ম্লান সন্ধ্যায় পর্ব-০২

0
355

#ম্লান_সন্ধ্যায় (০২)

বিলাসবহুল সাদা রঙের দ্বিতল বাড়ির চারপাশে উঁচু প্রাচীর, তাতে মাধবীলতা, অপরাজিতার ঝাড়।উচু উচু দেবদারু যেন ভেতরের আরেক প্রাচীর। ঘাসের লন,তাতে বিকেলটা কাটানোর জন্য চেয়ার টেবিল পাতা। ফাঁকে ফাঁকে গুটিকয়েক দেশী বিদেশী ফুলের গাছ। সদর দরজার একপাশে গাড়ি বারান্দা।অন্য পাশে সাদা গোলাপী মেশানো কসমসের রাজ্য।যে কারো চোখ জুড়ানোর মতো সৌন্দর্য। তবে এর ভেতরটা আলাদা। শুনশান নিরবতা ফেড়ে মাঝেমাঝে এক মহিলা কন্ঠের ধমকাধমকির শব্দ ছাড়া তেমন কোন আওয়াজ পাওয়া যায় না। খাবার টেবিলে বিশেষ কোনো দিন ছাড়া সবাইকে একসাথে পাওয়া যায় না। একেকজনের খাওয়া, ঘুম একেক সময়।চাকর-বাকরদের একসাথে গল্পগুজব করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। হাবভাব দেখলে মনে হবে আইয়ুব খানের মার্শাল ল জারি করা হয়েছে।
সেই বাড়ির স্টাডি রুমে আজ বাবা ছেলে মুখোমুখি বসে আছে।এ কক্ষে সাধারণত গোপনীয় বিষয়গুলোর আলোচনা করা হয়। তবে কিছুক্ষণ আগে হয়ে যাওয়া আলোচনা যে অনিকের পছন্দ নয়,তা ওর রাগে লাল হয়ে যাওয়া মুখ দেখেই বোঝা যায়।নেহাৎ সামনে বাবা বসে আছে, নয়তো এতক্ষণ হাতের কাছে থাকা জড়বস্তুগুলো আস্ত থাকতো না। নিজের রাগ কমাতে ও স্থানকাল ভুলে সিগারেট ধরালো। আফসার শিকদার ক্ষেপে গেলেন।
‘মদ গেলার সাথে সাথে তুমি বাপকে সম্মান দেওয়া ভুলে গেছো!এত অধঃপতন হয়েছে!’
অনিক সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বললো,
‘রাগ উঠলে মানুষের সেন্স থাকে না,আমার তো মোটেও না। তখন কিছু করে বসলে, মানতে পারতে!’
‘সব কথায় রাগ করা, তোমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।যে কেউ তোমাকে মানসিক রোগী বলবে।’
‘তুমি যেটা বলেছো,তাতে এখন ও শান্ত আছি এও বেশি।গত কয়েকদিন তুমি একই কথা বারবার বলছো। একটু ভেবে দেখো, তুমি বেহায়ার মতো আচরণ করছো।’
‘দেখো এভাবে জীবন চলতে পারে না।আজ আমি আছি,তাই তোমার ভাবনা নেই। কালকে যদি শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, এসব কিছুর মালিকানা অন্য একজন নিয়ে নেবে। তোমার ফুফাতো ভাইকে দেখো,সে কতটা পরিশ্রমী এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।’
‘আমার কাছে বর্তমান সুন্দর। ভবিষ্যৎ ভেবে জীবনকে বিস্বাদ করার কারণ দেখিনা।’
‘কিন্তু আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তুমি খুব ভালো করেই জানো, আমার কথার দাম কতখানি।’
‘আমাকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেবার আগে ভাবা উচিত ছিল।’
‘আটবছর আগেও কি তুমি আমার মতামত নিয়েছিলে?’
‘পুরোনো ক্ষত তাজা কেন করছো?’
‘তুমি আমার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা কেন করছো?’
ভদ্রলোককে উত্তেজিত দেখায়।যদিও এই মুহূর্তে ওনাকে ধৈর্য্যহারা হলে চলবে না। অনিকের রাগ তরতর করে বাড়লো।যার দরুন ওর ফর্সা মুখে নীলচে শিরাগুলো দৃশ্যমান।অনিক চোখ বন্ধ করে রাগ দমনের চেষ্টা করলো। আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে সুখটান দিয়ে বললো,
‘কারণ আমি একটা টক্সিক ব্যক্তি। আমার সাথে কেউ সুখী হতে পারবে না, না কারো উপস্থিতি আমি সহ্য করতে পারবো‌। শুধু শুধু কেন একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করছো,বাবা?’
‘জন্মদাতা হিসেবে, আমি তোমাকে সুখী দেখতে চাই।’
‘আমি আমার এই জীবন নিয়ে যথেষ্ট সুখী।’
‘মদের বোতল, বন্ধুদের আড্ডা,লং ড্রাইভ এগুলো তোমার সুখ? যার জন্য তুমি এসব ধরেছো,সে কিন্তু আনন্দেই আছে।এসব দেখে তোমার মনে কি পরিবর্তন হবার জেদ আসেনা। তোমার যেসব বন্ধুরা এসবের সঙ্গী,তারাও পরিবারে আবদ্ধ।’
অনিক কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করলো। তারপর বললো,
‘ক্যারিয়ার, ভালো জীবনের প্রত্যাশায় একটা সময় প্রতিযোগীতায় নেমেছিলাম। কিছু বিশ্বাসঘাতক ছাড়া আর কেউ জীবনে আসেনি। আমার এখনকার বন্ধুদের উদ্দেশ্য আমার কাছে পরিষ্কার, তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু তখন আমি কল্পনাও করতে পারতাম না।আর জেদের কথা বলছো। নিজেকে পরিবর্তন করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই।’
আফসার শিকদার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
‘বুঝলাম। কিন্তু বাচ্চাটা কি দোষ করেছে।সে কি একজন ভালো বাবা ডিজার্ভ করে না। ‘
‘সে বাবা হিসেবে অন্য কাওকে জানে। জন্মদাতা হয়েও ভীড়ের মধ্যে নিজের মেয়েকে খুজে বের করতে পারবো না।’
অনিকের গলাটা ধরে আসে।মেয়ের কথা মনে পড়লে,ওর শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। জন্মদাতা হয়েও মেয়েকে ছুঁয়ে দেখার,আদর করার ভাগ্য ওর নেই।বিভা ওর থেকে নিজের মেয়েকে আড়াল করে রেখেছে। এমনকি ঘরের গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া বাইরের কেউ জানে না অনিক এক কন্যা সন্তানের পিতা।ঠিক কি কারণে বিভা ওকে এহেন শাস্তি দিচ্ছে,আজও বুঝতে পারে না। সাফিয়ার স্মৃতি বলতে ছোট ছোট পায়ে হেঁটে চলা ফোলা ফোলা গালের বছর দুয়েকের এক মেয়েকে মনে পড়ে‌। এখন ওর বয়স কতো?ছয় বছরের একটু কম।
আফসার শিকদারের ডাকে ও সম্বিৎ ফিরে পায়।
‘আজ হোক কাল হোক, সাফিয়া এখানে ফেরত আসবে।বিভা তাকে তোমার থেকে আড়াল করতে পারবে না। তোমার কি মনে হয়, রিফাত তাকে তোমার মতো আদর করতে পারবে? শিকড়ের টানে সে কিন্তু তোমার কাছে আসবে। তবে সেসব কথা বাদ, আগামীকাল তুমি বিয়ে করে আমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করো।’
‘আমার দ্বারা সম্ভব নয়।’
‘বাবা হয়ে তোমার কাছে হাতজোড় করে বলছি, তুমি আমার কথা রাখো। মনে করো তোমার কাছে এটা আমার শেষ চাওয়া।’
আফসার শিকদারের ব্যাথিত মুখের দিকে তাকিয়ে অনিক বিব্রত হলো। নতুন করে সংসার শুরু করতে ওর মন সায় দিচ্ছে না।যখন থেকেই বিয়ের প্রসঙ্গ শুরু হয়েছে, তখন থেকেই ওর বারবার মনে হচ্ছে, কেউ একজন ওর স্বাধীনতা হরণ করতে আসছে।
আফসার শিকদার পুনরায় বললেন,
‘তুমি আমার কথা না রাখলে,এই বয়সে মুখ দেখানোর থাকবে না। আমার কথাটা রাখো। তোমাকে অনুরোধ করছি। মেয়েটাকে উদ্ধার করো। তুমি বেঁকে বসলে,তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে।বাবা হয়ে তো সন্তানের পায়ে ধরতে পারিনা।’
‘ছিঃ বাবা। তোমার মতো মানুষের মুখে এসব মানায় না।নিজেকে তুমি নিচে নামাচ্ছো কেন?’
‘তুমি বাধ্য করছো।’
কক্ষ জুড়ে কিছুক্ষণ নিরবতা বয়ে গেল।অনিক ওর বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেল।গত কয়েকদিন ধরে এসব ভাবনা ওর দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। সবসময় ওর মানসপটে বাবার চোখদুটো ভাসছিল।যে চোখদুটো ওকে আকুলতা জানাচ্ছে।অবশেষে নীরবতার জাল ছিঁড়ে অনিক বললো,
‘আমি শুধু বিয়েটা করবো। সংসার, দায়দায়িত্ব এসবে আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করবে না।’
‘সিদ্ধান্ত বদলাবে না তো।’
‘আমি তোমার ছেলে।যা বলেছি তা করবো। তবে আমার ব্যক্তিগত জীবনে কারো অনধিকার প্রবেশ আমি চাই না। আমার উপেক্ষায় যদি সে ব্যাথিত হয়,তবে তার দায় একান্তই তোমার। নিজের করা ভুলের মাশুল নিজেই গুনবে। আমাকে জড়াবে না।’
অনিক চেয়ার ছেড়ে উঠে কক্ষের বাইরে চলে গেল। আফসার শিকদারের মুখে জয়ের হাসি।তড়িঘড়ি করে সার্ভেন্টকে কল করলো। ছেলেকে নিয়ে তিনি কোন ঝুঁকি নিতে চাননা। অনেকদিন হলো ছেলেটা রাতে ভালো করে ঘুমায় না। বিয়ের আগের রাতে শান্তির ঘুম প্রয়োজন।

*
সেদিন রাতে মাকসুদ দরিয়া বেগমের কথা আফসার শিকদারকে বলার পর, ভদ্রলোক গম্ভীর গলায় বলেছিল,
‘ওকে সবকিছু বলে দেও, নয়তো ঝামেলা করবে। আমি এই বিয়েতে কোন ঝামেলা চাচ্ছি না।’
দরিয়া বেগম মনে মনে ফন্দি আটছিলেন।কিন্তু সে রাতে পুনরায় মাকসুদের সাথে ঘন্টাখানেক কথা বলার পর,সমস্ত চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে দিলেন। মনে মনে বেজায় খুশি হয়েছিলেন।যাক মেয়েটা তাহলে রাজরাণী হচ্ছেনা! একটা মাতালের সাথে আর কি সংসার করবে।তবে মোতালেবের সন্দেহ এড়াতে ও নিজের খুশি প্রকাশ করেনি। এমনিতেই মাঝে মোতালেব একবার বলেছিল,
‘ছাওয়ালের খোঁজখবর না নিয়ে বিয়ে দেওয়া ঠিক হচ্ছে না।এরে কয় জলজ্যান্ত মাইয়ারে গাঙে ভাসানু।’
স্বামীর এহেন কথায় দরিয়া বেগম রাগ করে বলেছিল,
‘এমনে যৌতুক ছাড়া ওরে কিডা নেবে।এহেনে যে বিয়া হচ্ছে,ওর সাত জম্মের কপাল।’
মোতালেবের সন্দেহ মিটতে চায় না। পুনরায় মাকসুদের সাথে কথা বলে। ফোনালাপের পর কিন্তু মোতালেবকে বেশ উৎফুল্ল দেখায়। মাকসুদ তো আর এমনি এমনি আফসার শিকদারের বিশ্বাসভাজন হয়নি।কথার মারপ্যাঁচ ও ভালো খেলতে পারে।

*
আজ মঙ্গলবার, কোয়েলিয়ার বিয়ে। আজকের পরিবেশটা রৌদ্রজ্জ্বল।কড়া রোদে বরই ফুলগুলো ঝকঝক করছে। ওদের বাড়ির পিছনে বিস্তির্ণ ধানক্ষেত।ধানের ছড়ায় সোনালী ভাব এসেছে।গাছে গাছে ফিঙেরা তারস্বরে চেচাচ্ছে।বিকেল চারটে নাগাদ বরপক্ষ আসবে। হেমন্তের বিকেল আসতে দেরী হয়না। দরিয়া বেগম বেশ উৎফুল্ল হয়ে প্রতিবেশীর সহায়তায় রান্নাবান্না করছে। মোতালেব মোল্লা হাতে হাতে সাহায্য করছেন।যতই অনাড়ম্বর আয়োজন হোক, মেয়ের বিয়ে বলে কথা।
আর কোয়েলিয়া!ও উদাস হয়ে জানালার বাইরের বড় কামিনী গাছের দিকে তাকিয়ে আছে।এ গাছ ওর বড় ফুফু লাগিয়েছিল।একটু বাতাস হলেই ঝরঝর করে পাপড়িগুলো মাটিতে খসে পড়ছে।
ছোট থেকেই ও সৎমায়ের অত্যাচারের শিকার,বাবার সাথে তৈরি হয়েছিল দূরত্ব। স্কুলে যাওয়া,বাড়ি এসে ফরমায়েশ খাটা এই ছিল কাজ। মাঝামাঝি ধরণের ছাত্রী হবার কারণে বন্ধুবান্ধব খুব একটা ছিল না।যারা সেধে এসেছে, তাদের মানসিকতা ওর ভালো লাগেনি।রেনু ওর থেকে তিনবছরের ছোট,ওর বাল্যকালের খেলার সাথী। ভাইবোনেরা ওকে আলাদাভাবে দেখে না। তবে দরিয়া বেগম চাননা,তারা কোয়েলিয়ার সাথে মেতে থাকুক।তাই স্বাভাবিকভাবেই ও অধিকাংশ সময় একা থাকে।
এতকিছুর মাঝেও কোয়েলিয়া হাসিখুশি একটা মেয়ে। নিজের চেহারা নিয়ে ও বিষন্নতায় ভোগে না। বরঞ্চ দর্পনের সামনে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে মোহিত হয়।আগে যখন মন খারাপ হতো জানালার পাশে বসে কাঁদতো। এখন আর কাঁদতে ইচ্ছে করে না। অতিরিক্ত কাঁদলে নাক দিয়ে তরল গড়িয়ে আসে। ব্যাপারটা খুবই বিরক্তিকর।
কোন ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়ানোর মতো পরিস্থিতি ওর ছিল না। তবে ও যখন বয়ঃসন্ধিতে পা রাখলো, তখন থেকে মনে মনে চাইতো কেউ একজন এসে ওকে এই নরক থেকে উদ্ধার করুক।ওই বয়সে ছেলে-মেয়েরা এমনিতেই মানুষের আকর্ষণ খোঁজে, নিজেকে বিশেষ ভেবে সবার ভালোবাসা কামনা করে। কারোর সামান্য অনাদরেও চোখ ফেটে জল আসে। সেই বয়সে মাতৃহীন মেয়েটা এসব ভাবনা ভেবে একটু শান্তি খুজতো। খুব করে চাইতো ওর তাড়াতাড়ি বিয়ে হোক। তবে গায়ের রঙের জন্য বিয়েটা বেশিদূর এগোতো না। একবার তো এক শুভাকাঙ্ক্ষী ওকে বলেছিল,
‘আজকাল ভালো ব্রান্ডের ব্রাইটনেস ক্রিম পাওয়া যাচ্ছে। ইন্সট্যান্ট রেজাল্ট পাওয়া যায়।’
কোয়েলিয়া সেকথা হজম করেছিল। অবশ্য দরিয়া বেগম ওকে এমনভাবে গড়েছেন যে ওর ভেতরে রাগ থাকলেও, তা দেখানোর সাহস হয়ে ওঠেনা। শুধু বড় বড় কালো আখিযুগল দিয়ে সে রাগ প্রকাশ করে, মুখের ভাব থাকে স্বাভাবিক।

বিকেল ৫:১৬মিনিটে ওর বিয়ে হয়ে গেল, খুবই সাধারণভাবে। আফসার শিকদার ,তার ছেলে, মাকসুদ আর একজন কাজী এসেছিল সাথে। কনেপক্ষ থেকে মেম্বার ,এলাকার কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তি আর গুটিকয়েক মহিলা উপস্থিত ছিল। তখন ও গ্রামবাসীরা কোয়েলিয়ার বিয়ে সম্পর্কে অবগত নন।অনিকের থমথমে মুখ দেখে রেণু সিজু শ্যালিকাসুলভ রসিকতার সাহস পেল না।বিয়েতে শেরাওনীর পরিবর্তে শার্ট ইন করে কেতাদুরস্ত ভদ্রলোক সেজে আসাটা ওদের মনঃপুত হয়নি।তবে ওরা কোয়েলিয়াকে সুন্দর করে সাজালো।মাগরিবের আজানের পূর্বে হেমন্তের ম্লান সন্ধ্যায় পেছনে একদল কৌতুহলী মানুষ রেখে কোয়েলিয়া চললো ওর শশুরবাড়ির দিকে।কি আশ্চর্য! মোতালেব,রেণু সিজু এমনকি ছোট্ট সালমান কাঁদলেও, কোয়েলিয়া যাবার সময় বিদায়ী কান্না কাঁদেনি। প্রতিবেশীরা কেউ বললো,
‘কি পাষাণ মেয়ে!’
আবার কেউ একজন বললো,
‘মুক্তি পেয়ে কেউ কাঁদে?’
গাড়ি কিছুদূর এগিয়ে গেলে শেষবারের মতো কোয়েলিয়া জানালা দিয়ে পেছনে তাকায়। আশ্চর্য!এত দূর থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে, মৃদু বাতাসে কামিনীর পাপড়িগুলো পালকের মতো খসে পড়ছে।

চলবে..
®️ সুমি খানম