মাতৃত্ব পর্ব-০১

0
292

(সূচনা পর্ব)
গল্প: #মাতৃত্ব
কলমে: মম সাহা

চল্লিশ উর্ধ্বো রিনা হোসাইন গর্ভবতী। যার একুশে পদার্পণ করা মেয়েটির গতকালই বিয়ে ঠিক হয়েছে। অথচ আজ এমন খবরটা শুনতেই ভয়ে, লজ্জায় কুঁকড়ে উঠলেন সে। সাথে তার ভেতরের শিরা-উপশিরা কেঁপে উঠল আতঙ্কে। তার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে যেখানে, ছেলেরা যথেষ্ট শিক্ষিত এবং বনেদি পরিবার। তার চেয়ে বড়ো কথা তার মেয়ের পছন্দের বিয়ে এটা। যদি ছেলেদের কানে একবার এই লজ্জার কথা যায় তাহলে তারা কীভাবে এটা নিবে! চিন্তায় চিন্তায় অস্থির হলেন সে। মা হওয়ার আনন্দ তখন শীতের নরম কুয়াশায় গা ঢাকা দিয়েছে যেন। রিনার ভাবনার মাঝে ডক্টর মিতালির কণ্ঠ পাওয়া গেল,
“কোনো সমস্যা? কী ভাবছেন?”

“আমি বাচ্চাটা রাখতে চাই না, ডক্টর। এটা সম্ভব না।”

ডক্টর মিতালি ফাইল ঘাটতে ব্যস্ত। রিনা হোসাইনের অসহায় কণ্ঠে বলা কথাটা সে স্বাভাবিক ভাবেই নিলেন বলে মনে হলো। সে কিছুক্ষণ ফাইল ঘাটাঘাটি করে অতঃপর বললেন,
“এই বয়সে কনসিভ করার পর বেশিরভাগ মায়েদের এটাই মতামত থাকে। তবে এই বয়সে গর্ভধারণ করা যতটা ঝুঁকিপূর্ণ ঠিক তার চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভপাত করা। তার উপর আপনার মেডিকেল হিস্টোরিতে দেখলাম দুই বছর আগেই আপনার ওভারিয়ান সিস্টের অপারেশন হয়েছিল। এ অবস্থায় তিন মাসের ভ্রুণটি ফেলে দেওয়া সহজ সিদ্ধান্ত নয়। আপনি ভাবুন। লাইফ রিক্সের ব্যাপার। আপনি সপ্তাহ খানেক পর নাহয় আসবেন।”

রিনা হোসাইন রীতিমতো দিশেহারা হলেন। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললেন,
“আমার মেয়ের গতকালই বিয়ে ঠিক হয়েছে। এমন অবস্থায় এই কথা জানাজানি হলে বিয়েটাতে প্রভাব পরবে যে! তার উপর আমার আঠারো বর্ষীয় একটা ছেলেও আছে যে খুব লাজুক ও একরোখা। ও এ ব্যাপারটা মানতে পারবে না।”

ডক্টর মিতালি এবার নরম চোখে তার সামনে বসা অতি সুশ্রী নারীটির দিকে চাইল। নারীটি তার চেয়ে বেশ বড়ো। চোখে-মুখে মহিলার চিন্তার ছাপ, কোমলতা বুঝা যাচ্ছে বেশ। মিতালির এবার মায়া হলো বেশ। সে চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো। রিনা হোসাইনের কাঁধে ভরসার হাত রেখে বলল,
“চিন্তা করছেন কেন? আপনি পরিবারের সাথে আলোচনা করুন। তারা নিশ্চয় আপনাকে ভরসা দিবে।”

নিজের সন্তানের বয়সী মিতালির কথায় কিছুটা ধাতস্থ হলো রিনা হোসাইন। নিজেকে যতটুকু সম্ভব সামলে বেরিয়ে এলো চেম্বার থেকে। কিন্তু গাঢ় এক চিন্তা তার ভেতরে কু ডাকছে অনবরত। তার মেয়েই বা এই কথাটা কীভাবে নিবে? এই বয়সে নিশ্চয় সে নতুন করে ভাই-বোনের প্রত্যাশা করছে না।

রিনা হোসাইন বের হতেইই ছুটে এলো তার মেয়ে তুবা। চিন্তিত কণ্ঠে শুধাল,
“কী হয়েছে, মা? কী বলল ডাক্তার?”

মেয়ের কথায় ধ্যান ভাঙলো রিনা হোসাইনের। কোনো মতে আমতা-আমতা করে বলল,
“ও তেমন কিছু না। প্রেশারটা বেড়েছে।”

মায়ের কথায় চিন্তা কমলো না তুবার। বিজ্ঞের মতন কতক্ষণ মাকে উপদেশ দিল, শাসন করল। রিনা হোসাইন চোখ মেলে দেখলেন মেয়েকে। এই মেয়েটি তার সন্তান। গর্ভে যে এসেছে সেও তো তারই। তবে দুই সন্তানের মাঝে তাকে এক জনের সুখকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হচ্ছে কেন? মা তো মা’ই হয়। তবে তার কাছে একজন কেন বেশি প্রাধান্য পেলো! তার এই ভাবনা কী পাপ নয়!
আবার পরক্ষণেই নিজেই নিজের ভাবনার উপর ছি ছি করে উঠলো। সে এ-কি ভাবছে! সমাজ বলেও তো একটা ব্যাপার আছে না-কি! এই বয়সে এসে সমাজের হাসির কারণ হবে নাকি সে? না, বাসায় গিয়েই তুবার বাবার সাথে সে একটা সিদ্ধান্তে আসবেই। তার জন্য তার সন্তানদের জীবনে কোনো সমস্যা হোক সে চান না।

_

হসপিটাল থেকে ফিরেই রিনা হোসাইন ঘরের দোর দিলেন। তার বিকেল কাটলো খুব দ্বিধাদ্বন্দে। সন্ধ্যায় তার দরজায় টোকা পড়ল। ধ্যান ভাঙল তার। কণ্ঠ উপরে তুলে শুধাল,
“কে?”

“আম্মু, আমি তিতাস। দরজাটা খুলো। সন্ধ্যা হলো তো।” দরজার ওপাশের কণ্ঠটি রিনা হোসাইনের ছেলে তিতাসের। ভাঙা ভাঙা, ধীর কণ্ঠ। রিনা হোসাইন আর অপেক্ষা না করে দরজা খুললেন। দরজা খুলতেই তিতাসের নরম কণ্ঠ,
“আম্মু প্রাইভেট পড়ে আসার সময় পিয়াজু আর সিঙ্গারা এনেছি। আজ তো তুমি অসুস্থ তাই সন্ধ্যার নাস্তা বাহির থেকেই আনলাম। চলো আম্মু, খেতে আসো।”

তিতাস স্বল্পভাষী। অথচ স্বল্পভাষী তিতাসের চোখে নিজের মায়ের জন্য এই অগাধ মায়া দেখে রিনা হোসাইনের ভেতরের মাতৃত্ব প্রশ্ন তুলল। এমন শখের সন্তানই তো গর্ভের জন। তাহলে সেই শখের সন্তানকে কীভাবে অস্বীকার করবে সে? কোন অবহেলায় এমন দণ্ড দিবে নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে? আপনা-আপনি রিনা হোসাইনের হাত চলে যায় পেটে।
তার কানে বাজতে থাকে একটা আধো কণ্ঠ,
“আম্মু, আমাকে কোলে নেওয়ার আগে ফেলে দেওয়ার শাস্তি দিচ্ছো কেন?”

রিনা হোসাইন কান চেপে ধরে। শরীরের লোমকূপ শিরশির করে উঠে। তিতাস মায়ের পরিবর্তন দেখে চিন্তিত হয়। ব্যতিব্যস্ত কণ্ঠে মাকে আগলে নিতে নিতে বলে,
“কী হলো, আম্মু? কী হলো?”

রিনা হোসাইনের মাথা ঘুরল, গা কাঁপিয়ে হড়হড় করে বমি করে দিল ছেলের উপর। মায়ের আকস্মিক কান্ডে তিতাস হতভম্ব। তার শরীর মাখামাখি হয়ে গেলো। তবুও সে মাকে আগলে রাখলো। চিৎকার করে বোনকে ডাকল। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তুবা ছুটে এলো। তুবার বাবাও মাত্র বাহির থেকে এসেছিল, ছেলের কণ্ঠ পেতেই ভদ্রলোকও ছুটে এলেন। ততক্ষণে রিনা হোসাইনের শরীর নেতিয়ে পড়েছে। ছেলে মাকে এক হাতে জড়িয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। নিজেরও গা গুলাচ্ছে এখন। তাও তার হাতের মুঠো শক্ত। রিনা হোসাইন বিড়বিড় করে বললেন,
“ছেড়ে দেও আমাকে, তিতাস। তোমার বমি-টমি সহ্য হয় না, বাবা। গা গুলাবে। ছাড়ো।”

তিতাস ছাড়লো না মাকে। বরং আরও শক্ত হাতে আগলে রাখলো। কবির এসে ধরলেন স্ত্রীকে। শক্ত করে ধরে খাটে শুয়ালেন। তুবা বাথরুম থেকে মগ ভর্তি জল এনে মায়ের মাথায় জল দিল। মুখ মুছিয়ে দিল। কবির সাহেব নিজের স্ত্রীর হাত-পা মালিশ করে দিলেন।
বেশ অনেকটা সময় পর রিনা হোসাইন নিজেকে ধাতস্থ করলেন। অসুস্থ কণ্ঠে ছেলেকে বললেন,
“তুমি গিয়ে পরিষ্কার হও। তোমার শরীরের তো বিচ্ছিরী অবস্থা। তুবা, তোমার শরীরও তো ভিজে গেছে, যাও জামাটা পাল্টে এসো।”

রিনা হোসাইনের কথাতেও নড়তে নারাজ ছেলে-মেয়ে। মা’কে তারা কোনোমতেই এখন একা রাখবে না। অবশেষে কবির সাহেব আশ্বস্ত করলেন তিনি পাশে থাকবেন, তখনই তারা ঘর ছাড়ল। ছেলে-মেয়ে ঘর ছাড়তেই রিনা হোসাইন বিছানায় উঠে বসলেন স্বামীর সাহায্যে। অসুস্থতা জড়ানো কণ্ঠে অস্বস্তি নিয়ে বললেন,
“তোমাকে কিছু জানাতে চাই।”

“হ্যাঁ, বলো? কী হয়েছে? আজ না ডাক্তার দেখাতে গেলে? ডাক্তার কী কিছু বলল? কোনো সমস্যা?”

রিনা হোসাইন মাথা নত করলেন। চোখের সামনে ভেসে উঠল বহু বছর আগের সেই দিনটি। যেদিন সে প্রথম শুনেছিল সে মা হবে। তার বয়স তখন বিশ কিংবা একুশ ছিল! হুট করে একদিন শুনলেন সে মা হবে। প্রথম মা হওয়ার অনুভূতি তার কাছে অবর্ণনীয় ছিল। বুক ধড়ফড় করেছিল আচমকা এই সুখবর শুনে। আনন্দে চারপাশ প্রফুল্লিত হয়ে ছিল। অথচ সময়ের ব্যবধানে সে মা হওয়ার অনুভূতিও বদলেছে। আজ আনন্দের জায়গায় ভর করে চিন্তা, লজ্জা, সংকোচ। যেই সংকোচের জন্য স্বামীর কাছেও তিনি খবরটা পৌঁছাতে পারছেন না। কিন্তু তার যে বড়ো শখ জাগছে, প্রথমবারের মতন আনন্দ করতে! প্রথমবারের মতন এই অনুভূতি নিয়ে দিশেহারা হতে! মা হওয়াটা যে আশীর্বাদ, তবে আজ সমাজের জন্য তাকে এটা লজ্জার ভাবতে হচ্ছে। হাহ্!

রিনা হোসাইনের কথা গুলো ঠোঁট অব্দি এসেও আর উচ্চারিত হয় না। তার আগেই তিতাস ছুটে আসে। নিবিড়, লাজুক তিতাসের চোখে বিভ্রান্তি, দরজায় সামন্য টোকা দিয়েই হড়বড়িয়ে বলে,
“আব্বু, আপুর শ্বশুর বাড়ির মানুষজন এসেছে। সকলের চোখ-মুখ যেন কেমন! তাড়াতাড়ি আসো।”

রিনা হোসাইনের বুক কেঁপে উঠে আচমকা। না, না, সে যে ভয় পাচ্ছে সেটা তো হওয়ার কথা না। কারণ তার এই মা হওয়ার কৃত্রিম লজ্জার কথা তো খুব গোপনেই আছে, সেটা তো সেই মানুষ গুলো অব্দি পৌঁছায়নি। তাহলে নিশ্চয় অন্য সমস্যা হয়েছে। কবির সাহেবও আর অপেক্ষা করেন না, দ্রুত বাহিরে চলে যান। পিছু পিছু মা’কে ধরে ড্রয়িং রুমে উপস্থিত হয় তিতাসও। ততক্ষণে তুবা সবাইকে আপ্যায়ন করে বসিয়ে দিয়েছে।

রিনা হোসাইন ড্রয়িং রুমে উপস্থিত হতেই দেখলেন তুবার শ্বশুর, শাশুড়ি, হবু স্বামী, ভাসুর, জা এবং চাচী শাশুড়ি উপস্থিত। সকলের মুখই গুরুগম্ভীর। কবির সাহেব বেশ আন্তরিকতার সাথেই এগিয়ে গেলেন,
“আরে! আপনারা সকলে….. হোয়াট অ্যা প্রেজেন্ট সারপ্রাইজ, বেয়াই মশাই!”

“সারপ্রাইজ আর আমরা দিলাম কই? দিলেন তো আপনারা বেয়াই মশাই। তাও বড়োসরো সারপ্রাইজ।”

তুবার শ্বশুরের কণ্ঠে কেমন তাচ্ছিল্যতা ফুটে উঠল যেন! যা আঁচ করতে পারলেন রিনা হোসাইন। একটা আসন্ন কেলেঙ্কারির ভয়ে তার বুক কাঁপছে। তবে অবাক হলেন কবির সাহেব,
“আমরা সারপ্রাইজ দিলাম! কই? কখন?”

ঠিক তখনই তুবার চাচী শাশুড়ি অস্পষ্ট তাচ্ছিল্য ছুড়ে বললেন,
“বুড়ো বয়সে নতুন করে মা-বাবা হচ্ছেন, সেটা সারপ্রাইজ হলো না আমাদের জন্য, বলুন? এই একুশ শতকে এসেও উনিশ শতকের মতন বেশরম কাজকর্ম দেখতে পাওয়া যায় না তো সচারাচর, তাই সারপ্রাইজড্ হলাম।”

রিনা হোসাইন এবার ধপ করে বসে পড়লেন তার সাথের সোফায়। ভদ্রমহিলার কথায় যেন বিস্ফোরণ ঘটল ড্রয়িং রুমে। কবির সাহেব বুদ্ধিমান মানুষ। দ্রুতই কথার অর্থ আঁচ করতে পেরে স্ত্রী’র দিকে তাকালেন।
প্রশ্ন তুলল তুবা, “কী বলছেন, আন্টি?”

“কেন? তুমি জানো না? তোমার যে নতুন করে ভাই-বোন আসছে?”

এবার তুবার অস্বচ্ছ ভাবনা কূল পেল তার হবু স্বামী হিমেলের কথায়। কথা কোন ইঙ্গিত করছে তা বুঝতে আর বাকি রইল না তুবার। তিতাসও বিস্মিত চোখে বাবা-মায়ের দিকে চাইল। রিনা হোসাইন সকলের প্রশ্ন দৃষ্টি বুঝেও চুপ করে রইল। কথা বলল তুবার হবু জা বা বলা যায় তুবার মামাতো বোন। কারণ তার হবু জা তার মামার মেয়ে।

“ফুপি প্রেগন্যান্ট জানিস না, তুবা? আমার খালা শাশুড়ি আজ তোদের ক্লিনিকে দেখেছিলেন। সে-ও সেই ক্লিনিকের ডাক্তার। পরে সে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এই ঘটনা। ছিহ্, ছিহ্ ফুপি, লজ্জায় তো মাথা কাটা যাচ্ছে আমাদের।”

কবির সাহেব স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে কাঁধে হাত রাখলেন। রিনা হোসাইনের সারা শরীর কাঁপছে তখন। দুনিয়াও ঘুরছে মনে হলো। যাদের ভয়ে সে ভীত ছিল, শেষমেশ তাদের কাছেই এসে ধরা পড়তে হলো!
তুবা ও তিতাস তখনও যেন বিশ্বাস করত পারছিল না। মায়ের দিকে তাদের প্রশ্নাত্মক দৃষ্টি। রিনা হোসাইন বুঝলেন ছেলেমেয়ের চোখের ভাষা। অতঃপর মাথা নত করে সম্মতি দিয়ে বললেন,
“হ্যাঁ, এটা সত্যি।”

ঠিক তৎক্ষণাৎ তিতাস ছুটে ঘরে চলে গেলো। সশব্দে বন্ধ করে দিল ঘরের দরজা। তুবা মুখে দু-হাত চেপে অবিশ্বাস্য নয়নে তাকিয়ে রইল। তন্মধ্যেই হিমেলের ভরাট কণ্ঠস্বর শোনা গেল,
“ছিঃ আবার এসব বড়ো মুখ করে বলছেনও? আমার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। সমাজে এসব জানাজানি হলে কী হবে বুঝতে পারছেন? আমি হাই এডুকেটেড একজন ছেলে। বড়ো সরো জব করি। বড়ো সরো ব্যাক্তিদের সাথে আমার উঠা বাসা। আমার শিক্ষিত পরিবার। হাই সোসাইটিতে বিলং করি। সেই শিক্ষিত সমাজে আপনাদের এই অসামাজিক কাজ বিকাবে বলুন?”

হিমেলের জঘন্য কথাবার্তা থামাতে তুবা কোমল স্বরে ডাকল, “হিমেল….”

হিমেল ডাক শুনে আরও হিংস্র হলো। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“কিসের হিমেল, হ্যাঁ? কি বলবে তুমি? তোমার বাবা-মা কতটা নির্লজ্জ ভাবতে পারছো? যাদের মেয়ের দু’দিন পর বিয়ে তারা এসব….. আমার বলতেও রুচিতে বাঁধছে। শুনো, তুবা, এসব লজ্জার কথা জানাজানি হওয়ার আগেই তোমার বাবা-মাকে বলো এসব ধামাচাপা দিতে। তোমার মা’কে এবোরশন করাতে বলো দ্রুত আর নয়তো এই বিয়ে ক্যান্সেল।”

এ যেন তুবার কাছে আরেকটা বি স্ফো র ণের মতন মনে হলো। কেবল আকুল চোখে তাকিয়ে রইল। রিনা হোসাইন মেয়ের বিধ্বস্ত দৃষ্টির দিকে তাকাল একবার। আরেকবার তাকাল তার ছেলের ঘরের বন্ধ দরজার দিকে। এই জীবন তার বড়ো বিতৃষ্ণার ঠেকলো। বড়ো অসহ্যকর।

চলবে…..