রহস্যময়ী লেডি কিলার পর্ব-১৫+১৬

0
234

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১৫

“আকাশ নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছে না, যে তার সামনে কুখ্যাত লেডি কিলার নিজের বাস্তবিক রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! অবনীর এমন ভয়াবহ রূপ দেখে আশেপাশের মানুষের মতন তাঁদের দিকে তেড়ে আসা লোকজন গুলাও ভয় পেয়ে যায়। যার কারনে তারা সবাই আকাশের দিকে তেড়ে আসা বাদ দিয়ে রেখে উল্টো পিছাতে শুরু করে। কিন্তু তাতে আর কোনো লাভ নেই। কারন অবনী এতো সময়ে ঘটনাস্থলকে যুদ্ধের ময়দান বানিয়ে দিয়েছে। এজন্যই বলে কখনো কোনো ঘুমন্ত বাঘিনীকে জাগাবেন না। এতে করে নিজের বিপদ হতে পারে। অপজিট পাশের একটা মেয়ে নিজের অলৌকিক শক্তির দ্বারা পরিবেশকে আঁধার বানিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে অবনী সেই আঁধার পরিবেশকে নড়ক বানিয়ে দিয়েছে। অবনী তার আধ্যাত্মিক শক্তির মাধ্যমে ঘটনাস্থলকে পুরো বিদঘুটে অন্ধকার বানিয়ে দিয়েছে। পুরো ঘটনাস্থলে টর্নেডো শুরু হয়েছে। যেই টর্নেডোর কারনে ঘটনাস্থলে আঁধার হওয়ার পাশাপাশি তীব্রবেগে বাতাস বইতে শুরু করেছে। কেউ চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছে না। এতো পরিমাণে বাতাস বইতে শুরু করেছে। “অন্যদিকে আঁধারের উপত্যকা থেকে বিজলির মতন কিছু একটা বিকট আওয়াজে জমিনের উপর আছড়ে পড়ছে। যেটা দেখে এক কথায় মনে হচ্ছে, কারেন্টর কোনো বড় পাওয়ারপ্লান্ট ব্লাস্ট হয়েছে। যার কারনে পাওয়ারপ্লান্টের বৈদ্যুতিক আলো জমিনের দিকে বিদ্যুৎ এর ন্যায় আলোকরশ্মির তৈরী করছে। বিপরীত পাশের সবাই নিজের জানপ্রাণ নিয়ে উল্টো পথে দৌড়ে ছুটেছে। কারন তারা বাঘিনীর গর্তে এসে বাঘিনীকে জাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অবনীও থেমে নেই। অবনী হাওয়ায় ভাসমান হয়ে তাঁদের পিছু ছুটতে শুরু করেছে। এক পর্যায়ে অবনী সেই মেয়েটাকে ধরে ফেলে, যেই মেয়েটা কিনা নিজের অলৌকিক শক্তির দ্বারা ঘটনাস্থলকে আঁধার বানিয়ে দিয়েছিলো। পরে সেই মেয়েটাকে ধরে কুপিয়ে তার দুই হাত শরীর থেকে আলাদা করে ফেলে। তারপর সেই মেয়ের কাটা হাত জোড়া মাটি থেকে উঠিয়ে নিয়ে তাকে বলে,

–কিরে হুঁশ ঠিকানা মতন এসেছে? কোন সাহসে তোরা আমার উনার দিকে তেড়েফুঁড়ে আসার সাহস করেছিস? তোদের কি একবারো কলিজা কাঁপনি আমার উনাকে মারার উদ্দেশ্যে তেড়ে আসবার সময়?

–ক্যাথরিন নাইট আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
বিশ্বাস করুন আমি বা আমরা জানতাম না, যে আপনি এই লোকের সামনে রক্ষাকবচ হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবেন। যদি জানতাম, মায়ের দিব্যি বলছি কোনোদিন ও আসতাম না। ক্যাথরিন নাইট আপনি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি আমার ভুল শিকার করছি।

–বেলি তোর ভুলের কোনো মাফ নেই। আমি তোদের মাস্টারের সাথে বিট্রে করেছি। তোরা যদি তোদের মাস্টারের পক্ষ নিয়ে আমায় মারতে আসতি, তাহলেও হয়তো আজ তোর এই দুর্দশা দেখতে হতো না। হয়তো তুই আমার হাত থেকে রেহাই পেয়ে যেতিস। কিন্তু তোরা যাকে মারতে এসেছিস, সে হচ্ছে আমার হৃদয়ের স্পন্দন। সে হচ্ছে আমার প্রাণ ভোমরা। আর তুই কিনা তাকেই মারতে এসেছিস। তোর মাফ কখনোই হবে না। তোর মরতে হবে। কারন আমি আমার প্রিয় মামুষের একটা শত্রুকেও জীবিত রাখবো না। তার আশেপাশে যেই ঘেঁষার চেষ্টা করবে, বা তাকে যে মারার চেষ্টা করবে, তার কেয়ামত আমি রটিয়ে দিব। টা টাহ। গুড বায়।
.
অবনী বেলি নামক মেয়েটাকে গুড বায় বলে তার পেটের মধ্যে অবনীর দৈত্যাকার ছুরিটা ঢুকিয়ে দেয়। যার ফলে বেলি সেখানেই মারা যায়। বেলিকে মারতে মারতে অন্যদিকে বাকি সবাই অবনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে কোনো মতে সেখান থেকে নিজের প্রাণ নিয়ে পালিয়েছে। অবশ্য অবনীর ও সবাইকে মারার ইচ্ছে ছিলো না। তার ইচ্ছে ছিলো একজনকে মেরে বাকি সবার মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিবে। যাতে করে তার প্রাণ ভোমরার দিকে কেউ কখনো চোখ তুলে না থাকায়। অবনী বেলিকে মারার পর হুট করে সেও বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। যার ফলে ঘটনাস্থলের ভয়াবহ পরিবেশ বদলে গিয়ে আবার আগের ন্যায় শান্ত হয়ে যায়। “অন্যদিকে আকাশ চোখ বড় বড় করে অবনীর দিকে তাকিয়ে আছে। সে অবনীকে এভাবে বেহুঁশ হয়ে পড়ে যেতে দেখে দৌড়ে গিয়ে অবনীকে মাটি থেকে কোলে তুলে নেয়। অবশ্য অবনীকে নিয়ে তার ভিতরে হাজারটা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অবনীর এই অবস্থা দেখে সে সব কিছুকে এক সাইডে রেখে অবনীকে কোলে তুলে নেয় হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আকাশ অবনীকে কোলে তুলে নিতেই আকাশের গার্ডরা দৌড়ে আসে। আকাশ তার গার্ডদেরকে দেখে বলে,

–এই তোরা এতো সময় কোথায় ছিলি?

–ভাই বাতাসের জন্য চোখ মেলেই তাকাতে পারছিলাম না। তার উপরে সব কিছুই অন্ধকার হয়ে ছিলো। পথ এই খুঁজে পাচ্ছিলাম না।

–আচ্ছা শোন, আমি অবনীকে হসপিটাল নিয়ে যাচ্ছি। তোরা এই লাশ টাকে ঠিকানা লাগা। আর শোন যারা যারা অবনীর এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছে। তাঁদের সবাইকে নিজের মুখ বন্ধ রাখার আদেশ কর। না হয়তো সোজা জানিয়ে দিবে মুখ খুললে পরের সকাল তারা আর কেউ দেখতে পাবে না।
.
আকাশের কথা মতন গার্ড উপস্থিত সবাইকে শাসিয়ে নিজেদের মুখ বন্ধ রাখতে বলে। সবাই গার্ডের কথা মতন নিজের মুখে একদম তালা মেরে দেয়। কারন কারোর এই অকালো প্রাণ হারাবার ইচ্ছে নেই।
“অপরদিকে আকাশ অবনীকে কোলে করে নিয়ে এসে গাড়িতে বসায়। তারপর ড্রাইভারকে বলে জলদি গাড়ি ড্রাইভ করে আশেপাশের একটা হসপিটালে নিয়ে যেতে। ড্রাইভার আকাশের কথা মতন গাড়ি জলদি টেনে পাশের একটা হসপিটালে নিয়ে যায়। হসপিটালে পৌঁছানোর পর আকাশ আবার অবনীকে গাড়ি থেকে কোলে তুলে নেয়। পরে অবনীকে কোলে তুলে নিয়ে হসপিটালের ডক্টর দেখায়। ডক্টর অবনীর কন্ডিশন দেখে বলে, তার জখম হাতে পূণরায় চোট পাওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত মাত্রায় সে কোনো কিছুতে নিজের শরীরকে ফোর্স করেছে। যার কারনে সে অজ্ঞান হয়ে গেছে। আকাশ ডক্টরের কথা শুনে সাথে সাথেই বুঝতে পেরে যায়, যে একটু আগে হয়তো অবনী তার সুপারন্যাচারাল শক্তির অতিমাত্রায় ব্যবহা করেছে। যার ফলে তার এমনটা হয়েছে। তাই সে ডক্টরকে বলে,

–ডক্টর এখন কি করবো?

–উনাকে হসপিটালে এডমিট করিয়ে দিন। কয়েকদিন বেড রেস্টে থাকার পাশাপাশি স্যালাইন গ্রহণ করলে উনার শরীরের দূর্বলতা কেটে যাবে। যার ফলে উনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে।

–ডক্টর সব কিছুই ঠিক আছে। কিন্তু আমি ওকে হসপিটালে রাখতে পারবো না। আমি ওকে বাসায় শিফট করছি। আপনি সহ দু’জন নার্স আমার বাসায় ওর ট্রিটমেন্টের ববস্থা করুন। আপনাদের সবার এক এক বছরের করে বেতন আমি দিয়ে দিব।

–স্যার এটা তো সম্ভব না। আমি আপনার বাসায় গেলে বাকি পেসেন্টদের কি হবে।

–ডক্টর আমি এতো কথা জানি না! আপনারা আমার বাসাতেই ওর ট্রিটমেন্ট করবেন। আমি যাস্ট এটুকু জানি।

–আচ্ছা ঠিক আছে আমি সিনিয়রের সাথে কথা বলে আমার জায়গায় কয়েক দিনের জন্য অন্য কাউকে মোতায়ন করতে বলছি। আপনি উনাকে বাসায় শিফট করুন।

–হুম।
তারপর অবনীকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। আর মুহাজিদকে ফোন করে বললাম একটা গাড়ি নিয়ে গিয়ে হসপিটাল থেকে ডক্টর আর দু’জন নার্সকে নিয়ে আসার জন্য। মুজাহিদ আমার কথা মতন সেই ডক্টর আর দু’জন নার্সকে বাসায় নিয়ে আসলো। অবনীর ট্রিটমেন্ট শুরু হয়েছে। আজ পুরো দিন কেটে গেছে। কিন্তু অবনীর জ্ঞান ফিরবার কোনো নাম নিশানা নাই। আমার মাথায় অবনীকে নিয়ে চরম টেনশন কাজ কারছে। কারন এতো সময় হয়ে গেলো। কিন্তু এখনো অবনীর জ্ঞান ফিরে আসেনি। তাই অবনীর পাশে বসে রইলাম। গতকাল সারাটা রাত ও অবনীর পাশে বসে ছিলাম। এক সেকেন্ডের জন্যেও চোখের পাতা একত্রে করিনি। অবনীর পাশে বসে থাকতে থাকতে হুট করে ঘুমিয়ে পড়েছি বসা অবস্থাতেই। ঘুমানোর কিছুক্ষণ পর কারোর কান্নার আওয়াজ পেয়ে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘুম থেকে উঠে দেখি অবনী আমার মাথায় হাত রেখে কান্না করছে। তার মানে আমি ঘুমাবার পর অবনীর জ্ঞান ফিরে এসেছে। কিন্তু সে কান্না করছে কেন! নাহ একবার জিজ্ঞাস করা উচিৎ তাকে।
এই অবনী কি হয়েছে তোমার? তুমি এভাবে কাঁদছো কেন? আর তোমার জ্ঞান ফিরেছে কখন?

–আমার জ্ঞান ফিরে আসবার গুষ্টি মারি। আপনি আগে আমার কাছে আসুন। আমার আপনাকে জড়িয়ে ধরতে খুব ইচ্ছে করছে।

–অবনীর মুখে এমন কথা শুনে লজ্জায় পড়ে গেলাম। কারন রুমের মধ্যে দু’জন নার্স এই দাঁড়িয়ে আছে। কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। তাই একবার অবনীর দিকে তাকাচ্ছি। আরেকবার নার্সদের দিকে তাকাচ্ছি। নার্স আমার হাবভাব দেখে বুঝে নিলো আমি লজ্জা পাচ্ছি। তাই তারা দু’জন রুম থেকে বেরিয়ে গেছে। নার্স রুম থেকে বেরোতেই আমি অবনীকে বললাম,

–এই অবনী এমন কি হয়েছে, যে তুমি নার্সদের সামনে আমায় জড়িয়ে ধরার কথা বলে লজ্জা দিলে?

–আমার কি হয়েছে আমি জানি না! আমি খালি জানি, আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরতে চাই। আপনি প্লিজ আমার পাশে এসে আমাকে আপনার বাহুতে নিন।

–আচ্ছা নিব। তবে তারপর কিন্তু কান্নার কারনটা বলতে হবে।

–আচ্ছা।

–বসা থেকে উঠে বিছানায় গিয়ে অবনীর মাথার কাছে হেলান দিয়ে বসলাম। তারপর অবনীকে শোয়া থেকে আলতো করে জাগিয়ে নিজের বুকে নিয়ে নিলাম। সেও আমায় জড়িয়ে ধরেছে। পরিশেষে তাকে বললাম, এবার কান্নার কারন বলো।

–আপনি প্লিজ আমায় ছেড়ে যাবেন না। আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। আপনি আমায় ছেড়ে চলে যাবেন দেখে আপনাকে আমি শক্ত করে নিজের শরীরের সাথে জড়িয়ে ধরেছি।

–এটাই কি আসল কারন কান্না করবার?

–না এটাই আসল কারন না। আসল কারন হচ্ছে আমি আপনাকে গতকাল মিথ্যা বলেছি।

–সেটা তো আজ তোমার কাজকর্মে আমি নিজেই বুঝতে পেরেছি।

–আপনি প্লিজ আমায় ভুল বুঝবেন না। আর আমায় ছেড়ে যাবেন না।

–অবনী তোমার সাথে হয়তো আমার সম্পর্কটা বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কারন প্রথমত তুমি আমায় মিথ্যা বলেছো। তার উপরে তুমি লেডি কিলার৷ যে কিনা মানুষ খুন করো। তোমার মতন মানুষের সাথে আজীবন থাকা সম্ভব না আমার। কিন্তু আমি এখন এজন্যই তোমার সাথে আছি, কারন তুমি অনেক অসুস্থ।

–দেখুন আমি গতকাল বলতে চেয়েছিলাম, যে আমি লেডি কিলার। কিন্তু লেডি কিলারের উপরে আপনার অভক্তি দেখে নিজের সেই পরিচয়টা আপনার সামনে আর দেইনি। কারন আপনি যদি আমায় ছেড়ে চলে যান। আর তাছাড়া আমি কোনো সৎ মানুষের খুন করিনি। যারা অসৎ আর মানুষের প্রাণ নেয় নির্মম ভাবে, আমি তাঁদেরই প্রাণ নিয়েছি। বিশ্বাস করুন আমি কোনো ভালো মানুষকে মারিনি।

–তারপরেও অবনী তুমি একটা মেয়ে। তোমার এতো কিছু করা কিন্তু সাজে না।

–আচ্ছা আমি আর কোনোদিন এসব করবো না। আপনার দিব্যি বলছি৷ আমি একদম আপনার মনের মতন হয়ে যাবো। আপনি আমাকে যেভাবে দেখতে চাইবেন, আমি সেভাবেই হয়ে থাকবো। কোনো মানুষের প্রাণ নিব না। সব সময় আপনার খুশি মতন চলবো। তাও প্লিজ আপনি আমাকে ছেড়ে যাইয়েন না।

–অবনীর কথা শুনে বুঝতে বাকি নেই, যে আমি তাকে যেমনটা খারাপ ভেবেছি, সে তেমন খারাপ না। তার উপরে মেয়েটার চোখেমুখে আমার জন্য পরিপূর্ণ ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছি। নাহ মেয়েটাকে ছাড়া যাবে না। কারন আমিও যে একদম দুধে ধোঁয়া তুলসীপাতা সেটা কিন্তু না। তাই তাকে নিজের করেই আগলে রাখার চিন্তা-ভাবনা করলাম। কিন্তু এখন আগে একটু তার সাথে মজা নিব। তাই তাকে বললাম, এই অবনী তোমার সাথে আমি কখনোই আমার জীবনযাত্রা করতে পারবো না। কারন তুমি বাজে একটা মেয়ে। তুমি মানুষকে খুন করো।

–আমি তো বলেছি, যে আমি আপনার মনের মতন হয়ে থাকবো। প্লিজ আমাকে একটা সুযোগ দিন না আপনি। আমি সত্যিই পাল্টে যাবো।

–না, তোমার পাল্টানোর প্রয়োজন নেই। তোমার মতন মেয়েকে আমি কখনোই আপন করে নিব না।

–তাহলে আমায় মরতে দেখবেন নিজের চোখের সামনে।

–মানে কি?

–মানে হলো আমার হাত সব সময় চলে।
আমার হাতের দৈত্যাকার ছুরিটা দিয়ে আমি নিজেই নিজেকে শেষ করে দিব এখন।

–অবনীর কথা শুনে মজা করার মুড পুরোপুরি চলে গেছে। কারন সে কখন কি করে বসে ঠিক নাই। তাই তাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু খেতে আরম্ভ করলাম। সে আমার আচরণ দেখে জিজ্ঞাস করলো,

–কি হলো আপনি আমায় চুমু খাচ্ছেন যে? আমি না বলে খারাপ মেয়ে? আমাকে তাহলে মরে যেতে দিন।

–অবনী একদম থাপড়ে গালের দাঁত ফেলে দিব। একদম উল্টা-পাল্টা কথাবার্তা বলবি না। আমি এতোটা সময় মজা করেছি। শোন আমিও কিন্তু তোকে ভালোবাসি৷ আমার ভালোবাসাটা কোনো ঠুনকো ভালোবাসা নয়, যে তোকে এই ধরলাম আর এই ছাড়লাম। তাই একদম উল্টা-পাল্টা কথাবার্তা বলবি না বলে দিলাম।

–আচ্ছা বলবো না।

–আচ্ছা শোন তোর বিষয়ে তো অনেক কিছুই জানলাম। তবে অনেক কিছুই কিন্তু এখনো জানা বাকি আছে। তবে সেটা করে জানবো। তার আগে তুই আমার বিষয়ে একটু জেনে নে।

–হুম বলেন।

–আমার নাম আকাশ মাহমুদ হলেও আমার কিন্তু আরেকটা নাম আছে। যেই নাম পুরো দেশের মানুষজন সবাই জানে।

–মানে?

–মানে আমি হলাম রবার্ট। যে কিনা অন্ধকার দুনিয়ায় সব চাইতে বড় কুখ্যাত মাফিয়া।
.
অবনী আকাশের মুখে রবার্ট নামটা শুনা মাত্রই সে নিজ থেকে আকাশকে ছেড়ে দিয়ে তার থেকে দূরে সরে যায়। আকাশ অবনীর এমন আচরণ থেকে চমকে উঠে! কিন্তু অবনী আকাশকে আরো বড়সড় একটা চমক খাইয়ে দেয়। অবনী তার হাত দৈত্যাকার ছুরিতে পরিবর্তন করে সেটা দিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই আকাশের গলার উপরে চেপে ধরে….

চলবে….

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_১৬

“অবনী তার হাতের দৈত্যাকার ছুরিটা মুহূর্তের মধ্যেই আকাশের গলার উপরে চেপে ধরে। আকাশ অবনীর এমন আচরণে থতমত খেয়ে উঠে! তখনি অবনী আকাশকে বলে উঠে,

–এই বদ লোক, আপনি সব করতে পারবেন।
গন্ডায় গন্ডায় মানুষ মেরে বুড়িগঙ্গার নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারবেন। কেউ আপনার সাথে বড় গলায় কথা বললে তাকে মেরে আধমরা করে বালি চাপা দিয়ে দিতে পারবেন। আপনার বেলাতে কোনো দোষ নেই। কিন্তু আমি কিছু করলেই সেটা দোষের হয়ে যায়।

–অবনী কি বুঝাতে চাইছো তুমি?

–আমি বুঝাতে চাইছি আপনি এতো সময় আমাকে ছেড়ে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন কেন? আমি বুঝাতে চাইছি আপনি এতো সময় আমাকে বকাবকি করেছেন কেন? যেখানে আপনিই নিজেই এসব করেন। সেখানে এসব কাজের জন্য আপনি আমাকে বকাবকি করেছেন। তার উপরে আবার ছেড়ে যাবেন ও বলেছেন। আপনার আচরণে খুব কষ্ট পেয়েছি আমি। তাই এখন আপনার গলা শরীর থেকে আলাদা করে ফেলবো আমি। তাহলেই আমার কষ্ট কমবে।

–আচ্ছা ঠিক আছে। তোমার যেটা করলে কষ্ট কমবে, তুমি সেটাই করো। আমার গলা যদি শরীর থেকে আলাদা করে তোমার শান্তি মিলে, তাহলে এতে আমার কোনো আপত্তি নাই।
.
অবনী আকাশের কথা মতন তার হাতের দৈত্যাকার ছুরিটা দিয়ে আকাশের গলার উপরে সজোড়ে চেপে ধরে। যাতে করে আকাশের গলা কেটে শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। আকাশ অবনীর এমন কর্মকান্ড দেখে নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। তখনি অবনী আকাশকে অবাক করে দিয়ে তার শরীরের সাথে নিজের শরীর মিলিয়ে দেয়। পরবর্তীতে আকাশের ঠোঁট জোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে সেটাতে স্পর্শ করতে থাকে। আকাশ অবনীর আচরণে আগেও বাঁধা দেয়নি। এখনো কোনো বাঁধা দিচ্ছে না। আকাশ চুপচাপ হয়ে আছে। “অন্যদিকে অবনী আকাশের ঠোঁট নিয়ে মেতে উঠেছে। এভাবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর অবনী নিজ থেকে আকাশের ঠোঁটে স্পর্শ করা বন্ধ করে দিয়ে আকাশকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। তারপর আকাশকে বলে,

–এই যে মহাশয়, আপনি খুব ভয় পেয়েছিলেন তাই না?

–ভয় পাওয়ার কি আছে? তুমি আমায় মেরে ফেলতে চাইলে। সেখানে তো আমি সম্মতি জানিয়েছি। ভয় পেলে কি সেটা করতাম নাকি? ভয় পেলে তো নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতাম।

–এই যে মহাশয়, আমি জানি আপনি একটু হলেও ভয় পেয়েছেন। আচ্ছা যাক গে সেসব কথা। আমি আগে আমার কথা বলি। প্রিয়’আপনাকে মারতে হলে আমার হাজার বার জন্ম নিতে হবে। আপনাকে মারা আমার জন্য অসাধ্য সাধন করার মতন। কারন আপনাকে আমি ভালোবাসি। আপনাকে মারবো সেই কথা আমি কোনোদিন ও কল্পনা করতে পারবো না। আর একটু আগে আমি যাস্ট আপনার সাথে দুষ্টুমি করেছি। কারন আপনি আমায় বকা দিয়েছেন। তার সাথে আবার ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। তাই দৈত্যাকার ছুরিটা আপনার গলায় চেপে ধরে সেটাকে আবার হাতে পরিণত করে ফেলেছি। যাতে করে আপনার কোনো ক্ষতি না হয়।

–হুম ভালো করেছো।

–এই আপনি কি আমার উপরে রাগ করলেন নাকি? আমি সত্যিই আমার অভিমানটা কমানোর জন্য আপনার সাথে এমনটা করেছি। আপনি প্লিজ আমায় ভুল বুঝবেন না।

–হুম বুঝলাম। কিন্তু এখন আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর জানার আছে তোমার থেকে আমার।

–আমি আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিব। কিন্তু তার আগে আপনিও আমায় জড়িয়ে ধরুন।

–তুমি তো আমার শরীরের সাথে জড়িয়ে আছোই।

–নাহ এতে হবে না। কারন এখন তো আপনাকে আমি জড়িয়ে ধরে আছি। আমি চাই আমার মতন করে আপনিও আমায় জড়িয়ে ধরুন। তারপর আপনার যতো প্রশ্ন আছে আমায় করুন।

–আচ্ছা ঠিক আছে।
মেয়েটাকে এবার আমিও জড়িয়ে ধরলাম। তবে এতোটা সময় ধরিয়ে না ধরার সিক্রেট টা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আসলে মেয়েটার অদ্ভুত আচরণে আমার ভিতরে কিছুটা অভিমান জমেছিলো। তাই তাকে কিছু না বলার সাথে সাথে তার আচরণেও সাড়া দেইনি। কিন্তু বর্তমানে মেয়েটার কথাবার্তা শুনে আমার ভিতরের সমস্ত রাগ উধাও হয়ে গিয়েছে। আমি চেয়েছিলাম আরো কিছুক্ষণ অভিমান করে থাকবো মেয়েটার উপরে। কিন্তু মেয়েটা আমাকে সেটা করতে দিলো না। জোর করে অধিকার খাঁটিয়ে আমার কাছে আসলো। তারপর সে আমাকে জড়িয়ে ধরার পাশাপাশি আমাকেও জোর করিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরিয়েছে। এতে করে আমার অভিমান কোথায় যে হারিয়ে গেছে, তার কোনো নামনিশানাও খুঁজে পাচ্ছি না। যাক অভিমান কেটে গিয়েছে ভালো হয়েছে। এবার অবনী থেকে কয়েকটা জিনিস জেনে নেওয়া যাবে। আচ্ছা অবনী তুমি কি সত্যিই জানো না, যে তোমার মধ্যে এই অলৌকিক শক্তি কি ভাবে এসেছে? আর সেই আধ্যাত্মিক শক্তির লোক গুলো কারা?

–বলবো কিন্তু আপনি আমাকে বকা দিতে পারবেন না?

–আচ্ছা বকা দিব না।

–হুম।
দেখুন পরশুদিন যে আপনাকে মিথ্যা বলেছি সেটা কিন্তু আপনি বুঝে গিয়েছেন।

–হুম গতকাল বুঝেছি।

–আমার সেই মিথ্যা বলার কারনটা ছিলো সব কিছু থেকে নিজেকে হাইড করে রাখা। কিন্তু বর্তমানে সেটা আর সম্ভব না। কারন আমি আপনাকে আর একটা মিথ্যা কথাও বলতে চাই না। আমি আপনাকে আর এক বিন্দু পরিমাণ ও হতাশ করতে চাই না। তাই আমি আপনাকে সমস্তটা খুলে বলছি। দেখুন প্রথমত আমার মা-বাবা বলতে কেউ নেই। আর থাকলেও আমি জানি না। কারন আমার পিছনের অনেক সৃতিশক্তি আমার মাথা থেকে মুছে গেছে। কারন আমি একবার বড়সড় একটা বাস এক্সিডেন্ট করি। যার ফলে আমার জ্ঞান চলে যায়। পরবর্তীতে যখন আমার জ্ঞান ফিরে আসে, তখন আমি নিজেকে আবিষ্কার করি সাইন্সল্যাবের একটা রুমের মধ্যে আমি শুয়ে আছি। যেখানে কিনা অনেক যন্ত্রপাতি ছিলো। ইভেন আমার শরীরটাও ল্যাবের একটা কাঁচের বাক্সের মাঝে বন্দী ছিলো। আমি সেই সাইন্সল্যাবের মধ্যে শোয়া অবস্থাতেই কাঁচের বাক্সের মধ্যে দীর্ঘ এক মাস বন্দী ছিলাম। দীর্ঘ এই একটা মাস টাইম টু টাইম দুইটা লোক এসে আমার শরীরে বিশাল বড় বড় ইনজেকশন পুশ করতো। এই ঘটনা আমার সাথে দীর্ঘ একমাস ঘটেছে। একমাস পর একজন মেয়ে এসে আমায় কাঁচের বাক্স থেকে মুক্ত করে দিয়ে আরেকটা জায়গায় নিয়ে গেছে। যেই জায়গাটার নামই হচ্ছে ড্রয়িড। যেখানে কিনা আপনি গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর আমি সেই মেয়েটা আমাকে বলে, আমার শরীরের সাথে এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে। যার কারনে আমার শরীরের মাঝে অনেক ধরনের সুপারন্যাচারাল শক্তি এসেছে। তাই সে আমাকে প্রাকটিস করাবে কি ভাবে সেই শক্তি ব্যবহার করতে হয়। এবং কি ভাবে সেই শক্তিকে কাবু করা হয়। সেই ড্রয়িডে সর্বপ্রথম আমিই একা ছিলাম। তারপর বাকি সবাই এসেছে। যাদের সাথেও হয়তো আমার মতন এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছে। তারপর সেই মেয়েটা আমাদের সবাইকে এক সাথে ট্রেইনিং করাতে শুরু করে। ট্রেনিং করার এক পর্যায়ে আমি এবং বাকি সবাই বুঝে যায়, যে আমার শরীরে এতো পরিমাণ সুপারন্যাচারাল শক্তির উৎপন্ন হয়েছে, যেটা দিয়ে কিনা আমি মুহুর্তের মধ্যেই সেখানের সবাইকে দমিয়ে দিতে পারবো। আমার সঙ্গী সাথী যারা ছিলো, তারা সবাই একত্রে মিলে আসলেও আমার মোকাবিলা করতে পারবে না। আপনি গতকাল হয়তো সেটা নিজের চোখে দেখেও নিয়েছেন।

–হুম দেখেছি। পরে বলো,,,

–আমার শক্তির পরিমাণ মাত্রাধিক হওয়ার কারনে সেই মহিলাটা আমাকে আলাদা ভাবে প্রাকটিস করাতে শুরু করে। যার সাথে সাথে আমার একটা নাম ও দেয় তিনি। ক্যাথরিন নাইট। এবং আমাকে তাঁদের সবার সিনিয়র বানিয়ে দেওয়া হয়। সেই মহিলাটা না থাকলে তার বদলে আমিই প্রাকটিস করাতাম সবাইকে। এভাবে আরো দীর্ঘদিন কেটে যায়। কিন্তু আমরা কে বা আমাদের পরিচয় কি, সেখানকার কেউ এই মনে করতে পারছিলাম না। কারন আমাদের সবার সৃতিশক্তিকে এক্সপেরিমেন্ট করার সময় মুছে দেওয়া হয়। কিন্তু আমার মাথার ভিতরে কি ভাবে যেনো বাস এক্সিডেন্টের বিষয়টা রয়ে যায়। আমি সব সময় মনে করার চেষ্টা করতাম কি হয়েছিলো আমার সাথে। কিন্তু মনে করতে পারতাম না। এভাবে দীর্ঘ এক বছর ড্রয়িডে আমাদের প্রাকটিস হয়। এই এক বছরে বহু হাজার বার নিজের অতীত মনে করতে চেয়েও করতে পারিনি। তাই হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। আর ড্রয়িডের লোকজনকে নিজের পরিবার এবং ড্রয়িডকে নিজের বাসস্থান বলেই ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে এসে দেখছি সেই মহিলা আমাকে এবং বাকি সবাইকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করাচ্ছে। সে আমাদেরকে দিয়ে অনেক কয়জনকে খুন ও করিয়েছে। যেটা ড্রয়িডের সবাই হাসিখুশি ভাবে মেনে নিলেও আমি সেটাকে মেনে নিতে পারিনি। তাই সেই মহিলা একদিন না থাকায় আমি ড্রয়িডের অদৃশ্য দেয়াল ভেদ করে সেখান থেকে পালিয়ে এসেছি। আর তারপর থেকেই ড্রয়িডের সমস্ত লোকজন আমার বিপক্ষে গিয়ে একত্রে হয়ে আমাকে মারার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

–কিহহহ! তারা সবাই মিলে তোমাকে মারার চেষ্টা করছে! এই তুমি তাঁদের লোকেশন বলো আমাকে। আমি ছেলেপেলে নিয়ে গিয়ে তাঁদের সবাইকে চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে আসবো। বিশেষ করে সেই মহিলাকে। যে কিনা এসবের আসল গোড়া। তাহলেই সব কিচ্ছা-কাহিনী খতম হয়ে যাবে।

–এই না,না, আপনি প্লিজ ভুলেও এমনটা করতে যাবেন না। কারন আপনার চিন্তা-ভাবনা ভুল। সেই মহিলাটা ড্রয়িডের আসল বস না। ড্রয়িড একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতন। যেটার কিনা অনেক কয়টা শাখাপ্রশাখা রয়েছে। সেই মহিলাটা তো শুধু ড্রয়িডের একটা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব রয়েছে। সেই মহিলার উপরেও একটা বস আছে। যে কিনা সমস্ত ড্রয়িডবাসীর বস। আর তার আদেশ মোতাবেক সেই মহিলাটা চলে।

–তো তার ঠিকানা দাও। আমি তাকেই মেরে আসবো।

–আপনি সেটা কখনোই পারবেন না। কারন আপনি একবার ভাবেন, সে যদি আমার মতন নরপিশাচ পয়দা করতে পারে, তাহলে সে কতোটা শক্তিশালী হবে। আর তার কাছে কি কি শক্তি থাকতে পারে। যেখানে কেউ ড্রয়িডের অদৃশ্য দেয়াল ভেদ করে এপারে আসতে পারে না। সেখানে আমি আমার শক্তির মাধ্যমে অদৃশ্য দেয়াল ভেদ করে এপারে চলে এসেছি। তাহলে একবার চিন্তা করেন আমার শরীরে মাত্রাধিক শক্তি রয়েছে। তাহলে তার কাছে অবশ্যই সেই শক্তিকে নিধন করার ক্ষমতা রয়েছে। তাছাড়া তার শরীরে বা সে যে আমার মতন আরো কয়েকটা শক্তিশালী মানুষ তৈরী করেনি, তার নিশ্চয়তা কে দিবে। আপনি প্লিজ তার মোকাবিলা করতে যাবেন না। আমি সেই ড্রয়িড থেকে পালিয়ে এসে আপনাকে পেয়েছি। আর আমি আপনাকে নিয়েই আমার সারাটা জীবন কাটাতে চাই। আপনি প্লিজ দয়া করে তার মোকাবেলা করতে যাবেন না। এতে করে আপনাকে হারাতে হবে আমার। আর তাছাড়া দেখা যাবে আমার আবারো সেই ড্রয়িতে বন্দী হতে হবে। যেটা কিনা আমি কখনোই চাই না।

–অবনী তার মোকাবেলা না করে কি করবে তুমি? এভাবেই তারা তোমার ক্ষতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। আর আমি সেটা বসে বসে দেখবো? তার উপরে তারা তো শুধু তোমার একার ক্ষতি করছে না। তারা শহরের অনেক কিছুই অনিষ্ট করছে। তার পাশাপাশি আমার দিকেও তারা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মেরেছে।

–তারা যাই করবে করুক। তারা আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু যদি আপনার ক্ষতি করতে আসে, তাহলে সেটা আমি করতে দিব না। আমার টেলিপোডের শক্তির দ্বারা আমি আপনাকে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে পালিয়ে বেড়াবো। তাও আপনি প্লিজ তাঁদের সাথে লড়াই করতে যাবেন না।

–অবনী তোমার আর আমার বিষয়টা ঠিক আছে। কিন্তু সমাজের ক্ষতির বিষয় নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই আমি তাঁদের মোকাবেলা করবোই। তবে তুমি একদম চিন্তা করোনা। তোমার আর আমার গায়ে নখের আঁচড় ও দেওয়ার সুযোগ বা সাহস তারা পাবে না।

–আমি আপনাকে বুঝাতে পারছি না!

–এই তোমার বুঝাতে হবে না আমাকে।
তুমি শুধু আমাকে নিয়ে মেতে থাকো। আর আমার সঙ্গে থাকো। তাহলেই দেখবে ড্রয়িড ফ্রয়িড মা’র খেয়ে নিজেদের অস্তিত্ব হারিয়েছে।
.
আকাশের কথায় অবনীর রাগ উঠে যায়। তাই সে রাগান্বিত কন্ঠে আকাশকে বলে,

–এই বদ লোক, তুই যা করবি কর৷ তোকে আমার বুঝানোর সাধ্য নেই। কিন্তু তোর যদি এক চুল পরিমাণ ও ক্ষতি হয়, তাহলে কিন্তু আমি নিজের প্রাণ নিজেই নিয়ে নিব বলে দিলাম।

–বললাম তো আমার কিছুই হবে না। তুমি শুধু আমায় নিয়ে মেতে থাকো।

–হুম এবার এই টপিকটা বাদ দে। কারন ঐ সকল কথা মনে পড়লেই আমার মাথা পেইন দেয়।

–আচ্ছা বাবা বাদ দিলাম। এবার রাগ’টা কমিয়ে ফেলে রেস্ট করো।

–হুম করছি। কিন্তু তুই কোথাও যাবি না। আমি তোকে জড়িয়ে ধরেই শুয়ে থাকবো।

–আচ্ছা কোথাও যাবো না।
.
আকাশ চুপচাপ হেলান দিয়ে বসে আছে। আর অবনী আকাশকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার বুকের মধ্যে শুয়ে আছে। এমন সময় হুট করেই নার্স অনুমতি ছাড়া আকাশের রুমে প্রবেশ করে। কারন অবনীকে স্যালাইন দিতে হবে। “অপরদিকে নার্স এভাবে হুট করে রুমে চলে আসায় অবনীর ভয়ঙ্কর রাগ উঠে যায়। কারন সে আকাশের সাথে একাকিত্ব সময় কাটাতে চেয়েছিলো। কিন্তু তার ইচ্ছার মাঝে নার্স এসে বাঁধা দেওয়ায় অবনীর রাগের পরিমাণ এতো বেশি হয় যে, তার হাত আবার দৈত্যাকার ছুরিতে পরিবর্তন হয়ে যায়। যেটা দেখে সেই নার্স সজোড়ে এক চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে সেখানেই বেহুঁশ হয়ে পড়ে যায়….

চলবে….

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।