ম্লান সন্ধ্যায় পর্ব-০৪

0
308

#ম্লান_সন্ধ্যায় (০৪)

কোয়েলিয়া বেশ ভয়ে ভয়ে দরজায় টোকা মারলো। গতকালকের ঘটনার পর অনিককে ডেকে তোলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ওর নেই। কিন্তু ওইযে ও হলো সুতোয় বাঁধা পুতুল। ওপর থেকে যেদিকে নাড়াবে সে দিকেই ফিরতে হবে।ও কিছুক্ষণ বিরতি রেখে আবার কশাঘাত করলো।ভেতর থেকে গম্ভীর কণ্ঠে আওয়াজ এলো,
‘দরজা খোলা আছে।’
জানালার পর্দা টানা, দরজা খোলায় স্বল্প আলো ঘরে প্রবেশ করেছে।কোয়েলিয়া শব্দ না করেই কফির মগটা রাখার চেষ্টা করছিল, কিন্তু হাতের চুড়ি মগে লেগে টুং করে আওয়াজ তোলে।
অনিক জেগেই ছিল। নিদ্রাহীনতা ওর বর্তমান জীবনের সমস্যা। চোখ মেলে কোয়েলিয়াকে দেখে বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে গেল।

‘আপনি আবার কেন এসেছেন?’
অনিকের কন্ঠে রাগের আভাস। কাওকে এ ধরনের কথা বলা মানেই অপমান করা। কোয়েলিয়া অপমান হজম করে নিলো। মৃদুস্বরে বললো,
‘আপনার বাবা আমাকে পাঠিয়েছেন।’
‘দেখুন আপনি আমার সামনে আসার চেষ্টা করবেন না। আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’

‘হ্যাঁ, গতকাল যা আচরণ করলেন,তাতে আমারও শখ নেই আপনার সামনে আসার।’ – মনে মনে বলা কথাগুলো মুখে এলো না।মুখে বলতে পারলে হয়তো ওর শান্তি হতো। কিন্তু ওর তো হাত পা বাঁধা।তার ওপর দরিয়া বেগম ওকে এমনভাবে গড়েছেন যে একেবারে অসহ্য না হলে ও মুখ খোলে না ।

কোয়েলিয়া ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে দেখে,অনিক বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় গেল। কোয়েলিয়া সবেমাত্র এলোমেলো বিছানা ঠিক করার জন্য ওর বালিশটা ধরেছে, ওমনি অনিক এসে ওর হাত থেকে বালিশটা কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিলো।হাত উঁচু করে কোয়েলিয়াকে চড় মারতে গিয়েও হাত সরিয়ে নিল। অতঃপর রাগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় কফিসহ মগটা মেঝেতে ছুড়ে ফেললো। ঝনঝন আওয়াজ তুলে মগটা ভেঙে কয়েক টুকরো হলো।

কোয়েলিয়া অবাক হয়ে বড়বড় চোখ মেলে তাকিয়ে রইল। মানসিক রোগী ছাড়া কারো এতো সহজে রাগ ওঠেনা।ওর সামনে দাঁড়ানো এই লোকটার আসলে পাগলা গারদে থাকা উচিত, নয়তো রিহ্যাবে। এখানে বেশিক্ষণ দাঁড়ালে কপালে দূর্ভোগ নেমে আসার সম্ভাবনা আছে। পাগলদের মনে বিচিত্র খেয়ালের উদ্রেক হয়।গায়ে হাত তুললে লজ্জার শেষ থাকবে না। কেউ ওর গায়ে হাত তুললে ব্যাথার থেকে লজ্জাটাই ওকে কুড়ে খায়।

এরমধ্যে ঘটলো এক বিপত্তি। কোয়েলিয়া তাড়াতাড়ি করে বাইরে যেতে গিয়ে শাড়িতে বেঁধে পড়ে গেল। সেইসাথে খোঁপা করা চুলগুলো খুলে চোখের সামনে এসে পড়লো।পিঠসমান কোঁকড়া চুলের শাড়ি পরা মেয়েটাকে দেখে যে কেউ পাগল বলে ভুল করতে পারে। অনিকের হাসি পেলেও,হাসলো না। কোয়েলিয়া বেশ ভালোই ব্যাথা পেয়েছে।ও আশা করেছিল,অনিক ওকে উঠতে সাহায্য করবে। কিন্তু অনিকের মুখভঙ্গি বেশ স্বাভাবিক দেখে বোঝাই যাচ্ছে,ওকে পড়ে যেতে দেখে ওর বেশ ভালো লেগেছে। রাগে দুঃখে কোয়েলিয়া অস্ফুটস্বরে বললো,
‘পাগল-ছাগলের সর্দার।’
শব্দের তীব্রতা অল্প ছিল,তাই অনিক শুনলো না‌। শুনলে প্রতিক্রিয়া কেমন হতো,তা ভাবনার বিষয়!

*
বিকেলের দিকে ওর অলস সময় যাচ্ছিল। নাজমা ওর সাথে তেমন একটা কথা বলেনি। একটু বেলা হলে দুপুরের রান্নাবান্নার ব্যাপারে যা বলেছিল।তা ছাড়া বাকি পুরোটা সময় ওনার দৃষ্টিতে কোয়েলিয়া তটস্থ ছিল। কেউ পাশে দাঁড়িয়ে থেকেও নিশ্চুপ থাকলে পরিস্থিতি জটিলতার দিকে এগোয়।
ও জানালার বাইরে তাকিয়েছিল। এদিকটায় দেখার কিছু নেই। কয়েকটা আমগাছ আর উঁচু দেয়াল। কেমন গুমোট পরিবেশ।ওর মধ্যে মেয়েলি কন্ঠের আওয়াজ এলো,
‘আসবো।’
কোয়েলিয়া দরজার দিকে তাকিয়ে বেশ অবাক হলো।এ কোন বাড়িতে এসে পড়েছে।এত সুন্দরের ভীড়ে ওযে উপেক্ষণীয়। গোলাপী টপস জিন্স পরা, মিষ্টি চেহারার এক মেয়ে। গলায় আকাশী রঙা স্কার্ফ প্যাচানো। কপালের সামনের চুলগুলো ক্লিপ দিয়ে আটা।তবে এতসবের মাঝে লক্ষণীয় মেয়েটার হাসি।যা ওকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। এজন্যই হয়তো বলে,’হাসো আর মনে মনে নিজেকে সুন্দর ভাবো, তোমার হাসির ভিতর লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য।’

মেয়েটা হাসি প্রশস্ত করে বললো,
‘আমাকে ভেতরে আসতে বলবে না?’
কোয়েলিয়া হেসে সম্মতি জানালো। মেয়েটা ভেতরে ঢুকে চেয়ার টেনে বসলো।
‘আমি সারাহ, তোমার ননদ হই।অনিক ভাইয়ার ফুফাতো বোন।’
কোয়েলিয়া সালাম দিলো।সারাহ হেসে বলল,
‘আমাকে ননদ টাইপ কিছু ভাবার দরকার নেই।রাতে শুনি ভাইয়া বিয়ে করেছে,তাই তোমাকে দেখতে চলে আসলাম। তোমাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।’

কোয়েলিয়া ভেবে পেল না কি উত্তর দেবে।তবে ওর কথা না বলায় কিন্তু সারাহর উৎসাহ কমেনি। কথায় কথায় জানলো,সারাহর বড় ভাই সরফরাজ, বড়বোন কানাডায় পড়াশোনা করছে।সারাহ কোয়েলিয়ার থেকে ওর পরিবারের কথা জেনে নিলো। রেণুর কথা বলতেই ও বললো,
‘সে কি! আমিও তো একই ব্যাচে।যদিও আমাদের সেমিস্টার কাউন্ট করা হয়।ও ন্যাশনালে পড়ে?ওকে নিয়ে এসো এখানে।এবাড়িতে কথা বলার মতো কেউ নেই। এজন্য আমি দাদীর কাছে থাকি।অনিক ভাইয়া আগে এমন ছিল না। এখন দেখলে মানসিক রোগী মনে হয়।’
বলেই জিভ কামড়ালো‌।
‘তুমি আবার বলে দিও না।’
কোয়েলিয়া হাসলো।সারাহ মুগ্ধ চোখে ওর দিকে তাকালো।

দু’জনে অনেকক্ষণ কথা বললো। বিচক্ষণ সারা বুঝলো সদ্য বাড়ি ছেড়ে আসা কোয়েলিয়ার ভাইবোনের কথা বললে, থামতে চায় না। এজন্য ও নানাভাবে ওর বাড়ির কথা তুলে কোয়েলিয়াকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো।ও বললো,
‘তুমি বই পছন্দ করো?স্টাডি রুমে নানারকম বই আছে, ওখানে সময় কাটাতে পারো। তাছাড়া বিকেলটা ছাদে কাটাতে পারো।আর আমি তো আছিই, তবে আমাকে আবার দাদীর কাছেও যেতে হয়। আজকে আমি আর কোথাও যাচ্ছি না।রাতে দুজন আড্ডা দেব। তুমি গান গাইতে পারো?’
‘না।’
সারাহ অবাক হয়ে বললো,
‘সে কি তোমার কন্ঠ তো সুন্দর। কেমন গুছিয়ে কথা বলো ।আর গান গাইতে জানো না।’
‘কথা বলা সহজ, কিন্তু গান গাইতে গেলে যে কন্ঠের সাথে সাথে সুর তাল সব লাগে।’

ওরা কথা বলতে বলতে বাইরে গেল। ততক্ষনে রোদের তেজ মরে গেছে। সূর্যের লালচে আভা চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাগানে রাখা সাদা রঙের চেয়ারে মুখোমুখি বসলো।ওর একটু সামনে সারিবদ্ধভাবে কয়েক জাতের গোলাপ লাগানো। গাছগুলোর বিন্যাস চমৎকার।এই যেমন টকটকে লাল গোলাপের পাশে সাদা রঙা তার পাশে গোলাপী, আবার লাল ,সাদা এভাবে।কসমস গুলোও দেখতে সুন্দর লাগছে। আরও কয়েকটা গাছ ও ঠিক চিনতে পারলো না।তবে হেমন্ত যে এতো ফুলে সাজে আগে জানতো না।পাখির কিচিরমিচির, দেবদারুর বাতাস আর এই মিষ্টি মেয়ে সারাহ। কোয়েলিয়ার বিকেলটা চমৎকার লাগছে।যদিও থেকে থেকে বাড়ির কথা মনে পড়ছে।

ওরা তিন বোন আলাদা আলাদা চরিত্রের হলেও ওদের সম্পর্কে ফাটল ছিল না।এর মধ্যে রেণুর সাথে কোয়েলিয়ার ছিল আত্মার সম্পর্ক।রোজ রাতে দুজনে কিছুক্ষণ গল্প না করে ঘুমাতে পারতো না।আর পাঁচ বছরের সালমানের কৌতুহল ছিল ওর কোঁকড়া চুলগুলো।টানলে লম্বা হয় অথচো ছেড়ে দিলে ছোট! গতকাল এরকম সময় ও বোনেদের সাথে ছিল।আর আজ ও কতদূর এসে পড়েছে। কতগুলো নতুন চরিত্রের মানুষের সাথে পরিচিয় হয়েছে।এও জানলো তার স্বামীর পূর্বে বিয়ে হয়েছিল, একটা বাচ্চাও আছে।
কোয়েলিয়া দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েও জিজ্ঞেস করল,
‘আচ্ছা ওনার মেয়েটা এখন কোথায়? কতটুকু সে?’
‘কার কথা বলছো?অনিক ভাইয়ার মেয়ে?’
কোয়েলিয়া মাথা নাড়ায়।সারাহ গলার স্বর নিচু করে বললো,
‘বিভা আপু সাফিয়াকে নিয়ে গিয়েছিল।ভাইয়া অনেক অনুরোধ করার পরও দেখতে দেয়নি। সাফিয়ার বয়স ছয় বছরের মতো। ওনাদের ভালোবাসা দেখলে, তুমিও অবাক হতে।এতো ভালোবাসার পর ও আপু ভাইয়ার বন্ধুর হাত ধরে চলে যায়।’
কোয়েলিয়ার কিছুটা সন্দেহ হয়। কিন্তু ও কিছু বলেনা।একদিনে এতসব কথার কোন মানেই হয় না।

*
রাতের খাওয়ার সময় অনিককে ডাকার দায়িত্বটা ও দরজার সামনে থেকেই সেরে এসেছে। আফসার শিকদার সন্ধ্যার পর ঘন্টাখানেক লেকচার দিয়েছে।তার সারাংশ এই যে,অনিক রাগারাগী করলেও, সবসময় তার আশেপাশে থাকতে হবে। প্রথম প্রথম ঝামেলা করলেও একটা সময় ওর প্রতি মায়া চলে আসবে। কোয়েলিয়া অনেকক্ষণ ভেবেও একথার ভিত্তি খুঁজে পেল না যে একটা মানুষের সান্নিধ্য পাবার জন্য বেহায়া কেন হতে হবে? লোকটা সম্ভবত একাকীত্ব দূর করার জন্য মদ বেছে নিয়েছিল।সে এমন কে যে তার জন্য মদ ছেড়ে দেবে। এতবছরের অভ্যাস পুরোপুরি ত্যাগ করা সহজ নাকি!
মনে মনে এসব ভাবলেও আফসার শিকদারের কথা ওকে মেনে চলতে হবে।তার লেকচারের শেষ কথাগুলো ওকে পুনরায় মনে করিয়ে দিয়েছিল যে ও সুতোয় বাঁধা পুতুল মাত্র।এই লোক এতোটাই চতুর যে শিক্ষিত মার্জিত কিন্তু অধীনে থাকবে এমন এক মেয়েকে বেছে নিয়েছেন।

রাতের খাবারটা চারজনে একসাথে বসে খেল।সারাহ কোয়েলিয়ার কথা তুললে, নাজমা গম্ভীর গলায় বললো,
‘ওর খাবার রুমে দেওয়া হবে।’

ঘড়িতে ১২টা বেজে ২৭ মিনিট।সারাহ কোয়েলিয়ার ঘরে এসেছে ওকে নিয়ে ছাদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দুহাতে দুটো কফি ভর্তি মগ। কোয়েলিয়া ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমনিতেই একটা দিন এতরকম ভাবে কাটতে পারে,ওর ধারণা ও ছিল না। সকালটা বড্ড মনখারাপ, তারপর ভয়,অনিকের অপমান, নাজমার উপেক্ষা,সারাহর সাথে সখ্যতা,সবশেষে আফসার শিকদারের লেকচার।এ যে রীতিমতো এক কাহিনী!এতসব কিছুর মাঝে ও ক্লান্ত।সারাহ ওকে ঘুমাতে দিলো না।
বললো,
‘আরেহ, একঘন্টা পরে ঘুমালে কিছু হবে না।চলো কিছুক্ষণ আড্ডা দিই। আকাশে একফালি চাঁদ উঠেছে। দারুন লাগবে,দেখো।’
সারাহর উৎসাহ মাটি করতে ওর ইচ্ছে করলো না। এমনিতেই স্বার্থপর বাড়িতে একটা কথা বলার মানুষ পেয়েছে।ও সবেমাত্র চুলটা খোঁপা করে বেরোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল,এমন সময় রুবিনা আফসার শিকদারের তলব নিয়ে এলো। কোয়েলিয়া সারাহকে আশ্বস্ত করে রুবিনার পিছু পিছু গেল।
আফসার শিকদারের গম্ভীর গলায় বলল,
‘সন্ধ্যায় যা বলেছিলাম,মনে আছে?’
কোয়েলিয়া মাথা নাড়ায়,তার প্রতিটা কথার সুর লয় সব মনে আছে।
‘তাহলে তুমি ওঘরে কি করছিলে?এই মুহূর্তে তুমি অনিকের ঘরে যাবে এবং এখন থেকে তুমি ওখানেই থাকবে। বুঝতে পেরেছো?’
শেষ কথাটা ভদ্রলোক একটু জোরেই বললেন। তিনি একরকম মরিয়া হয়ে পড়েছেন ছেলেকে সুপথে আনতে। কিন্তু যে জগতে সে আছে তাকে সুপথে আনা কি একদিনের কাজ?মানুষ যখন ভালো কিছু চায়, তখন তার ধৈর্য্য ধরা উচিত। কিন্তু দেখা যায়, চূড়ান্ত মূহুর্তে এসে তার ধৈর্য্য আর থাকে না। ফলস্বরূপ তার পূর্বেকার পরিশ্রম বৃথা চলে যায়। আফসার শিকদারের দশাও অনেকটা সেরকম।

কোয়েলিয়া মাথায় ভালো করে কাপড় তুলে ওপরের দিকে পা বাড়ালো।সারাহ হতাশ হয়ে ওর দিকে একবার তাকাল। আফসার শিকদার ভাগ্নিকে বড় আদর করেন।
‘সারাহ, তুমি এই রাতদুপুরে কফি কেন খাচ্ছো?এটা তোমার স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে।’
ভদ্রলোকের কন্ঠ এখন স্বাভাবিক।সারাহ হতাশ হয়ে কফির মগ দুটো টেবিলে রেখে ওপরে চলে যায়।

*
কোয়েলিয়া বাইরে থেকে একবার ভেতরে উঁকি মেরে গুটিগুটি পায়ে ভেতরে ঢোকে। না,ও অনিককে ভয় পায় না। কোন মানুষে ওর ভয় নেই। কিন্তু অনিক বারবার যেভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলে, নেহাৎ ও বাধ্য। নয়তো ভুলেও এঘর মাড়াতো না। ভেতরে ঢুকে অনিককে কোথাও না দেখে স্বস্তি পায়। হয়তো বেলকনিতে।সেন্টার টেবিলে অ্যালকোহলের বোতল,তাতে Heineken লেখাটা স্পষ্ট।আধখাওয়া মাংসের প্লেট। তারমানে পাগলটা বাড়িতে বসেও খায়। এখন যদি ওর সাথে উল্টোপাল্টা আচরণ করে।ও রুমের চারপাশে চোখ বুলায়।খাটের মুখোমুখি ড্রেসিং টেবিল, এককোণে আলমারি, বারান্দার জানালা ঘেঁষে ডিভান রাখা।তারপাশে বুকশেলফ। বাহ্,এযে দেখছি গোবরে পদ্মফুল।গাছভর্তি ফুল আর শেলফ ভর্তি বই যে কাওকে আকৃষ্ট করে। কোয়েলিয়া তার ব্যতিক্রম নয়।ও মুগ্ধ চোখে বইগুলো দেখছিল,এর মাঝে অনিকের ধমক ওর মনোযোগ ছিন্ন করে।ও ঘুরে তাকালে দুজনের চোখাচোখি হয়ে।অনিক থমকে দাঁড়ায়,পুরু ভ্রুযুগলের নিচে বড় বড় কালো চোখদ্বয়ে ভীরু চাহনি। দৃষ্টির গভীরতায় ও কি হারিয়ে যাচ্ছে?

চলবে..
®️ সুমি খানম