প্লিজ পারিজা।
হাসতে থাকে পারি।
— আপাতত বাড়ি পৌঁছে দাও রিক, তারপর দেখি কী করা যায়! তুমি একটা নাছোড়বান্দা দেখি।
মুচকি হাসল রিক
— দ্যাট ইজ দা সিক্রেট টু মাই সাকসেস!
দুজনে গল্প করতে করতে কার পার্কের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।

(সমাপ্ত)